শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৭

আম্বেদকর



আম্বেদকর ও একদল গোঁড়া হিন্দু পণ্ডিত


শেয়ার করেছেন     প্রণব কুমার কুণ্ডু।


Prasanta Kumar Mondal        Nani Gopal Barui এবং অন্যান্য 33 জন এর সঙ্গে আছেন।
27 ডিসেম্বর 2016 ·

জঘন্য জাত-ব্যবস্থাকে বাঁচাতে ডঃ আম্বেদকর সকাশে একদল গোঁড়া হিন্দু পণ্ডিত।
পণ্ডিতঃ তুমি ডঃ আম্বেদকর ?
আম্বেদকরঃ হ্যাঁ,বলুন।
পণ্ডিতঃ তুমি কিসের ডাক্তার?
আম্বেদকরঃ আজ্ঞে,আমি ডাক্তার নই।
পণ্ডিতঃ যাই হোক তুমি ডাক্তারি ছেড়ে ধর্মের পিছনে পড়লে কেন?
আম্বেদকরঃ আমি কোথায় ধর্মের পিছনে পড়লাম?
পণ্ডিতঃ তুমি হিন্দুধর্ম থেকে জাত-ব্যবস্থা বা বর্ণপ্রথাকে উচ্ছেদ করতে চাও?
আম্বেদকরঃ হ্যাঁ।
পণ্ডিতঃ কেন?
আম্বেদকরঃ কারণ জঘন্য জাত-ব্যবস্থা বা বর্ণপ্রথা হিন্দধর্ম তথা মানবতার শত্রু,দেশেরও শত্রু।জাত-ব্যবস্থাই পরিকল্পিত ভাবে মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করেছে।মানুষকে পশু প্রতিপন্ন করেছে।তাই।
পণ্ডিতঃ তুমি জান কী?জাত-ব্যবস্থা হিন্দুধর্মের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ?
আম্বেদকরঃ অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হলেও সমস্ত শরীর(দেশ)এর মঙ্গলের জন্য ঐ বিষাক্ত অঙ্গকে কেটে ফেলতেই হবে।
পণ্ডিতঃ হিন্দুধর্ম সম্বন্ধে তোমার কোন জ্ঞান আছে কী?
আম্বেদকরঃ পূর্ণমাত্রায় আছে।যে ধর্মের জঘন্য জাত-ব্যবস্থা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে হীন,নীচ প্রতিপন্ন করে তাদের জীবনকে পশুতল্য করেছে এবং সমাজে অসাম্য,অবিচার,শোষণ,বঞ্চনা সৃষ্টি করে দেশকে দুর্বল করছে,সে ধর্মকে তো জানতেই হবে।
পণ্ডিতঃ তুমি জান কী? চতুবর্র্ণ ব্যবস্থা বা জাত-ব্যবস্থা ভগবানের সৃষ্টি?ভগবানের মুখ থেকে আমরা মানে ব্রাহ্মণ,বাহু থেকে ক্ষত্রিয়,উরু থেকে বৈশ্য এবং পদতল থেকে শূদ্রের জন্ম।
আম্বেদকরঃ ধর্মশাস্ত্রে তাই লেখা আছে।এসব লিখেছে ব্রাহ্মণ,চালিয়েছে ভগবানের নামে।
পণ্ডিতঃ পূর্বজন্মের কর্মফল অনুসারে ভগবান চার জাত বা বর্ণের মানুষ সৃষ্টি করেছেন।শূদ্রের ঘৃণিত জন্ম ও কর্ম পূর্বজন্মের কর্মের ফল।এবিষয়ে মানুষের কিছু করার নেই।
আম্বেদকরঃ শুধু মানুষ কেন?প্রতিটি প্রাণের সৃষ্টি জৈবিক পদ্ধতিতে।জাত-ব্যবস্থা বা বর্ণপ্রথা জঘন্য--ব্রাহ্মণ্যবাদের বিষাক্ত ফসল।এ বিষয়ে ভগবানের কোন হাত বা পা নেই।
পণ্ডিতঃ তাহলে তুমি ভগবান ও তার বিধানকে মান না?
আম্বেদকরঃ ভগবান বলে কেউ যদি মানুষ সৃষ্টি করতেন,  তাহলে তিনি নিশ্চয় মানুষে মানুষে বিভেদ,বৈষম্য তৈরী করে,  তার সৃষ্ট মানুষের জীবনকে পশুতুল্য করতেন না।এসব ধান্দাবাজ ব্রাহ্মণ্যবাদীদের কাজ।
পণ্ডিতঃ তুমি কী বলতে চাও ভগবান মানুষের মঙ্গলের জন্য জাত-ব্যবস্থা বা বর্ণপ্রথা সৃষ্টি করেন নি?
আম্বেদকরঃ না,করেন নি।ব্রাহ্মণরা জঘন্য জাত-ব্যবস্থা সৃষ্টি করেছেন,  কেবল নিজেদের মঙ্গলের জন্য।
পণ্ডিতঃ আমার সহ পণ্ডিতরা বলছে,তুমি নাকি মস্ত জ্ঞানী ব্যক্তি।কিন্তু আমার তো মনে হচ্ছে তুমি মহামূর্খ।
আম্বেদকরঃ ব্রাহ্মণ্যবাদীরা তাই বলে।
পণ্ডিতঃ তাহলে তুমি ভগবানের চতুর্বর্ণ প্রথা বা জাত-ব্যবস্থা উচ্ছেদের সংকল্প থেকে বিরত হবে না?
আম্বেদকরঃ না।মানুষের মঙ্গলের জন্য এ কাজ আমাকে করতেই হবে।
পণ্ডিতঃ কিছু মনে করো না।তোমার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে আমার সন্দেহ হচ্ছে।
আম্বেদকরঃ কারণ?
পণ্ডিতঃ কারণ আজ পর্যন্ত কোন শিক্ষিত মানুষ এমন দুঃসাহস দেখায় নি।
পণ্ডিতঃ আমরা তোমার শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করতে চাই।
আম্বেদকরঃ করুন যাচাই।
পণ্ডিতঃ সহপণ্ডিতগণ,তোমরা আম্বেদকরের শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করো।
সহপণ্ডিতঃ শুনুন পণ্ডিতগণ আম্বেদকরের শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ-B.A., M.A., M.Sc., D.SC., P.h.D., L.L.D., D.Litt., Bar-at-Law.
পণ্ডিতঃ ওহঃ ! তুমি সামান্য এই ABCD পড়ে নিজেকে মহাজ্ঞানী পণ্ডিত মনে করো?
আম্বেদকরঃ শুধুই মৃদু হাসলেন। @Prasanta Kuamar Mondal (PKM)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন