পড়ুন
শেয়ার করেছেন প্রণব কুমার কুণ্ডু
★বুক ফুলিয়ে বলুন "আমি সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী"★
-------------------------------------------------------------------------
< দেহাত্মবাদ ও দেহতত্ত্ববাদ - কাল্পনিক না বিজ্ঞান? >
-#Share #Copy #Spreadthispost
বেদান্তসূত্র, ন্যায়সূত্র ও আয়ুর্ব্বেদসূত্রের দেহতত্ত্ববাদের ধারণা থেকে আমরা জানতে পারি জীবদেহ গঠনে বস্তুজগতের মূল উপাদান হল পঞ্চমহাভূত। কিন্তু অন্য দিকে আব্রাহামিক ধর্মগুলো বলে জীবদেহ শুধুমাত্র মাটি দিয়ে নির্মিত! আব্রাহামিক ধর্মের প্রথম মানব আদম শুধু একমুঠো ধুলা (মাটি) দিয়ে তৈরী হয়েছিলো। অপর দিকে ভোগবাদী নাস্তিকদের আদি ভাব-পিতা তথা চার্বাক, পঞ্চভূতের মধ্যে আকাশ তত্ত্বটি কে মানতেন না, এদিকে বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মে চার্বাকের মতকেই সমর্থন করেছিলো! কিন্তু এখন প্রশ্ন হল এগুলোর মধ্যে কোনটি সঠিক?
-
পঞ্চভূত বলতে বোঝানো হয় - ক্ষিতি (মাটি), অপ (জল), তেজঃ (অগ্নি), মরুৎ (বায়ু), ব্যোম (আকাশ) - এই পাঁচ মৌলিক প্রকৃতি তত্ত্ব কে।
যদি আমরা স্থূল দৃষ্টিতে জীবদেহ কে দেখি তো - দেহ তরল, মাংশ, হাড়, মল ইত্যাদি ছাড়া কিছুই দেখতে পাবো না! এগুলো কে যদি সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে দেখি তো কিছু কোষ ও কোষীয় অংশ ছাড়া কিছুই পাবো না!
এবার যদি অতি সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে দেখি তো পাবো জীবদেহ - কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, সালফার, ফসফরাস, ক্যালশিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আইরন, জিঙ্ক, আয়োডিন, কোবাল্ট ইত্যাদি কিছু রাসায়নিক পর্যায় সারণীর অন্তর্ভুক্ত মৌল গুলো দিয়ে গঠিত।
(১) এদের মধ্যে ক্ষিতি তত্ত্ব হল - দেহজাত সমস্ত খনিজ পদার্থ সমূহ যার প্রকৃতিক উৎস হল মাটি। যেমন - কার্বন, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, সালফার, পটাশিয়াম, সোডিয়াম ইত্যাদি।
(২) মরুৎ তত্ত্ব হল - দেহজাত বায়বীয় মৌল সমূহ যার উৎস হল প্রকৃতিক বায়ুমণ্ডল। যেমন - অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন, ইত্যাদি।
(৩) এর মধ্যে অপ তত্ত্বটি হল - বাস্তবে কতগুলি মরুৎ তত্ত্বের অন্তর্ভুক্ত মৌলের সমষ্টিজাত রূপ। সেগুলি হল হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এর মিলিত রূপ হল - জল, হাইড্রোজেন ও ক্লোরিনের মিলিত রূপ হল - হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড/পাকস্থলী থেকে ক্ষরিত রস, ইত্যাদি
-
এছাড়া এই তিনটি তত্ত্বের সমষ্টিজাত রূপ গুলি নিম্নরূপ -
* কার্বন + হাইড্রোজেন + অক্সিজেন = শর্করা ও ফ্যাটি অ্যাসিড জাতীয় জৈব যৌগ ইত্যাদি।
* কার্বন + হাইড্রোজেন + অক্সিজেন + নাইট্রোজেন = অ্যামাইনো অ্যাসিড ও প্রোটিন জাতীয় জৈব যৌগ ইত্যাদি।
* কার্বন + হাইড্রোজেন + অক্সিজেন + নাইট্রোজেন + ফসফরাস = বিভিন্ন নিউক্লিওটাইড, নিউক্লিওসাইড, DNA, RNA ইত্যাদি।
এগুলি হল দেহজাত বিভিন্ন বৃহৎদাকার জৈব অনু। বিজ্ঞানী স্ট্যানলি মিলার ও হ্যারল্ড উরে ১৯৫৩ সালে জলীয় বাষ্প, মিথেন, অ্যামোনিয়াম, হাইড্রোজেন মিশ্রনের উপর তড়িৎ স্ফুলিঙ্গ, তাপ প্রয়োগ ও শীতলীকরণের মাধ্যমে উৎপন্নজাত তরলে বিভিন্ন অ্যামাইনো অ্যাসিড (গ্লুটামিক অ্যাসিড, অ্যাসপারটিক অ্যাসিড, গ্লাইসিন, অ্যালানিন ইত্যাদি) ও জৈব যৌগ সমূহ (ইউরিয়া, সাকসিনিক অ্যাসিড, ফরমিক অ্যাসিড, অ্যাসেটিক অ্যাসিড, প্রপিওনিক অ্যাসিড ইত্যাদি) তৈরী করতে সমর্থন হয়েছিলেন।
