বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১৮

আচার্য দেবপ্রসাদ ঘোষ ড. শহীদুল্লা ও শ্রী সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়...


   আচার্য দেবপ্রসাদ ঘোষ  ড. শহীদুল্লা  ও শ্রী সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়...


    শেয়ার করেছেন       প্রণব কুমার কুণ্ডু



ভাষাবিদ, গণিতবিদ, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক এবং আইনজীবী

আচার্য দেবপ্রসাদ ঘোষ (জন্মঃ- ১৫ মার্চ, ১৮৯৪ - মৃত্যুঃ- ১৪ জুলাই, ১৯৮৫)

বানান কমিটিতে কয়েক ঘণ্টা - দেবপ্রসাদ ঘোষ ; বিশ্ববিদ্যালয়ের বানান-কমিটি তিনজন ভদ্রলোককে কমিটিতে যোগদান করিতে আমন্ত্রণ করিয়াছেন - ডাঃ শহীদুল্লা, অধ্যাপক শ্রীযুক্ত মন্মথনাথ বসু এবং আমি। অধিবেশনের দিন উপস্থিত হইয়া দেখি শ্রীযুক্ত রাজশেখর বসু মহশয় আসিয়াছেন; ইনি রসায়নের এম.এ., খ্যাতনামা রস-সাহিত্যিক "পরশুরাম" এবং বর্তমানে পরিভাষা-কমিটি তথা বানান-কমিটির সভাপতি। আর উপস্থিতের মধ্যে ছিলেন শ্রীযুক্ত চারুচন্দ্র ভট্টাচার্য্য, ইনি পদার্থ-বিজ্ঞানের এম.এ. ও গোলদীঘী বিশ্ববিদ্যালয়ের বানান-কমিটির সেক্রেটারী, এবং এই উভয় বিশ্বের ভার যুগপত্ তাঁর স্কন্ধে আপতিত হওয়ায় স্বভাবতই চাল কিছু গুরুগম্ভীর; আর ছিলেন ডাঃ শ্রীযুক্ত সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ও ডাঃ শহীদুল্লা, উভয়েই পেশাদার ভাষাতাত্বিক, একজন কলকাতায় এবং অপরজন ঢাকায় অধ্যাপনা করেন। এই চারিজনকেই বিশেষ কথাবার্তায় ব্যাপৃত দেখিলাম, যেন সভায় মুরুব্বি মতন। আরও অনেকে ছিলেন; সকলের নাম মনে নাই. কিন্তু তাঁহাদিগকে মুখব্যাদান-পূর্বক বিশেষ উচ্চবাচ্য করিতে দেখিলাম না; বোধ করি সভাবর্ধন করাই উঁহারা যথেষ্ট বিবেচনা করিয়া থাকিবেন।

আমি যখন পৌঁছিয়া আসন গ্রহণ করিলাম, তখন শুনি আলোচনা চলিতেছে "বৌ" সম্বন্ধে; অর্থাৎ ডাঃ শাহীদুল্লা প্রস্তাব করিয়াছেন যে, বাঙ্গাল শব্দে ঐ-কার ঔ-কার আর থাকিবে না, তত্স্থলে অই, অউ, এই প্রকার লিখিতে হইবে; যেমন, "বৌ"-এর স্থলে "বউ", "দৈ"-এর স্থলে "দই", ইত্যাদি। আমি চুপ করিয়া আলোচনা শুনিতে লাগিলাম; ভাবিলাম যে, ইদানীং বড় বেশি বক বক করিয়া বক্তিয়ার খিলিজী দুর্নামটি অর্জন করিয়াছি, তাই কিয়ত্কাল বাক্‌ সংযমপূর্বক পণ্ডিতগণের গবেষণাই শোনা যাক। কিঞ্চিৎ আলোচনার পর শুনিলাম শহীদুল্লা সাহেব বলিলেন, "কি বলেন সুনীতিবাবু, তাহলে এ বিষয়ে general agreement হল ত?"

সুনীতিবাবু বলিলেন, “হ্যাঁ, হ্যাঁ।"

সভাশোভনকারী যাঁহারা বসিয়াছিলেন তাঁহারাও "মৌনং সম্মতিলক্ষণং" জ্ঞাপন করলেন। আমি তো মনে মনে প্রমাদ গণিলাম, "বৌ' যে যায় যায়। তাই অতি বিনিতভাবে জিজ্ঞাসা করিলাম, " কি বিষয়ে আপনাদের general agreement হল?"

সুনীতিবাবু আমাকে বুঝাইয়া বলিলেন। আমি বলিলাম, "সর্বনাশ! এমন কাজও করবেন না। শেষকালে আপনারা বৌ-বর্জন আরম্ভ করলেন? এ অতি dangerous! কেন, 'বৌ' চলবে না কেন শুনতে পাই কি?"

সুনীতিবাবু বলিলেন, দেখুন বৌ-এর চাইতে বউ-ই দেখতে ভালো।"

আমি নাছোড়বান্দা হইয়া বলিলাম, "মশাই, দেখতে ভাল হলেইত চলবে না, তালাক দেবার আগে বৌ-য়ের দোষটা কি তা ত বুঝিয়ে বলতে হবে। হ্যাঁ, স্বীকার করি বাংলাতে বৌ-বউ দুপ্রকারই চলছে। কিন্তু আপনারা না phonetics -বাদী? Phonetics -ই যদি দেখতে যান, তাহলে কিন্তু বৌ-ই ঠিক, কারণ ওর উচ্চারণ diphthongal - ওটা monosyllabic - এক নিঃশ্বাসে 'বৌ' বলে আমরা উচ্চারণ করি, ব-উ' বলে bi-syllabic ভাবে আলাদা আলাদা উচ্চারণ করিনে।"

সুনীতিবাবু বলিলেন, দেববাবু, ও কথা বললে চলবে কেন ? ওরকম diphthong বাংলা ভাষায় ঢের আছে, খাই, যাই, নেই, যেই, শুই, ধুই, কেউ, কেউ, ঘেউ ঘেউ, হাঁউ মাঁউ খাঁউ, ইত্যাদি। আমি গুণে দেখেছি যে ওরকম ছাব্বিশটা diphthong বাংলায় পাওয়া যায়।"

আমি বলিলাম, "দেখুন , আপনারা পণ্ডিত লোক, philologist; আপনারা পারেন তো সেই ছাব্বিশটা diphthong -এর ছাব্বিশটা phonetic symbol বার করুন না। তা বলে যে দুটো আমাদের রয়েছে সে দুটো মাঠে মারা যাবে, এর মানে কি ? "

সুনীতিবাবু তখন বলিলেন, আচ্ছা, আচ্ছা, তাহলে বিকল্প হোক।"

আমি বলিলাম, "তা বেশ, আপনাদের যা ইচ্ছে - বিকল্পই করুন। সঙ্কল্পতো কোন বিষয়েই বিশেষ দেখতে পাচ্ছিনে আপনাদের। কিন্তু একটা কথা বলি। দুটো একটা উদাহরণের ওপরই যেন কোন বিষয়ে generalize করে বসবেন না। হ্যাঁ, 'বৌ' 'দৈ' এই দুটি শব্দের 'বউ' 'দই' রূপও চলতি আছে বটে; কিন্তু আপনারা general agreement করে যে ফতোয়া দিতে যাচ্ছিলেন যে, অসংস্কৃত সব বাংলা শব্দেই ঐ-কার ঔ-কার বর্জন করতে হবে, তার শ্রাদ্ধ কতদূর গড়ায় তা একবার ভেবে দেখেছেন? এই ফতোয়া মানতে গেলে যে, অতঃপর ফুলের ওপর শুধু 'মউমাছিরা' গুঞ্জন করবে, কুকুরগুলো শুধু 'ভউ ভউ' করে ডাকবে, ছেলেরা শুধু 'দউড়া দউড়ি' করবে, আর রাস্তার 'চউমাথায়' 'হই হই রই রই' শুনে পুলিশ 'ফউজ' তাড়া করে আসবে। দেখুন, ভাষাগত কোন rule জারী করতে গেলে একটু ভেবেচিন্তে করা দরকার - implication গুলো একটু বিবেচনা করা দরকার - দুটো একটা instance -এর ওপর induction চলে না।"
এই সজোর ওকালতীর ফলে যাহোক "বৌ" ত কোনমতে টিঁকিয়া গেল।

তখন শহীদুল্লা সাহেব আরেক দফা প্রস্তাব ঝাড়িলেন। তিনি বলিলেন যে, যে সব অসংস্কৃত বাঙ্গালা শব্দের আদ্যক্ষরে "ক্ষ" আছে, তত্স্থলে "খ" হউক; এবং নিজে দৃষ্টান্ত দিলেন, যেমন ক্ষ্যাপা, ক্ষেত, ক্ষুর, ইত্যাদিকে অতঃপর লেখা হউক খ্যাপা, খেত, খুর ইত্যাদি। সুনীতিবাবু আবার ইহার উপর amendment আনিলেন যে, 'লক্ষ্ণৌ´-কেও ‘লখনৌ’ ভাবে লেখা হউক। কেহ কেহ আপত্তি করিলেন, কারণ ঐ নগরের নামটি রামায়ণের লক্ষ্মণের সঙ্গে জড়িত। ভাষাতাত্বিকগণ সে কথা মোটে আমলের মধ্যেই আনিলেন না। রামায়ণ। সে আবার একটা ঐতিহাসিক authority নাকি! কৈ, মহেঞ্জোদড়োর কোন ভাঙ্গা বাসনের গায়ে কি লক্ষ্মণের কোন ফটো পাওয়া গিয়াছে? অতএব লক্ষ্মণ বাতিল; সুতরাং "লখনৌ"।

আমি আবার সভয়ে বলিলাম, "আচ্ছা শহীদুল্লা সাহেব, 'ক্ষ;- কে তাড়িয়ে আপনি 'খ' আমদানী করতে চান কেন বলুন ত? প্রথমতঃ ত ক্ষ-এর ধবনি ঠিক খ-এর ধবনি নয়, ওর উচ্চারণ অনেকটা ক্খ-এর মত। দ্বিতীয়তঃ, যে শব্দগুলো আপনি উল্লেখ করলেন, তাতে যদি ক্ষ থাকে তাহলে শব্দগুলোর ব্যুত্পত্তি সহজেই বোঝা যায়; যেমন 'ক্ষ্যাপা' - 'ক্ষিপ্' ধাতুর থেকে এসেছে; 'ক্ষেত' - ' ক্ষেত্র'-এর থেকে এসেছে। বেশ সহজ এবং সুন্দর। 'ক্ষেত'-এর বদলে 'খেত' লিখলে, কথাটা কোত্থেকে এসেছে তাই মালুম করা শক্ত হবে। আর দেখুন শহীদুল্লা সাহেব, আপনি বল্লেন 'ক্ষুর'। হ্যাঁ, 'খ' দিয়ে এক রকম 'খুর' আছে বটে কিন্তু তা গরুর পায়ে থাকে, তা দিয়ে দাড়ি কামানো চলে না।

এই কথায় শহীদুল্লা সাহেব যেন একটু impressed হইলেন মনে হল; কারণ তিনি তাঁহার নিবিড় শ্মশ্রুদামের মধ্যে ঘন ঘন করসঞ্চালন করিতে লাগিলেন। আমি উৎসাহিত হইয়া বলিলাম, "আর দেখুন, আপনি বল্লেন না, অসংস্কৃত শব্দে এই রকম সংস্কার করতে হবে? এবং বল্লেন 'ক্ষুর'। 'ক্ষুর' কিন্তু একেবারেই সংস্কৃত শব্দ - উপনিষদে এর প্রয়োগ আছে - 'ক্ষুরস্য ধারা নিশিতা দুরত্যয়া দুর্গং পথস্তত্ কবয়ো বদন্তি'।"

তখন ডাক্তার সাহেব, "তাই ত, তাই তো, ওটা সংস্কৃত?" বলিয়া আমতা আমতা করিতে লাগিলেন।

আমি বলিলাম, "দেখুন ডাক্তার সাহেব, আর যাই করুন, ক্ষুর নিয়ে আর নাড়াচাড়া করবেন না।"

এবার সুনীতিবাবু এক প্রস্তাব তুলিলেন - বোধ করি শহীদুল্লা সাহেবকে একটু অপ্রতিভ দেখিয়া। তাঁহার প্রস্তাব এই যে, "যদ্" শব্দজ যাবতীয় শব্দ বাঙ্গালাতে "জ" দিয়া লেখা উচিত; অর্থাৎ যে, যাহা, যিনি, যেমন, ইত্যাদিকে লিখিতে হইবে জে, জাহা, জিনি, জেমন, ইত্যাদি।

প্রস্তাব শুনিয়া ত আমার চক্ষু চড়ক-গাছ! সুনীতিবাবু বলেন কি? প্রথমটাতো প্রত্যয় হইল না। শেষে মনে পড়িল এপ্রকার মৌলিক প্রস্তাব আনয়ন অসম্ভব নহে; কারণ ব্রাহ্মণ-সন্তান এবং হিন্দু-সভার বিশিষ্ট সভ্য হইলেও উনি কেমালিস্ট অর্থাৎ Roman script-এর পাণ্ডা, সুতরাং অবশ্যই এবংবিধ রোমাঞ্চকর প্রস্তাব উঁহার নিকট হইতে প্রত্যাশা করিতে পারি। আমি তবুও সাহস করিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, যে, 'জ' দিয়ে লেখা হবে?

উত্তর হইল, "প্রাকৃতে তাই হয়।"

এবার আমি উত্তেজিত হইয়া গেলাম; বলিলাম, "প্রাকৃতে কি হয় তা নিয়ে ত কথা হচ্ছে না - এটাতো philology ক্লাস নয়। কথা হচ্ছে বাংলা নিয়ে। বাংলা ভাষাও তো দুশ পাঁচশ বছর ধরে চলে আসছে - বাংলায় শিষ্টপ্রয়োগে কি ব্যবহার হচ্ছে সেইটেই ত দেখতে হবে। আর তাছাড়া ও শব্দগুলো যে সংস্কৃত 'যদ্' শব্দ থেকে এসেছে তার ত সন্দেহ নেই। যদি প্রাকৃতে সংস্কৃত form-টাকে vulgarize করেই থাকে, এবং বাংলাতেও যদি মূলের শুদ্ধ form-টাই অবলম্বিত হয়ে থাকে, তবে কি জন্যে আমরা সেই মূলানুগত শুদ্ধ ফরম ত্যাগ করে vulgarized form -টাই লুফে নেব?"

সুনীতিবাবু বলিলেন, "তা বাংলার কথা বলছেন? বাংলার পুরণো পুঁথিতেও আপনি এন্তার জ-ওয়ালা যে, যাহা, ইত্যাদি পাবেন।"

আমি উত্তর দিলাম, "বটে! এই কথা? আপনিও বহু অশিক্ষিত স্ত্রীলোকের চিঠিতে দেখতে পাবেন যে, 'অশেষপ্রণামপূর্বক নিবেদন' লিখিতে 'অশেষ' কথাটি 'অসেস' ভাবে লেখা হয়েছে। আর আদালতের নথীপত্র দেখেছেন কোন দিন? তাতে দেখবেন 'পিতা' কথাটি ভ্রমক্রমেও তাতে ওভাবে লেখা হয় না; বরাবর 'পীতা' লেখা থাকে। দেখুন, ভাষা ত fool-proof করা সহজ নয়। কতগুলো fool যদি না জেনেশুনে কতগুলো blunder করে, তাদ্বারা ভাষার বানান regulated হয় না। হ্যাঁ, আরেকটা কথা। প্রাকৃতের কথা বলছিলেন। তা প্রাকৃত ত আর একরকম নয় - বিভিন্ন প্রাকৃতে বিভিন্ন রকম প্রয়োগ। সত্যি বটে মাহারাষ্ট্রী, শৌরসেনী, পৈশাচী প্রাকৃতে 'য'- স্থানে 'জ' হয়; কিন্তু মাগধী প্রাকৃতে - যে প্রাকৃতের সঙ্গেই বাংলার নিকটতম সম্বন্ধ - তাতে 'জ'-র স্থানে 'য' হয়। সুতরাং পুরণো পুঁথিতে যে এসব স্থলে কোথাও কোথাও 'জ’ দেখা যায়, তা প্রাকৃত প্রয়োগের অনুসরণে হয় নি, নেহাৎ অজ্ঞতা বা অসাবধানতার জন্যেই হয়েছে, এবং সেগুলি ভুলই। তারপর, প্রাকৃত ত খুব বলছেন। তখন 'ণ' বাতিল করে 'রাণী' 'কাণ' সোণা'তে 'ন' বসাতে যান, তখন ত কৈ প্রকৃতের কথা আপনাদের স্মরণ থাকে না? শুধু এক পৈশাচী প্রাকৃতে ছাড়া, আর কোন প্রাকৃতেই যে 'ন' একদম নেই, একেবারেই 'ণ'-এর রাজত্ব।

এই কথায় রাজশেখরবাবু ছোট্ট একটু প্রশ্ন করলেন, "দেব বাবু, প্রাকৃত কি অনেক রকম আছে নাকি ?"
বানান-কমিটির সভাপতির মুখে এই প্রশ্ন শুনিয়া আমি অবাক।
আমিও সংক্ষেপে বলিলাম, "হ্যাঁ, সাহিত্যে ব্যবহৃতই ত চার রকম প্রাকৃত পাওয়া যায়, তাছাড়া মৌখিক ব্যবহার ত কতই আছে।"

জন্ম
তাঁর জন্ম বরিশালে। তাঁর পিতা ক্ষেত্রনাথ ঘোষ ব্রজমোহন কলেজের দর্শনের অধ্যাপক ছিলেন।
১৯০৮ সালে বরিশালের ব্রজমোহন স্কুল থেকে প্রবেশিকা ও ব্রজমোহন কলেজ থেকে আই.এ পাস করেন দেবপ্রসাদ ঘোষ। ১৯১২ ও ১৯১৪ সালে যথাক্রমে গণিতে বিএ ও এমএ সম্পন্ন করেন কোলকাতার সিটি কলেজ থেকে। গণিতশাস্ত্রে অনার্স পরীক্ষায় তিনি আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের পাওয়া নম্বরের যে রেকর্ড ছিল, সেটিকে ভাঙ্গেন। তিনি আইন পরীক্ষাতেও প্রথম স্থান অধিকার করেন। তিনি কোনো পরীক্ষাতেই প্রথম ছাড়া দ্বিতীয় হননি। তাঁকে ‘আধুনিক গণিতের রামানুজন’ বলা হয়।

দেবপ্রসাদ ঘোষ মাত্র ২১ বছর বয়সে রিপন কলেজে পণিতের প্রধান অধ্যাপক হিসেবে অনেক বছর কাজ শুরু করেছিলেন এবং বীজগণিত, পাটিগণিত, জ্যামিতি ও ত্রিকোণমিতির উপর জনপ্রিয় পাঠ্যবই রচনা করেছিলেন। ১৯৪১ সালে তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ হন এবং সেখান থেকে ১৯৫০ সলে অবসর গ্রহণ করেন।

অনেকগুলি ভারতীয় ও ইউরোপীয় ভাষায় তাঁর বিশেষ দখল ছিল। বিশিষ্ট ভাষাতত্ত্ববিদ হিসাবে সমাদৃত ছিলেন। বাংলা ভাষা ও বানান নিয়ে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর পত্র-বির্তক এক সময় বিদগ্ধ মহলে যথেষ্ট আগ্রহ সৃষ্টি করেছিল। এ বিষয়ে তাঁর রচিত ‘বাঙ্গালা ভাষা বানান’ গ্রন্থটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। কলকাতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক সমিতির সদস্য ছিলেন। ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই সুবক্তা হিসাবে খ্যাতি ছিল। রচিত গ্রন্থ: ‘হিন্দু কোন পথে’, ‘সতের বছর পরে’, ‘তরুণিমা’(সাহিত্রিক ও সামাজিক আলোচনা), ‘ত্রৈরাশিক’(ব্যঙ্গ কবিতা), ‘Shifting Scenes’ প্রভৃতি।
১৯৫১ সালে তিনি শ্যামাপ্রসাদ প্রতিষ্ঠিত জনসংঘে যোগ দেন এবং ১৯৫২ সালে রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হন। বেশ কয়েক বছর তিনি জনসংঘের সর্বভারতীয় সভাপতি ছিলেন।
................


চিনকে চিনে রাখুন



 চিনকে চিনে রাখুন


 শেয়ার করেছেন        প্রণব কুমার কুণ্ডু