মঙ্গলবার, ১০ জুলাই, ২০১৮

A message from Bijali










কথোপকথন শুরু










A message from Bijali
Hackers are now active going into your fb account. They spread pornographic and sex video using your name and send to your fb friends without your knowing about it. You cant see it but others can. So, if you received such video under my name, it was'nt me. Pls pass this msg to all your fb friends to safeguard your good name.Just now · Sent from Messenger
ধন্যবাদ, বিজলি !
23 এপ্রিল এ দেখা হয়েছে



A message from Bijali

গোপাল মুখার্জি ওরফে গোপাল পাঁঠা


                    গোপাল মুখার্জি ওরফে গোপাল পাঁঠা


                   ফেসবুক থেকে শেয়ার করেছেন                       প্রণব কুমার কুণ্ডু



Amartya Ghosh গোষ্ঠীটিতে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন: 💥ALL BENGAL RSS💥রাস্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ💥

Soma Panti


মেডিকেল কলেজের উল্টোদিকে কলেজ স্ট্রীটে তার একটি বুচার শপ বা পাঁঠা কাটার দোকান ছিল। এখনো আছে সেই দোকান। অনুকূল মুখার্জীর পাঁঠা কাটার দোকান। এই গোপাল মুখার্জী ছিলেন বলে আপনি আছেন, আমি আছি, হাওড়া ব্রিজ আছে, টালার ট্যাঙ্কি আছে, সিয়ালদা স্টেশন আছে, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল আছে . কিভাবে.? পিছিয়ে যাবো অনেক গুলো বছর আগে ১৯৪৬ সালে। অবিভক্ত বাংলা। দায়িত্ব পেয়েছে মুসলিম লিগ। মুখ্যমন্ত্রীর নাম সুরাবর্দী। তিনি জিন্নার লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তানকে সাকসেস করার জন্য এক কঠিন ষড়যন্ত্র আঁটলেন। ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে - ১৬ আগস্ট ভোরবেলা মুসলমানেরা ধর্মতলা চৌরঙ্গীতে একত্রিত হলেন। শুরু হল হিন্দু কাটা। আল্লাহু আকবর শব্দে ভরে গেল চারিপাশ আর জ্বলতে থাকল হিন্দুদের সম্পত্তি। রাজাবাজারে স্কুলের সামনে চারটি মেয়েকে রেপ করে মেরে উলঙ্গ করে লটকে দেয়া হয়েছিল। সেই বিভৎসতা যে দেখেছে সেই জানে। একই সাথে পূর্ববঙ্গের নোয়াখালিতে চলতে লাগল অত্যাচার। মহিলাদের গনধর্ষন, শরীর থেকে মাংস খুবলে নেয়া। সারা দিন ধরে অজস্র ঘটনার থানায় কমপ্লেন জমা পড়ল কিন্তু পুলিশ কোন স্টেপ নিল না। এভাবে পার হয়ে গেল তিন তিনটা দিন। পরিস্থিতি একই। হিন্দুর লাশে গোটা কলকাতা ভরে গেল। বামপন্থী কিছু নেতা যারা পাকিস্তানের দাবিতে মুসলিম লিগের পাশে দাঁড়িয়েছিল ঘটনার আকস্মিকতায় তারাও স্তম্ভিত হয়ে গেল। না কোন বিজেপি বা আর এস এস এর পেছনে ছিল না। কংগ্রেসের তোষনের রাজনীতিই ছিল এর জন্য দায়ী। আর এই ঘটনা যখন ঘটছে তখন গান্ধী আর জহরলাল ঘাপটি মেরে চুপ করে বসে রইলেন। তিন দিন হিন্দু হত্যার পর ক্ষেপে গেল গোপাল। সে এমন এক অসম লড়াই লড়ল যে সুরাবর্দীর সমস্ত পরিকল্পনা বানচাল হয়ে গেল। গোপাল আগে থেকেই অরবিন্দের ভাবশিষ্য ছিল। সে ছিল নির্ভিক ডাকাবুকো। একাই দশজনার সাথে লড়ার মত পেটানো শরীর ছিল তার। ৪২ এর ভারত ছাড়ো আন্দোলনে সে সামিল ছিল। তার কাছে বেশ কিছু অস্ত্র ছিল। কিছু পিস্তল, কিছু বোমা, কিছু সোর্ড। কিন্তু কখনো তা কোন ক্রিমিনাল অ্যাকটিভিটিস এ ব্যবহার করে নি বা করতে দেয় নি গোপাল। রডা কোম্পানীর বন্দুকের দোকান লুঠ করল গোপাল তার দলবলকে নিয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এদেশে আসা আমেরিকান সৈনিকদের কাছ থেকে বোতল বোতল হুইস্কির বিনিময়ে আরো কিছু অস্ত্র জোগাড় করল গোপাল। তার পর একত্রিত করল প্রায় হাজারখানেক হিন্দু ও শিখ ছেলেকে। কিন্তু তাদের কয়েকটি কড়া নির্দেশ দিল। প্রথমত, অস্ত্রহীন মুসলমানকে মারবে না। উলটে সে প্রটেকশন চাইলে তাকে বা তার পরিবারকে প্রটেকশন দেবে। দ্বিতীয়ত মুসলিম মা বোনেদের দিকে মুখ তুলে তাকাবে না। কিন্তু অস্ত্রধারী মুসলমানকে ছাড়া চলবে না। ধড় থেকে তার মুন্ডু উপড়ানো চাই। মাত্র দু তিন দিনে গোপালের বাহিনীর হাতে এত মুসলমান ঘাতক মরল যে সুরাবর্দীর দরবারে ত্রাহী ত্রাহী রব উঠে গেল। হরেন ঘোষ নামে এক গানের শিক্ষক ছিলেন যিনি সুরাবর্দির বাহিনীর কলকাতার মেজর পয়েন্ট গুলো বোম চার্জ করে উড়িয়ে দেবার ষড়যন্ত্র ধরে ফেললেন। সুরাবর্দীর মেয়েকে তিনি গান শেখাতেন। সেখানে ছোট্ট মেয়েটি একটি কাগজ এনে হাজির করে। উনি প্রথমে বাজে কাগজ বলে মুড়ে ফেলে দেন পরে সেটা নিয়ে চুপ করে গোপালের কাছে তার বৌবাজারের বাড়িতে নিয়ে আসেন। সেখানে হাওড়া ব্রিজ, টালার জল ট্যাঙ্ক, ভিক্টোরিয়া, শিয়ালদা স্টেশন কিভাবে বোম মেরে উড়িয়ে দেবে তার প্ল্যান করা ছিল। গোপালের বাহিনী প্রতিটি জায়গা থেকে হামলাকারীদের হঠিয়ে দিল। পুলিশ বেগতিক দেখে সেই জায়গাগুলোর দখল নিল। সুরাবর্দীর সন্দেহ গিয়ে পড়ল হরেন বাবুর উপর এবং তার প্রান গেল মুসলিম গুন্ডাদের হাতে। তার শরীর কেটে ছয় টুকড়ো করা হয়। কংগ্রেসী নেতারা এতদিন ঘাপটি মেরে ছিল। যেই মুসলমান মরা শুরু হল সেই সবাই বউয়ের আঁচলের তলা থেকে বেড়িয়ে এল। গান্ধী বেড়িয়ে এল আর জহরলাল বেড়িয়ে এল বেডরুম ছেড়ে। সবাই মিলে গোপালকে হাজির করল গান্ধীর সামনে। গান্ধী বললেন গোপাল আমার পায়ে তুমি অস্ত্র সমর্পন কর। গোপাল বলল এতদিন এত হিন্দু মরছিল আপনি ঘুমাচ্ছিলেন, আমি আপনার কথা রাখতে পারব না। অস্ত্র যদি জমা দিতে হয়, নেতাজী সুভাষের আসার কথা আছে, ওর পায়ে দেব আপনার পায়ে নয়। বেগতিক দেখে গান্ধী নোয়াখালী পালালো। সুরাবর্দী তখন আপিলের নাটক শুরু করল যে দাঙ্গা বন্ধ কর সবাই ভাই ভাই। প্রশাসন কড়া হল। ধীরে ধীরে সব থামল। বেঁচে গেল কলকাতা। কিন্তু নোয়াখালী বাঁচল না। কারন সেখানে কোন গোপাল পাঁঠা ছিল না। এই মানুষটি ও বেঁচে ছিলেন 2005 সাল পর্যন্ত। তাকে সমঝে চলতেন বিধান রায় সিদ্ধার্থ রায়ের মত লোক ও। একবার কলকাতা পুলিশ তাকে দুটো রুটের পারমিট দিতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, গোপাল মুখার্জী ঘুষ নেয় না। কেউ তাকে নিয়ে লেখে নি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মত অর্ধসত্যবাদী অর্ধেক জীবনধারী সাহিত্যিক দের কাছে আমরা আর কি আশা করতে পারি.? তাকে নিয়ে বায়োপিক ও হবে না। কিন্তু যতদিন হিন্দুস্তান থাকবে, বাংলায় হিন্দুর ভিটে থাকবে, কলকাতা হিন্দুশূন্য না হবে একটা আত্মা এখানে চিরকাল বিরাজ করবে। গোপাল মুখার্জী ওরফে গোপাল পাঁঠা। এই লেখার মাধ্যমে আমার ছোট্ট শ্রদ্ধার্ঘ্য এই মহান ভারত সন্তানকে।

#সংগৃহীত


১৯৪৬-এর দি গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং


       ১৯৪৬-এর দি গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং


      ফেসবুক থেকে শেয়ার করেছেন                              প্রণব কুমার কুণ্ডু


আরে নির্বোধ, ১৯৪৬ সালে বিজেপি ছিলো না, তারপরও দেখ, মুসলমানরা হিন্দুদেরকে কোন দৃষ্টিতে দেখতো আর পাকিস্তান আদায়ের জন্য মুসলমানরা হিন্দুদেরকে কিভাবে হত্যা করেছে ? এসব ইতিহাস জানতে হলে পড় নিচের এই ইতিহাসটি-

"গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং" (১৯৪৬)- এর ভেতর বাহির” :

জিন্নার পূর্বপুরুষরা ছিলো হিন্দু এবং তারা ছিলো গুজরাটের বাসিন্দা। 'কোনো হিন্দুর মুসলমান হয়ে যাওয়ার মানে শুধু হিন্দু সমাজের একজন সদস্য কমে যাওয়া নয়, একজন শত্রু বৃদ্ধি পাওয়া"-স্বামী বিবেকানন্দের এই বাণী যে কতখানি সত্য, তা বুঝতে পারবেন এই লেখাটি পড়লে এবং জিন্না যে হিন্দুদের কী ধরণের শত্রু হয়ে উঠেছিলো এবং সে হিন্দুদের যে কী পরিমান ক্ষতি করেছে, সে সম্পর্কেও একটা মোটামুটি ধারণা পাবেন এই প্রবন্ধে।

ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত জিন্নার প্রিয় কাজ ছিলো জলের মতো মদ খাওয়া। জীবনে নামাজ-রোযা করেছেন কি না সন্দেহ। শুকরের মাংস ছিলো তার প্রিয় খাদ্য। ভারতের মুসলমানদের জিন্না যথেষ্টই ঘৃণা করতো। তবু তার জ্ঞান-বুদ্ধির কারণে, মুসলমানদের জন্য একটি পৃথক আবাসভূমি- পাকিস্তান-এর স্বপ্ন দেখা রহমত আলী, ১৯৩৩ সালে, জিন্নাকে পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের জন্য আন্দোলন করার প্রস্তাব দিলে, জিন্না তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলো, "এটি একটি অসম্ভব স্বপ্ন।" কিন্তু রহমত কোরান খুলে জিন্নাহকে দেখিয়ে বলেছিলো, এ অসম্ভব নয়, সম্ভব। মুসলমানদের জাগিয়ে পাকিস্তান আদায়ের জন্য সব রকম উপাদান কোরানের মধ্যে রয়েছে।" জিন্না বিষয়টি নিয়ে ভাবতে লাগলো এবং কোরানের তত্ত্ব জিন্নাকে এমনই প্রভাবিত করলো যে, পাকিস্তানের স্বপ্নে বিভোর জিন্না কয়েক বছর পরেই বলে ফেললো, "কয়েক শতক আগে যেদিন প্রথম হিন্দুটি ইসলামে ধর্মন্তরিত হয়েছিলো, সেদিনই পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে।" অর্থাৎ জিন্নার মতে পাকিস্তান রাষ্ট্র অলরেডি সৃষ্টি হয়েই আছে, এখন তা বাস্তবায়ন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৪০ সালে ২৩ মার্চ, লাহোর প্রস্তাবে জিন্না বললো, "ভারতবর্ষের সমস্যা সম্প্রদায়গত নয়, বরং জাতিগত। এটা খুবই দুঃখের যে হিন্দুরা, ইসলাম ও হিন্দুত্বের প্রকৃত স্বরূপ বুঝতে পারছেন না। ইসলাম এবং হিন্দুত্ব শুধুমাত্র আলাদা ধর্ম নয়, সম্পূর্ণ বিপরীত দুই জাতিসত্ত্বা। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে, হিন্দু ও মুসলমানরা দুটি পৃথক ইতিহাস থেকে প্রেরণা পায়। এদের একজনের মহাপুরুষ, অন্যজনের শত্রু। মুসলমানরা সংখ্যালঘু নয়। মুসলমান একটা আলাদা জাতি। জাতি গঠনের সমস্ত প্রয়োজনীয় উপাদান তাদের আছে। তাই তাদের অবশ্যই নিজের বাসভূমির অধিকার আছে।" (ভিপি মেনন, ট্রান্সফার অব পাওয়ার, পৃষ্ঠা-৮২)

ঠিক এর ১০ দিন পর, ১৯৪০ সালের ৬ এপ্রিল, গান্ধী, মুসলিম লীগের দাবিকে সমর্থন করে হরিজন পত্রিকায় লিখলো, "দেশের অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মতো মুসলমানদেরও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার আছে। বর্তমানে আমরা একটা যৌথ পরিবারের মতোই বসবাস করছি। তাই এর কোনো এক শরিক ভিন্ন হতে চাইতেই পারে।"

মূলত এই দুটি ঘটনাতে ১৯৪০ সালেই ভারত ভাগ হয়ে গিয়েছিলো; ১৯৪৭ সালে তা শুধু বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র।

মুসলমানরা যাতে পাকিস্তানের দাবীকে ভুলে না যায়, সেজন্যই হয়তো ১৯৪২ সালের ১৮ এপ্রিল, গান্ধী, হরিজন পত্রিকায় আবার লিখলো, "যদি ভারতের বেশির ভাগ মুসলমান এই মত পোষণ করে যে, মুসলমানরা একটা আলাদা জাতি, যাদের সঙ্গে হিন্দু ও অন্যান্য গোষ্ঠীর মিল নেই, তবে পৃথিবীর এমন কোনো শক্তি নেই যে সেই চিন্তা ভাবনা থেকে তাদের বিরত করতে পারে এবং সেই ভিত্তিতে তারা যদি দেশের ভাগ চায়, তবে অবশ্যই দেশভাগ করতে হবে। তবে ইচ্ছা করলে হিন্দুরা তার বিরোধিতা করতে পারে।"

জিন্না দেখলো, তার দাবীর তেমন কোনো বিরোধিতা হিন্দুদের মধ্যে নেই, বরং হিন্দুদের প্রধান নেতা গান্ধীর, তার দাবীর ব্যাপারে যথেষ্ট অনুমোদনও রয়েছে।

এরপর ১৯৪৪ সালে জিন্নার সাথে গান্ধীর বেশ কয়েকবার সাক্ষাৎ হয়। গান্ধী, জিন্নাহকে বলে, "আমি আপনার বা ইসলামের শত্রু নই। আমি আপনাদের দীন সেবক মাত্র। আমাকে দয়া করে ফিরিয়ে দেবেন না।" গান্ধীর এই অসহায় আত্মসমর্পনে উৎফুল্ল জিন্না পাকিস্তান আদায়ের প্ল্যান তৈরি করে ফেলে। কারণ, জিন্না বুঝেছিলো, শুধু মুখে বলে কিছু আদায় হবে না, এর জন্য এ্যাকশনে যেতে হবে। তাই ১৯৪৬ সালের ২৮ জুলাই বোম্বেতে সর্বভারতীয় মুসলিম লীগের জাতীয় সভায়, ১৬ আগস্টকে জিন্না, "ডাইরেক্ট এ্যাকশন ডে" বা "প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস" হিসেবে ঘোষণা করে। এই সভায় জিন্না বলে, "পাকিস্তান বাদ দিয়ে অন্য কিছুর সাথেই মুসলমান জাতি কোনো প্রকার আপোষ করবে না। এখন সময় হয়েছে, সেই দাবী আদায়ে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার। আমরা আজ একটা ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত সব সময়ই আমরা নিয়মতান্ত্রিক পথেই দাবী জানিয়ে এসেছি। কিন্তু আজ সময় এসেছে সেই নিয়মতান্ত্রিক পথকে বিদায় জানাবার।...আজ আমাদের কাছে একটি পিস্তল আছে এবং আমরা তা ব্যবহার করতে সমর্থ।" ( পীরজাদা, ফাউন্ডেশন অব পাকিস্তান, পৃষ্ঠা-৫৬০)

শুরু হলো প্রস্তুতি:

১৯৪৬ সালে সমগ্র বাংলায় মুসলমান ছিলো ৫৫%, হিন্দু ৪৫%। তাই খুব সহজে কংগ্রেসকে হারিয়ে প্রাদেশিক নির্বাচনে জিতে বাংলার ক্ষমতা দখল করে মুসলিম লীগ। সোহরাওয়ার্দী বা সুরাবর্দী হয় মুসলিম সরকারের মূখ্যমন্ত্রী; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ছিলো তার হাতে। জিন্নার ডাইরেক্ট এ্যকশন ডে বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয় এই জল্লাদ। ২৮ জুলাই থেকে ১৬ আগস্ট, সময় খুব কম। তাই খুব দ্রুত পরিকল্পনামাফিক এগোতে থাকে সে। ১৯৪৬ সালের ৫ আগস্ট, স্টেটসম্যান পত্রিকার এক নিবন্ধে সুরাবর্দী লিখে, "হিংসা এবং রক্তপাত অন্যায় নয়, যদি তা মহৎ উদ্দেশ্যে করা হয়। মুসলমানদের কাছে আজ পাকিস্তান আদায় ছাড়া অন্য কোনো প্রিয় কাজ নেই।"

এই দিনই খাজা নাজিমুদ্দিন, যে পরে পূর্ব বাংলার মূখ্যমন্ত্রী হয়, সে মুসলিম ইনস্টিউটে, মুসলিম ন্যাশনাল গার্ডের এক সমাবেশে বলে, "মুসলিম লীগের এটা পরম সৌভাগ্য যে, এই রমজান মাসেই সংগ্রাম শুরু হবে। কারণ, এই রমজান মাসেই তো জিহাদের নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ।"

এর সাথে কলকাতার মুসলমান মেয়র, ওসমান খান, উর্দুতে একটি প্রচার পত্র বিলি করে। যাতে লিখা ছিলো, "আশা ছেড়ো না, তরোয়াল তুলে নাও, ওহে কাফের, তোমাদের ধ্বংসের দিন বেশি দূরে নয়।" এই লিফলেটে ছিলো তরোয়াল হাতে জিন্নার ছবি। এছাড়াও মুসলিম লীগের পক্ষ থেকে, হিন্দুদের কিভাবে ধ্বংস করা যাবে, সেই রকম ২৩ টি নির্দেশনা সংক্রান্ত একটি লিফলেট বিলি করা হয়। নির্দেশনাগুলো এরকম :

১. ভারতের সকল মুসলমান পাকিস্তানের দাবীতে প্রাণ দেবে।
২. পাকিস্তান জয়ের পর সারা ভারত জয় করতে হবে।
৩. ভারতের সব মানুষকেই ইসলামে ধর্মান্তরিত করতে হবে।
৪. সমস্ত মুসলিম রাষ্ট্রকেই বৃটিশ-আমেরিকার পৃথিবী শোষণের সাথে হাত মেলাতে হবে।
৫. একজন মুসলমানকে ৫ জন হিন্দুর অধিকার পেতে হবে, অর্থাৎ একজন মুসলমান সমান ৫ জন হিন্দু।
৬. যতদিন পর্যন্ত পাকিস্তান ও ভারত স্থাপিত না হয়, ততদিন পর্যন্ত নিম্নলিখিত কাজগুলি করে যেতে হবে:

ক) হিন্দুদের যত কারখানা ও দোকান আছে, তা ধ্বংস করতে হবে এবং লুঠ করতে হবে এবং লুঠের মাল মুসলিম লীগ অফিসে জমা দিতে হবে।
খ) মুসলিম লীগের সব সদস্যকে অস্ত্র বহন করতে হবে।
গ) সকল জাতীয়বাদী মুসলমান, যারা লীগের সাথে যুক্ত হবে না (অর্থাৎ কংগ্রেসী), তাদেরকে গুপ্তভাবে হত্যা করতে হবে।
ঘ) হিন্দুদেরকে ক্রমাগত খুন করে যেতে হবে এবং তাদের সংখ্যা কমাতে হবে।
ঙ) সমস্ত মন্দির ধ্বংস করতে হবে।
চ) কংগ্রেস নেতাদেরকে প্রতিমাসে ১ জন করে খুন করতে হবে।
ছ) কংগ্রেসের অফিসগুলি মুসলমানদের দিয়ে ধ্বংস করাতে হবে।
জ) করাচী, বোম্বাই, কলিকাতা, মাদ্রাজ, গোয়া বিশাখাপত্তনম ১৯৪৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই অচল করে দিতে হবে।
ঝ) কোনো মুসলমানকেই হিন্দুদের অধীনে সামরিক বাহিনী, নৌবাহিনী, সরকারী, বেসরকারী কোথাও কাজ করতে দেওয়া হবে না।
ঞ) মুসলমানদেরকে সমস্ত ভারত ও কংগ্রেসকে অন্তর্ঘাত করে যেতে হবে, মুসলমানদের দ্বারা শেষ ভারত আক্রমন পর্যন্ত।
ট) এসব ব্যাপারে অর্থ দেবে মুসলিম লীগ।
ঠ) সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র বোম্বাই, দিল্লী, কলিকাতা, মাদ্রাজ, ব্যাঙ্গালোর, লাহোর, এবং করাচির মুসলমানদের হাতে ভাগ করে দেওয়া হবে।
ড) মুসলিম লীগের সব সদস্য অস্ত্র ব্যবহার করবে, এমনকি দরকার হলে পকেটে রাখার মতো ছোড়া ব্যবহার করবে, যাতে ভারতবর্ষ থেকে সমস্ত হিন্দুদেরকে তাড়িয়ে দেওয়া যায়।
ঢ) সমস্ত বাহন হিন্দুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহার করা হবে।
ণ) সমস্ত হিন্দু নারী ও মেয়েদেরকে ধর্ষণ করবে, লুঠ করবে, ইসলামে ধর্মান্তরিত করবে ১৬ আগস্ট, ১৯৪৬ সাল থেকে।
ত) হিন্দু সংস্কৃতি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করতে হবে।
থ) লীগের সমস্ত সদস্যরা হিন্দুদের প্রতি সব সময় নিষ্ঠুর ব্যবহার করবে এবং তাদেরকে সামাজিক অর্থনৈতিক সব ব্যাপারে পরিত্যাগ করবে।
এসবের পাশাপাশি নোয়াখালি, ত্রিপুরা, চট্টগ্রাম, ঢাকা, মুর্শিদাবাদ, হুগলি, নদীয়া, ২৪ পরগনা প্রভৃতি জেলায় মুসলিম লীগের আহ্বানে অনুষ্ঠিত জনসভায় আকার ইঙ্গিতে মুসলমানদের বুঝিয়ে দেওয়া হয় যে, দেশে মুসলিম লীগের সরকার আছে, সুতরাং পাকিস্তান আদায়ের জন্য ১৬ আগস্ট থেকে অগ্নি সংযোগ, লুঠ, নারী অপহরণ, ধর্ষণ, খুন এসবের জন্য কারো কোনো প্রকার শাস্তি হবে না।
এসব প্রচারের সাথে সাথে বাইরে থেকে প্রচুর সংখ্যক মুসলমানকে কলকাতায় এনে বিভিন্ন মুসলমান বস্তিতে রাখা হয়।
এছাড়াও এ্যাকশন শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকেই চোখে পড়ছিলো যেসব খণ্ডিত দৃশ্য :
বেলগাছিয়া, রাজাবাজার, কলাবাগান বস্তি, ক্যানাল ওয়েস্ট রোড, ধর্মতলা, পার্কসার্কাস, এন্টালি প্রভৃতি এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই মুসলমানরা বিভিন্নরকম অস্ত্রশস্ত্রে ধার দিচ্ছিলো।
বেলগাছিয়া, বি.টি রোডে - লাঠি, ছোরা ও তরোয়াল ভর্তি লরি দেখা গিয়েছিলো।
মানিকতলায় ক্যানাল ওয়েস্ট রোডে অস্ত্র ভর্তি ঠেলাগাড়ি দেখা গিয়েছিলো।
এবং মুসলমানদের দোকানগুলোতে পাকিস্তান লিখে চিহ্নিত করা হয়েছিলো।

এ্যাকশনে ট্রাক / লরির ব্যবহার :

কলকাতার মেয়র ওসমান খান, কর্পোরেশনের সব লরি মুসলিম লীগের নেতাদের ব্যবহারের জন্য দিয়ে দিয়েছিলো, যাতে করে মুসলমানরা সে সব লরি ব্যবহার করে ইচ্ছেমতো লুঠপাট করতে পারে আর হিন্দুদেরকে মারার জন্য অস্ত্র শস্ত্র বহন করে বিভিন্ন এলাকার মুসলমানদের হাতে তা পৌঁছে দিতে পারে। আর এই লরিগুলো যাতে ঠিক মতো চলতে পারে, সেজন্য সুরাবর্দীর সরকার, সেই সময় পেট্রোলের যথেষ্ট অনটন থাকা সত্ত্বেও, ঢালাও ভাবে, লুঠপাট ও হিন্দু হত্যার কাজে নিয়োজিত লরিগুলোর জন্য পেট্রোলের কূপন ইস্যু করেছিলো। এছাড়াও বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যবসারত ইস্পাহানি মির্জাপুর চা কোম্পানির মালিক ইস্পাহানি ছিলো সেই সময় সুরাবর্দী সরকারের চাউল সরবরাহকারী। ইস্পাহানি নিজের সব লরি মুসলিম লীগের লোকজনদেরকে ডাইরেক্ট এ্যাকশন ডে এর সময় ব্যবহারের জন্য দিয়ে দিয়েছিলো। এসব লরিতে মুসলিম লীগের পতাকা টানিয়ে তা সন্ত্রাসের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিলো। আর এসব লরি, যাদের পেট্রোলের কূপন ছিলো না, তারা জোর করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প থেকে পেট্রোল আদায় করেছিলো।

এ্যাকশনের পূর্বরাত্রি :

১৮ দিন ধরে সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়ার পর, ১৫ আগস্ট ১৯৪৬ তারিখে, মুসলিম লীগ ১৬ আগস্টে বাংলা বন্ধের ডাক দেয়, আর কোনো কারণ না থাকা সত্ত্বেও সুরাবর্দী ঐ দিন ঘোষণা করে সরকারী ছুটির। উদ্দেশ্য, যাতে নিরাপদে এবং নিশ্চিন্তে মুসলমানরা হিন্দুদের হত্যা করতে পারে ও তাদের ধন-সম্পত্তি লুঠ করতে পারে। এ্যাকশনে অংশগ্রহনে ইচ্ছুক মুসলমানদেরকে, কলকাতা শহরকে বিভিন্ন সেক্টরে ভাগ করে, একেক এলাকার দায়িত্ব, একেক এলাকার মুসলমানদেরকে দেওয়া হয়। যেমন- বেলগাছিয়ার মুসলমানদের উপর দায়িত্ব পড়ে পুরো বেলগাছিয়া এলাকাকে বিধ্বস্ত করার। রাজাবাজার এলাকার মুসলমানদের উপর দায়িত্ব পড়ে মানিকতলা থেকে শিয়ালদহ এবং বৌ বাজার ও কলেজস্ট্রিট এলাকা। কলাবাগান বস্তির মুসলমানদের জন্য নির্দিষ্ট হয় হ্যারিসন রোড, বড়বাজার, ঠনঠনিয়া, মার্কাস স্কয়ার, ফলপট্টি অঞ্চল। কলুটোলা, জ্যাকেরিয়া স্ট্রিট, নাখোদা মসজিদ, টেরিটি বাজার, ফিয়ার্স লেন এলাকার মুসলমানদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়- লালবাজার থেকে চিৎপুর এবং ক্যানিং ও এজরা স্ট্রিট অঞ্চল। এছাড়াও ধর্মতলা, তালতলা, ওয়েলেসলি, পার্কসার্কাস, বেলেঘাটা, বালিগঞ্জ, খিদিরপুর, ওয়াটগঞ্জ, মেটিয়াবুরুজের মুসলমানদের উপর ভার পড়ে স্ব স্ব এলাকার হিন্দুদেরকে হত্যা করার ও তাদের ধনসম্পত্তি লুঠপাট করার।
এছাড়াও এই হিন্দু হত্যার প্রত্যক্ষ পরিচালক জনৈক রহমান আলী ১৫ আগস্ট রাতেই তার লোক জন নিয়ে কোলকাতায় এসে পড়ে এবং মুসলমান গুণ্ডাদেরকে খিদিরপুর, কলুটোলা, রাজা বাজার, ধর্মতলা, পার্কসার্কাস, তালতলার বিভিন্ন মুসলমান বস্তিতে থাকার ব্যবস্থা করে। রহমান আলী সবাইকে বলে দিয়েছিলো, লুঠের মালের ভাগ কাউকে দিতে হবে না। আর খুন-ধর্ষণ-অপহরণে পুলিশ কোনো নাক গলাবে না, সরকার থেকে এসব দেখবে।
ভেতরে ভেতরে এসব প্রিপ্যারেশন নেওয়া হলো আর মুখে বলা হলো, ১৬ আগস্ট প্রত্যক্ষ সংগ্রামের দিন মুসলিম লীগের নেতা কর্মীরা এখানে সেখানে মিছিল মিটিং করে পাকিস্তানের পক্ষে জনমত গঠন করবে, এককথায় প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস হবে শান্তিপূর্ণ!
পূর্বেই উল্লেখ করেছি, মুসলিম লীগ ১৬ আগস্ট, বাংলা জুড়ে হরতালের / বন্ধের ডাক দেয় এবং সূরাবর্দীর সরকার দেয় সরকারী ছুটির ঘোষণা । মুসলিম লীগের এই যৌথ কর্মসূচীতে কংগ্রেস কিছুটা হৈচৈ করে বটে; কিন্তু আইনসভার চার দেয়ালের মাঝেই তা আটকে থাকে, এর বিরুদ্ধে জনমত গঠন করে এটাকে প্রতিরোধের কোনো চেষ্টাই কংগ্রেস করে নি। একমাত্র ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির হিন্দু মহাসভা জায়গায় জায়গায় প্রতিবাদ কর্মসূচী চালানোর চেষ্টা করে, কিন্তু কংগ্রেসের মতো ব্যাপক জনসমর্থন না থাকায় লোকজনের মাঝে তা বেশি প্রভাব ফেলতে পারে নি। প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস, শান্তিপূর্ণ ভাবে পালন করা হবে, জিন্না ও মুসলিম লীগের এই মিথ্যা আশ্বাসে ভুলে গান্ধী চুপ করে থাকে। আর নেহেরু বললো, যারা বন্ধ সমর্থন করে না, তারা যেন প্রতিদিনের মতোই হাট, বাজার, অফিস করে।
মুসলিম লীগের প্রত্যক্ষ সংগ্রাম নিয়ে সবচেয়ে অদ্ভুত স্ট্যান্ড নেয় কমিউনিস্ট পার্টি। ১৩ আগস্ট, ১৯৪৬ এ পার্টির নেতা জ্যোতিবসু এক প্রচার বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, "মূলত আমাদের পার্টির চেষ্টা হবে মুসলিম লীগের ডাকা বাংলা বন্ধের দিন রাজ্যের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা। তাই যেখানে প্রয়োজন আমরা বন্ধ সমর্থন করবো, আর যেখানে প্রয়োজন নয়, সেখানে বন্ধের বিরোধিতা করবো।" কমিউনিস্টদের চরিত্র আসলে মেয়ের, না পুরুষের, না অন্য কোনো কিছুর ? জ্যোতিবসুর এই মন্তব্য থেকে সেটা আপনারাই বিচার করে নিন। কেননা, কমিউনিস্টদের সিদ্ধান্ত ছিলো, যেখানে বন্ধের প্রয়োজন, অর্থাৎ মুসলিম এলাকায় ওরা বন্ধ সমর্থন করবে; আর যেখানে বন্ধের প্রয়োজন নেই, অর্থাৎ হিন্দু এলাকায় বন্ধ সমর্থন করবে না, বন্ধের প্রতিবাদ করবে। ১৪.৮.১৯৪৬ তারিখের অমৃতবাজার পত্রিকায় বেরিয়েছিলো কমিউনিস্ট পার্টির এই বেশ্যানীতির খবরটি।
কোলকাতার মেয়র ওসমান খান এবং তার সহযোগী সেরিফ খান, সক্রিয়ভাবে ডাইরেক্ট এ্যাকশন ডে এর এই হিন্দু হত্যাকে পরিচালনা করে। পূর্বেই উল্লেখ করেছি, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর ছিলো মূখ্যমন্ত্রী সুরাবর্দীর হাতে। এই এ্যাকশনে পুলিশ-প্রশাসনের কোনো সাহায্য যাতে হিন্দুরা না পায়, সেজন্য রাজ্যের ২৪টি পুলিশ হেড কোয়াটার্সের সব কয়টি থেকে হিন্দু পুলিশ অফিসার সরিয়ে ২২টিতে মুসলিম পুলিশ অফিসার এবং ২টিতে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান পুলিশ অফিসার নিয়োগ করে সুরাবর্দী। শুধু তাই নয়, ১৬ আগস্ট সকাল থেকেই সুরাবর্দী এবং মেয়র ওসমান খান বসেছিলো লালবাজার পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সে এবং সেখান থেকেই তারা নজর রাখছিলো মুসলমানরা কোন এলাকায় কত হিন্দু মারতে পারলো। এমনকি একটি থানা আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও সুরাবর্দী ঐ থানায় লালবাজার থেকে কোনো পুলিশ ফোর্স পাঠায় নি।
এ্যাকশন হলো শুরু :
মুসলিম শরীফের ৭৪৫ নং হাদিসে বলা আছে,
"নবী যখন কোনো জনপদ আক্রমন করতো, তখন ভোর বেলায় করতো।" কোলকাতাতেও এই সূত্রও খাটিয়েছিলো হিন্দু হত্যার খলনায়ক সুরাবর্দী এবং তার অনুসারীরা। ১৫ আগস্ট রাতে টার্গেটেড এলাকার সমস্ত মসজিদে মুসলমানদের এনে জড়ো করা হয়েছিলো। যাদের অস্ত্র ছিলো না, মসজিদেই তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছিলো। তারপর ফজরের (ভোরের) নামাজ শেষে খোলা তরবারি হাতে মুসলমানাদের নামিয়ে দেওয়া হয়েছিলো রাস্তায়।
অন্যদিকে নির্বোধ হিন্দুরা, মুসলমানদের এই দুই সপ্তাহের প্রস্তুতি দেখেও তার বিরুদ্ধে কোনো রকম ব্যবস্থা না নিয়ে, নিশ্চিন্ত ঘুম ঘুমিয়ে ১৬ আগস্ট সকালে যেই না রাস্তায় বেরিয়েছে, অমনি মুসলমানরা আক্রমন করে তাদের খুন করতে শুরু করে ।
প্রথম ছুরিকাঘাত করা হয় ভোর ৪.৩০ মিনিটে, ভোরের হাওয়া খেতে বের হওয়া এক হিন্দুকে। এরপর সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে বিপুল সংখ্যক মুসলমান আক্রমন করে মানিকতলা বাজার, ভাংচুর ও লুঠ করতে থাকে হিন্দুদের দোকান-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসময় দুজন হিন্দু মহিলা মুসলমানদের হাতে আক্রান্ত হয়, একজন হিন্দু পুরুষ ছুরিকাঘাতে নিহত হয়।
এরপর থেকে ব্রেকিং নিউজ হিসেবে লালবাজার পুলিশ হেড কোয়াটার্স এ যে খুন-জখম লুঠপাট ও অগ্নি সংযোগের খবর আসতে থাকে সেগুলো হলো-
সকাল ৭ টা: মানিকতলায় মুসলমানরা আক্রমণ করেছে।
সকাল ৭.৩০ : লালবাজার টেলিফোন অফিসের কর্মকর্তা, সার্জেন্ট ই উইয়লিয়াম, থানায় রিপোর্ট করে যে, সে যখন তার মহিলা সহকর্মীকে প্রহরা দিয়ে একটি পুলিশের গাড়িতে করে নিয়ে সেন্ট্রাল এভিনিউ দিয়ে যাচ্ছিলো, সেই সময় সেই গাড়িতেই মুসলমানরা হামলা করে এবং তাদেরকে আহত করে।
সকাল ৭.৩৫ : বউবাজার ও লোয়ার সার্কুলার রোডের সংযোগস্থল শিয়ালদহে বিরাট সংখ্যক মুসলমান, লাঠি, লোহার রড সহ বিভিন্ন অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে জমায়েত হয়েছে।
সকাল ৮.২৫ : টেরিটি বাজার মুসলমানরা আক্রমন করেছে।
সকাল ৮.৩০ : লোয়ার চিৎপুরে সিটি সিনেমা হল এলাকায় মুসলমানরা আক্রমন করেছে।
সকাল ৯টা : শিয়ালদহ এলাকার অবস্থা ভয়াবহ।
সকাল ৯.৫ : ওয়ার্ডস ইনস্টিউশন স্ট্রীটে মুসলমানরা আক্রমন করেছে।
সকাল ৯.১২ : রিপন স্ট্রিট, ওয়েলেসলি স্ট্রিট ও মল্লিকবাজার এলাকায় মুসলমানরা যাকে পাচ্ছে, তাকেই ছুরিকাঘাত করে হত্যা করছে।
সকাল ৯.৩০ : বড়তলা থানার পুলিশেরাই মুসলমানদের দ্বারা আক্রান্ত। থানা থেকেই সশস্ত্র পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়েছে লালবাজার পুলিশ হেডকোয়াটার্সে।
সকাল ৯.৫৫ : বড় তলা থানা থেকে আবারও সাহায্যের অনুরোধ।
সকাল ১০.১০ : দমদম রোডে কয়েকহাজার মুসলমান আক্রমন করেছে। হিন্দুরা বাধা দেবার চেষ্টা করলে, মুসলমানরা গুলি বর্ষণ করেছে।
সকাল ১০.১২ : গড়পার, যোগীপাড়া লেন অর্থাৎ ক্যানাল অঞ্চলে মুসলমানরা আক্রমন করেছে।
সকাল ১০.৩০ : হ্যারিসন রোডে গোলমাল। রিপন কলেজের সামনে দুপক্ষের লড়াই চলছে।
বেলা ১১.০৮ : ২১২, বিবেকানন্দ রোডের কমলা বস্ত্রালয়ে আগুন লাগানো হয়েছে।
বেলা ১১.১৫ : রিপন কলেজের সামনে সাংঘাতিক দাঙ্গা চলছে।
বেলা ১১.৫০ : মুসলমানদের একটি বিরাট দল শিয়ালদহের দিক থেকে দোকান পাট লুঠ করতে করতে বউ বাজারের দিকে আগুয়ান। আর একটি দল হিন্দু বিরোধী শ্লোগান দিতে দিতে এবং দোকান লুঠ করতে করতে আপার সার্কুলার রোড ধরে ময়দানের দিকে এগিয়ে চলেছে। লাঠি ও খোলা তরবারি হাতে মুসলমানদের আর একটি দল শ্যামবাজার থেকে হাতিবাগান পর্যন্ত এগিয়ে আসছে।
দুপুর ১.৩০ : ষষ্ঠীতলায় হিন্দুদের ঘরবাড়িতে অগ্নি সংযোগ। নারকেল ডাঙ্গা মেইনরোডের কাছে পড়ে আছে ৫ টি মৃতদেহ।
