রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬

ব্রাহ্মবিবাহ, ব্রা্‌হ্ম ধর্ম মতে


ব্রা্‌হ্মবিবাহ, ব্রাহ্ম ধর্ম মতে



ব্রাহ্মধর্মাবলম্বিদের, ব্রাহ্মধর্মের নিয়ম অনুসারে বিবাহ !
কিন্তু নানা কারণে, ব্রাহ্মধর্ম, ব্রাহ্মসমাজ, ব্রাহ্মবিবাহ, বিশেষ সফলতা পায়নি !
ব্রাহ্মধর্মের নিয়ম অনুযায়ী, ব্রাহ্মবিবাহ, মূলত ভেস্তে গেছে !

রাজা রামমোহন রায়, সর্বপ্রথম,  ব্রা্‌হ্মধর্মের প্রচলন করেন ! সেটা ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দ। তখন ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠিত হয় !

ব্রাহ্মধর্মাবলম্বিরা, একেশ্বরবাদী !
শুধুমাত্র, 'নিরাকার' পরমেশ্বরের উপাসনা করেন !
সাকার 'পরমেশ্বর' বলে যদি কিছু থেকে থাকে, তাঁরা তাতে আগ্রহী নন !

নিরাকার পরমেশ্বরকে, তাঁরা 'ব্রহ্ম' বলেন !
ব্রাহ্মধর্মাবলম্বিদের মধ্যে, জাতিভেদ প্রথা নেই !
স্ত্রী-স্বাধীনতা স্বীকৃত !

হিন্দু সংস্কারের, কুসংস্কারঅংশ তাঁরা বাদ দিতে চেয়েছিলেন !
তাঁরা নিজেদের progressive অর্থাৎ,  অগ্র্গতিমূলক হিন্দু বলে ভাবতেন !

যদিও, রাজা রামমোহন রায়, তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্ষন্ত, তাঁর 'পৈতে' অক্ষুণ্ণ রেখেছিলেন !

দেবদেবী'র পূজা, ব্রাহ্মধর্মাবলম্বিদের ধাতে নেই !

তবে তাঁরা 'সরস্বতী', 'লক্ষ্মী', এইসব দেবীদের পূজা করেন কিনা, তা তাঁরাই বলতে পারবেন !

তবে তাঁরা মূর্তিপূজায় আগ্রহী নন !

অত্যধিক নারী স্বাধীনতার প্রচলন থাকার ফলে, হিন্দুদের তুলনায়, ব্রাহ্মধর্মাবলম্বী বিবাহিত মহিলাদের ক্ষেত্রে, ডিভোর্সের
সংখ্যা বেশি ! কন্যা যদি অর্থ উপার্জন করেন, তবে সে প্রবণতা আরো বাড়ে !

রাজা রামমোহন রায় ছাড়া, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেশব চন্দ্র সেন, এঁরা, ব্রাহ্মসমাজের ব্যাপারে ভালোভাবেই জড়িয়ে পড়েন !

এখন, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'আদি ব্রাহ্মসমাজ', জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বড়িতে তাঁদের অফিস; কেশবচন্দ্র সেনের 'নববিধানী সমাজ', কেশব সেন স্ট্রিটে, ব্রা্‌হ্মমন্দিরে তাদের আফিস; শিবনাথ শাস্ত্রীর, 'সাধারণ ব্রা্‌হ্মসমাজ', বিধান সরণিতে, ওদের নিজেদের সমাজ বাড়িতে, ওদের আফিস !

ব্রা্‌হ্মসমাজ, এখন মূলত, ঐ তিন ভাগে বিভক্ত !

ব্রাহ্মবিবাহ, হিন্দু ধর্ম মতে

ব্রাহ্মবিবাহ, হিন্দু ধর্ম মতে


বস্ত্র অলঙ্কার ইত্যাদি বর ও কন্যাকে দিয়ে, বিদ্যান বিচক্ষণ রোজগারে বরের হাতে, পূজা সহকারে,  যথাবিধি' কন্যা সম্প্রদান ! এটি, হিন্দু মতে 'ব্রাহ্মবিবাহ' !
এই বিবাহ, মূলত, ধর্মীয় অনুষ্ঠান !
ধর্মীয় অনুষ্ঠান, পাত্রের ! ধর্মীয় অনুষ্ঠান পাত্রীর ! ধর্মীয় অনুষ্ঠান, কন্যা সম্প্রদান কর্তার ! যেহেতু,ধর্মীয় অনুষ্ঠান, আনুষ্ঠানিক ভাবে, পুরুত থাকা অত্যাবশ্যক !
হিন্দুদের 'ব্রাহ্মবিবাহ', সাধারণত অস্থায়ী মণ্ডপে, বা স্থায়ী বিবাহ-বাড়িতে, অস্থায়ী ব্যবস্থায়, সংঘটিত হয় ! যে অস্থায়ী ব্যবস্থাকে,  'ছাঁতনাতলা' বলে ! ওটা বিবাহের 'ছায়ামণ্ডপ' !
ওখানে সংস্কৃতে  বিবাহমন্ত্র, পূজার মন্ত্র উচ্চারিত হয় !
ওখানে, 'সংস্কৃত' বেদমন্ত্রও উচ্চারিত হয় !
এই বিবাহে, পাত্র-পাত্রীকে, কিছুটা অন্তত,শাস্ত্রজ্ঞানসম্পন্ন হতে হয় ! কিছুটা সংস্কৃত জানলে ভালো !
ব্রাহ্মবিবাহে, পণ দিয়ে কন্যার বিবাহ !
ব্রাহ্মবিবাহে, বরকে আহ্বান করতে হয় !
অনেকে ফুল দিয়ে গাড়ি সাজিয়ে, সেই গাড়ি, লোকসমেত পাঠিয়ে. বরকে নিয়ে আসে ! 
এটা হিন্দু বিবাহ !
ওটা পুরাণের যুগেও, সনাতন ধর্মের অঙ্গ হিসাবে, প্রচলন ছিল !
এখনও প্রচলন আছে !
তবে বর পক্ষের, পণের দাবী মানা হয় না !
কন্যা পক্ষ, স্বেচ্ছায়, যা দেবে, তাই নিয়ে, সন্টুষ্ট থাকতে হয় !
এখন ধর্মীয় বিবাহের অতিরিক্ত, আইন মাফিক, পাত্র-পাত্রীর বিবাহ রেজিসট্রেশন করা হয় !
ব্রাহ্মবিবাহে, মেয়েলি অআচার-আনুষ্ঠান থাকে !
আমন্ত্রিতরা, সবাই মিলে আনন্দে মাতে !
ভূড়ি-ভোজের ব্যবস্থা রাখা হয় !