শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৭

আত্মা


আত্মা



আত্মা।
আত্মা, মন এবং অহঙ্কারের বিকারগুলোর জ্ঞাতা।

আত্মা, দেহ ইন্দ্রিয় ও প্রাণের ক্রিয়াসমূহের জ্ঞাতা।

আত্মা, নিজে নিষ্ক্রিয় !

নিষ্ক্রিয় বস্তু, কি করে সক্রিয় হয়ে,  'জ্ঞাতা'  হন, তা জানা যায় না !


আত্মা নাকি নিত্য
তিনি জন্মান না
মরেন না
বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হন না
ক্ষয়প্রাপ্ত হন না !
আত্মার হ্রাস-বৃদ্ধি হয় না।

দেহ নষ্ট হলেও, আত্মা, নাশপ্রাপ্ত হন না !

হিন্দুধর্মের এসব কথা, বোঝাও যায় না !

বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক, বুদ্ধদেব আত্মা মানেন। কিন্তু, তিনি আবার, ঈশ্বর, পরমাত্মা,  মানেন না !

আমি তাই করছি


আমি তাই করছি




আমার স্ত্রী, তাঁর দুই বাহুডোরে, আমার বুক পিঠ হাতের কনুই-এর উপর অংশ দুটো, আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেললো।

আমাকে বললো,  'দেখ ! কেমন করে বেঁধে রেখেছি !'

আমি হাসতে হাসতে বললাম,  'এ আর এমন কি ! আমি এখুনি ছাড়িয়ে নিচ্ছি !'

স্ত্রী বললো,  'ইঃ এত ক্ষমতা ! ছাড়াও তো দেখি !'
'আমি যদি ছেড়ে না দিই, তুমি কিছুতেই ছাড়াতে পারবে না !'

'আচ্ছা বাবা ! যা করলে, তুমি ছাড়বে, আমি তাই করছি !'


ব্রহ্মমনন






ব্রহ্মমনন


ব্রহ্ম কোন বস্তু নন।
ব্রহ্ম একটি সৎ ধারণা !
বেদান্ত-অর্থের,  অবিরোধী যুক্তি দিয়ে,  অদ্বিতীয়  'ব্রহ্ম'-এর, সেই সৎ ধারণার, অনবরত অনুচিন্তন-ই,   'মনন' !
আসলে,  'ব্রহ্ম'-এর, সৎ ধারণার 'মনন'।
ওটা 'ধারণার' মনন।
ওটাই, সাধারণের কাছে,  'ব্রহ্মমনন' !

আম্বেদকর ও বৌদ্ধধর্ম


আম্বেদকর ও বৌদ্ধধর্ম

প্রশান্ত কুমার মণ্ডল-এর পোস্ট শেয়ার করেছেন               প্রণব কুমার কুণ্ডু।

Prasanta Kumar Mondal-এর পোস্ট
Binode Saradar এবং অন্যান্য 93 জন এর সঙ্গে আছেন।

ডঃআম্বেদকর বৌদ্ধধম্ম গ্রহণ করেছিলেন কেন?

ডঃবাবাসাহেব আম্বেদকর কেন বৌদ্ধধম্ম গ্রহণ করেছিলেন,  এই প্রশ্ন প্রায় শোনা যায়।

জঘন্য জাতিভিত্তিক ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুধর্মকে যখন তিনি ছাড়তে বাধ্য হলেন,  তখন তাঁর কাছে ইসলাম, খ্রিস্টান,বৌদ্ধ,  জৈন প্রভৃতি ধর্মের ধর্মগুরুরা তাদের নিজ নিজ ধর্মের মহিমা কীর্তনের জন্য হাজির হলেন।

ঐসব ধর্মগুরুরা জানতেন না যে,  ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর ইতিমধ্যে সমস্ত প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের ধর্মগ্রন্থ পড়ে ফেলেছেন।তাই তিনি বিভিন্ন ধর্মের ধর্মগুরুদের বুঝিয়ে দিলেন যে, কেন তিনি বৌদ্ধধম্মকে পছন্দ করেন এবং কেন বৌদ্ধধম্ম গ্রহন করবেন।

পৃথিবীর সব দেশ যদি সর্বসম্মতিক্রমে এমন আইন পাশ করতো,  যে শৈশব থেকে কোনো শিশুর উপর ধর্ম চাপিয়ে দেওয়া যাবে না,  এবং ২১ বছর বয়সের পর প্রতিটি যুবক,যুবতী যদি মনে করেন,  তার একটি প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের প্রয়োজন,তাহলে সে বিভিন্ন ধর্মের ধর্মগ্রন্থগুলি পাঠ করে,  তার পছন্দ মতো একটি ধর্ম সে গ্রহণ করতে পারবে।আর যদি সে মনে করে বাঁচার জন্য তার কোনো ধর্মের প্রয়োজন নেই,  তাহলে ধর্মছাড়া তাকে বাঁচতে দিতে হবে।

এমন সৎ সাহস পৃথিবীর দেশগুলি দেখাতে পারবে কী?

এখন দেখুন কি কারণে ডঃ আম্বেদকর বৌদ্ধধম্ম গ্রহণ করেছিলেন।
ডঃআম্বেদকর ত্রিপিটক পাঠ করে ত্রিপিটকের সারমর্মগুলি লিপিবদ্ধ করেন।অহিংসা, সাম্য, মানবতা, ঈশ্বরবিহীনতা,
মানব কেন্দ্রীক ধর্ম, ধর্মীয় গোঁড়ামি মুক্ত ও যুক্তিনিষ্ঠ ধর্ম,  এমন সব বাস্তব উপদেশ তিনি কোনো ধর্মগ্রন্থে পাননি।

1. মুক্ত সমাজের জন্য ধর্মের প্রয়োজন রয়েছে।
2. সব ধর্মই গ্রহণযোগ্য নয়।
3. ঈশ্বর বা আত্মা, স্বর্গ বা পৃথিবী সম্পর্কীয় তত্ত্ব,  কল্পনার সঙ্গে নয়-- জীবনের বাস্তব ঘটনার সঙ্গে,  ধর্মের সম্পর্ক থাকা আবশ্যক।
4. ঈশ্বরকে ধর্মের কেন্দ্রবিন্দু ধরা অনুচিত।
5. আত্মার মুক্তিকে ধর্মের কেন্দ্রবিন্দু করা উচিত|
6. পশুবলিকে ধর্মের কেন্দ্রবিন্দু করা অনুচিত|
7. শাস্ত্রের মধ্যে নয়,মানুষের হৃদয়ের মধ্যে থাকে প্রকৃত ধর্মের অস্তিত্ব|
8. মানুষ এবং নৈতিকতাকে অবশ্যই ধর্মের কেন্দ্রবিন্দু হতে হবে;তা না হলে ধর্ম হয়ে দাঁড়ায় এক নিষ্ঠুর কুসংস্কার।
9. নৈতিকতার জীবনাদর্শই যথেষ্ট নয়।যেহেতু ঈশ্বর নেই,তাই নৈতিকতাকে অবশ্যই জীবনবিধান হতে হবে।
10. জগতের পুনর্গঠন ও জগতের সুখের বিধানই ধর্মের কর্তব্য;এর উৎপওি ও বিনাশের কারণ বিশ্লষণ  নয়।
11. স্বার্থের সংঘাতই জগতের দুঃখের কারণ এবং তা নিরসনের একমাএ উপায় অষ্টাঙ্গ মার্গের অনুসরণ।
12. সম্পওির ব্যক্তি-মালিকানা এক শ্রেণীর হাতে ক্ষমতা এনে দেয় এবং অন্য শ্রেণীর জন্য নিয়ে আসে দুঃখ।
13. জগতের কল্যাণের জন্য দুঃখের কারণ উদঘাটন করে তার অবসান করা প্রয়োজন।
14. সব মানুষই সমান।
15. জন্ম নয়,যোগ্যতাই মানুষের মূল্যায়নের মানদন্ড।
16. উচ্চ বংশে জন্মগ্রহণ নয়,উচ্চ আদর্শই গুরুত্বপূর্ণ ।
17. সকলের প্রতি মৈএীভাব কখনই পরিত্যাগ করা চলবে না।এমন কি শত্রুর প্রতিও তা প্রদর্শন করা মানুষের কতর্ব্য ।
18. প্রতিটি মনুষের শিক্ষার প্রয়োজন।
19. চরিত্র বিযুক্ত শিক্ষা বিপজ্জনক।
20. কিছুই অভ্রান্ত নয়।কিছুই চিরকালের জন্য বাধ্যতামূলক নয়,সব কিছুই অনুসন্ধান ও পরীক্ষা-- সাপেক্ষ।
21. কিছুই চুড়ান্ত নয়।
22. সব কিছুই কার্য-কারণ বিধানসাপেক্ষ।
23. কিছুই চিরস্থায়ী বা সনাতন নয়।সব কিছুই পরিবর্তণশীল।
24. ন্যায় ও সত্যের জন্যে না হলে,  যুদ্ধ অন্যায়।
25. পরাজিতের প্রতি বিজয়ীর কতর্ব্য রয়েছে।

মানুষের দুঃখের কারণ মোচনের জন্য বুদ্ধ পঞ্চশীল বা পঞ্চ আচরণের কথা বলেছিলেন।
১।প্রাণী হত্যা করা বা প্রাণী হত্যার কারণ হওয়া থেকে বিরত থাকা।
২।চৌর্যবৃত্তি অর্থাৎ প্রতারণা বা বলপূর্বক অন্যের সম্পত্তি অর্জন করা,  বা অধিকার করে রাখা থেকে,  বিরত থাকা।
৩।অসত্য ভাষণ থেকে বিরত থাকা।
৪।সম্ভোগ ইচ্ছা থেকে বিরত থাকা।
৫।মাদক পানীয় থেকে বিরত থাকা।

মানুষের প্রতি মানুষের অন্যায় দূর করতে বুদ্ধ অষ্টাঙ্গিক মার্গের কথা বলেন--
১।সম্যক-দর্শন অর্থাৎ কুসংস্কার থেকে মুক্তি।
২।সম্যক উদ্দেশ্য-- যা মহৎ,বুদ্ধিমান ও একাগ্রচিত্ত মানুষদের যোগ্য।
৩।সম্যক বাক্য অর্থাৎ সদয়,অকপট ও সত্য ভাষণ।
৪।সম্যক আচরণ অর্থাৎ শান্তিপূর্ণ,সততাযুক্ত ও পবিত্র কর্ম।
৫।সম্যক জীবিকা,  অর্থাৎ জীবন্ত প্রাণীর ক্ষতিসাধন না করে।
৬।সম্যক নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা।
৭।সম্যক চেতনা অর্থাৎ সজাগ ও উদ্যোগী মন।
৮।সম্যক ধ্যান অর্থাৎ জীবনের গভীর রহস্য সম্পর্কে আন্তরিক চিন্তা।

এগুলিই বুদ্ধের মতবাদের মূলকথা।
কত প্রাচীন অথচ কত আধুনিক কত নতুন।
কত যুক্তিনির্ভর এবং কত মানবিক।বৌদ্ধধর্মে ঈশ্বর,  ও ধর্মীয় গোঁড়ামির,  কোনো চিহ্ন নেই।
অহিংস,ভেদাভেদহীন এমন মানবধর্ম পৃথিবীতে বিরল।
বৌদ্ধধম্মের মতো এমন অহিংস,সহজ-সরল জীবন দর্শন,  পৃথিবীর কোনো ধর্মে নেই।
বৌদ্ধধম্ম ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনো ধর্ম মানবতাকে এত উচ্চ আসন দেয়নি।
যেকারণে পৃথিবীর বড় বড় সহিংস শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মকে বাদ দিয়ে ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর অহিংস,মানবিক,ঈশ্বরবিহীন,মানবকেন্দ্রীক,সাম্যবাদী,যুক্তিবাদী ও বাস্তবধর্ম বৌদ্ধধম্মকে গ্রহণ করেন।

সূস্থ্যভাবে বাঁচার জন্য মানুষের তিনটি জিনিস আবশ্যক-- জল,বায়ু আর খাদ্য।
বাঁচার জন্য ধর্ম মোটেই আবশ্যক নয়।
তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস শৈশবে শিশুর উপর ধর্ম চাপিয়ে না দিয়ে  ২১ বছর বয়সের পর,  তাদের ধর্ম বাছায়ের সুযোগ দিলে, বুদ্ধের মানবিক,অহিংস ও যুক্তিবাদী ধর্ম সর্বোচ্চ ভোট পাবেই।