বিকেল ৩টা : গড়পার এলাকায় ভয়ানক হত্যাকাণ্ড শুরু হয়েছে। খালের পশ্চিমপাড়ে হিন্দুদেরকে পাইকারিভাবে হত্যা করা হচ্ছে। হিন্দুদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এই একই সময় ময়দানে মনুমেন্টের নিচে মুসলমানদের সমাবেশ চলছিলো। সেখান থেকে হিন্দু বিরোধী বক্তৃতা দেওয়া হচ্ছিলো, সমাবেশ শেষ হতে না হতেই মুসলমানরা হিন্দুদের দোকানে ভাঙচুর ও লুঠপাট করতে শুরু করে।
বিকেল ৪.৫ : লাইট হাউস সিনেমার পাশের সমস্ত হিন্দু মালিকানাধীন দোকান ভাঙা ও লুঠপাট চলছে।
বিকেল ৪.২০ : মুসলমানরা বেঙ্গল ক্লাব আক্রমন করেছে।
বিকেল ৪.৩০ : মেট্রো সিনেমার পাশের কে.সি বিশ্বাসে বন্দুকের দোকান ভেঙ্গে সমস্ত অস্ত্র লুঠ করে নিয়ে গেছে মুসলমানরা। ঐ অঞ্চলে আরো লুঠপাট চলছে।
বিকেল ৪.৪২ : ধর্মতলা রোডের বিখ্যাত কমলালয় স্টোর্স সম্পূর্ণ লুঠ হয়ে গেছে।
বিকেল ৫.১০ : কলকাতার সব বড় বড় রাস্তায় নৃশংস হত্যা ও লুণ্ঠন চলছে। ধর্মতলা স্ট্রিটে চাঁদনি চক বাজার মুসলমানদের দ্বারা লুণ্ঠিত। ইন্দ্র রায় রোডে সশস্ত্র মুসলমানরা বেরিয়ে আসছে।
মির্জাপুর স্ট্রীট ও আপার সার্কুলার রোডের সংযোগস্থল সশস্ত্র ও উত্তেজিত মুসলমানদের দ্বারা পরিপূর্ণ।
ওয়েলেসলি স্ট্রিটে বাটা সু কোম্পানি ও সেন এন্ড ল'র দোকান লুঠ করা হয়েছে।
৮ নং তারা চাঁদ দত্ত স্ট্রীটে গমের কলের হিন্দুদেরকে খুন করা হয়েছে।
১৫২ নং লোয়ার সার্কুলার রোডে লক্ষীকান্ত দাসের সাইকেল দোকান লুঠ করা হয়েছে এবং তাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রীটের প্রায় সমস্ত হিন্দু বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও ৫৫ ক্যানিং স্ট্রিটের এ্যালুমিনিয়ামের একটি দোকান লুঠ করা হয়। কয়েক শত মুসলমান ঐ দোকান লুঠ করে বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায় এবং যাওয়ার সময় ৬ জন নিহত এবং ৭ জন আহত হিন্দুকে তারা উঠিয়ে নিয়ে যায়।
মারকুইস স্ট্রিট, এলিয়ট রোড, কর্পোরেশন স্ট্রিট, ওয়েলেসলি স্ট্রিটে হিন্দুদেরকে পাইকারিভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং তাদের বাড়িঘর লুঠ করা হয়েছে।
ডি.সি নর্থ, খান সাহেব খলিলুর রহমান, তার এক রিপোর্টে ১৬ আগস্ট সম্পর্কে লিখে, "বিশৃঙ্খলা এবং অরাজকতা চলেছে ধর্মতলা স্ট্রিট, ওয়েলেসলি স্ট্রিট, মার্কেট স্ট্রিট, কর্পোরেশন স্ট্রিট, এবং ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে। দোকান লুঠ হয়েছে, খুন হয়েছে এবং হামলা এখনও চলছে। মিলিটারী মোতায়েন করা না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন।"
উপরের এই বর্ণনা শুধু মাত্র ১৬ আগস্টের। এরপর ১৭ তারিখ পুরো দিন এবং ১৮ আগস্ট দুপুর পর্যন্ত মুসলমানরা একইভাবে হিন্দুদের হত্যা, মেয়েদের ধর্ষণ, প্রাণের ভয় দেখিয়ে ধর্মান্তরের চেষ্টা, বাড়ি-ঘরে অগ্নি সংযোগ এবং লুঠপাট করতে থাকে।
এভাবে গৃহহীন হয় হাজার হাজার হিন্দু। ধর্ষিতা এবং অপহৃতা মহিলাদের কোনো হিসেব ছিলো না। কোলকাতার রাস্তায়, এখানে সেখানে জমে উঠেছিলো লাশের পাহাড়। এই খুন-হত্যার বিভৎসতা দেখে স্টেটসম্যান পত্রিকার বৃটিশ সাংবাদিক কিম ক্রিস্টেন লিখেছিলেন, "দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের (১৯৩৯-১৯৪৫) অভিজ্ঞতায় আমার স্নায়ু যথেষ্ট শক্ত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু যুদ্ধও এত পৈশাচিক নয়। এ এক মধ্যযুগীয় বর্বর উন্মাদনা এবং এটাকে পৈশাচিক রূপ দেওয়া হয়েছিলো।"
জ্যোতিবসু, পরে তার লেখা এক বইয়ে কলকাতার এই ডাইরেক্ট এ্যাকশন ডে এর কথা লিখতে গিয়ে লিখেছে, "প্রথম তিন দিনে প্রায় ২০ হাজার লোক নিহত হয়।" এছাড়াও অন্যান্য সূত্রে যে তথ্যগুলো পাওয়া যায়, তা হলো, শহরের সমস্ত ড্রেন হিন্দুদের লাশে ভর্তি হয়ে গিয়েছিলো। আর গঙ্গায় এত লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিলো যে, দুর্গন্ধে মাঝিদের নৌকা চালানো দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছিলো। বাঁশের লগি দিয়ে লাশ সরিয়ে সরিয়ে রাস্তা তৈরি করে মাঝিদেরকে নৌকা এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছিলো। এই দৃশ্যগুলো কল্পনা করুন আর ভাবুন, ১৯৪৬ সালে কোলকাতায় মুসলমানরা হিন্দুদের কত রক্ত ঝরিয়েছিলো ?
পরিস্থিতি কিছুটা শাস্ত হলে একই রকমের ছোরা বিভিন্ন এলাকায় পাওয়া গিয়েছিলো, বেলগাছিয়া ও খিদিরপুর এলাকা থেকে বিপুল পরিমান অব্যবহৃত তরোয়াল, লাঠি ও ছোরা উদ্ধার করা হয়েছিলো। এগুলো পুরোপুরি ব্যবহার হলে আরও কত হিন্দুর রক্ত ঝরতো সেই বিষয়টিও একবার কল্পনা করুন। আর একই জায়গা থেকে এরকম বিপুল পরিমান অব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার নিঃসন্দেহে এটাই প্রমাণ করে যে, হিন্দু হত্যার এই পরিকল্পনা ছিলো সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত এবং অস্ত্রগুলোও মুসলিম লীগ সরকারের পক্ষ থেকেই সরবরাহ করা হয়েছিলো। আরও একটা উল্লেখ যোগ্য লক্ষ্যণীয় ব্যাপার হলো, হত্যাকাণ্ডে কসাইখানার কসাইদের সক্রিয় ভূমিকায় লাগানো হয়েছিলো, যাতে কসাইদের জবাই করার দক্ষতাকে হিন্দুদের গলা কাটার জন্য ব্যবহার করা যায় এবং যত বেশি সম্ভব হিন্দুদেরকে যেন হত্যা করা যায়।
ডাইরেক্ট এ্যাকশন ডে এর প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল শ্রী গোলক বিহারী মজুমদার আই.পি.এস, "ছেচল্লিশের আতঙ্কের দিনগুলো ভুলি নি"- শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। সেই প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেছেন, "রাত ১১ / ১২টা নাগাদ ( ১৬ আগস্ট, ১৯৪৬) পাড়ায় ওরা আবার আক্রমন করলো। দেখলাম একদল লোক - তাদের হাতে ছোরা, তরোয়াল ইত্যাদি নানা অস্ত্রশস্ত্র। তারা চিৎকার করে বলছে, 'আজ তো এক এক হিন্দুকো কোরবানী করেগা।' মা, বাবা, দিদি, আমি, ভাগ্নে সবাই সন্ত্রস্ত। যেকোনো মূহুর্তে আমরা আক্রান্ত হতে পারি। সবচেয়ে বেশি ভয় দিদিকে নিয়ে। দিদি দেখতে খুব সুন্দরী। ভাবলাম দিদিই হবে ওদের প্রথম টার্গেট। হিন্দু মেয়েদের ওপর ওদের বরবারই লোভ। চার পাঁচদিন পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও আতঙ্ক কাটে নি। ইউনিভার্সিটি খোলা ছিলো। রাজা বাজারের উপর দিয়ে আমাকে যেতে হতো। একদিন দেখলাম, গরু কেটে যেমন হুকের সাথে ঝুলিয়ে রাখে, তেমনিভাবে দেখলাম, হাত পা কাটা হিন্দু মেয়েদের চুল বেঁধে সব ঝুলিয়ে রেখেছে। বিভৎস আর নৃশংস সেই দৃশ্য।"
দেবকুমার বসু, "১৯৪৬ এর দাঙ্গার কয়েকটা দিন" নামে একটি লেখা লিখেছেন ২০০৬ সালে; সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, "রাজা বাজারের সামনের ভিক্টোরিয়া কলেজ ও স্কুল। মেয়েদের কলেজ ও হোস্টেল একদম ফাঁকা, সব পালিয়েছে। কেবলমাত্র রাস্তার দোতলার জানালায় চারটি মেয়েকে খুন করে রাস্তার দিকে ঝুলিয়ে রেখেছে, কে বা কারা । এই নৃশংসতা ও বিভৎসতা যারাই দেখেছেন, তারাই অনুভব করতে পারেন যে, আমাদের মতো, যুবকেরা কেনো উত্তেজিত হয়ে ক্ষিপ্ত হবে। কেউ এই হোস্টেলের দিকে তাকালে রাস্তার দিকের জানালাগুলি ইট গেঁথে বন্ধ করে দেওয়া আছে, দেখবেন। আজ ষাট বছর পরেও বন্ধ আছে। কাদের ভয়ে ? "
তৎকালীন গভর্নর জেনারেল লর্ড ওয়াভেল তার ডায়েরিতে ৩.১১.১৯৪৬ তারিখে লিখেন, "পলাশীর যুদ্ধে যত লোক নিহত হয়েছে, তার চেয়ে বেশি লোক নিহত হয়েছে, গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং এ।"
গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং সম্পর্কে লিওনার্ড মোসলে তার বই "দ্য লাস্ট ডেজ অব ব্রিটিশ রাজ" এ লিখেছেন, "ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাওড়া পোল পার হয়ে হাওড়া থেকে দলে দলে আসতে শুরু করলো মারাত্মক অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত অবাঙ্গালি মুসলমান গুণ্ডারা এবং তারা মিশে গেলো চৌরঙ্গী, চিৎপুরে অপেক্ষমান মুসলমানদের সঙ্গে, শুরু হলো প্রলয়কাণ্ড- কোলকাতার মুসলমান অধ্যুষিত অঞ্চলের হিন্দু এলাকাগুলিতে। ইসলামের বিশ্বপ্রেম গ্রাস করে নিলো অরক্ষিত মুসলমান পরিবেষ্টিত হিন্দু পরিবারগুলোকে। আর্ত আহতদের আর্তনাদ, লাঞ্ছিত নারীর ভয়ার্ত ক্রন্দন চাপা পড়লো- লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান এবং আল্লাহো আকবার- এর উন্মত্ত কোলাহলে। আগুনে জ্বলতে থাকলো হিন্দুদের স্থাবর অস্থাবর সব কিছু, আকাশে উঠলো কুণ্ডলায়িত কালো ধোঁয়া।"
মুসলমানদের এই আক্রমন সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ দত্ত তার "দ্বিখণ্ডিতা মাতা ধর্ষিতা ভগিনী" পুস্তিকায় লিখেছেন, "১৬ আগস্টের ২/৩ দিন আগে থেকেই কলিকাতার নিকটবর্তী জেলাগুলো থেকে নৌকাযোগে হায়নার দল গঙ্গার ঘাটে ক্রমে বাসা বেঁধেছিলো। শ্রাবণের জমাট বাঁধা কালো মেঘের আড়াল ভেঙ্গে সেদিন সূর্য উঠেছিলো কলিকাতার আকাশে; আর রাতের আঁধারেই তৈরি হয়েছিলো শত শত ইসলামের বিশ্বস্ত সৈনিক সম্পূর্ণ অপ্রস্তত নিরীহ হিন্দুদের প্রাণ সংহার করতে।"

১৯৪৬ সালে কলকাতার হিন্দুদেরকে রক্ষা করেন শ্রী গোপাল মুখার্জি :

সূরাবর্দীর সরকারের পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় মুসলমানদের হাতে হিন্দুরা যখন একের পর এক মার খাচ্ছিলো, মরছিলো আর ধর্ষিতা হচ্ছিলো এবং এটা যখন লাগাতার তিন দিন ধরে চললো, তখন কিছু হিন্দু বুঝতে পারলো যে, হিন্দুদের বাঁচাতে সরকার পুলিশ কিছু করবে না। অতএব যা করার নিজেদেরকেই করতে হবে। এই ভাবনা নিয়ে একজন কসাই, নাম গোপাল, পাঁঠার মাংস বিক্রি করতো বলে যার নাম হয়েছিলো গোপাল পাঁঠা, সেই গোপাল পাঁঠা ১ দিনের মধ্যে ৮০০ হিন্দু ও শিখ যুবককে সাথে নিয়ে গড়ে তোলে এক বাহিনী এবং পাল্টা মুসলমানদের হত্যা করতে শুরু করে। এর পরই, খুব দ্রুত, পরিস্থিতি মুসলমানদের বিরুদ্ধে যেতে থাকে এবং সূরাবর্দী তার বিপদ বুঝতে পারে। তাই মুসলমানরা মার খেতে শুরু করলে সূরাবর্দী দ্রুত পুলিশ-প্রশাসনকে সক্রিয় করে এবং দাঙ্গা থামাতে বাধ্য হয়। এভাবে গোপাল পাঁঠা নামক এক বীরের নেতৃত্বে ১৯৪৬ এ রক্ষা পায় কোলকাতার হিন্দুরা ।
হিন্দুরা নিজের জাতির লোকের প্রতি কেমন অকৃতজ্ঞ আর বেঈমান, গোপাল পাঁঠার প্রতি হিন্দুদের এই দৃষ্টিঙ্গীতে তার কিছু প্রমাণ পাওয়া যায়। যার কারণে কোলকাতার হিন্দুরা রক্ষা পেলো, সেই তাকেও পরবর্তীতে কোনো হিন্দু তার মূল্যায়ন করা দূরে থাক, তার নাম পর্যন্ত উচ্চারণ করে নি। গোপাল পাঁঠার জীবদ্দশায় সম্ভবত একজন সাংবাদিক তার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলো। অথচ প্রতিবছরই ১৬ আগস্ট আসে, যায়; কিন্তু তাকে নিয়ে আধ মরা নামের বুড়োগুলোর কারো কোনো মাথাব্যথা নেই! হিন্দুদের এই অকৃতজ্ঞতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলো বাংলাদেশ মাইনোরিটি ওয়াচের শ্রদ্ধেয় রবীন্দ্র ঘোষও, তিনি আমাকে বলেছিলেন, অনেক কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করে যখন কোনো মেয়েকে মুসলমানদের হাত থেকে উদ্ধার করে তাদের পরিবারে পৌঁছে দিই, তখন অনেকেই ধন্যবাদ পর্যন্ত দেয় না। এই ক্ষোভ এবং লজ্জা আমারও, কিন্ত কাকে দোষ দেবো ? আমি নিজেই তো হিন্দু সমাজের একজন সদস্য। হিন্দুদের জন্য কাজ করতে হলে এদেরকে নিয়েই কাজ করতে হবে আর অল্প অল্প করে সিস্টেমটাকে পাল্টাতে হবে। আজ আমি বুঝেছি, কাল আপনি বুঝবেন, পরশু আরেকজন বুঝবে এভাবেই হিন্দু সমাজের দুর্বলতাগুলো কেটে যাবে এবং সমাজ আস্তে আস্তে পরিবর্তনের পথে চলবে। হতাশ হওয়ার কিছু নেই, পরিবর্তন এক দিনে হয় না, আর এ ****************************************

( অসম্পূর্ণ )

হিন্দু বনাম ...


                   হিন্দু বনাম ...


