শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৭

রামায়ণের অংশ ২


রামায়ণের অংশ ২

এবেলা.ইন-এর ফেসবুক-পোস্টিং,           শেয়ার করেছেন      প্রণব কুমার কুণ্ডু।


রামায়ণের অংশ




চার ভাই কেবল নয়, শ্রীরামচন্দ্রের এক বোনও ছিলেন! রামায়ণ-এ কোথায় তিনি
নিজস্ব প্রতিবেদন, এবেলা.ইন | ১৬ নভেম্বর, ২০১৭, ১৩:৩২:৫৪ | শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর, ২০১৭, ১৩:৩৪:১৮
রামচন্দ্রও তাঁর তিন ভ্রাতা শান্তা সম্পর্কে দীর্ঘকাল অনবহিতই ছিলেন। দশরথ বা কৌশল্যা তাঁদের কিছুই জানাননি। শান্তার এই অনুল্লেখের পিছনে রয়েছে এক আশ্চর্য কাহিনি।

শান্তা
রামচন্দ্র ও তাঁর অগ্রজা শান্তা।

মহাকাব্য ‘রামায়ণ’-এ এমন কিছু ঘটনা ও চরিত্র রয়েছে, যাদের বিষয়ে কাব্যের মূল কাঠামো খানিকটা নীরবই থাকে বলা যায়। এমনই এক চরিত্র দশরথকন্যা শান্তা এবং এমনই এক ঘটনা তাঁর প্রায় অনুল্লেখ্য থাকা।

‘রামায়ণ’ পড়তে বসলে দেখা যায়, আদিকাণ্ডে এ কথার উল্লেখ রয়েছে যে রাজা দশরথ অপুত্রক ছিলেন এবং তিনি পুত্রলাভের আশায় পুত্রেষ্টী যজ্ঞ করেছিলেন এবং এই যজ্ঞের ফলেই তাঁর তিন রানির গর্ভে চার পুত্রসন্তান জন্ম নেয়।

কিন্তু একথার উল্লেখও আদিপর্বে রয়েছে যে, রাজা অপুত্রক ছিলেন বটে, তিনি নিঃসন্তান ছিলেন না।
 বড়রানি কৌশল্যার গর্ভে তাঁর একটি কন্যাসন্তান হয়েছিল।
 তিনিই দশরথের জ্যেষ্ঠ সন্তান। তাঁর নাম শান্তা।

কিন্তু রাজা দশরথ এই কন্যাকে অঙ্গরাজ রোমপাদকে দত্তক হিসেবে দান করেন।
রামচন্দ্র ও তাঁর তিন ভ্রাতা,  শান্তা সম্পর্কে অনবহিতই ছিলেন। দশরথ বা কৌশল্যা তাঁদের কিছুই জানাননি।
শান্তার এই অনুল্লেখের পিছনে রয়েছে এক আশ্চর্য কাহিনি।

‘রামায়ণ’ থেকেই জানা যায়, দশরথ মাত্র ৮ মাস বয়সে তাঁর পিতা ও মাতাকে হারান। তিনি এক ঋষির তত্ত্বাবধানে বড় হন। এই ঋষিই তাঁক সর্ববিদ্যাবিশারদ করে তোলেন। যথাসময়ে তাঁর সঙ্গে কোশলরাজের কন্যা কৌশল্যার বিবাহ হয়। এই বিবাহবন্ধনেই জন্ম নেয় শান্তা।
সর্বসুলক্ষণা এই কন্যাকে দশরথ প্রায় পুত্রের মতোই মানুষ করতে থাকেন। কিন্তু পুত্রহীন রাজা রাজ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত হয়ে পড়েন।
কৌশল্যার পরে তিনি কৈকেয়ী ও সুমিত্রাকে বিবাহও করেন।
কিন্তু এতেও কোনও ফল না হওয়ায় তিনি মহামুনি বশিষ্ঠের শরণ নেন।

বশিষ্ঠ তাঁকে মহাতেজা ঋষি বিভাণ্ডকের কথা বলেন।
বিভাণ্ডকের কঠোর তপস্যায় ভয় পেয়ে দেবরাজ ইন্দ্র উর্বশীকে প্রেরণ করেছিলেন। বিভাণ্ডকের তপস্যা উর্বশী ভঙ্গ করেন এবং তাঁদের একটি পুত্রসন্তান জন্মায়। এই পুত্রটিই উগ্রতেজা ঋষি ঋষ্যশৃঙ্গ।

বিভাণ্ডক ঋষ্যশৃঙ্গকে কঠোর ব্রহ্মচর্য শিক্ষা দান করতে থাকেন। ঋষ্যশৃঙ্গ এক নির্জন স্থানে নারীসঙ্গ বিবর্জিত বড় হতে থাকেন।
দশরথকে বশিষ্ঠ জানান, যদি কোনও নারী ঋষ্যশৃঙ্গকে পারিবরিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারেন, তিনি এমন যজ্ঞ করতে পারবেন, যাতে দশরথ পুত্রমুখ দর্শন করতে পারবেন।
দশরথ তাঁর কন্যা শান্তার শরণ নেন। শান্তা রাজা রোমপাদের গৃহে বৈভবের মধ্যেই বেড়ে উঠেছিলেন। তিনিও ছিলেন সর্ববিদ্যা বিশারদ এবং বিপুল গুণের অধিকারিণী।
পিতার আজ্ঞা পালন করতে শান্তা ঋষ্যশৃঙ্গের কাছে যান ও তাঁকে জনসমক্ষে ফিরে আসতে সাহায্য করেন।
পুত্রেষ্টী যজ্ঞের পরে শান্তা ঋষ্যশৃঙ্গকে বিবাহ করেন। এবং রাজকীয় বৈভব ছেড়ে ঋষিপত্নীর নিরাভরণ জীবনকে বেছে নেন।
এদিক থেকে দেখলে শান্তার অস্তিত্ব ছাড়া ‘রামায়ণ’-ই সম্ভব ছিল না।

নেপালের ললিতপুর জেলায় ঋষ্যশৃঙ্গের এক মন্দির রয়েছে।
সেখানে মহামুনি ঋষ্যশৃঙ্গের সঙ্গে শান্তাও দেবী হিসেবে পূজিতা হন।



* সূত্র: 'এবেলা.ইন'।      শেয়ার করেছেন        প্রণব কুমার কুণ্ডু।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন