সোমবার, ২ জুলাই, ২০১৮
মানুষের স্নায়ুতন্ত্র
লেবেলসমূহ:
মানুষের স্নায়ুতন্ত্র
শ্রীকৃষ্ণ
শ্রীকৃষ্ণ
শেয়ার করেছেন প্রণব কুমার কুণ্ডু
সাধক বামা খ্যাপার দুর্লভ চিত্র
সাধক বামা খ্যাপার দুর্লভ চিত্র
শেয়ার করেছেন প্রণব কুমার কুণ্ডু
লেবেলসমূহ:
সাধক বামা খ্যাপার দুর্লভ চিত্র
সাঁওতাল বিদ্রোহ ( দুই )
সাঁওতাল বিদ্রোহ ( দুই )
শেয়ার করেছেন প্রণব কুমার কুণ্ডু
সাঁওতাল বিদ্রোহ বা সান্তাল হুল এর সূচনা হয় ১৮৫৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ ও বিহারের ভাগলপুর জেলায়। ইংরেজ আমলে স্থানীয় জমিদার, মহাজন ও ইংরেজ কর্মচারীদের অন্যায় অত্যাচারের শিকার হয়ে সাঁওতালরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলে।এটি ছিল তাদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র গণসংগ্রাম। তাদের এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয় সিধু, কানু, চাঁদ প্রমুখ। ১৭৯৩ সালে লর্ড কর্নওয়ালিশের প্রবর্তিত চিরস্থায়ি বন্দোবস্তের ফলে তাদের উপর অত্যাচার বেড়ে গিয়েছিল। তাই সিপাহী বিদ্রোহের আগে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সাঁওতালরা সোচ্চার হয়েছিল।
১৮৫৫ সালে সাঁওতালরা সশস্ত্র সংগ্রাম করেছিল তাদের অধিকার আদায়ের জন্য। তারা এ যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল ইংরেজদের শাসন-শোষণ, সুদখোর, মহাজন ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। এ যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল বৃটিশ সৈন্য ও তাদের দোসর অসৎ ব্যবসায়ী, মুনাফাখোর ও মহাজনদের অত্যাচার, নিপীড়ন ও নির্যাতনের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করা এবং একটি স্বাধীন সার্বভৌম সাঁওতাল রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা। সান্তাল হুলের ইতিহাস হতে জানা যায় দামিন-ই কোহ ছিল সাঁওতালদের নিজস্ব গ্রাম, নিজস্ব দেশ।
১৮৫৫ সালের ৩০ জুন যুদ্ধ শুরু হয় এবং ১৮৫৬ সালের নভেম্বর মাসে তা শেষ হয়। সাওতাঁলরা তীর-ধনুক ও দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করলেও ইংরেজ বাহিনীর হাতে ছিলো বন্দুক ও কামান। তারা ঘোড়া ও হাতি যুদ্ধে ব্যবহার করেছিল। এ যুদ্ধে ইংরেজ সৈন্যসহ প্রায় ১০ হাজার সাঁওতাল যোদ্ধা শাহাদত বরণ করেন। সাঁওতাল বিদ্রোহের লেলিহান শিখা বৃটিশ সরকারের মসনদ কাঁপিয়ে দিয়েছিল। যুদ্ধে সিধু-কানহু-চান্দ ও ভাইরব পর্যায়ক্রমে নিহত হলে ১৮৫৬ সালের নভেম্বর মাসে যুদ্ধ শেষ হয় ও বিদ্রোহের পরিসমাপ্তি ঘটে।
১. ১৮৫৫ খ্রি. ৩০শে জুন প্রায় ত্রিশ হাজার সাঁওতাল কৃষকের বীরভূমের ভগনাডিহি থেকে সমতলভূমির উপর দিয়ে কলিকাতাভিমুখে পদযাত্রা- ভারতের ইতিহাসে এটাই প্রথম গণ পদযাত্রা।
২. ৭ই জুলাই দিঘি থানার মহেশলাল দারোগাসহ ১৯ জনকে হত্যার মধ্যে দিয়ে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠে।
৩. ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে জমিদার-মহাজন-সুদখোর ও নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সাঁওতাল কৃষকরা সঙ্গে নিয়েছিলেন- কুমার, তেলী, কর্মকার, চামার, ডোম, মোমিন সম্প্রদায়ের গরিব মুসলমান ও গরির হিন্দু জনসাধারণ।
৪. সাঁওতাল বিদ্রোহ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে শুধুমাত্র প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামই নয়- ব্যাপক কৃষক সম্প্রদায়ের দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে, বাঁচার অধিকারের দাবীতে কৃষক সমাজের প্রথম গণসংগ্রাম হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
৫. বিদ্রোহকে নির্মুল করার জন্য কোম্পানীর বড় কর্তারা ৩৭শ, ৭ম, ৩১শ রেজিমেণ্ট, হিল রেঞ্জার্স, ৪৩, ৪২ ও ১৩ রেজিমেন্ট প্রভৃতিকে ব্যবহার করেছিলো।
৬. সাঁওতাল নেতাদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য সেদিন কমিশনার প্রধান নায়কের জন্য দশ হাজার টাকা, সহকারী নায়কের প্রত্যেকের জন্য পাঁচ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় নায়কদের জন্য এক হাজার টাকা পুরষ্কার ঘোষণা করেছিলেন।
৭. ১৮০৪ খ্রি. ১০ নং রেগুলেশনের ৩ ধারা অনুযায়ী ১০ই নভেম্বর, সামরিক আইন জারি করা হয়।
৮. সিধু-কানুকে ষড়যন্ত্র করে ধরিয়ে দেওয়া এবং হত্যার পরই স্তমিত হয়ে পড়ে বিদ্রোহ। এই ইতিহাসখ্যাত আন্দোলনে আদিবাসী সাঁওতাল নারীদের অংশগ্রহণ ছিলো অত্যন্ত স্বতস্ফূর্তভাবে। অধিকার আদায়ের আন্দোলনে আদিবাসী নারীরা ঘরের কোণে লুকিয়ে থাকেনি, তারাও হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলো। ২৩.৭. ১৮৫৫’র Hindu Intelligence পত্রিকাতে এক সাঁওতাল প্রধানের স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা কারণ হিসেবে উল্লিখিত হয়েছে। এ থেকে সাঁওতাল নারীদের উপর প্রচলিত নির্যাতন/সহিংসতার যেমন প্রমাণ মেলে; তেমিন এটি যে বিদ্রোহের পিছনে একটি কারণ ছিলো সেটিও বোঝা যায়।
১. বিদ্রোহে নারীদের অংশগ্রহণ ছিলো প্রত্যক্ষভাবে, পুরুষের সহযোগী বা সশস্ত্র ভূমিকার প্রমাণ মেলে- ‘তাহাদিগের স্ত্রীলোকেরাও অস্ত্র ধরিয়া নিবিড় অরণ্য হইতে বহিস্কৃত হইয়াছে।
২. বারো জন সাঁওতাল পুরুষ ও ১০০ জন নারীর এক দল মহারাজপুর নামক গ্রামে প্রবেশ করে পুরুষরা গ্রামের প্রজাদের প্রহার করতে থাকে এবং স্ত্রীলোকেরা লুটপাট করে।
৩. যানারোহী এক সান্তাল সরদার ঐ দলের সঙ্গে ছিল, গুলি দ্বারা তাহার পঞ্চত্ব লাভ হইয়াছে তাহার মৃত্যুর পরে প্রকাশ যে ঐ সরদার পুরুষ নহে, রমণী পুরুষ বেশে আসিয়াছিল।
৪. সিধু-কানুর বোন ফুলমনির লাশ উদ্ধার করা হয় রেললাইনের ধার থেকে। শোনা যায়, ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতনের পর ব্রিটিশ সেপাইরা তাকে হত্যা করে সেখানে ফেলে যায়। এই ফুলমনিকে নিয়ে আদিবাসী সাঁওতালদের গান রয়েছে। বিদ্রোহের পরবর্তীকালে ভাগলপুর ও বীরভূমের কিছু অংশ নিয়ে ৫, ৫০০ বর্গ মাইল জুড়ে এবং প্রথমে দেওঘর ও পরে দুমকায় প্রধান কার্যালয় নির্দিষ্ট করে সাঁওতাল পরগণা জেলা গঠিত হয়, সেটি বিদ্রোহ প্রশমনের পর প্রশাসনিক ক্ষেত্রে একটি বিশিষ্ট পরিবর্তন। এই পরগণাকে অনিয়ন্ত্রিত (নন- রেগুলেটেড) একটি জেলা ঘোষণা করা হয়।
সিধু মাঝি ছিলেন সাঁওতাল বিদ্রোহের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা। কিছু লোকের বিশ্বাসঘাতকতার ফলে তিনি গ্রেপ্তার হন। পরে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
কানু মাঝি ছিলেন সাঁওতাল বিদ্রোহের অন্যতম প্রধান নায়ক। প্রধানতম নায়ক সিধু মাঝি তাঁর অগ্রজ এবং অপর বীরদ্বয় চাঁদ ও ভৈরব তাঁর অনুজ। বীরভূম জেলার ওপারে সশস্ত্র পুলিশবাহিনীর গুলিতে তাঁর মৃত্যু হয়। ভৈরব ও চাঁদ ভাগলপুরের কাছে এক ভয়ংকর যুদ্ধে প্রাণ বিসর্জন করেন।
কানু মাঝি ছিলেন সাঁওতাল বিদ্রোহের অন্যতম প্রধান নায়ক। প্রধানতম নায়ক সিধু মাঝি তাঁর অগ্রজ এবং অপর বীরদ্বয় চাঁদ ও ভৈরব তাঁর অনুজ। বীরভূম জেলার ওপারে সশস্ত্র পুলিশবাহিনীর গুলিতে তাঁর মৃত্যু হয়। ভৈরব ও চাঁদ ভাগলপুরের কাছে এক ভয়ংকর যুদ্ধে প্রাণ বিসর্জন করেন।
কলিয়ান হরাম ছিলেন সাঁওতাল বিদ্রোহের ইতিহাসের লিপিকার এবং সাঁওতালদের গুরু। তিনি তাঁর "হরকোরেন মারে হাপরাম্বো রিয়াক কথা" শীর্ষক একটি রচনায় সাঁওতাল বিদ্রোহের ইতিবৃত্ত রেখে গেছেন। এই ইতিবৃত্তে সাঁওতাল বিদ্রোহের নায়ক সিধু ও কানুর সংগ্রাম-ধ্বনি, যথাঃ "রাজা-মহারাজাদের খতম করো", "দিকুদের (বাঙালি মহাজনদের) গঙ্গা পার করে দাও", "আমাদের নিজেদের হাতে শাসন চাই" প্রভৃতি লিপিবদ্ধ আছে।
সাঁওতাল জাতির ইতিহাসে সিধু-কানুর নেতৃত্বে সাঁওতাল যুদ্ধই ছিলো সর্বাধিক বৃহত্তম এবং গৌরবের বিষয়। তাদের এই বিদ্রোহই ভারতবর্ষে স্বাধীনতার বীজ বপন করে গিয়েছিল। এই যুদ্ধের ফলাফল হলো এই যে, ইংরেজ সরকার সাঁওতালদের অভিযোগ সম্পর্কে তদন্তের ব্যবস্থা করলেন। ম্যাজিট্রেট এডন সাহেব সাঁওতালদের আবেদন শুনলেন। যুদ্ধের পরে সাঁওতালদের সমস্যা বিবেচনা করে আদিবাসী সাঁওতালদের জন্য একটি জেলা বরাদ্দ করা হলো। এই জেলার নাম হলো ডুমকা। এটাই সাঁওতাল পরগনা নামে পরিচিত। এখানে সাঁওতাল মানঝি্, পরানিক, পরগনা জেলার শাসন পরিচালনার জন্য দারোগা, পুলিশ ও বিভিন্ন সরকারি কমকর্তা-কর্মচারী ক্ষমতা প্রাপ্ত হলো। সাঁওতালদের বিচার সালিশ তাদের আইনে করার জন্য সরকার ক্ষমতা প্রদান করলেন। খাজনা, কর প্রভৃতি তাদের হাতে অর্পণ করা হলো। তারা জেলা প্রশাসক বা ডিসির নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হতে থাকলো। ১৮৮৫ সালে বেঙ্গল টেনান্সি এ্যাক্ট অনুযায়ী আদিবাসীরা তাদের জমি সরকারী অনুমতি ছাড়া বিক্রি করতে পারতো না। এই আইন এখন পর্যন্ত কার্যকর আছে।
(সৌজন্যে :উইকিপিডিয়া)
(সৌজন্যে :উইকিপিডিয়া)
লেবেলসমূহ:
সাঁওতাল বিদ্রোহ ( দুই )
সাঁওতাল বিদ্রোহ
সাঁওতাল বিদ্রোহ
শেয়ার করেছেন প্রণব কুমার কুণ্ডু
ব্রিটিশ সরকার তথা কোম্পানির লোকজন, দেশীয় কর্মকর্তা এবং মহাজন গণ ছলে বলে কৌশলে এদেশের শাসনভার হস্তক্ষেপ করার পর নিজের অমানুষিক লোভ চরিতার্থ করার জন্য মুলত আদিবাসী মানুষের উপর পৈশাচিক অত্যাচার করতেও পিছুপা হইনি।
ফলে মুর্শিদাবাদ , বীরভূম ও ভাগলপুর ১,৩৬,৬০১ বর্গমাইল এলাকার হতদরিদ্র আদিবাসী গণ গর্জে উঠেছিল অন্যায় এবং শোষণের বিরুদ্ধে।
ইতিহাসের পাতায় যা 'সাঁওতাল বিদ্রোহ' নামে পরিচিত হলেও আসলে টা ছিল কৃষক বিদ্রোহ।
এই বিদ্রোহের পেছনে শাসকের নারিলোলুপ চরিত্র , সুদ, খাজনা বৃদ্ধি ও পৈশাচিক অত্যাচার দায়ী ছিল।
১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুন। সিধু-কানুর ডাকে প্রায় ১০ হাজার সাঁওতাল একত্রিত হয় ভাগনাদিহি গ্রামে। সেদিন তাঁরা সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দেন।
বিদ্রোহের রূপ ক্রমে ৫০ হাজারে পৌঁছই।
সবাই শপথ নেয়, জমিদার মহাজন, ইংরেজ শাসক, পুলিশ-পাইক-পেয়াদা আর জজ ম্যাজিস্ট্রেটদের নিপীড়ন ও দাসত্ব সহ্য করবে না। সে সঙ্গে সিদ্ধান্ত হয় খাজনা না দেওয়ার। বিদ্রোহী কণে।ঠ সবাই স্লোগান দিতে থাকে, ‘জমি চাই, মুক্তি চাই’।
পরিস্থিতি ইংরেজ শাসকদের নাগালের বাইরে চলে যাওয়াই দেশীয় সুবিধা ভোগী জমিদারগণ (বর্ধমানের রাজা, মুর্শিদাবাদের নবাব ফেরদুণ জা ও দেওয়ান প্রসন্ন নারায়ণ দেব , লালগোলার রাজা, ভাগলপুরের জমিদার, কান্দির রাজা, হেতাম পুরের জমিদার, রানী রাসমণি)
প্রত্যক্ষ মদতে ৫০ হাজার সাঁওতাল গণের মধ্যে ২৫ হাজার বিদ্রোহী প্রাণ দেয়।
ফলে মুর্শিদাবাদ , বীরভূম ও ভাগলপুর ১,৩৬,৬০১ বর্গমাইল এলাকার হতদরিদ্র আদিবাসী গণ গর্জে উঠেছিল অন্যায় এবং শোষণের বিরুদ্ধে।
ইতিহাসের পাতায় যা 'সাঁওতাল বিদ্রোহ' নামে পরিচিত হলেও আসলে টা ছিল কৃষক বিদ্রোহ।
এই বিদ্রোহের পেছনে শাসকের নারিলোলুপ চরিত্র , সুদ, খাজনা বৃদ্ধি ও পৈশাচিক অত্যাচার দায়ী ছিল।
১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুন। সিধু-কানুর ডাকে প্রায় ১০ হাজার সাঁওতাল একত্রিত হয় ভাগনাদিহি গ্রামে। সেদিন তাঁরা সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দেন।
বিদ্রোহের রূপ ক্রমে ৫০ হাজারে পৌঁছই।
সবাই শপথ নেয়, জমিদার মহাজন, ইংরেজ শাসক, পুলিশ-পাইক-পেয়াদা আর জজ ম্যাজিস্ট্রেটদের নিপীড়ন ও দাসত্ব সহ্য করবে না। সে সঙ্গে সিদ্ধান্ত হয় খাজনা না দেওয়ার। বিদ্রোহী কণে।ঠ সবাই স্লোগান দিতে থাকে, ‘জমি চাই, মুক্তি চাই’।
পরিস্থিতি ইংরেজ শাসকদের নাগালের বাইরে চলে যাওয়াই দেশীয় সুবিধা ভোগী জমিদারগণ (বর্ধমানের রাজা, মুর্শিদাবাদের নবাব ফেরদুণ জা ও দেওয়ান প্রসন্ন নারায়ণ দেব , লালগোলার রাজা, ভাগলপুরের জমিদার, কান্দির রাজা, হেতাম পুরের জমিদার, রানী রাসমণি)
প্রত্যক্ষ মদতে ৫০ হাজার সাঁওতাল গণের মধ্যে ২৫ হাজার বিদ্রোহী প্রাণ দেয়।
#মুর্শিদাবাদের নবাব মীরজাফরের বংশধর ফেরাদুন জা সাঁওতাল বিদ্রোহের সময় তার দেওয়ানের সাহায্য করতে ৫০ টি হাতি পাঠিয়েছিলেন। এ বিষয় সংক্রান্ত নথি আজও হাজারদুয়ারী তে আছে। শুধু নবাব নন লালগোলা রাজা মহেন্দ্র নারায়ন Ayasli Eden কে ৮০জন বাছাই করা লাঠিয়াল পাঠিয়েছিলেন। এই সকল কাজের মধ্য দিয়ে নিজ জমিদারি ও বংশধর দের সুরক্ষা করেছিলেন।
এদিকে কোম্পানি ,জমিদার, মহাজনদের নিশ্চিহ্ন করতে সিধু, কানু, চান্দু ও ভৈরব এক হয়ে আন্দোলন শুরু করে।
তারা জমিদার ও মহাজনদের বাড়িঘর লুট করে।
মুর্শিদাবাদ জেলার কিছু অংশ ও বীরভূমের বিস্তীর্ণ অঞ্চল সাঁওতালদের নিজ শাসন কায়েম হয়।
আতঙ্কিত কোম্পানি বিদ্রোহ দমনের সিদ্ধান্ত নেয়।
তৎকালীন ম্যাজিস্ট্রেট টু গুড সাহেব বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল।
তিনি সৈন্যদল নিয়ে মুর্শিদাবাদের আরঙ্গাবাদ ও ধুলিয়ানের দিকে এগিয়ে যান সপ্তম পদাতিক বাহিনী নিয়ে এবং মহেশপুরের কাছে সাঁওতালদের যুদ্ধে হারিয়ে দেন।
এই যুদ্ধে সাঁওতালদের তিনজন নেতা গুরুতর আহত হয় এবং বন্দী হন।
সাঁওতাল বিদ্রোহ দমনে বহরমপুর ব্যারাক এর সেপাইদের প্রাধান্য দেওয়া হয় এ ছিল।
কোম্পানি সিধু কানুদের গ্রাম ভাগনা দিহি পুড়িয়ে দেয়।
বিদ্রোহ দমনের কাজে বিপুল পরিমাণ খাদ্য কান্দি অঞ্চল থেকে গৃহীত হয়।
অরূপ চন্দ্র এ বিষয়ে লিখেছেন --
#এই বিদ্রোহ দমনে নবাব পেরিত ৫০টি হাতিকে পাগল করে সাঁওতাল বসতি তে ছেড়ে দেওয়া হয় এর ফলে হাতির পায়ের নিচে পড়ে মারা যায়
যুদ্ধে বন্দী সিধু , কানু কে জঙ্গিপুর এ আনা হয়।
বিচারে জঙ্গিপুর কোর্টে ফাঁসির রায় হয়।
তারা জমিদার ও মহাজনদের বাড়িঘর লুট করে।
মুর্শিদাবাদ জেলার কিছু অংশ ও বীরভূমের বিস্তীর্ণ অঞ্চল সাঁওতালদের নিজ শাসন কায়েম হয়।
আতঙ্কিত কোম্পানি বিদ্রোহ দমনের সিদ্ধান্ত নেয়।
তৎকালীন ম্যাজিস্ট্রেট টু গুড সাহেব বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল।
তিনি সৈন্যদল নিয়ে মুর্শিদাবাদের আরঙ্গাবাদ ও ধুলিয়ানের দিকে এগিয়ে যান সপ্তম পদাতিক বাহিনী নিয়ে এবং মহেশপুরের কাছে সাঁওতালদের যুদ্ধে হারিয়ে দেন।
এই যুদ্ধে সাঁওতালদের তিনজন নেতা গুরুতর আহত হয় এবং বন্দী হন।
সাঁওতাল বিদ্রোহ দমনে বহরমপুর ব্যারাক এর সেপাইদের প্রাধান্য দেওয়া হয় এ ছিল।
কোম্পানি সিধু কানুদের গ্রাম ভাগনা দিহি পুড়িয়ে দেয়।
বিদ্রোহ দমনের কাজে বিপুল পরিমাণ খাদ্য কান্দি অঞ্চল থেকে গৃহীত হয়।
অরূপ চন্দ্র এ বিষয়ে লিখেছেন --
#এই বিদ্রোহ দমনে নবাব পেরিত ৫০টি হাতিকে পাগল করে সাঁওতাল বসতি তে ছেড়ে দেওয়া হয় এর ফলে হাতির পায়ের নিচে পড়ে মারা যায়
যুদ্ধে বন্দী সিধু , কানু কে জঙ্গিপুর এ আনা হয়।
বিচারে জঙ্গিপুর কোর্টে ফাঁসির রায় হয়।
তথ্যসূত্র:
১,স্বাধীনতা আন্দোলনে মুর্শিদাবাদ
Subhashis Majumder
Subhashis Majumder
২, সিপাহী যুদ্ধে বহরমপুর
কমল বন্দ্যোপাধ্যায়
কমল বন্দ্যোপাধ্যায়
৩, বাংলার হাজার বছরের কৃষক বিদ্রোহ এবং মুর্শিদাবাদ
অরূপ চন্দ্র
ডা: বিধানচন্দ্র রায়
ডা: বিধানচন্দ্র রায়
প্রণাম জানাই ...
ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় (১ জুলাই, ১৮৮২ – ১ জুলাই, ১৯৬২) ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী। ১৯৪৮ সাল থেকে আমৃত্যু তিনি ওই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। চিকিৎসক হিসেবেও তাঁর বিশেষ খ্যাতি ছিল। ১৯১১ সালে ইংল্যান্ড থেকে এফ.আর.সি.এস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলকাতার ক্যাম্বেল মেডিক্যাল স্কুলে (বর্তমানে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ) শিক্ষকতা ও চিকিৎসা ব্যবসা শুরু করেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট সদস্য, রয়্যাল সোসাইটি অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজিন ও আমেরিকান সোসাইটি অফ চেস্ট ফিজিশিয়ানের ফেলো নির্বাচিত হন। ১৯২৩ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের প্রভাবে রাজনীতিতে যোগ দিয়ে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার নির্বাচনে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করেন। পরে কলকাতা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও কলকাতা পৌরসংস্থার মেয়র নির্বাচিত হন। ১৯৩১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দিয়ে কারাবরণ করেন। ১৯৪২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মনোনীত হন। ১৯৪৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস প্রার্থীরূপে আইনসভায় নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালে গ্রহণ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর চোদ্দো বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্বকালে নবগঠিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রভূত উন্নতি সম্ভব হয়েছিল। এই কারণে তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের রূপকার নামে অভিহিত করা হয়। ১৯৬১ সালে তিনি ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্নে ভূষিত হন। মৃত্যুর পর তাঁর সম্মানে কলকাতার উপনগরী সল্টলেকের নামকরণ করা হয় বিধাননগর। তাঁর জন্ম ও মৃত্যুদিন (১ জুলাই) সারা ভারতে "চিকিৎসক দিবস" রূপে পালিত হয়।
ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় (১ জুলাই, ১৮৮২ – ১ জুলাই, ১৯৬২) ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী। ১৯৪৮ সাল থেকে আমৃত্যু তিনি ওই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। চিকিৎসক হিসেবেও তাঁর বিশেষ খ্যাতি ছিল। ১৯১১ সালে ইংল্যান্ড থেকে এফ.আর.সি.এস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলকাতার ক্যাম্বেল মেডিক্যাল স্কুলে (বর্তমানে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ) শিক্ষকতা ও চিকিৎসা ব্যবসা শুরু করেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট সদস্য, রয়্যাল সোসাইটি অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজিন ও আমেরিকান সোসাইটি অফ চেস্ট ফিজিশিয়ানের ফেলো নির্বাচিত হন। ১৯২৩ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের প্রভাবে রাজনীতিতে যোগ দিয়ে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার নির্বাচনে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করেন। পরে কলকাতা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও কলকাতা পৌরসংস্থার মেয়র নির্বাচিত হন। ১৯৩১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দিয়ে কারাবরণ করেন। ১৯৪২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মনোনীত হন। ১৯৪৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস প্রার্থীরূপে আইনসভায় নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালে গ্রহণ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর চোদ্দো বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্বকালে নবগঠিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রভূত উন্নতি সম্ভব হয়েছিল। এই কারণে তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের রূপকার নামে অভিহিত করা হয়। ১৯৬১ সালে তিনি ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্নে ভূষিত হন। মৃত্যুর পর তাঁর সম্মানে কলকাতার উপনগরী সল্টলেকের নামকরণ করা হয় বিধাননগর। তাঁর জন্ম ও মৃত্যুদিন (১ জুলাই) সারা ভারতে "চিকিৎসক দিবস" রূপে পালিত হয়।
১৮৮২ সালের ১ জুলাই বর্তমানে বিহার রাজ্যের অন্তর্গত পাটনার বাঁকিপুরে বিধানচন্দ্র রায়ের জন্ম। তিনি ছিলেন পিতা প্রকাশচন্দ্র রায় ও মা অঘোরকামিনী দেবীর ছয় সন্তানের মধ্যে সর্বকণিষ্ঠ। অঘোরচন্দ্রের আদি নিবাস ছিল চব্বিশ পরগনার শ্রীপুর গ্রামে। সরকারি চাকুরিজীবি প্রকাশচন্দ্র ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন।