                   ফেসবুক থেকে শেয়ার করেছেন                প্রণব কুমার কুণ্ডু


হিন্দু মেয়েদের এক পা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে তো অন্য পা মুসলমানদের ঘরে :
প্রায় শতভাগ ক্ষেত্রে মুসলমানদেরকে বিয়ের পরিণতি একটি হিন্দু মেয়ের জন্য হয় ভয়াবহ, তারপরও সেটা আমাদের হিন্দু মেয়েরা যেমন বোঝে না; তেমনি, মেয়েকে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো অভিভাভাবকরাও বোঝেনা যে, মেয়েকে প্রকৃত হিন্দু না বানিয়ে বা হিন্দু ধর্মের শিক্ষা না দিয়ে তাকে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠালে এ ধরণের ঘটনা ঘটবেই। হিন্দুদের উদাসীনতার কারণেই হিন্দুসমাজ আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
একসমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ৯০% হিন্দু মেয়ের মুসলিম বয় ফ্রেন্ড আছে, এরা সবাই যে লাভ জিহাদের ফাঁদে প’রে হিন্দুসমাজ ও বাড়ি ছাড়ে তা কিন্তু নয়, কিন্তু এর মধ্যে প্রতি ১০ জনে একজন মেয়ে তো এ ঘটনা ঘটাচ্ছে, এটা কি সমাজের জন্য একটি বিশাল ক্ষতি নয় ? আর এই ১০ জনের একজন যে আপনার মেয়ে বা আপনার পরিবারের আত্মীয় স্বজনের মেয়ে হবে না, তার গ্যারান্টি কী ? একটা কথা মনে রাখবেন, মুসলমানদের উদ্দেশ্য হলো যেকোনো প্রকারে হিন্দু সমাজকে ধ্বংস করা, এই লাভ জিহাদ তার একটা লেটেস্ট সিস্টেম। তাই অপনার পরিবারের মেয়েরা যদি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে, আপনি কিছুতেই এর ছোবল থেকে নিরাপদ নয়।
মুসলমানদেরকে বিয়ের পরিণতি যে কী, সেটা বোঝার জন্য শুধু মাত্র গাইবান্ধা জেলার ১০ জন মেয়ের পরিণতির কাহিনী পড়ুন, বুঝতে পারবেন লাভ জিহাদের শিকার আপনার মেয়ে বা বোনের পরিণতি কী হতে যাচ্ছে-
এরা অধিকাংশই উচ্চশিক্ষিত ও বিত্ত্ববানলাভ জিহাদ সম্পর্কে উদাসীন বাবা মায়ের আদরের কন্যা সন্তান। এবার দেখুন ধর্মান্তরিত হওয়ার তাদের জীবন কিভাবে কাটছে বা কেটেছে-
১। চন্দনা রায়।
বর্তমানে সামান্য ৩ তালাকে বিবাহ বিচ্ছেদ প্রাপ্ত।
২। মমি সেনগুপ্ত।
বর্তমানে তালাক প্রাপ্ত হওয়ার আগেই গর্ভে ৩ মাসের অন্তঃস্বত্বা অবস্থায় আত্মহত্যা।
৩। ববি রানী সরকার
বর্তমানে তালাক প্রাপ্ত।
৪। মলি রানী স্মৃতি
বর্তমানে তালাক প্রাপ্ত, এজন্যই তালাক প্রাপ্ত ১ কন্যা সন্তানের জম্ম দিয়েছিল।
৫। শিল্পী রানী সরকার
সাত পাকে ঘুরে বিয়ে করা স্বামীকে ছেড়ে সামান্য ৩ কবুলে বিয়ে করা মুসলিম স্বামীর ঘরেও সুখ জোটেনি এই মহিলার।
৬। অর্পিতা সূত্রধর
বর্তমানে তালাক প্রাপ্ত কিন্তু কোথাও যাওয়ার যায়গা না থাকায় শত পাশবিক নির্যাতন সহ্য করেও নির্যাতিত স্বামীর ঘরে অবস্থান করছে।
৭। সুমি চক্রবর্তী
দীর্ঘ ৪ বছর সংসার করার পর বিচ্ছেদ।
৮। মনিকা অধিকারী
প্রথমে বড় ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে তারপর ছোট ভাইয়ের সাথে পালিয়ে নিকাহ, বর্তমানে নিখোঁজ।
৯। বন্দনা রানী সরকার
বর্তমানে বিবাহ বিচ্ছেদ। কিন্তু দমে থাকার মেয়ে নন, তাই ১ সন্তানকে ফেলে রেখে অন্য একজনের সাথে সংসার পেতেছে।
১০। মৌসুমি বিশ্বাস।
আপাতদৃষ্টিতে ভালো এজন্য আছে যে, চাকুরি করে স্বামীকে খাওয়ায়, সংসার চালায়। কিন্তু ১০ এর মধ্যে ৯ জনের যা পরিণতি, তার এর হতে কতক্ষণ ?
মেয়ে, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কিভাবে মুসলমানদের ফাঁদে পড়ছে, সেটা বোঝার
জন্য পড়ুন নিচের এই পোস্টটি :
মেয়ের উচ্চ শিক্ষা এবং হিন্দু পরিবার :
উচ্চ শিক্ষা দেওয়ার জন্য মেয়েকে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে বসে আছেন ? তাহলে কাঁদার উপযুক্ত আপনিই, বুঝতে পারছেন না তো কী বলছি, পড়ুন নিচের রিপোর্টটি-
রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীতে বান্ধবীকে বিভিন্ন কায়দায় প্ররোচিত করে ধর্মান্তরিত করে জঙ্গীবাদে সম্পৃক্ত করার অভিযোগ গত ১৪ নভেম্বর পবা থানায় একটি মামলা হয়েছে মামলা নম্বর ১৬।
মামলায় বাদী ও আলোচিত কলেজ ছাত্রীর পিতা ধরনী কুমার ঘোষ এখন তার কন্যা তনুকে ফিরে পেতে বিভিন্ন জায়গায় ধর্না দিচ্ছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, তার মেয়ে তনুকে যারা মুসলিম ধর্মে দিক্ষীত করে জঙ্গীবাদে
উদ্বুদ্ধ করেছে তারা অত্যন্ত শক্তিশালী সিন্ডিকেট।
পুলিশ জানায়, রাজশাহী নওহাটা এলাকার জনৈক কলেজ পড়ুয়া মেয়ে তনুকে তার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী মিতু প্রথমে দোয়া দরুদ মুখস্ত করায় পরবর্তীতে নামাজ পড়ানো শিখায়।
গত বছর মিতু ও তার আলোচিত বান্ধবী তনু এক বছর সময় ধরে নগরীর একটি মেসে থাকাকালে মিতু তনুকে ইসলামী চিন্তা চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে।
ঠিক ঐ সময় তনুকে রেটিনা কোচিং সেন্টারে বিনা খরচে ভর্তি করায় মিতুসহ তার সহযোগীরা এতে কোচিং সেন্টারে সম্পৃক্ত আশিক ও জহুরুলের নাম পাওয়া যায়।
তনুকে মেডিক্যালে ভর্তি করিয়ে দেয়ার নামে চলে তনুর ওপর জঙ্গীবাদ খড়গ। তনুকে হিন্দু থেকে পুরোদস্তুর মুসলমানে রুপান্তরের চেষ্টা চালাতে থাকে মিতু এবং তার সহযোগীরা।
পরবর্তীতে গত ৬ নভেম্বর, 2016 তে তনুকে এভিডেভিট করিয়ে আয়েশা সিদ্দিকা নাম দিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করানো হয়। এরপর গত ১০ নভেম্বর তনু ওরফে আয়েশা সিদ্দিকা নিখোঁজ হয়।
নিখোঁজের পর তনুর বাবা পবা থানায় মামলা দিতে চাইলে পুলিশ মামলা না নিয়ে একটি ডায়েরী করেন। তনুর খোঁজে পবা থানা পুলিশ একদিন মিতুর বাড়ী তল্লাসী চালায় কিন্তু তনুর সন্ধান পাওয়া যায়না।
পরবর্তীতে তনুর পিতা ধরনী কুমার ঘোষ বাদী হয়ে পবা থানায় গত ১৪ নভেম্বর একটি মামলা দায়ের করলে ঐ দিনই পুলিশ মিতু ও তার ভাই মোমিনকে গ্রেপ্তার করে।
পরদিন থেকেই খোদ পুলিশকে জানানো হয় তনু রাজশাহীতে আসছে এবং পুলিশ বলতে থাকে তনু উদ্ধার হবে যে কোন সময়। পরবর্তীতে তনুকে গত ১৭ নভেম্বরে পবা থানা যুবলীগ সভাপতি এমদাদুল হকের হেফাজত থেকে উদ্ধার করে।
এমদাদ পুলিশকে জানায়, তনু একাই তার কাছে এসেছে। মিতু ও তার ভাই মোমিন গ্রেপ্তারের পর থেকেই যুবলীগ নেতা এমদাদ তদবির চালাচ্ছিলেন।
তনুকে উদ্ধারের পর তাকে নিয়ে আসা হয় রাজশাহীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে। তনু পুলিশকে কোন সদুত্তর না দিয়ে তার নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে নানা ধরনের অবান্তর কথাবার্তা বলে।
সে তার পরিবারের সদস্যদের ওপর নানা অভিযোগ দিয়ে সে নিজেই ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছে বলে জানায়। অথচ তার বক্তব্য সম্পূর্ন মিথ্যা সে ব্যাপারে বহু তথ্য পুলিশের কাছে রয়েছে।
শুধু তাই নয় তনুকে ধর্মান্তরিত করে জঙ্গী দলে ভেড়ানো হয় বলেও ধারনা পুলিশের। তনুকে উদ্ধারের পর ১৭ নভেম্বর বিকেলে তনুকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
বিচারক তার জবানবন্দী গ্রহন করেন। তনু নিজ জিম্মায় চলে যেতে চাইলে আদালত তাতে সম্মতি দেন। যুবলীগ নেতা এমদাদুল হক তনুকে তার জিম্মায় নেয়ার জন্য অনুরোধ করলে তনু তার সাথে যেতে রাজী হয় এবং সন্ধ্যায় ৭টার দিকে তনু যুবলীগ নেতা এমদাদের মোটর সাইকেলে উঠে আদালত চত্ত্বর ত্যাগ করে। এসময় যুবলীগ নেতা এমদাদের সাথে আরো কয়েক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
তারা সকলেই গ্রেপ্তারকৃত মিতু ও মোমিনের পক্ষের লোকজন। বিজ্ঞ আদালতে আসামী পক্ষ এবং বাদী পক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন তনুর বাবা মা সহ পরিবারের সদস্যরা।
এসময় আদালতে তনুর পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখা যায়। সবকিছু উপেক্ষা করে এমদাদ তনুকে নিজ জিম্মায় কেন নিলেন এতে তার স্বার্থ কি এটা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ মিতু ও মোমিন গ্রেপ্তারের পর যুবলীগ নেতা এমদাদের থানায় তদবির পরবর্তীতে নাটকীয় ভাবে নিখোঁজ তনুকে হাজির করানো এবং তনুকে আদালত নিজ হেফাজতে নেয়ার প্রকৃত কারনও রহস্য উম্মোচনের চেষ্টা চালাচ্ছে।
তনুকে ধর্মান্তরিত করা, রেটিনা কোচিং এ বিনা পয়সায় ভর্তি করা এবং রহস্যজনক নিখোঁজ হওয়া অত:পর নাটকীয় ভাবে প্রত্যাবর্তন এসব প্রশ্নের উত্তর না মিলতেই যুবলীগ নেতা এমদাদের তনুকে নিজ জিম্মায় গ্রহনের কারন উদঘাটন হওয়া জরুরী।
একই সাথে তনু জঙ্গীবাদে সম্পৃক্ত কিনা তাও যাচাই বাছাই করা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ঘটনাটি রাজশাহী পুলিশ সুপার মোয়াজ্জেম হোসেন ভূইয়া ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী বিশেষ ভাবে নজরদারীতে রাখায় অচিরেই রহস্য উদঘাটিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তনুর পরিবার।
এইবেলাডটকম/অরুন/গোপাল
-----------------------------------------
এই রিপোর্টে পরিষ্কার যে, হিন্দু ছেলে-মেয়েরা যখন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে মুসলিম ছেলে-মেয়েদের সাথে হোস্টেল বা মেসে থাকতে বাধ্য হয়, তখন তারা প্রথমে ঐ হিন্দু ছেলে-মেয়েটিকে হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে নানা প্রশ্ন করে বিব্রত ও হেয় করে; কারণ, পারিবারিক ও সামাজিকভাবে হিন্দু ধর্ম শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় হিন্দু ছেলে মেয়েদের ধর্ম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকে না, এতে ঐ হিন্দু ছেলে-মেয়ের কাছে এক সময় তার ধর্ম ভুয়া মনে হয় এবং এভাবে আস্তে আস্তে সে ইসলামের দিকে ঝুঁকতে থাকে।
যখন কোনো হিন্দু ছেলে মেয়ে ইসলামের ব্যাপারে পজিটিভ মনোভাব দেখায়, তখন তাকে মুসলিম ছেলে মেয়েরা দেয় নানা সুযোগ সুবিধা, যেমন এই মেয়েটিকে ফ্রিতে তারা মেডিক্যাল কোচিং করাসহ অন্যান্য আর্থিক সুযোগ সুবিধা দিয়েছে।
হিন্দু ছেলে মেয়েদেরে মুসলমান বানাতে মুসলমানদের এত উৎসাহ বা আগ্রহ কেনো ?
ছোট বেলা থেকেই প্রত্যেকটা মুসলিম ছেলে মেয়েকে পরিবার থেকে এই শিক্ষা দেওয়া হয় যে, কোনো একজন হিন্দুকে মুসলমান বানাতে পারলে তার বিনা বিচারে বেহেশত নিশ্চিত; কারণ, একজন হিন্দুকে মুসলমান বানানো হলো হজের সমান ছোয়াব। এ কারণে প্রত্যেকটি মুসলমানের টার্গেট থাকে হিন্দু ছেলে মেয়ে, অনবরত তারা তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দেয় এবং ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে নানা নসিহত করতে থাকে। একারণেই কোনো হিন্দু ছেলে যদি কোনো মুসলিম মেয়ের প্রতি আগ্রহ দেখায়, তাহলে সহজেই সেই মেয়েটি তার প্রেমে সাড়া দেয়, আর কোনো হিন্দু মেয়ে যদি কোনো মুসলিম ছেলের প্রতি আগ্রহ দেখায়, তাহলে তো কোনো কথা ই নেই, ছেলের পুরো পরিবার লেগে থাকে ঐ হিন্দু মেয়েটির পেছনে, তাকে ইসলামে কনভার্ট করার জন্য; কারণ, এটা তাদের কাছে বেহেশত নিশ্চিত করার জন্য মহা পুন্যের কাজ, এমন হলে মুসলিম পরিবারে হিন্দু মেয়েদের আদর যত্নের কোনো শেষ থাকে না। এই ছলনায় ভুলে যখনই কোনো হিন্দু মেয়ে ইসলামের ফাঁদে পা দিয়ে নিজের ঘর-বাড়ি বাপ মাকে ছাড়ে, তার কিছু দিন পরেই সে বুঝতে পারে ইসলাম ও মুসলমানদের আসল রূপ, কিন্তু পরিবার ও আত্মীয়স্বজন ত্যাগ করা মেয়ের তখন সেগুলো মেনে নেওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।
লাভজিহাদের ফাঁদে পড়ে হিন্দু ছেলেরা কনভার্ট হয় বাধ্য হয়ে, কারণ তার প্রেমিকাকে জীবনসঙ্গিনী হিসেবে পাবার আর অন্য কোনো পথ থাকে না তার কাছে, এর মূল কারণ মুসলিম সমাজের ছাড় না দেওয়ার মনোভাব এবং সামাজিক শক্তি। এক কথায় মুসলিম সমাজের শক্তির কাছে ঐ হিন্দু ছেলেটি আত্মসমর্পন করে। এই আত্মসমর্পন না করেও তার কোনো পথ থাকে না; কারণ মুসলিম সমাজের হিংস্রতা ও অসহযোগিতার কারণে কোনো হিন্দু ছেলের পক্ষে কোনো মুসলিম মেয়েকে বিয়ে করে হজম করা সম্ভব হয়ে উঠে না। কোনো হিন্দু ছেলে যদি কোনো মুসলিম মেয়েকে ভাগিয়ে এনে বিয়ে করে, তাহলে সে সর্বত্র শিকার হবে অসহযোগিতার, তার চাকরি চলে যাবে, মুসলিম বন্ধু বান্ধব শত্রুতে পরিণত হবে, তার পরিবারের সামাজিক স্বাধীনতা নষ্ট হবে, এমনকি সে খুনও হয়ে যেতে পারে। এতসব প্রতিকূল অবস্থাকে মোকাবেলা করা কার পক্ষে সম্ভব ? তাই হিন্দু ছেলের সাথে কোনো মুসলিম মেয়ের সম্পর্ক থাকলেও, হয় সেই ঘটনায় তাকে ধর্মত্যাগ ক'রে মুসলিম হয়ে মেয়েটিকে হাসিল করতে হয়, না হলে তাকে সেই মেয়েটিকেই ত্যাগ করতে হয়।
কিন্তু কোনো হিন্দু মেয়ে যদি কোনো মুসলিম ছেলের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে, তাহলে এখানে মেয়েটিকে ইসলাম গ্রহন করা ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পথ থাকে না; এই ক্ষেত্রে মেয়েরা কনভার্ট হয়- সস্তা প্রেমের আবেগে, লাভ জিহাদের ফাঁদে প'ড়ে, ইসলাম ও মুসলমানদের নোংরামিকে না জানার ফলে।
কোনো হিন্দু ছেলে মুসলিম মেয়ের ফাঁদে পড়লেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ছেলেরা নানা বিষয় চিন্তা করে সেই ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসে; কিন্তু কোনো হিন্দু মেয়ে মুসলিম ছেলেদের ফাঁদে পড়লে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েরা কনভার্ট হতে বাধ্য হয়।
লাভ জিহাদ হিন্দু সমাজের একটি মারাত্মক ক্ষত, এই ক্ষত থেকে রক্ষার একমাত্র উপায় হলো পরিবার থেকেই হিন্দু ছেলে মেয়েদেরকে ধর্ম শিক্ষা প্রদান করা এবং একই সাথে ইসলাম ও মুসলমানদের জঘন্য মন-মানসিতা সম্পর্কে জানিয়ে তাদেরকে সতর্ক করা। এককথায়, ছেলে-মেয়েদেরকে মানবধর্ম না শিখিয়ে হিন্দু ধর্ম শেখানো, তাহলে আদালতে গিয়ে আপনার মেয়ে বলবে না যে, আমি আমার মা বাবাকে চিনি না বা আমি স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহন করেছি; আর আপনাদেরকে আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙ্গেও পড়তে হবে না। কারণ, মনে রাখবেন ১৮+ বয়সী একটি মেয়ের কাছে বাংলাদেশের হিন্দু পিতা-মাতারা সবচেয়ে অসহায়; মেয়ে যদি একবার হাতের বাইরে চলে যায়, না পাবেন কোনো আইনী সাহায্য, না পাবেন কোনো সামাজিক সহায়তা; কারণ, আপনার হিন্দুসমাজ দুর্বল, তাই সেই সমাজের শক্তি দিয়ে আপনি মেয়েকে উদ্ধার করতে পারবেন না, আর তাকে উদ্ধার করত পারলেও সমাজে পুনরায় তাকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন না; কারণ, হিন্দু ছেলেরা ভাঙ্গা গ্লাসে জল খেতে পছন্দ করে না, এর মূল কারণ, হিন্দু সমাজ মনে করে মেয়েরা কাচের পাত্র, একবার কারো সাথে রাত কাটালেই তা ভেঙ্গে যায়, আর একবার ভেঙ্গে গেলে তা আর জোড়া লাগে না। অন্যদিকে, মুসলিম সমাজের সবাই আপনার মেয়েকে গেলার জন্যই বসে আছে, আপনি কাঁদবেন না তো কে কাঁদবে ? তাই সাবধান হোন, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মেয়েদের ব্যাপারে এক দিনের জন্য দুশ্চিন্তা মুক্ত হয়েছেন, তো মরেছেন; কারণ, আপনার মেয়েকে হাত করে হিন্দু সমাজকে ধ্বংস করার জন্য প্রতিটি মুসলমান হাত ধুয়ে রেডি হয়ে বসে আছে।
কিভাবে বুঝবেন- আপনি, আপনার মেয়ে এবং আপনার পরিবার লাভ জিহাদের ছোবল থেকে নিরাপদ ?
যখন আপনার মেয়ের চোখে মুখে দেখবেন মুসলমানদের প্রতি একরাশ ঘৃণা, তখনই বুঝবেন, আপনি সেফ জোনে, তখন নিশ্চিন্ত হয়ে ঘুমান, কোনো আপত্তি নাই।
এখন কেউ প্রশ্ন করতে পারেন, তাহলে কি ছেলে মেয়েদেরকে আমরা, মানুষকে ঘৃণা করতে শেখাবো ?
আমি মানুষকে তো ঘৃণা করতে শেখাতে বলি নি, বলেছি মুসলমানদের ঘৃণা করা শেখাতে; কারণ, মুসলমানরা মানুষ নয়, প্রত্যেকে এক একটা জানোয়ার। না হলে তারা কিভাবে, তুচ্ছ কারণে হাজার হাজার লোক একত্রিত হয়ে, নাসিরনগরের মতো ঘটনায়, একযোগে অসহায় নিরস্ত্র হিন্দুদের উপর হামলা করে তাদের বাড়ি-ঘর লুঠ করতে পারে ? পৃথিবীতে আর একটাও এমন জাতি দেখাতে পারবেন, যারা এই ভাবে কারো উপর হামলা করে ? দেখাতে পারবেন, যদি আপনারা কোনো বনজঙ্গলের হিংস্র প্রাণীর উদাহরণ দেন, যেখানে একদল জানোয়ার হয়তো কোনো তৃণভোজীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে।
এখানে মানবতাবাদী হিন্দু এবং মুসলমানদেরকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি যে, কোরান হাদিসের রেফারেন্স দিয়ে কেউ যদি প্রমান করতে পারে যে, মুসলমানরা মানুষ, তাহলে আমি শুধু ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে লেখা ই ছেড়ে দেবো না, ইসলাম গ্রহন করে মুসলমান হয়ে যাবো। যদি কেউ এই চ্যালেঞ্জটি গ্রহন করতে চান, তাহলে হাত তুলে, Sorry, মেসেজ বা কমেন্ট করে সাড়া দেবেন।
শেষে একটা কথা মনে রাখবেন, আপনার মেয়ে হিন্দু সমাজকে ত্যাগ করে শুধু যে আপনাকেই দুঃখ কষ্ট দেবে বা আপনার পরিবারেরই চোখের জল ঝরাবে, তা কিন্তু নয়, পুরো হিন্দু সমাজকেই সে যন্ত্রনা দেবে; তাই আপনার একটু সতর্কতা এবং সচেতনতা, শুধু আপনাকে এবং আপনার পরিবারকেই নয়, বাঁচাতে পারে সমগ্র হিন্দু সমাজের মান সম্মানকে।
যখন একটি হিন্দু মেয়ে ফাঁদে পড়ে ভুল করে ধর্ম ত্যাগ করছে, তখন সেটা শুধু মেয়েটির পরিবারেরই ব্যাপার নয়, ব্যাপার সমগ্র হিন্দু সমাজের। তাই লাভ জিহাদ বন্ধ করার জন্য আমাদের সকলকেই সচেতন হতে হবে ও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে; এমন তো নয় যে, মেয়েটি মুসলমান এলাকায় গিয়ে মুসলমানদের সাথে প্রেম করে, আর কোনো হিন্দুর তা চোখে পড়ে না ? প্রেম করলে তা সমাজের মধ্যেই করে, আর সেই দৃশ্য কোনো না কোনো হিন্দুর চোখে ঠিকই পড়ে। যখন আপনার চোখে এই ধরণের ঘটনা ধরা পড়বে, তখন যদি সেই ঘটনাকে এড়িয়ে না গিয়ে প্রকৃত হিন্দুর মন নিয়ে সেই ঘটনাটিকে দেখুন এবং সেই মতো ব্যবস্থা নিন, তাহলে কিন্তু হিন্দু সমাজ একটি বিপর্যয় থেকে বাঁচতে পারে।
অনেকে চোখের সামনে এসব ঘটনা দেখেও কোনো স্টেপ নেয় না বলেই এই ধরণের ঘটনাগুলো ঘটে আর তার ফল ভোগ করতে হিন্দু পুরো হিন্দু সমাজকে।
কোনো কোনো হিন্দুর এই ধারণা আছে যে, কারো মেয়ে সম্পর্কে এই ধরণের কথা তাকে জানালে, সে মাইন্ড করবে এবং মেয়ের নামে অপবাদ বা বদনাম দিচ্ছে বলে দোষারোপ করবে। প্রথমেই বলছি, আপনার এই ধারণাটাই তো ভুল, আপনি যদি কারো শুভাকাঙ্ক্ষী হোন, তাহলে সে আপনার সম্পর্কে এমন ভাববে কেনো ? যদি এই ধরণের ইনফরমেশন কাউকে দিতে হয়, সেটা দেবেন মেয়ের বাপ বা বড় ভাইকে, ভুলেও মেয়ের মা বা বাড়ির অন্য কোনো মেয়েকে দিতে যাবেন না; কারণ তাহলে তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে; কারণ, মেয়ে সম্পর্কে কোনো মা ই খারাপ কথা শুনতে রাজী নয়, মেয়ে যদি পতিতাও হয়, মায়ের কাছে সেই মেয়ে ধোয়া তুলসী পাতা; তাই মেয়ে সম্পর্কে মাকে কোনো কথা বলতে গেলেই, সাথে সাথে সে আপনার মুখের উপর বলে দেবে, আপনি আমার মেয়ের সম্পর্কে বদনাম করতে এসেছেন ? এর পর আপনার মুখে আর কোনো জবাব থাকবে না, যে মন-মানসিকতা ও উদ্যম নিয়ে হিন্দু সমাজের মঙ্গলের জন্য কাজটা করতে গিয়েছিলেন, আপনার সেই মন ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।
এমন ঘটনার ইঙ্গিত পেলেই, বলবেন, মেয়ের বাবা বা বড় ভাইকে এবং সবার সামনে নয়, একা একা কোথাও নিরিবিলি স্থানে ডেকে নিয়ে গিয়ে, যেন আপনাদের কথা কেউ শুনতে না পায়। যদি প্রয়োজন হয়, একটু ভূমিকা করে বলবেন, আপনার মেয়ে বা বোন তো শুধু আপনারই নয়, আমারও, তাই ওর কিছু খারাপ হলে সেটা শুধু আপনারই খারাপ লাগবে না, লাগবে আমারও, তাছাড়া হিন্দু সমাজের মুখ পুড়লে সেই কলঙ্ক আমারও, তাই আপনাকে বিষয়টা জানাতে এসেছি, এতে আমি যে আপনার ক্ষতি চাই না, ভালো চাই, এটা নিশ্চয় আপনি বুঝতে পেরেছেন? এর পর সে আপনার কথার আর কোনো বিরোধিতা করতে পারবে না, তারপর তাকে সবকথা বুঝিয়ে বলুন। আর যদি মেয়ের বাবা বা বড় ভাইকে নিজে সরাসরি না বলতে পারেন, তাহলে এমন কাউকে সেই কথাটা বলুন, যে ঐ মেয়ের বাবা বা বড় ভাইয়ের কাছে কথাটা পৌঁছে দিতে পারে, এককথায় যে কোনো প্রকারেই হোক, মেয়ের বাপ বা বড় ভাইয়ের কাছে খবরটা পৌঁছান, তাহলেই শুধু সেই পিতা বা বড় ভাই ই নয়, পুরো হিন্দু সমাজ আপনার কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবে। আর চোখের সামনে লাভজিহাদকে ঘটতে দেখে যদি চুপ করে থাকেন, তাহলে তা বাস্তবায়ন হবে, সেই কষ্ট শুধু সেই পরিবারই পাবে না, হিন্দু সমাজের সদস্য হিসেবে কষ্ট পাবেন আপনিও, আর কুলাঙ্গার হিন্দু হিসেবে আপনি যদি কষ্ট নাও পান, তবু হিন্দু সমাজের সদস্য হওয়ায় বাজারের মধ্যে মুখ পুড়বে আপনারও, সেই মুখ পোড়া থেকে বাঁচতে অন্তত কিছু কাজ করেন।
জয় হিন্দ।

From: Krishna kumar das

💜 জয় হোক সনাতন ধর্মের !

আরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন ক