শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০২০

বানাই নদীর তীরে হাতিয়াগড়

 বানাই নদীর তীরে হাতিয়াগড়

 

 

নিউজ ফিডের পোস্ট

★★★বানাই নদীর তীরে হাতিয়াগড় ★★★
-:বিনোদ সরদার:-
মজে যাওয়া বানাই নদী
বইছে বাদাবনে।
দুই ধারে তার গরু ছাগল
চরে আপনমনে।।
শুনতে যদি চাও তোমরা
এসো বানাই তীরে।
অতীত কথা সব বলবে
মনের ব্যাথা ভুলে।।
বানাই একটি নদীর নাম। যৌবন সে পে্রিয়েছে। এখন সে বুড়ো হয়েছে। নিজস্ব সম্পদ তেমন নেই। কেবল সে বেচেঁ আছে তার মনের কথা বলবে বলে। আমি কান পেতে শুনলাম সেই মর্মকথা। লোমহর্ষক সেই কাহিনী। খুঁজে পেলাম হাতিয়াগড়ের মধ্যযুগের ইতিহাস। খুঁজে পেলাম রাজা মাহিদানন্দের রাজপ্রাসাদ। খুঁজে পেলাম প্রাচিন বঙ্গ লিপি। খুঁজে পেলাম বন্য মহিষের দাঁত ।খুঁজে পেলাম প্রাচীন শিব সাধনার ভূমি ও শিব মূর্তি। যেটা পূজা করতেন রাজা মাহিদানন্দ ও তার প্রজাগণ।
মধ্যযুগে রচিত /13 শতক তে মুসলমানি কেচ্ছাতে রয়েছে পীর গোরাচাঁদ /হযরত সৈয়দ আব্বাস আলি মক্কা থেকে আরো 31 জন পীর কে নিয়ে আসেন বঙ্গ দেশে ধর্ম প্রচারের জন্য। পীর গোরাচাঁদ এর বৈশিষ্ট্য হলো রাজা কে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা ।এর জন্য তিঁনি নানান অলৌকিক ব্যাপার প্রজাদের কে দেখাতেন। শেষে রাজা না রাজি হলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেন। এইভাবে নবাবী শাসনে তিনি ইসলামধর্ম প্রচার করতেন। সেই সময় বাংলার নবাব ছিলেন সামসুদ্দিন ফিরোজ শাহ। সুন্দরবনের স্বাধীন রাজা ছিল হাতিয়া গড়ের রাজা। তাকে ইসলাম গ্রহণের জন্য পির গোরাচাঁদ প্রস্তাব দেন। রাজা মেনে নেননি কারণ তিনি শিব সাধনা করতেন। শেষে বানাই তীরে যুদ্ধ হয় । যুদ্ধে বাঁকানন্দ নিহত হন তিনি ছিলেন রাজার বড়ো ছেলে। ছোটো ছেলে আঁকা নন্দের সাথে ঘোর যুদ্ধে পীর গোরাচাঁদ এর মুন্ডকছেদ হয়। মৃত্যুর আগে সেনা নিয়ে পালাতে থাকে বানাই নদী ধরে । বানাই নদীর জাত অভিমান জেগে ওঠে । প্রচন্ড বানে সমস্ত নৌকা ও সেনা ডুবে যায়। কেবল গোরাচাঁদ বেঁচে থাকে। শেষে তিনি নৌকার কাট কুমিরের পিঠে লাগিয়ে বানাই ছেড়ে বিদ্যধরী নদী হয়ে বেড়া চম্পা তে ওঠেন । সেখানে তার মৃত দেহ কবরস্থ করা হয়। তার হাড় সেখানে আছে বলে সেই জায়গার নাম এখন হাড়োয়া। বানাই নদী ধরে পালানোর সময় বাঁচার জন্য গোরাচাঁদ পান ও সুপারি চেয়ে ছিলেন তা কেউ দিতে পারেনি। বানাই নদী যখন বান ডেকে তাদের সব ভাসিয়ে দেয় তখন তিনি এখানকার মানুষ ও নদীর জাত অভিমান দেখে ক্রুদ্ধ হন ও বানাই নদী কে অভিশাপ দেন । লোকশ্রুতি বলে এই কারণে বানাই নদী মজে গেছে। কিন্তু আমার মতে এটা ঠিক নয় কারণ সুন্দরবোনের অন্যান্য নদী গুলি এখন বানাই নদী র মতো অবস্থা।
বানাই তথা হাতিয়া গড় পুন্ড্রবর্ধন এর নিম্ন গাঙ্গেয় অঞ্চলের মধ্যযুগের গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস। যেখান থকে বাংলাভাষার লিপি বিবর্তন ভাষা বিবর্তন ধর্মীয় বিবর্তন ও সুন্দরবনের প্রাচীন জীব বৈচিত্র সম্পর্কে গুরুত্ব পূর্ণ দিক নির্দেশ করে।
ছবিতে একজন 93 বছরের অতি বৃদ্ধ কে দেখবেন উনি বর্তমান ভগ্ন রাজ প্রসাদ এর মলিক মনে বংশ ধর। ওনার মুখে যুদ্ধের কাহিনী শুনেছি।
1908 সালে প্রাবন্ধিক নিখিলনাথ রায় ঐতিহাসিক চিত্র তে লেখেন প্রতাপাদিত্যের বর্ণনা প্রসঙ্গে। সেখানে বলা হয়েছে বারো ভূঁইয়া রাজা প্রতাপাদিত্যের হাতির মোকাম থেকে হাতিয়া গড় নাম হয়েছে। অবশ্য তিনি বলছেন এটি সঠিক কারণ নয়। কারণ রাজা প্রতাপাদিত্যের সময় কাল পঞ্চদশ শতক। কিন্ত ত্রয়োদশ শতকে হাতিয়া গড় এর কথা মুসলমানি কেচ্ছায় পাওয়া যাচ্চে। সেখানে তৎকালীন হাতিয়া গড় এর রাজার সাথে মানে মহিদানন্দের সাথে পির গোরাচাঁদ এর যুদ্ধও বর্ণনা আছে । সুতরাং হাতিয়া গড় অনেক প্রাচীন নাম। আমার মনে হয় গঙ্গারীদে সভ্যতার যে হস্তিবাহিনী ছিল সেখান থেকে হাতিয়া গড় নামটি আস্তে পারে। কারণ হাতিয়া গড়ের সীমানা শুরু হচ্ছে ডায়মন্ড হারবার থেকে শুরু করে 24 পরগনার শেষ বঙ্গোপসাগরে তীর পর্যন্ত। যার মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে বানাই নদী । বর্তমান সমীক্ষায় প্রাপ্ত মহিদানন্দের রাজধানী একই দিক নির্দেশ করে।
বনাই নদী র নাম করন অনেক ভাবে হয়েছে। বান বা বন্যা থেকে বানাই নদী কারন মুসলমানি কেচ্ছা ও লোকশ্রুতি বলে বানাই নদী বান ডেকে পীর গোরাচাঁদ এর নৌকা গুলি ডুবিয়েছে।আবার এই নদীর তীরে অসংখ্য বাইন বানি উদ্ভিদ যেমন পেয়ারা বাইন,জাত বাইন ,কালা বাইন হয়। এই উদ্ভিদের নাম থেকে ও বানাই নাম আস্তে পারে। তবে বর্তমানে এই নদী 24 পরগনার মুরাগাছি ও হাতিয়া গর এর সীমান্তে র দিক নির্দেশ করে । হাতিয়া গড় সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ গবেষণা সংক্রান্ত প্রবন্ধ সংকলন 26 জানুয়ারি 2021প্রকাশ হচ্ছে। বই "গঙ্গারিডি থেকে হাতিয়াগড়" আগত বুদ্ধ-পূর্ণিমায় প্রকাশ হবে। —
Pijush Sarkar
এবং
আরও 40
জনের সাথে।
 
শেয়ার করেছেন :- প্রণব কুমার কুণ্ডু
 












প্রণব কুমার কুণ্ডু

সিল্ক রোড


সিল্ক রোড
সবার সাথে শেয়ার করা হয়েছে
সবাই
সিল্ক রোড: 
প্রাচীন পৃথিবীর রূদ্ধশাস বাণিজ্যপথ
সিল্ক রোড ছিলো পৃথিবীর দীর্ঘতম ও ঐতিহাসিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন বাণিজ্য পথের একটি নেটওয়ার্ক, যা চীনের “হান” সাম্রাজ্যের সময় প্রতিষ্ঠিত হয়। পূর্ব- পশ্চিমের সংযোগ স্থাপনকারী সিল্ক রোড চীনের সাথে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল সমূহের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনের পাশাপাশি শত শত বছর ধরে এটি সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠে। খ্রিষ্টপূর্ব ১৩০ অব্দ থেকে ১৪৫৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সিল্ক রোড ছিলো ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বাণিজ্য পথ। বর্তমানে পৃথিবীর প্রাচীনতম এই বাণিজ্য পথটি ইউনেস্কো এর “ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট” এর অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এমনকি, চীনা সরকার ঐতিহাসিক এই বাণিজ্য পথটি পুনঃনির্মাণেরও ঘোষণা দিয়েছেন।
সিল্ক রোড কি ও সিল্ক রোডের নামকরণঃ
সিল্ক রোড মূলত একক কোনো পথ নয়। এটি অনেক গুলো স্থলভিত্তিক বাণিজ্য পথের সমষ্টি যা চীন, মধ্য এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকার কিছু দেশ ও ইউরোপকে যুক্ত করেছে। সিল্ক রোড নামটি এসেছে লাভজনক এশিয়ান সিল্ক থেকেই। ঐ সময়ে সিল্ক ব্যবসাকে কেন্দ্র করেই সিল্ক রোডের যাত্রা শুরু হয়। বিলাস বহুল ও মূল্যবান এই পণ্যটি ইউরোপীয় ও মধ্য এশিয়ান্ বণিকদের ব্যাপকভাবে আকর্ষণ করতে থাকে এবং তারা স্বর্ণ, আইভরি, পশম, কাঁচের জিনিসপত্র , ঘোড়া ইত্যাদির বিনিময়ে চীন থেকে সিল্ক ক্রয় করে নিয়ে যেতো। চীনা সিল্ক বা রেশমকে কেন্দ্র করে জমজমাট হয়ে উঠে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য। ফলে, পণ্য-দ্রব্য আনা-নেয়া ও সহজ ভ্রমণের জন্য প্রয়োজন হয়ে উঠে একটি নিরবিচ্ছিন্ন বাণিজ্য পথের।এই চাহিদা থেকেই খ্রিষ্টপূর্ব ১৩০ অব্দে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয় সিল্ক রোডের। ১৪৫৩ সালে বিখ্যাত অটোমান সাম্রাজ্য চীনের সাথে বাণিজ্য বয়কটের পূর্ব পর্যন্ত,  সিল্ক রোড ব্যবহৃত হতো। এরপর চীন এই রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। সিল্ক বা রেশম বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে এই রাস্তা নির্মাণ করা হয় বলে এর নামকরণ করা হয় সিল্ক রোড। সিল্ক রোড কে “সিল্ক রুট” নামেও অভিহিত করা হয়। ১৮৮৭ সালে এই নামকরণ করেন জার্মান ভূতত্ত্ববিধ ফার্ডিন্যান্ড ভন রিথোফেন। সিল্ক রোডের অন্তর্ভূক্ত ছিলো কৌশল্গতভাবে তৈরি কিছু বাণিজ্য কেন্দ্র, বাজার, পণ্য কেনা-বেচা, বিতরণ, গুদামজাতকরণ এবং বাণিজ্য কাফেলাগুলোর জন্য জল সরবরাহের উৎস হিসেবে তৈরিকৃত জলের প্রবাহ ইত্যাদি।
সিল্ক রোডের ইতিহাসঃ
সিল্ক রোডের ইতিহাস হান সাম্রাজ্যেরও অনেক আগে শুরু হয়। পারস্যের( বর্তমান ইরান) রয়্যাল রোড ই মূলত সিল্ক রোডের প্রধান শিরা। সিল্ক রোড যাত্রা শুরুর ও ৩০০ বছর পূর্বে দ্য রয়্যাল রোড-যা ইরান থেকে শুরু হয়ে তুরস্ক পর্যন্ত বিস্তৃত ছিলো, তার যাত্রা শুরু করে। তৎকালীন পারস্যের শাসনকর্তা দারিয়াস(I)কর্তৃক এই রাস্তাটি নির্মিত হয়। আশেপাশের বিভিন্ন ছোট বাণিজ্য পথগুলোকেও যুক্ত করে, যেমনঃ মেসোপটেমিয়া থেকে ভারতীয় উপমহাদেশ এবং মিশর হয়ে উত্তর আফ্রিকা ইত্যাদি। পরবর্তীতে মেসেডোনিয়ার রাজা অ্যালেকজান্ডার দ্য গ্রেট রয়াল রোড হয়ে পারস্য পর্যন্ত তার সাম্রাজ্য বিস্তার করে। এরপর এই রয়্যাল রোডের ই অনেকটা অংশ সিল্ক রোডের অন্তর্ভূক্ত হয়।
প্রাচীন সিল্ক রোড এর অবস্থান :
২০০০ বছরের পুরনো সিল্ক রোড প্রাথমিক ভাবে নিজেদের রাজ্যের ভেতরেই সিল্ক বাণিজ্যের জন্য ব্যবহৃত হতো। রাজ্যের কেন্দ্রস্থল থেকে রাজ্যের পশ্চিম প্রান্তীয় অঞ্চলগুলোতে কাফেলারা সিল্ক পৌছে দিত। কিন্তু কাফেলাগুলো প্রায় সময়ই মধ্য এশিয়ার ছোট ছোট আদিবাসী গোষ্ঠীদের আক্রমণের স্বীকার হতো। এই আক্রমণ থেকে কাফেলা গুলোকে রক্ষা করতে ও বাণিজ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হান সাম্রাজ্যের বিখ্যাত সম্রাট হান উডি বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোর সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনের উদ্দেশ্যে তার জেনারেল ঝাং কিয়ান কে দূত হিসেবে নিযুক্ত করে। হান সাম্রাজ্যের রাজধানী চেং এন থেকে শুরু করে , বিস্তৃত পশ্চিমাঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি ও রাজনৈতিক অবস্থা সমূহ জানতে ঝাং কিয়ান তার বিশাল বাহিনী নিযুক্ত করে।
কঠোর পরিশ্রম ও সাহসিকতার দৌলতে তারা এই নতুন অঞ্চল সম্পর্কে জানতে সক্ষম হয়। ধীরে ধীরে তারা পশ্চিমের গুরুত্বপূর্ণ অনেকগুলো ছোট ছোট রাজ্যের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে সমর্থ হয়। এই অসাধারণ কূটনীতিবিদ ও আবিস্কারক পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সাথে বাণিজ্যের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে এবং পরবর্তীতে একই ভাবে পশ্চিমা বিশ্বের সাথেও বাণিজ্য প্রসারিত হয়। তখন থেকেই ব্যবসায়ীরা সিল্ক রোডে নিরাপদে ভ্রমণ ও বাণিজ্য পরিচালনা করতে থাকে। চীন থেকে বহির্বিশ্বে মূল্যবান সিল্ক নিয়ে যেতে ব্যবসায়ীরা নতুন এই বাণিজ্য পথ অনুসরণ করতে থাকে।
সিল্ক রোডের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বঃ
চীন, কোরিয়া, জাপান, ভারতীয় উপমহাদেশ, ইরান, হর্ন অব আফ্রিকা ও ইউরোপে সভ্যতার উন্নয়নে সিল্ক রোড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সিল্ক রোডের কল্যাণেই এই সকল সভ্যতা সমূহের মধ্যে সুদূর প্রসারী অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। যদিও সিল্ক রোডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য ছিলো এশিয়ান সিল্ক, এই পথে অন্যান্য আরো অনেক কিছু বিনিময় হত ,যেমনঃ ধর্ম, জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এমনকি প্লেগ এর মত রোগও এই পথেই ছড়িয়ে পড়ে।
অর্থনৈতিক বাণিজ্যের পাশাপাশি সিল্ক রোডের কল্যাণে শিক্ষা সংস্কৃতির আদান-প্রদানও হয়। সিল্ক রোডের সবচেয়ে মূল্যবান বিষয়টিই ছিলো বিভিন্ন জাতির মধ্যে সংস্কৃতির আদান-প্রদান। শিল্প, সাহিত্য, ভাষা, ধর্ম, দর্শন, স্থাপত্যকলা সহ প্রতিটি সভ্যতার সমস্ত কিছুর বিনিময় হয় সিল্ক রোডের মাধ্যমে। এমনকি ৫৪২ সালে সিল্ক রোড ধরেই ভয়ানক এক প্লেগ ছড়িয়ে পড়ে এবং তা পৌঁছে যায় কনস্ট্যান্টিনোপল পর্যন্ত যা বাইজান্টিন সাম্রাজ্যের ধ্বংস ডেকে আনে।সিল্ক রোড বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ব্যবসায়ীরা তাদের বাণিজ্য পরিচালনার জন্য সমুদ্র পথ বেছে নেয় যার মাধ্যমে শুরু হয় আবিস্কারের যুগ। এভাবেই আধুনিক বিশ্বের উন্নয়নের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করে যায় সিল্ক রোড।
একুশ শতকের নতুন সিল্ক রোডঃ
চীন, কাজাখস্থান, মঙ্গোলিয়া ও রাশিয়াকে সংযোগকারী “দ্য ইউরেশিয়ান ল্যান্ড ব্রিজ’ নামে পরিচিত রেল রোডকে অনেক সময় “নিউ সিল্ক রোড” নামে অভিহিত করা হয়। এই রেলওয়ে লাইনের সর্বশেষ সংযোগের কাজ শেষ হয় ১৯৯০ সালে চীন ও কাজাখস্থান এর রেলওয়ে সিস্টেমের সাথে আলাতাও পাস সংযোগের মাধ্যমে। ২০০৮ সালে চীনের জিনজিয়াং প্রদেশ থেকে কাজাখস্থান এর আলমাতি ও আসতানা পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করে। ২০০৮ এর অক্টোবরে প্রথম ট্রান্স ইউরেশিয়া লজিস্টিক ট্রেন জিয়াংতান থেকে জার্মানির হামবুর্গ পৌঁছায়। ২০১১ সাল থেকে এই লাইনটি চীন ও জার্মানির পণ্য পরিবহণের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে ফলে কন্টেইনার শিপে যেখানে ৩৬ দিন লাগতো সেখানে রেলপথে মাত্র ১৩ দিনেই পণ্য পৌঁছে যাচ্ছে। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে, এই সেবার আওতায় প্রথম বারের মত একটি ট্রেন লন্ডন পৌঁছায়। এছাড়াও এই রেললাইনটি মাদ্রিদ ও মিলানকেও সংযুক্ত করেছে।
এছাড়াও স্থল যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নতির ফলে মূল সিল্ক রোড আবার আংশিকভাবে পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠছে। চীন ও ইউরোপ কে সংযুক্ত করতে চীন সরকার উচ্চ গতি সম্পন্ন বুলেট ট্রেন লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। এই ট্রেন লাইন অনেকাংশে পূর্বের সিল্ক রোডের বাণিজ্যিক সুবিধা অনুসরণ করেই নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চীন থেকে ইউরোপ পর্যন্ত নিউ সিল্ক রোডের একটি পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে। এই উদ্যোগের আওতায় প্রাথমিকভাবে পূর্ববর্তী সিল্ক রোডের সাথে যুক্ত দেশ সমূহ ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া ও পূর্ব আফ্রিকা কে সংযুক্ত করা হয়। চীন সরকারের এই উন্নয়ন কৌশল কাঠামো “দ্য সিল্ক রোড ইকোনমিক বেল্ট অ্যান্ড দ্য টুয়েন্টি-ফার্স্ট সেঞ্চুরি মেরিটাইম সিল্ক রোড” বা “ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড” নামে পরিচিত। এছাড়া এই পরিকল্পনাটি “বেল্ট অ্যান্ড রোড” বা “বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ” নামেও পরিচিত। চীন সরকার এই পরিকল্পনাকে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাতছানি হিসেবে উল্লেখ করেন। অপরদিকে, সমালোচকরা একে বিশ্ব বাণিজ্যে চীন কেন্দ্রিক বাণিজ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চীনের একটি পদক্ষেপ বলে ধারণা করেন।
প্রস্তাবিত “ওয়ান বেল্ট , ওয়ান রোড”
সিল্ক রোড ইকোনোমিক বেন্ট- চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর প্রস্তাবিত সিল্ক রোড ইকোনোমিক বেল্ট এর অন্তর্ভূক্ত দেশ সমূহের মাঝে রয়েছে-মধ্য এশিয়ায় অবস্থিত মূল সিল্ক রোডের অন্তর্গত দেশ সমূহ, পশ্চিম এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপ। এই অঞ্চল সমূহের বাইরে “বেল্ট” বা বলয়ের এর বর্ধিত অংশ হিসেবে দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকেও যুক্ত করা হবে। এর মধ্যে উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ বলয় প্রস্তাবিত হয়েছে। উত্তর বলয় মধ্য এশিয়া থেকে রাশিয়া হয়ে ইউরোপে যাবে। কেন্দ্রীয় বা মধ্য বলয় মধ্য এশিয়া থেকে পশ্চিম এশিয়া হয়ে পারস্য উপসাগর ও ভূ-মধ্য সাগর পর্যন্ত যাবে। অন্যদিকে, দক্ষিণ বলয় চীন থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া থেকে পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত যাবে।
সিল্ক রোডের স্থল করিডোর গুলোর অন্তর্ভূক্ত রয়েছে-
দ্য নিউ ইউরেশিয়ান ল্যান্ড ব্রিজ যা পশ্চিম চীন থেকে কাজাখস্থান হয়ে পশ্চিম রাশিয়ায় প্রবেশ করেছে। এই পথের অন্তর্ভূক্ত রয়েছে সিল্ক রোড রেলওয়ে যা চীনের জিনজিয়াং প্রদেশ থেকে শুরু হয়ে কাজাখস্থান, রাশিয়া, বেলারুশ, পোল্যান্ড ও জার্মানিকে সংযুক্ত করেছে।
চীন-মঙ্গোলিয়া-রাশিয়া করিডোর যা চীনের উত্তরাংশের সাথে রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলকে যুক্ত করবে।
চীন-মধ্য এশিয়া- পশ্চিম এশিয়া করিডোর যা চীনের পশ্চিমাঞ্চল থেকে তুরস্ক পর্যন্ত যাবে।
চীন-ইন্দোচীন উপদ্বীপ করিডোর যা চীনের দক্ষিণাংশ হয়ে সিঙ্গাপুর পর্যন্ত যাবে।
বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মায়ানমার করিডোর যা চীনের দক্ষিণাংশ হতে মায়ানমার পর্যন্ত রয়েছে এবং এই রুটটিকে “বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ” এর সাথে গভীর ভাবে সম্পর্কযুক্ত বলে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
চীন-পাকিস্তান করিডোর যা চীন থেকে পাকিস্তানে পর্যন্ত যাবে।
ম্যারিটাইম সিল্ক রোড– এই রোডটিও “বেল্ট অ্যান্ড রোড” পরিকল্পনার অংশ। এই রোডের মাধ্যমে সমুদ্র পথে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, উত্তর আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে, দক্ষিণ চীন সাগর, দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে বাণিজ্য পথ হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
স্থলপথ ও জলপথের সাথে সাথে উত্তরমেরু অঞ্চলকে এই ইকোনোমিক বেল্ট এর সাথে যুক্ত করতে শি জিনপিং চীন-রাশিয়া হয়ে একটি বরফেরটোইরি সিল্ক রোডের ও প্রস্তাবনা পেশ করেন। ২০১৪ সালে চীন সরকার সিল্ক রোড নির্মাণের জন্য তহবিল গঠন করেন এবং ইতিমধ্যে সিল্ক রোডের নির্মাণ কাজও শুরু হয়েছে। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারীতে, “ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড” এর আওতাভূক্ত প্রথম ট্রেনটি চীনের ঝিজিয়াং প্রদেশ থেকে ইরানের রাজধানী তেহরান পৌঁছায়। যদিও পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে এখনো অনেক দেরী, দেখার বিষয় হচ্ছে সত্যিই এই পরিকল্পনা আশার কতটুকু প্রতিফলিত করতে পারে।
collected-Inter
সবার সাথে শেয়ার করা হয়েছে
 












প্রণব কুমার কুণ্ডু

The gut

 The gut

 

Frontlines of Fighting Disease

The gut is one of the core disease-fighting systems of the human body. First, the acid and enzymes in the stomach work to sterilize our food and, in this way, protect the body from illness and infection. In addition, the digestive tract is an important source of immune function in the body. “All foods we eat are in communication with immune receptors in the digestive tract, triggering hormones and various cell types that help the body with its immune function,” Dr. Ganjhu explained.

One way the gut aids in immune function is through the presence of Peyer’s patches, or large oval clusters or nodules of lymphoid tissue that are found on the wall of the small intestine. “Because the lining of the gastrointestinal tract is exposed to the external environment, through food and other material, bad bacteria or other pathogenic substances can gain entry into the gut. Peyer’s patches help to monitor the lining of the gut and, when necessary, generate an immune response, producing antibodies that will fight rogue antigens and allergy-causing substances,” said Dr. Ganjhu.

Finally, the digestive system is the home of the “gut microbiome”—a diverse community of different bacteria types that play a vital role in both fighting disease and maintaining our health. Each of us has his or her own unique bacteria mix, or bacteria “thumbprint” in the gut. Some gut bacteria, or some bacteria in excessive amounts, can cause infection, symptoms, and even an increased risk for cancer. While other bacteria, or the right amounts of these bacteria, help us to fight disease and stay healthy. Scientists are continuing to study the good and bad effects of bacteria in the gut, and whether there are mixes of bacteria that correspond to good health and health risks.

NYU Langone researchers recently published a study in the journal Nature, showing a potential association between antibiotic use, changes in gut bacteria, and an increased risk of obesity. In addition, doctors have begun using good bacteria to treat people who have a serious and potentially life-threatening infection, such as Clostridium difficile (C diff) infection, when antibiotic therapy is no longer working.

From : Google :

NYULangone Health

Shared by Pranab Kumar Kundu








Pranab Kumar Kundu