বুধবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৭

গর্ভাধান ( গদ্যরচনা )





কবি প্রণব কুমার কুণ্ডু'র ছবি 


লিমেরিক-ছড়াকার   প্রণব কুমার কুণ্ডু






গর্ভাধান  ( গদ্যরচনা )


সংস্কার।

হিন্দুদের, দশরকমের শাস্ত্রীয় সংস্কার-অনুষ্ঠান আছে।

তার মধ্যে একটি পড়ে 'গর্ভাধান' !

এখন কতগুলো হিন্দু পরিবারে, 'গর্ভাধান'  নামক শাস্ত্রীয় সংস্কার, মানা হয় ?

'গর্ভাধান' ছিল,  'দ্বিজাতি'র অবশ্য কর্তব্য।

'দ্বিজাতি', শাস্ত্রমত অনুযায়ী, যারা  'পৈতে'  ধারণ করতে সক্ষম। তাদের 'উপনয়ন' হয়।
যেমন 'ব্রাহ্মণ'  'ক্ষত্রিয়'  'বৈশ্য' জাতি।

শাস্ত্র,  'শূদ্র'দের ( শূদ্রজাতিভূক্ত মানুষদের ), পৈতে ধারণ করার  ক্ষমতা  দেয় নি !

কাজেই,শূদ্ররা, 'দ্বিজাতির' মধ্যে পড়ে না।


পৈতে। পৈতা। পইতা। পইতে।
যজ্ঞসূত্র। উপবীত। কথ্যে, 'পইতা/পইতে'।


উপনয়ন।
যজ্ঞোপবীত ধারণের সংস্কার। পৈতে ধারণের সংস্কার।
প্রাচীন কালে,  'বেদ' অধ্যয়নের জন্য  'গুরু' গৃহে নিয়ে যাওয়া হত।
এখন  সাধারণত গৃহস্থের কাছে  'যজ্ঞ' প্রায় উঠেই গিয়েছে। শুধু, কোথাও কোথাও যজ্ঞের এক  miniature সংস্কার থেকে গেছে !


দ্বিজ। দ্বিজন্মা।
একবার মায়ের 'গর্ভ' থেকে, আর একবার  'উপনয়ন'-এর  ফলে 'নবজন্ম' লাভ !

ব্রাহ্মণ ছাড়াও, ক্ষত্রিয় এবং বৈশ্যরাও, পৈতে ধারণের অধিকারী।

তবে এখন সাধারণত ক্ষত্রিয় এবং  বৈশ্যরা পৈতে ধারণ করে না।
অনেক ব্রাহ্মণও, হয়তো একসময়ে তাদের  'উপনয়ন' হয়েছে,  কিন্তু পরবর্তিতে,  'পৈতে' ধারণ করে না।

'দ্বিজাতিতত্ত্ব', আবার, আলাদা !
ভারতে হিন্দু ও মুসলমান, এই দুই সম্প্রদায়, তারা নাকি, ভিন্ন জাতির  ( ! ) লোক ! এবং তাদের বিশেষত, মুসলমানদের ক্ষেত্রে, ভিন্ন রাষ্ট্র সৃষ্টি করা, এবং সেখানে, 'ইসলামি তত্বে' বিশ্বাসী, 'ইসলামিক রাষ্ট্র' গঠন করা !
'আল্লাহ'-কে  'আবাহন' করে, আল্লাহকে,  সেই রাষ্ট্রের,  সব চেয়ে উঁচু পদে,  প্রতিষ্ঠিত করা !

গর্ভাধান।
'গর্ভাধান' আসলে, 'নিষেক' ক্রিয়া।
'গর্ভ' উৎপাদন করা। গর্ভের সন্তান উৎপাদন করা। ওটা,  'ভ্রূণোৎপাদন'।  ওটি গর্ভের একটি  'আধানসাধ্য কর্ম'।

আধান। স্থাপন। গর্ভাধান।  নিষেক !
উৎপাদন। জনন।
গর্ভে গ্রহণ। গর্ভে ধারণ।

এটিকে ধরে নেওয়া হত, বিবাহিত  'স্ত্রীলোকের' 'দ্বিতীয়' বিবাহরূপ সংস্কার।

গর্ভ।

গর্ভাশয়ে সন্তান ধারণ।  'ভ্রূণ' উৎপাদন। উদরস্থ সন্তান। প্রসূতি 'অন্তঃসত্ত্বা' আবস্থায় থাকে। কয়েক মাস পরে, বাইরে থেকে, গর্ভলক্ষণ বোঝা যায়। গর্ভকাল  gestation period.

গর্ভলক্ষণ।
গর্ভসূচক চিহ্ন।
যেমন, উদরের স্ফীতি।
মুখের পাণ্ডুরতা।
চুচুকের  'শ্যামিকা'।
অরুচি। ইত্যাদি ইত্যাদি !