হিন্দুসমাজ এবং হিন্দুধর্ম :
যে কারণে বা যাদের কারণে হুমকির মুখে- হিন্দুসমাজ এবং হিন্দুধর্ম :
ফটোপোস্টে ( ফটোপোস্টটি আসে নি ! ) যে ছবিটি দেখছেন, সেটা বর্তমান পাকিস্তানে অবস্থিত একটি পরিত্যক্ত হিন্দু মন্দির। এই মন্দিরটি বিশালতা এবং এর টিকে থাকার ক্ষমতা দেখে এটা খুব সহেজই অনুমান করা যায় যে, এই মন্দিরের আশে পাশের কয়েকশ মাইল এলাকা জুড়ে এক সময় প্রচুর সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ বাস করতো, তারাই তৈরি করেছিলো এই মন্দির এবং এই মন্দিরে দেব-দেবীদের পূজাও হতো নিয়মিত। কিন্তু কোনো এক সময় ইসলামিক শক্তির কাছে পরাজিত হয়ে ঐ এলাকার হিন্দুরা, হয় নিহত হয়ে বা নির্যাতিত হয়ে ঐ এলাকা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে বা নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছে, ফলে ঐ এলাকায় বর্তমানে কোনো হিন্দু না থাকায় ঐ মন্দিরটি হয়েছে পরিত্যক্ত, ফলে আজ সেখানে পূজো দেবার মতো লোক নেই, তাই সেখানে শঙ্খ, ঢাক, কাঁসর বাজে না, উলুধ্বনিও উচ্চারিত হয় না, দু চারজন উৎসাহী লোক হয়তো মাঝে মাঝে সেই এলাকায় ঘুরতে যায় পরিত্যক্ত মন্দিরটি দেখতে এবং হিন্দুদের নির্বুদ্ধিতা ও নপুংসকতার ইতিহাস স্মরণ করতে।
এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে এবং মন্দিরকে দেব-দেবীর পূজার স্থানের বিনিময়ে জাস্ট টুরিস্ট স্পটে পরিণত হতে না দিতে একটা কথা আমাদের হিন্দুদের মাথায় খুব ভালো করে ঢুকিয়ে নেওয়া দরকার যে- ধর্ম ও সমাজ টিকে থাকে জনসংখ্যায়, যদি জনসংখ্যা না থাকে, সমাজও থাকবে না, ধর্মও থাকবে না, থাকবে না মন্দির, হবে না কোনো দেব-দেবীর পূজাও, তাই সবার আগে প্রয়োজন জনসংখ্যা; কারণ, জনসংখ্যা হলো- মন্দির, দেব-দেবী, সমাজ ও ধর্মের ভিত্তি। জনসংখ্যা থাকলে এই সবগুলো থাকবে, কিন্তু জনসংখ্যা না থাকলে এগুলোর কিছুই থাকবে না।
এই সত্যের ভিত্তিতে এখন দেখা যাক, হিন্দু সমাজের সাধু-সন্ন্যাসী-ব্রহ্মচারী-মহারাজরা প্রকৃতপক্ষেই হিন্দুসমাজের কোনো কল্যাণ করে কি না বা এদের দ্বারা হিন্দুধর্ম ও সমাজের প্রকৃতপক্ষেই কোনো উপকার হয় কি না ?
হিন্দু সমাজের সাধু-সন্ন্যাসী-ব্রহ্মচারী-মহারাজরা বিয়ে করে না, সন্তানের জন্ম দেয় না, সংসারের দায়িত্ব পালন করে না, উৎপাদন মূলক কোনো কাজ করে না, সমাজের জন্য সেবামূলক কোনো ব্যবসাও করে না; ফলে এদের কাছ থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র বিন্দুমাত্র আর্থিক উপকার পায় না, উল্টো এরা পরগাছার মতো রাষ্ট্র ও সমাজের বিশেষ করে হিন্দু সমাজের খায় আর হাতির মতো গতর বাড়ায়।
হিন্দু সমাজে এই পরগাছা শ্রেণীর প্রবর্তক চৈতন্যদেব, চৈতন্যদেবের আগে বিচ্ছিন্নভাবে দু চারজন ব্যক্তি সংসারহীন জীবন যাপন করলেও, সেটা বর্তমানের মতো ব্যাপক ছিলো না; কিন্তু চৈতন্যদেবের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে চৈতন্যদেবের জীবদ্দশাতেই অনেকে সংসার ত্যাগ ক'রে, কর্মহীন হয়ে অর্থাৎ পরগাছা হয়ে তার সাথে পথে পথে ঘুরেছে, মানুষকে বিভ্রান্ত করে বিপথে চালিত করার শাস্তি স্বরূপ চৈতন্যদেবের নির্মম মৃত্যুর পরও গত চারশ বছরে অন্তত কয়েক হাজার হিন্দু যুবক বিয়ে-শাদী-সংসার না ক'রে, উৎপাদন বা সেবামূলক কোনো কাজে জড়িত না হয়ে, পরগাছার মতো অন্যের পরিশ্রমের ফল খেয়ে তারা শুধু রাষ্ট্রেরই ক্ষতি করে নি, বিয়ের মাধ্যমে সংসার না করে হিন্দু সমাজের জনসংখ্যা কমিয়ে হিন্দু সমাজেরও অপূরণীয় ক্ষতি করেছে। কারণ, যে ব্যক্তির পক্ষে রাষ্ট্র নিয়ে ভাবার কোনো দরকার নেই বা সুযোগ নেই, সে যদি বিয়ে করে সংসার না করে আর কমপক্ষে একটি সন্তানের জন্ম না দেয়, তার দ্বারা সমাজের কোনো উপকারই হয় না। এই সূত্রে বর্তমান হিন্দু সমাজের সাধু-সন্ন্যাসী-ব্রহ্মচারী-মহারাজদের দ্বারা হিন্দুসমাজের কোনো উপকারই হচ্ছে না।
আপনি যদি কোনো বীরের পূজা করেন, আপনি যেমন আস্তে আস্তে বীরে রূপান্তরিত হবেন, তেমনি আপনি যদি কোনো নপুংসককে আদর্শ ধরেন, আপনিও আস্তে আস্তে নপুংসকে পরিণত হবেন। হিন্দু সমাজের অত্যন্ত দুর্ভাগ্য যে- রাম, বলরাম, পরশুরাম, অর্জুন, শ্রীকৃষ্ণের মতো বীরের আদর্শ হিন্দুধর্মে থাকতেও আমরা তাদেরকে নিজেদের আদর্শ মনে না করে চৈতন্যদেব এবং এর মতো সংসারবিরাগী ব্যক্তিদেরকে আমরা আমাদের আদর্শ মনে করি এবং রাম, বলরাম, পরশুরাম, অর্জুন, শ্রীকৃষ্ণকে বাদ দিয়ে চৈতন্যদেব মার্কাদের পূজা করি। ফলে হিন্দু সমাজ আস্তে আস্তে হয়েছে, হচ্ছে হীনদুর্বল; ফলে হিন্দুরা মার খাচ্ছে সর্বত্র, সেটা সংখ্যায় কম বা বেশি হলেও।
সংসার অর্থাৎ গার্হস্থ্য ধর্ম পালন না ক'রে সন্ন্যাস নেবার কোনো বিধান সনাতন ধর্মে নেই। মহাভারতে বলা হয়েছে- নিঃসন্তানদের যজ্ঞ, দান, তপস্যা উপবাস সবই ব্যর্থ এবং এরা কখনো স্বর্গে যাবে না। এছাড়াও সনাতন ধর্মের জীবনাচরণে চারটি আশ্রম- ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ্য, বাণপ্রস্থ ও সন্ন্যাসে কিন্তু স্পষ্ট করে বলেই দেওয়া হয়েছে যে- জীবনের কোন সময় আপনাকে কী করতে হবে। জীবনের শুরুতে আপনাকে শিক্ষা গ্রহন করতে হবে, শিক্ষা শেষ হলে করতে হবে সংসার, সংসারে পুত্র