বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৭

রামকৃষ্ণদেব ( গদ্যরচনা )



রামকৃষ্ণদেব  ( গদ্যরচনা )



রামকৃষ্ণদেবের হাতে আগুন তোলবার চিমটা,  কখনোও ছিল না।

রামকৃষ্ণদেবের মাথায় জটাজুটও কখনোও ছিল না।

রামকৃষ্ণদেবের গায়েও, কখনোও, শিবঠাকুরের মতন,  ভস্ম লাগানো থাকত না।

অথচ, তিনি কালীভক্ত ছিলেন।

কালীঠাকুরের স্বামী, শিবঠাকুরকে,  কি তিনি,অবজ্ঞা করতেন ?

শ্রীরামকৃষ্ণের,  কালীমায়ের সাথে কথা বলা, আলৌকিক ঘটনা।

কালীমাকে খাওয়ানোও, অলৌকিক।

কালীমাকে শাড়ি পরানো, তা অবিশ্যি হতে পারে।

কালীমায়ের ল্যাংটা ঘোচানো, তা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা।

শুধু শাড়ি কেন, শায়া ব্লাউজ কাঁচুলি, এগুলোও পরাতে পারেন।

এমনিতে তো কালীঠাকুর ল্যাংটাই। আমরা কালীপূজার সময়, নৈহাটিতে যত বড় বড় কালীঠাকুর দেখি, তা বলতে গেলে, সবই ল্যাংটা।

তবে উনি কালীমায়ের চরণতলে শুয়ে থাকা শিবঠাকুরকে, আন্ডারপ্যান্ট-ধুতি, গেঞ্জি-পাঞ্জাবি এগুলো, পায়ে চটি, পরাতেন কিনা,  জানা যায় না।

শিব ঠাকুরের হাতের কল্কেতে তামাকু সাজাতেন কিনা,তাও, বলতে পারব না।

তবে, তামাকু সাজালে, তাঁর হাতে সুগন্ধি তামাকের 'ভু ভু' গন্ধ লেগে যেত।

তবে যদি করে থাকেন, সেইগুলিই ছিল, শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবের  আত্মার অহংকার।


আর, অহংকার ছিল, নরেনের মতন শিক্ষিত ছেলেকে, হিপ্নোটাইজ করে বশীভূত করা।



তারপরে নরেনের গুরুদেব হওয়া।


সেটাও ছিল তাঁর  মাত্রাতিরিক্ত অহংকার।



শ্রীরামকৃষ্ণদেব, তান্ত্রিক মতে সাধনা করেছিলেন।

সাধনা করার পরে সেই অপূর্ব সুন্দরী, অল্পবয়সী যুবতি সাধিকাকে, আর খুঁজে পাওয়া যায় নি।

ঐ না পাওয়া যাওয়াটাও ছিল,যুবক রামকৃষ্ণদেবের সত্যিকারের অহংকার।


রামকৃষ্ণ, মুসলমান ধর্মমতে সাধনা করেছিলেন।

তা করতে গেলে লিঙ্গমুণ্ডের ত্বকছেদন করা তো ছিল অবশ্যকর্তব্য।

তিনি কি তা করেছিলেন ?

তিনি যদি তা না করে থাকেন,ব্যথার ভয়ে, তবে তাও ছিল, রামকৃষ্ণদেবের আতঙ্কের অহংকার।








*  লেখার যোগসুত্র, 'স্বামী ভূতেশানন্দ'-এর, "শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত- প্রসঙ্গ"।


হেনরিয়েটা এবং মাইকেল ( গদ্যরচনা )


হেনরিয়েটা এবং মাইকেল  ( গদ্যরচনা )



হেনরিয়েটা এবং মাইকেল পনেরো বছর ধরে একসাথে সংসার করেছিলেন।
আলাপ-পরিচয়ের সময় ধরে, কুড়ি বছর ধরে ছিল,  তাদের ভাব-তাদের ভালোবাসা। সম্পর্ক।


তবে মাইকেল হেনরিয়েটাকে বিবাহ করেন নি !


কিংবা হয়তো, বিয়ে করতে, রাজি হন নি।


আগের  স্ত্রী,  'রেবেকা'র সাথে, মাইকেলের, বিবাহ বিচ্ছেদও ঘটেনি।


হেনরিয়েটা কি মাইকেলকে, বিবাহ করতে চেয়েছিলেন ?


তবে একসাথে ছিলেন।


হেনরিয়েটার চেয়ে মাইকেল ছয় বৎসরের বড় ছিলেন।
হেনরিয়েটা কবির সত্যিকারের সঙ্গিনী ছিলেন। হেনরিয়েটা বাংলা শিখেছিলেন।

হেনরিয়েটাকে, মাইকেল, সরাসরি 'স্ত্রী' বলে পরিচয় দিতেন। মাইকেল, তাঁর অন্তরে, হেনরিয়েটাকে, নিজের 'স্ত্রী' ছাড়া অন্য কিছু ভাবতেন না।

হেনরিয়েটা-মাইকেলের প্রেম ছিল, সত্যিকারের " অমর প্রেম "।

বাস্তব জীবনে, মাইকেল,  অর্ধেক বাস্তব বিশ্বে থাকতেন, অর্ধেক স্বপ্নের জগতে বিচরণ করতেন।






গণেশ ( গদ্যরচনা )



গণেশ  ( গদ্যরচনা )




শিবপত্নী পার্বতী, নিজপুত্র গণেশকে, দুটি 'বর' দিয়েছিলেন।
'বর'।
দেবতার কাছ থেকে, লব্ধ অনুগ্রহ। আশীর্বাদ।
এক্ষেত্রে, গণেশ, মায়ের কাছ থেকে,  অনুগ্রহ  এবং আশীর্বাদ পেয়েছিলেন।
'বর'-এর সাথে, 'বরাভয়'ও  সাধারণত সংযুক্ত থাকে।
'বরাভয়'।
আশীর্বাদের বা অভয়দানের ভাবযুক্ত, হাতের  আঙুল দ্বারা করণীয় বিশেষ ভঙ্গি, বা  'মুদ্রা'। 
আশীর্বাদ  ও  অভয়দান বা আশ্বাস দান।
'মুদ্রা'।
আশীর্বাদের সময়, বা উপাসনার সময়ে,  বিভিন্ন ভঙ্গিতে, করাঙ্গুলি বিন্যাস।

মায়ের কাছ থেকে পাওয়া, 'বর'।  এক।
সমস্ত দেবতাদের মধ্যে, গণেশ, সবার আগে পূজা পাবেন।

মায়ের কাছ থেকে পাওয়া, 'বর'। দুই।
গণেশকে, জীবনে কখনও দুঃখের সম্মুখীন হতে হবে না।

তাই, গণেশ ভক্তরা, ভুল করে, পা দিয়ে, গণেশের বাহন, ইুঁদুরকে পিষে দিলেও, কিংবা, গৃহিণীরা, ইঁদুরকে, বিষ দিয়ে মেরে ফেললেও, গণেশ একটুকুও  দুঃখ পান না ।

গণেশ বরং, তাঁর ভক্তরা যারা পা দিয়ে গণেশের বাহন ইুঁদুরকে পিষে দেয়, কিংবা সেই সব গৃহিণীরা,  যারা বিষ দিয়ে ইঁদুরকে মেরে ফেলে,  তাদের কিছুই বলেন না !

বরং নাড়ু খাবেন বলে, তাদের কাছ থেকে, হাত পেতে,  'নাড়ু' চান !



নাড়ু খেয়ে,  গণেশ, দারুণ মজা আর আনন্দ পান !




পরমাত্মা-জীবাত্মা ( গদ্যরচনা )


পরমাত্মা-জীবাত্মা  ( গদ্যরচনা )



পরমাত্মা  প্রকৃতিকে নিজের বশীভূত করে অবতাররূপে পৃথিবীতে আসেন।

জীবাত্মা প্রকৃতির বশীভূত হয়ে পৃথিবীতে আসেন, আর, কর্মফল ভোগ করেন।

পরমাত্মা সর্বদাই নির্লিপ্ত।

জীবাত্মার নির্লিপ্ততার জন্য, 'সাধনা' নামক সাধন, করতে হয়।

তবে,  জীবাত্মার,  নির্লিপ্ততা ভাব আসে !



* সূত্র 'গীতা রসামৃত', পৃষ্ঠা ৪৬৪, গীতা প্রেস। গীতা ৪।১৪।