বিধানচন্দ্রের লেখাপড়ার সূচনা হয়েছিল এক গ্রাম্য পাঠশালায়। পরে পাটনার টি. কে. ঘোষ ইনস্টিটিউশন এবং তারপর পাটনা কলেজিয়েট স্কুলে পড়াশোনা করেন। ১৮৯৭ সালে মাতৃবিয়োগের এক বছর পর প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পাটনা কলেজে ভরতি হন। সেখান থেকে ১৮৯৭ সালে এফ.এ. এবং ১৯০১ সালে গণিতে সাম্মানিক সহ বি.এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। ১৯০১ সালে পাটনা কলেজ থেকে গণিতে অনার্স সহ বি.এ. পাশ করে তিনি কলকাতায় চলে আসেন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১৯০৬ সালে এল এম এস এবং দু বছর পর মাত্র ছাব্বিশ বছর বয়সে এম ডি ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ইংল্যান্ড গিয়ে লন্ডনের বার্থেলেমিউ এ কেবল দু বছর সময়কালে একসাথে এম আর সি পি (লন্ডন)এবং এফ আর সি এস (ইংল্যান্ড) পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হন।
১৯১১ সালে বিধানচন্দ্র কলকাতায় ফিরে এসে ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল স্কুলে শারীরস্থানের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ও ১৯১৯ সালে সরকারী চাকরী থেকে ইস্তফা দিয়ে কারমাইকেল মেডিক্যাল কলেজে মেডিসিনের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।
১৯২৩ সালে সর্বত্যাগী দেশবন্ধুর কাছে রাজনৈতিক দীক্ষা লাভ। কিছুদিনের মধ্যে আইন সভার সদস্য নির্বাচিত হন। মহাত্মা গান্ধীর ডাকে কংগ্রেসে যোগদান।১৯৩১ সালে কারাবরণ করেন । দেশ স্বাধীন হবার পর উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল হবার জন্য তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর লোভনীয় প্রস্তাব সবিনয় ফিরিয়ে দেন। পশ্চিমবঙ্গের আইন সভার সদস্যগণ একবাক্যে তাঁকে দলনেতা নির্বাচন করলে সমস্যাকন্টকিত ভূমিখন্ডকে নবরূপে রূপায়ণকল্পে দায়িত্বপূর্ণ মুখ্যমন্ত্রীর পদ অলংকৃত করেন(পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী)। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলের প্রতিনিধিত্বে ১৯৪৮ সালের ১৪ই জানুয়ারি থেকে মৃত্যুকাল অবধি ১৪ বছর তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
সময়টা ১৯৪৮ সাল। সদ্যখন্ডিত পূর্বপাকিস্তান থেকে ছিন্নমূল লক্ষ লক্ষ নরনারী শিশু নিঃসম্বল অবস্থায় শুধু প্রাণটুকু বাঁচাবার তাগিদে পশ্চিমবঙ্গে আছড়ে পড়ছে সাতপুরুষের পদধূলিরঞ্জিত বাস্তুভূমি ছেড়ে। এই অক্লিষ্টকর্মা কর্মবীর তাদের দিয়েছিলেন মাথাগোঁজার ঠাঁই, একমুঠো খাবারের প্রতিশ্রুতি।উদ্বাস্তুর আগমনে রাজ্যে তখন খাদ্য ও বাসস্থানের সমস্যা ভয়াবহ আকার নিয়েছে। তাছাড়া পূর্ব পাকিস্তান থেকে কাঁচামাল পাটের যোগান বন্ধ । তিনি বহু পতিত জমি উদ্ধার করে এবং কিছু ধানের জমিতে পাটচাষের ব্যবস্থা করে লক্ষাধিক চটকলকর্মীর সম্ভাব্য বেকারি রুখলেন। শিল্পসমৃদ্ধ বাংলা গড়তে তাঁর ত্রুটিহীন পরিকল্পনায় স্থাপিত হল দুর্গাপুর ইস্পাতনগরী , চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা ।
বাসস্থানের জন্য তৈরি হল কল্যাণী উপনগরী, লেক টাউন, লবণহ্রদ নগর । দুগ্ধ সরবরাহের জন্য গড়ে তুললেন হরিণঘাটা দুগ্ধপ্রকল্প। শিক্ষিত বেকারদের বিপুল পরিমাণে কর্মনিয়োগের জন্য সৃষ্টি করলেন কলকাতা রাষ্ট্রীয় সংস্থা।
তিনি ১৯৪৩-৪৪ খ্রীঃ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধ্যক্ষ ছিলেন। তাঁর ঐকান্তিক ইচ্ছায় গড়ে উঠল রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ, পুরুলিয়া , রহড়া, নরেন্দ্রপুরে প্রাচীন ভারতীয় আদর্শে আশ্রমিক পরিবেশে রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয় ।
সত্যজিত রায়ের পথের পাঁচালীর মত আন্তর্জাতিক খ্যাতিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের ব্যয়ভার তাঁর সরকার বহন করে। বিশ্ববরেণ্য নৃত্যশিল্পী উদয়শংকরকে তিনি সরকারী তহবিল থেকে অনুদান দেন। কবিগুরুর জন্মশতবার্ষিকীতে রবীন্দ্ররচনাবলী প্রকাশের উদ্যোগ নেন।
১৯৬২ সালের ১লা জুলাই বিধানচন্দ্র রায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর জন্ম (ও মৃত্যু) দিন জুলাই ১ ভারতে চিকিৎসক দিবস হিসাবে পালন করা হয়।
(সৌজন্যে:উইকিপিডিয়া)
(সৌজন্যে:উইকিপিডিয়া)
লেবেলসমূহ:
ডা: বিধানচন্দ্র রায়
ঐতিহাসিক হুল দিবস.....
ঐতিহাসিক হুল দিবস.....
ফেসবুক থেকে শেয়ার করেছেন প্রণব কুমার কুণ্ডু
পরাধীন ভারত বর্ষের নিষ্পেষিত জাতি আদিবাসী জনজাতি..৷ সভ্যতার শুরু থেকে সংগ্রামী জীবনের পরীক্ষা দিতে হয়েছে তাঁদের ৷ কখনও বন্য পশুর হাত থেকে রক্ষা পেতে, কখনো অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে...আবার কখনো বা জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকার তাগিদে ৷ পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে নিরিহ ও শান্তিপ্রিয় জাতি হিসেবে আদিম জনজাতি সাঁওতালদের কথা বলা-ই যায় ৷ কিন্তু সেই আপাত নিরীহ মানুষ যখন হাতিয়ার তুলে নেন তখন পিছু হঠবার প্রশ্ন থাকেনা ৷ তবু প্রশ্ন থেকেই যায়..কেন তাঁরা নিরবিচ্ছিন্ন জীবনে হাতিয়ার তোলেন ?? কেনই বা বন্দুকের গুলির সামনে বুক চিতিয়ে "হুল" ঘোষনা করেন ??
বিহার,ছোটনাগপুর, উড়িষ্যা ,পশ্চিমবঙ্গ সহ মালভূমের অনেক টা অংশ জুড়ে ছিল আদিম জন জাতির বাস ৷ অরন্য সঙ্কুল পরিবেশে শুরু হয়েছিল তাদের জীবন যাত্রা ৷ আরন্যক জীবনে বসবাসের পাশাপাশি বন কেটে বসতি ও কৃষিকাজের উপযুক্ত করে গড়ে তুলল সেই অনুর্বর জমিন ৷
অতি অল্পেতেই তুষ্ট বন্য জীবনে তাঁরা বেশ সুখেই ছিলেন ৷ পাহাড়ের কোলে .জোনাক জলা সন্ধ্যায়.. শাল ,মহুয়া, পিয়ালের গন্ধ নিয়ে বাতাসে ভেসে আসত বাঁশের বাঁশরী সুর ৷ ধিতাং ধিতাং মাদলের বোলে রাত ভারি হতো ৷ মোহময়ী জ্যোৎস্না রাতে আরন্যক ভানুমতী রা হয়ে উঠত রাত পরী ৷ সে বড় সুখের দিন ছিল ৷
অতি অল্পেতেই তুষ্ট বন্য জীবনে তাঁরা বেশ সুখেই ছিলেন ৷ পাহাড়ের কোলে .জোনাক জলা সন্ধ্যায়.. শাল ,মহুয়া, পিয়ালের গন্ধ নিয়ে বাতাসে ভেসে আসত বাঁশের বাঁশরী সুর ৷ ধিতাং ধিতাং মাদলের বোলে রাত ভারি হতো ৷ মোহময়ী জ্যোৎস্না রাতে আরন্যক ভানুমতী রা হয়ে উঠত রাত পরী ৷ সে বড় সুখের দিন ছিল ৷
বসন্তের সেই মাতাল হাওয়া- য় কাল হলো আরন্যক জীবনে ৷ প্রকৃতির সৌন্দর্যে মুগ্ধ অনাবাসী দের পদভারে পঙ্কিল হলো বন্যজীবন ৷লোভাতুর ভিনদেশী রা পাড়ি জমাতে লাগলো সেই মুক্তাঞ্চলে ৷ ছলে বলে কৌশলে সেই "দিকু রা" ভূমিপুত্রদের জীবন অতিষ্ঠ করতে লাগলো ৷
একদিকে শোষন শাষন অন্যদিকে আইনি মার প্যাচ..সব মিলিয়ে বিধ্বস্ত হতে লাগলো আদিবাসী জনজীবন ৷ এতদিন যে অরন্য ভূমি ছিল ভূমিপুত্রদের শৈশবের খেলাঘর, যৌবনের তপোবন.. স্বরূপ, সেখান থেকে উচ্ছেদ করার আইনি নোটিশ পাঠানো হলো.. 'দামিনী কোড'', দামিনী কোহ .র মাধ্যমে ৷ পার্বত্য অঞ্চলের পাদ দেশ থেকে বিতাড়ন করার পাশাপাশি সেই অরন্য কন্যাদের ডাগর গতরের দিকে চোখ সব পশুরূপী মানুষ পিশাচ দের ৷ আর থেমে থাকা নয় ,দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মতো অবস্থা হলো ভূমি পুত্রদের ! জনজাতির নেতা হিসেবে উঠে এলেন বেশ কয়েক জন যোদ্ধা ..সিধু ,কানু, চাঁদ ,ভৈরো মুর্মু সহ দুই বোন ফুলো ও ঝানো ...৷
একদিকে শোষন শাষন অন্যদিকে আইনি মার প্যাচ..সব মিলিয়ে বিধ্বস্ত হতে লাগলো আদিবাসী জনজীবন ৷ এতদিন যে অরন্য ভূমি ছিল ভূমিপুত্রদের শৈশবের খেলাঘর, যৌবনের তপোবন.. স্বরূপ, সেখান থেকে উচ্ছেদ করার আইনি নোটিশ পাঠানো হলো.. 'দামিনী কোড'', দামিনী কোহ .র মাধ্যমে ৷ পার্বত্য অঞ্চলের পাদ দেশ থেকে বিতাড়ন করার পাশাপাশি সেই অরন্য কন্যাদের ডাগর গতরের দিকে চোখ সব পশুরূপী মানুষ পিশাচ দের ৷ আর থেমে থাকা নয় ,দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মতো অবস্থা হলো ভূমি পুত্রদের ! জনজাতির নেতা হিসেবে উঠে এলেন বেশ কয়েক জন যোদ্ধা ..সিধু ,কানু, চাঁদ ,ভৈরো মুর্মু সহ দুই বোন ফুলো ও ঝানো ...৷
" সারজম গিরা" (শাল গাছের ছোট ডালের পাতা বিশেষ ভাবে মুড়ে দেওয়া হয় )যার অর্থ আমন্ত্রন ৷ বিশেষ বিশেষ বিষয় নিয়ে যখন গ্রাম্য সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না তখন দেশ দেশান্তের মানুষের কাছে খোলা দরবার এর আহ্বান জানানো হয় ৷)
ভগনা ডিহি গ্রামে মিলিত হলেন আদিবাসী জনজাতি ! (বর্তমান ঝাড়খন্ড রাজ্যের সাঁওতাল পরগনা , বারহাইতের কাছাকাছি) ইংরেজ সহ 'দিকু' দের বিরূদ্ধে... অত্যাচার, অনাচার এর বিরুদ্ধে সেদিন গর্জে উঠেছিলেন প্রায় 30 হাজার আদিবাসী , অ - আদিবাসী মানুষজন ৷ বেসরকারী মতে পঞ্চাশ হাজারের কাছাকাছি ৷
অত্যাচার , অনাচার,শাষন শোষনের বিরুদ্ধে সেই
প্রথম স শস্ত্র গণ আন্দোলন ৷
ভগনা ডিহি গ্রামে মিলিত হলেন আদিবাসী জনজাতি ! (বর্তমান ঝাড়খন্ড রাজ্যের সাঁওতাল পরগনা , বারহাইতের কাছাকাছি) ইংরেজ সহ 'দিকু' দের বিরূদ্ধে... অত্যাচার, অনাচার এর বিরুদ্ধে সেদিন গর্জে উঠেছিলেন প্রায় 30 হাজার আদিবাসী , অ - আদিবাসী মানুষজন ৷ বেসরকারী মতে পঞ্চাশ হাজারের কাছাকাছি ৷
অত্যাচার , অনাচার,শাষন শোষনের বিরুদ্ধে সেই
প্রথম স শস্ত্র গণ আন্দোলন ৷
যে সব কারনের জন্য মুলত আদিবাসীরা 'হুল' অর্থ্যাৎ 'বিদ্রোহ ঘোষনা করেছিল তা হলো ..
যে অরন্যাঞ্চল ছিল ভূমিপুত্রদের একচ্ছত্র অধিকার সেখান থেকে উচ্ছেদ করা হয় 'চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের 'ফলে ৷ সেই সাথে জঙ্গল কেটে যে জমি তাঁরা উর্বর করেন সেখানেই তাঁদের ক্রীতদাসের মতো খাটানো হয় ৷
ব্রিটিশ মুদ্রা প্রচলনের ফলে সহজ সরল নিরক্ষর আদিবাসীদের ঠকাতে লাগলো মুনাভালোভী জোতদার, জমিদার,ও মহাজনী সুদ কারবারী রা৷
আদিবাসীদের উৎপাদিত ফসল ও সম্পদ আত্মসাৎ করতে লাগলো ৷
যে অরন্যাঞ্চল ছিল ভূমিপুত্রদের একচ্ছত্র অধিকার সেখান থেকে উচ্ছেদ করা হয় 'চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের 'ফলে ৷ সেই সাথে জঙ্গল কেটে যে জমি তাঁরা উর্বর করেন সেখানেই তাঁদের ক্রীতদাসের মতো খাটানো হয় ৷
ব্রিটিশ মুদ্রা প্রচলনের ফলে সহজ সরল নিরক্ষর আদিবাসীদের ঠকাতে লাগলো মুনাভালোভী জোতদার, জমিদার,ও মহাজনী সুদ কারবারী রা৷
আদিবাসীদের উৎপাদিত ফসল ও সম্পদ আত্মসাৎ করতে লাগলো ৷
দমন পীড়ন নীতি কায়েম করা ,সুবিচার না পাওয়া , কুচক্রীদের হাতে হাত মেলানো..সব মিলিয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে ৷
------------
দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ দানা বাধেঁ ,গণবিদ্রোহের চেহারা নেয় ৷ ১৮৫৫ সালের ৩০ শা জুন" হুলের"-কারনে নজরে আসেন ভূমিপুত্র রা ৷
তৎকালিন ইংরেজ সরকারের তদানীন্তন ম্যাজিষ্ট্রেট এডন সাহেবের নেতৃত্বে আদিবাসীদের অভিযোগ সম্পর্কে খতিয়ে দেখা হয় , এবং আদিবাসীদের দাবী মেনে 'ডুমকা' জেলা কেবল মাত্র আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দ করা হয় ৷ বর্তমান সাঁওতাল পরগণা জেলা ৷
সাঁওতাল মাঝি ,পারগানা কর্তৃক শাষনব্যবস্থা কে মান্যতা দেওয়া , এবং ১৮৫৫ সালে "বেঙ্গল টেনান্সি এক্ট "-অনুযায়ী সরকারের অনুমতি ব্যাতিত আদিবাসীদের জমি জায়গা হস্তান্তর করা যাবে না ৷
১৮৫৫ এর "হুল বিদ্রোহ "ছড়িয়ে পড়েছিল দাবানলের মতো গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে..৷ ব্রিটিশ সরকার গ্রেফতারের পরোয়ানা জারি করল সিধু কানুর নামে ৷ ১৮৫৬ সালের ২৭ শে জানুয়ারী পুলিশের গুলিতে নিহত হলেন সিধু কানুর দুই ভাই চাঁদ ও ভৈরব ৷ শুরু হলো পুলিশি অকথ্য অত্যাচার...৷ গ্রামবাসীদের ওপর নেমে আসে অত্যাচারী খড়গ ৷ নির্মম অত্যাচার সইতে না পেরে তাঁরা গোপন আস্তানার সন্ধান দেয় ৷ রাতের অন্ধকারে হানা দিয়ে সিধুকে গুলিতে ঝাঁঝরা করা হয় ৷ কানু কে পরের সপ্তাহে বধ্যভূমিতে কুকুরের মতো টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে ফাঁসি দেওয়া হয় ৷ অবসান হলো একটা যুগের ..অগ্নিপুত্রদের জীবনের গাঁথা দিয়ে লেখা হলো ইতিহাসের প্রথম গণ বিদ্রোহ ৷
স্বাধীনতার প্রথম বিদ্রোহ প্রতক্ষ্য ভাবে ১৮৫৫ সালের ৩০ শা জুন কে ধরা না হলেও পরাধীন ভারতবর্ষের অবহেলিত জন জাতির এই গণবিদ্রোহ স্বাধীনতার বীজ বুনে দিয়েছিল ৷ অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ময়দান তৈরী করেছিল ৷ স্বাধীনোত্তর ভারত বর্ষের ইতিহাসে সেই অসভ্য জাতিরা মাইলফলক ৷ পরবর্তী কালে যা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মানসিক রসদ জুগিয়ে ছিল ৷
স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে আজও অবহেলিত সেই বিদ্রোহী ভূমিপুত্রদের আত্মত্যাগ ৷ ইতিহাসের ১৫ টি লাইনে সীমাবদ্ধ সাঁওতাল বিদ্রোহের কথা ৷ যে বিদ্রোহ স্বাধীনভারতের উত্থানের দলিল বলা যায়, সেই বিদ্রোহ কে আঞ্চলিকতার তকমায় বেঁধে রাখায় প্রয়াস ৷
বর্তমান সরকার ৩০ শা জুন কে "সেকসনাল হলিডে" ঘোষনা করে তাঁর দায় সেরেছেন ৷
বিপ্লবী সিধু, কানু,চাঁদ ভৈরব, ফুলো, ঝানো(দুই বোন) সেই লড়াইয়ের যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া হোক ৷
"সিধু কানহু ডহর "নয় আমরা চাই ৩০ শা জুন কে আদিবাসী জনজাতির সংগ্রামী ইতিহাসের দলিল হিসেবে সরকার স্বীকৃতি দিক ৷ " সেকসনাল হলিডে" নয় আদিবাসী জনজাতির ত্যাগ কে মর্যাদা দিন ৷
স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে আজও অবহেলিত সেই বিদ্রোহী ভূমিপুত্রদের আত্মত্যাগ ৷ ইতিহাসের ১৫ টি লাইনে সীমাবদ্ধ সাঁওতাল বিদ্রোহের কথা ৷ যে বিদ্রোহ স্বাধীনভারতের উত্থানের দলিল বলা যায়, সেই বিদ্রোহ কে আঞ্চলিকতার তকমায় বেঁধে রাখায় প্রয়াস ৷
বর্তমান সরকার ৩০ শা জুন কে "সেকসনাল হলিডে" ঘোষনা করে তাঁর দায় সেরেছেন ৷
বিপ্লবী সিধু, কানু,চাঁদ ভৈরব, ফুলো, ঝানো(দুই বোন) সেই লড়াইয়ের যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া হোক ৷
"সিধু কানহু ডহর "নয় আমরা চাই ৩০ শা জুন কে আদিবাসী জনজাতির সংগ্রামী ইতিহাসের দলিল হিসেবে সরকার স্বীকৃতি দিক ৷ " সেকসনাল হলিডে" নয় আদিবাসী জনজাতির ত্যাগ কে মর্যাদা দিন ৷
লেবেলসমূহ:
ঐতিহাসিক হুল দিবস.....
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)