Prasanta kumar Mondal
Prasanta2032.blogspot.com

শেয়ার করেছেন          প্রণব কুমার কুণ্ডু।

ব্রাহ্মণ্যবাদ এবং অবতার


ব্রাহ্মণ্যবাদ এবং অবতার

প্রশান্ত কুমার মণ্ডল-এর পোস্ট শেয়ার করেছেন              প্রণব কুমার কুণ্ডু।

Pranab Kumar Kundu


Prasanta Kumar Mondal    Binod Saradar  এবং অন্যান্য 79 জন এর সঙ্গে আছেন।

অবতারবাদের ব্রাহ্মণ্যবাদী ছেলেমানুষী--- কল্পকাহিনীঃ  P.K.Mondal.

ব্রাহ্মণদের বিনাপুঁজির ব্যবসার লোকঠকানো উপকরণগুলি হল--- আত্মা-প্রেতাত্মা-স্বর্গ-নরক-পাপ-পূন্য-আশীর্বাদ-অভিশাপ-জন্মান্তরবাদ-অবতারবাদ।

অনার্য বা শূদ্রবিরোধী আর্য ব্রাহ্মণদের অবতারবাদের কাহিনী ছড়িয়ে আছে বিভিন্ন পুরাণে।
ভারতের আদিবাসিন্দা অনার্য অসুর বা দানব ধ্বংস করতে বিষ্ণুর দশাবতারের কাহিনী ফাঁদা হয়েছে।

বেদ সহ অন্যান্য বাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃত সাহিত্য যাঁরা পড়েছেন তাঁরা অবশ্যই স্বীকার করবেন যে অসুর,দৈত্য,দানব,
রাক্ষস বলতে ভারতের মূলনিবাসী বা অনার্যদের বোঝানো হয়েছে।

বিষ্ণুর অবতাররা হল মৎস্য,কুর্ম,বরাহ,নৃসিংহ,বামন,পরশুরাম,রাম,কৃষ্ণ,বুদ্ধ আর Coming কল্কি অবতার।

ব্রাহ্মণ্যবাদীদের হাজার ছেলেমানুষির মধ্যে,  পৃথিবী বিখ্যাত ছেলেমানুষি হল,  নিরীশ্বরবাদী বুদ্ধদেবকে বিষ্ণুর নবম অবতার বলে নির্লজ্জ প্রচার।

যে গৌতমবুদ্ধ অমানবিক জাতিভেদ সর্বস্ব জঘন্য ব্রাহ্মণ্যতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, পৃথিবী বিখ্যাত অহিংসবাদী এবং নিরীশ্বরবাদী হলেন,  সেই বুদ্ধদেবকে এরা বিষ্ণুর নবম অবতার বানিয়ে দিলেন।

অবতারবাদের কল্পকাহিনীঃ—
১।বিষ্ণুর মৎস্য অবতারঃ-বিষ্ণুকে দিয়ে মহাপ্রলয় বা জলপ্লাবন আটকানোর চেষ্টা না করে,  ব্রাহ্মণ্যবাদী লেখককূল বিষ্ণুকে মৎস্য বানিয়ে দিলেন।মৎস্য হয়ে পৃথিবীর জীবকূলকে বাঁচানোর গল্প খুবই শিশুসুলভ।মনে হয় ব্রাহ্মণ্যবাদী লেখক,  স্বপ্নে জলে ডুবে গিয়েছিলেন,  তাই মৎস্য হয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছিলেন।
২।বিষ্ণুর কূর্ম অবতারঃ- এখানেও সেই একই পরিকল্পনা।আমি যদি স্বপ্নে দেখি যে পৃথিবী জলে ডুবে যাচ্ছে,  তখন আমাকে হয় মৎস্য না হয় কূর্ম বা কচ্ছপ হতে চাওয়া, স্বাভাবিক।এই অবতারে নাকি সমূদ্রগর্ভে ডুবে যাওয়া দেবলোকের সব জিনিসপত্র উদ্ধার হয় সমুদ্র মন্থনের দ্বারা।
৩।বিষ্ণুর বরাহ অবতারঃ- হিরণাক্ষ্য দানব নাকি পৃথিবীকে পাতালে, অর্থাৎ,  সমুদ্রের নীচে নিয়ে চলে যায়।তার জন্য বরাহ অবতার।এক্ষেত্রে বোধ হয় ব্রাহ্মণ লেখকের আর সাঁতার কাটতে ভালো লাগেনি।তাই বরাহ অবতার।মাটির নিচে তো আর বাঘ বা সিংহকে পাঠানো যায় না।তাই মাটি খোঁড়ার জন্য বিষ্ণুকে নোংরা শূকর বা বরাহ করতেই হল।অবাক জ্ঞান ব্রাহ্মণ লেখকের।পৃথিবীর মধ্যে সমূদ্র আবার সমূদ্রের মধ্যে পৃথিবী।গল্পে গরু গাছে ওঠে।তাই নয় কি?

৪।বিষ্ণুর নৃসিংহ অবতারঃ- ব্রাহ্মণ্যবাদী লেখকের কল্পকাহিনীর চুড়ান্ত রুপ হল অর্ধেক মানুষ ও অর্ধেক সিংহ মূর্তির নৃসিংহ অবতার।পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্মে অবশ্য এমন উদ্ভট চিন্তা প্রাচীন মানুষ করতো।হিরণ্যকশিপুর অত্যাচার থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে নাকি নৃসিংহ অবতার।এই ব্রাহ্মণ লেখকেরা আবার পৃথিবী বলতে ভারত ছাড়া কিছুই বুঝতো না।

৫।বিষ্ণুর বামন অবতারঃ- দৈত্যরাজ বলি নাকি স্বর্গ,মর্ত্য,পাতাল এই তিনটি পৃথিবী দখল করে নেন।তার মানে অজ্ঞ লেখকের মতে পৃথিবী একটি নয়-পৃথিবী তিনটি।বাকী দুটো পৃথিবী কোথায়?নিশ্চয় ব্রাহ্মণ বলতে পারবে।দেবরাজ্য উদ্ধারের জন্য নাকি বামন অবতার।বামন অবতারে বিষ্ণু নাকি স্বর্গে এক পা্‌, মর্তে বা পৃথিবীতে এক পা,  এবং এক পা বলির মাথায় রেখে,  তাকে পাতালে ঢুকিয়ে দেয়।হাস্যকর অবাস্তব কল্পকাহিনী।

৬।বিষ্ণুর পরশুরাম অবতারঃ-ব্রাহ্মণ্যবাদের সবকিছু ব্রাহ্মণের স্বার্থে।পরশুরাম অবতারটি সম্পূর্ণ ব্রাহ্মণের জন্য।পিতা জমদগ্নির গরুচুরি করার অপরাধে পরশুরাম কার্তবীর্যার্জুনকে হত্যা করে।কার্তবীর্যার্জুনের ছেলেরা পরে জমদগ্নিকে হত্যা করে।পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে পরশুরাম ২১ বার নাকি পৃথবী নিঃক্ষত্রিয় করে।পরে আবার ক্ষত্রিয় এল কোথা থেকে কে জানে?

৭।বিষ্ণুর রাম অবতারঃ- এই অবতার কার প্রয়োজনে?এই অবতারে রামের মহান কীর্তি কী?শূদ্র নিধন?শম্বুক হত্যা।নারী নির্যাতন।

৮।বিষ্ণুর কৃষ্ণ অবতারঃ কংস বধের জন্য নাকি কৃষ্ণ অবতার।একজন কংসের জন্য একটা গোটা অবতার নামাতে হল?

৯।বিষ্ণুর বুদ্ধ অবতারঃ- জঘন্য মানবতাবিরোধি জাতপাত-ভেদাভেদ সম্পন্ন যে ব্রাহ্মণ্যধর্মের মুখে লাথি মেরে গৌতমবুদ্ধ জগৎবিখ্যাত অহিংস নিরীশ্বরবাদী হলেন,সেই বুদ্ধদেবকে ব্রাহ্মণরা বিষ্ণুর অবতার বানিয়ে দিলেন,  কেবল ব্রাহ্মণ্যতন্ত্রকে মজবুত করার জন্য।ব্রাহ্মণ্যবাদীদের চরম বোকামির পরিচয় নয় কি?

১০।বিষ্ণুর কল্কি অবতারঃ- ব্রাহ্মণরা যখন ভাবলো যে আর কোন শাস্ত্রগ্রন্থ গোপন রাখা যাচ্ছে না,  তখন তারা শেষ অবতার কল্কির ভবিষ্যৎবাণী করেন।তাদের মতে কল্কি সম্ভলগ্রামে বিষ্ণুযশা নামক ব্রাহ্মণের স্ত্রী সুমতীর গর্ভে জন্মাবে আর ব্রাহ্মণ্যধর্ম তথা জাতিভেদ বা বর্ণব্যবস্থার বিরোধিদের ধরে ধরে কোতল করবে।ব্রাহ্মণ লেখকের মনোবাঞ্ছা যেমন,  তার অবতার সন্তানের কাজ তো তেমনই হবে।তাই নয় কী?

ব্রাহ্মণ্যবাদী সমস্ত ধর্মশাস্ত্র ব্রাহ্মণের মঙ্গলের জন্য বানানো।জাতপাত বা জঘন্য বর্ণপ্রথা বিলোপ হলে দেশের মঙ্গল।কিন্তু জাতপাত বা বর্ণপ্রথা না থাকলে তো ব্রাহ্মণই থাকবে না।অর্থাৎ ব্রাহ্মণ সমাজের মঙ্গল একমাত্র জাতিভেদের উপর নির্ভরশীল।ব্রাহ্মণ লেখকরা তাই জঘন্য জাতিভেদ বা বর্ণ প্রথাকে ধর্ম বানিয়ে,  তাকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেছে।এদের অবতারবাদের কল্পকাহিনীও অজ্ঞ এবং ধর্মভীরু মানুষকে অবতারের ভয় দেখিয়ে.  কেবল ব্রাহ্মণ তথা জাতিভেদকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা।মানবতার স্বার্থে তথা দেশ ও দশের স্বার্থে মানবতাবিরোধি জঘন্য ব্রাহ্মণ্যবাদকে আমাদের সজোরে পদাঘাত করতেই হবে।

Prasanta2032.blogspot.com


শেয়ার করেছেন           প্রণব কুমার কুণ্ডু।

আম্বেদকর



আম্বেদকর ও একদল গোঁড়া হিন্দু পণ্ডিত


শেয়ার করেছেন     প্রণব কুমার কুণ্ডু।


Prasanta Kumar Mondal        Nani Gopal Barui এবং অন্যান্য 33 জন এর সঙ্গে আছেন।
27 ডিসেম্বর 2016 ·

জঘন্য জাত-ব্যবস্থাকে বাঁচাতে ডঃ আম্বেদকর সকাশে একদল গোঁড়া হিন্দু পণ্ডিত।
পণ্ডিতঃ তুমি ডঃ আম্বেদকর ?
আম্বেদকরঃ হ্যাঁ,বলুন।
পণ্ডিতঃ তুমি কিসের ডাক্তার?
আম্বেদকরঃ আজ্ঞে,আমি ডাক্তার নই।
পণ্ডিতঃ যাই হোক তুমি ডাক্তারি ছেড়ে ধর্মের পিছনে পড়লে কেন?
আম্বেদকরঃ আমি কোথায় ধর্মের পিছনে পড়লাম?
পণ্ডিতঃ তুমি হিন্দুধর্ম থেকে জাত-ব্যবস্থা বা বর্ণপ্রথাকে উচ্ছেদ করতে চাও?
আম্বেদকরঃ হ্যাঁ।
পণ্ডিতঃ কেন?
আম্বেদকরঃ কারণ জঘন্য জাত-ব্যবস্থা বা বর্ণপ্রথা হিন্দধর্ম তথা মানবতার শত্রু,দেশেরও শত্রু।জাত-ব্যবস্থাই পরিকল্পিত ভাবে মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করেছে।মানুষকে পশু প্রতিপন্ন করেছে।তাই।
পণ্ডিতঃ তুমি জান কী?জাত-ব্যবস্থা হিন্দুধর্মের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ?
আম্বেদকরঃ অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হলেও সমস্ত শরীর(দেশ)এর মঙ্গলের জন্য ঐ বিষাক্ত অঙ্গকে কেটে ফেলতেই হবে।
পণ্ডিতঃ হিন্দুধর্ম সম্বন্ধে তোমার কোন জ্ঞান আছে কী?
আম্বেদকরঃ পূর্ণমাত্রায় আছে।যে ধর্মের জঘন্য জাত-ব্যবস্থা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে হীন,নীচ প্রতিপন্ন করে তাদের জীবনকে পশুতল্য করেছে এবং সমাজে অসাম্য,অবিচার,শোষণ,বঞ্চনা সৃষ্টি করে দেশকে দুর্বল করছে,সে ধর্মকে তো জানতেই হবে।
পণ্ডিতঃ তুমি জান কী? চতুবর্র্ণ ব্যবস্থা বা জাত-ব্যবস্থা ভগবানের সৃষ্টি?ভগবানের মুখ থেকে আমরা মানে ব্রাহ্মণ,বাহু থেকে ক্ষত্রিয়,উরু থেকে বৈশ্য এবং পদতল থেকে শূদ্রের জন্ম।
আম্বেদকরঃ ধর্মশাস্ত্রে তাই লেখা আছে।এসব লিখেছে ব্রাহ্মণ,চালিয়েছে ভগবানের নামে।
পণ্ডিতঃ পূর্বজন্মের কর্মফল অনুসারে ভগবান চার জাত বা বর্ণের মানুষ সৃষ্টি করেছেন।শূদ্রের ঘৃণিত জন্ম ও কর্ম পূর্বজন্মের কর্মের ফল।এবিষয়ে মানুষের কিছু করার নেই।
আম্বেদকরঃ শুধু মানুষ কেন?প্রতিটি প্রাণের সৃষ্টি জৈবিক পদ্ধতিতে।জাত-ব্যবস্থা বা বর্ণপ্রথা জঘন্য--ব্রাহ্মণ্যবাদের বিষাক্ত ফসল।এ বিষয়ে ভগবানের কোন হাত বা পা নেই।
পণ্ডিতঃ তাহলে তুমি ভগবান ও তার বিধানকে মান না?
আম্বেদকরঃ ভগবান বলে কেউ যদি মানুষ সৃষ্টি করতেন,  তাহলে তিনি নিশ্চয় মানুষে মানুষে বিভেদ,বৈষম্য তৈরী করে,  তার সৃষ্ট মানুষের জীবনকে পশুতুল্য করতেন না।এসব ধান্দাবাজ ব্রাহ্মণ্যবাদীদের কাজ।
পণ্ডিতঃ তুমি কী বলতে চাও ভগবান মানুষের মঙ্গলের জন্য জাত-ব্যবস্থা বা বর্ণপ্রথা সৃষ্টি করেন নি?
আম্বেদকরঃ না,করেন নি।ব্রাহ্মণরা জঘন্য জাত-ব্যবস্থা সৃষ্টি করেছেন,  কেবল নিজেদের মঙ্গলের জন্য।
পণ্ডিতঃ আমার সহ পণ্ডিতরা বলছে,তুমি নাকি মস্ত জ্ঞানী ব্যক্তি।কিন্তু আমার তো মনে হচ্ছে তুমি মহামূর্খ।
আম্বেদকরঃ ব্রাহ্মণ্যবাদীরা তাই বলে।
পণ্ডিতঃ তাহলে তুমি ভগবানের চতুর্বর্ণ প্রথা বা জাত-ব্যবস্থা উচ্ছেদের সংকল্প থেকে বিরত হবে না?
আম্বেদকরঃ না।মানুষের মঙ্গলের জন্য এ কাজ আমাকে করতেই হবে।
পণ্ডিতঃ কিছু মনে করো না।তোমার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে আমার সন্দেহ হচ্ছে।
আম্বেদকরঃ কারণ?
পণ্ডিতঃ কারণ আজ পর্যন্ত কোন শিক্ষিত মানুষ এমন দুঃসাহস দেখায় নি।
পণ্ডিতঃ আমরা তোমার শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করতে চাই।
আম্বেদকরঃ করুন যাচাই।
পণ্ডিতঃ সহপণ্ডিতগণ,তোমরা আম্বেদকরের শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করো।
সহপণ্ডিতঃ শুনুন পণ্ডিতগণ আম্বেদকরের শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ-B.A., M.A., M.Sc., D.SC., P.h.D., L.L.D., D.Litt., Bar-at-Law.
পণ্ডিতঃ ওহঃ ! তুমি সামান্য এই ABCD পড়ে নিজেকে মহাজ্ঞানী পণ্ডিত মনে করো?
আম্বেদকরঃ শুধুই মৃদু হাসলেন। @Prasanta Kuamar Mondal (PKM)