Q&A | Hindu Pakistan: Good or Bad | Sanjay Dixit | #SangamTalks
শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০২০
Q&A | Hindu Pakistan: Good or Bad | Sanjay Dixit | #SangamTalks
[Q/A] Hindu Masjids: The Problem & Solutions | Prafull Goradia | Ayodhya...
[Q/A] Hindu Masjids: The Problem & Solutions | Prafull Goradia | Ayodhya...
"Hindu Pakistan" - Good or Bad? | Sanjay Dixit | #SangamTalks
"Hindu Pakistan" - Good or Bad? | Sanjay Dixit | #SangamTalks
রামায়ণ
মলাট-৬
- অদ্ভুত রামায়ণ - হরিমোহন গুপ্ত
- অদ্ভুত রামায়ণ- সৌদামিনী দেবী
- অদ্ভুতাচার্য্যের রামায়ণ – রজনীকান্ত চক্রবর্ত্তী সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকায় প্রকাশিত
- অধ্যাত্ম রামায়ণ - মহেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
- অধ্যাত্ম-রামায়ণম্ (আদি থেকে উত্তর কাণ্ড)- পঞ্চানন তর্করত্ন
- আমার রামায়ণ - হিমানীশ গোস্বামী
- ইক্ষাকু কুলতিলক - আমিশ ত্রিপাঠি
- কৈকেয়ী - রামদয়াল মজুমদার
- গল্পে মহাকাব্য রামায়ণ- রমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
- চন্দ্রাবতীর রামায়ণ
- চন্দ্রাবতীর রামায়ণ ও প্রাসঙ্গিক পাঠ- হিমেল বরকত সম্পাদিত
- চরিত্রে রামায়ণ মহাভারত প্ৰথম খন্ড (সীতা ও দ্রৌপদী) - শিপ্রা দত্ত
- চরিত্রে রামায়ণ মহাভারত দ্বিতীয় খন্ড ( রাম ও যুধিষ্ঠির,কৈকেয়ী, শকুনি ও দুঃশাসন) - শিপ্রা দত্ত
- চরিত্রে রামায়ণ মহাভারত তৃতীয় খন্ড( রাবণ ও দুর্যোধন) - শিপ্রা দত্ত
- চরিত্রে রামায়ণ মহাভারত চতুর্থ খন্ড(গান্ধারী ও মনদোদরী,ইন্দ্রজিৎ অভিমন্যু ও ঘটোৎকচ, লব কুশ ও বভ্রূবাহন,সরমা ও সুভদ্রা) - শিপ্রা দত্ত
- চরিত্রে রামায়ণ মহাভারত পঞ্চম খন্ড (বিভীষণ ও কর্ণ)- শিপ্রা দত্ত
- চরিত্রে রামায়ণ মহাভারত (ষষ্ঠ খণ্ড) - শিপ্রা দত্ত
- চরিত্রে রামায়ণ মহাভারত সপ্তম খন্ড (লক্ষ্মণ ও অর্জুন) - শিপ্রা দত্ত
- ছোট্ট রামায়ণ - উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
- জানকী নাটক- হরিশ চন্দ্র মিত্র
- জন্মভিত্তিক জাতি ও বর্ণ এবং রামের শক্তিপথ- তপন কুমার ঘোষ
- যাত্রাগানে রামায়ন - অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- যোগবশিষ্ঠ রামায়ণ - নন্দকুমার কবিরত্ন ভট্টাচার্য অনুদিত
- তিন মহাকাব্যের তিন মহামানবী হেলেন সীতা দ্রৌপদী - শেখর সেনগুপ্ত
- তুলনামূলক আলোচনায় রামায়ণ ও মহাভারত- বিবেকানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়
- দাশরথীর রামায়ণ - হরিপদ চক্রবর্তী
- দশরথের মৃগয়া - অনুকুলচন্দ্র গোস্বামী
- প্রথম সূর্য (রামায়নের নতুন ব্যাখ্যা)- বিশ্বনাথ রায়
- বাংলা সাহিত্য ও বাঙ্গালীর জাতীয় জীবনে রামায়ণ
- বালি বধ কাব্য- গিরীশ চন্দ্র বসু
- বাল্মীকি ও তৎসাময়িক বৃত্তান্ত - প্রফুল্ল চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
- বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় অনুদিত
- বাল্মীকি রামায়ণ (অযোধ্যা কাণ্ড) জি পি বসু
- বাল্মীকি রামায়ণ (অযোধ্যাকাণ্ড) রামকমল ভট্টাচার্য্য
- বাল্মীকি রামায়ণ (অরণ্য কাণ্ড) জি পি বসু
- বাল্মীকি রামায়ণ (বাল কাণ্ড) জি পি বসু
- বাল্মীকি রামায়ণ (অযোধ্যা কাণ্ড)– যদুনাথ ন্যায়পঞ্চানন
- বাল্মীকি রামায়ণ সারানুবাদ - রাজশেখর বসু
- বাল্মীকি রামায়ণ কাব্য কথা- শামিম আহমেদ
- বাল্মীকি রামায়ণ- হেমচন্দ্র ভট্টাচার্য অনুদিত
- বাল্মীকি রামায়ণে রাম, আদিবাসী রামায়ণে রাম - বিপ্লব মাজী
- বাল্মীকির রাম ও রামায়ণ - নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ী
- বিভীষণ - দীপক চন্দ্র
- বিশ্বনাথ রামায়ন = বিশ্বনাথ তর্কভূষণ
- বরবৈরামায়ণ, শ্রীরামাশ্বমেধ জানকীমঙ্গল ও কবিবরের জীবনী- তুলসীদাস গোস্বামী বিরচিত এবং হরিনারায়ণ মিশ্র অনুদিত
- মিথিলায় ভগবান - গৌরগোপাল বন্দ্যোপাধ্যায়
- মেঘনাদ বধ কাব্য জিজ্ঞাসা - শিবপ্রসাদ ভট্টাচার্য
- মেঘনাদ সমালোচন -কালীপ্রসন্ন রায়
- মেঘনাদবধ কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত
- মেঘনাদবধ কাব্য চর্চা - উজ্জ্বল কুমার মজুমদার
- মেঘনাদবধ কাব্যে সীতা ও সরমা - দীননাথ সান্যাল (ব্যাখ্যাত ও সমালোচিত)
- মন্থরা - পূর্ণচন্দ্র বসু
- রঘুবংশ -চন্দ্রকান্ত তর্কভূষণ
- রাঘব-বিজয় কাব্য - শশধর রায়
- রাজা রাবণ (নাটক) - পরেশ ধর
- রাম বনবাস - শ্রীমন্ত শর্মা
- রামকথা বিকাশের ধারা - প্রসাদকুমার মাইতি
- রামায়ণ - কিষ্কিন্ধাকাণ্ড হেমচন্দ্র ভট্টাচার্য্য
- রামায়ণ - বালকাণ্ড হেমচন্দ্র ভট্টাচার্য্য
- রামায়ণ ( অযোধ্যাকাণ্ড) - হেমচন্দ্র ভট্টাচার্য্য
- রামায়ণ ( আরণ্যকাণ্ড) হেমচন্দ্র ভট্টাচার্য্য
- রামায়ণ (যুদ্ধকাণ্ড) হেমচন্দ্র ভট্টাচার্য্য
- রামায়ণ (দ্বিতীয় খণ্ড) - হেমন্তকুমার মুখোপাধ্যায়
- রামায়ণ (দ্বিতীয় ভাগ)- আশুতোষ শিরোরত্ন
- রামায়ণ (প্রথম ভাগ) - আশুতোষ শিরোরত্ন
- রামায়ণ (লঙ্কা কাণ্ড ও উত্তরকাণ্ড ) - হেমন্তকুমার মুখোপাধ্যায়
- রামায়ণ (লঙ্কাকাণ্ড) - গঙ্গাগোবিন্দ ভট্টাচার্য্য
- রামায়ণী কথা - দীনেশচন্দ্র সেন
- রামায়ণ - ব্রজেন্দ্র নাথ বিদ্যারত্ন অনুদিত
- রামায়ণ কিষ্কিন্ধ্যা, সুন্দর, লঙ্কা ও উত্তর খণ্ড- অনুবাদ শ্রীকৃষ্ণগোপাল ভক্ত
- রামায়ণ কথা - অমলেশ ভট্টাচার্য
- রামায়ণ খোলা চোখে - হরপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
- রামায়ণ প্রসঙ্গে
- রামায়ণ বাল্মিকী অনুসরণে - শ্রীদীননাথ সান্যাল
- রামায়ণ বিচার - পঞ্চানন তর্করত্ন
- রামায়ণ বোধ - কুঞ্জেশ্বর মিশ্র
- রামায়ণ সারসংগ্রহ - শ্রীকুশ দেব পাল
- রামায়ণ সুন্দর কাণ্ড - অনুবাদ হেমচন্দ্র ভট্টাচার্য্য
- রামায়ণ(রামচরিতমানস)-তুলসীদাস গোস্বামী অনুবাদ - হরিমোহন গুপ্ত
- রামায়ণী কথামৃত- সুপ্রিয়া সেন বিরচিত ( হিরণপ্রভা সেন পরিমার্জিত)
- রামায়ণী গল্প -জ্ঞানেন্দ্রনাথ হালদার
- রামায়ণী প্রেমকথা -শুধাংশুরঞ্জন ঘোষ
- রামায়ণে দেবশিবির - বীরেন্দ্র মিত্র
- রামায়ণে সঙ্গীতের কথা – স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ প্রবাসী পত্রিকায় প্রকাশিত
- রামায়ণের আগে (নাটক) -শ্রীপ্রসাদ কৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য
- রামায়ণের চরিতাবলী - সুখময় ভট্টাচার্য শাস্ত্রী সপ্ততীর্থ
- রামায়ণের প্রকৃত কথা - সতীশচন্দ্র দে
- রামায়ণের সমাজ -কেদারনাথ মজুমদার
- রামায়ণ-যুগের ভারত - সুরেন্দ্রনাথ মিত্র
- রামচরিত - রামগতি ন্যায়রত্ন কর্তৃক সংকলিত
- রামচরিত- রাধাগোবিন্দ বসাক
- রামের অজ্ঞাতবাস - দীপক চন্দ্র
- রামের অরণ্য যাত্রা- হরিনাথ শর্মা ন্যায়রত্ন সঙ্কলিত
- রামের রাজ্যাভিষেক -শশীভূষণ চট্টোপাধ্যায়
- রামোদ্বাহ নাটক -সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
- রাম-নির্বাসন (নাটক)- হরিপদ চট্টোপাধ্যায়
- রামরাজ্য ও মার্কসবাদ - রাহুল সাংকৃত্যায়ন
- রামলীলোদয় - রামকান্ত সর্ব্বভৌম কৃত রাম্অলীলোদয় সংস্কৃত গ্রন্থ থেকে দেবনাথ মুখোপাধ্যায় দ্বারা অনুদিত
- লংকা বিজয় কাব্য - রাজকৃষ্ণ কুঙার
- লক্ষ্মণ বর্জ্জন- দামোদর মুখার্জি
- লক্ষ্মণ-বর্জ্জন - গিরিশ চন্দ্র ঘোষ
- লক্ষ্মণ-বর্জন চন্দ্রনাথ শর্মা
- শক্তিশেল (প্রথম খণ্ড) - যশোদানন্দন সরকার
- বিশুদ্ধ রামায়ণ- কেদারনাথ বিশ্বাস দ্বারা প্রকাশিত
- শ্রীমহানাটক- মধুসূদন মিশ্র
- শ্রীরামচরিত- রাখাল দাস হালদার
- সচিত্র কৃত্তিবাসী রামায়ণ- নয়নচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
- সীতা - যোগেশচন্দ্র চৌধুরী
- সীতা (দ্বিতীয় খণ্ড) - অবিনাশ চন্দ্র দাস
- সীতা (প্রথম খণ্ড) - অবিনাশ চন্দ্র দাস
- সীতা জন্মের ইতিকথা- অমলেন্দু মিত্র
- সীতা- দ্বিজেন্দ্রলাল রায়.
- সীতা মিথিলার যোদ্ধা - অমিশ ত্রিপাঠি
- সীতাদেবী - জলধর সেন
- সীতাবিলাপ লহরি - গোপাল চন্দ্র চূড়ামণি
- সীতাবর্জন নাটক- উমেশ চন্দ্র দাস কর
- সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
- সীতার বনবাস - গিরিশচন্দ্র ঘোষ (স্টার থিয়েটারে অভিনীত)
- সীতায়ন - মল্লিকা সেনগুপ্ত
- সপ্তকাণ্ড রামায়ণ - রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত
- সরমা - সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
- হিন্দুস্থানী উপকথা - সীতা দেবী ও শান্তা দেবী
- পৌরাণিক যুগে সাংবাদিকতা (রামায়ণ ও মহাভারত) – তারাপদ পাল
ভবিষ্যতে গবেষণার সুবিধার্থে আমাদের আর্কাইভে এই বই গুলির ডিজিটালাইজড ভার্সান সংরক্ষণ করা হল।
শেয়ার করেছেন :- প্রণব কুমার কুণ্ডু
ঢাকার শায়েস্তা খাঁ
ঢাকার শায়েস্তা খাঁ
৮১ বছরের এক বৃদ্ধ তার সুবেদারি পদ থেকে অবসর নিচ্ছেন। যে প্রাণের নগরীকে তিনি তার মতো সাজিয়ে ছিলেন সেটি তাকে ছেড়ে যেতে হবে। শায়েস্তা খাঁ, ঢাকার সুবেদারি থেকে যেদিন অবসর নিলেন মানুষের ঢল নেমেছিলো রাস্তায়। তার বিদায় মিছিলে যোগ দিতেই মানুষের সেই ঢল। রাষ্ট্রীয় সব মর্যাদা প্রদর্শনের পর তার নির্মিত পশ্চিম ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে শেষ বিদায় নিলেন। তার আমলেই ঢাকা পরিণত হয় সমৃদ্ধির নগরীতে। চালের দাম নেমে আসে প্রতি টাকায় আট মণ। তাই বিদায়ের মুহুর্তে তার শেষ নির্দেশ ছিলো, তিনি যে পশ্চিম ফটক দিয়ে শহর থেকে বিদায় নিচ্ছেন তা যেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুনরায় কেউ যদি চালের দাম ঐ স্তরে নিয়ে আসতে পারেন তবেই যেন এই ফটকটি খুলে দেন। কিন্তু শায়েস্তা খাঁর আমলে সমৃদ্ধির পেছনে লুকিয়ে থাকা রহস্য কি?
শায়েস্তা খাঁর পিতামহ খাজা গিয়াস উদ্দিন ছিলেন তাতারস্থানের বাসিন্দা। বর্তমানে এটি রাশিয়ার অন্তর্গত একটি এলাকা। খাজা গিয়াস উদ্দিনের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো ছিলো না। দুর্দশাগ্রস্ত তাতারীদের অনেকেই তখন ভারতভূমিতে পাড়ি জমাচ্ছে। মোঘল সম্রাটদের দরবারে চাকরি করে অনেকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু তাতারস্থান থেকে ভারতের মাঝে বিপদসংকুল, দুর্গম পথ। একটি ঘোড়া, সামান্য রসদপাতি সম্বল করেই গিয়াস উদ্দিন রওনা দিলেন ভারতের পথে, সাথে তার স্ত্রী। পথে মরুভূমি, অসুস্থ হয়ে পড়লো স্ত্রী, হাতে থাকা রসদপত্র শেষ। স্বদেশে ফিরে যাওয়া অসম্ভব, সামনে প্রতিটি পদক্ষেপ দেওয়াও কঠিন, এমনই এক কঠিন অবস্থার মুখোমুখি তারা। এমনই অবস্থায় খাজা গিয়াসের পত্নীর কোলজুড়ে এলো প্রথম সন্তান। কঠিন মরুভূমিতে জন্ম নেওয়া এই কন্যাশিশুর নাম রাখা হয়েছিলো মেহেরুন্নিসা।
এমন অবস্থায় পথচলা অসম্ভব হয়ে পড়েছিলো খাজা গিয়াস আর তার স্ত্রীর পক্ষে। কাকতালীয়ভাবে একদল পর্যটকের সাথে দেখা হয়ে যায় তাদের। প্রাণ বাঁচিয়ে আকবরের দরবারে পৌঁছে যান তারা। তার চারিত্রিক দৃঢ়তা দিয়ে ধীরে ধীরে আকবরের বিশ্বস্ত রাজকর্মচারীর একজন হয়ে ওঠেন খাজা গিয়াস উদ্দীন। খাজা গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে মেহেরুন্নিসা রূপে গুণে ছিলেন অতুলনীয়া। অনেক চড়াই উতরাই পাড়ি দিয়ে মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর তাকে বিয়ে করেছিলেন। মেহেরুন্নিসা হয়ে উঠলেন ভারতবর্ষের সম্রাজ্ঞী। সম্রাট জাহাঙ্গীরের উপর সম্রাজ্ঞী মেহেরুন্নিসার অপরিসীম প্রভাবের কথা ছিলো সর্বজনবিদিত।
মেহেরুন্নিসার ভাই আসফ খানকে নিযুক্ত করা হয়েছিলো জাহাঙ্গীরের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। আসফ খানের মেয়ে মমতাজমহলের বিয়ে হয় সম্রাট শাহজাহানের সাথে। সেই আসফ খানের পুত্রই ছিলেন শায়েস্তা খাঁ। তার আসল নাম ছিলো মির্জা আবু তালিব বেগ। ১৬৪১ সালে পিতা আসফ খানের মৃত্যু হলে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব আসে তার কাঁধে। শুধু বাদশাহী পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তার সূত্রে আবদ্ধ থাকার কারণেই নয়, বরং দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনের কারণেই তাকে দেওয়া হয় এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকার কারণে দেশ শাসনের ব্যাপারে অভিজ্ঞতারও কমতি ছিলো না তার। সম্রাট শাহজাহান তাকে শায়েস্তা খাঁ উপাধিতে ভূষিত করেন।
বাংলার সুবেদার নিযুক্ত হওয়ার আগে তিনি বিহারের শাসনকর্তা, সম্রাটের দরবারের প্রধানমন্ত্রী, গুজরাটের সুবেদার, গোলকুণ্ডা যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি, দক্ষিণাত্যের সুবেদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মামা হওয়ার সুবাদে আওরঙ্গজেবেরও ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। সিংহাসন নিয়ে উত্তরাধীকারিদের চলা দ্বন্দ্বের সময় আওরঙ্গজেবের পক্ষ নিয়েছিলেন শায়েস্তা খাঁ। ইতিহাসবিদদের ধারণা এ কারণেই সম্রাট আওরঙ্গজেবের আজীবন কৃতজ্ঞতা অর্জন করেন তিনি।
১৬৫৮ সালে আওরঙ্গজেবের সিংহাসনের বসার পরেও তার প্রভাব প্রতিপত্তি ছিলো অব্যাহত। ১৬৬৩ সালে তাকে বাংলার নায়েবে নাজিম নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি। মারাঠা সরদার শিবাজীর সাথে যুদ্ধে তিনি আহত হয়েছিলেন। তাই অসুস্থ ছিলেন শায়েস্তা খাঁ। তাই ১৬৬৪ সালে দায়িত্ব নিতে ঢাকায় আসেন তিনি।
নদীবিধৌত বাংলায় তখন মগ আর পর্তুগিজ জলদস্যুদের শায়েস্তা করার দায়িত্ব শায়েস্তা খাঁর কাঁধে। মগ জলদস্যুদের দস্যুতার মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় বণিক আর সাধারণ মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়ে। বিদেশী বণিক তো দূরের কথা, ভারতের অন্য এলাকার সাথেও ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারছিলেন না বাংলার মানুষজন। নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রের দাম তাই আকাশচুম্বী।
মগ আর পর্তুগিজ জলদস্যুদের নিশ্চিহ্ন করতে পারলে ব্যবসা বাণিজ্যে ইংরেজরা পাবে অপরিসীম সুবিধা। এই কথা ভেবেই তিনি ইংরেজদের কাছে সহায়তা দাবী করেন। তবে ইংরেজরা রাজনীতিতে জড়িয়ে না পড়ার কথা জানিয়ে কোনো সাহায্য করেনি। এতে ইংরেজদের উপর ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন শায়েস্তা খাঁ। জলদস্যুর হাত থেকে রেহাই পেতে ওলন্দাজ বণিকদের সহায়তা করার প্রস্তাব দিলে তারা তৎক্ষণাৎ রাজি হয়ে যায়। তবে ওলন্দাজদের আসার আগেই ভয় ভীতি প্রদর্শন করায় সন্দীপে পর্তুগিজ জলদস্যুদের কিছুটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।
যেহেতু ইতোমধ্যেই পর্তুগিজদের তিনি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন, তাই ওলন্দাজদের সহায়তার দরকার ছিলো না। ফলে মোগল নৌবহরে যুক্ত হওয়ার জন্য ওলন্দাজ রণতরী উপস্থিত হলে তিনি তাদের ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় জানান। এই অভিযানে সহায়তা করার বিনিময়ে ওলন্দাজ বাহিনী তার কাছ থেকে অতিরিক্ত সুবিধা আদায়ের যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল সেই পরিস্থিতি থেকেও মুক্ত হয়েছিলেন শায়েস্তা খাঁ।
বিরাট শক্তিশালী মগ জলদস্যুদের উৎপাত থেকে রক্ষা পেতে দরকার স্থায়ী সমাধান। এই কথা মাথায় রেখে ঢাকায় নৌ এবং অশ্বারোহীদের সমন্বয়ে বাহিনী গড়ে তোলার প্রয়োজন অনুভব করেন তিনি। শায়েস্তা খাঁ দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে তেতাল্লিশ হাজার সেনার বিশাল বাহিনী গড়ে তোলেন। নদীপথে হোসেন বেগের নেতৃত্বে এবং স্থলপথে নিজের পুত্র উমেদ খাঁর নেতৃত্বে সম্মিলিত বাহিনী পাঠানো হয়। গঙ্গার ব-দ্বীপ এলাকার বিভিন্ন অঞ্চলে দস্যুতা করে বেড়ানো মগদের ধাওয়া করে আরাকানে ফেরত পাঠানো হয়। মগ এবং পর্তুগিজ দস্যুদের আধিপত্য কমে আসায় ঢাকাসহ পুরো পূর্ব বাংলায় ব্যবসা বাণিজ্যে স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা ফিরে আসে। একই সময়ে আরাকানদের কাছ থেকে চট্টগ্রাম দখল করে তার নাম দেন ইসলামাবাদ।
নদীপথ নিরাপদ হওয়ায় শায়েস্তা খাঁর সময় আমদানী রপ্তানি বাণিজ্যে গতিশীলতা আসে। বাণিজ্যের এই গতিশীলতার কারণে ঢাকায় পণ্য সরবরাহ বাড়ে, মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বাড়ে। ১৬৬৬ সালে ইউরোপীয় পর্যটক ফ্রান্সিস বার্নিয়ারের মন্তব্য ছিলো, “চালের সাথে ঘি এবং চার-পাঁচ রকমের মটরশুঁটি দিয়ে একরকম খাদ্য তৈরি হয়। এটি অতি সাধারণ লোকের খাদ্য। মাছ, মুরগিও পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় বাজারে।”
শায়েস্তা খাঁর আমলে ঢাকা ছিলো মসলিনের জন্য প্রসিদ্ধ। ওলন্দাজ বণিকেরা ঢাকা থেকে এই বস্ত্র ইউরোপ আর এশিয়ার বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করতো। তবে সবচেয়ে ভালো মসলিন তিনি রাজপরিবার এবং শাসনকর্তাদের ব্যবহারের জন্য রাখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং এই লক্ষ্যে একজন কর্মচারীও নিয়োগ করেছিলেন।
শায়েস্তা খা কতটা চতুর এবং দক্ষ ছিলেন তা আরেক ইউরোপীয় পর্যটক জ্যাঁ ব্যাপ্টিস্ট ট্যাভার্নিয়ার এর লেখে থেকে পাওয়া যায়। তিনি তার দিনলিপিতে লিখেছিলেন, "শায়েস্তা খাঁ সম্রাট আওরঙ্গজেবের মাতুল এবং রাজ্যের সবচেয়ে চতুর লোক। ঢাকা আগমনের পরদিন তাকে সালাম দিতে গেলাম। তাকে সোনার বুটিদার ও সোনালি ফিতা জড়ানো একটি জমকালো লম্বা জামা এবং পান্নাখচিত একটি চাদর উপহার দিলাম।"
তবে রাজস্ব আদায়ে শায়েস্তা খা ছিলেন কঠোর। কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বছরে তিন হাজার টাকা কর আদায় করেছিলেন তিনি। জনগণের কাছ থেকেও কর আদায় বৃদ্ধি পায় তার আমলে। শায়েস্তা খানের শাসনামলে মোট জাতীয় উৎপাদের ৪৩.৮ থেকে ৬৪ শতাংশই সংগ্রহ করা হয়েছিলো রাজস্ব থেকে। অনেকেই বলে থাকেন, এর ফলে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায় এবং জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়। তবে শায়েস্তা খাঁ কোম্পানির ব্যাপারে কঠোর হলেও জনগণের কাছ থেকে অতিরিক্ত কর আদায় না করার লক্ষ্যেও ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।
ইংরেজসহ সব ইউরোপীয় বণিকদের শায়েস্তা খাঁ ‘অনধিকার প্রবেশকারী’ বলে মনে করতেন। বিশেষ করে, তার শাসনামলের শেষের দিকে ইংরেজদের সামরিক ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা দেখে তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন। তাই ইংরেজদের লিখিত ইতিহাসের অনেকক্ষেত্রেই তাকে ‘স্বেচ্ছাচারী’ আর ‘বুদ্ধিভ্রষ্ট বৃদ্ধ নওয়াব’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে ন্যায়পরায়ণ শাসক, দক্ষ যুদ্ধ পরিচালক হিসেবে তার খ্যাতি ছিলো বাংলার মানুষের মুখে মুখে। তার সময়ে ঢাকা ব্যবসা বাণিজ্যের কেন্দ্রে পরিণত হয়। জলদস্যু বিতাড়িত হওয়ায় আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে পূর্ব বাংলার সোনালী সময়ের শুরু হয়। ঢাকায় ইংরেজদের প্রভাব প্রতিপত্তির বিকাশ শুরু হয়েছিলো তার আমলেই। ঢাকার স্থাপত্যকলাও তার সময়ে বিকশিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলো। প্রিয়তম কন্যা পরীবিবির সমাধি সৌধ ছাড়াও তার আমলে নির্মিত হয়েছে ছোট বড় অসংখ্য মসজিদ। ঢাকার বুকে এখনও শায়েস্তা খানের স্মৃতি আছে উজ্জ্বল হয়ে আছে।
শায়েস্তা খানের বিদায়ের দিনে দেওয়া নির্দেশটি পশ্চিম ফটকে আটকে দেওয়া হয়েছিলো। বন্ধ ফটক পুনরায় খুলেছিলো চল্লিশ বছর পরে। সরফরাজ খানের শাসনামলে চালের দাম আবার ঐ স্তরে নেমে এসেছিলো। ঢাকা থেকে বিদায়ের পর আগ্রায় বিশ্রামের সিদ্ধান্ত নেন শায়েস্তা খাঁ। সেখানেই ৮৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তিনি পরপারে চলে গেলেও তার কিংবদন্তি আজও বেঁচে আছে ঢাকার মানুষের মুখে মুখে।
This article is about Shaista Khan, who was a subahdar of Bengal and a general in the Mughal army.
Reference:
1. প্রাচ্যের রহস্য নগরী ("The Romance of an Eastern Capital (1906)" by F. B. L
BRADLEY-BIRT); অনুবা: রহিম উদ্দিন সিদ্দিকী ( বাংলা একাডেমি-১৯৬৫); পৃষ্ঠা: ৯৮-১৩৬
প্রৌঢ়ের ফোন পেয়ে বন্ধুর আত্মহত্যা রুখল পুলিস
কলকাতায়
প্রৌঢ়ের ফোন পেয়ে বন্ধুর আত্মহত্যা রুখল পুলিস
বর্তমান
২১/০৮/২০২০
শেয়ার করেছেন :- প্রণব কুমার কুণ্ডু
প্রণব কুমার কুণ্ডু
শিয়রে সর্বনাশ ?
শিয়রে সর্বনাশ ?