-
(৪) তেজঃ তত্ত্বটি হল - তাপ! যা একপ্রকারের শক্তি, যা দেহস্থিত কোষীয় খাদ্য পদার্থের জারণে ফলে উৎপন্ন হয়।
আগেই উল্লেখ করেছি ক্ষিতি, মরুৎ ও অপ এই তিনটি তত্ত্ব দিয়ে দেহজাত বিভিন্ন বৃহৎ জৈবঅণু গুলি সৃষ্টি লাভ করেছে। উক্ত তিনটি তত্ত্বের সাথে যখন তেজঃ তত্ত্বটি মিলিত হল তখন উক্ত জৈবঅণু গুলো বিভিন্ন শৃঙ্খল আকারে সজ্জিত হয়ে কোয়াসারভেট মডেল ও মাইক্রোস্ফিয়ার মডেল, নিউক্লিও পলিমেরাইজেশন মডেল ইত্যাদি গঠিত হয়ে প্রথম আদিকোষ আকারে গঠন লাভ করে। তাপীয় তরঙ্গের দরুন জৈবঅণু গুলির মধ্যে ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মের পরিবর্তন ও পারস্পরিক অন্তঃক্রিয়া ফলে এই নির্দিষ্ট শৃঙ্খল জাত মডেলের রূপ নেয়। এইভাবে এক কোষ, সময়ের সাথে বিবর্তিত হয়ে, আজ বহুকোষীয় প্রাণী এবং সেখান থেকে আরো বিবর্তিত হয়ে বর্তমান মানব সৃষ্টি হয়েছে। তাই বিজ্ঞান ভিত্তিক ভাবে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে - ক্ষিতি, মরুৎ, অপ ও তেজঃ এই চারটি তত্ত্বই জীবদেহ গঠনের মূল উপাদান।
-
দৈত্য মধু ও কৈটবের পৌরাণিক উপাখ্যানটি আপনারা সবাই জানেন? যেখানে সৃষ্টির প্রারম্ভে শ্রীবিষ্ণু মধু কৈটব নামে দুই দৈত্য কে বধ করেন এবং সেই দৈত্যদের মেদ (চর্বি) থেকে এই মেদেনীর সৃজন করে। সাধারণ দৃষ্টিতে এই ঘটনাটি যে অবাস্তব তাতে কোনো সন্দেহ নেই, তবে আধ্যাত্মিক দিকে অবশ্যই বাস্তব! মেদ হল হল একটি তেলের ন্যায় চটচটে জাতীয় পদার্থ যা ওই কোয়াসারভেট, মাইক্রোস্ফিয়ার ইত্যাদি মডেলে শৃঙ্খলমান জৈব অণুসমূহের রূপক। ওই মডেলে সজ্জায়মান জৈব অণুগুলো কোলয়েড জাতীয় এবং লিপিড শর্করা ও প্রোটিনের বিভিন্ন অণু নিয়ে গঠিত একটি মিশ্র প্রকৃতির পদার্থ। তাই পৌরাণিক উপাখ্যান অনুসারে সৃজনকর্তা শ্রীবিষ্ণু মেদ থেকে মেদেনীর সৃজন করেছিলেন।
-
এবার প্রশ্ন হল জীবদেহ তো গঠিত হল! কিন্তু এতে প্রাণ কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে?
পদার্থবিদ্যার অন্তর্ভুক্ত একটি শাখা তাপগতিবিদ্যা (thermodynamics) এর সিস্টেমের ব্যাখাতে "যতক্ষণ দুটি সিস্টেমের মধ্যে জড় বা শক্তির, বা উভয়ের আদান প্রদান হয়, ততক্ষণ সিস্টেমটিকে গতিশীল হিসাবে বিবেচনা করা হয়"। এটাকেই জীবন বিজ্ঞানের ভাষাই বলা হয় প্রাণ! এখানে একটি সিস্টেম হল প্রকৃতি এবং অপর সিস্টেমটি হল জীবদেহ। আমরা যে খাবার খাই তাতে - জড় পদার্থ ও তার মধ্যে অন্তঃস্থিত স্থৈতিক শক্তি (ATP) থাকে, যা সালোকসংশ্লেষণ পক্রিয়ায়, সৌরশক্তি থেকে রূপান্তরিত হয়, এবং তা জীবদেহে গতিশক্তি ও তাপশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। শরীর প্রয়োজনীয় তাপশক্তি কাজে লাগানোর পর, অবশিষ্ট তাপশক্তি শরীর থেকে তাপীয় তরঙ্গ আকারে বিকিরণ পদ্ধতিতে বেরিয়ে যায় প্রকৃতিতে। প্রকৃতির সাথে এই শক্তি ও জড়ের আদান-প্রদান চলতেই থাকে যতক্ষণ না জীবদেহের মৃত্যু হয়। শক্তির ধ্বংশ নাই সৃষ্টি নাই তাই শক্তি সনাতন স্বরূপ। এই সূত্রের উপর ভিত্তি করে শাক্ত দর্শনের "আদ্যশক্তি" নামক একটি তত্ত্ব উৎপত্তি লাভ করেছে। যেহেতু এই আদ্যশক্তির সাথে আমাদের শরীর নাড়ীর সংযোগ তুল্য সম্পর্ক, তাই আদ্যশক্তি তত্ত্বটি হল দার্শনিক দৃষ্টিতে "জননী" স্বরূপ।
-
কিন্তু এই শরীর ও প্রাণ থাকার অর্থ, আপনি এখনো কোমাতে আছেন! আপনার মধ্যে সেই চৈতন্য, বা আত্মার, শুধু অভাব আছে, অর্থ্যাৎ আপনার মস্তিষ্কে, সেই কার্যকারী তত্ত্বটি নেই, যা আপনাকে চিনতে, বুঝতে ও স্মরণে সাহায্য করে!
এখানেই কাজে আসে পঞ্চভূতের সেই অন্তিম তত্ত্বটি, যা হল "ব্যোম" বা "আকাশ"। এই ব্যোম তত্ত্বটি হল - দেহস্থিত শূন্যস্থান। শূন্যস্থান বলতে বোঝায়, যে স্থানে কোয়ান্টাম স্টেট ছাড়া আর কিছুই থাকে না। এই শূন্যস্থানে অবস্থান করে "জীবাত্মা", যাকে পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় কোয়ান্টাম স্তরের স্মৃতি বলা হচ্ছে। মানুষের দেহে এইরূপ শূন্যস্থান একমাত্র স্নায়ুকোষীয় নিউরোফ্রাইবিল বা মাইক্রোটিউবিউলেই মধ্যেই আছে। এই বিংশতি শতাব্দীতে এসে, বিজ্ঞান সেটা কিছুটা হলেও, অনুমান করতে পেরেছে।
এর প্রমাণ দেখিয়ে দেওয়া ভালো, নইলে চার্বাকের ভাব-পুত্র তথা নাস্তিক পণ্ডিতরা দাঁত ক্যালাবে!
-
[প্রমাণ নং - ১, → https://www.thesun.co.uk/…/researchers-claim-that-humans-h…/ ]
এখানে কিছু খ্যাতনামা পদার্থবিদ বলছেন মৃত্যুর পরে শরীরের চৈতন্য বা আত্মা জীবিত থাকে। পদার্থবিদ স্যার রোগার পেনরোস অনুমান করেছেন, বিজ্ঞানের ব্যাখাতে এই চৈতন্য হল, "packet of information stored at a quantum or sub-atomic - level", অর্থ্যাৎ একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক স্মৃতি, যা নিহিত থাকে কোয়ান্টামের মধ্যে, বা অতিপরমাণবিক স্তরে। এটি অবস্থান করে, কোষীয় মাইক্রোটিউবিউলের মধ্যে। যখন জীবের মৃত্যু হয় তখন এই কোয়ান্টাম স্তরের স্মৃতি মহাবিশ্বে মুক্তি লাভ করে, এবং যখন দেহ আবার জীবন লাভ করে, তখন এই চৈতন্য আবার দেহে ফিরে আসে দেহে এবং এই চৈতন্য হল সনাতন। তার এই তত্ত্বটিকে আরেক প্রসিদ্ধ পদার্থবিদ ম্যাক্স প্ল্যাঙ্কও উৎসাহিত করেছেন।
একই কথা শ্রীকৃষ্ণ তার ভগবত গীতায় উল্লেখ করে গেছেন। ভগবত গীতায়, ২.১৩ তে উল্লেখ করা হয়েছে -- দেহের মৃত্যু হলে আত্মার দেহান্তরিত হয়। ভগবত গীতার ২.১৮ তে উল্লেখ আছে -- আত্মা নিত্য, অবিনাশী ও শাশ্বত সনাতন। ভগবত গীতার ২.২০ তে উল্লেখ আছে -- আত্মার জন্ম মৃত্যু ও বৃদ্ধি হয় না, শরীর নষ্ট হলেও আত্মা বিনষ্ট হয় না। ভগবত গীতার ২.২৩ তে উল্লেখ আছে -- আত্মাকে কাটা যায় না, পোড়ানো যায় না, ভেজানো যায় না ও শুকানো যায় না। তাহলে কৃষ্ণের কথাগুলো যে সত্য এবং সেইগুলো ঘুরে ফিরে বিজ্ঞানীদের মুখে শোনা গেল, [ তবে, তা কি প্রমাণিত হল ? ]।
-
Remembering, পদার্থবিদদের অনুমানে, "আত্মা হল একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক স্মৃতি, যা নিহিত থাকে কোয়ান্টামের মধ্যে, বা অতিপারমাণবিক স্তরে"। এটা কোনো কল্পনা নয়! এটিও বাস্তব, কারণ পুনঃজন্ম যাদের যাদের হয়েছে তারা তাদের আগের জন্মের কিছু স্মৃতি, এইজন্মেও স্মরণ করতে সক্ষম হয়েছে! এই শুনে হয়তো চার্বাকের ভাব-পুত্ররা দাঁত ক্যালাবে! তাই তাদের জন্য কিছু বাস্তব ও বিজ্ঞান ভিত্তিক প্রমাণ :-
-
[ প্রমাণ নং - ২, → http://www.express.co.uk/…/reincarnation-REAL-proof-life-af… ]
-
[প্রমাণ নং - ৩, → http://www.consciouslifestylemag.com/reincarnation-stories…/ ]
-
[ প্রমাণ নং - ৪, → https://www.thoughtco.com/reincarnation-best-evidence-25931… ]
-
আত্মা বিনা পুনঃজন্ম সম্ভব নয়! তাই আত্মা বলে কিছু আছে, তার আরো জোড়ালো প্রমাণ পাওয়া গেল।
এখন একটি প্রশ্ন মাথায় আসবে, দেহের মৃত্যু হলে আত্মা কোথাই গমন করে?
বেদের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন, ঋগ্বেদীয় ঐতরেয় উপনিষদের ১.১ তে উল্লেখ করা হয়েছে :-
In the beginning the Spirit was One and all this (universe) was the Spirit; there was nought else that saw. The Spirit thought, “Lo, I will make me worlds from out my being.”
অর্থ্যাৎ সৃষ্টির পূর্বে সেই এক পরমাত্মাই ছিলো যিনি মহাবিশ্ব ব্যাপী অবস্থান করছিলো।
Remembering, বিজ্ঞানীদের ভাষায় আত্মা হল -- "একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক স্মৃতি যা নিহিত থাকে কোয়ান্টামের মধ্যে বা পরাণুবিক স্তরে"। জীবাত্মা যেহেতু ওই পরমাত্মার অংশ তাই উক্ত ভৌত ধর্মটিও পরমাত্মার পক্ষেও প্রযোজ্য।
সৃষ্টির পূর্বে না ছিলো কোনো অণু, না ছিলো কোনো পরমাণু, ছিলো শুধু এই পরমাত্মা। তারই ইচ্ছা হলো "আমি এক থেকে বহু হব", এর পরিণামে সৃষ্টি হল মহাবিশ্ব এবং মহাবিশ্ব থেকে জীব। এরজন্য সমগ্র মহাবিশ্বটি হল সেই এক ঈশ্বরের বিমূর্ত রূপ এবং যিনি মূর্তমান রূপেও অবস্থান করছেন, আমাদের দেহের আকাশ তত্ত্বে। এই মহাবিশ্ব ব্যাপী যে কোয়ান্টাম স্তরের স্মৃতি আছে তা ধ্রুবক, সনাতন এবং এর না ধ্বংশ আছে না সৃষ্টি, না তার মানুষের দ্বারা পরিমাপ যোগ্য কোনো আকার আছে।
বাকি থাকে আত্মার গমনের প্রসঙ্গ?
Remembering, আগেই দেখুন বিজ্ঞানীরাই বলেছেন :-
"যখন জীবের মৃত্যু হয় তখন এই কোয়ান্টাম স্তরের স্মৃতি মহাবিশ্বে মুক্তি লাভ করে এবং যখন দেহ আবার জীবন লাভ করে তখন এই চৈতন্য আবার দেহে ফিরে আসে"। মহাবিশ্বটাই যখন ঈশ্বরের বিমূর্ত রূপ, তখন তো জীবাত্মা, শরীরের মৃত্যুর পরে, যাবে সেই 'তাঁর' কাছে।
কিন্তু এটিই চূড়ান্ত নয়, কারণ একটি নতুন জীবের যখন জন্ম হবে, তখন সেই জীবাত্মা আবার কোনো না কোনো জীবদেহে ফিরে আসবে! সুতরাং control টা কিন্তু তার হাতে থেকে গেলো। এবার এই পৃথিবী জুড়ে আছে যখন এত প্রকারের জীব, তো কোন জীবের দেহে পূর্বের মৃত শরীরের আত্মা প্রবেশ করানো হবে, সেটা কিন্তু ওই controller ই একমাত্র জানেন। controller এর যখন স্মৃতি আছে, তিনি চিন্তাশীলও হবেন!
-
তাহলে পঞ্চমহাভূতের অস্তিত্ব পাওয়া গেলো!
জীবনের সাথে প্রকৃতির কি সম্পর্ক তা জানা গেলো!
আত্মার অস্তিত্ব পাওয়া গেলো!
পুনঃজন্মের অস্তিত্ব পাওয়া গেলো!
পরমাত্মার অনুমান পাওয়া গেলো!
এখন চার্বাকের ভাব পুত্র তথা নাস্তিক বিজ্ঞানীরা কি আর দাঁত ক্যালাবেন?
© Samir Kumar Mondal
-------------------------------------------------------------------------
< দেহাত্মবাদ ও দেহতত্ত্ববাদ - কাল্পনিক না বিজ্ঞান? >
-#Share #Copy #Spreadthispost
বেদান্তসূত্র, ন্যায়সূত্র ও আয়ুর্ব্বেদসূত্রের দেহতত্ত্ববাদের ধারণা থেকে আমরা জানতে পারি জীবদেহ গঠনে বস্তুজগতের মূল উপাদান হল পঞ্চমহাভূত। কিন্তু অন্য দিকে আব্রাহামিক ধর্মগুলো বলে জীবদেহ শুধুমাত্র মাটি দিয়ে নির্মিত! আব্রাহামিক ধর্মের প্রথম মানব আদম শুধু একমুঠো ধুলা (মাটি) দিয়ে তৈরী হয়েছিলো। অপর দিকে ভোগবাদী নাস্তিকদের আদি ভাব-পিতা তথা চার্বাক, পঞ্চভূতের মধ্যে আকাশ তত্ত্বটি কে মানতেন না, এদিকে বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মে চার্বাকের মতকেই সমর্থন করেছিলো! কিন্তু এখন প্রশ্ন হল এগুলোর মধ্যে কোনটি সঠিক?
-
পঞ্চভূত বলতে বোঝানো হয় - ক্ষিতি (মাটি), অপ (জল), তেজঃ (অগ্নি), মরুৎ (বায়ু), ব্যোম (আকাশ) - এই পাঁচ মৌলিক প্রকৃতি তত্ত্ব কে।
যদি আমরা স্থূল দৃষ্টিতে জীবদেহ কে দেখি তো - দেহ তরল, মাংশ, হাড়, মল ইত্যাদি ছাড়া কিছুই দেখতে পাবো না! এগুলো কে যদি সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে দেখি তো কিছু কোষ ও কোষীয় অংশ ছাড়া কিছুই পাবো না!
এবার যদি অতি সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে দেখি তো পাবো জীবদেহ - কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, সালফার, ফসফরাস, ক্যালশিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আইরন, জিঙ্ক, আয়োডিন, কোবাল্ট ইত্যাদি কিছু রাসায়নিক পর্যায় সারণীর অন্তর্ভুক্ত মৌল গুলো দিয়ে গঠিত।
(১) এদের মধ্যে ক্ষিতি তত্ত্ব হল - দেহজাত সমস্ত খনিজ পদার্থ সমূহ যার প্রকৃতিক উৎস হল মাটি। যেমন - কার্বন, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, সালফার, পটাশিয়াম, সোডিয়াম ইত্যাদি।
(২) মরুৎ তত্ত্ব হল - দেহজাত বায়বীয় মৌল সমূহ যার উৎস হল প্রকৃতিক বায়ুমণ্ডল। যেমন - অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন, ইত্যাদি।
(৩) এর মধ্যে অপ তত্ত্বটি হল - বাস্তবে কতগুলি মরুৎ তত্ত্বের অন্তর্ভুক্ত মৌলের সমষ্টিজাত রূপ। সেগুলি হল হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এর মিলিত রূপ হল - জল, হাইড্রোজেন ও ক্লোরিনের মিলিত রূপ হল - হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড/পাকস্থলী থেকে ক্ষরিত রস, ইত্যাদি
-
এছাড়া এই তিনটি তত্ত্বের সমষ্টিজাত রূপ গুলি নিম্নরূপ -
* কার্বন + হাইড্রোজেন + অক্সিজেন = শর্করা ও ফ্যাটি অ্যাসিড জাতীয় জৈব যৌগ ইত্যাদি।
* কার্বন + হাইড্রোজেন + অক্সিজেন + নাইট্রোজেন = অ্যামাইনো অ্যাসিড ও প্রোটিন জাতীয় জৈব যৌগ ইত্যাদি।
* কার্বন + হাইড্রোজেন + অক্সিজেন + নাইট্রোজেন + ফসফরাস = বিভিন্ন নিউক্লিওটাইড, নিউক্লিওসাইড, DNA, RNA ইত্যাদি।
এগুলি হল দেহজাত বিভিন্ন বৃহৎদাকার জৈব অনু। বিজ্ঞানী স্ট্যানলি মিলার ও হ্যারল্ড উরে ১৯৫৩ সালে জলীয় বাষ্প, মিথেন, অ্যামোনিয়াম, হাইড্রোজেন মিশ্রনের উপর তড়িৎ স্ফুলিঙ্গ, তাপ প্রয়োগ ও শীতলীকরণের মাধ্যমে উৎপন্নজাত তরলে বিভিন্ন অ্যামাইনো অ্যাসিড (গ্লুটামিক অ্যাসিড, অ্যাসপারটিক অ্যাসিড, গ্লাইসিন, অ্যালানিন ইত্যাদি) ও জৈব যৌগ সমূহ (ইউরিয়া, সাকসিনিক অ্যাসিড, ফরমিক অ্যাসিড, অ্যাসেটিক অ্যাসিড, প্রপিওনিক অ্যাসিড ইত্যাদি) তৈরী করতে সমর্থন হয়েছিলেন।
-
(৪) তেজঃ তত্ত্বটি হল - তাপ! যা একপ্রকারের শক্তি, যা দেহস্থিত কোষীয় খাদ্য পদার্থের জারণে ফলে উৎপন্ন হয়।
আগেই উল্লেখ করেছি ক্ষিতি, মরুৎ ও অপ এই তিনটি তত্ত্ব দিয়ে দেহজাত বিভিন্ন বৃহৎ জৈবঅণু গুলি সৃষ্টি লাভ করেছে। উক্ত তিনটি তত্ত্বের সাথে যখন তেজঃ তত্ত্বটি মিলিত হল তখন উক্ত জৈবঅণু গুলো বিভিন্ন শৃঙ্খল আকারে সজ্জিত হয়ে কোয়াসারভেট মডেল ও মাইক্রোস্ফিয়ার মডেল, নিউক্লিও পলিমেরাইজেশন মডেল ইত্যাদি গঠিত হয়ে প্রথম আদিকোষ আকারে গঠন লাভ করে। তাপীয় তরঙ্গের দরুন জৈবঅণু গুলির মধ্যে ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মের পরিবর্তন ও পারস্পরিক অন্তঃক্রিয়া ফলে এই নির্দিষ্ট শৃঙ্খল জাত মডেলের রূপ নেয়। এইভাবে এক কোষ, সময়ের সাথে বিবর্তিত হয়ে, আজ বহুকোষীয় প্রাণী এবং সেখান থেকে আরো বিবর্তিত হয়ে বর্তমান মানব সৃষ্টি হয়েছে। তাই বিজ্ঞান ভিত্তিক ভাবে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে - ক্ষিতি, মরুৎ, অপ ও তেজঃ এই চারটি তত্ত্বই জীবদেহ গঠনের মূল উপাদান।
-
দৈত্য মধু ও কৈটবের পৌরাণিক উপাখ্যানটি আপনারা সবাই জানেন? যেখানে সৃষ্টির প্রারম্ভে শ্রীবিষ্ণু মধু কৈটব নামে দুই দৈত্য কে বধ করেন এবং সেই দৈত্যদের মেদ (চর্বি) থেকে এই মেদেনীর সৃজন করে। সাধারণ দৃষ্টিতে এই ঘটনাটি যে অবাস্তব তাতে কোনো সন্দেহ নেই, তবে আধ্যাত্মিক দিকে অবশ্যই বাস্তব! মেদ হল হল একটি তেলের ন্যায় চটচটে জাতীয় পদার্থ যা ওই কোয়াসারভেট, মাইক্রোস্ফিয়ার ইত্যাদি মডেলে শৃঙ্খলমান জৈব অণুসমূহের রূপক। ওই মডেলে সজ্জায়মান জৈব অণুগুলো কোলয়েড জাতীয় এবং লিপিড শর্করা ও প্রোটিনের বিভিন্ন অণু নিয়ে গঠিত একটি মিশ্র প্রকৃতির পদার্থ। তাই পৌরাণিক উপাখ্যান অনুসারে সৃজনকর্তা শ্রীবিষ্ণু মেদ থেকে মেদেনীর সৃজন করেছিলেন।
-
এবার প্রশ্ন হল জীবদেহ তো গঠিত হল! কিন্তু এতে প্রাণ কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে?
পদার্থবিদ্যার অন্তর্ভুক্ত একটি শাখা তাপগতিবিদ্যা (thermodynamics) এর সিস্টেমের ব্যাখাতে "যতক্ষণ দুটি সিস্টেমের মধ্যে জড় বা শক্তির, বা উভয়ের আদান প্রদান হয়, ততক্ষণ সিস্টেমটিকে গতিশীল হিসাবে বিবেচনা করা হয়"। এটাকেই জীবন বিজ্ঞানের ভাষাই বলা হয় প্রাণ! এখানে একটি সিস্টেম হল প্রকৃতি এবং অপর সিস্টেমটি হল জীবদেহ। আমরা যে খাবার খাই তাতে - জড় পদার্থ ও তার মধ্যে অন্তঃস্থিত স্থৈতিক শক্তি (ATP) থাকে, যা সালোকসংশ্লেষণ পক্রিয়ায়, সৌরশক্তি থেকে রূপান্তরিত হয়, এবং তা জীবদেহে গতিশক্তি ও তাপশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। শরীর প্রয়োজনীয় তাপশক্তি কাজে লাগানোর পর, অবশিষ্ট তাপশক্তি শরীর থেকে তাপীয় তরঙ্গ আকারে বিকিরণ পদ্ধতিতে বেরিয়ে যায় প্রকৃতিতে। প্রকৃতির সাথে এই শক্তি ও জড়ের আদান-প্রদান চলতেই থাকে যতক্ষণ না জীবদেহের মৃত্যু হয়। শক্তির ধ্বংশ নাই সৃষ্টি নাই তাই শক্তি সনাতন স্বরূপ। এই সূত্রের উপর ভিত্তি করে শাক্ত দর্শনের "আদ্যশক্তি" নামক একটি তত্ত্ব উৎপত্তি লাভ করেছে। যেহেতু এই আদ্যশক্তির সাথে আমাদের শরীর নাড়ীর সংযোগ তুল্য সম্পর্ক, তাই আদ্যশক্তি তত্ত্বটি হল দার্শনিক দৃষ্টিতে "জননী" স্বরূপ।
-
কিন্তু এই শরীর ও প্রাণ থাকার অর্থ, আপনি এখনো কোমাতে আছেন! আপনার মধ্যে সেই চৈতন্য, বা আত্মার, শুধু অভাব আছে, অর্থ্যাৎ আপনার মস্তিষ্কে, সেই কার্যকারী তত্ত্বটি নেই, যা আপনাকে চিনতে, বুঝতে ও স্মরণে সাহায্য করে!
এখানেই কাজে আসে পঞ্চভূতের সেই অন্তিম তত্ত্বটি, যা হল "ব্যোম" বা "আকাশ"। এই ব্যোম তত্ত্বটি হল - দেহস্থিত শূন্যস্থান। শূন্যস্থান বলতে বোঝায়, যে স্থানে কোয়ান্টাম স্টেট ছাড়া আর কিছুই থাকে না। এই শূন্যস্থানে অবস্থান করে "জীবাত্মা", যাকে পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় কোয়ান্টাম স্তরের স্মৃতি বলা হচ্ছে। মানুষের দেহে এইরূপ শূন্যস্থান একমাত্র স্নায়ুকোষীয় নিউরোফ্রাইবিল বা মাইক্রোটিউবিউলেই মধ্যেই আছে। এই বিংশতি শতাব্দীতে এসে, বিজ্ঞান সেটা কিছুটা হলেও, অনুমান করতে পেরেছে।
এর প্রমাণ দেখিয়ে দেওয়া ভালো, নইলে চার্বাকের ভাব-পুত্র তথা নাস্তিক পণ্ডিতরা দাঁত ক্যালাবে!
-
[প্রমাণ নং - ১, → https://www.thesun.co.uk/…/researchers-claim-that-humans-h…/ ]
এখানে কিছু খ্যাতনামা পদার্থবিদ বলছেন মৃত্যুর পরে শরীরের চৈতন্য বা আত্মা জীবিত থাকে। পদার্থবিদ স্যার রোগার পেনরোস অনুমান করেছেন, বিজ্ঞানের ব্যাখাতে এই চৈতন্য হল, "packet of information stored at a quantum or sub-atomic - level", অর্থ্যাৎ একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক স্মৃতি, যা নিহিত থাকে কোয়ান্টামের মধ্যে, বা অতিপরমাণবিক স্তরে। এটি অবস্থান করে, কোষীয় মাইক্রোটিউবিউলের মধ্যে। যখন জীবের মৃত্যু হয় তখন এই কোয়ান্টাম স্তরের স্মৃতি মহাবিশ্বে মুক্তি লাভ করে, এবং যখন দেহ আবার জীবন লাভ করে, তখন এই চৈতন্য আবার দেহে ফিরে আসে দেহে এবং এই চৈতন্য হল সনাতন। তার এই তত্ত্বটিকে আরেক প্রসিদ্ধ পদার্থবিদ ম্যাক্স প্ল্যাঙ্কও উৎসাহিত করেছেন।
একই কথা শ্রীকৃষ্ণ তার ভগবত গীতায় উল্লেখ করে গেছেন। ভগবত গীতায়, ২.১৩ তে উল্লেখ করা হয়েছে -- দেহের মৃত্যু হলে আত্মার দেহান্তরিত হয়। ভগবত গীতার ২.১৮ তে উল্লেখ আছে -- আত্মা নিত্য, অবিনাশী ও শাশ্বত সনাতন। ভগবত গীতার ২.২০ তে উল্লেখ আছে -- আত্মার জন্ম মৃত্যু ও বৃদ্ধি হয় না, শরীর নষ্ট হলেও আত্মা বিনষ্ট হয় না। ভগবত গীতার ২.২৩ তে উল্লেখ আছে -- আত্মাকে কাটা যায় না, পোড়ানো যায় না, ভেজানো যায় না ও শুকানো যায় না। তাহলে কৃষ্ণের কথাগুলো যে সত্য এবং সেইগুলো ঘুরে ফিরে বিজ্ঞানীদের মুখে শোনা গেল, [ তবে, তা কি প্রমাণিত হল ? ]।
-
Remembering, পদার্থবিদদের অনুমানে, "আত্মা হল একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক স্মৃতি, যা নিহিত থাকে কোয়ান্টামের মধ্যে, বা অতিপারমাণবিক স্তরে"। এটা কোনো কল্পনা নয়! এটিও বাস্তব, কারণ পুনঃজন্ম যাদের যাদের হয়েছে তারা তাদের আগের জন্মের কিছু স্মৃতি, এইজন্মেও স্মরণ করতে সক্ষম হয়েছে! এই শুনে হয়তো চার্বাকের ভাব-পুত্ররা দাঁত ক্যালাবে! তাই তাদের জন্য কিছু বাস্তব ও বিজ্ঞান ভিত্তিক প্রমাণ :-
-
[ প্রমাণ নং - ২, → http://www.express.co.uk/…/reincarnation-REAL-proof-life-af… ]
-
[প্রমাণ নং - ৩, → http://www.consciouslifestylemag.com/reincarnation-stories…/ ]
-
[ প্রমাণ নং - ৪, → https://www.thoughtco.com/reincarnation-best-evidence-25931… ]
-
আত্মা বিনা পুনঃজন্ম সম্ভব নয়! তাই আত্মা বলে কিছু আছে, তার আরো জোড়ালো প্রমাণ পাওয়া গেল।
এখন একটি প্রশ্ন মাথায় আসবে, দেহের মৃত্যু হলে আত্মা কোথাই গমন করে?
বেদের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন, ঋগ্বেদীয় ঐতরেয় উপনিষদের ১.১ তে উল্লেখ করা হয়েছে :-
In the beginning the Spirit was One and all this (universe) was the Spirit; there was nought else that saw. The Spirit thought, “Lo, I will make me worlds from out my being.”
অর্থ্যাৎ সৃষ্টির পূর্বে সেই এক পরমাত্মাই ছিলো যিনি মহাবিশ্ব ব্যাপী অবস্থান করছিলো।
Remembering, বিজ্ঞানীদের ভাষায় আত্মা হল -- "একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক স্মৃতি যা নিহিত থাকে কোয়ান্টামের মধ্যে বা পরাণুবিক স্তরে"। জীবাত্মা যেহেতু ওই পরমাত্মার অংশ তাই উক্ত ভৌত ধর্মটিও পরমাত্মার পক্ষেও প্রযোজ্য।
সৃষ্টির পূর্বে না ছিলো কোনো অণু, না ছিলো কোনো পরমাণু, ছিলো শুধু এই পরমাত্মা। তারই ইচ্ছা হলো "আমি এক থেকে বহু হব", এর পরিণামে সৃষ্টি হল মহাবিশ্ব এবং মহাবিশ্ব থেকে জীব। এরজন্য সমগ্র মহাবিশ্বটি হল সেই এক ঈশ্বরের বিমূর্ত রূপ এবং যিনি মূর্তমান রূপেও অবস্থান করছেন, আমাদের দেহের আকাশ তত্ত্বে। এই মহাবিশ্ব ব্যাপী যে কোয়ান্টাম স্তরের স্মৃতি আছে তা ধ্রুবক, সনাতন এবং এর না ধ্বংশ আছে না সৃষ্টি, না তার মানুষের দ্বারা পরিমাপ যোগ্য কোনো আকার আছে।
বাকি থাকে আত্মার গমনের প্রসঙ্গ?
Remembering, আগেই দেখুন বিজ্ঞানীরাই বলেছেন :-
"যখন জীবের মৃত্যু হয় তখন এই কোয়ান্টাম স্তরের স্মৃতি মহাবিশ্বে মুক্তি লাভ করে এবং যখন দেহ আবার জীবন লাভ করে তখন এই চৈতন্য আবার দেহে ফিরে আসে"। মহাবিশ্বটাই যখন ঈশ্বরের বিমূর্ত রূপ, তখন তো জীবাত্মা, শরীরের মৃত্যুর পরে, যাবে সেই 'তাঁর' কাছে।
কিন্তু এটিই চূড়ান্ত নয়, কারণ একটি নতুন জীবের যখন জন্ম হবে, তখন সেই জীবাত্মা আবার কোনো না কোনো জীবদেহে ফিরে আসবে! সুতরাং control টা কিন্তু তার হাতে থেকে গেলো। এবার এই পৃথিবী জুড়ে আছে যখন এত প্রকারের জীব, তো কোন জীবের দেহে পূর্বের মৃত শরীরের আত্মা প্রবেশ করানো হবে, সেটা কিন্তু ওই controller ই একমাত্র জানেন। controller এর যখন স্মৃতি আছে, তিনি চিন্তাশীলও হবেন!
-
তাহলে পঞ্চমহাভূতের অস্তিত্ব পাওয়া গেলো!
জীবনের সাথে প্রকৃতির কি সম্পর্ক তা জানা গেলো!
আত্মার অস্তিত্ব পাওয়া গেলো!
পুনঃজন্মের অস্তিত্ব পাওয়া গেলো!
পরমাত্মার অনুমান পাওয়া গেলো!
এখন চার্বাকের ভাব পুত্র তথা নাস্তিক বিজ্ঞানীরা কি আর দাঁত ক্যালাবেন?
© Samir Kumar Mondal
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন