শনিবার, ১৬ জুন, ২০১৮

কবি চৈতালি চৌধুরীর কবিতা




কবি চৈতালি চৌধুরীর কবিতা

হারিয়ে ফেলার আগে


ভালোবাসা যেন বালির মতো..
মুঠোয় ধরতে গেলেই আঙুলের ফাঁক গলে পড়ে যাবে।
পাত্রে রাখো   তলায় জমে থাকবে,
কিন্তু প্রকৃতিতে ছড়িয়ে রাখো - -
উড়ে এসে তোমার গায়ে মাখবে!



ভালোবাসা যেন জলের মতো..
স্বচ্ছ নির্মল টলটলে আকারহীন,
তুমি যেমন করে রাখবে তেমনই থাকবে ।
শুধু কাদা ছেটালে কাদায় মাখবে ।


ভালোবাসা যেন ফুলের মতো
রঙিন কোমল উজ্জ্বল
তোমাকে স্বপ্নে বিভোর করে রাখবে।
কিন্তু তুমি যদি তাকে উৎস থেকে উপ্রে ফেলো...
নেতিয়ে গিয়ে শুকিয়ে যাবে।


ভালোবাসা ই তো জীবন!
জন্ম আছে গতি আছে,
উদ্দাম আছে উচ্ছ্বাস আছে প্রকাশ আছে।
জীবন শেষে যেমন কান্না আছে,
তেমনি ভালবাসা হারালে লুটিয়ে পড়ে কান্না!
হারিয়ে গেলে জীবন ও আর ফেরে না কখনো


ভালোবাসা ও তেমনি.....
শুধুই স্মৃতি আর চোখের জলের বন্যা!




ঈদ, চাঁদ ও মুসলমান




ঈদ, চাঁদ ও মুসলমান

ঈদ, চাঁদ ও মুসলমান
মুহম্মদ বলে গেছে, তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখো, আর চাঁদ দেখে ঈদ উদযাপন করো; মুহম্মদ এও বলে গেছে, সূর্যের ছায়া দেখে কখন দিনের বেলা নামাজ পড়তে হবে, সন্ধ্যায় গোধূলির কোন সাইন দেখে ইফতার করতে হবে, আর রাতে কখন পিশাচের মতো সেহরির খাবার খেতে হবে; তাই নামাজ এবং রোযার সেহরি ও ইফতারের সময়ের ক্ষেত্রে বর্তমানের মুসলমানরা এতটাই টাইট যে, এক সেকেন্ডও এদিক ওদিক হলে তারা মনে করে এই বুঝি বেহেশতের ৭২ হুর ফসকে গেলো।
মুসলমানদেরকে জিজ্ঞেস করছি, এই যে ঘড়ি দেখে এত নামাজ রোযা পালন করিস, এই ঘড়ি কি তোদের মুহম্মদের বাপ বানিয়ে দিয়ে গেছে ? আর যে মাইকে আযান দিয়ে দিনে রাতে ৫ বার শব্দ দূষণ করিস, সেই মাইক কোরানের থেকে সূরা আবিষ্কার ? তোরা তো বলিস, বিজ্ঞানীরা সব আবিষ্কারই নাকি করে কোরান রিসার্চ করে! তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, বিজ্ঞানীরা যখন কোরান রিসার্চ করেই সব কিছু আবিষ্কার করে বা করেছে, তখন ১৪০০ বছর ধরে কোরান পড়ে তোরা কি শুধু যৌনাঙ্গের লোম পরিষ্কার করেছিস ? পৃথিবীতে কোরান কারা বেশি পড়েছে ? এটাই সত্য যে কোরান রিসার্চ করলে সবাই জঙ্গী-সন্ত্রাসী ই হয়, সেটা মুসলমান হোক আর অমুসলিমই হোক। মুসলমানরা জঙ্গী-সন্ত্রাসী হয় বেহেশতের ৭২ হুরের জন্য, আর অমুসলিমরা এখনও হয় নি, তবে হবে মুসলমানদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য।
যা হোক, ছোটো বেলায় আমি নিজের কানে শুনেছি, হাটের মধ্যে এক মুসলমান বলছে, আমরা পঞ্জিকা মানি না, যেদিন চাঁদ দেখা যাবে তার পর দিন ঈদ; এই না মানার কারণ আর কিছুই নয়, পঞ্জিকা হিন্দুদের লেখা। তো হিন্দুদের সাহায্য নিয়ে মুসলমানরা ঈদ পালন করবে কেনো, প্রেস্টিজে বাঁধে না ? মূর্খদের আবার আত্মসম্মান ! এত আত্মসম্মান বোধ থাকলে একটা পঞ্জিকা লিখে দেখা না, তখন বুঝবি এই পঞ্জিকা লিখতে কী পরিমান জ্ঞানের প্রয়োজন হয় ?
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেব নিকেশ তথা অঙ্কের জ্ঞান হলো পঞ্জিকা। কোরান হাদিসের জ্ঞান নিয়ে কোনো মুসলমানের ক্ষমতা নেই এইরকম একটি পঞ্জিকা লিখার ! কারণ, মুসলমানদের কাছে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞান কোরান তো মুসলমানদের পারিবারিক সম্পত্তি বন্টনের হিসেবই ঠিক মতো করতে পারে নি! সেই জ্ঞান নিয়ে তারা আবার লিখবে পঞ্জিকা ! শুনে রাখ, পঞ্জিকার জ্ঞান দিয়ে শুধু এক বছরের কেনো আগামি ১০০ বছরেরও ঈদের দিন তারিখ নির্ভুলভাবে বলে দেওয়া সম্ভব।
যা হোক, ধর্ম পালনের সকল ক্ষেত্রে মুসলমানরা কাফের বিজ্ঞানীদের তৈরি করা জিনিস পত্র ব্যবহার করলেও চাদেঁর গতি বিধি জানার জন্য তারা পঞ্জিকা বা জ্যোতির্বিজ্ঞানের উপর নির্ভরকরবে না; কারণ, বিজ্ঞানও হিন্দু দ্বারা প্রভাবিত।
হিন্দু জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সাধারণত এক বছরের হিসেব পঞ্জিকায় দিয়ে দেয়- কবে, কখন সূর্য গ্রহণ হবে, কবে চন্দ্রগ্রহণ হবে, এর সাথে অমাবস্যা, পূর্নিমার হিসেব তো আছেই, শুধু তাই নয় বাকি গ্রহগুলোর আবর্তনও তারা নিখুঁতভাবে পঞ্জিকায় বর্ণনা করে। এই এক বছরের হিসাব গণকেরা লিখে আবার প্রায় পঞ্জিকা প্রকাশের ৬ মাস আগে। এই হিসেবের গরমিল এ পর্যন্ত কেউ দেখাতে পারে নি।
কিন্তু তারপরও মুসলমানরা পঞ্জিকার উপর বিশ্বাস রাখতে পারে না; কারণ, তাদের বিশ্বাস তো মুহম্মদের উপর, যে মুহম্মদ বলে গেছে সূর্য অস্ত যায় এক পঙ্কিল জলাশয়ে (কোরান, ১৮/৮৬), পৃথিবী গোলাকার নয় সমতল কোরান- ৫১/৪৮,৭১/১৯) সেই মুহম্মদে বিশ্বাসী মুসলমানরা কাফেরদের জ্ঞানের উপর বিশ্বাস রাখবে কিভাবে ? কাফেরদের জ্ঞান আগে না বেহেশত আগে ? কাফেরদের সাথে তো মুসলমানদের বন্ধুত্ব করাই নিষেধ (কোরান- ৫/৫১, ৪/১৪৪)। যদিও জীবন যাপনের সকল ক্ষেত্রে তারা কাফেরদের জ্ঞানকেই ব্যবহার করে। কেননা, সভ্যতার আলোয়, মুসলমানরা তো একটা মোমবাতিও জ্বালাতে পারে নি।
যা হোক, গত বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে রোযার ঈদের আগ বাংলাদেশের এ্যাস্ট্রোনোমি সোসাইটির এক মুসলমান তামাম বাঙ্গালি মুসলমানের গালে কষে এক থাপ্পড় মেরে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছিলোযে, তারা জ্যোতির্বিজ্ঞানের জ্ঞান দিয়ে অংক কষে আগামী ২৫ বছরের সকল ঈদের দিন তারিখ বের করেছে, এর আগেও কয়েক বছর তারা এই হিসেব করে দেখেছে, কোনো ভুল হয় নি, সুতরাং আগামীতেও কোনো ভুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই, সুতরাং ঈদের দিন নির্ধারনে চাঁদ দেখার উপর নির্ভর না করে বিজ্ঞানের উপর নির্ভর করা যেতে পারে। এ নিয়ে বিবিসি একটি রিপোর্ট করেছিলো।
এই মুসলমান, যে জ্ঞান দিয়ে এই হিসেব নিকেশ করে আগামি ২৫ বছরের ঈদের দিন তারিখ প্রকাশ করেছে, তাকে সে জ্যোতির্বজ্ঞানের জ্ঞান বললেও, সেটা আর কিছুই নয়, সেটা বেদ এর জ্যোতিষ পদ্ধতির জ্ঞান; কারণ, এই জ্ঞান যখন বেদ এ লেখা হয়, সেই ৮/১০ হাজার বছর আগে, তখন কোনো কোনো বিজ্ঞানীর জন্মই হয় নি। তাই জ্যোতির্বিজ্ঞান বলতে যা কিছু বোঝায়, তা হিন্দু জ্যোতিষ পদ্ধতির জ্ঞান এবং তার সম্প্রসারিত রূপ।
জয় হিন্দ।
উপরে যে রেফারেন্সগুলো দিলাম সেগুলো দেখে নিন নিচে-
সমতল পৃথিবী :
কোরান, ৫১/৪৮ = ভূপৃষ্ঠকে আমিই বিস্তিীর্ণ করে বিছিয়েছি। আর আমি উত্তম সমতল রচনাকারী।
কোরান, ৭১/১৯ = বস্তুত আল্লা ভূতলকে তোমাদের জন্য শয্যার ন্যায় সমতল করে বিছিয়ে দিয়েছেন।-
বন্ধুত্ব :
কোরান, ৫/৫১ = হে ঈমানদার লোকেরা, ইহুদি ও ঈসায়ীদের নিজেদের বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না। তারা নিজেরা পরস্পরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ যদি তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহন করে, তাহলে সে তাদের মধ্যেই গন্য হবে।
কোরান, = ৪/১৪৪হে ঈমানদারগণ, ঈমানদার লোকদের ত্যাগ করে কাফেরদেরকে নিজেদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা কি আল্লাহর হাতে নিজেদের বিরুদ্ধে দলিল তুলে দিতে চাও।
উপরে সম্পত্তি বন্টনের একটা হিসাবের কথা বলেছি, সেটা আগে পড়া না থাকলে দেখে নিন নিচে-
আল্লার অংকের জ্ঞান :
প্রসঙ্গ - মুসলমানদের মীরাস বন্টন বা সম্পত্তি ভাগ; আয়াত-৪/১১,১২
কোরানে, অন্তত কয়েক শত বার বলা আছে- আল্লা মহাজ্ঞানী, সর্বজ্ঞানী, মহাবিশ্বের কোনো কিছুই তার অজানা নয়- ইত্যাদি, ইত্যাদি। আল্লা যে মহজ্ঞানী বা সর্বজ্ঞানী, এ ব্যাপারে মনে হয়, কোনো মুসলমানের কোনো দ্বিমত নেই। তাই এ সম্পর্কিত কোনো রেফারেন্স উল্লেখ করলাম না। কিন্তু যে আয়াত নিয়ে আজকের আলোচনা, সেটার রেফারেন্স তো দিতেই হবে। দেখে নিন কোরানের ৪ নং সূরা নিসার ১১ ও ১২ নং আয়াত দুটো :
"তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন, পুরুষের অংশ দুজন মেয়ের সমান। যদি মৃতের ওয়ারিস দুয়ের বেশি হয়, তাহলে পরিত্যক্ত সম্পত্তির তিন ভাগের দু'ভাগ তাদের দাও। আর যদি একটি ওয়ারিস হয়, তাহলে পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধেক তার। যদি মৃত ব্যক্তির সন্তান থাকে, তাহলেতার পিতা মাতা প্রত্যেকে সম্পত্তির ছয়ভাগের এক ভাগ পাবে। আর যদি সন্তান না থাকে এবং পিতা-মাতা তার উত্তরাধিকার হয়, তাহলে মাকে তিন ভাগের এক ভাগ দিতে হবে। যদি মৃতের ভাই-বোনও থাকে, তাহলে মা ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে; মৃত ব্যক্তি যে অসিয়ত করে গেছে তা পূর্ণ করার এবং সে যে ঋণ রেখে গেছে তা আদায় করার পর। তোমরা জানো না, তোমাদের পিতা মাতা ও তোমাদের সন্তানদের মধ্যেউপকারের দিক দিয়ে কে তোমাদের বেশি নিকটবর্তী। এসব অংশ আল্লাহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আর আল্লাহ অবশ্যই সকল সত্য জানেন এবং সকল কল্যানময় ব্যবস্থা সম্পর্কে অবগত আছেন।" - ৪/১১
"তোমাদের স্ত্রীরা যদি নিঃসন্তান হয়, তাহলে (মরার পর) তারা যা কিছু ছেড়ে যায়, তার অর্ধেক তোমরা পাবে। অন্যথায় তাদের কোনো সন্তান থাকলে যে অসিয়ত তারা করে গেছেতা পূর্ণ করার এবং যে ঋণ রেখে গেছে তা আদায় করার পর পরিত্যক্ত সম্পত্তির চারভাগের এক ভাগ তোমাদের। আর তোমাদের সন্তান না থাকলে তারা তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির চার ভাগের একভাগ পাবে। অন্যথায় তোমাদের সন্তান থাকলে তোমাদের অসিয়ত পূর্ণ করারও তোমাদের রেখে যাওয়া ঋণ আদায় করার পর তারা সম্পত্তির আটভাগের একভাগ পাবে।
আর যদি পুরুষ বা স্ত্রীলোকের সন্তান না থাকে এবং বাপ-মাও জীবিত না থাকে কিন্তু একভাই বা এক বোন থাকে তাহলে প্রত্যেকেই ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে।তবে ভাই বোন একজনের বেশি হলে সমগ্র পরিত্যক্তসম্পত্তির তিন ভাগের একভাগে তারা সবাই শরীক হবে, যে অসিয়ত করা হয়েছে তা পূর্ণ করার এবং যে ঋণ মৃত ব্যক্তি রেখে গেছে তা আদায় করারপর যদি তা ক্ষতিকর না হয়। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ, আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্বদর্শী ও সহিষ্ণু। - ৪/১২
এবার ঢোকা যাক আয়াতেরপোস্টমর্টেমে। খেয়াল করুন ৪/১২ আয়াতের শেষ বাক্যটি, "এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ, আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্বদর্শী ও সহিষ্ণু।" কোরান যদি আল্লারই বাণীই হতো, তাহলে এই বাক্যটি হতো এরকম : "এটি আমার পক্ষ থেকে নির্দেশ, আর আমি আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্বদর্শী ও সহিষ্ণু।"
আবার ৪/১১ আয়াতের প্রথম বাক্যটি , "তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন" - এই বাক্যটি খেয়াল করুন। কোরান আল্লার বাণী হলে এই বাক্যটিও হতো, "তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে আমি তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছি।"
কোরানে এরকম ব্যাকরণগত ভুল আছে শত শত। এই ভুলগুলোইপ্রমাণ করে কোরান কোনো ভাবেই আল্লার নয়, মুহম্মদের বাণী।
আবার ৪/১১ আয়াতের শেষের দিকের একটি বাক্য হলো, "তোমরা জানো না, তোমাদের পিতা মাতা ও তোমাদের সন্তানদের মধ্যেউপকারের দিক দিয়ে কে তোমাদের বেশি নিকটবর্তী।"আপনারাই বিচার করুন, এই কথাটা কতটুকু সত্য ? একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ যৌবন বয়সে পৌঁছার সাথে সাথেই বুঝে যায়, পরিবারে কে তাকে পছন্দ করে, আর কে তাকে পছন্দ করে না, অর্থাৎ তার শত্রু-মিত্রের ব্যাপারটি। অথচ আল্লা বলছে, তুমি জানো না, পরিবারে কে তোমার নিকটবর্তী। আল্লা যেমন নির্বোধ, সেরকম সব মানুষকেও সে মনে হয় নির্বোধ মনে করে ।
যাক গে, "মৃত ব্যক্তি যে অসিয়ত করে গেছে তা পূর্ণ করার এবং সে যে ঋণ রেখে গেছে তা আদায় করার পর।" এই একই কথা বলা আছে, এই দুটি আয়াতের চার জায়গায়। এর কি কোনো প্রয়োজন আছে ? একই বইয়ে বা একই লেখায়, একই কথা একাধিকবার থাকাকে ভুল হিসেবে গন্য করা হয়। তাহলে মুসলমানরা কোন আক্কেলে বলে যে কোরান নির্ভুল গ্রন্থ ? অবশ্য ভুল ধরার জন্য তো সেরকম জ্ঞান-বুদ্ধিও থাকা দরকার। কোরান-হাদিস, এই দুই বইয়ের পাঠক, মুসলমানরা সেটা পাবে কোথায় ?
আর আরবিতে কোরান পড়লে কোথায়, কী আর কিভাবে লেখা আছে, সেটাই বা তারা বুঝবে কীভাবে ? এরপরও আছে, বেহেশতে গিয়ে হুর পাবার লোভ, কোরান বুঝলেও আল্লার ভুল ধরে বেহেশতের অপটিক ফাইবারের ৭২ হুর, কোন মুসলমান হারাতে চায় ?
৪/১২ এর নিচের দিক থেকে দ্বিতীয় বাক্যটির অংশ বিশেষ এই রকম, "যে ঋণ মৃত ব্যক্তি রেখে গেছে তা আদায় করার পর যদি তা ক্ষতিকর না হয়।" খেয়াল করুন, "যদি তা ক্ষতিকর না হয়" - এই অংশটি। এর মানে হলো, মৃত ব্যক্তির জীবিত ওয়ারিশ যদি মনে করে ঋণ পরিশোধ করলে তারা ক্ষতির মুখে পড়বে, তাহলে সেই ঋণ পরিশোধ না করলেও হবে। কিন্তু নৈতিক ব্যাপার হচ্ছে, যারা ঋণ রেখে আকস্মিকভাবে মারা গেছে, যেভাবেই হোক, ছেলে মেয়েদের উচিত, তাদের সেই ঋণ শোধ করে দেওয়া। কিন্তু আল্লা শেখাচ্ছে, ক্ষতিকর মনে হলে সেই ঋণ শোধ না করতে হবে না। পরিবার থেকে টাকা চলে যাওয়া ক্ষতি ই; নৈতিকতার খাতিরে অনেক সময় এই ক্ষতিকে স্বীকার করতেও হয়। অথচ আল্লা শেখাচ্ছে অনৈতিকতা; যাদের আল্লা এরকম অনৈতিক কথা শেখায়, তারা সৎ হবে কিভাবে?
এবার মূল প্রসঙ্গে আসি, যেটা নিয়ে লিখবো বলে এই লেখাটা শুরু করেছিলাম। উপরের দুটি আয়াতে সম্পত্তি বন্টনের যে নিয়ম বলা হয়েছে, তা এতই জটিল যে, তার মর্ম উদ্ধার করা এবং সেটা একবারে বুঝতে পারা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নাও হতে পারে, তাই তার একটা সহজ রূপ তুলে ধরছি:কোরানে হিসেব অনুযায়ী কোনো পুরুষ যদি এক স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং বাবা ও মা রেখে মারা যায় তাহলে, তার সম্পত্তির ৮ ভাগের ১ ভাগ পাবে স্ত্রী; মেয়েরা পাবে ৩ ভাগের ২ ভাগ এবং পিতা মাতা প্রত্যেকে পাবে ৬ ভাগের ১ ভাগ করে। এখন যারা ল.সা.গু ভালো পারেন, তারা একটু হিসেব করে দেখুন তো এই অংকটা কোনো দিন মিলবে কি না ? যে ভগ্নাংশগুলো উল্লেখ করলাম, সেগুলোর যোগফল হবে ২৭/২৪। অর্থাৎ সম্পত্তি দিতে হবে ২৭ অংশ, কিন্তু মোট সম্পত্তিই আছে ২৪ অংশ।
অংকের এই অমিল, কি এটা প্রমান করে যে, আল্লা সর্বজ্ঞানী বা মহাজ্ঞানী ? আর মুসলমানরা কিভাবে এত জোর গলায় বলে যে, কোরানে কোনো ভুল নেই ? অবশ্য ভুল ধরার তো যোগ্যতাও থাকা দরকার। কোন মুসলমানের সেটা আছে ?
এর বিপরীতে হিন্দুধর্মের প্রধান প্রচলিত গ্রন্থ গীতার কোনো একটি ভুল বের করার জন্য মুসলমানদেরকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, কোরান যদি আল্লার বাণী হয় এবং সেই আল্লা যদি সৃষ্টিকর্তা হয়, তাহলে পৃথিবীর কোনো নিয়ম কানুন, কোনো কিছুই তার অজানা থাকার কথা নয়। তাই তার কোনো কথাতেই একটিও ভুল থাকা সম্ভব নয়। এই সূত্রে কোরানের একটি ভুল মানেই, কোরান কোনো সৃষ্টিকর্তার লেখা নয়। তারপরও যদি বলা হয়, কোরান আল্লারই বাণী, তাহলে সেই আল্লাও অবশ্যই সর্বজ্ঞানী সৃষ্টিকর্তা নয়।
সম্পত্তি বণ্টনের এই আয়াত নিয়ে মুসলমানদের ঝামেলায় পড়তে হয় না এই কারণে যে, আলী যখন খলিফা, তখন কোরান অনুযায়ী সম্পত্তি বন্টন করতে গিয়ে, প্রথম, কোরানের এই ভুলটি ধরা পড়ে এবং আলী এই মৃতের সম্পত্তির বন্টন কিছু কম বেশি করে মোট সম্পত্তির যোগফল ২৪/২৪ অর্থাৎ ১ এ আনে। তারপর থেকেই সম্পত্তি বন্টন আলীর দেখানো পথেই চলছে এবং শরিয়তি আইনে কোরানের বিধান বাদ দিয়েআলীর এই বিধানই চালু রয়েছে ।
জয় হিন্দ।
From: Krishna kumar das
💜 জয় হোক সনাতনের 💜



শ্যামাপ্রসাদের মৃত্যু



শ্যামাপ্রসাদের মৃত্যু




Amartya Ghosh      গোষ্ঠীটিতে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন    💥ALL BENGAL RSS💥রাস্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ💥





একটি ষড়যন্ত্র রচিত ইতিহাস "কিভাবে পশ্চিমবঙ্গের রক্ষাকর্তা ড: শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী কে হত্যা করা হয়েছিল" --
" বাজপেয়ী তুমি ফিরে যাও,
গিয়ে সকলকে বলো - "আমি বিনা পারমিটেই জম্মু কাশ্মীরে প্রবেশ করেছি"।
১৯৫৩ এর ৯ ই মে শ্রদ্ধেয় ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী পাঞ্জাবের আম্বালার মাঠে এক বিরাট জনসভায় পন্ডিত জহরলাল নেহেরুর কাশ্মীর নীতির তুলোধোনা করলেন। কেন আলাদা সংবিধান ,কেন আলাদা নিশান , কেন আলাদা উজিরি আজম,কেন আলাদা সুপ্রীম কোর্ট তার ব্যাখা চাইলেন নেহেরুর কাছে।
ওই দিনই জলন্ধরের ১৫ কিমি দূরে ফাগোয়ারাতে আর একটি জনসভায় শেখ আবদুল্লার এটিটিউড নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। তিনি বললেন, "শেখ আবদুল্লা আমাকে কাশ্মীরে প্রবেশ করতে নিশেধ করেছেন কিন্তু আমি বিনা পারমিটেই কাশ্মীরে ঢুকব"। পরের দিন তিনি পাঞ্জাবেই রইলেন।
১১ ই মে ১৯৫৩ বিকাল ৪.০০ টায় ডঃ মুখার্জীর জিপ কাশ্মীর - পাঞ্জাব সীমান্তের দিকে রওনা হলো। সঙ্গে ডঃ মুখার্জীর প্রাইভেট সেক্রেটারী টেকচাঁদ ঠাকুর - জনসঙ্ঘ নেতা শ্রী গুরু দত্ত বৈদ এবং ডঃ মুখার্জীর বিশেষ প্রতিনিধি অতি বিশ্বস্ত যুবক শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী।
ঠিক বিকেল ৪.৪৫ মিনিটে মাধোপুর চেকপোস্ট পার হয়ে জম্মু সীমান্তের ভিতরে রাভী নদীর সেতু অর্ধেক পার হওয়ার পরেই সেতুর উপরে জম্মুর কাঠুয়া থানার পুলিশ অফিসার ডঃ মুখার্জীকে থামিয়ে দিলেন। ডঃ মুখার্জীর হাতে একটা নির্দেশ নামা ধরিয়ে দিলেন যাতে লেখা আছে - ডঃ মুখার্জীর জম্মু কাশ্মীরে প্রবেশের কোনো অনুমতি নেই।
তখন ডঃ মুখার্জী তার একান্ত বিশ্বস্ত অনুগামী যুবক অটল বিহারী বাজপেয়ীকে বললেন," বাজেপেয়ী তুমি ফিরে যাও -গিয়ে দেশবাসীকে বলো -আমি বিনা পারমিটেই জম্মু কাশ্মীরে প্রবেশ করেছি"।
এর পরে সেই রাতে তাদেরকে শ্রীনগরে নিয়ে যাওয়া হলো। শ্রীনগর শহর থেকে ৭ মাইল দূরে জঙ্গল ঘেরা সাপ প্যাঁচায় পরিপূর্ন অত্যন্ত স্যাঁতসেঁতে মনুষ্য বসবাসের অনুপযুক্ত কুঠুরিতে ডঃ মুখার্জী ও তার সহযোগী দের বন্দী করে রাখা হলো।
১১ ই মে সন্ধ্যায় ডঃ মুখার্জী আর তাঁর সহযোদ্ধাদের গ্রেপ্তার করে শ্রীনগর শহরের ৭ মাইল দূরে ডাল লেকের পাশে একটি প্রাইভেট কটেজে নিয়ে যাওয়া হলো। সাপ আর প্যাঁচায় পরিপূর্ন এক জঙ্গল ঘেরা জায়গা। চারিপাশে পাহাড় - জঙ্গল যেন এক অন্য গ্রহ। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে চলে যাওয়ায় ডঃ মুখার্জী অসুস্থ বোধ করতে লাগলেন।
মনুষ্য বসবাসের অনুপযুক্ত ঐ কটেজের মেঝেতে শুধুমাত্র একটা তাকিয়া পাতা ছিল। ঐ রাতে ভারতের অন্যতম চিরশ্রেষ্ঠ সন্তান বাংলার বাঘ স্যার আশুতোষ মুখার্জীর বীর পুত্র শ্রদ্ধেয়
ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী কাশ্মীরের ঠান্ডা সইতে না পেরে - বারে বারে একটা গরম পোষাক ভিক্ষে চাইলেন শেখ আব্দুল্লার কর্চারীদের কাছে - অসহায় বাগানের মালী ফ্যাল ফ্যাল করে উনার দিকে তাকিয়ে থাকল - কারন তাঁর কিছু করার ছিলনা উপরতলা থেকে সেই রকমি নির্দেশ দেওয়া ছিল।
পরে রাত গভীর হলে কাশ্মীর সরকারের উর্ধতন কর্মচারী বক্সি গুলাম মহম্মদ একটা ওভারকোট আর ব্ল্যাঙ্কেট পাঠালেন ডঃ মুখার্জীর জন্য।
টিম টিম করা আলোয় ডঃ মুখার্জী আর তাঁর সহযোগীরা ঐ জঙ্গলে হিমাঙ্কের নিচে চলে যাওয়া তাপমাত্রায় মেঝেতে পরে রইলেন। ঐ সময় জহরলাল নেহেরু তাঁর দিল্লীর বাসভবনে এসি চালিয়ে এবং শেখ আবদুল্লা তাঁর শ্রীনগরের বাসভবনে লেপের তলায় আরাম করতে লাগলেন।
এদিকে দিল্লীতে ঠিক তার পরেরদিন অর্থাৎ - ১২ ই মে ১৯৫৩ তারিখে হিন্দুমহাসভার প্রেসিডেন্ট নির্মল চন্দ্র চাট্যার্জী (এন সি চাট্যার্জী সিপিএম নেতা সোমনাথ চ্যাটার্জীর পিতা) হিন্দু মহাসভার সেক্রেটারী ভি জি দেশপান্ডে সংসদ সদস্য শ্রী নন্দলাল শর্মা - ডঃ প্রকাশ বীর শাস্ত্রী সংসদের দেওয়ান হলে ডঃ মুখার্জীর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে জহরলাল নেহেরু আর শেখ আব্দুল্লার বিরুদ্ধে রাগে ক্ষোভে ফেটে পরলেন।
১৫ই মে ১৯৫৩ - জহরলাল নেহেরুর নির্দেশে তাঁদের সকলকেই দিল্লীতে P.D.A অর্থাৎ প্রিভেনশন ডিটেনশন এক্ট এ গ্রেপ্তার করা হলো।
ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে পন্ডিত নেহেরু তিন দিন ধরে মৌজ মস্তিতে মেতে রইলেন কিন্তু একটি বারের জন্যও ডঃ মুখার্জীর খোঁজ নিলেন না।
১১ ই মে ১৯৫৩ এর সন্ধ্যা থেকে ডাল লেকের ধারে অত্যন্ত্য স্যাঁতসেতে ঠান্ডায় একটি কটেজের মেঝেতে পরে রইলেন ভারতের অন্যতম চির শ্রেষ্ঠ সন্তান ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী।
২৩ শে মে ১৯৫৩ শনিবার ভোরে জহরলাল নেহেরু তাঁর বোন বিজয়লক্ষ্মী পন্ডিতকে নিয়ে তিন দিনের সফরে কাশ্মীরে এলেন সঙ্গে নিয়ে এলেন তৎকালীন স্বরাস্ট্র ও রাজ্য বিষয়ক মন্ত্রী কে.এন.কাটজুকে।
শ্রীনগর এয়ারপোর্টে তাদেরকে হাসি হাসি মুখে রিসিভ করলেন শেখ আবদুল্লা,করন সিংহ,কাশ্মীরের মন্ত্রী পারিষদেরা,ইন্ডিয়ান আর্মীর টপ অফিসিয়ালরা। সেদিন সন্ধ্যায় ডাল লেকের ধারে পন্ডিত নেহেরু হাসি হাসি মুখে এক বিরাট জনতার সামনে আলো জ্বালিয়ে এক পার্কের উদ্বোধন করলেন।
২৪ শে মে ১৯৫৩ অর্থাৎ পরের দিন রবিবার সকালে পন্ডিত নেহেরু, হোম মিনিস্টার কে.এন.কাটজু, কাশ্মীরের প্রধান শেখ আবদুল্লা , ন্যাশানাল কনফারেন্সের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এক গোপন মিটিঙে মিলিত হলেন। বস্তুত ঐ মিটিং এই শ্রদ্ধেয় ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীকে কি ভাবে স্লো পয়জন করে ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হবে সেটা ঠিক করা হলো।
পন্ডিত নেহেরু সকল রকম ব্লু প্রিন্ট তৈরী করে দিয়ে ২৪ শে মে সারা দিন ডাল লেকের সৌন্দর্য উপভোগ করে নিজের বোন বিজয়লক্ষ্মী পন্ডিত কে নিয়ে পরের দিন ২৫ শে মে ১৯৫৩ দিল্লী ফিরে এলেন।
২৬ শে মে ১৯৫৩ তারিখের Hindustan Standard পত্রিকায় লেখা হলো,
" ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী আর তাঁর সহযোগী বন্দীদের কোর্টে এপিয়ার করার অনুমতি দেওয়া হলো না তাঁদের কে বিনা পরমিটে কাশ্মীরে প্রবেশের দায়ে দুই মাস কারাবন্দী করে রাখা হলো"।
শ্রদ্ধেয় ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর গ্রেপ্তারীর পরেও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বিধান চন্দ্র রায়ের মধ্যে কোনো হেল দোল বা প্রতিবাদ দেখা গেলো না।
নেহেরুর পরিকল্পনা অনুযায়ী কাশ্মীরে অসহনীয় পরিস্থিতিতে পরে রইলেন ভারত মাতার অন্যতম বীর সন্তান শ্রদ্ধেয় ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী।
সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়ার এডভোকেট ইউ.এম.ত্রিবেদী ১৩ ই জুন ১৯৫৩ তে দেখা করলেন ডঃ মুখার্জীর সাথে লিগ্যাল এডভাইস দেওয়ার জন্য। কিন্তু ঠিক তার পরের দিনই ১৪ জুন ১৯৫৩ তে এডভোকেট ত্রিবেদী দিল্লী এসে প্রেস কনফারেন্স করে জানালেন -
"আমি কোনো রকম লিগ্যাল এডভাইস দিতে না পেরে বাধ্য হয়ে দিল্লী চলে এসেছি কারন -
ভারত সরকার আর কাশ্মীর সরকারের সুস্পষ্ট নির্দেশ ছিল কাশ্মীরের ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ আমাদের আলোচনার সময় সব সময় উপস্থিত থাকবেন এটাই নাকি উনাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দিল্লীতে প্রেস কনফারেন্স করে ঐ বর্ষীয়ান উকিল আরও বললেন,
" I could not agree to it because under the law talk between the lawyer and his client is confidential".
ডঃ মুখার্জীর সহযোগী মাধক বলরাজের লিখিত বই I Bid - পৃষ্ঠা নং ২৭৮ এ পরিষ্কার উল্লেখ আছে এই সব কথা।
মিঃ ত্রিবেদী যখন কাশ্মীর থেকে ফিরে আসছিলেন দিল্লীর দিকে তখন হোটেলের এক সিনিয়ার কাশ্মীরী নাগরিক উনাকে বললেন -
" আপনি এখনই দিল্লি যাবেন না ডঃ মুখার্জীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান নতুবা উনাকে মেরে ফেলা হবে এখানে"।
সেই একই প্রবীন কাশ্মীরী ব্যক্তি ২৩ শে জুন শ্রদ্ধেয় ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর মৃত্যুর পরে,
২৪ শে জুন সকাল বেলা এডভোকেট ইউ.এম.ত্রিবেদীকে মনে করিয়ে দিলেন সেই দশ দিন আগে বলা কথাটা।
"যদিও আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক মত পার্থক্য ছিল" -
হ্যাঁ নেহেরু জী আপনাদের মধ্যে রাজনৈতিক মত পার্থক্য ছিল,
কিন্তু তাই বলে এই ভাবে প্রতিশোধ নিলেন ???
মে মাসে সকল রকম ব্লুপ্রিন্ট তৈরী করে পন্ডিত নেহেরু ১৯৫৩ সালের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে ইউরোপের লন্ডন,
জেনিভার দিকে দীর্ঘ ভ্রমনে বের হলেন - তাঁর নির্দেশ মতন ছক অনুসারে সমস্ত কিছু চলতে লাগল।
এক দম ছক কষে ২৩ শে জুন ১৯৫৩ এর দিন ডঃ মুখার্জীর ক্যালকুলেটেড মার্ডারের ঠিক এক সপ্তাহ পরে অর্থাৎ ৩০ শে জুন পন্ডিত নেহেরুর বিদেশ সফর শেষ করে ভারতে ফিরে আসার দিন ঠিক করা হলো।
ঠিক সেই দিনই জহরলাল নেহেরু দিল্লী ফিরে এসে তাঁর প্রধানমন্ত্রীর প্যাডে শ্রদ্ধেয় ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর মাতা যোগমায়া দেবীকে ( যার নামে কলকাতায় একটি কলেজ আছে )
চিঠি লিখলেন -
Letter No. - 499 - P.M
New Delhi,
June 30,1953
My Dear Mrs. Mukharjee,
It was with deep grief that I learnt a few days ago, as I was leaving Geneva for Cairo, that your son Dr, Shyamaprasad Mukharjee had died.
The news came as shock to me for - though we may have differed in politics.
......... When I went to Kashmir about five weeks ago, I inquired as to where he was kept and about his health.
I suppose It was beyond human power to do anything and we have to bow to circumstances beyond control.
If I can be of any service to you - you will please not hesitate to inform me.
Yours faithfully
S/D Jawharlal Neheru !!!
আর এই এখানেই খটকা -
" Though we may have differed in politics " !!!
আচ্ছা কারোও সঙ্গে যদি রাজনৈতিক মত পার্থক্য থেকেও থাকে তাহলে কি তাকে এইভাবে ক্যালকুলেটেড মার্ডার করিয়ে দিতে হবে ???
" I suppose it was beyond human power to do anything " - " আমি মনে করি এটা ছিল মনুষ্য শক্তির উর্ধে তাতে কিছু করার ছিল না ।
ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর বারন করা সত্বেও শ্রীনগর সাব জেলের ডাক্তার ২০ শে জুন ১৯৫৩,দুপুর ২.৩০ মিনিটে জোর করে স্ট্রেপটোমাইসিন ইঞ্জেকশন দিলেন।
জহরলাল নেহেরু মে মাসের শেষ সপ্তাহে সকল রকম ব্লুপ্রিন্ট তৈরী করে দিয়ে দীর্ঘ পাঁচ সপ্তাহের জন্য ইউরোপ ভ্রমনে বের হলেন।
এর পরে জহরলাল নেহেরু আর শেখ আবদুল্লার নির্দেশ মতন ডঃ মুখার্জী এবং তার সহকারী বন্দীদের অর্থাৎ ডঃ মুখার্জীর প্রাইভেট সেক্রেটারী টেকচাঁদ ঠাকুর জনসঙ্ঘের লিডার গুরু দত্ত বৈদ কে শ্রীনগর সাব জেলে স্থানান্তরিত করা হলো।
বিনা শীত বস্ত্রে বিনা চিকিৎসায় ডঃ মুখার্জী আরও অসুস্থ হয়ে পরলেন। ১৯ শে জুন এবং ২০ শে জুন ১৯৫৩ এর মাঝের রাতটা ভয়ংকর গেল।
ডঃ মুখার্জীর পিঠে অসহ্য ব্যথা হতে লাগল প্রচন্ড জ্বর এলো। ২০ শে জুন সকাল ১১.৩০ মিনিটে জেলের ডাক্তার আলী মহম্মদ ডঃ মুখার্জীকে দেখে বললেন - ডঃ মুখার্জীর ড্রাই প্লুরিসি হয়েছে তাই উনাকে স্ট্রেপটোমাইসিন ইঞ্জেকশন দিতে হবে এবং কিছু পাউডার জাতীয় ঔষধ খাওয়াতে হবে।
ডঃ মুখার্জী বললেন - "আমাদের পারিবারিক ডাক্তার মিঃ বোস বলে দিয়েছেন স্টেপটোমাইসিন আমার শরীরে কিছুতেই দেওয়া যাবে না।"
এই কথা শোনার পরেও ২০ শে জুন ১৯৫৩ দুপুর ২.৩০ মিনিটে এক গ্রাম স্ট্রেপটোমাইসিন ইঞ্জেকশন
ডঃ মুখার্জীর হাতে পুশ করা হলো এবং ২১ শে জুন ১৯৫৩ সকাল ১০ টায় আরও এক গ্রাম ঐ একই ইঞ্জেকশন ডঃ মুখার্জীকে পুশ করা হলো।
২১ শে জুন ১৯৫৩ বিকেল ৪.০০ থেকে ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর বুকে পিঠেব্যথা অসহ্য ভাবে বেড়ে গেল, জ্বর ১০৫ ডিগ্রী ছাড়িয়ে গেল।
বিনা চিকিৎসায় মাত্র দুই জন সহযোগী বন্দীর সঙ্গে সেই রাতে পরে রইলেন ভারতমাতার বীর সন্তান পশ্চিম বাংলা সৃষ্টির জনক শ্রদ্ধেয় ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী।
২২ শে জুন ১৯৫৩,
ঠিক দুপুর ১২ টায় ভয়ংকর অসুস্থ শ্রদ্ধেয় ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীকে হাঁটিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে পুলিশ ভ্যানে তোলা হলো -
শুধু জামা পরিয়ে কাশ্মীরের ঐ প্রচন্ড ঠান্ডায় কোনো শীত বস্ত্র ছাড়াই।
২২ শে জুন ডঃ মুখার্জীর প্রচন্ড বুকে ব্যাথা ও শ্বাস কস্ট হতে লাগল ভোর ৪.০০ টেতে ঘুম ভেঙ্গে গেল।
ভোর ৪.৪৫ মিনিট পর্যন্ত তিনি পরে রইলেন ঐ ভাবে প্রায় অজ্ঞান ভাবে। শ্বাস প্রশ্বাসের গতিবেগ ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যেতে লাগলো।
উপায় না দেখে তাঁর সহযোগী বন্দী গুরু দত্ত বৈদ এবং টেকচাঁদ ঠাকুর একটু গরম জল করে তাতে একটু দারুচিনি আর লবঙ্গ মিশিয়ে ডঃ মুখার্জীকে পান করালেন। ভোর ৫.০০ টায় তিনি সামান্য সুস্থ বোধ করতে লাগলেন।
২২ শে জুন ১৯৫৩, সকাল ৭.৩০ মিনিটে শেখ আব্দুল্লার ঠিক করা ডাক্তার আলী মহম্মদ তাঁকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ডঃ মুখার্জী বাম হাতে ২ সি.সি কোরামিন ইঞ্জেকশন দিলেন।
এর পরেই ডঃ মুখার্জীকে বলা হলো - " উপর মহলের নির্দেশ আছে আপনাকে হসপিটালে ভর্তি করাতে হবে তাই এখান থেকে রিমুভ করা হচ্ছে "।
এর পরে ২২ শে জুন ১৯৫৩, ঠিক দুপুর ১২ টায় ভয়ংকর অসুস্থ বাংলার বাঘ ডঃ আশুতোষ মুখার্জীর বীর পুত্র শ্রদ্ধেয় ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী অসহায়ের মতন শুধু মাত্র একটা জামা পরে কোনো রকম শীত বস্ত্র না পরে ফ্যাল ফ্যাল করে শূন্য দৃষ্টিতে তাকাতে তাকাতে শেখ আব্দুল্লার পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে পায়ে হেঁটে হেঁটে গাড়ি নং - কে - ১৫৯ এ গিয়ে উঠলেন সাধারন ক্রিমিনালদের মতন।
এই লেখা চলবে - এখনকার ছেলে মেয়েরাও জানুক সব কিছু কি কি তাদের কাছে এতদিন গোপন করে রাখাছিল। সব কিছু জানুক তারা।
অল্প অল্প করে হলেও এইভাবেই জানুক তারা তাই এই লেখা চলবে !!!.....
( সংগৃহীত )

সম্ভাষণ




সম্ভাষণ

নমস্কার নয়, বলুন- জয় শ্রীরাম বা জয় শ্রীকৃষ্ণ এবং এই প্রসঙ্গে আরো জানুন ‘সালাম’ শব্দের অন্তর্নিহিত অর্থ কী ?
নমস্কার শব্দটির আধ্যাত্মিক অর্থ কারো ভেতরে বাস করা ঈশ্বরকে সম্মান করা হলেও, এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, মাথা নত করে কাউকে অভিবাদন জানানো। কারণ, নমস্কার শব্দটিই এসেছে, নম<নামা<নিচে বা নিচু/নীচু শব্দ থেকে। এর মধ্যে নিজে ছোট হওয়ার ও অপরকে বড় করার একটা ব্যাপার আছে; রাজা-বাদশাদের সামনে তার সভাসদরা যেমন কোমড় বাঁকা করে মাথা নিচু করে বাম হাত মাথার কাছে রেখে ডান হাত মাথা পর্যন্ত তোলা ও নামানোর মাধ্যমে যে সম্মান দেখায়, নমস্কারের আভিধানিক অর্থ অনেকটা সেরকম। নমস্কারের মাধ্যমে অন্যকে বড় করা হয় ঠিকই, কিন্তু তার খুব একটা প্র্যাকটিক্যাল উপকারিতা নেই। কিন্তু নিজেকে যে ছোট করা হয়, মনের উপর সেটার ভয়াবহ অপরকারিতা আছে।
নমস্কার করে নিজে ছোট হয়ে অন্যকে আমরা বড় করছি, স্বাভাবিকভাবে মনে হবে, এতে ক্ষতির কী আছে ? অন্যকে সম্মান করছি, এ তো ভালো কথা। কিন্তু যে বৈশিষ্ট্য বা রীতি নিজেকে অন্যের কাছে ছোট করে, সেই বৈশিষ্ট্য বা রীতি সেই জাতিকে কখনো বড় হতে দেয় না বা মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয় না। একারণেই অগাধ জ্ঞান, গুন ও একটি সভ্য ধর্মের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও হিন্দুরা অপর কোনো জাতির সামনে মাথা তুলে কথা বলতে পারে না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারে না, অন্যের অন্যায্য দাবীকেও না বলতে পারে না। দেহে শক্তি থাকলেও- মাথা নত করা স্বভাবের জন্য- মুখে তা প্রকাশ করতে পারে না বা কাজে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারে না।
হিন্দুদের এই জাতিগত দুর্বলতার বিষয়টি জানতে পেরেছিলো জিন্না। জিন্না বুঝেছিলো, যদি একবার শক্ত করে বলতে পারি যে, এটা আমার চাই, তাহলে গান্ধী তা না বলতে পারবে না। খেয়াল করুন ১৯৪৪ সালে গান্ধী, জিন্নাহকে বলছে, "আমি আপনার বা ইসলামের শত্রু নই। আমি আপনাদের দীন সেবক মাত্র। আমাকে দয়া করে ফিরিয়ে দেবেন না।"
গান্ধীর কিসের দুর্বলতা ছিলো, তাই জিন্নাহর কাছে সে ভিক্ষা চাচ্ছে ? সেই সময় গান্ধী ছিলো ভারতের অধীশ্বর, উপমহাদেশের ৭৭% হিন্দু ছিলো গান্ধীর পাশে। তারপরও গান্ধী, মনের দিক থেকে কেনো এত দুর্বল ? সংখ্যার শক্তি তো তার কম ছিলো না ? প্রকৃতপক্ষে এটা হচ্ছে হিন্দুদের হাজার বছরের মাথা নত করে থাকার ফল। মুসলিম দুঃশাসনের আমলে হিন্দুদেরকে তো এমনি ই অত্যাচারীদের সামনে মাথা নত করে থাকতে হয়েছে, তারপরেও আমরা আচার-সংস্কৃতির মাধ্যমে সব সময় মাথা নত করে থাকতে অভ্যস্ত। মাথা উঁচু করে চলার শিক্ষাই তো হিন্দুদের নেই, তাই মাথা উঁচু করে, আমরা, হিন্দুরা কথা বলবো কিভাবে ?
রামায়ণ, মহাভারতের যুগে কেউ কাউকে নমস্কার বলতো না। ছোটরা বড়দেরকে সম্মান জানানোর জন্য দুই হাত বুকের সামনে যুক্ত করে বলতো প্রণিপাত। এটা প্রণামের প্রতিশব্দ। এটা নমস্কার বলার চেয়ে বেটার। কারণ, এর মধ্যে নত হওয়ার কোনো ভাব নেই। এর মাধ্যমে নিজেকে নিজের জায়গায় রেখে অপরকে সম্মান দেখানো হয় বা সম্মান দেখানো যায়। তাছাড়া এই ভাবে কাউকে অভিবাদন জানানোর নাকি বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও আছে; যদিও আমি শিউর নয়, শুনেছি এই ভাবে দুই হাত যুক্ত করে কাউকে অভিবাদন জানালে, যাকে অভিবাদন জানানো হচ্ছে, তাকে নাকি অনেক দিন মনে রাখা যায়। এর বৈজ্ঞানিক থিয়োরি হচ্ছে, তালুতে তালু রেখে যখন দুই হাত যুক্ত করে যখন কাউকে অভিবাদন জানানো হয়, তখন নাকি হাত থেকে একটি সিগন্যাল মস্তিষ্কে যায় এবং ঐ দুজন ব্যক্তি পরস্পরকে দীর্ঘদিন মনে রাখতে পারে। যদিও এর কোনো ধর্মীয় বা মানসিক উপকারিতা নেই, এটা শুধুই সম্বোধন।
হিন্দু সমাজে আরেক ধরণের প্রণামের নিয়ম আছে, আর তা হলো, যাকে প্রণাম করা হচ্ছে, তার সামনে বসে, হাত দিয়ে তার পা ছুঁয়ে সেই হাত কপালে ঠেকানো। এভাবে দুইবার বা তিনবার করা হয়। এটা সামনা সামনি দাঁড়িয়ে নমস্কার বা প্রণাম বলার চাইতে খারাপ। এর মাধ্যমে নিজেকে ভীষণভাবে ছোট করা হয় এবং অপরের পা কে নিজের কপালে উঠানো হয়। এই ধরণের প্রণাম একমাত্র নিজের পিতা-মাতাকেই করা যেতে পারে, অন্য কাউকে নয়। কারণ, পিতা-মাতার চরণ নিজের কপালে থাকলে সেটা অমঙ্গল নয়, মঙ্গল।
এই প্রণামের আরেকটা রূপ হচ্ছে ষষ্ঠ অঙ্গ সহকারে বা ষাষ্ঠাঙ্গে প্রণাম। এতে কারো মাথা একেবারে অন্যের পায়ে ঠেকিয়ে প্রণাম করা হয়। এটা শুধু অনুচিত ই নয়, ভয়ংকর ধরণের একটা পাপ। কারণ, আমাদের শরীরে ব্রহ্মতালু বলে একটা কথা আছে;এই ব্রহ্মতালুর স্থান মাথার একেবারে উপরে এবং সেখানে স্বয়ং ব্রহ্ম বাস করেন বলেই তার নাম ব্রহ্মতালু। তো যখন কেউ কারো পায়ে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করে, সে তখন, তার মাথায় অবস্থান করা ব্রহ্ম বা ঈশ্বরকে প্রকৃতপক্ষে অপর ব্যক্তির পায়ের নিয়ে গিয়ে ফেলে দেয়। কিন্তু যার পায়ে নিয়ে গিয়ে ব্রহ্মকে সে ফেলে দিলো, সে তো একজন সাধারণ মানুষ।
এসব আধ্যাত্মিক কথা বাদ দিলেও, সাধারণ দৃষ্টিতেও এই ধরণের প্রণামের অর্থ, একজনের পায়ের নিচে অন্য একজনের সমস্ত কিছু অর্পন করে দেওয়া। যখন এইভাবে কাউকে প্রণাম করা হয়, তখন প্রণামকারীর নিজের বলে কিছু থাকে না, তার পাপ-পূন্য, ভালো-মন্দ সকল কিছুর অধিকারী হয়, যে প্রণাম নিচ্ছে, সে। কিন্তু তার কি তাকে ধারণ করার ক্ষমতা আছে ? কোনো একজন মানুষ কি অপর একজন মানুষকে ধারণ করার ক্ষমতা রাখে ? কাউকে ধারণ করার অর্থ হলো, কারো অন্তর বাহিরের সকল কিছু জানা এবং এবং সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া, কিন্তু কোনো মানুষের পক্ষে কি অপর একজন মানুষের সব কিছু জানা সম্ভব, না তার সবকিছুকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব ? আমরা যারা- না জেনে, না বুঝে -এই ধরণের প্রণাম করে করছি বা প্রণাম নিচ্ছি, তারা উভয়েই ভয়ংকর ধরণের পাপ করে চলেছি।
চৈতন্যদেবকে নিয়ে তৈরি ছবিতে দেখেছি, যখন কেউ চৈতন্যদেবকে ষাষ্ঠাঙ্গে অর্থাৎ পায়ে মাথা রেখে প্রণাম করে, তখন চৈতন্যদেব, তার মাথায় পা রেখে তাকে আশীর্বাদ করে। এটা শুধু দৃষ্টিকটু ই নয়, একটাও একটা চরম পাপ। কারণ, উপরেই উল্লেখ করেছি, আমাদের মাথা হচ্ছে ব্রহ্মের বাসস্থান। সাধারণভাবে, অজান্তে, কারো গায়ে বা পায়ে, পা লেগে গেলেও আমরা তার গায়ে হাত ছুয়ে বা ছোঁয়ার ভঙ্গি করে, সেই হাত মাথায় রেখে তাকে রেসপেক্ট দেখাই; এর মূল কারণ, সবার মধ্যেই যে ঈশ্বর বাস করেন, সেই ধারণাটাকে আমরা মনে লালন করি। সেক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে কারো মাথায় পা রাখা, এটা অভিশাপ হতে পারে, আশীর্বাদ কখনোই নয়। তাছাড়া পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ কি এই ভাবে কারো মাথায় পা রেখে কখনো আর্শীবাদ করার ভঙ্গি করেছেন ? চৈতন্যদেব এই সিস্টেম পেলো কোথায় ?
শাস্ত্রে বলা আছে, তিনিই আচার্য বা গুরু, যিনি শাস্ত্রসম্মত আচরণ করেন এবং সেইভাবেই তার শিষ্যদেরকে শিক্ষা দেন। হিন্দুধর্ম যদিও পরিবর্তনকে অস্বীকার করে না, কিন্তু সেই পরিবর্তন আনতে গেলেও তো আগে শাস্ত্রগুলোকে গুলে খেয়ে দেখতে হবে যে- কোন বিধান বর্তমান সমাজের জন্য প্রযোজ্য, আর কোনটা নয়। যে ‘মনুসংহিতা’কে হাজার হাজার বছর ধরে হিন্দু সমাজের গুরু-পুরোহিত-সাধু-সন্ন্যাসীরা হিন্দু শাস্ত্রের একটি প্রামান্য গ্রন্থ বলে মনে করতো বা এখনও করে, তাদের কি সেই যোগ্যতা ছিলো বা আছে, শাস্ত্রবর্ণিত কোনো বিষয়ে পরিবর্তন আনার ? কিন্তু যেভাবেই হোক, আমি ই প্রথম বলেছি এবং এখনও বলছি ‘মনুসংহিতা’ হিন্দুশাস্ত্রের কোনো প্রামান্য গ্রন্থ নয়, এটা আর্যসভ্যতার রাষ্ট্র পরিচালনার একটি সংবিধান মাত্র।
মনু, যার প্রকৃত নাম স্বায়ম্ভূব, যিনি সাধারণ লোককে ধোকা দিয়ে, অমর হওয়ার জন্য, ব্রহ্মার মানসপুত্র হিসেবে নিজেকে দাবী ক’রে, নিজের নামের সাথে মনু যুক্ত ক’রে, রাষ্ট্র পরিচালনার সুবিধার্থে গীতায় বর্ণিত চতুর্বর্ণ সিস্টেমের বিকৃত (কর্মসূত্র থেকে জন্মসূত্রে) ব্যাখ্যা ক’রে, সমাজকে ভাগ ক’রে, নিজেকে শ্রেষ্ঠ বর্ণ ব্রাহ্মণ হিসেবে দাবী করেছিলেন এবং মনুসংহিতা রচনা করেছিলেন। শুধু তাই নয়, চৈতন্যদেবের সময়ের লোকজন- ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ, শ্রীকৃষ্ণকীর্তনকাব্য এবং জয়দেবের গীতগোবিন্দ, যার উপর দাঁড়িয়ে আছে পুরো বৈষ্ণব সমাজ এবং তাদের থিয়োরি; তারা জানতোই না যে, হিন্দু ধর্মীয় বিষয় নিয়ে লেখা হলেও এগুলো হিন্দু ধর্মের কোনো প্রামান্য গ্রন্থ নয় এবং এই গ্রন্থগুলো যে হিন্দুধর্মকে ধ্বংস করার নীলনকশা হিসেবে মুসলিম শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় লিখা হয়েছিলো সেই ইতিহাসও, অনেকে কেনো ৯৯.৫% বৈষ্ণব এখনও জানে না, তাহলে এই পাহাড়সম অজ্ঞতা নিয়ে, শাস্ত্র বর্ণিত নিয়ম কানুন পরিবর্তনের অধিকার তাদের কোথায় ?
শুধু মনুসংহিতা নিয়ে আমার একটি পোস্ট আছে, এটা পড়লে আপনারা মনু এবং তার সংবিধান নিয়ে ডিটেইলস জানতে পারবেন।
চৈতন্যদেবের ভক্তরা, তাকে রাধা ও কৃষ্ণের যুগল অবতার বলে মনে করে। কিন্তু চৈতন্যদেব এর ভক্তরা হয়তো জানেই না যে যৌবনবতী যে রাধার সাথে কৃষ্ণের প্রেমের কথা বলা হয়, সেই রাধাই আসলে নেই, তা সত্ত্বেও রাধা যেহেতু নারীর প্রতীক, চৈতন্যদেব সেই কাল্পনিক নারী রূপী রাধার অবতার হতে পারেন, কারণ কৃষ্ণের প্রতি রাধার যে কাল্পনিক বিরহ, তা চৈতন্যদেবের মধ্যে ছিলো, কিন্তু কৃষ্ণের যে গুন বা বৈশিষ্ট্য, তার কিছুই চৈতন্যদেবের মধ্যে ছিলো না। তাই তিনি কিছুতেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অবতার হতে পারেন না, আর পৃথিবীতে শ্রীকৃষ্ণের অবতার বলে কিছু নেই, যারা আছেন তারা বিষ্ণুর অবতার, তাছাড়াও এক অবতার কখনো অন্য এক অবতারের ভক্ত হয় না, এই সূত্রে চৈতন্যদেব শুধুই কৃষ্ণের ভক্ত, তিনি কারো অবতার নন।
এ ব্যাপারে, এখানে এত বিস্তারিত আলোচনার অবসর নেই, তাই এ নিয়ে কারো মনে কোনো সন্দেহ থাকলে চৈতন্যদেব ও শ্রীকৃষ্ণের জীবনী নিয়ে গবেষণা করে দেখতে পারেন। আমার এইসব মত নিয়ে কোনো কোনো বৈষ্ণব ভক্ত হয়তো বিরূপ হতে পারেন, কিন্তু তার আগে মনে রাখবেন, আমিও চৈতন্যদেবের অনুসারী বৈষ্ণব সমাজের একজন সদস্য, হিন্দু সমাজের ক্ষতগুলোকে মেরামত করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি; তাই যে প্রথাগুলো হিন্দু সমাজের জন্য উপকারী ও যুগোপযোগী আমি সেগুলোরই সমর্থক ও প্রচারক, আর যেগুলো ক্ষতিকারী, সেগুলোর আমি বিনাশক।
ষাষ্ঠাঙ্গে প্রণামের সিস্টেম, প্রাচীন হিন্দু সমাজে ছিলো না এবং আমার ধারণা, এই প্রথার উদ্ভব চৈতন্যদেবের সময় থেকেই। এইভাবে কারো পায়ে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করার অর্থ হলো, পরিপূর্ণ আত্মসমর্পন। বৈষ্ণব সমাজ থেকে গুরুগিরি প্রথার উদ্ভব এবং এই বৈষ্ণব গুরুরা চেয়েছে, তাদের প্রতি তাদের শিষ্যদের পরিপূর্ণ আত্মসমর্পন থাকুক। তাই তারা এই প্রথা চালু করেছে বলে আমার মনে হয়।
শুরু থেকেই গুরুগিরি একটা ভয়াবহ লাভজনক পেশা। এরা হিন্দুসমাজের উন্নতি ও হিন্দু সমাজকে রক্ষার জন্য তিল পরিমান চিন্তা ভাবনা করে না, অথচ প্রায় সমগ্র হিন্দু সমাজের শ্রদ্ধা-ভক্তিকে বিনা পয়সায় কিনে নিয়ে এই গুরুরা অঢেল ঐশ্বর্যকে ভোগ করে চলেছে। সাত্ত্বিক আহারের নামে নিরামিষ ভোজন এবং কাম-ক্রোধ ত্যাগ করিয়ে হিন্দু সমাজকে দুর্বল ও নপুংসক বানাতে এই গুরুদের যে ভূমিকা, তা অপরিসীম; যদিও হিন্দুশাস্ত্রের কোথাও বলা নেই যে সাত্ত্বিক আহার মানে নিরামিষ এবং এই কথাও কোথাও বলা নেই যে নিরামিষ খেতে হবে।
যা হোক, এই গুরুরা দীক্ষা দিয়ে মানুষকে পরলোকে মুক্তির পথ দেখায়, কিন্তু ইহলোকে হিন্দুদের যে দুর্দশা তা নিয়ে তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। থাকবে কিভাবে ? নিজেদেরকে রক্ষা করারই তো কোনো ক্ষমতাই এদের নেই। আর যাদের নিজেকে রক্ষা করার ক্ষমতা নেই, তারা সমাজ সম্পর্কে কিছু ভাববে কিভাবে ? আর যারা সমাজ সম্পর্কে কিছু ভাবে না, সমাজের এত সমস্যার মাঝেও, তারা বেশ রিল্যাক্সে থাকতে পারে; আর এরকম রিল্যাক্সে থাকলে নির্জনে বসে জপ-ধ্যান করা সম্ভব এবং ইহকালে সমগ্র হিন্দুজাতিকে বিপদের মুখে রেখে পরকালে নিজের মুক্তি বা মোক্ষলাভের কথাও চিন্তা করা সম্ভব। প্রকৃতপক্ষে হিন্দুসমাজের প্রত্যেকটি সাধু-সন্ন্যাসী-গুরুরা এক একজন চরম স্বার্থপর, ধান্ধাবাজ ও নিষ্কর্মা ব্যক্তি।
এবার দেখা যাক ইসলামি সম্ভাষণের রীতি অনুযায়ী মুসলমানরা কী বলে, কী করে, আর এর অন্তনির্হিত তাৎপর্যই বা কী ?
প্রণিপাত, প্রণাম, নমস্কার, গুড মর্নিং, হ্যালো, সালাম ওয়ালাইকুম - যা ই বলি না কেনো, এগুলোর মূল প্রার্থিব উদ্দেশ্য হলো, অন্যের সাথে কথা বলা শুরু করার একটা ক্লু বা সূত্র মাত্র। এছাড়া এগুলোর আর অন্য কোনো বাস্তব উপযোগিতা নেই। এগুলোর মধ্যে - জঘন্য, নোংরা, দুর্গন্ধযুক্ত একটি আদর্শ- ইসলাম এর অনুসারী, মুসলমানদের, তাদের সম্ভাষণের রীতি নিয়ে গর্বের শেষ নেই। তারা বলে, সকল ধর্মের ব্যক্তিদের সম্ভাষণ রীতি শুধু একটি শব্দ, এর কোনো অর্থ নেই অর্থাৎ তারা বোঝাতে চায়, ওসবের কোনো মূল্য নেই। কিন্তু তারা যে বলে, আস সালামু ওয়ালাইকুম..., এর মানে হচ্ছে "আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক" -এটা নাকি একটা দোয়া, এর নাকি চরম মূল্য আছে। কিন্তু এই সালামের অর্থের অন্তনির্হিত তাৎপর্য কী এবং এর মাধ্যমে আসলে তারা কী প্রকাশ করে, সেটাই আজ আপনাদের বলবো, যা মুসলমানরা কোনো দিন ভাবতেও পারে নি।
এ প্রসঙ্গে, আগে একটা কৌতুক বলে নিই, তাহলে বিষয়টি বুঝতে সহজ হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের একটি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি। হানিফ সংকেত নামের এক কমেডিয়ানের এই অনুষ্ঠানটি দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে সমান জনপ্রিয়তা নিয়ে বাংলাদেশে চলছে। এই অনুষ্ঠানের একটি নাট্যাংশে একবার দেখানো হয়েছিলো, রাস্তার জ্যামে আটকে যাওয়া একটি গাড়িতে সস্ত্রীক বসে থাকা এক ধনী ব্যক্তির কাছে এক ভিক্ষুক ভিক্ষা চাইতে যায়। ব্যক্তিটি ভিক্ষুককে ১০ টাকা ভিক্ষা দেয়। তখন ভিক্ষুক বলে, স্যার, আপনি লাখপতি না কোটিপতি ? ভিক্ষুকের কথা শুনে লোকটি তো অবাক। পাশে বসে থাকা স্ত্রী বলে,
"বলো না, বলো না, ইনকাম ট্যাক্সের লোক হতে পারে, ছদ্মবেশে আছে।"
এখানে খেয়াল করুন, ওই ব্যক্তির স্ত্রীর কথায় এটা প্রমানিত যে, মুসলমানরা কখনোই সৎ হতে পারে না, ওই ব্যক্তি হয় ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছে বা অবৈধ উপায়ে অর্থ আয় করছে।
যা হোক, লোকটি তখন, ভিক্ষুককে জিজ্ঞেস করে,
"ব্যাপার কী ? আমি কোটি পতি না লাখপতি, তা দিয়ে তুমি কী করবে ? তোমার উদ্দেশ্যটা কী ?"
ভিক্ষুকটি বললো, "স্যার, অন্যভাবে নিয়েন না। আসলে ঘটনা হইছে কি, কয় দিন আগে আপনারই মতোন এক স্যার আমারে ১০ ট্যাকা ভিক্ষা দিছে। আমি উনার ল্যাইগ্যা দোয়া করে বললাম, হে আল্লাহ, তুমি এই স্যাররে লাখপতি বানাইয়া দাও।
সঙ্গে সঙ্গে স্যার ক্ষেইপ্যা গিয়া বললো, এই, দাও, ভিক্ষা ফেরত দাও। আমি বললাম, ক্যান স্যার, কী হইছে ? আমি তো আপনার ল্যাইগা দোয়া ই করলাম, অন্য কিছু তো করি নাই।স্যার বললো, লাগবো না তোমার দোয়া। আমি তো এমনিই কোটিপতি। তোমার দোয়া শুইন্যা আল্লা যদি আমারে লাখপতি বানাইয়া দেয়, তাহলে আমার কী অবস্থা হইবো ? দাও, ট্যাকা ফেরত দাও। এই কথা বইল্যা আমার হাত থ্যাইক্যা ভিক্ষার টাকা ক্যাইড়া নিয়া চইল্যা গেলো স্যার। ব্যবসায় ক্ষতি হইলো। সেই থ্যাইকা আমি খুব সাবধান। কে কোটিপতি আর কে লাখপতি, তা না জাইন্যা আমি কারো জন্যি দোয়া করি না।" স্যার, এখন আপনি কন, আপনি লাখপতি না কোটিপতি, তাইলে আপনার ল্যাইগা আমার দোয়া করতে সুবিধা হয়।
উপরের এই গল্পের সারমর্ম হলো, যার যা নেই, তার জন্য বা তা পাওয়ানোর জন্য, তাকে দোয়া করা হলে সে খুশি হয় বা তার খুশি হওয়ার কারণ ঘটে। কিন্তু যার যা আছে, তার জন্য তাকে দোয়া করা হলে, তার খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। খেয়াল করুন, মুসলমানরা সব সময় একে অপরকে এই বলে দোয়া করছে যে, "আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।" এর সরল অর্থ এটাই যে, মুসলমানরা শান্তিতে নেই। যদি তারা শান্তিতেই থাকতো, তাহলে, আবার শান্তিতে থাকতে বলে দোয়া করার তো কোনো প্রয়োজন পড়তো না ?
বাস্তবেও তাই, পৃথিবীর কোথাও মুসলমানরা শান্তিতে নেই। পৃথিবী জুড়ে যত যুদ্ধ ও অশান্তি, সবই মুসলিম এলাকায় বা মুসলমানদের নিয়ে বা মুসলমানদের জন্য। পারিবারিক জীবনেও একজন (প্রকৃত) মুসলমান, বহু বিবাহ করে স্ত্রীদের মধ্যে ঝগড়া-অশান্তি লাগিয়ে এবং বহু সন্তানের জন্ম দিয়ে, দারিদ্রতায় ভুগে, তারা সাংসারিক জীবনে কতটুকু শান্তি লাভ করে ? এরপর এই ধরণের পরিবারের সন্তানরা কুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে মামলা-মোকদ্দমায় ফেঁসে পরিবারের সবাইকে যন্ত্রণার মধ্যে ফেলে, এটাও এক প্রকার অশান্তি।
এছাড়াও আছে পাছায় মুহম্মদের কামড়, জিহাদ করে সারা দুনিয়ায় ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য একজন মুসলমানকে তার জীবদ্দশায় কিছু না কিছু করতে হবে, এটা মুসলমানদের এক ঈমানী দায়িত্ব ; আর এটা করতে গেলে তাকে সন্ত্রাস বা কোনো না কোনো অন্যায় কাজ করতেই হবে। আর এই অন্যায় করতে গেলে তার জেল-জরিমানা বা আমেরিকা-রাশিয়া-ইউরোপের বোমা-গুলি খেয়ে মরতে হবে, জিহাদের এই যে তাগাদা, মুসলমানদের জন্য এটাও এক প্রকারের অশান্তি। তো মুসলমানরা শান্তিতে আছে কোথায় ? সেজন্যই পরস্পরকে সালাম দেওয়ার মাধ্যমে ওরা যা বলে, সেটাই ওদের জন্য উপযুক্ত। কারণ, যার পুত্র নেই, তার উদ্দেশ্যেই আশীর্বাদ করে বলা হয় পুত্রবতী বা পুত্রবান হও; যার পুত্র আছে, তার উদ্দেশ্যে কেউ এমন আশীর্বাদ করে না।
মুসলমান ছাড়া পৃথিবীর সবাই যেহেতু সুখে-শান্তিতে আছে, সেহেতু তাদের জন্য এই ধরণের অ্যারাবিক দোয়ার কোনো প্রয়োজন নেই, তাদের জন্য স্ব স্ব মাতৃভাষার যে কোনো সম্ভাষণই উপযুক্ত এবং সেটাই সর্বোত্তম।
এই লিখাটির শিরোনাম দিয়েছি, "নমস্কার নয়, বলুন জয় শ্রীরাম বা জয় শ্রীকৃষ্ণ" এবার এব্যাপারে কিছু বলে লিখাটি শেষ করি।
নমস্কার বলার মধ্যে যে কী ক্ষতিকারক বিষয় লুকিয়ে আছে, তা তো উপরে আলোচনা করলাম, আমার বিশ্বাস, সবাই তা বুঝতে পেরেছেন; তাই আমি নমস্কার করা বা বলার পক্ষপাতি নই। কোনো সাইড এফেক্ট না থাকলেও বলতে চাই না প্রনাম বা প্রণিপাত, এমন কিছু বলতে চাই যাতে আমাদের সম্ভাষণের কাজও হয় আবার আমাদের ধর্মের কাজও হয়। এজন্য আমরা একজন যদি বলি "জয় শ্রীরাম" এবং উত্তরে অপরজন যদি বলি "জয় শ্রীকৃষ্ণ", তাহলেই বেস্ট বা এর উল্টোটাও বলতে পারি, মানে কেউ যদি বলে জয় শ্রীকৃষ্ণ, অপরজন বলবে জয় শ্রীরাম। কারণ, এর মাধ্যমে হিন্দু ধর্মের জয় যেমন বারবার উচ্চারিত হবে, তেমনি সর্বক্ষেত্রে এই দুই জনের জয় যদি আমরা নিশ্চিত করতে পারি, তাহলেই হিন্দুদের সকল সমস্যার সমাধান হবে।
তাছাড়াও ভগবানকে স্মরণ করার মাধ্যমে আমরা একে অপরের সাথে পরিচতি হচ্ছি বা কথা শুরু করছি, এটাও একটা বিরাট বিষয় বা কল্যাণকর ব্যাপার। কেননা, এর মাধ্যমেও তো আমরা দিনে অন্তত কয়েকবার অবচেতন মনে অভ্যাসবশতই ভগবানের নাম নিতে পারবো। আমার ধারণা ও বিশ্বাস, হিন্দু ধর্মের উত্থানে এই সম্ভাষণ রীতি একটি যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে। কারণ, যে হিন্দু দিনে অন্তত একবার মুখে বলবে জয় শ্রীরাম বা জয় শ্রীকৃষ্ণ, সেক্যুলার বা নাস্তিক হলেও আস্তে আস্তে সে প্রকৃত হিন্দু হয়ে যাবে এবং হিন্দু সমাজ ও ধর্মের জন্য তার জীবনে কিছু না কিছু কাজ সে করতে বাধ্য হবেই। এভাবেই এগিয়ে যাবে হিন্দু সমাজ ও হিন্দু ধর্ম এবং বিশ্ব সভায় তা একদিন সুসভ্য ধর্ম হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
আমি ভারতের বহু এলাকায় ঘুরেছি, সেখান খেয়াল করেছি, হিন্দি ভাষী হিন্দুরা পরস্পরকে সম্বোধনে বলে ‘জয় সিয়ারাম’ বা ‘রাম রাম’, এখন আপনি একটা বিষয় খেয়াল করে দেখবেন, বাংলা ভাষী হিন্দুদের চেয়ে হিন্দি ভাষী হিন্দুদের সমস্যা কিন্তু কম; কারণ, তাদের মধ্যে হিন্দুত্ববোধ জাগ্রত, আর একারণেই মহারাষ্ট্রে শিবসেনার মতো দলের জন্ম হয়, যারা পাকিস্তানী শিল্পী গোলাম আলীর কনসার্ট বাতিল করতে পারে, পাকিস্তানের ক্রিকেট ম্যাচ বাতিল করতে পারে, পাকিস্তানী শিল্পীদের বলিউড ছাড়া করার হুমকি দিতে পারে; শাহরুখ, আমীরের মতো ভারত বিরোধীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে পারে এবং বিজেপির মতো হিন্দু শক্তি রাজ্যের ক্ষমতায় আসতে পারে। এর বিপরীতে পশ্চিমবঙ্গের দিকে তাকান, মহারাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত গোলাম আলী পশ্চিমবঙ্গে এসে অনুষ্ঠান করতে পারে, রাস্তায় প্রকাশ্যে হিন্দু নাম ধারী কুলাঙ্গাররা গরুর মাংস খাওয়ার অনুষ্ঠানও করতে পারে, মমতা প্রকাশ্যে নিজের গরুর মাংস খাওয়ার পক্ষে সাফাই গেয়ে আবারও বিপুল ভোটে মূখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হতে পারে; শিবসেনার মতো দল, যারা ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয়, দেশের জন্য তারা মানববোমা হতেও প্রস্তুত, পশ্চিমবঙ্গে সেই দলের অবস্থান এখনও নড়বড়ে। সারা দেশ কাঁপিয়ে বেড়ালেও যে রাজ্যে বিজেপির জনসমর্থন মাত্র ১০%, যে রাজ্যে হিন্দু সমাজকে ধ্বংসের চক্রান্ত হিসেবে বছরে ২/৪ টি লাভজিহাদের সিনেমা বানানো হয়, যার বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদও নেই, শুধু তাই নয়, গোগ্রাসে সেগুলো আবার তারা গিলেও, সেই রাজ্য এবং তার সংলগ্ন বাংলাদেশে হিন্দুদের এত সমস্যা থাকবে না তো থাকবে কোথায় ? এর মূল কারণ হলো বাঙ্গালি হিন্দুদের মধ্যে হিন্দুত্ববোধ জাগ্রত নেই, যেটা আছে হিন্দি ভাষী হিন্দুদের মধ্যে এবং এটা কি অস্বীকার করা যাবে যে, তাদের এই জাগ্রত হিন্দুত্ববোধের পেছনে তাদের সম্বোধনে ‘রাম রাম’ বা ‘জয় সিয়ারাম’ বলার কোনো ভূমিকা নেই ? আমি একটা বিষয় গবেষণা করে দেখেছি যে, প্রতিটা হিন্দুর মধ্যে যদি হিন্দুত্ববোধ জাগানো যায়, তাহলে বাঙ্গালি হিন্দুদের সকল সমস্যা এমনি ই সমাধান হয়ে যাবে। এজন্যই আমার মিশন, জন্মসূত্রে হিন্দু প্রতিটা হিন্দুকে প্রকৃত হিন্দু বানানো বা তাদেরকে হিন্দু হিসেবে গড়ে তোলা।
যা হোক, সব হিন্দুদের মাঝে যদি চালু করা যায় তাহলে "জয় শ্রীরাম ও জয় শ্রীকৃষ্ণ" এমন একটা সম্ভাষণ রীতি হবে, যার মাধ্যমে সকল হিন্দু সব সময় এটা উচ্চারণ করার সাথে সাথে হিন্দু ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করবে, এতে হিন্দু ধর্ম নিয়ে তার যদি কোনো হীনন্মন্যতা থাকে, তা আস্তে আস্তে দূর হবে এবং এটা হবে সারাবিশ্বের মধ্যে এমন অনন্য এক সম্ভাষণ রীতি, যেটা সরাসরি কোনো ধর্মকে রিপ্রেজেন্ট করবে, যা আজ অবধি পৃথিবীর কোনো সম্ভাষণ রীতির মধ্যে নেই।
আমার সাথে যারা ইনবক্সে কথা বলেন, তারা হয়তো একটু চেষ্টা করলে মনে করতে পারবেন যে, আপনারা যখন আমাকে সম্বোধন হিসেবে নমস্কার বা প্রণাম লিখেছেন, এর জবাবে আমি রিপ্লাইএ লিখেছি ‘জয় শ্রীকৃষ্ণ’। মনে করতে না পারলে ইনবক্সে একটু পেছনে গিয়ে চেক করলেই আমার কথার সত্যতাকে বুঝতে পারবেন। হয়তো এটাকে আপনারা একটা নরম্যাল রেসপন্স হিসেবে নিয়েছেন, কিন্তু এর পেছনে আমার রয়েছে একটা গভীর ধর্মীয় উদ্দেশ্য।
যারা আমার এই উদ্দেশ্যটি বুঝতে পারলেন, তাদের কাছে আমার অনুরোধ, আমাকে তো অবশ্যই জয় শ্রীরাম বা জয় শ্রীকৃষ্ণ লিখে সম্বোধন করবেন এবং শুধু আমাকেই নয়, যার সাথেই অফলাইন বা অনলাইনে কথা বলতে যাবেন, সে যদি হিন্দু হয়, তাকে বলুন বা লিখুন জয় শ্রীরাম বা জয় শ্রী কৃষ্ণ এবং তাকেও অন্য হিন্দুকে একইভাবে সম্বোধন করতে বলুন। এছাড়া অনেকে হয়তো খেয়াল করে থাকবেন যে, আমি আমার প্রত্যেকটা ধর্মীয় পোস্টের শেষে লিখি- জয় শ্রীরাম, জয় শ্রী কৃষ্ণ। এর উদ্দেশ্য হলো- আমি চাই, যারা আমার পোস্ট পড়বে, তারা যেন এই পোস্ট পড়া উপলক্ষে এই নাম দুটোকে একবার হলেও স্মরণ করে বা করতে বাধ্য হয়। কেননা, সমাজের পরিবর্তন এই ভাবে ধীরে ধীরেই করতে হয়।
তাই জোরে বলুন, জয় শ্রীরাম ও জয় শ্রীকৃষ্ণ এবং হিন্দুধর্মের জয় শুরু হোক- এখন থেকেই, আপনার মাধ্যমেই।
জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।
From: Krishna kumar das
💜 জয় হোক সনাতনের 💜



স্ট্রোক সাধারণত বাথরুমেই হয়ে থাকে।






Indranil Sarcar একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন৷

চিত্রে থাকতে পারে: 4 জন ব্যক্তি
স্ট্রোক সাধারণত বাথরুমেই হয়ে থাকে।

স্ট্রোক সাধারণত বাথরুমেই হয়ে থাকে।
কারণ:
বাথরুমে ঢুকে স্নান করার সময় প্রথমেই মাথা এবং চুল ভেজানো একদম উচিৎ নয়।
কারণ এটি ভুল পদ্ধতি।
মানুষের বডিতে ব্লাড সার্কুলেশন একটা নির্দিষ্ট উত্তাপ মেইনটেন করে চলে ; তাই যে কোন উত্তাপ ব্যালেন্সে আসতে বডিতে সময়ের প্রয়োজন।
যদি আপনি প্রথমেই মাথায় জল ঢেলে বসেন তাহলে সাথে সাথেই রক্ত র‍্যাপিডলি মাথায় উঠে যায়;এবং whole body তে ব্লাড সার্কুলেশন নরমাল ফ্লো থেকে কয়েক গুণ বেড়ে যায়;
ফলে কৈশিকী ও ধমনী একসাথে ছিঁড়ে যায়। যার কারণে একজন সুস্থ মানুষ কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে স্ট্রোক এবং বডির ব্যালেন্স ধরে রাখতে না পেরে মাটিতে পড়ে যায় কিংবা মুহুর্তেই ডেথ হয়ে যেতে পারে।

* স্নানের সঠিক পদ্ধতি হলো:
পায়ের পাতা থেকে আস্তে আস্তে ওপর দিকে কাঁধ পর্যন্ত ভেজাতে হবে।
এর ফলে কিছু মানুষের একটা গরম হাওয়া মাথা দিয়ে যেন বের হচ্ছে মনে হতে পারে। এরপর আস্তে আস্তে মুখ ভিজিয়ে মাথায় জল দেওয়া উচিৎ।
এই পদ্ধতি যাদের উচ্চ রক্তচাপ , উচ্চ কোলেস্টরাল এবং মাইগ্রেন আছে তাদের অবশ্যই পালন করা উচিৎ।