চরিত্রের বহিরঙ্গ রূপটি চর্চা-ভিত্তিক এবং সেগুলি দৈনন্দিন জীবনে পালনীয়।
চরিত্রের বহিরঙ্গ রূপ
চরিত্রের বহিরঙ্গ রূপটি চর্চা-ভিত্তিক এবং সেগুলি দৈনন্দিন জীবনে পালনীয়। চরিত্রের বহিরঙ্গের সুস্পষ্ট কয়েকটি লক্ষণ আছে। যেমনঃ
১। উদ্যোগী হওয়া: ভালো হওয়ার জন্য উদ্যোগ প্রয়োজন, রোখ চাই।
নীতিশাস্ত্রে একটি উক্তি আছে—
উদ্যোগিনং পুরুষসিংহমুপৈতি লক্ষ্মী।
ন হি সুপ্তস্য সিংহস্য প্রবিশন্তি মুখে মৃগাঃ।।
—উদ্যোগী পুরুষসিংহের নিকট লক্ষ্মীদেবী আসেন। সুপ্ত সিংহের মুখে মৃগ (নিজে নিজে) প্রবেশ করে না। মৃগবধের উদ্যোগ চাই, পলায়মান মৃগের পশ্চাতে ধাবমান হতে হয়। শুভ ভাব আয়ত্তে আনবার জন্য আগ্রহ ও উদ্যম প্রয়োজন।
২। দীর্ঘসূত্রী না হওয়া: কোন কাজই ফেলে রাখতে নেই। সাধক তুলসীদাসের একটি দোঁহা রয়েছে—
কাল কর্ যো আজ কর্
আজ কর্ যো আভি
পল্ মে পরলয় হো যায়গা
বহুরী করেগা কভ্?
—কাল যা করার কথা, সে কাজ আজই কর। আর আজ করার যে কাজ, সে কাজ এখুনিই করো। মুহূর্তের মধ্যে প্রলয় ঘটে যেতে পারে,— আসল কাজ কবে করবে? তাই কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করার অভ্যাস প্রয়োজন, তাতে সময় সাশ্রয় হয়। মানসিক চাঞ্চল্য পরিহার করা যায়। সময়মতো করণীয় কাজ সম্পন্ন করতে পারলে মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখা অধিকতর সহজ হয়।
৩। আলস্য পরিত্যাগ: অলসতা কাল হরণ করে। তামসিক প্রবৃত্তির মানুষ অলস হয়। তামসিকতার প্রধান শত্রু নিরলস হওয়া। আর যিনি নিরলস, ঈশ্বর তাঁর সহায়।
৪। সময়ানুবর্তী হওয়া: সময়মতো চলা-ফেরা ও কাজ করা যৌথ জীবনে অপরিহার্য। কোনও নির্দিষ্ট সময়ে কোথাও যেতে হবে বা কোনও কাজ শেষ করতে হবে, স্থির করলে নির্ধারিত সময়ে কাজটি শেষ করা উচিত। মানুষের জীবন অতি স্বল্পস্থায়ী কিন্তু কর্তব্য কর্মের তালিকা দীর্ঘ। তাই সময়ের সদ্ব্যবহার না করতে পারলে অনেক কাজই অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
৫। মিষ্টভাষী ও সদাচারী হওয়া: মানুষে মানুষে ব্যবহার ও আচার আচরণ যত শোভন হবে, ততই সমাজটা বাসযোগ্য হয়ে উঠবে। ধরি, আপনার কোনও আত্মীয়-স্বজন হঠাৎ বিপদে পড়েছেন। তিনি দিশেহারা, আপনি গিয়ে পাশে দাঁড়ালেন, তিনি অকূলসমুদ্রে যেন পরম ভরসা পেলেন। আপনার সমবাদনায় তাঁর ভারাক্রান্ত মন হাল্কা হলো, তিনি ভরসা ফিরে পেলেন। স্বামী বিবেকানন্দ কথাপ্রসঙ্গে বলেছেন, “দুঃখার্ত মানুষের দুঃখ লাঘবের জন্য কেউ অর্থকারী সাহায্য বা সময় বা পরিশ্রম দান না করতেও পারেন, বা তার সামর্থ্য নাও থাকতে পারে, কিন্তু সর্বক্ষেত্রেই আন্তরিক সমবেদনা তাঁর দুঃখকে লাঘব করতে পারে।” তাই তিনি নির্দেশ দিচ্ছেন— মানুষের দুঃখে কেউ যদি কিছু না করতেও পারে, সে যেন অন্তত দুটো মিষ্টি কথা বলে। দ্বিতীয়ত কর্কশ ভাষায় নির্দেশ দিলে মানুষের স্বাধীন সত্তা-স্বাভাবিক কারণেই বিদ্রোহ করে ওঠে। কিন্তু আন্তরিকভাবে আপন মনে করে কথা বললে তার ভালো লাগে, মনে তার প্রেরণা জাগে।
কমল নন্দীর ‘চারিত্রিক উৎকর্ষ’ থেকে
১। উদ্যোগী হওয়া: ভালো হওয়ার জন্য উদ্যোগ প্রয়োজন, রোখ চাই।
নীতিশাস্ত্রে একটি উক্তি আছে—
উদ্যোগিনং পুরুষসিংহমুপৈতি লক্ষ্মী।
ন হি সুপ্তস্য সিংহস্য প্রবিশন্তি মুখে মৃগাঃ।।
—উদ্যোগী পুরুষসিংহের নিকট লক্ষ্মীদেবী আসেন। সুপ্ত সিংহের মুখে মৃগ (নিজে নিজে) প্রবেশ করে না। মৃগবধের উদ্যোগ চাই, পলায়মান মৃগের পশ্চাতে ধাবমান হতে হয়। শুভ ভাব আয়ত্তে আনবার জন্য আগ্রহ ও উদ্যম প্রয়োজন।
২। দীর্ঘসূত্রী না হওয়া: কোন কাজই ফেলে রাখতে নেই। সাধক তুলসীদাসের একটি দোঁহা রয়েছে—
কাল কর্ যো আজ কর্
আজ কর্ যো আভি
পল্ মে পরলয় হো যায়গা
বহুরী করেগা কভ্?
—কাল যা করার কথা, সে কাজ আজই কর। আর আজ করার যে কাজ, সে কাজ এখুনিই করো। মুহূর্তের মধ্যে প্রলয় ঘটে যেতে পারে,— আসল কাজ কবে করবে? তাই কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করার অভ্যাস প্রয়োজন, তাতে সময় সাশ্রয় হয়। মানসিক চাঞ্চল্য পরিহার করা যায়। সময়মতো করণীয় কাজ সম্পন্ন করতে পারলে মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখা অধিকতর সহজ হয়।
৩। আলস্য পরিত্যাগ: অলসতা কাল হরণ করে। তামসিক প্রবৃত্তির মানুষ অলস হয়। তামসিকতার প্রধান শত্রু নিরলস হওয়া। আর যিনি নিরলস, ঈশ্বর তাঁর সহায়।
৪। সময়ানুবর্তী হওয়া: সময়মতো চলা-ফেরা ও কাজ করা যৌথ জীবনে অপরিহার্য। কোনও নির্দিষ্ট সময়ে কোথাও যেতে হবে বা কোনও কাজ শেষ করতে হবে, স্থির করলে নির্ধারিত সময়ে কাজটি শেষ করা উচিত। মানুষের জীবন অতি স্বল্পস্থায়ী কিন্তু কর্তব্য কর্মের তালিকা দীর্ঘ। তাই সময়ের সদ্ব্যবহার না করতে পারলে অনেক কাজই অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
৫। মিষ্টভাষী ও সদাচারী হওয়া: মানুষে মানুষে ব্যবহার ও আচার আচরণ যত শোভন হবে, ততই সমাজটা বাসযোগ্য হয়ে উঠবে। ধরি, আপনার কোনও আত্মীয়-স্বজন হঠাৎ বিপদে পড়েছেন। তিনি দিশেহারা, আপনি গিয়ে পাশে দাঁড়ালেন, তিনি অকূলসমুদ্রে যেন পরম ভরসা পেলেন। আপনার সমবাদনায় তাঁর ভারাক্রান্ত মন হাল্কা হলো, তিনি ভরসা ফিরে পেলেন। স্বামী বিবেকানন্দ কথাপ্রসঙ্গে বলেছেন, “দুঃখার্ত মানুষের দুঃখ লাঘবের জন্য কেউ অর্থকারী সাহায্য বা সময় বা পরিশ্রম দান না করতেও পারেন, বা তার সামর্থ্য নাও থাকতে পারে, কিন্তু সর্বক্ষেত্রেই আন্তরিক সমবেদনা তাঁর দুঃখকে লাঘব করতে পারে।” তাই তিনি নির্দেশ দিচ্ছেন— মানুষের দুঃখে কেউ যদি কিছু না করতেও পারে, সে যেন অন্তত দুটো মিষ্টি কথা বলে। দ্বিতীয়ত কর্কশ ভাষায় নির্দেশ দিলে মানুষের স্বাধীন সত্তা-স্বাভাবিক কারণেই বিদ্রোহ করে ওঠে। কিন্তু আন্তরিকভাবে আপন মনে করে কথা বললে তার ভালো লাগে, মনে তার প্রেরণা জাগে।
কমল নন্দীর ‘চারিত্রিক উৎকর্ষ’ থেকে
বর্তমান থেকে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন