বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২২

বাঙালি হিন্দুদের, বাঙালি মুসলমানদের পদবি !






Rokibul Munshi এতে ইতিহাসের বিভিন্ন তথ্য

বাঙালির বংশ পদবীর ইতিহাস খুব বেশি প্রাচীন নয়। মধ্যযুগে সামন্তবাদী সমাজ ব্যবস্থার ফলে পরবর্তীতে বৃটিশ আমলে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সমান্তরালে বাঙালির পদবীর বিকাশ ঘটেছে বলে মনে হয়। অধিকাংশ ব্যক্তি নামের শেষে একটি পদবী নামক পুচ্ছ যুক্ত হয়ে আছে। যেমন উপাধি, উপনাম কিংবা বংশসূচক নামকে সাধারণ ভাবে পদবী বলা হয়। বাঙালির মূল নামের শেষে বংশ ,পরিবার, পেশা, বসতিস্থান ইত্যাদির পরিচয়বাহী উপনাম ব্যবহারের রীতি প্রচলিত রয়েছে। সামন্ততান্ত্রিক পদবীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক ক্ষেত্রেই জমি ও হিসাব সংক্রান্ত পদবী। তবে এই সমস্ত পদবীর বেশির ভাগই বংশ পরস্পরায় চলে আসলে ও বর্তমানে পদবীর সমাজগত মূল্য নেই বললেই চলে। ইতিহাসের দিন বিচার করলে দেখা যাবে পদবী অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাঙালি মুসলমানের পরিচয় ও মর্যাদাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। ড. মোহাম্মদ হাননান এর ভাষায়- ‘বাঙালি হিন্দু সমাজের বহুল কথিত ছত্রিশ জাতের মতো মুসলমান সমাজের সাধারণভাবে বর্ণভেদের সামাজিক, রাষ্ট্রিক, এমনকি অর্থনৈতিক মূল্য নেই বটে, (কতকক্ষেত্রে ধর্মগত মূল্য রয়েছে। তবে সেটা পীর এবং মুরীদানের ক্ষেত্রে মাত্র), তথাপি বাঙালি মুসলমান সমাজের বিকাশের প্রাথমিক দিনগুলিতে এই পদবী চেতনা জাত-ভেদ ও সামাজিক মূল্যকে নিয়ন্ত্রণ করতো। সুতরাং পদবী মাহাত্ম্য ও তার তাৎপর্যের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে জাত ও শ্রেণী চেতনা। বাঙালি মুসলমান সমাজের একটা বড় সময় পার হয়েছে এই মনস্তাত্তিক দ্বন্দ্বে, যে দ্বন্দ্বে অঙ্গার হয়েছে বাঙালি হিন্দু সমাজ। তবে হিন্দু সমাজের মতো মুসলমান সমাজের মনস্তত্বে পদবীর কৌলীন্য বড় একটা প্রসার লাভ করতে পারেনি ইসলামের মৌলিক আদর্শের কারণেই, যেখানে রক্ত ও বর্ণে সকল মানুষকে সমান মর্যাদা দান করা হয়েছে।
হিন্দু সমাজে কৃষ্ণ বর্ণের শুদ্রের পৌরহিত্যে পুজা সম্পন্ন না হতে পারলেও মুসলমান সমাজে শুদ্রের পরেও এমনকি অন্ত্যজের ইমামতিতেও নামাজ পড়তে বাধা নেই। সেদিক থেকে পদবী কৌলীন্যের স্বৈরতন্ত্র বাঙালি মুসলমান সমাজে শেকড় গেড়ে বসে মহীরুহ হয়ে উঠবার সুযোগ পায়নি।
শিশু কাল থেকেই একজন বাঙালি পদবীর স্পর্শে আপন জনের সমাদর লাভ করে বলে পদবী চেতনা সকলের মনে প্রাচীন একটা সংস্কারগত রীতির আভাস দেয়। মনে হয় যুগযুগ তার বংশ গৌরব বা অগৌরব সবকিছুই বংশ পরম্পরায় পায়ে পায়ে এসেছে তার নিজের সময় পর্যন্ত”।
অষ্টম শতকে বাংলাদেশে চরম নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার পর গ্রাম সভা ও বিশিষ্ট নাগরিকরা সাধারণ একজনকে সম্রাট পদে বসিয়ে দিয়ে ছিলেন, যার নাম ‘গোপাল’। কিন্তু এই গোপালের নামের শেষাংশ ধরে রাখবার প্রচেষ্টায় উত্তরাধিকাররা ক্রমান্নয়ে সকলেই নামের শেষে গোপাল এর ‘পাল’ অংশকে পদবী হিসেবে ব্যবহার করতে থাকেন, পরে তাই ঐতিহাসিক পাল বংশের সূত্রপাত ঘটায়।আবার বল্লাল সেনের আমলে ছত্রিশটি জাত সৃষ্টি করে ছত্রিশটি আলাদা মর্যাদা তৈরি করা হয়েছিল। সমাজে এভাবে ছত্রিশটি প্রধান পদবীর ও সৃষ্টি হয় পেশাগুনে গুণে। এর পর ৩৬টি জাতে আরো শত রকম বিভাজন ঘটে এবং শত শত পদবীর সৃষ্টি হয় বাংলার সমাজে। এই সব শত শত পদবীর উত্তরাধিকারত্ব লাভ করেছে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল বাঙালি বৌদ্ধ, বাঙালি হিন্দু এবং বাঙালি মুসলমান। তাই তো দেখি চৌধুরী, তালুকদার, বিশ্বাস, মজুমদার, খান, মালি, মুন্সি, সরকার, সরদার প্রভৃতি প্রায় সকল পেশাগত সামাজিক পদবী রয়েছে হিন্দু, মুসলমান ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ে প্রায় সমানভাবে।
বাঙালি হিন্দু বা মুসলমান কিংবা খ্রিস্টান অথবা বৌদ্ধ সমাজে পদবী এসেছে বিচিত্রভাবে। ব্যক্তি বিশেষের নাম থেকে যেমন বংশ পদবীর ব্যবহার হয়েছে, তেমনি পদবী এসেছে বিভিন্ন পেশা থেকেও। শিক্ষক, সৈনিক, কারুশিল্পী, বণিক, রাজকর্মচারী, রাষ্টীয় উপাধি, গ্রাম অঞ্চল বাসী ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে সামাজিক পদবীর সৃষ্টি হয়েছে এবং নির্বিচারে তার ব্যবহারও হয়েছে।
প্রাচীন যুগে অর্থাৎ হিন্দু আমলে এবং মধ্যযুগের মোঘল-পাঠান শাসনামলে ও আধুনিক কালের শাসনামলে পদবীসমূহ কম-বেশি সংস্কারকৃত হয়ে বাঙালি মুসলমান সমাজে প্রচলিত হয়েছে। তবে কিছু পদবী আছে, যা বাঙালি সমাজে শুধু হিন্দুশ্রয়ী, কিছূ পদবী একান্তই মুসলমানী, আবার বেশ কিছু পদবী হিন্দু - মুসলমান নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়েই নির্বিচারে ব্যবহৃত হয়। শেখ, সৈয়দ, চৌধুরী প্রভৃতি বংশ পদবী বাঙালি মুসলমান সমাজকে আশরাফ এবং আতরাফ এইদুই শ্রেণীতে বিভক্ত করেছিল। একদা এই তথাকথিত আশরাফ সম্প্রদায়ের বাঙালি মুসলমান সমাজে শ্রেণী বৈষম্য সৃষ্টি করেছিলেন। এদেশের সাধারণ মুসলমানকে বলা হতো আতরাফ যার আভিধানিক অর্থ নিচু সমাজ, নিচু বংশ, নিচু বর্গের লোক। একথা বলতে দ্বিধা নেই যে, একমাত্র পদবী চেতনাই বাঙালি মুসলমান সমাজে সীমিত অর্থে হলেও একটা সময় সামাজিক শ্রেণী বৈষম্য সৃষ্টি করে রেখেছিল।
সেদিক থেকে বাংলাদেশের সামাজিক ইতিহাসের একটি দীর্ঘ কাল পূর্বে পদবীই নির্ধারণ করে বাঙালি মুসলমানের সামাজিক মর্যাদা। আর মজার ব্যাপার হলো অন্তত পদবীর পরিচিতিতে বাঙালি মুসলমান ও বাঙালি হিন্দু জাতি গত ঐতিহ্যের শিকড়কে খুঁজে পাওয়া যায়। ধর্মগত বিভাগের খোলসের বাইরে বাঙালি হিন্দু ও বাঙালি মুসলমানের বংশগত ও পেশাগত ঐতিহ্যের গোড়ার কথা সন্ধান মেলে এই পদবী পরিচিতিতে। শেখ, সৈয়দ,মোগল, পাঠান, কাজী, গাজী, শাহ, মিঞা, মীর্জা, মোল্লা, খন্দকার ইত্যাদি কয়েকটি ভিনদেশী পদবী যা উপমহাদেশে মুসলমান আগমনের সাথে জড়িত সে কয়টি পদবী বাদে বাংলার অধিকাংশ পদবীই হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে প্রায় সকল ধর্মে ও বর্ণে সুলভ।বাঙালির বংশ পদবীর বেশীর ভাগই এসেছে পেশা ও উপাধী থেকে, বাঙালির সমাজ বিন্যাসেও বংশ পদবীর রয়েছে ধর্ম নিরপেক্ষ এক অসাধারণ চরিত্র। জমিদার শ্রেণীর উত্থান ঘটেছিল হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের নব্য ধনীদের থেকেই। সুতরাং জমিদারের প্রতীক পদবী ‘চৌধুরী’ পরিচয় পাওয়া যায় বাংলার উভয় সম্প্রদায়েই। এমনকি বৌদ্ধ সম্প্রদায়েও চৌধুরী, পদবীর ব্যবহার রয়েছে।
বাঙালির জমি- জমা বিষয় সংক্রান্ত আরো কিছু পদবী যেমন- হালদার, মজুমদার, তালুকদার, পোদ্দার, সরদার, প্রামাণিক, হাজরা, হাজারী, মন্ডল, মোড়ল, মল্লিক, সরকার, বিশ্বাস ইত্যাদি বংশ পদবীর রয়েছে হিন্দু -মুসলমান নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের একান্ত রূপ। দুই সম্প্রদায়েই এই একই পদবীর ব্যবহার অত্যন্ত তাৎপর্য পূর্ণ। বাঙালির সামাজিক ইতিহাসে এর ভূমিকা অসাধারণ ও প্রগতিবাহী, ‘ভূইয়া’ও হিন্দু সমাজে ‘ভৌমিক’ নামে পরিচিত হয়েছে। যেমন- আনন্দ ভৌমিক।
খান বংশ পদবী, যার আগমন কিনা সুদূর আফগান পাঠান মূলুক থেকে, তা একান্তভাবে মুসলমানদের বংশ পদবী হলেও অনেক সমাজেও ‘খান’ পদবী একেবারে দূলর্ভ নয়। ঠাকুর বংশ পদবী একান্তভাবে হিন্দুর পদবী বলে মনে হলেও প্রচুর বনেদী মুসলমানের রয়েছে ঠাকুর পদবী। বাঙালির হিন্দুর রয়েছে আলাদা ও স্বতন্ত্র পদবী যা একান্তভাবে তাদের অনেকটা গোত্রভূক্ত, বংশগত এবং কৌলিন্যের ও জাতিগত স্পর্শতা যুক্ত বলা চলে। বাঙ্গালির বর্ণ হিন্দু ব্রাক্ষণের জনপ্রিয় বংশ পদবী হচ্ছে বন্দ্যোপাধ্যায়, চট্টোপাধ্যায়, মুখোপাধ্যায়, গঙ্গোপাধ্যায় ইত্যাদি। এ গুলো কতকগুলি গ্রাম গোত্রের নাম থেকে উদ্ভূত। বন্দ্যঘটি গ্রামের কুলীন ব্রাহ্মণরা প্রথম শুরু করে ছিলেন বন্দ্যোপাধ্যায় পদবীর। পরে তা আরো হরেক রকম ব্রাহ্মণের বংশপদবী হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে। চাটুতি বা শুধু মাত্র চট্ট শব্দ থেকেই উৎপত্তি হয়েছে বাঙালির হিন্দু সমাজের চট্টোপাধ্যায় বংশ পদবীর। গাঙ্গুর বা গঙ্গ গ্রামের বসতি থেকে এসেছে গঙ্গোপাধ্যায় বংশ পদবী কিংবা মুকুটি বা মুখটি অঞ্চলের বসতিদের থেকে বিকশিত হয়েছে মুখোপাধ্যায় পদবী। ‘বাদড়’ গ্রাম থেকে ভাদুড়ী বংশ পদবীর জন্ম হয়ে ছিল।
‘পাল পদবীকে ইতিহাসের দিক থেকে হিন্দু পদবী বলা যায় না। কারণ প্রাচীন ইতিহাসের বৌদ্ধ পাল বংশের রাজাদের থেকে পাল বংশ পদবীর বিকাশ। এ ব্যাপারে ইতিহাসবিদগণ একমত হবেন যে, পাল রাজা গোপাল, রামপাল প্রমুখ থেকে পাল পদবী, পরে জাতিগত পদবী হিসেবে বিকশিত। তবে কুমার সম্প্রদায়ের লোকেরাও পাল পদবী ব্যবহার করে।
বাঙালি মুসলমানের শিক্ষক পেশার পদবী হলো-খন্দকার, আকন্দ, নিয়াজী ইত্যাদি। আর বাঙালি হিন্দুর শিক্ষক পদবী হচ্ছে দ্বিবেদী, ত্রিবেদী, চর্তুবেদী ইত্যাদি। টোলের কোন শিক্ষক বা উপধ্যায় কয়টি বেদ পড়েছেন তা থেকে শুরু হয়েছিল বিভিন্ন ‘বেদী’ নামক বংশ পদবীর।

মুসলমানদের ‘লোহানী’ পদবীর মতো হিন্দু সমাজের রয়েছে সাহানী পদবী। মনে করা হয় এই বংশ পদবী এসেছে সিন্ধু প্রদেশের সাহান অঞ্চল থেকে।বাঙালি মুসলমানের যেমন প্রয়োজনের অতিরিক্ত আরবী-ইরানী প্রীতি রয়েছে, বাঙালি খ্রিস্টানেরও তেমনি রয়েছে ইংরেজ, পর্তুগীজ তথা পাশ্চাত্য প্রীতি। পৃথিবীর যে কোন ভূখণ্ডের ভাষা ও জাতীয়তায় মুসলমান হতে ধর্মগত বাধা না থাকলেও, বাঙালি মুসলমানরা যেমন-আরবী-ফার্সীর প্রতি অতিরিক্ত প্রীতি দেখিয়ে থাকে, তেমনি বাঙালি খ্রিস্টানও দেখিয়ে থাকে পাশ্চাত্য প্রীতি। যেমন-বাঙালির মহাকবি মধুসূদন দত্ত হিন্দুত্ব ত্যাগ করে খ্রিস্টান হয়ে উনিশ শতকে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু এই মহান বাঙালিও বাঙালি চরিত্রের এতোটুকু স্খলন না ঘটিয়ে পিতৃ নামের আগে মাইকেল যোগ করেছিলন। দত্ত পদবী ত্যাগ করেননি তিনি, তবে দত্ত এর ইংরেজি উঁচ্চারণের বাংলা উচ্চারণ করতেন ডাট বলে। ফলে খ্রিস্টান মধুসূদনের নাম দাঁড়ায় মাইকেল মধুসূদন ‘ডাট’। বাঙালি খ্রিস্টানের ইতিহাস চার শত বছরের প্রাচীন। বিদেশী খ্রিস্টান পুরোহিত বাংলা দেশে তাঁদের ধর্ম যাত্রা উপলক্ষে বাঙালিদেরকে খ্রিস্টান ভূক্ত করতে থাকেন। তাদের নাম অথবা সেই পুরোহিত যে অঞ্চলের থেকে আগত সেই অঞ্চলের নামানুসারে খ্রিস্টান ধর্মের নতুন ভাবে দীক্ষিত বাঙালি পদবীর সমাবেশ ঘটাতে থাকেন। বাঙালি খ্রিস্টানের পদবীর মাহত্ম্য ও তাৎপর্য থেকে অনুধাবন করা যায়, যে সব পর্তুগীজ খ্রিস্টান ধর্মযাজক এদেশে এসেছিলেন, তাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্তুগালের বিভিন্ন দ্বীপের অধিবাসী। সম্ভবত কোন ধর্মযাজক কতজন বাঙালিকে ধর্মান্তরিত করেছেন তা চিহ্নিত করার জন্যেই দেশান্তরিত নতুন বাঙালি খ্রিস্টানের নামের সাথে এই অঞ্চলের নাম বিশিষ্ট পদবী যুক্ত করা হতো। বাঙালি খ্রিস্টানের ‘ডি কষ্টা’ পদবী বলতে পর্তুগীজ ধর্মযাজক দ্বারা ধর্মান্তরিত খ্রিস্টান বুঝতে হবে। ‘ডি রোজারিও’ পদবী মানে রোজারিও নামের দ্বীপ থেকে আগত ধর্ম যাজক দ্বারা খ্রিস্ট ধর্মে আলোকিত। ‘ডি’মানে এখানে ‘দ্বীপ’ বোঝানো হয়। গমেজ আর একটি বাঙালি খ্রিস্টানের বংশ পদবী। এর কোন তাৎপর্য পাওয়া যায় না। যেমন-বাঙালি বিশপ থিওটানিয়াস গমেজ।
প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্ব থেকেই বাঙালি বৌদ্ধের প্রাচীন ইতিহাস খুব ভাল করেই পাওয়া যায়। বুদ্ধদেবের মতাবলম্বী প্রাচীন এই বাঙালি নাগরিকদের নাম ও পদবী পরিচিতির প্রধান দলিল হচ্ছে চর্যাপদ, বৌদ্ধ গান ও দোহা। যে প্রাচীন বাঙালি বৌদ্ধ দার্শানিক সমগ্র এশিয়া মহাদেশ মাতিয়ে ছিলেন সেই যুগে, তার নাম ছিল শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর। এখানে কোনটি তার নাম, কোনটি খেতাব, কোনটি পদবী তা আবিস্কার করা সম্ভব নয়। আবার কাহ্নপাদ ছিলেন সব চেয়ে বেশী চর্যার লেখক। তাঁর নামের সাথে ‘পাদ’ শব্দ যুক্ত দেখা যায়। এই ‘পাদ’ কি পদকর্তার খেতাব, নাকি এটি কোন পদবীই, সে বিষয়ে এখনো কোন গবেষক সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। বর্তমানে বাঙালি বৌদ্ধের জনপ্রিয় পদবী হচ্ছে ‘বড়–য়া’। বাংলাদেশের বসবাসকারী অধিকাংশ বৌদ্ধের নামের সাথেই ‘বড়ুয়া’ পদবী যুক্ত দেখা যায়। ‘বড়–য়া’ অর্থ হচ্ছে সম্মানিত ব্যক্তি, আবার ধনী ব্যক্তিও। চট্টগ্রামের বৌদ্ধদের পদবী যেমন এটি, তেমনি আসামের কোন কোন অঞ্চলের হিন্দু ও মুসলমানের পদবীও রয়েছে ‘বড়–য়া’। বাঙালি বৌদ্ধের আরেকটি পদবী রয়েছে তা হলো ‘মুৎসুদ্দী’। এর অর্থ প্রধান কেরানী অথবা প্রতিনিধিও হতে পারে। অনেক গবেষক মনে করেন ‘মুৎসুদ্দী’ পদবীটি মধ্যসত্ত্বভোগী ব্যবসায়ী থেকে এসেছে। তাছাড়া বাঙালি বৌদ্ধদের মধ্যে দেওয়ান, চৌধুরী ইত্যাদি পদবীর ব্যবহার রয়েছে।
বাঙালির বংশ পদবীর ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায় উপরোক্তদের ছাড়াও কিছু ক্ষুদ্র জাতি সমূহের কিছু পদবী রয়েছে। যেমন-চাকমা, দেওয়ান, রায় ইত্যাদি। উপজাতি চাকমা ক্ষুদ্র জাতির প্রধান পদবী হচ্ছে ‘চাকমা’। এছাড়া ‘খীশা’ পদবীর ব্যবহারও দেখতে পাই। বাঙালি গারো, সাওতাল, হাজং প্রভৃতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতি গুলি মধ্যে প্রচলিত রয়েছে বিচিত্র রকমের বংশ পদবী। এর মধ্যে স্রং, সাংমা, রুরাম, দারিং গাগ্রা প্রভৃতি পদবীর ব্যবহার লক্ষণীয়।
পরিশেষে বাঙালির কিছু বিখ্যাত বংশ পদবীর ইতিহাস তুলে ধরতে চাই। এই যেমন-শিকদার, সৈয়দ, শেখ, মীর, মিঞা, মোল্লা, দাস, খন্দকার, আকন্দ, চৌধুরী, ভুইয়া, মজুমদার, তরফদার, তালুকদার, সরকার, মল্লিক, মন্ডল, পন্নী, ফকির, আনসারী, দত্ত ইত্যাদি।
শিকদারঃ সুলতানি আমলে কয়েকটি মহাল নিয়ে গঠিত ছিল এক একটি শিক। আরবি শিক হলো একটি খন্ড এলাকা বা বিভাগ। এর সাথে ফারসি দার যুক্ত হয়ে শিকদার বা সিকদার শব্দের উদ্ভব হয়েছে। এরা ছিলেন রাজস্ব আদায়কারী রাজকর্মচারী। শব্দকোষে যাকে বলা হয়েছে শান্তিরক্ষক কর্মচারী। এরা শিক বন্দুক বা ছড়ি বন্দুক ব্যবহার করতো বলে শিকদার উপাধী পেয়েছিল; সেই থেকে বংশ পরমপরায় শিকদার পদবীর বিকাশ ঘটে।
সৈয়দঃ সৈয়দ পদবী মূলত এসেছে নবী নন্দিনী হযরত ফাতেমা ও হযরত আলীর বংশ ধর থেকে। প্রায় দেড় হাজার বছর আগের এই বংশের সাথে কোনা যোগসূত্র না থাকলেও বাংলাদেশের অনেক মুসলমান পরিবার সৈয়দ বংশ পদবী ব্যবহার করে নিজেদের সম্ভ্রান্ত ও কুলীন মুসলমান বলে দাবি করে থাকেন। বাঙালি মুসলমান সমাজে সৈয়দ পদবীর অপব্যবহার ও পক্ষেপণ ঘটেছে সবচেয়ে বেশি। প্রকৃত পক্ষে সৈয়দ নন এবং পারিবারিক কোন কুলীন পদবীও নেই, অথবা পূর্ব পদবী ঐতিহ্য পরিত্যাগ করতে ইচ্ছুক এমন অনেক বংশ গোষ্ঠী বা ব্যক্তি বিশেষে বাংলাদেশে সৈয়দ পদবী আরোপিতভাবে ব্যবহার শুরু করেছে। প্রচুর বাঙালি মুসলমান রয়েছে যারা পূর্ব ঐতিহ্যগত ভাবে সৈয়দ নন, অথচ তাদের নামের পূর্বে পদবীর পরিচয়বাহী সংক্ষিপ্ত শব্দ বা শব্দ গুচ্ছ যথা ‘এস-এম’ যুক্ত করে থাকেন। বস্তুত এস.এম হচ্ছে ‘সৈয়দ মোহাম্মদ’ অথচ ব্যবহারকারীরা অনেক সময়ই তা পুরোপুরি ভেঙে লেখেন না হয় তো ভয়ের কারণে। শেখঃ শেখ আরবি থেকে আগত পদবী। সম্ভ্রান্ত মুসলমানদের সম্মানসূচক বংশ পদবী শেখ। যিনি সম্মানিত বৃদ্ধ অথবা যিনি গোত্র প্রধান, তাকেই বলা হতো শেখ। হযরত মোহাম্মদ (সঃ) সরাসরি যাকে বা যাঁদের ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করেছিলেন, তিনি বা তার বংশ ধরও শেখ নামে অভিষিক্ত হতেন অথবা শেখ পদবী লাভ করতেন। বাঙালি মুসলমান সমাজে যারা শেখ পদবী ধারণ করেন, তারা এ রকম ধারণা পোষণ করেন না যে, তারা বা তাদের পূর্ব পুরুষরা এসেছিলেন সৌদী আরব থেকে। বাঙালি সৈয়দ পদবী ধারীদের থেকে শেখ পদবীধারীদের এখানে একটা মৌলিক তাৎপর্যগত পার্থক্য রয়েছে। শেখ পদবী গ্রহণের নেপথ্যে রয়েছে ঐ পূর্বোক্ত চেতনা। নবীর হাতে মুসলমান না হলেও বাংলায় ইসলাম ধর্ম আর্বিভাবের সাথে সাথে যারা নতুন ধর্মকে গ্রহণ করে নেন; ‘নও মুসলমান’ হিসেবে প্রাচীন ও মধ্যযুগে তারাই শেখ পদবী ধারণ করে ছিলেন। পরবর্তীকালে তাদের বংশের উত্তর সূরীরাই শেখ পদবী ব্যবহার করে এসেছেন। এমনিতে অন্য ধর্মের লোকের কাছে মুসলমান মানেই শেখ বা সেক। বাংলায় শেখ পদবী তাই নানা ভাবে ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। কেউ কেই শেখ কেউ সেক কিংবা কেউ বা শেখ এর রূপান্তর শাইখও ব্যবহার করে থাকেন।
মীরঃ মির বা মীর শব্দটি এসেছে আরবি থেকে। আরবি শব্দ ‘আমীর’ এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে মীর। সেই অর্থে মীর অর্থ দলপতি বা নেতা, প্রধান ব্যক্তি, সরদার ইত্যাদি। জিতে নেয়া বা জয়ী হওয়া অর্থে মীর শব্দের ব্যবহার হতো। তবে মীর বংশীয় লোককে সম্ভ্রান্ত এবং সৈয়দ বংশীয় পদবীধারীর একটি শাখা বলে গাবেষকরা মনে করেন।
মিঞাঃ মিঞা মুসলিম উচ্চ পদস্থ সামাজিক ব্যক্তিকে সম্বোধন করার জন্য ব্যবহৃত সম্ভ্রম সূচক শব্দ। এক অর্থে সকল মুসলমানের পদবীই হচ্ছে মিঞা। বাঙালি হিন্দুর ‘মহাশয়’ এর পরিবর্তে বাঙালি মুসলমান মিয়া শব্দ ব্যবহার করে থাকে। ‘মিঞা’ শব্দটি এসেছে ফারসি ভাষা থেকে। প্রভু বা প্রধান ব্যক্তি বুঝাতেও মিয়া শব্দের প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। তবে গ্রামীন প্রধান বা সর্দার অর্থের মিঞা পদবী হিসেবে বাঙালি মুসলমান সমাজে ঠাঁই পেয়েছে।মোল্লাঃ মোল্লা এবং মুন্সী বাঙালির দুটো জনপ্রিয় পদবী। তাদের প্রসার প্রায় দেশব্যাপী। বঙ্গীয় শব্দকোষ এ মোল্লা শব্দের অর্থ করা হয়েছে মুসলমান পুরোহিত। বস্তুত এভাবে মসজিদে নামাজ পরিচালনার কারণেও অনেকে মোল্লা উপাধি পেয়েছিল এবং তার পর থেকেই মোল্লা পদবীর ব্যবহার শুরু হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে, মোল্লা হচ্ছে তুর্কি ও আরবি ভাষার মোল্লা থেকে আগত একটি শব্দ যার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে পরিপূর্ণ জ্ঞান বিশিষ্ট মহাপন্ডিত ব্যক্তি। অন্য অর্থে মুসলিম পন্ডিত বা ব্যবস্থাপক বা অধ্যাপক হলেন মোল্লা। পরবর্তী কালে মসজিদে নামাজ পরিচারলনাকারী মাত্রই মোল্লা নামে অভিহিত হতে থাকে। এখান থেকেই সাধারণত বংশ পদবী হিসেবে তা ব্যবস্থার হওয়া শুরু হয়। তাঁরা সকল জ্ঞানের জ্ঞানী না হওয়া সত্ত্বেও মোল্লা পদবী ধারণ করে। যার ফলে ‘মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত’ প্রবাদের উৎপত্তি হয়েছে।
দাসঃ বাঙালি হিন্দু সমাজে দাস বা দাশ বংশ পদবীর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। যে সমস্ত হিন্দু সম্পদায়ের মানুষ পদবীতে দাশ লেখেন তাদের পেশা ধীবর থেকে এসেছে বলে গবেষকরা মনে করেন। আর যারা দাস লেখেন তাদের পদবী স্রষ্টার ভূত্য চেতনা থেকে এসেছেন।

খন্দকারঃ মুসলিম সমাজের ফারসি শিক্ষক হিসেবে খোন্দকার বা খন্দকারের পরিচয় পাওয়া যায় । অন্য দিকে খোন্দকারের ’ পদবী এসেছে সামন্ত সমাজ থেকে পেশাজীবী হিসেবে। সাধারণ ভাবে খোন্দকার বা খন্দকার অর্থ হচ্ছে কৃষক বা চাষাবাদকারী । মনে করা হয় ‘ফারসি‘কনদহ ’ এর যার অর্থ কৃষি’সাথে‘কার যুক্ত হয়ে কনদহকার> খনদহকার>খন্দকার হয়েছে। ভিন্ন মতে, খন্দকারের মূল উৎপত্তি সংস্কৃত কন্দ> খন্দ যার অর্থ ফসল বলা হয়েছে। এই খন্দ এর সাথে কার যুক্ত হয়েও খন্দকার> খোন্দকার হতে পারে। এবং এতেও পূর্বের ‘খন্দকার’ শব্দের উৎসের অর্থের তারতম্য ঘটছে না। আবার ফারসি ভাষায়, খোন্দকার বলে একটি শব্দ আছে যার অর্থ শিক্ষক। সেখান থেকেও খোন্দকার পদবী আসা বিচিত্র কিছু নয়। অথবা খোন্দকার শব্দের যে ভিন্নভিন্ন অর্থ তার সবগুলো মিলিত তাৎপর্য থেকেই বিভিন্নভাবে খন্দকার পদবীর উৎপত্তি হয়েছে।
আখন্দঃ খন্দকার ও আখন্দ বা আকন সমার্থক। আখন্দ ও আকন নামে যে সব পদবী তাও সম্ভবত খন্দকার পদবীরই রূপভেদ। খন্দকার>আখন্দ> আকন হয়ে থাকতে পারে। আবার ফারসি আখুন্দ থেকেও আখন্দ এসে থাকতে পারে। যার অর্থ শিক্ষক। তবে আকন্দ এসেছে আখন্দ থেকেই।চৌধুরীঃ সংস্কৃত চতুধারী শব্দ থেকে এসেছে বাংলা চৌধুরী শব্দ। এর অর্থ চর্তুসীমানার অন্তগর্ত অঞ্চলের শাসক। বাংলাদেশের বেশির ভাগ জমিদারদের পদবী হচ্ছে চৌধুরী।
আবার অনেকে মনে করেন ‘চৌথহারী’ যার অর্থ এক চতুথাংশ রাজস্ব আদায়কারী, সেখান থেকে উচ্চারণ পরিবর্তনের মাধ্যমে এসেছে ‘চৌধুরী’। সেদিক থেকে চৌথ আদায়কারী বা রাজস্ব আদায়কারী পদ সৃষ্টি হয়েছিল বাংলার রাষ্ট্র ব্যবস্থার। বঙ্গীয় শব্দকোষ বলছে,‘চতুর’ যার অর্থ তাকিয়া বা মসনদ, তার সাথে যুক্ত হয়েছে ‘ধর’ (অর্থ ধারক) এবং এই দুয়ে মিলে হয়েছে ‘চৌধরী’ > আর তার থেকেই ‘চৌধুরী’। তবে তা মূলত হিন্দী ও মারাঠি শব্দ। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে চৌধুরী বংশ পদবী ব্যবহার করা হয় এদেশে। বৃটিশ-ভারতের প্রায় সর্বত্র এ পদবীর অস্তিত্ব ছিল। কারণ চৌধুরী ছিল সামন্ত রাজার পদবী।
ভূঁইয়াঃ এই বংশ পদবীটি এসেছে খোদ ভূমির মালিকানা অর্থ থেকে। বাঙালি হিন্দু-মুসলিম উভয় স¤প্রদায়ের মধ্যে এ পদবীর প্রচলন আছে। বাঙালি হিন্দু সমাজে যাঁরাই ‘ভৌমিক’ বাঙালি মুসলমান সমাজে তারা ‘ভূঁইয়া’ হিসেবে পদবী ধারণ করেছেন। মূল সংস্কৃত শব্দ ভৌমিক > (প্রাকৃত) ভূমিকা > (বাংলা) ভূঁইয়া > থেকে ভূঁইয়া বা ভূঁঞা এসেছে। প্রাচীন বড় জমিদার বা সামন্ত রাজার উপাধিও ছিল ভূঁইয়া। প্রকৃত পক্ষে কুলীন বংশ পদবীই ছিল তা। আবার যে সব মানুষ আগে স্থান বিশেষে বনজঙ্গল পরিষ্কার করে বসতি ও চাষাবাদের পত্তন করেছে তারা স্থানীয় জমিদার রাজার কাছ থেকে ভূঁইয়া নামে অভিহিত হয়ে ঐসব জমি-জমার স্বত্ব লাভ করেছে।
মজুমদারঃ ‘মজুমদার’ পদবী মূল আসলে ‘মজুনদার’। এর মূল ফারসি শব্দ হচ্ছে ‘মজমু আনদার’। আজকের দিনে কালেকটরেট ভবনে যে সব আধিকারিক রয়েছে, মোগল আমলে তারাই ছিল ‘মজুমদার। রাষ্ট্রের ও জমিদারির দলিল পত্রাদির রক্ষক রাজকর্মচারীর জন্যে এই পদবী সংরক্ষিত ছিল। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সমগ্র বাংলাদেশে ‘মজুমদার’ পদবীর ব্যবহার লক্ষনীয়।
তরফদারঃ আরবি ‘তরফ’ এবং ফারসি ‘দার’ মিলে তরফদার শব্দের সৃষ্টি। জমিদারের খাজনা আদায়ের মহালে তদারককারী কর্মচারী বা খাজনা আদায়কারীর উপাধী ছিল তরফদার। এই পদবী ব্যবহারকারী গোষ্ঠীর পূর্ব পুরুষরা এই কাজে নিয়োজিত ছিলেন, সেখান থেকেই এই বংশ পদবী উৎপত্তি ও প্রচলন। অন্যমতে তরফদার তরফের রাজস্ব আদায়কারী লোক; গোমস্তা, দলের বা পক্ষের লোক। তরফের মালিক; পদবী বিশেষ। তালুকদারঃ আমাদের দেশে সুপরিচিত একটি বংশ পদবী। বাংলাদেশে জমিদারির পরই তালুক ভূ-সম্পত্তির একটি বিভাগ। মোগল ও বৃটিশ আমলে রাজস্ব ও ভুমি সংক্রান্ত বিষয়াদি থেকে যে সমস্ত পদবীর উৎপত্তি ও বিস্তার তার মধ্যে ‘তালুকদার’ হচ্ছে সবচেয়ে সম্মানীয় পদবী। ‘তালুক’ শব্দ থেকেও এই পদবীর মর্মাথ উপলব্ধি করা সম্ভব। আরবি শব্দ ‘তা’ আল্লুক’ যার অর্থ ভূ-সম্পত্তি এবং এর সাথে ফারসি ‘দার’ যুক্ত হয়ে (তা’আল্লুক+দার) ‘তালুকদার’ শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। যিনি জমিদার তিনিই হচ্ছে তালুকদার। তবে মনে হয় ‘ক্ষুদ্র জমিদার’ তা না হলে ‘জমিদার’ শব্দ থাকার পরও ‘তালুকদার’ শব্দের উৎপত্তি বা প্রচলন হতো না। প্রকৃত পক্ষে, যিনি তালুকদার, তিনি জমি ও ক্ষুদ্র ভূ-সম্পত্তি বন্দোবস্ত নিতেন সরকারের কাছ থেকেও যেমন, তেমনি জমিদারের কাছে থেকেও। ফলে তিনি হতেন উপজমিদার সেই অর্থেই এসেছে ‘তালুকদার’। বাঙালির ‘জমিদার’ শব্দ দিয়ে কোনো পদবী নেই, অথচ ছোট জমিদার ‘তালুকদার’ শব্দের পদবী রয়েছে। সাধারণত কয়েকটি গ্রাম বা কয়েকটি পরগণা নিয়ে এক একটি তালুকের সৃষ্টি। তালুকি স্বত্ব এক প্রকার ইজারা স্বত্বের মতো। এই স্বত্ব বংশানুক্রমে বর্তমান থাকতো খাজনা বাকি না পড়া পর্যন্ত তালুকিস্বত্ব বিনষ্ট হতোনা । আর তালুকের মালিক বা জোতদার নামে পরিচিত হতেন।
সরকারঃ ‘সরকার’ শব্দটি ফারসি থেকে আগত। এর অর্থ প্রভু, মালিক, ভূস্বামী, শাসনকর্তা, রাজা। অর্থ আদায় ও ব্যয় সংক্রান্ত কর্মচারি ও সরকার। মোগল আমলে এদেশের স্থানীয় রাজকর্মচারিদের এ পদবী দেয়া হতো। মোট কথা প্রধান কর্মচারি এবং সম্পত্তি দেখাশুনার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিকে সরকার বলা হতো। বাঙালি হিন্দু-মুসলিম উভয় স¤প্রদায়ের মধ্যেই এ পদবীর ব্যবহার আছে।
মল্লিকঃ আরবি ‘মালিক’ বা ‘মলিক’ শব্দ থেকে এসেছে ‘মল্লিক’ বংশ পদবী। ফারসি মালিক শব্দজাত মল্লিক ভূম্যাধিকারী বা জোতদারের উপাধি। গ্রাম প্রধান বা সমাজের প্রধান ব্যক্তি মালিক। আবার লিপিকুশল রাজকর্মচারিকে মোগল আমলে মল্লিক বা সুলেখক আখ্যা দেয়া হত বলেও আমরা জানতে পারি। হয়তোবা সেই থেকে মল্লিক বংশ পদবী এসেছে।
মন্ডলঃ বাঙালি হিন্দু-মুসলিম সমাজে সমান ভাবে ব্যবহৃত হয় মন্ডল পদবী। বাংলাদেশে অতীত কাল থেকে গ্রামের অনানুষ্ঠানিক এবং সাধারণ ভাবে স্বীকৃত গ্রাম- প্রধানকে বলা হত মন্ডল। বাংলায় মন্ডলরা আগে অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন। মন্ডলীয় কাজ করে তারা অনেক অধিকার ভোগ করতেন। খাজনা আদায়কারী ও রায়তদের মধ্যস্থতা করা কিংবা গ্রামীন বিবাদ আপোস মীমাংসা করতে মন্ডলরা কার্যকরী ভূমিকা পালন করতেন। কোন কোন সময় তাদের অধীনে পাটোয়ারি, তহসিলদার, চৌকিদার ইত্যাদি কর্মচারী কাজ করতেন। সরকার ও রায়তদের মধ্যবর্তী মানুুষ হিসেবে মন্ডলরা অধিক পরিচিত ছিল।
ফকিরঃ মুসলমানদের মধ্যে ‘সন্ন্যাসবৃত্তি’ থেকেই ফকির। মুসলমানদের মধ্যে ‘সন্ন্যাসবৃত্তি’ থেকেই এসেছে ‘ফকির’ পদবী। মরমী সাধকরা গ্রহণ করতেন ‘ফকির’ পদবী। এটি আরবি শব্দ, যার মূল অর্থ নি:স্ব। আবার আরবি ফকর শব্দের অর্থ দারিদ্র। এ থেকে ফকির শব্দের উৎপত্তি। ফকির এবং পার্শি দরবেশ ব্যক্তিগণ সাধারণত এদেশে ফকির নামে পরিচিত। বিশেষ কোন ধর্ম মতের একান্ত অনুসারী না হয়ে যারা সকল ধর্মের মূলনীতি নিয়ে আত্মতত্ত্বের সন্ধান করেন তাদেরকেও ফকির বলা হয়। আবার সুফি বা বাউল তত্বের ধারকরাও ফকির।
ঠাকুরঃ বাংলা শব্দের বিশেষজ্ঞ হরিচরণ বন্দ্যোপধ্যায়ের মতে- ঠাকুর শব্দের মূল হচ্ছে (সংস্কৃত) ‘ঠাক্কুর’ তার থেকে > (প্রকৃত) ঠকুর > (বাংলা) ঠাকুর এসেছে। পদবীগত দিক থেকে তা ব্রাক্ষণের পদবী বিশেষ, এমনকি ক্ষত্রিয়েরও উপাধি এটি। মধ্য যুগের কাব্য ‘চৈতন্য ভাগবত’ উদ্ধৃত করে লেখক বলেছেন, তা বৈঞ্চব উপাধি। যেমন, হরিদাস ঠাকুর। পাচক ব্রাক্ষণও এক প্রকার ঠাকুর বলে পরিচিত। তবে আহমদ শরীফ সম্পাদিত ‘সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান’ বলছে, সংস্কৃত ঠক্কুর থেকে ঠাকুর আসলেও এর মূলে ছিল তুর্কী শব্দ। বাঙালি হিন্দু-মুসলমান উভয়েই এই পদবী ব্যবহার করে।
এরকম শতাধিক বংশ পদবী রয়েছে আমাদের দেশে। সব বংশ পদবীর ইতিহাস লিখলে বিশাল আকৃতির বই হবে। আমি আর সে দিকে যেতে চাইনা। পরিশেষে বলতে চাই বাঙালির পদবীর ইতিহাস বৈচিত্র পথ ও মতের এক অসাধারণ স্মারক হিসেবে চিহিৃত। বাঙালি মুসলমানের পদবী ব্যবহারের উদ্যোগ খুব বেশি প্রাচীন না হলেও, তাতে কম করে হলেও হাজার বছরের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। বাঙালির বংশ পদবী গুলোর মধ্যে রয়েছে কিছু আঞ্চলিক পদবী, শুধু অঞ্চল থেকেই তার জন্ম ও ব্যবহার। কিছু পদবী রয়েছে একেবারে বাঙালির জাতীয়। সারা বঙ্গ জুড়েই তার প্রসার। কয়েকটি অবশ্য ধর্মীয় পদবী রয়েছে, যা হিন্দু-মুসলমানদের একান্ত নিজস্ব। তবে জনপ্রিয় পদবী গুলির বেশির ভাগই ধর্ম নিরপেক্ষ এবং একান্ত ভাবে বাঙালির সম্পদ।

ঢাকায় ভাড়ায় স্বামী বাণিজ্য!






ঢাকায় ভাড়ায় স্বামী বাণিজ্য!



ঢাকাসংবাদ

ঢাকায় ভাড়ায় স্বামী বাণিজ্য! তা আবার খোদ রাজধানীতেই। বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও বিশেষ করে তিন ধরনের কাজের জন্য এসব স্বামী পরিচয়ে পুরুষ ভাড়া পাওয়া যায় বলে জানা গেছে।
এমনকি স্বামী হিসেবে ভাড়ায় খেটে নিজের সংসার চালাচ্ছেন এমনও তথ্য পাওয়া গেছে। দিনে ১শ’ টাকা থেকে মাসে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকায় ভাড়ায় স্বামী পাওয়া যায়। আবার একই পুরুষ ভাড়ায় খাটেন একাধিক নারীর স্বামী পরিচয়ে এমন তথ্যও পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া এনজিওসহ বেশ কিছু মাল্টি পারপাস কোম্পানি থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নেয়ার শর্ত হিসেবে স্বামীর পরিচয় ও তার ছবি ব্যবহার করতে স্বামী ভাড়া করা হয়। আবার সাম্প্রতিককালে পাসপোর্ট অফিসে কোনো নারী স্বামী ছাড়া একা গেলে তাকে স্বামীর উপস্থিতি দেখানোর প্রয়োজনে স্বামী ভাড়া করে দেখিয়ে আবার স্বামী নিয়ে আসার ঝামেলা থেকে মুক্ত হতে হয়।
রাজধানীর জুরাইন এলাকার সড়কের পাশের খুদে দোকানি স্বামী পরিত্যক্তা রহিমা বেগম। তার স্বামী আরেকটি বিয়ে করে তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। কোথায় গেছেন সেটাও জানা নেই রহিমা বেগমের। ৩টি সন্তান নিয়ে সড়কের পাশে কখনো পিঠা, কখনো মৌসুমি ফল, সঙ্গে চা-পানের দোকান করে জীবন চালান তিনি।
এখন ছেলেকে চা পানের দোকান আলাদা করে দিতে ৫ হাজার টাকা ঋণ দরকার তার। একটি এনজিও থেকে ঋণ পেতে স্বামী দরকার। এনজিওর লোকেরা বলেছে ঋণ পেতে হলে স্বামী-স্ত্রী দু’জনের ছবি লাগবে, এক সঙ্গে না হলে ঋণ পাওয়া যাবে না।
মাস কয়েক আগে এনজিওর ঋণ পেতে একজন স্বামী ভাড়া করেছিলেন তিনি। ঋণের টাকা থেকে ৫শ’ টাকা দিয়েছেন তাকে। মাত্র ৫শ’ টাকাতেই রহিমা বেগমের সঙ্গে স্বামী পরিচয়ে এনজিও অফিসে গিয়ে ছবি তুলে ঋণ পেতে সহায়তা করেছে বিশু নামের এক লোক।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজধানীর শনির আখড়ায় বসবাস করেন সোহান (ছদ্ম নাম)। অভাবের তাড়নায় ময়মনসিংহের ভালুকা এলাকার গ্রামের বাড়ি থেকে আসেন ঢাকা। এসএসসি পাসও করেননি তাই কোনো চাকরি দিতে চাচ্ছেন না কেউ। এরই মধ্যে পরিচয় হয় ছিঁচকে ছিনতাইকারী কাজলের সঙ্গে। হয় সখ্যতা।
জানা গেছে, স্বামী পরিচয়ে একই ব্যক্তি একাধিক ফ্ল্যাট বাড়িতে ভাড়া খাটছেন। সর্বোচ্চ পাওয়া গেছে এনায়েত নামের এক লোককে। তিনি একযোগে ৬ নারীর স্বামী হিসেবে ভাড়া খাটছেন।
ভাড়া খাটার শর্ত হচ্ছে সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন স্বামী পরিচয়ে বাসায় অবস্থান করতে হবে, আর বাসার বাজারও করে দিতে হবে। বাসায় অবস্থান করা ও বাজার করার শর্ত দেয়ার মানে হচ্ছে যাতে আশপাশের লোকেরা কোনো প্রকার সন্দেহ না করে। তবে ওইসব যৌনকর্মীদের ক্ষেত্রে স্বামীর ভাড়া সবচেয়ে বেশি।
জামালপুরের মধ্যবয়সী পুরুষ এনায়েত। এক যুগ আগে ঢাকায় এসে মিরপুর এলাকায় পান-সিগারেটের ব্যবসা শুরু করেন। ধীরে ধীরে জড়িয়ে যান এক সন্ত্রাসী চক্রের সঙ্গে। ধরা পড়ে জেলও খাটেন দেড় বছর। জেল থেকে বেরুনোর পর ঘটনাচক্রে পরিচয় হয় এক নারীর সঙ্গে।
পরিচয়ের সূত্রে তার সঙ্গে হয় সখ্য এবং পরবর্তী সময়ে তার সঙ্গে স্বামী পরিচয়ে বসবাস। এর পরই ভাড়ায় স্বামী বাণিজ্য শুরু এনায়েতের। এখন রাজধানীর মিরপুর, বাড্ডা ও গাবতলী এলাকায় ৬টি বাসায় ৬ নারীর ভাড়াটে স্বামী তিনি। মাসে তিনি ভাড়া পান ৩০ হাজার টাকা। কোনো মাসে বেশিও পান।
আবার কোনো মাসে কিছুটা কমও পান বলে জানান এনায়েত। নিজের স্ত্রী ও ১ ছেলে নিয়ে ভাড়া থাকেন মিরপুরের কালশী এলাকায়। ভাড়ায় স্বামী খাটাই এখন তার একমাত্র পেশা বলে জানান তিনি। তার মতে এতে একজনের উপকারও হলো আবার নিজেরও রোজগার হলো।
জানা গেছে, রাজধানীতে বিভিন্ন ক্ষুদে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বেশিরভাগ বস্তিবাসী বা ভাসমান নারীরা উদয়াস্ত পরিশ্রম করে সন্তানদের নিয়ে জীবন ধারণ করছেন। তাদের বেশিরভাগই স্বামী পরিত্যক্তা।
ব্যবসা পরিচালনা বা সম্প্রসারণের কারণে কখনো কখনো এদের ক্ষুদ্র ঋণের প্রয়োজন হয়, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এনজিওগুলো বা নগরীতে সুদের ব্যবসা করে এমন সংস্থাগুলো ক্ষুদ্র ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী ২ জনের ছবি ও নাম ব্যবহার করে, ২ জনকেই ঋণের দায়বদ্ধ করে।
এনজিওগুলোর ওই নিয়মের কারণে স্বামী পরিত্যক্তাদের ক্ষুদ্র ঋণ পাওয়ার সুযোগ থাকে না। সে ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে পরিচিত এবং ভালো সম্পর্ক আছে এমন কাউকে স্বামী হিসেবে ভাড়া করে সংস্থাগুলো থেকে ব্যবসার ঋণ পান নারীরা।
বিনিময়ে ভাড়াটে স্বামীকে ধরিয়ে দিতে হয় নগদ কিছু। আবার জানা গেছে, অনেকে কেবলমাত্র ভালো সম্পর্কের কারণে বিনা টাকায় মহিলাদের ঋণ পেতে সহায়তা করে।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের দালাল কুদ্দুস। অজ্ঞতাপ্রসূত নারীদের স্বামী ভাড়া দেয়াই যেন তার প্রধান কাজ। পাসপোর্টের জন্য ছবি তুলতে অজ্ঞতাপ্রসূত কোনো নারী একা গেলে অনেক সময় তাকে স্বামী সঙ্গে রাখার কথা বলা হয়, সে ক্ষেত্রে নারী পাসপোর্ট প্রত্যাশীকে সময় ব্যয় করে আরেক দিন আসতে হয়, অনেকে ফিরে যান।
নারীরা ফিরে যাওয়ার সময় এখানকার কিছু দালাল সুকৌশলে তাদের প্রস্তাব দেন, টাকা-পয়সা খরচ করে আবার আসবেন তার চেয়ে মাত্র ১শ’ টাকা খরচ করুন- আমি একজন লোক দিচ্ছি উনি আপনার সঙ্গে যাবেন, মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য উনাকে স্বামী পরিচয় দেবেন, ছবিটা তোলা হলে চলে যাবেন।
নানা বয়সী নারীদের জন্য কয়েক মিনিট ভাড়ায় খাটতে নানা বয়সী পুরুষ আশপাশে জড়ো করা আছে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের কুদ্দুসসহ বেশ কয়েক দালালের।

মন্তব্যঃ 

শেয়ার করেছেন : প্রণব কুমার কুণ্ডু

 





গেঁধোব্যাটার শয়তানি ! হিন্দুদের হয়রানি !



গেঁধোব্যাটার শয়তানি ! হিন্দুদের হয়রানি !




শেয়ার করেছেন : প্রণব কুমার কুণ্ডু




ভারতবর্ষে মহাভারতের একটি শ্লোক ভুল পড়ানো হয়, কিন্তু কেন ভুল বা অসম্পূর্ণ পড়ানো হয়?
আমর মনে হয় মহাত্মা গান্ধীর জন্য. . .
"অহিংসা পরম ধর্ম"
পুরোটা হল—
"অহিংসা পরম ধর্ম।
ধর্মহিংসা তদৈব চ" ।।
অর্থাৎ অহিংসা মনুষ্য জীবনের পরম ধর্ম এবং ধর্ম রক্ষার স্বার্থে হিংসা করা তার চেয়েও শ্রেষ্ঠ ।
গান্ধী শুধু এই শ্লোকটাই নয়, হিন্দু ধর্মের একটি প্রসিদ্ধ ভজনকেও পাল্টে দিয়েছিলেন ।
"রঘুপতি রাঘব রাজারাম" এই ভজনটির আসল নাম ছিল "রাম ধুন", যা খুবই প্রসিদ্ধ ভজন ছিল যেটাকে গান্ধী বদলে দিয়ে "আল্লাহ" যুক্ত করে দিয়েছিলেন. . .
গান্ধীর দ্বারা পরিবর্তিত ভজনটি হল-
রঘুপতি রাঘব রাজা রাম
পতিত পাবন সীতারাম ।
সীতারাম সীতারাম,
ভজ প্যারে তু সীতারাম
ঈশ্বর আল্লাহ তেরে নাম
সবকো সুমতি দে ভগবান ।
কিন্তু আসল রামধুন ভজনটি হল-
রঘুপতি রাঘব রাজারাম
পতিত পাবন সীতারাম,
সুন্দর বিগ্রহ মেঘশ্যাম
গঙ্গা তুলসী শালিগ্রাম,
ভদ্র গিরিশ্বর সীতারাম
জগৎ-জনপ্রিয় সীতারাম,
জানকীরমনা সীতারাম
জয় জয় রাঘব সীতারাম ।
বড় বড় পন্ডিত বক্তা পর্যন্ত এই ভজনটি ভুল গায়, আজ অবধি কেউ উনাদের বাধা পর্যন্ত দেয়নি. .
শ্রী রামচন্দ্রের জন্য যিনি এই ভজন টি লিখেছিলেন উনার নাম লক্ষ্মণাচার্য ছিল, এই ভজন টি বিখ্যাত হিন্দু গ্রন্থ "শ্রী নমঃ রামনায়নম" থেকে নেওয়া হয়েছে ।


SHAME TO THE TRAITORS OF HERITAGE
লাইক করুন
মন্তব্য
মন্তব্যগুলি
Palash Mitra খুব সুন্দর একটা তথ্য দিলেন। মৃণাল বাবু আপনাকে ধন্যবাদ
পরিচালনা করুন