কন্যার জন্ম দিয়ে তাদেরকে বড় করতে হবে এবং উপযুক্ত সময় উপস্থিত হলে পুত্র কন্যার বিয়ে দিতে হবে এবং পুত্রের হাতে সংসারের দায়িত্ব অর্পন করে আপনাকে যেতে হবে বাণপ্রস্থে, বাণপ্রস্থ মানে কোনো ধর্মীয় সংগঠণের অধীনে থেকে নিজের কর্মদক্ষতাকে সমাজের কাজে লাগানো, এভাবে বয়স যখন ৭৫ এ পৌঁছবে তখন আপনি সন্ন্যাস নিতে পারবেন; সন্ন্যাস মানে পূর্ণ অবসর, সংসার ও সমাজের সকল প্রকার দায়িত্ব থেকে; সন্ন্যাসে একজন ব্যক্তি শুধু ঈশ্বরের নাম জপ ও ধ্যান করবে এবং মোক্ষ প্রাপ্তির বিষয়ে প্রচেষ্টা করবে।
অথচ চৈতন্যপন্থী, যারা মনে করে যৌনতা পাপ এবং যৌনতার মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দেওয়াও পাপ। এই মনোভাবের কারণে তারা নিজেরা তো বিয়ে শাদী সংসার করেই না, তাদের সংস্পর্শে যাওয়া অন্যদেরকেও বিয়ে ও সংসার না করতে পরামর্শ বা উৎসাহ দেয়। এভাবে হিন্দু সমাজের হাজার হাজার যুবক আজ পর্যন্ত বিয়ে শাদি না ক'রে, সংসার ত্যাগ ক'রে পিতা-মাতা-ভাই-বোন-আত্মীয়-স্বজনদের স্বপ্নকেই শুধু ধুলিস্নাত করে নি; কোনো উৎপাদন ও সেবামূলক কাজে শ্রম না দিয়ে পরগাছার মতো জীবন কাটানোর সুযোগ নিয়ে রাষ্ট্রেরও ক্ষতি করেছে বহু। আর এসবের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে হিন্দু সমাজ সংসারবিরাগী হিন্দু ছেলেদের বিয়ে না করা এবং সন্তান জন্ম না দেবার কারণে।
সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে- যারা এই ভাবে আমাদের হিন্দু সমাজের ক্ষতি করছে, আমাদেরকে সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত ক'রে আমাদের ইহকালের এবং পরকালের ক্ষতি করছে, অকারণে তাদেরকেই আমরা মাথায় তুলে রাখছি বা তাদেরকে মাথায় তুলে নিয়ে নাচানাচি করছি। ফলে জনসংখ্যা কমে গিয়ে হিন্দু সমাজ বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, আর এর মধ্যেও যে কয়জন টিকে আছে, তারাও নিরামিষ খাবারের প্রভাবে দৈহিক ও মানসিকভাবে হীন দুর্বল হয়ে প্রতিনিয়ত মুসলমানদের হাতে মার খেতে খেতে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষার জন্য হয় সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হয়ে যাচ্ছে বা ধর্ম ও সংস্কৃতি বাঁচানোর জন্য নীরবে দেশ ত্যাগ করছে। তবুও আমাদের হিন্দুদের চেতনা ফিরছে না; রাম, শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ, যে আদর্শ সংসার ত্যাগ করা নয়, সংসার করা, যে আদর্শ আমাদেরকে ইহকালে টিকিয়ে রেখে পরকালে মুক্তি প্রদান করবে, সেই আদর্শকে বাদ দিয়ে আমরা, যত সব নপুংসক, যারা সংসারের দায়িত্ব পালন করতে পারবে না ব'লে সংসার থেকে পালিয়েছে, বিয়ে করে সংসার না করার কারণে যাদের নিজেদেরই পারলৌকিক মুক্তি নেই, যাদের আদর্শ আমাদেরকে বিলুপ্তির দিকে নিয়ে যাচ্ছে, তাদের আদর্শকে আমরা ফলো করছি! বিলুপ্তি আমাদের হবে না, আমাদের মন্দির পরিত্যক্ত হবে না বা তা মসজিদ মাদ্রাসায় রূপান্তরিত হবে না, তো কি অন্যদেরগুলো হবে ?
এ প্রসঙ্গে অনেকেই বলতে পারেন- যে দেব-দেবী, তাদের পূজা অর্চনার জন্য তাদের ভক্তদেরকে টিকিয়ে রাখতে পারে না, তাদের পূজা অর্চনা করে লাভ কী ?
দেব-দেবীদের নিজেদের জন্য কোনো পূজা অর্চনার দরকার নেই, তাই তাদের দায় নেই কোনো মন্দির টিকিয়ে রাখা এবং সেই মন্দিরের পূজার জন্য ভক্তদেরকে টিকিয়ে রাখার। দেব-দেবীদের পূজা করতে হয় ভক্তদেরকে নিজেদেরই স্বার্থেই, দেব-দেবীর পূজা করে ভক্তরা ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণ লাভ করে থাকে এবং এই পূজা করতে করতেই ভক্তরা এক সময় পরমব্রহ্মকে বুঝতে পারে এবং মোক্ষ লাভ করতে পারে। আর যদি কেউ দেব-দেবীর পূজার মাধ্যমে পরমব্রহ্মকে বুঝতে এবং তার কাছে পৌঁছতে না পারে, তাহলে সে পরের জন্মে আবার আগের বারের চেয়ে খারাপ অবস্থায়, এমনকি ইতর প্রাণী রূপে জন্ম নিয়ে আগের জন্মের ভুলের শাস্তি পাবে, এভাবে যতদিন সে নিজেকে শুধরে না নেবে, ততদিন সে জন্মমৃত্যুর চক্রে খারাপ থেকে খারাপ অবস্থায় পতিত হবে এবং শাস্তি পেতে থাকবে। এ প্রসঙ্গে একটা বিষয় দৃঢ় নিশ্চয়তার সাথে বলা যায় যে, যত যা ই ঘটুক সনাতন ধর্ম পৃথিবী থেকে কোনোদিন নিশ্চিহ্ন হবে না। মানুষের মোক্ষপ্রাপ্তির আলোকবর্তিকা হিসেবে এটি পৃথিবীতে টিকে থাকবেই, এখন এটি কতভালো ভাবে বা কত খারাপ ভাবে টিকে থাকবে, সেটা নির্ভর করছে জীবিত সনাতনীদের কর্মের উপর।
এ প্রসঙ্গে আরেকটি কঠিন কথা বলা প্রয়োজন যে- কোনো দেব-দেবীর মূর্তির মধ্যে কোনো শক্তি নেই, শক্তি আছে সেই দেব-দেবীর মূর্তির আদর্শের মধ্যে এবং শিক্ষাও আছে সেই দেব-দেবীর পূজার মধ্যে। কোনো দেব-দেবীর পূজা করে কোনো মানুষ যদি সেই দেব-দেবীর মূর্তির মধ্যে থাকা শিক্ষাকে বুঝতে পারে এবং সেটা গ্রহন করতে পারে, তাহলেই সেই ব্যক্তির সেই দেব-দেবীর পূজা করা সার্থক। সরস্বতীর পূজা করে কেউ যদি মনে করে যে দেবী সরস্বতী তাকে জ্ঞান বুদ্ধি প্রদান করবে, তাহলে সে মূর্খ। সরস্বতীর এক হাতে থাকে বই, এই বই ই বলে দিচ্ছে যে জ্ঞান বুদ্ধি অর্জন করতে হলে বই পড়তে হবে। তাই কেউ সরস্বতী পূজা করুক বা না করুক, বাস্তবে কেউ যদি সরস্বতী পূজার প্রধান শিক্ষা, বই পড়ে, তাহলেই সে জ্ঞানী হবে। অনেকে ভেবে বা বলে থাকে যে, মুসলমানসহ ইহুদি খ্রিষ্টানরা তো কখনো সরস্বতী পূজা করে না, তাহলে তারা কিভাবে এত জ্ঞানী হয় ? তারা জ্ঞানী হয় এইভাবে, সরস্বতী পূজার শিক্ষা বই পড়াকে কাজে লাগিয়ে। বই যে জ্ঞানের ভাণ্ডার এবং মানুষ বই পড়লে যে জ্ঞানী হবে, সেই ধারণা প্রথম দিয়েছে সিন্ধু সভ্যতার মুনি ঋষিরা; কারণ, তারাই পৃথিবীর প্রথম বই ঋগ্বেদের লেখক এবং তারাই বই পড়ার শিক্ষাটাকে সরস্বতী পূজার মাধ্যমে প্রচার করেছেন।
একইভাবে কেউ যদি মনে করে যে লক্ষ্মী পূজা করলেই সে ধনী হবে, সে আসলে মূর্খ। লক্ষ্মীর সাথে থাকে ধান, সেই ধান হলো ধনের প্রতীক, যে ধান চাষ করা পৃথিবীর কঠিন পরিশ্রমগুলোর মধ্যে একটি। লক্ষ্মীর সাথে থাকা ধান দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে পরিশ্রম করলেই মানুষ ধনী হবে এবং সেই পরিশ্রম যদি সরস্বতীর পূজার শিক্ষা জ্ঞানের সমন্বয়ে করা হয়, তাহলে সে আরো বেশি ধনী হবে। এই ধন মানুষকে শুধু বিপদ আপদ থেকে রক্ষাই করে না, ধন মানুষকে বিপদেও ফেলে, এমনকি প্রাণেও মেরে ফেলে, তাই এই ধন বা অর্থ যাতে অনর্থ সৃষ্টি না করে, সেজন্য লক্ষ্মীর সাথে দিয়ে দেওয়া হয়েছে পেঁচা, যে পেঁচা দিনে বের হয় না অর্থাৎ পেঁচা গোপনীয়তার প্রতীক, লক্ষ্মীর সাথে পেঁচা দিয়ে এটা বলে দেওয়া হয়েছে যে, পরিশ্রম করে যে ধন অর্জন করবে, সেই ধন রাখতে হবে গোপনে, না হলে এই ধনই তোমার বিপদ ডেকে আনবে।
এভাবেই দুর্গা, শিব, কালী, কার্তিক পূজার আদর্শের মধ্যে দিয়ে বলে দেওয়া হয়েছে যে- যোদ্ধা হও এবং হাতে অস্ত্র রাখো, তাহলেই নিজেকে রক্ষা করতে পারবে এবং নিজেকে রক্ষা করতে পারলে সমাজ এবং ধর্মকেও রক্ষা করতে পারবে, আর তাতেই রক্ষা পাবে তোমাদের আবেগ, ভালোবাসা এবং শিক্ষার স্থান দেবমন্দির।
এসবকারণেই দেবতার মন্দির মানুষকেই রক্ষা করতে হবে এবং দেব-দেবীর পূজাও মানুষকেই করতে হবে, নিজেদের টিকে থাকা এবং মোক্ষপ্রাপ্তি অর্থাৎ জন্ম মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি লাভের স্বার্থে।
যা হোক, এখন উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে ভাবুন, আপনার পাড়ার মন্দিরে মহাপ্রলয় পর্যন্ত পূজা অর্চনা হোক, সেটা আপনি চান, না চান পাকিস্তানের ঐ মন্দিরটির মতো সেটি পরিত্যক্ত বা পূজা শূন্য হোক ? যদি চান মহাপ্রলয় পর্যন্ত আপনার পাড়ার মন্দিরে পূজা অর্চনা হোক আর পূজা উপলক্ষে ঢাক বাজুক, শঙ্খ বাজুক, উলুধ্বনি উচ্চারিত হোক, তাহলে সর্বপ্রকার নপুংসকের আদর্শকে নিজের মাথা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে- রাম, শ্রীকৃষ্ণ, অর্জুনের আদর্শকে ধারণ করুন, প্রতিদিন তাদের পূজা করুন, তাদের আশীর্বাদে আপনার অস্তিত্ব টিকে থাকবে পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত।
জয় হিন্দ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন