মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০

হালাল করা মাংস

 হালাল করা মাংস


প্রণব কুমার কুণ্ডু






প্রণব কুমার কুণ্ডু


হালাল করতে হবে এমন পশু-পাখির মাংসের ক্ষেত্রে, পশু-পাখিকে মক্কার দিকে মুখ করিয়ে, আড়াই প্যাঁচে, একটু একটু করে,  পশুপাখিকে কষ্ট দিয়ে দিয়ে, কণ্ঠনালী ছেদ করিয়ে, মারতে হবে !


হালাল করবে কারা ?


কেবল মুসলমানেরাই হালাল করার অধিকারী !


হালালের বিপরীতে, হিন্দুদের ক্ষেত্রে, ঝটকা মাংস, যা এক কোপে, দ্রুততার সাথে কাটতে হয় !


হালাল

 হালাল


প্রণব কুমার কুণ্ডু











প্রণব কুমার কুণ্ডু


হালাল certified না হলে, ৫৮টি মুসলিম দেশে, কোন মাল বেচা, আজকের দিনে সম্ভব নয় !

হালাল মাংস শুধু পশু-পাখিদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়, হালাল না হলে, যে কোন মালই, তা ওষুধ হোক বা অন্য কোন consumer item হোক, কোন মুসলিম দেশে বেচবার উপায় নেই !

মুসলিমরা কেমন নিয়ম-নির্দেশ মেনে চলেছে দেখুন !

হিন্দুরা, মুসলমানদের তুলনায়,  কেমন পদে পদে পেছিয়ে পড়ছে দেখুন !

 



 


শেয়ার করেছেন :- প্রণব কুমার কুণ্ডু










প্রণব কুমার কুণ্ডু

27 সেপ্টেম্বর, 11:48 PM-এ
 
রামমোহন রায় ম্যানচেষ্টার, লন্ডন ও প্যারিস ভ্রমণ শেষে ব্রিস্টল পৌঁছন ১৮৩৩ সালে সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে।
সেখানে মাত্র আটদিনের জ্বরে ২৭ সেপ্টেম্বর, ১৮৩৩ সালে, ৬২ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়।
শেষ কয়েকটি দিনের চিকিৎসক ছিলেন ডাক্তার এসলিন। ডাক্তার এসলিন রোগের মুহূর্তগুলোর বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছিলেন।
তাতেই জানা যায় রোগের শেষ অবস্থায় তিনি বারবার অচেতন হওয়ার পর কোমায় চলে যাচ্ছিলেন।
ডাক্তার এসলিন লিখেছেন---" শীঘ্রই তিনি সংজ্ঞা ও বাক্শক্তি হারাইতে লাগিলেন; তথাচ সময়ে সময়ে জ্ঞানলাভ করিয়া চতুষ্পার্শবর্তী বন্ধুগণকে তাঁহাদের সেবার জন্য সকৃতজ্ঞ হৃদয়ে ধন্যবাদ প্রদান করিতেছিলেন।" ( অনুবাদ: নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়)
নানান সমীক্ষা থেকে জানা যায় যে সেইসময় ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্য পরিষেবা, চিকিৎসকদের গুণগত মান অত্যন্ত নিম্ন মানের ছিল এবং তখনও পর্যন্ত সেখানে নাপিতরাই সার্জেনের কাজ করত। "রয়াল কলেজ অব ফিজিসিয়ানস" থেকে যারা পাস করত তাদের কোনো রাজকীয় সনদ ছিল না, যেটা নাপিতদের সংগঠনের ছিল। ফলে পাস করা শল্যচিকিৎসকেরা নাপিতদের সংগঠনে যোগ দিয়ে ক্ষৌরকার শল্যচিকিৎসক হিসেবে পরিচিতি লাভ করতেন।
অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে। এক্স-রে আবিষ্কার হয়নি। তাছাড়া রোগ ও তার কারণ যে জীবাণু সেই সম্পর্কে কোনো ধারণা সেই সময় চিকিৎসা জগতে ছিল না।
ডাক্তারের বিবরণে জ্বরের পরিমাণ ডিগ্রিতে লেখা নেই। উল্লেখ আছে "জ্বর" আর "অল্প জ্বর" বলে। তাই থার্মোমিটার তাঁর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছিল কিনা জানা যায় না, যদিও সেসময় থার্মোমিটারের ব্যবহার প্রচলিত ছিল।
অত্যধিক মাথার যন্ত্রণা, খিঁচুনি, অচেতন হওয়া এসবের জন্য খ্যাতনামা দুইজন চিকিৎসক ডাক্তার প্রিচার্ড ও ডাক্তার ক্যারিকের পরামর্শে মস্তিষ্কে জোঁক বসানো হয়েছিল রক্তমোক্ষণের জন্য। প্রাচীনকাল থেকেই এই চিকিৎসা পদ্ধতি সারা পৃথিবীতে প্রচলিত ছিল।
মৃত্যুর পর তাঁর শরীরব্যবচ্ছেদ হয়েছিল। সেই রিপোর্টে মস্তিষ্কের প্রদাহের কথা লেখা আছে। মস্তিষ্কের মধ্যে জল এবং পুঁজ জমেছিল, খুলির সঙ্গে মস্তিষ্ক সংলগ্ন হয়েছিল। যেটা হতে পারে অতীতের কোন গুরুতর ধরণের মাথার আঘাতে।শৈশব বা কৈশোরে কোনও মাথায় আঘাতের কথা জানা যায় না। তবে ষোলো বছর বয়সে তিনি একা তিব্বত ভ্রমণে গিয়েছিলেন। সেসময় তাঁর ওপর কোনো আক্রমণ হয়েছিল কিনা তা' জানা যায়নি। তিব্বত ভ্রমণের কাহিনী তিনি কিছু লিখে যাননি। শুধু লিখেছেন--- তিব্বতবাসিনী রমণীগণের সস্নেহ ব্যবহারের জন্য তিনি নারীজাতির প্রতি চিরদিন শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা অনুভব করেন।
এছাড়াও যক্ষ্মা হলে মস্তিষ্কের এই লক্ষণ হতে পারে। কিন্তু রামমোহনের অত্যন্ত ভালো স্বাস্থ্যের কারণে পরবর্তীকালে চিকিৎসকরা সেই সম্ভাবনা বাদ দিয়েছেন।
তাঁর মৃত্যুর ১০২ বছর পরে ১৯৩৫ সালে আবিষ্কৃত হয়েছে ‌সালফোনামাইড এবং ১০৮ বছর পর পেনিসিলিন।
ফলে যথাযথ চিকিৎসা তাঁর হয়নি সেটা সহজেই অনুমেয়।
ছবিতে থাকতে পারে: 1 জন, দাঁড়ানো
114


Metro Diary milk

Metro Diary milk 


Metro Dairy is responding to a comment you made on their Page. View comment.

Metro Dairy
পাঠানো হয়েছে
3 দিন আগে

Thank you for showing interest in Metro Diary. Like most other milk in Indian market, ours is also a combination of A1 and A2 milk.

Shared by Pranab Kumar Kundu


শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

শেয়ার করেছেন প্রণব কুমার কুণ্ডু

 

একজন জিজ্ঞাসা করল-----
" মৌলভী সাহেব, জান্নাতে কে যাবে? "
মৌলভী :----"মুসলমান'
"কোন মুসলমান- শিয়া না সুন্নী?"
মৌলভী :-"বেশক সুন্নী জনাব"
আচ্ছা সুন্নী তো দুই রকমের, মুকল্লিদ আর গের-মুকল্লিদ ?
মৌলভী :-- "মুকল্লিদ"
আচ্ছা মুকল্লিদের তো চার ভাগ । ওদের মধ্যে কে জান্নাতে যাবে?
মৌলভী :--" হানফি যাবে জান্নাতে, আরকিছু?"
না মানে হানফি র তো দুটো ভাগ- দেববন্দী আর বরেলবী?
মৌলভী বলল :-" দেববন্দী যাবে জান্নাতে"।
ধন্যবাদ, কিন্তু দেববন্দী র দুটো ভাগ- হায়াতি আর মমাতি। তো এদের মধ্যে কোন দেববন্দী যদি তা যদি একটু খুলে বলেন?
এরপর মৌলভী উধাও।
হিন্দুদের জাতি/বর্ণ ভেদ নিয়ে চর্চা করা মুসলিমদের জাতিভেদ নিয়ে একটু জ্ঞান রাখা ভালো।
সংগৃহীত
25
প্রণব কুমার কুণ্ডু
লাইক করুন
কমেন্ট করুন


শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০

Origin of Indian Scheduled Casts


Origin of Indian Scheduled Casts



In 1935, Government Act of India, was created by,  the British Parliament, which in the year 1936, created a list of 429 casts as Scheduled Casts !


Later on, in the year 1950, it became part of the Indian Constitution !


Modern Caste System is a British Creation, a tool to Divide, to Rule, and to Convert to Christianity !


Source : MYINDIA MYGLORY.


Shared by Pranab Kumar Kundu.






Pranab Kumar Kundu.

বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০

হিন্দুসমাজ এবং হিন্দুধর্ম :

 

হিন্দুসমাজ এবং হিন্দুধর্ম :
 
যে কারণে বা যাদের কারণে হুমকির মুখে- হিন্দুসমাজ এবং হিন্দুধর্ম :
 
ফটোপোস্টে ( ফটোপোস্টটি আসে নি ! ) যে ছবিটি দেখছেন, সেটা বর্তমান পাকিস্তানে অবস্থিত একটি পরিত্যক্ত হিন্দু মন্দির। এই মন্দিরটি বিশালতা এবং এর টিকে থাকার ক্ষমতা দেখে এটা খুব সহেজই অনুমান করা যায় যে, এই মন্দিরের আশে পাশের কয়েকশ মাইল এলাকা জুড়ে এক সময় প্রচুর সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ বাস করতো, তারাই তৈরি করেছিলো এই মন্দির এবং এই মন্দিরে দেব-দেবীদের পূজাও হতো নিয়মিত। কিন্তু কোনো এক সময় ইসলামিক শক্তির কাছে পরাজিত হয়ে ঐ এলাকার হিন্দুরা, হয় নিহত হয়ে বা নির্যাতিত হয়ে ঐ এলাকা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে বা নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছে, ফলে ঐ এলাকায় বর্তমানে কোনো হিন্দু না থাকায় ঐ মন্দিরটি হয়েছে পরিত্যক্ত, ফলে আজ সেখানে পূজো দেবার মতো লোক নেই, তাই সেখানে শঙ্খ, ঢাক, কাঁসর বাজে না, উলুধ্বনিও উচ্চারিত হয় না, দু চারজন উৎসাহী লোক হয়তো মাঝে মাঝে সেই এলাকায় ঘুরতে যায় পরিত্যক্ত মন্দিরটি দেখতে এবং হিন্দুদের নির্বুদ্ধিতা ও নপুংসকতার ইতিহাস স্মরণ করতে।
এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে এবং মন্দিরকে দেব-দেবীর পূজার স্থানের বিনিময়ে জাস্ট টুরিস্ট স্পটে পরিণত হতে না দিতে একটা কথা আমাদের হিন্দুদের মাথায় খুব ভালো করে ঢুকিয়ে নেওয়া দরকার যে- ধর্ম ও সমাজ টিকে থাকে জনসংখ্যায়, যদি জনসংখ্যা না থাকে, সমাজও থাকবে না, ধর্মও থাকবে না, থাকবে না মন্দির, হবে না কোনো দেব-দেবীর পূজাও, তাই সবার আগে প্রয়োজন জনসংখ্যা; কারণ, জনসংখ্যা হলো- মন্দির, দেব-দেবী, সমাজ ও ধর্মের ভিত্তি। জনসংখ্যা থাকলে এই সবগুলো থাকবে, কিন্তু জনসংখ্যা না থাকলে এগুলোর কিছুই থাকবে না।
এই সত্যের ভিত্তিতে এখন দেখা যাক, হিন্দু সমাজের সাধু-সন্ন্যাসী-ব্রহ্মচারী-মহারাজরা প্রকৃতপক্ষেই হিন্দুসমাজের কোনো কল্যাণ করে কি না বা এদের দ্বারা হিন্দুধর্ম ও সমাজের প্রকৃতপক্ষেই কোনো উপকার হয় কি না ?
হিন্দু সমাজের সাধু-সন্ন্যাসী-ব্রহ্মচারী-মহারাজরা বিয়ে করে না, সন্তানের জন্ম দেয় না, সংসারের দায়িত্ব পালন করে না, উৎপাদন মূলক কোনো কাজ করে না, সমাজের জন্য সেবামূলক কোনো ব্যবসাও করে না; ফলে এদের কাছ থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র বিন্দুমাত্র আর্থিক উপকার পায় না, উল্টো এরা পরগাছার মতো রাষ্ট্র ও সমাজের বিশেষ করে হিন্দু সমাজের খায় আর হাতির মতো গতর বাড়ায়।
হিন্দু সমাজে এই পরগাছা শ্রেণীর প্রবর্তক চৈতন্যদেব, চৈতন্যদেবের আগে বিচ্ছিন্নভাবে দু চারজন ব্যক্তি সংসারহীন জীবন যাপন করলেও, সেটা বর্তমানের মতো ব্যাপক ছিলো না; কিন্তু চৈতন্যদেবের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে চৈতন্যদেবের জীবদ্দশাতেই অনেকে সংসার ত্যাগ ক'রে, কর্মহীন হয়ে অর্থাৎ পরগাছা হয়ে তার সাথে পথে পথে ঘুরেছে, মানুষকে বিভ্রান্ত করে বিপথে চালিত করার শাস্তি স্বরূপ চৈতন্যদেবের নির্মম মৃত্যুর পরও গত চারশ বছরে অন্তত কয়েক হাজার হিন্দু যুবক বিয়ে-শাদী-সংসার না ক'রে, উৎপাদন বা সেবামূলক কোনো কাজে জড়িত না হয়ে, পরগাছার মতো অন্যের পরিশ্রমের ফল খেয়ে তারা শুধু রাষ্ট্রেরই ক্ষতি করে নি, বিয়ের মাধ্যমে সংসার না করে হিন্দু সমাজের জনসংখ্যা কমিয়ে হিন্দু সমাজেরও অপূরণীয় ক্ষতি করেছে। কারণ, যে ব্যক্তির পক্ষে রাষ্ট্র নিয়ে ভাবার কোনো দরকার নেই বা সুযোগ নেই, সে যদি বিয়ে করে সংসার না করে আর কমপক্ষে একটি সন্তানের জন্ম না দেয়, তার দ্বারা সমাজের কোনো উপকারই হয় না। এই সূত্রে বর্তমান হিন্দু সমাজের সাধু-সন্ন্যাসী-ব্রহ্মচারী-মহারাজদের দ্বারা হিন্দুসমাজের কোনো উপকারই হচ্ছে না।
আপনি যদি কোনো বীরের পূজা করেন, আপনি যেমন আস্তে আস্তে বীরে রূপান্তরিত হবেন, তেমনি আপনি যদি কোনো নপুংসককে আদর্শ ধরেন, আপনিও আস্তে আস্তে নপুংসকে পরিণত হবেন। হিন্দু সমাজের অত্যন্ত দুর্ভাগ্য যে- রাম, বলরাম, পরশুরাম, অর্জুন, শ্রীকৃষ্ণের মতো বীরের আদর্শ হিন্দুধর্মে থাকতেও আমরা তাদেরকে নিজেদের আদর্শ মনে না করে চৈতন্যদেব এবং এর মতো সংসারবিরাগী ব্যক্তিদেরকে আমরা আমাদের আদর্শ মনে করি এবং রাম, বলরাম, পরশুরাম, অর্জুন, শ্রীকৃষ্ণকে বাদ দিয়ে চৈতন্যদেব মার্কাদের পূজা করি। ফলে হিন্দু সমাজ আস্তে আস্তে হয়েছে, হচ্ছে হীনদুর্বল; ফলে হিন্দুরা মার খাচ্ছে সর্বত্র, সেটা সংখ্যায় কম বা বেশি হলেও।
সংসার অর্থাৎ গার্হস্থ্য ধর্ম পালন না ক'রে সন্ন্যাস নেবার কোনো বিধান সনাতন ধর্মে নেই। মহাভারতে বলা হয়েছে- নিঃসন্তানদের যজ্ঞ, দান, তপস্যা উপবাস সবই ব্যর্থ এবং এরা কখনো স্বর্গে যাবে না। এছাড়াও সনাতন ধর্মের জীবনাচরণে চারটি আশ্রম- ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ্য, বাণপ্রস্থ ও সন্ন্যাসে কিন্তু স্পষ্ট করে বলেই দেওয়া হয়েছে যে- জীবনের কোন সময় আপনাকে কী করতে হবে। জীবনের শুরুতে আপনাকে শিক্ষা গ্রহন করতে হবে, শিক্ষা শেষ হলে করতে হবে সংসার, সংসারে পুত্র কন্যার জন্ম দিয়ে তাদেরকে বড় করতে হবে এবং উপযুক্ত সময় উপস্থিত হলে পুত্র কন্যার বিয়ে দিতে হবে এবং পুত্রের হাতে সংসারের দায়িত্ব অর্পন করে আপনাকে যেতে হবে বাণপ্রস্থে, বাণপ্রস্থ মানে কোনো ধর্মীয় সংগঠণের অধীনে থেকে নিজের কর্মদক্ষতাকে সমাজের কাজে লাগানো, এভাবে বয়স যখন ৭৫ এ পৌঁছবে তখন আপনি সন্ন্যাস নিতে পারবেন; সন্ন্যাস মানে পূর্ণ অবসর, সংসার ও সমাজের সকল প্রকার দায়িত্ব থেকে; সন্ন্যাসে একজন ব্যক্তি শুধু ঈশ্বরের নাম জপ ও ধ্যান করবে এবং মোক্ষ প্রাপ্তির বিষয়ে প্রচেষ্টা করবে।
অথচ চৈতন্যপন্থী, যারা মনে করে যৌনতা পাপ এবং যৌনতার মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দেওয়াও পাপ। এই মনোভাবের কারণে তারা নিজেরা তো বিয়ে শাদী সংসার করেই না, তাদের সংস্পর্শে যাওয়া অন্যদেরকেও বিয়ে ও সংসার না করতে পরামর্শ বা উৎসাহ দেয়। এভাবে হিন্দু সমাজের হাজার হাজার যুবক আজ পর্যন্ত বিয়ে শাদি না ক'রে, সংসার ত্যাগ ক'রে পিতা-মাতা-ভাই-বোন-আত্মীয়-স্বজনদের স্বপ্নকেই শুধু ধুলিস্নাত করে নি; কোনো উৎপাদন ও সেবামূলক কাজে শ্রম না দিয়ে পরগাছার মতো জীবন কাটানোর সুযোগ নিয়ে রাষ্ট্রেরও ক্ষতি করেছে বহু। আর এসবের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে হিন্দু সমাজ সংসারবিরাগী হিন্দু ছেলেদের বিয়ে না করা এবং সন্তান জন্ম না দেবার কারণে।
সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে- যারা এই ভাবে আমাদের হিন্দু সমাজের ক্ষতি করছে, আমাদেরকে সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত ক'রে আমাদের ইহকালের এবং পরকালের ক্ষতি করছে, অকারণে তাদেরকেই আমরা মাথায় তুলে রাখছি বা তাদেরকে মাথায় তুলে নিয়ে নাচানাচি করছি। ফলে জনসংখ্যা কমে গিয়ে হিন্দু সমাজ বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, আর এর মধ্যেও যে কয়জন টিকে আছে, তারাও নিরামিষ খাবারের প্রভাবে দৈহিক ও মানসিকভাবে হীন দুর্বল হয়ে প্রতিনিয়ত মুসলমানদের হাতে মার খেতে খেতে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষার জন্য হয় সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হয়ে যাচ্ছে বা ধর্ম ও সংস্কৃতি বাঁচানোর জন্য নীরবে দেশ ত্যাগ করছে। তবুও আমাদের হিন্দুদের চেতনা ফিরছে না; রাম, শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ, যে আদর্শ সংসার ত্যাগ করা নয়, সংসার করা, যে আদর্শ আমাদেরকে ইহকালে টিকিয়ে রেখে পরকালে মুক্তি প্রদান করবে, সেই আদর্শকে বাদ দিয়ে আমরা, যত সব নপুংসক, যারা সংসারের দায়িত্ব পালন করতে পারবে না ব'লে সংসার থেকে পালিয়েছে, বিয়ে করে সংসার না করার কারণে যাদের নিজেদেরই পারলৌকিক মুক্তি নেই, যাদের আদর্শ আমাদেরকে বিলুপ্তির দিকে নিয়ে যাচ্ছে, তাদের আদর্শকে আমরা ফলো করছি! বিলুপ্তি আমাদের হবে না, আমাদের মন্দির পরিত্যক্ত হবে না বা তা মসজিদ মাদ্রাসায় রূপান্তরিত হবে না, তো কি অন্যদেরগুলো হবে ?
এ প্রসঙ্গে অনেকেই বলতে পারেন- যে দেব-দেবী, তাদের পূজা অর্চনার জন্য তাদের ভক্তদেরকে টিকিয়ে রাখতে পারে না, তাদের পূজা অর্চনা করে লাভ কী ?
দেব-দেবীদের নিজেদের জন্য কোনো পূজা অর্চনার দরকার নেই, তাই তাদের দায় নেই কোনো মন্দির টিকিয়ে রাখা এবং সেই মন্দিরের পূজার জন্য ভক্তদেরকে টিকিয়ে রাখার। দেব-দেবীদের পূজা করতে হয় ভক্তদেরকে নিজেদেরই স্বার্থেই, দেব-দেবীর পূজা করে ভক্তরা ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণ লাভ করে থাকে এবং এই পূজা করতে করতেই ভক্তরা এক সময় পরমব্রহ্মকে বুঝতে পারে এবং মোক্ষ লাভ করতে পারে। আর যদি কেউ দেব-দেবীর পূজার মাধ্যমে পরমব্রহ্মকে বুঝতে এবং তার কাছে পৌঁছতে না পারে, তাহলে সে পরের জন্মে আবার আগের বারের চেয়ে খারাপ অবস্থায়, এমনকি ইতর প্রাণী রূপে জন্ম নিয়ে আগের জন্মের ভুলের শাস্তি পাবে, এভাবে যতদিন সে নিজেকে শুধরে না নেবে, ততদিন সে জন্মমৃত্যুর চক্রে খারাপ থেকে খারাপ অবস্থায় পতিত হবে এবং শাস্তি পেতে থাকবে। এ প্রসঙ্গে একটা বিষয় দৃঢ় নিশ্চয়তার সাথে বলা যায় যে, যত যা ই ঘটুক সনাতন ধর্ম পৃথিবী থেকে কোনোদিন নিশ্চিহ্ন হবে না। মানুষের মোক্ষপ্রাপ্তির আলোকবর্তিকা হিসেবে এটি পৃথিবীতে টিকে থাকবেই, এখন এটি কতভালো ভাবে বা কত খারাপ ভাবে টিকে থাকবে, সেটা নির্ভর করছে জীবিত সনাতনীদের কর্মের উপর।
এ প্রসঙ্গে আরেকটি কঠিন কথা বলা প্রয়োজন যে- কোনো দেব-দেবীর মূর্তির মধ্যে কোনো শক্তি নেই, শক্তি আছে সেই দেব-দেবীর মূর্তির আদর্শের মধ্যে এবং শিক্ষাও আছে সেই দেব-দেবীর পূজার মধ্যে। কোনো দেব-দেবীর পূজা করে কোনো মানুষ যদি সেই দেব-দেবীর মূর্তির মধ্যে থাকা শিক্ষাকে বুঝতে পারে এবং সেটা গ্রহন করতে পারে, তাহলেই সেই ব্যক্তির সেই দেব-দেবীর পূজা করা সার্থক। সরস্বতীর পূজা করে কেউ যদি মনে করে যে দেবী সরস্বতী তাকে জ্ঞান বুদ্ধি প্রদান করবে, তাহলে সে মূর্খ। সরস্বতীর এক হাতে থাকে বই, এই বই ই বলে দিচ্ছে যে জ্ঞান বুদ্ধি অর্জন করতে হলে বই পড়তে হবে। তাই কেউ সরস্বতী পূজা করুক বা না করুক, বাস্তবে কেউ যদি সরস্বতী পূজার প্রধান শিক্ষা, বই পড়ে, তাহলেই সে জ্ঞানী হবে। অনেকে ভেবে বা বলে থাকে যে, মুসলমানসহ ইহুদি খ্রিষ্টানরা তো কখনো সরস্বতী পূজা করে না, তাহলে তারা কিভাবে এত জ্ঞানী হয় ? তারা জ্ঞানী হয় এইভাবে, সরস্বতী পূজার শিক্ষা বই পড়াকে কাজে লাগিয়ে। বই যে জ্ঞানের ভাণ্ডার এবং মানুষ বই পড়লে যে জ্ঞানী হবে, সেই ধারণা প্রথম দিয়েছে সিন্ধু সভ্যতার মুনি ঋষিরা; কারণ, তারাই পৃথিবীর প্রথম বই ঋগ্বেদের লেখক এবং তারাই বই পড়ার শিক্ষাটাকে সরস্বতী পূজার মাধ্যমে প্রচার করেছেন।
একইভাবে কেউ যদি মনে করে যে লক্ষ্মী পূজা করলেই সে ধনী হবে, সে আসলে মূর্খ। লক্ষ্মীর সাথে থাকে ধান, সেই ধান হলো ধনের প্রতীক, যে ধান চাষ করা পৃথিবীর কঠিন পরিশ্রমগুলোর মধ্যে একটি। লক্ষ্মীর সাথে থাকা ধান দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে পরিশ্রম করলেই মানুষ ধনী হবে এবং সেই পরিশ্রম যদি সরস্বতীর পূজার শিক্ষা জ্ঞানের সমন্বয়ে করা হয়, তাহলে সে আরো বেশি ধনী হবে। এই ধন মানুষকে শুধু বিপদ আপদ থেকে রক্ষাই করে না, ধন মানুষকে বিপদেও ফেলে, এমনকি প্রাণেও মেরে ফেলে, তাই এই ধন বা অর্থ যাতে অনর্থ সৃষ্টি না করে, সেজন্য লক্ষ্মীর সাথে দিয়ে দেওয়া হয়েছে পেঁচা, যে পেঁচা দিনে বের হয় না অর্থাৎ পেঁচা গোপনীয়তার প্রতীক, লক্ষ্মীর সাথে পেঁচা দিয়ে এটা বলে দেওয়া হয়েছে যে, পরিশ্রম করে যে ধন অর্জন করবে, সেই ধন রাখতে হবে গোপনে, না হলে এই ধনই তোমার বিপদ ডেকে আনবে।
এভাবেই দুর্গা, শিব, কালী, কার্তিক পূজার আদর্শের মধ্যে দিয়ে বলে দেওয়া হয়েছে যে- যোদ্ধা হও এবং হাতে অস্ত্র রাখো, তাহলেই নিজেকে রক্ষা করতে পারবে এবং নিজেকে রক্ষা করতে পারলে সমাজ এবং ধর্মকেও রক্ষা করতে পারবে, আর তাতেই রক্ষা পাবে তোমাদের আবেগ, ভালোবাসা এবং শিক্ষার স্থান দেবমন্দির।
এসবকারণেই দেবতার মন্দির মানুষকেই রক্ষা করতে হবে এবং দেব-দেবীর পূজাও মানুষকেই করতে হবে, নিজেদের টিকে থাকা এবং মোক্ষপ্রাপ্তি অর্থাৎ জন্ম মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি লাভের স্বার্থে।
যা হোক, এখন উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে ভাবুন, আপনার পাড়ার মন্দিরে মহাপ্রলয় পর্যন্ত পূজা অর্চনা হোক, সেটা আপনি চান, না চান পাকিস্তানের ঐ মন্দিরটির মতো সেটি পরিত্যক্ত বা পূজা শূন্য হোক ? যদি চান মহাপ্রলয় পর্যন্ত আপনার পাড়ার মন্দিরে পূজা অর্চনা হোক আর পূজা উপলক্ষে ঢাক বাজুক, শঙ্খ বাজুক, উলুধ্বনি উচ্চারিত হোক, তাহলে সর্বপ্রকার নপুংসকের আদর্শকে নিজের মাথা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে- রাম, শ্রীকৃষ্ণ, অর্জুনের আদর্শকে ধারণ করুন, প্রতিদিন তাদের পূজা করুন, তাদের আশীর্বাদে আপনার অস্তিত্ব টিকে থাকবে পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত।
জয় হিন্দ।
কমেন্টশেয়ার করেছেন : - প্রণব কুমার কুণ্ডু









প্রণব কুমার কুণ্ডু

বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০

তলস্তয়

 তলস্তয়

 

 প্রণব কুমার কুণ্ডু



 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রণব কুমার কুণ্ডু

 

 

তলস্তয়ের

'যুদ্ধ ও শান্তি' বইটির রয়েলটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল, 'আন্না করোনিনা' বইটির রয়েলটি।

তখন তলস্তয়ের মোট বার্ষিক আয়, বই থেকে,  বিশ হাজার রুবল, আর তার সাথে বেড়েছে তলস্তয়ের এস্টেটের আয়, সেটা প্রায় বার্ষিক দশ হাজার রুবলের কাছাকাছি !

তলস্তয় তখন বেশ সচ্ছল !

তলস্তয়ের ১৩৫০ একর কৃষিজমি। নিজের আস্তাবলে ৩০০ উৎকৃষ্ট ঘোড়া।

তখন তলস্তয়ের বয়েস পঞ্চাশ !


তলস্তয়, লেভ নিকোলায়েভিচ তলস্তয়, কখনও বা লিও তলস্তয় !

তলস্তয়ের আত্মহত্যা করার প্রবণতা বা বাতিক ছিল ! তিনি আবার আত্মহত্যার ব্যাপারে শঙ্কিতও ছিলেন ! তবে শেষমেশ তাঁকে আত্মহত্যা করতে হয়নি !

তলস্তয়ের স্ত্রী সোফিয়া আন্দ্রেয়েভনা তলস্তয়ের ঘরসংসার দেখাশোনা করতেন। তাঁদের তেরোটি সন্তান হয়েছিল ! তাদের প্রচুর সংখ্যক দাসদাসী ও গৃহশিক্ষক-গৃহশিক্ষিকা প্রভৃতি ছিল।

তলস্তয়, তিনি দুবার নোবেল পুরস্কারের জন্য, এবং একবার নোবেল শান্তি পরস্কারের জন্য, মনোনীত হয়েছিলেন, কিন্তু কোন ধরণের নোবেল পুরস্কার তিনি পান নি !

তলস্তয়ের একাগ্রতা শক্তি প্রখর ছিল, এবং তিনি দারুণ পরিশ্রমও করতে পারতেন।

তলস্তয় চাষাভুষোদের মতো সাধারণ ও স্বল্প আহার করতেন। অনেকসময় পরতেন খেতমজুরদের মতো পোষাকও।

তলস্তয়ের জন্ম ২৮ আগস্ট ১৮২৮, মৃত্যু ২০ নভেম্বর ১৯১০। বিরাশি বছরের ওপর তিনি বেঁচেছিলেন।

 

তথ্যসূত্র : যজ্ঞেশ্বর রায়, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' পত্রিকা, বর্ষ ২১, শ্রাবণ-আশ্বিন ১৩৯২, সংখ্যা ২, সম্পাদক সজ্ঞীবকুমার বসু, শারদীয়া সংখ্যা।

তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া।


সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০

মলমাস

 মলমাস

 

পুরুষোত্তম ব্রত মহিমা ও নিয়ম ও কিছু কথা
-----------------------------------------------------------
আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৬ অক্টোবর ২০২০,  পর্যন্ত লীলাপুরুষোত্তম ভগবানের প্রিয়তম পুরুষোত্তোম মাস।
শাস্ত্রমতে অধিমাস হলো গুরুত্বপূর্ণ মাসঃ
-----------------------------------------------------
বৈশাখ, মাঘ এবং কার্তিক মাস থেকেও এ মাস সহস্র সহস্র গুণে শ্রেষ্ঠ। এ মাসে সক্ষম ব্যক্তির হবিষ্যগ্রহণ ব্রত এবং সকলেরই শ্রীপুরুষোত্তম কৃষ্ণকে প্রদীপ নিবেদন করা কর্ত্য।
 
স্ত্রোত্রপাঠঃ
---------------
এ মাসে প্রতিদিন চৌরাগ্রগণ্যং পুরুষাষ্টকম, জগন্নাথাষ্টকম, নন্দনন্দনাষ্টকম, রাধা কৃষ্ণ কৃপা-কটাক্ষস্তোত্রম প্রভৃতি নিজাভীষ্ট স্তোত্রবলী পাঠ ও পূর্বতন আচার্যবৃন্দগন কৃত ভজন কীর্তন করা উচিৎ।
 
বিশেষ সংখ্যাঃ৩৩
------------------------
এ মাসে তেত্রিশ সংখ্যাটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, তাই রাধা-কৃষ্ণের প্রতি ৩৩ বার দণ্ডবৎ প্রণাম নিবেদন করা, ৩৩ সংখ্যক প্রদীপ দান করা,  ৩৩ সংখ্যক ফল ও পুষ্প প্রভৃতি যে কোন সেবায় ৩৩ সংখ্যা ব্যবহার করা হয়। পুরাণে বর্ণিত আছে, এ মাসে কৌশিক মুনি ও তাঁর পুত্র মৈত্রেয় মুনি ব্রাক্ষণগণকে ৩৩ সংখ্যক আপুপ -দান করেছিলেন
। আপুপ মানে আতপচাল, শর্করা ও ঘৃত দিয়ে তৈরি পিষ্টক বিশেষ।
 
দীপ দানঃ
-------------
এ মাদে দামোদর মাসের মত পরম পুরুষোত্তম ভগবানের সন্তুষ্টি বিধানের জন্য প্রতি সন্ধ্যায় ঘৃত প্রদীপ নিবেদন করতে হয়। সামর্থ না হলে ঘিয়ের পরিবর্তে তিল তেলের প্রদীপও ব্যবহার করতে পারেন।
''যোগো জ্ঞানং তথা সাংখ্যংতন্ত্রনি সকলানপি
পুরুষোত্তম দীপস্য কলা নার্হন্তি ষোড়শীম।।""
অর্থাৎ ---অষ্টাঙ্গযোগ, ব্রক্ষজ্ঞান, সাংখ্যজ্ঞান এবং সমস্ত ত্রান্তিক কার্য অপেক্ষা পুরুষোত্তম মাসে ভগবানকে দীপ দানের ষোড়শী কলারও তুল্য হয় না।
 
পুরুষোত্তম মাস কী এবং কেন?
সৌর বছরকে সাধরণত ভাবে গণনা করা হয় ৩৬৫ দিনে, পক্ষান্তরে চন্দ্র বছর গণনা করা হয় ৩৫৫ দিনে। 
ফলে ৩৬৫ থেকে ৩৫৫ দশ দিনের পার্থক্য সৃষ্টি হয় সৌরদিবস ও চান্দ্র তিথির মধ্যে। তাহলে তিন বছরে এর পার্থক্য দাঁড়ায় ৩০ দিনে এবং ৩০ দিনে হয় একমাস। এ কারণে ভারতে বৈদিক যুগে প্রতি ৩ বছর অন্তর একটি বাড়তি মাস যুক্ত করে চান্দ্র বছরের সাথে সৌর বছর সমন্বয় করা হয়। এটি ভগবৎপ্রণীত। একে অধিমাস বলে।
 
এ মাসে কোন কোন সকামকর্মীয় কাজ হয় না। যেমন বিবাহ, পূজা এবং অনন্য অনুষ্ঠানাদি।
 
চান্দ্রবছর কী?
চন্দ্র বারটি রাশি ও ২৭ টি নক্ষত্রকে অতিক্রম করতে সময় নেয় ২৭ দিন। এই ২৭ দিনে হয় এক চন্দ্র মাস। যদি এই এক চন্দ্র-মাসকে ৩০ ভাগে ভাগ করা যাই এ ৩০ ভাগের প্রত্যেক টিকে বলা হয় এক একটি তিথি। অমাবস্যা পরবর্তী তিথি থেকে পূর্ণিমা পর্যন্ত ১৫টি তিথি ঘটিত ভাগটিকে আমরা বলে থাকি শুক্ল পক্ষ। পক্ষান্তরে পূর্ণিমার পরবর্তী তিথি থেকে আমাবস্যা পর্যন্ত ১৫ টি তিথি নিয়ে সংঘটিত ভাগ কৃষ্ণপক্ষ।
তিথি গুলো সৌর দিনের চেয়ে কিছুটা ছোট তাই চান্দ্রমাস সৌরমাসের চেয়ে ছোট হয়ে থাকে। প্রায় সাড়ে ২৯ দিনে হয় এক চন্দ্রমাস। এরুপ বারটি চন্দ্রমাস নিয়ে তৈরী হয় একটি চান্দ্রবছর। সেই চান্দ্রবছরই হয় ৩৫৫ দিনে ৩৬০টি তিথিতে গণনা। এবং এ ৩৫৫ দিনের গণনা হওয়ার দরুণ যে পার্থক্যের সৃষ্টি হয়,  সে পার্থক্য হয় ৩ বছরে ৩০ দিন এবং ৩০ দিনের সেই বাড়তি একমাসকে আমরা অধিমাস বলে অবিহিত করে থাকি।
 
একবার অসিত, দেবল, অঙ্গিরা বামদেব প্রবৃত্তি ঋষিগণ, নৈমিষ্য অরণ্য ক্ষেত্রে সমবেত হয়েছিলেন ঠিক সেই সময়, সেই পথদিয়ে তীর্থ যাত্রা কালে সে খানে উপস্থিত হন মহর্ষি সুত,  তাকে পরম সমাদরে অভ্যর্থনা জানিয়ে ঋষিগণ, তার কাছে মোক্ষ প্রাপ্তি বিষয়ে কথা শুনতে আগ্রহী হন। মহর্ষি সুত বলেন, একবার নারদ মহর্ষি নর-নারায়ণের আশ্রমে উপস্থিত হয়ে ঋষিকে বিনিত ভাবে বলেন। প্রভু পৃথিবীতে ক্রমবর্ধমান ভোগবিলাসী মানুষের অন্ধকার যুগ এই কলিযুগে, মোক্ষ লাভের পথ কি ? উত্তরে মহর্ষি বলেন,  এই কলিযুগের মানুষ এ জীবনে পুরুষোত্তম নারায়ণের পবিত্র লীলা কথা শ্রবণ করলে, তার বন্ধনমোচন মোক্ষ প্রাপ্তি ঘটবে।
এ কথা শোনার পর সমবেত ঋষিগণ মহর্ষি সুতের কাছে, এ অধিমাসে ভগবানের লীলাকথা শুনতে লাগলেন।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অধিমাস প্রসঙ্গে বলেছেন, যারা এমাসে সৎ কর্ম অনুষ্ঠান করবে তারা অচিরে দূঃখ কষ্ট হতে মুক্তি লাভ করবে।
সেই সঙ্গে যারা কৃচ্ছ্রসাধন করবে তারা ইন্দ্রিয়গণকে জয় করতে সক্ষম হবে। অন্য মাস গুলিতে সৎ কর্ম করলে স্বর্গ লাভ হয় কিন্তু ফল ভোগ শেষ হলে আবার পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণ করতে হয়। এ ভাবে জন্ম মৃত্যুর চক্র হতে মুক্ত হতে পারে না। কিন্তু পক্ষান্তরে এই মলমাসে সৎ কর্ম করলে মোক্ষ লাভ হয়। তথা পূনর্জন্ম হতে মুক্ত হয়।
 
পুরুষোত্তম মাস সম্পর্কে শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুর :--
"হে জীব! পুরুষোত্তম মাসে হরিভজনে তুমি এত অলস কেন? এই মাস, যে মাসে,  স্বয়ং পরমেশ্বর গোলক সৃষ্টি করেছেন, সেই মাস,  সমস্ত মাসের শিরোমণি। এমনকি এটি মহতী পবিত্র কার্তিক, মাঘ ও বৈশাখ মাসের চেয়েও উত্তম। বিশেষ ভজনের মাধ্যমে রাধা-কৃষ্ণের আরাধনা কর। তুমি সবকিছু লাভ করবে ।"
 
পুরুষোত্তম মাস সম্পর্কে শ্রীল জয়পতাকা স্বামী গুরুমহারাজ --
বৃহন্নারদীয় পুরাণে পুরুষোত্তম মাসের কথা বর্ণিত হয়েছে। সকল মাসের প্রধান, অধিমাস, নিজের স্বভাবজাত বিনম্রতার কারণে, বৈকুন্ঠে নারায়ণের নিকটে এলেন এবং তাঁর অবস্থার বর্ণনা দিলেন। ক্রমান্বয়ে নারায়ণ অধিমাসকে তাঁর সাথে করে গোলকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নিকট নিয়ে গেলেন। কৃষ্ণ, অধিমাসের দুঃখের কথা শুনে, করুণাপূর্ণ হয়ে নিম্নরূপ বললেন। কৃষ্ণ বললেন, "হে রমাদেবীর পতি, জগতে আমি যেভাবে পুরুষোত্তম নামে পরিচিত, এই অধিমাসও তেমনি সারা বিশ্বে পুরুষোত্তম মাস নামে খ্যাত হবে। আমার সকল গুণ এই মাসের মাঝে প্রবেশ করবে। আমারই মত, এই মাস সকল মাসের মাঝে শ্রেষ্ঠ হবে। এই মাস পূজনীয় এবং স্তুতির দ্বারা প্রশংসার যোগ্য। অন্য সকল মাস সকাম, জাগতিক বাসনায় পরিপূর্ণ। এই মাস নিষ্কাম, জাগতিক বাসনাবিহীন। যদি কেউ অকাম বা জাগতিক বাসনা ব্যতীত, অথবা সকাম বা জাগতিক বাসনাযুক্ত হয়ে এই মাসের আরাধনা করে, তাহলে তার সকল কর্মফল নিঃশেষ হয়ে যায় এবং সে আমাকে লাভ করে। আমার ভক্তেরা অনেক সময় অপরাধ করে ফেলে, কিন্তু এই মাসে কোন অপরাধ হয় না। এই মাসে যারা সবচেয়ে নির্বোধ এবং কোন জপ ও দান প্রভৃতি করে না, নিজের পারমার্থিক উন্নতির জন্য যারা কোন কর্ম করে না এবং যারা স্নানাদি করে না, এবং যারা দেবতাগণ, পবিত্র ধাম ও ব্রাহ্মণদের প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ, এই সকল দুষ্ট, অসাধু, মন্দভাগ্য লোকেরা, অন্যের সম্পদের উপর জীবন নির্বাহ করে, তারা তাদের স্বপ্নেও সুখ লাভ করে না। এই পুরুষোত্তম মাসে, যিনি প্রেম ও ভক্তিসহকারে আমার আরাধনা করেন, তিনি সম্পদ ও পুত্রাদি লাভ করে, সুখ ভোগ করে, সবশেষে গোলকবাসী হয়।"
🥀🌹আপনি ব্রত ধারনপূর্বত পুরুষোত্তম মাসে লীলাপুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রিয় হোন এ প্রত্যাশা রাখছি।
 
জয় পরম পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণ।
 
 
 
শেয়ার করেছেন :- প্রণব কুমার কুণ্ডু

 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
প্রণব কুমার কুণ্ডু