সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

রূপক রায়-এর কলাম ( আঠারো )


রূপক রায়-এর কলাম ( আঠারো )

ফেসবুক থেকে       শেয়ার করেছেন     প্রণব কুমার কুণ্ডু


প্রণব কুমার কুণ্ডু



মুসলমানরা যে রাধা প্রসঙ্গ টেনে কৃষ্ণ চরিত্রকে কলুষিত ক’রে এবং হিন্দুদেরকে হেয় করার চেষ্টা করে, সেই সুযোগ কিন্তু তাদেরকে তৈরি করে দিয়েছি আমরাই; এজন্যই আমার অনুরোধ-
হরিবাসর বা হরিসভার নামে পদাবলী কীর্তন বন্ধ করুন; কারণ, এটা হিন্দু ধর্মকে ধ্বংস করার একটি চলমান প্রসেস :
পদকীর্তন বা পদাবলী কীর্তন মানেই রাধা-কৃষ্ণের প্রেম, আর সেখানেই- নৌকা বিলাস, রাধার মান ভঞ্জন, রাসলীলা ইত্যাদি ইত্যাদি পালার নামে কৃষ্ণের লাম্পট্য ও রাধার পরকীয়া প্রেমের বর্ণনা। এর মাধ্যমে আমরা সমাজকে কী শিক্ষা দিচ্ছি ? পুরুষদেরকে এই শিক্ষা দিচ্ছি যে, তোমরা পরকীয়া প্রেম শুরু করো, যেহেতু তোমাদের ভগবান পরকীয়া প্রেম করে গেছে; আর মহিলাদেরকে এই শিক্ষা দিচ্ছি যে, তোমরা তোমাদের স্বামীর পরকীয়া প্রেমকে মেনে নাও। এ্ থেকে সমাজের কী মঙ্গল হতে পারে ? অথচ এই সব হরিবাসরের পেছনে, দেশে, প্রতি বছর হিন্দুদের খরচ হচ্ছে কোটি কোটি টাকা; যার পুরোটাই শুধু অপচয় নয়, সমাজ ধ্বংসের একটা অনুঘটক।
যারা আমার পুরোনো পাঠক, তারা জানেন যে, হিন্দু ধর্মে রাধা কৃষ্ণের প্রেম বলে কিছু নেই। তাই হরিবাসরের নামে এই পদাবলী কীর্তনের আমি ঘোর বিরোধী, আমি চাই এই মূহুর্ত থেকে সারা দেশে এটা বন্ধ হোক এবং এর বিপরীতে নামকীর্তন চলুক। কিন্তু নামকীর্তনেরও একটি পদ্ধতিগত সমস্যা আমাদের ধর্মগুরুরা সৃষ্টি করে রেখে গেছেন; সমস্যাটি হলো-এই নামকীর্তন নাকি একবার শুরু হলে অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ করা যায় না বা যাবে না। জানি না, এই নির্দেশ তারা কোথা থেকে পেয়েছে ? কিন্তু আমার গবেষণায়, এই রকম নির্দেশ আমি আজ পর্যন্ত কোথাও পাই নি, পেলেও তা ভেঙ্গে ফেলবো; কারণ, যা সামাজিক বাস্তবতাকে স্বীকার করে না এবং যার মাধ্যমে সমাজের মঙ্গল না হয়ে অনিষ্ট হয় তা কোনো ধর্ম নয়, তাই সেগুলো আমি মানি না।
অনুষ্ঠান হয় মানুষের জন্য এবং অনুষ্ঠানগুলো সেভাবেই সাজানো উচিত যাতে মানুষ সেগুলোকে পূর্ণরূপে নিতে পারে বা তার সবটুকু বিষয় ঠিক মতো বুঝতে পারে। যেহেতু নামকীর্তন একবার শুরু হলে আর বন্ধ করা যায় না, সেহেতু দেখা যায়, শেষ রাতে, শ্রোতা-দর্শক ঘুমে ঢুলু ঢুলু করছে, কেউ বা নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে না পেরে ঘুমিয়েই পরেছে, কিন্তু তবুও চলছে নাম কীর্তন; এই ধরণের অনুষ্ঠানের মানে কী ?
এরপর যা ঘটে- সারারাত জেগে অনুষ্ঠান দেখার ফলে, পরদিন কেউ আর কোনো কাজে যেতে পারে না, গেলেও ঘুমে ঢুলতে থাকে, ফলে স্বাভাবিক শ্রম ঘণ্টা নষ্ট হয় এবং ব্যবসা বাণিজ্য ও অফিসের কাজে মারাত্মক ক্ষতি হয়, আর যারা সেই ক্ষতি করতে চায় না, তাদেরকে বাধ্য হয়ে সেই সব অনুষ্ঠান মিস করতে হয়। এভাবে যে এলাকাতেই এই ধরণের হোল নাইট অনুষ্ঠান হোক না কেনো, সেই এলাকাতেই একটা বাজে প্রভাব পড়ে বা পড়তে বাধ্য। এছাড়াও নানা কারণে যারা রাতে ঘুমাতে চায়, তারা এলাকার অনুষ্ঠানের মাইকের সাউন্ডসহ নানা কারণে রাতে ঠিক মতো ঘুমাতেও পারে না, ফলে এটা তখন কারো কারো কাছে ধর্মীয় অনুষ্ঠান না হয়ে ধর্মীয় যন্ত্রণায় পরিণত হয়। কিন্তু ধর্মীয় অনুষ্ঠান হওয়ার ফলে কেউ মুখ ফুটে কিছু বলতেও পারে না; কিন্তু এই ধরণের অনুষ্ঠান নিয়ে ভেতরে ভেতরে অসন্তোষ কাজ করে, যে অসন্তোষ সমাজের জন্য ক্ষতিকর।
আমার মত হচ্ছে, এই ধরণের কর্মবিনাশী অনুষ্ঠান বন্ধ করে তাকে কর্মবান্ধব করে সাজাতে হবে। যেকোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানই হোক না কেনো, তা কোনোভাবেই সারারাত ধরে চালানো যাবে না; অনুষ্ঠান শুরু হবে সন্ধ্যায় এবং শেষ হবে, খুব বেশি হলে রাত ১২ টার মধ্যে। তারপর লোকজন গিয়ে ঘুমাবে, পরদিন যে যার মতো কর্ম করবে এবং কর্ম শেষ করে সন্ধ্যায় আবার অনুষ্ঠান স্থলে হাজির হয়ে অনুষ্ঠান আস্বাদন করবে। এভাবে- একদিন, দুইদিন বা টাকার সামর্থ্য অনুযায়ী তিন চার দিনের অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করতে হবে। আগেই বলেছি, কোনোভাবেই পদাবলী কীর্তন করা যাবে না এবং নামকীর্তনও একবার শুরু হলে তা আব বন্ধ করা যাবে না, এই ধরণের অবাস্তব থিয়োরি বাদ দিয়ে, কিছু সময় ধরে কীর্তন করতে হবে এবং কিছু সময় ধরে চালাতে হবে আলোচনা অনুষ্ঠান, তাহলেই শুধু হবে হিন্দু সমাজের মঙ্গল।
কারণ, শুধু নামকীর্তনে মানুষের পারলৌকিক কল্যান হতে পারে, কিন্তু ইহলৌকিক কল্যান কিছুই হয় না। এর কারণ, নামকীর্তনে জ্ঞানমূলক কোনো কিছু থাকে না, তাই সমাজে জ্ঞানের চর্চা হয় না, কিন্তু জ্ঞানের চর্চা ছাড়া কোনো সমাজ টিকে থাকতে পারে না। একারণেই মুসলমানরা প্রতিটি পাড়ায় বা মসজিদ মাদ্রাসায় বছরে একবার করে হলেও ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করে, উদ্দেশ্য আর কিছুই নয়, মুসলমানদের মধ্যে এবং ক্ষেত্র বিশেষ হিন্দুদের মধ্যেও ইসলামিক জ্ঞানের সঞ্চার করা। এসব কারণেই অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো হিন্দু, হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে যতটুকু জানে, তার চেয়ে বেশি জানে ইসলাম সম্পর্কে। ওয়াজ মাহফিলের মঞ্চের সামনে মুসলমানদের উপস্থিতি খুব বেশি না হলেও, মুসলমানদের এই ধরণের ওয়াজ মাহফিল যে একেবারে বৃথা যায়, তা নয়; বছরের পর বছর ধরে মিথ্যা শুনতে শুনতে কোনো কোনো হিন্দু বিভ্রান্ত হয় এবং কেউ কেউ ইসলাম গ্রহনও করে ফেলে, এরকম কয়েকটি ঘটনা আমি জানি।
মুসলমানদের এই ধরণের জ্ঞান চর্চা মূলক ওয়াজ মাহফিল মূলত হিন্দু সমাজের উপর এক ধরণের সূক্ষ্ম ইসলামিক আগ্রাসন। এই আগ্রাসনের পাল্টা হিসেবে আমাদেরকেও ধর্মীয় সভা করতে হবে এবং হিন্দু ধর্মীয় জ্ঞান সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে, তাহলেই বন্ধ হবে সমাজের ক্ষয়। কিন্তু শুধু মাত্র ধর্মীয় সভা করে হিন্দুদেরকে সেখানে পাইকারী দরে আকৃষ্ট করা যাবে বলে মনে হয় না, কারণ আত্মগর্বী হিন্দুরা প্রায় প্রত্যেকেই নিজেকে খুব বড় ব’লে ভাবে; তাই নিজে কিছু না জানলেও অন্যের কাছে জ্ঞানের কথা শোনাকে তারা নিজেদের জন্য অপমানজনক বলে মনে করে!
সবাই যে এমন- তা নয়, কিন্তু কোনো অনুষ্ঠান করতে হলে তাতে সব ধরণের লোককেই আনার চিন্তাভাবনা করে অনুষ্ঠান সাজাতে হবে। এজন্যই রাখতে হবে নামকীর্তন ও আলোচনা সভা। কিছু সময় ‘হরে কৃ্ষ্ণ’ গান হবে, তারপর কিছু সময় ধরে হবে আলোচনা সভা; এভাবে অনুষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। হরে কৃষ্ণ গান এক্ষেত্রে কাজ করবে বিজ্ঞাপন হিসেবে, আর আলোচনা সভার জ্ঞান হবে মূল প্রোডাক্ট, যা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া ই হবে ঐ অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য। মাঝে মাঝে আমি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করি। একবার এক অনুষ্ঠান শেষে একজন আমাকে বললো, লাখ লাখ টাকা খরচ করে হরিবাসর করে যে জ্ঞান লাভ হয় না, আজকে, আপনার দেড় ঘণ্টার বক্তৃতায় তার চেয়ে অনেক বেশি জ্ঞান লাভ হলো, আপনাকে ধন্যবাদ।
কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে সমাজে যে ধারা চলে আসছে, তা একদিনে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, এই পরিবর্তন ঘটাতে হবে আস্তে আস্তে। প্রথমে সবাই পদাবলী বা লীলা কীর্তনের বিরুদ্ধে একটা শক্ত অবস্থান নেন। নিজের এলাকায় পদাবলী বা লীলা কীর্তনের হরিবাসর বন্ধ করে নামকীর্তন চালু করুন এবং অন্য এলাকা থেকে পদাবলী কীর্তনের উদ্দেশ্যে হরিবাসরের জন্য চাঁদা নিতে এলেও তা দেওয়া বন্ধ করুন এবং নামকীর্তন চালু করতে বলুন। এভাবে হিন্দু সমাজের অবক্ষয়টা প্রথমে বন্ধ হবে। তারপর নামকীর্তন একবার চালু হয়ে গেলে একে সংস্কার ক’রে উপরে আমি যেভাবে বললাম, সেভাবে নাম কীর্তন ও আলোচনা সভার সিস্টেম চালু করুন, যাতে লোকজন দুচারটা জ্ঞানের কথা বলতে পারে এবং শুনতে পারে।
আমি অনেক ভেবে দেখেছি, এভাবেই হবে হিন্দু সমাজের মঙ্গল এবং এটাই সমাজ রক্ষার একমাত্র পথ।
বর্তমানে যারা হিন্দু ধর্ম নিয়ে কাজ করে, তারা শাস্ত্র সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করার চেয়ে গুরুত্ব দেয় গান-বাজনা-কীর্তন এবং খোল-করতাল-হারমোনিয়াম বাজানো শেখার দিকে এবং যখনই এতে কিছু দখল এসে যায়, তখনই ধুতি-ফতুয়া প’রে কপালে লম্বা করে তিলক লাগিয়ে নিজেকে মহাগুরু হিসেবে তুলে ধ’রে অনুষ্ঠানের মধ্য গিয়ে গানের সাথ শুরু করে কান্নাকাটি বা নাচানাচি। মনে রাখবেন, এটা কোন ধর্ম নয়, এটাযাত্রাপালার মতো বিনোদন এবং এই একইরকম বিনোদন হচ্ছে যেকোনো ধরণের বারোয়ারি পূজা, যাতে পুরোহিত তার মতো ক’রে পূজা ক’রে চলে যায়, আর আমরা সাউন্ডবক্সে গান বাজানো এবং প্রসাদ ও খিচুড়ির আয়োজন এবং তা বিলি বন্টন ও খাওয়া-দাওয়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এগুলো কোনো ধর্ম নয়, ধর্ম হচ্ছে- শাস্ত্র জ্ঞান অর্জন, সেই জ্ঞান অন্যদেরকে প্রদান এবং একনিষ্ঠ মনে একা বা সম্মিলিতভাবে পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা।
যতদিন এই ফরম্যাটে হিন্দু সমাজ রূপান্তরিত না হচ্ছে বা না হবে, ততদিন হিন্দু সমাজের ক্ষয় কেউ রোধ করতে পারবে না। এভাবে চলতে থাকলে- লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকার মন্দির আর আশ্রম, বর্তমানের দর্শনীয় স্থান আর ভবিষ্যতের মসজিদ মাদ্রাসা হবে। কারণ, সঠিক জ্ঞানের অভাবে, হিন্দু ধর্মীয় কালচার যদি আপনার সন্তান বা আগামী প্রজন্ম পালন না করে তাহলে হিন্দু সমাজ টিকে থাকবে কিভাবে ? আর ঐ মন্দির বা আশ্রম কী কাজে লাগবে, আর কে তার তত্ত্বাবধান করবে ? কিন্তু ইসলাম তো আর বিলুপ্ত হবে না, তাই তখন মুসলমানরা সেগুলো দখল করে মসজিদ আর মাদ্রসায় রূপান্তরিত করবে, আর সেগুলোতে হয়তো- আমাদেরই আগামী প্রজন্ম নামাজ পড়বে বা আরবি শিখবে। তাই হিন্দু ধর্ম ও কালচারকে বাঁচাতে হলে আমাদের সন্তান অর্থাৎ আগামী প্রজন্মকেকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে এবং এমন একটা ব্যবস্থা চালু করতে হবে যাতে, অটোমেটিক্যালি সেই শিক্ষা পরবর্তী প্রজন্মতে ট্রান্সফার হতে পারে, তাহলে আমরা না থাকলেও আমাদের শিক্ষা থাকবে এবং তা আগামী সকল প্রজন্মকে পথ দেখিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবে, যাতে টিকে থাকবে হিন্দু ধর্ম ও হিন্দু সমাজ।
জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।
💜 জয় হোক সনাতনের 💜

রূপক রায়-এর কলাম ( সতেরো )


রূপক রায়-এর কলাম ( সতেরো )


ফেসবুক থেকে শেয়ার করেছেন : প্রণব কুমার কুণ্ডু



প্রণব কুমার কুণ্ডু




কোরান রিসার্চ করেই নাকি বিজ্ঞানীরা সব আবিষ্কার করে ! ?
ছোটবেলা থেকেই এই কথাটা শুনতে শুনতে কান পচে গেছে যে, কোরান রিসার্চ করেই বিজ্ঞানীরা সব কিছু আবিষ্কার করেছে! স্কুলের স্যার থেকে শুরু করে বড় বড় মুসলমানদের মুখে এই কথা শুনি, কম বুদ্ধি নিয়ে তো সেগুলো আর অবিশ্বাস করতে পারি না। ভাবতাম, হলে হতেও পারে। এই বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলা নিয়ে বড় হওয়ার পর যখন জ্ঞান-বুদ্ধি একটু বাড়লো, তখন বিজ্ঞানীদের আবিষ্কারের পেছনে কোরানের ভূমিকা রিসার্চ করে দেখলাম যে, এর চেয়ে বড় মিথ্যা মনে হয় পৃথিবীতে আর একটাও নেই। এই মিথ্যাটাকে ধরার পর, মনে নতুন প্রশ্ন জগলো যে, তাহলে কেনো মুসলমানরা তাদের একটি সম্মানিত ধর্ম গ্রন্থ নিয়ে এমন মিথ্যাচার করে থাকে, এর কী ই বা প্রয়োজন ?
এর সমাধান হিসেবে যেসব বিষয় সামনে এলো, তা হলো- ২০০১ সালে লাদেনের টুইন টাওয়ার হামলার আগে পৃথিবীর ৯৯.৯৯% অমুসলিম কোনো দিন কোরান পড়া দূরে থাক, ছুয়েঁও দেখে নি; আর ৯৫% অনারবীয় মুসলমান কোনোদিন মাতৃ ভাষাতে কোরান পড়ে তা বোঝার চেষ্টা করে নি আসলে কোরানে কী লেখা আছে। মুসলমানরা যাতে মাতৃভাষায় কোরান পড়ে বোঝার চেষ্টা না করে, সেজন্য কিছু ধান্ধাবাজ সিনিয়র মুসলমান, ইসলামকে টিকিয়ে রাখার জন্য মুসলিম সমাজে এই প্রোপাগান্ডা চালিয়েছে এবং এখনও চালায় যে, বাংলায় (বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে) কোরান পড়লে কোনো ছোয়াব হবে না, কোরান পড়লে পড়তে হবে আররীতে; কারণ, এক একটা আরবী অক্ষরে ৭০টা করে নেকি। তখন মুসলমানরা চিন্তা করে ছোয়াবের জন্যই তো কোরান পড়া, হুজুররা যে বলছে, বাংলায় কোরান পড়লে ছোয়াব হবে না, তাহলে বাংলায় কোরান পড়ে লাভ কী ? এর চেয়ে আরবীতে পড়াই ভালো।
এভাবে বাংলার মুসলমানরা ১২০০খ্রিষ্টাব্দ থেকে ৮০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তোতা পাখির মতো কোরান প’ড়ে আসছে, কিন্তু ৯৫% বাঙ্গালি মুসলমান ১১৪ টা সূরার মধ্যে একটা সূরারও পরিপূর্ণ অর্থ জানে না । এমনকি প্রতিদিনের ৫ ওয়াক্ত নামাজে তারা যে ছোট ছোট ৫/৬ টি সূরা আবৃত্তি করে, তার মধ্যে যে ‘সূরা লাহাব’ এ, লাহাব নামে এক ব্যক্তিকে গালাগাল করা ও অভিশাপ প্রদান করা হয়, সেটাও জানে না প্রায় ৯০% মুসলমান। এই বিষয়টি জানতে পেরেই এক মুসলমান ইসলাম ত্যাগ করেছে, নিচে দেখুন তার কমেন্ট-
Hani Kafir: আমি প্রাক্তন মুছলিম, কারণ ভাবতেই হাসি পায় যে, আল্যা আস্ত একটা সুরা জুড়ে শুধু আবু লাহাবকে অভিশাপ দিয়েছে।
এই বিষয়টি উপলব্ধি করলেই বোঝা যায়, ইসলামকে টিকিয়ে রাখার জন্য কেনো মুসলামানদেরকে মাতৃভাষায় কোরান পড়তে নিরুৎসাহিত করার প্রয়োজন হয় বা হয়ে পড়েছিলো। আজকে, যেসব মুসলিম পরিবারে জন্ম নেওয়া ব্লগাররা ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলছে, যেমন- আবুল কাশেম, এম.এ খান, সানিউর রহমানসহ আরো অনেকে, তারা কিন্তু কোরান হাদিস বুঝে পড়েই ইসলাম ত্যাগ করেছে এবং এই ঘটনাটা ঘটেছে লাদেনের টুইন টাওয়ার হামলার পর, এই কৌতূহল থেকে যে আসলে কোরানে কী লেখা আছে, কিসের জন্য জিহাদীরা নিজের জীবনকে উড়িয়ে দিচ্ছে।
বেশির ভাগ মুসলমান এবং প্রায় সব অমুসলিমদের কোরান সম্পর্কে এই অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে ধান্ধাবাজ মুসলমানরা শত শত বছর ধরে এই প্রচারণা চালিয়ে এসেছে যে, ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম কখনো সন্ত্রাসকে সমর্থন করে না, কোরান রিসার্চ করেই বিজ্ঞানীরা সব কিছু আবিষ্কার করেছে, মুহম্মদ ছিলো এক মহান দয়ালু ব্যক্তি যার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েই সবাই ইসলাম গ্রহণ করেছে, ইসলামে কোনো জোর-জবরদস্তি নেই, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা ইসলামে নিষেধ, নবী বলেছে- তোমার ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার- ইত্যাদি ইত্যাদি সব মন ভুলানো আগাগোড়া মিথ্যা কথা; উদ্দেশ্য একটাই, এসব শুনে শুনে যেন অমুসলিমরা ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং আস্তে আস্তে ব্রেইন ওয়াশের মাধ্যমে জীবনের কোনো এক পর্যায়ে গিয়ে ইসলাম গ্রহন করে মুসলমান হয়ে যায়।
উপরে যেসব বললাম তার মধ্যে-“ইসলামে কোনো জোর জবরদস্তি নেই, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা ইসলামে নিষেধ, নবী বলেছে, তোমার ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার” এই কথাগুলো যে কোরানে নেই, তা কিন্তু নয়, এই কথাগুলো কোরানে আছে; কিন্তু মুহম্মদ এই কথাগুলো বলতে বাধ্য হয়েছিলো মক্কায় থাকতে, যখন তার শক্তি কম ছিলো, কিন্তু যখন মুহম্মদ মদীনায় গিয়ে শক্তিশালী হয়েছে তখনই সে আগের কথাগুলোকে বাতিল করে বলেছে,
“ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম চাইলে কখনো তা গ্রহণ করা হবে না”- (কোরান, ৩/৮৫)
“তোমরা তাদের সাথে লড়াই করতে থাকো, যতক্ষণ না ফেতনা চুড়ান্তভাবে শেষ হয়ে যায় ও দ্বীন কেবলমাত্র আল্লার জন্য নির্দিষ্ট না হয়”- (কোরান, ২/১৯৩)
“তিনি সেই আল্লাহ যিনি তার রসূলকে হেদায়াত ও সত্য দ্বীন সহ পাঠিয়েছেন, যেন তাকে সমগ্র দ্বীনের উপর জয়ী করতে পারেন”- (কোরান, ৪৮/২৮)
“নামায কায়েম কর, যাকাত দাও এবং রসূলের আনুগত্য কর। আশা আছে যে তোমাদের প্রতি রহম করা হবে”- (কোরান, ২৪/৫৬)
এখন আপনিই চিন্তা করুন যে কোরানে বলা হচ্ছে,
“ধর্মের ব্যাপারে কোনো জোর জবরদস্তি নাই”- (কোরান, ২/২৫৬)
“তোমার ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার”- (কোরান, ১০৯/৬)
“নিজেদের দ্বীনের ব্যাপারে কোনো বাড়াবাড়ি করো না”-(কোরান, ৪/১৭১)
সেই কোরানে কিভাবে বলা হয় যে, ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম চাইলে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না; তাদের সাথে ততক্ষণ লড়াই করতে থাকো যতক্ষণ না তারা ইসলাম গ্রহণ করে; আল্লা, রাসূলকে পাঠিয়েছে সকল ধর্মের উপর তাকে জয়ী করার জন্যই এবং মুসলমান হও তাহলে তোমাদের প্রতি রহম করা হবে- এই কথাগুলো উপরের ঐ কথাগুলোর পক্ষে যায়, না বিপক্ষে যায় ?
মূলত ইসলাম যেমন সন্ত্রাসের খনি, তেমনি মুসলমানরা হলো মিথ্যার পাহাড়; এই মিথ্যা দিয়ে তারা ইসলামের জিহাদী সন্ত্রাস আড়াল করে অমুসলিমদেরকে ধোকা দেওয়ার জন্য তারা যেমন বলে ইসলাম শান্তির ধর্ম, তেমনি ইসলামের মূল গ্রন্থ কোরানকে মহান করে তোলার জন্য বলে, কোরান রিসার্চ করেই বিজ্ঞানীরা সব কিছু আবিষ্কার করেছে, যেন কোরান আসার আগে পৃথিবীতে বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানী ব’লে কিছুই ছিলো না!
কোরান রিসার্চ করেই বিজ্ঞানীরা সব কিছু আবিষ্কার করেছে বা করে, মুসলমানদের এটা বিশ্বাস করা ও বলার পেছনে কাজ করে এক গভীর মনস্তাত্ত্বিক কারণ; কারণটা হলো- শুরু থেকেই মুসলমানরা কোরান হাদিসের বাইরে কিছু পড়ে নি। আর যারা আরবের বাইরের মুসলমান, তারা ইসলাম গ্রহণের পর, শুধু আরবীতে কোরান হাদিস পড়েছে এবং সেসবের মানে যে কী, তা বিশ্বাস করেছে মাদ্রাসার হুজুররা যা বলেছে, তা। এই মুসলমানরা যখন ইউরোপীয় সভ্যতার সংস্পর্শে আসে এবং স্কুল, কলেজে পড়াশুনা শুরু করে, তখন তারা দেখতে পায় জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য-সস্কৃতিতে কোথাও মুসলমানদের কোনো অবদান দূরে থাক, নাম নিশানা নেই। একটা জাতির জন্য এটা একটা গভীর মনোবেদনা, হতাশা ও অতৃপ্তির কারণ যে, সভ্যতার আলোয় তারা একটা মোমবাতিও জ্বালাতে পারে নি।
চতুর এবং ধান্ধাবাজ মুসলিমরা যখন এটা বুঝতে পারলো, তখন তারা এটাও উপলব্ধি করতে পারলো যে, অদূর ভবিষ্যতে সমগ্র মুসলিম জাতি এটা নিয়ে নিদারুন অতৃপ্তি এবং হতাশায় ভুগবে, যেটা ইসলামের টিকে থাকার জন্য একটা বিপদজনক টার্ন হয়ে দাঁড়াবে। সেই সাথে চতুর ও ধান্ধাবাজ মুসলমানরা এটাও বুঝতে পেরেছিলো যে, এই হতাশা কাটিয়ে উঠার জন্য যদি মুসলমানরা জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা শুরু করে, তাহলেও ইসলামের পতন অনিবার্য; কারণ, মৃত্যুর ভয়ে ঐসব জ্ঞানী মুসলমানরা ইসলাম ত্যাগ না করলেও, তারা হয়তো নামে মুসলমান থাকবে, কিন্তু ইসলামের তারা কিছুই মানবে না; বাস্তবে হয়েছেও তাই, যে সব মুসলমান, অমুসলিমদের দেখাদেখি পড়াশুনা করে জ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে গেছে, তারা কিন্তু ইসলামকে আর ---- দিয়েও মানে না। তাই জ্ঞান বিজ্ঞানের কবল থেকে ইসলামকে রক্ষা জন্য চতুর এবং ধান্ধাবাজ মুসলমানরা সাধারণ গবেট মুসলমানদেরকে এই ট্যাবলেটে খাওয়ায় যে,
“মুসলমানদের মধ্যে কোনো বিজ্ঞানী নেই তো কি হয়েছে, এটা নিয়ে মুসলিম জাতির অতৃপ্তিতে ভোগা এবং হতাশার কোনো কারণ নেই; কারণ, বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত যা কিছু আবিষ্কার করেছে, সব কিছু তারা করেছে- কোরান রিসার্চ করেই। কারণ, কোরান একটি মহাবিজ্ঞানময় গ্রন্থ।”
ব্যস, হয়ে গেলো; মুসলমানরা তো কোনোদিন পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর কিছু বিশ্বাস করে নি, তারা শুরু থেকেই সব কিছু শুনেই বিশ্বাস করে আসছে, এই বিশ্বাসের ট্যাবলেটও তারা ভালোই খেয়েছে, আর ৭ থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বুড়ারা পর্যন্ত সুযোগ পেলেই রেকর্ড বাজিয়ে চলেছে, কোরান রিসার্চ করেই বিজ্ঞানীরা সব কিছু আবিস্কার করেছে, কোরান রিসার্চ করেই বিজ্ঞানীরা সব কিছু আবিস্কার করেছে; আর এটা অনবরত শুনতে শুনতে অনেক অমুসলিমও হয়তো বিশ্বাস করে ফেলেছে যে, হলে হতেও পারে, যেমন আমিও শিশুকালে বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু মানুষ যে চিরদিন শিশু থাকবে না, একদিন তারা তথ্যজ্ঞানে বড় হবে, বড় হয়ে সব কিছুকে যাচাই করতে শিখবে এবং যাচাই করে বিশ্বাস করবে, এটা বালির উপর প্রাসাদ গড়া মুসলমানরা হয়তো বুঝতে পারে নি বা জানতো না, তাই জ্ঞান বিজ্ঞানের ধাক্কায় ইসলামের এখন যায় যায় অবস্থা।
মুসলমানরা যাতে জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা না করে সেজন্য মুহম্মদ শুরু থেকেই ছিলো খুব কেয়ার; কারণ, মুহম্মদও জানতো মুসলমানরা যখন অন্ধবিশ্বাস ছেড়ে সব কিছুকে যুক্তি দিয়ে বিচার করা শুরু করবে, তখন তার সব আজগুবি থিয়োরি এমনিই ধ্বসে পড়বে, তাই সে বলে গেছে,
“তোমরা নিজেদেরকে নব উদ্ভাবিত বিষয় সমূহে থেকে নিজেদেরকে দূরে রেখো, কেননা, প্রত্যেক নব উদ্ভাবিত বিষয়ই বিদআত, আর প্রত্যেক বিদআত হচ্ছে ভ্রান্তি বা ভুল পথ।”- তিরমিযি হাদিস
এখানে মুহম্মদ পরিষ্কার করে বলে দিলো যে, আমি যা বলে গেলাম, তার বাইরে নতুন কোনো বিষয় নিয়ে কেউ কোনোদিন চিন্তা-ভাবনা করবে না, নতুন কোনো বিষয় নিয়ে ভেবেছো তো বেহেশতের সেভেনটি টু হুর এবং তাদের সাথে ইটিশ ফিটিশ মিস।
আমার প্রত্যেকটা পোস্টেই দুচারটা বেওয়ারিশ কুকুর এসে ঘেউ ঘেউ করে, এখানেও তারা বলবে, না, নবী একথা বলতেই পারে না, বরং নবী নির্দেশ দিয়েছে,
“জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রয়োজন হলে সুদূর চীন দেশে যাও।”
যারা এটা বলে কমেন্টে মল মূত্র ত্যাগ করার চিন্তা করছে, তাদেরকে বলছি, শোন, আমি হলাম ইসলামকে ভেজে খাওয়া লোক, সেই ভাজতে গিয়ে দেখেছি এটা একটা জাল হাদিস, আর এটাকে, কে কে জাল প্রমান করেছে, সেটাও বলে দিতে পারি, শুনবি, শুনে রাখ- একজন নয়, তিন জন- ইবনে জাওযি, ইবনে হিব্বান এবং নাসিরুদ্দিন আলবানি।
মূর্খ মুসলমানদেরকে প্রাথমিকভাবে, কোরান রিসার্চ করেই বিজ্ঞানীরা সবকিছু আবিষ্কার করেছে, এটা গেলানোর পর, চতুর এবং ধান্ধাবাজ মুসলমানদের মনে হলো, শুধু এটা বলে থেমে থাকলেই হবে না, এর পেছনে কিছু তথ্য প্রমানও হাজির করতে হবে; ব্যস, শুরু হয়ে গেলো কোরানে বিজ্ঞান খোঁজার অভিযান। সৌদি বাদশা, তার পারিবারিক চিকিৎসক, ফ্রান্সের মরিস বুকাইলিকে দিয়ে লিখালো, ‘কোরান বিজ্ঞান বাইবেল’ নামে একটি বই। এই বই প্রকাশ হওয়ার পর বাংলাদেশর এর কি কদর ! যেন এমন একটি মিথ্যা বই লিখলেই ‘যৌন ও সন্ত্রাসময় কোরান’ বিজ্ঞানে হাবুডুবু খাবে ? এরপর লেখা হলো ‘নেয়ামুল কোরান’, যাতে দেখানো হলো কোরানের কোন আয়াত থেকে বিজ্ঞানীরা কোন সূত্র নিয়ে কোন আবিষ্কার করেছে! কিন্তু এসব করে কিছুসময় অমুসলিমদেরকে ধোকা দেওয়া ছাড়া মুসলমানদের আর কোনো লাভ হয় নি। মুসলমানরা যে অন্ধকারে ছিলো সেই অন্ধকারেই আছে, আর মাঝখান থেকে এসব মিথ্যাচার করার জন্য তারা এখন ভীষণ সমালোচনার সম্মুখীন।
একসময় আমি একটি স্কুলে পড়াতাম, সেই স্কুলের এক ক্লাস থেকে অন্য ক্লাসের টিচারের কথা বার্তা শোন যেতো। তো শুনলাম এম.এ পাশ এক টিচার, স্টুডেন্টদের উদ্দেশ্যে বলছে, সেই বিখ্যাত বাণী, ‘কোরান রিসার্চ করেই বিজ্ঞানীরা সব কিছু আবিষ্কার করেছে।’ শুনে আমার মনে হলো, বাহ, মুসলমানদের জন্য বিজ্ঞানী হওয়া তো খুব সহজ! একটা মাত্র বই পড়েই তো তারা বিজ্ঞানী হতে পারে। অমুসলিম বিজ্ঞানীদের জন্য কোরান রিসার্চ করা তো খুবই সময়ের ও কষ্টসাধ্য ব্যাপার; কারণ, তাকে কোরান রিসার্চ করতে হলে আলিফ, বা, তা, সা শিখতে হবে, আরবি ব্যাকরণ শিখতে হবে, তারপর সে আরবিতে কোরান পড়ে তাকে রিসার্চ করতে পারবে, সেই দিক থেকে মুসলমানরা তো অনেক এগিয়ে, কোনো আরবি শব্দের অর্থ তারা না জানলেও- আলিফ, বা, তা, সা তারা জানেই। মনে হয়েছিলো ক্লাস শেষ হলে তাকে বলবো, বিজ্ঞানী হওয়ার এমন চান্স মিস করছেন কেনো ? কোরান রিসার্চ করেই যদি বিজ্ঞানীরা সব কিছু আবিষ্কার করে, তাহলে আপনি বসে আছেন কেনো, এখনই কোরান রিসার্চ শুরু করে দিন আর কিছু দিনের মধ্যেই বিজ্ঞানী হয়ে যান। পরে মনে হলো, দূর, এসব মূর্খের সাথে তর্কে গিয়ে লাভ নেই। হতে পারে এরা বি.এ / এম.এ ডিগ্রীধারী তথাকথিত শিক্ষিত, কিন্তু এরা তো এক একজন আল্টিমেট মূর্খ; কারণ, পাশ করার খাতিরে এরা পরীক্ষায় খাতায় লেখে, “পৃথিবী গোলাকার”, কিন্তু এটা কোরান বিরোধী হওয়ায় মনে মনে বলে, আল্লা মাফ করো, আমি বিশ্বাস করি, পৃথিবী সমতল। এই তথ্যে যদি ধাক্কা খান, তাহলে দেখে নিন নিচের দুটি আয়াত,
“ভূপৃষ্ঠকে আমিই বিস্তিীর্ণ করে বিছিয়েছি। আর আমি উত্তম সমতল রচনাকারী”- (কোরান, ৫১/৪৮)
“বস্তুত আল্লা ভূতলকে তোমাদের জন্য শয্যার ন্যায় সমতল করে বিছিয়ে দিয়েছেন”- (কোরান, ৭১/১৯)
ঘেউ ঘেউকারীরা হয়তো এ প্রসঙ্গে বলবে, না, এটা কোরানের সঠিক ব্যাখ্যা নয়, এই আয়াতের পূর্বাপর উল্লেখ করা হয় নি, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, হিম্মত থাকলে এই আয়াতের সঠিক ব্যাখ্যা উল্লেখ কর, না হলে দূরে গিয়া মর।
শুরুতেই বলেছি, ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি- কোরান রিসার্চ করেই বিজ্ঞানীরা সব কিছু আবিষ্কার করেছে, যদিও কয়েক বছর পর থেকেই এই কথা আর বিশ্বাস হতো না, কিন্তু কোনো মুসলমান এই কথা বললে কী উত্তর দেবো সেটাও খুঁজে পেতাম না বা বুঝতে পারতাম না। অবশেষে একদিন হুমায়ূন আজাদের এক বইয়ে পেলাম এর সমাধান। হুমায়ূন আজাদ মুসলমানদের এইসব মিথ্যাচার নিয়ে ছিলেন খুবই বিরক্ত। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, বিজ্ঞানীরা কষ্ট করে যখন কোনো কিছু আবিষ্কার করে ঠিক তারপরই জ্ঞান বিরোধী মুসলমানরা প্যাঁচানো আরবি লেখার মধ্যে দেখতে পায় ১৪০০ বছর আগেই আ্ল্লা কোরানের মধ্যে সেই কথা লিখে রেখেছে, কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলার আগে তারা কেউ সেটা দেখতে পায় না। এরপর থেকে এই প্রসঙ্গে কথা উঠলেই বলতাম, বিজ্ঞানীরা বলার পর, সেটা কোরানে লিখা আছে, এই কথা না বলে ক্ষমতা থাকলে বিজ্ঞানীদের আগেই বল, তাহলে বুঝবো তোর কোরান বিজ্ঞানময়, না হলে কানের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করিস না। দেখতাম কোরানিক বিজ্ঞান নিয়ে চুলকানি বন্ধ হয়ে গেছে।
এতক্ষণ যা পড়লেন, সেটা লিখেছি সম্প্রতি, ২০১৬ সালে, কিন্তু এই কোরান, বিজ্ঞান, রিসার্চ ও আবিষ্কার নিয়ে ২০০৮ সালে একটা লেখা লিখেছিলাম, সেটাও দেখে নিন নিচে, জানতে পারবেন অনেক কিছু, শিখতে পারবেন আরো অনেক কথা-
অধিকাংশ মুসলমানরাই বলে থাকেন যে, কোরান রিসার্চ করেই নাকি বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর যাবতীয়বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার করেছেন এবং এখনও করে চলেছেন, ভবিষ্যতেও নাকি করবেন।কারণ কোরানের মধ্যে নাকি সবই দেওয়া আছে, এখন শুধু গবেষণা করে বের করা !নিজেদের অজ্ঞতা ও মূর্খতাকে আড়াল করার কী হাস্যকর অপপ্রয়াস ? যেসব মুসলমান এসব কথা বলে, তারাও বড়দের কাছে শুনে শুনে এসব কথা মুখস্থ করে বলে, যুক্তি দিয়ে বিচার করে বলে না। যুক্তি দিয়ে বিচার করলে তারা প্রথমেযে জিনিসটি উপলব্ধি করতে পারতো, তাহলো কোরান রিসার্চ করেই যদি বিজ্ঞানীরা সব আবিষ্কার করতো তাহলে পৃথিবীর সব না হলেও অধিকাংশ বিজ্ঞানীই জাতিতে বা ধর্মে মুসলমান হতো। কিন্তু বাস্তব অবস্থা কী ? জ্ঞান বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবস্থান কোথায় ?
মুসলমানরা উল্লেখযোগ্য কিছু করলে পত্রিকার পাতায় এরকম শিরোনাম হয় 'পৃথিবীর প্রথম মুসলিম মহিলা' বা "প্রথম মুসলমান‌" ইত্যাদি ইত্যাদি। আর এটা নিয়ে মুসলমানদের গর্বেরও সীমা থাকে না; যেন মুসলমানরা বিশাল কিছু করে ফেলেছে! কিন্তু তারা এটা ভেবে দেখে না যে, যেক্ষেত্রে তারা হয়তো প্রথম পদক্ষেপ ফেলছে, সেই একই সেক্টরে পৃথিবীর অন্যান্য জাতির লোকজন হয়তো পা ফেলেছে সেই দুই, তিনশ বা হাজার বছর আগেই। কিন্তু তাতে তাদের কোনো আত্মতৃপ্তি নেই। কারণ, তারা জানে তাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে আরো অনেক দূর।তাদেরকে উদ্ভাবন করতে হবে আরো বিস্ময়কর জিনিস; যেগুলো তৃতীয় বিশ্বের অজ্ঞ ধর্মান্ধ মুসলমানরা কিনবে, ব্যবহার করবে; আবার উল্টো তাদের গালিও দেবে নাসারা, ইহুদি, কাফের, বিধর্মী ব‌'লে ! এসব তারা জানে, শোনে, কিন্তু কিছু মনে করে না। কারণ, বৃহৎ যারা, তারা জানে যে ক্ষুদ্রদের আত্মতৃপ্তির ধরণটাই এরকম। ওরা যার পরিশ্রমের ফল ভোগ করে উল্টো তাকেই গালি দেয়। নিজেরা যে কিছু করতে পারে না তাতে ওদের আত্মগ্লানি নেই ! কী আজব ব্যাপার ?
"পৃথিবীর প্রথম মুসলিম মহিলা"র একটি ঘটনা এ প্রসঙ্গে ব‌'লে রাখি, কয়েক বছর আগে ইরানের 'শিরিন এবাদি' শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার লাভ করে। এই বিষয়টি নিয়ে মুসলিম দেশগুলোর পত্র-পত্রিকা বাড়াবাড়ি দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। ঘটনা এমন যে শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার এর আগে আর কেউ পায় নি। নারী হিসেবে একমাত্র শিরিন এবাদিই পেয়েছে। তাই পুরষ্কার পাওয়ার পর প্রথমে প্রায় প্রতিদিন এবং পরে মাঝে মাঝেই পত্রিকার তার নামে নানা রকমের বানী আসতে লাগলো, যার প্রায় অধিকাংশই অন্তঃসারশূন্য। খালি কলসি যেমন জোরে জোরে বেশি দিন বাজানো যায় না তেমনি শিরিন এবাদিকেওবেশিদিন বাজানো গেলো না। তাই বছর খানেক পরথেকেই শিরিন এবাদির আর কোনো বানীচোখেই পড়লো না। কী অবাক ব্যাপার, পৃথিবীর প্রথম মুসলিম মহিলা নোবেল পুরস্কার পেয়েছে তাও আবার শান্তিতে (!), রসায়ণে নয়, পদার্থ বিজ্ঞানে নয়, চিকিৎসায় নয়, এমন কি অর্থনীতিতেও নয়, পেয়েছে শান্তিতে, তার সব বাণী এক বছরেই শেষ!
আমার বিচারে শান্তিতে নোবেল, নোবেলের মধ্যে সবচেয়ে নিম্নমানের পুরস্কার। কারণ এটা পাওয়ার জন্য দিনের পর দিন গবেষণাগারে পড়ে থাকতে হয় না, মাসের পর মাস গোসল না করায়গায়ে দুর্গন্ধ ও চুলে জট পাকিয়ে যায় না, রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটাতে হয় না, কাটাতে হয় না বছরের পর বছর ক্ষুধা কামবিহীন জীবন। এই পুরস্কার পাওয়ার জন্য মানবাধিকার নিয়ে কিছু কথা বললেই হয় (শিরিন এবাদী) অথবা দেশের স্বাধীনতার জন্য রক্তপাতহীন সংগ্রাম না করে পঁচিশ তিরিশ বছর জেলে থাকলেও হয়(নেলসন ম্যাণ্ডেলা) বা গণতন্ত্রের জন্য দশ পনেরো বছর জেলে কাটালেও হয়(অং সান সুকী) বা পরিবেশ রক্ষার জন্য দুই তিন লাখ গাছ লাগালেও হয় (এক আফ্রিকান); সেই শান্তির নোবেল পাওয়া নিয়ে কী মাতামাতি ! অব্‌শ্য শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার জন্য যে কাজটি অবশ্যই করতে হয় তাহলো দাতাগোষ্ঠিরস্বার্থ রক্ষা (ইউনুস)। এই শর্ত পুরণ না হলে আপনি যা ই করেন না কেনো শান্তিতে নোবেল আপনিকখনোই পাবেন না।
মুসলমানগেদর মধ্যে অধিকাংশ না হোক, অর্ধেকেরও কিছু কম লোক যদি যুক্তিবাদী থাকতো তাহলে কোরানকে নিয়ে এই যে মিথ্যাচার তার অবসান হয়তো হতে পারতো।কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে যুক্তিবাদী লোকের সংখ্যা এতই কম যে, তাদের সন্ধান পেতে হলে অনুবীক্ষণ যন্ত্রের দরকার, তাও সবখানে পাওয়া যাবে একথা বলা মুশকিল। মুসলমানদের মধ্যে যে যুক্তিবাদী মানুষের অভাব এর মুল কারণও কোরান। কারণ, ইসলামের মূল কথাই হচ্ছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পন; এখানে কোনো প্রশ্ন চলে না (কোরান, ৫/১০২)। তো যেখানে প্রশ্ন চলে না সেখানে যুক্তিবাদীর জন্ম হবে কোত্থেকে ? আবার, মনে সংশয় দেখা দিলেই তবে প্রশ্নের জন্ম হয়। কিন্তু ইসলামের, বিশেষতঃ কোরানের কোনো বিষয় নিয়ে মনে সংশয় দেখা দেওয়াও ইসলামের দৃষ্টিতে ঘোরতর অন্যায় কাজ। এমন হলে সে নাকি কাফেরএ পরিণত হবে। আর ইসলামে কাফের মানেই ভয়াবহ একটা ব্যাপার। যারা কোনো দিন বেহেশ্‌ত পাবে না, ভোগ করতে পারবে না বেহেশতের হুর, গেলমানদের। এই অমুলক ভয় এবং লোভই মুসলমানদের যুক্তিবাদী হয়ে উঠার পথে প্রধান বাধা। এই গ্যাঁড়াকলে যেখানে যুক্তিবাদীর জন্মই হচ্ছে না সেখানে বিজ্ঞানীর জন্ম হবে কিভাবে? কারণ মানুষ প্রথমে যুক্তিবাদী হয়, তারপর বিজ্ঞানী হয়ে উঠে।
কোরান রিসার্চ করেই বিজ্ঞানীরা সব আবিষ্কার করেছেন- এর জবাবে আমি একজনকে বলেছিলাম, তাহলে তো পৃথিবীর সব বিজ্ঞানীই মুসলমান হতো; কারণ, মুসলমানরাই তো কোরান পড়ে সবচেয়ে বেশি। তখন সে বলেছিলো, গবেষণার একটা ব্যাপার আছে না ? আমি তখন বললাম, তাহলে তোরা গবেষণা করিস না শুধু শুধু আরবি মুখস্থ করিস ? আরওরাই যদি গবেষণা করে তো ভালো কথা, গবেষণা করেযা বলে সেটাও তো বিশ্বাস করিস না। যেমন ওরা, মানে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বললো, পৃথিবী সূর্যের চারেদিকে ঘোরে, তোরা অস্বীকার করলি, কারণ কোরানে লেখাআছে 'সুর্যই পৃথিবীর চারেদিকে ঘোরে'। এর পক্ষে "পৃথিবী নয় সূর্য ঘোরে" নামে অবৈজ্ঞানিক বই লিখে বিজ্ঞানের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করলি, তাতে কীহয়েছে ? কোন মত প্রতিষ্ঠা পেয়েছে ? পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘোরেনা সুর্য পৃথিবীর চারেদিকে ঘোরে ?
যদিও বর্তমানে কোনো কোনো মৌলবাদী কোরানের এই ভুলকে আড়াল করার জন্য বিজ্ঞানের আবিষ্কার থেকে ধার করে সূর্যও যে ঘোরে- একথা বলছে। সূর্যও ঘোরে, এটা সত্য। কিন্তু যারা কোরানের ভাষ্যমতে "পৃথিবী নয় সূর্য ঘোরে" মতবাদে বিশ্বাসী তাদের পক্ষে কোরানের জ্ঞানে জ্ঞানী হয়ে সুর্য কিভাবে ঘোরে এটাব্যাখ্যা করাই সম্ভব নয়। এটা বোঝার জন্য টলেমীর মতবাদে বিশ্বাসী মন নিয়ে জ্যোর্তির্বিজ্ঞান পড়লে চলবে না। কোপার্নিকাসের মতবাদে বিশ্বাসীদের বইগুলো যুক্তি দিয়ে বিচার করার ক্ষমতা থাকতে হবে। এখানে বলে রাখি, যারা এখনও বিশ্বাস করে যে, "পৃথিবী নয় সূর্যই ঘোরে" তাদের কাছে ধর্মীয় মতবাদের সাপোর্ট হিসেবে টলেমীর মতবাদ একটি বড় অস্ত্র। এরা এতটাই মূর্খ ও অজ্ঞ যে, টলেমী যা বলে গেছে সেটাকেই মনে করে ধ্রুব সত্য। টলেমীর পরে আরও কত বিজ্ঞানী যে এ ব্যাপারে কত কী বলে গেলোসেদিকেকোনো নজর নেই; যেমন তাদের কাছে কোরানই সবকিছু, কোরানের বাইরে কোনোজ্ঞানই নেই ! ?
এখানে বলে রাখি, খ্রিষ্টজন্মের কয়েকশ বছর পূর্বে - পৃথিবীর প্রথম বিজ্ঞানী হিসেবে যাকে বলা হয় সেই 'থেলিস‌' এর জন্ম। সঙ্গত কারণেই আমরা ধরে নিতে পারি, তারও অনেক আগে থেকেই পৃথিবীতে অগণিত বিজ্ঞানীর আবির্ভাব ঘটেছিলো। যাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অবদান গড়ে উঠতে সাহায্য করেছে আজকের এই সভ্যতাকে। যেমন- আগুন কে আবিষ্কার করেছে তা আমরা জানি না। কত বছর আগে আগুন আবিষ্কারহয়েছে তাও মানুষের জ্ঞানাতীত। কিন্তু সভ্যতা নির্মানে ঐ নামনা জানা বিজ্ঞানীর আবিষ্কারকে কি খাটো করে দেখার অবকাশ আছে ? আমরা সবাই জানি এবং মানি যে তাকে খাটো করে দেখার কোনো অবকাশ নাই। তাহলে তিনি কি কোরান পড়ে আগুন আবিষ্কার করেছেন ? পৃথিবীতে কোরানের বয়স কত আর আগুনের বয়স কত ? কোরান নিয়ে বাড়াবাড়ি আর মিথ্যাচারের কারণেই বোধহয় হরহামেশাই আগুনে কোরান পুড়ছে।
তেমনি আদিম পৃথিবীর কোনো এক মহান বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার করেছিলো লোহা, এবং তাকে কাজে লাগিয়েপ্রভূত উন্নত করেছিলো তার সেই সময়কার সমাজের এবং উন্নতির পথ প্রশস্ত করে দিয়ে গিয়েছে আজকের সভ্যতার। কিন্তুকোরানের সুরা হাদীদে বলা হচ্ছে, "আমি অবতীর্ণ করেছি প্রচুর লৌহ যাতে রয়েছে প্রচুর শক্তি ও মানুষের কল্যান।" ( কোরান, ৫৭/২৫) তাই যদি হয় তাহলে সৃষ্টি কর্তার কাছে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, তুমি তো সর্বজ্ঞ, লৌহ যদি তুমি অবতীর্ণ করে থাকো তাহলে তো অন্যশ‌’ খানেক মৌলিক পদার্থও অবতীর্ণ করেছো। কোরানে তাদেরকথা বললে না কেনো ? আর তাদের ব্যবহার ও ধর্ম যদি একটু বলে দিতে তাহলে তো বিজ্ঞানীদের এত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে সেসব বিষয়ে জানতে হতো না। নাকি হযরত মুহম্মদের সময় লৌহ সম্বন্ধেই লোকজন বেশি জানতো এবং অন্যান্যমৌলিক পদার্থ সম্পর্কে জানতো না। তাই বোধহয়হযরত মুহম্মদ এই সূরার মাধ্যমে লৌহের কথাই বলেছেন, অন্য মৌলিক পদার্থের কথা বলতে পারে নি। আর মুহম্মদ লোহার মধ্যেই কেবল প্রচুর শক্তি ও কল্যান দেখতে পেয়েছিলো বোধ হয় এজন্য যে, লোহা দিয়ে তলোয়ার তৈরি করা যেতো, যা দিয়েঅমুসলিমদেরকে হত্যা করা যেতো আর তাদের ধন-সম্পত্তি লুঠ করা যেতো।
এটাই সত্য ও স্বাভাবিক যে মানুষ যা জানে তার পক্ষে তাই বলা সম্ভব।যা জানে না তা সে বলবে কিভাবে ? অন্য মৌলিক পদার্থগুলোর কথা সেই সময়ের আরবের লোকজন যেমন জানতো না তেমনি জানতো না হযরত মুহম্মদও, সেই সাথে আল্লাও! আবার মুসলমানরা বলে আল্লা নাকি সর্বজ্ঞ!আপনাদের কী অবস্থা জানি না, এসব শুনে তো আমার বেদম হাসি পায়।
জয় হিন্দ।
----------------------------------------------------------------------------------------
উপরে উল্লেখ করা একটি রেফারেন্স :
কোরান, ৫/১০২ = তোমাদের পূর্বে একদল এই ধরণের প্রশ্নাবলী জিজ্ঞেস করেছিলো, পরে তারাএসব কারণেই কুফরিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে।
💜 জয় হোক সনাতনের 💜