বৃহস্পতিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৮

ইসলামে খুনের পদ্ধতিসমূহ



ইসলামে খুনের পদ্ধতিসমূহ


ফেসবুক থেকে       শেয়ার করেছেন       প্রণব কুমার কুণ্ডু


Rupok Roy


ইসলামে খুনের পদ্ধতিসমূহ :

গত কয়েক বছর পূর্বে সারা পৃথিবী জুড়ে মুসলমানরা চালিয়ে গেছে লগাতার খুনের উৎসব এবং এখনও দুচারটা চালিয়ে যাচ্ছে। তালিবানরা আফগানিস্তান, পাকিস্তানে; বোকোহারাম নাইজেরিয়ায়; আল শাবাব সোমালিয়ায় আর আইএস- ইরাক, সিরিয়া থেকে শুরু করে ফ্রান্স, জার্মানি, আমেরিকা ও বাংলাদেশে। অন্যান্য দেশের মুসলমানরা গুলি, বোমা মেরে কাফেরদেরকে হত্যা করলেও বাংলাদেশের মুসলমানরা চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করতে খুবই আগ্রহী, যদিও তারা লেটেস্ট, বাচ্চু নামের একজনকে গুলি করে হত্যা করেছে। কিন্তু আসলে ইসলামে খুনের পদ্ধতিগুলো কী ? এ নিয়েই আজকের আমার এই আয়োজন, সেই সাথে অন্যান্য প্রসঙ্গ তো কিছু থাকছেই। ইসলামকে শান্তির ধর্ম বলে প্রচার করে মুসলমানরা প্রকৃতপক্ষে কী আড়াল করতে চেষ্টা করেছে বা করছে, তা বুঝতে পারবেন এই পোস্টটি পড়লে।

প্রথমেই দেখে নিন ইসলামের ইতিহাসের কিছু ঘটনা, মুহম্মদ কাকে, কাকে এবং কিভাবে খুন করেছে বা করিয়েছে :

মুহম্মদ, মক্কা থেকে মদীনায় পালিয়ে যাওয়ার পর, প্রথম যে তিনজনকে খুন করায়, তারা হলেন তিন ইহুদি কবি- কাব, আকাফ এবং আসমা। কারণ, মুহম্মদের নির্দেশে, মুসলমানরা কোরেশদের বাণিজ্য কাফেলার উপর যে হামলা, খুন ও লুঠপাট করছিলো, এই তিন কবি তার সমালোচনা করে কবিতা লিখেছিলো। ফলে মুহম্মদ গুপ্ত ঘাতক পাঠিয়ে এই ৩ জনকেই হত্যা করায়। মহিলা কবি আসমা এবং আকাফকে ঘুমন্ত অবস্থায় বুকে তলোয়ার ঢুকিয়ে দিয়ে এবং কাব বিন আশরাফকে তলোয়ার দিয়ে মাথা কেটে হত্যা করা হয়। এই কবিদের কবিতার মাধ্যমে মুহম্মদ বিরক্ত হয়েছিলো বলেই ইসলামে কবিতা লিখা নিষেধ। কারণ, মুহম্মদ বলে গেছে,

"পেট ভরা কবিতার চেয়ে পেট ভরা পুঁজ উত্তম।" (Sahih Muslim 28:5611)

কোরানেও কবিদেরকে অবহেলা ও ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে বলা হয়েছে,

"আর কবিদের কথা ! তাদের পেছনে চলে বিভ্রান্ত লোকেরা। তোমরা কি দেখো না যে, প্রতিটি প্রান্তরে তারা বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরে মরে, এবং এমন সব কথা বার্তা বলে, যা তারা নিজেরা করে না। - (কোরান, ২৬/ ২২৩,২২৪,২২৫)

কোরানে আরও বলা হয়েছে,

“আমার বান্দার প্রতি যে গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছি, তা আমার প্রেরিত কি না, বিষয়ে তোমাদের মনে যদি কোনো প্রকার সন্দেহ থাকে, তবে তার মতো একটি সূরা রচনা করে আনো। ( কোরান- ২/২৩)

এখানে খেলাটা খেয়াল করুন, একদিকে কোরানে কবিতা লেখাকে নিরুৎসাহিত করার জন্য কবিদের নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা হচ্ছে, মুহম্মদ কবিদেরকে হত্যা করাচ্ছে, বলছে, "পেট ভরা কবিতার চেয়ে পেট ভরা পুঁজ উত্তম।" অন্যদিকে আবার কোরানের মতো একটি সূরা রচনা করে আনার জন্য কবিদেরকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে। এটা কি সুস্থ প্রতিযোগিতা, না মৃত্যুর খেলা ? কবিরা কি মানুষ নয় ? ওদের কি মৃত্যু ভয় নেই ? সবচেয়ে বড় কথা হলো পৃথিবীতে কেউ কারো মতো লিখতে পারে না। কারণ, সব মানুষই অনন্য, কেউ কারো মতো হান্ড্রেড পার্সেন্ট নয়। আমি যেমনভাবে লিখি, কেউ তার চেয়ে ভা্লো লিখতে পারে, কিন্তু আমার মতো লিখা কারো পক্ষে সম্ভব নয়।

কোরান সম্পর্কে মুসলমানরা যা ই বিশ্বাস করুক, বাস্তব ব্যাপার হচ্ছে, কোরান মুহম্মদের উপলব্ধি অর্থাৎ মুহম্মদের লিখা।
মুহম্মদ মূর্খ ছিলো বলে নিজে লিখতে পারতো না, সে মাঝে মাঝে হিস্টিরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে যা বলতো, তাই তার সাঙ্গোপাঙ্গোরা মুখস্থ করতো বা লিখে রাখতো।
কোরান, আল্লার নয় মুহম্মদের নিজের কথা, এটা বুঝতে পেরে, মুহম্মদের প্রথম কোরান লেখক, হযরত ওসমানের সৎ ভাই, সাদ, মুহম্মদের সঙ্গ ও ইসলাম ত্যাগ করেছিলো। এরপর প্রাণের ভয়ে সাদকে বহুদিন পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে, যদিও ওসমান নিজের ক্ষমতা বলে তার ভাইকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছে।

যা হোক, এই আয়াতের সূত্র ধরেই মুসলমানরা বলে থাকে কোরানের মতো আর একটি আয়াতও রচনা করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। জ্ঞা্ন-বুদ্ধি এবং সৃজনশীলতার অভাবে মুসলমানদের পক্ষে তা সম্ভব না হতে পারে, কিন্তু কমপক্ষে ৬/৭ হাজার বছর আগে হিন্দুর দ্বারা লিখিত দুটি মহাকাব্য, রামায়ণ ও মহাভারতের একটি শ্লোকের কাছে দাঁড়ানোর ক্ষমতা কোরানের কোনো আয়াতের নেই। এজন্যই রামায়ন, মহাভারতকে বলে মহাকাব্য; কোরানকে কেউ মহাকাব্য বলে না। লেটেস্ট, মধুসূদন দত্তের “মেঘনাদ বধ” কাব্যের সাথে কোরানের তুলনা না হয়, আর না ই করলাম।
হুরলোভী মুসলমানদের কাছে কোরান মহাগ্রন্থ হতে পারে, কিন্তু সাহিত্য জগতে কোরানের এক কানাকড়িও দাম নেই।

কোরান কেমন আল্লার বাণী চিন্তা করুন, কোরানের সমকক্ষ একটি আয়াত রচনা করার জন্য মানুষকে চ্যালেঞ্জ জানানো হচ্ছে। কোনো মানুষই অপর মানুষকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে, সৃষ্টিকর্তাকে মানুষের প্রতি চ্যালেঞ্জ জানাতে হবে কেনো ? মানুষ কি সৃষ্টিকর্তার প্রতিপক্ষ ? এই একটি তথ্যেই এটা প্রমান হয় যে, কোরান কোনো সৃষ্টিকর্তার নয়, মুহম্মদের বাণী।

মুহম্মদ, মানুষকে কোরানের আয়াতের মতো কোনো আয়াত রচনা করে আনার জন্য চ্যালেঞ্জ দিলেও কেউ সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে নি। কারণ, তখনকার আরবের লোক বুঝে গিয়েছিলো যে, মুহম্মদের বিরুদ্ধে যাওয়া মানেই নিশ্চিত মৃত্যু। মুহম্মদ যেমন মনে করতো যে, "পেট ভরা কবিতার চেয়ে পেট ভরা পুঁজ উত্তম।" তেমনি সেই সময়ের কবিরাও, তিন ইহুদি কবির পরিণতি দেখে বুঝে গিয়েছিলো যে, কবিতা লিখে মরার চেয়ে বেঁচে থাকাই উত্তম।

যা হোক, ফিরে যাই খুনের পদ্ধতির আলোচনায়। মুহম্মদের নির্দেশে, মুহম্মদের জীবদ্দশাতেই মুসলমানরা জিহাদের নামে হাজার হাজার মানুষকে খুন করেছে। এক দিনেই কুরাইজা গোত্রের ৮০০ জন ইহুদি পুরুষকে আলী এবং তার ভাই জোবায়ের গলা কেটে হত্যা করেছে, মুহম্মদ তা দিনভর বসে বসে দেখেছে। কিন্তু একটি ঘটনায় মুহম্মদ নিজের হাতে ৮ জন লোককে হত্যা করে, দেখে নিন সেই ঘটনাটি:

একবার উকল গোত্রের ৮ ইহুদি মদীনায় এসে ইসলাম গ্রহন করে। কিন্তু মদীনার আবহাওয়া সহ্য না হওয়ায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে মুহম্মদ তাদের উটের দুধ ও প্রস্রাব খাওয়ার পরামর্শ দেয় এবং উটের আস্তাবলে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। কিছুদিন পর তারা সুস্থ হয়ে উঠলে ঐ আস্তাবলের দারোয়ানকে খুন করে কয়েকটি উট নিয়ে পালিয়ে যায়। কয়েকদিনের মধ্যেই মুহম্মদের বাহিনী তাদেরকে ধরে এনে মুহম্মদের সামনে হাজির করে।
এই ৮ জন, একজনকে খুন করে উট নিয়ে পালিয়ে নিশ্চয় অন্যায় করেছিলো। কিন্তু মুহম্মদ, যিনি নাকি দয়ার নবী, সেই মুহম্মদ তাদের নিজের হাতে কী রকম নৃশংস শাস্তি দিয়েছিলো, সেটা একবার সেই সময়ে গিয়ে কল্পনার চোখে দেখুন, উপলব্ধি করতে পারবেন নৃশংসতা কাকে বলে ?
এই ঘটনাগুলোর বর্ণনা পাওয়া যাবে মুসলিম শরীফের ৪১৩০ ও ৪১৩৩ নং হাদিসে এবং বুখারী শরীফের ৬৩৩৩ থেকে ৬৩৩৬ নং পর্যন্ত হাদিসে।

মুহম্মদ প্রথমে দুটি লোহার রড চেয়ে নেয় এবং সেগুলোকে তাদের সামনেই আগুনে লাল করে গরম করে এবং তারপর ৮ জনের চোখেই একের পর এক ঢুকিয়ে দিয়ে তাদের অন্ধ করে দেয়। এরপর একটি ধারালো তলোয়ার দিয়ে তাদের প্রত্যেকের হাত পা কেটে আলাদা করে ফেলে এবং মরুভূমির বালির মধ্যে দুপুরের তপ্ত রোদের মধ্যে ফেলে রাখে। তারা জল খেতে চাইলেও মুহম্মদ তা কাউকে দিতে নিষেধ করে , এভাবে পড়ে থেকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সবাই মারা যায়।

এভাবে লোহার গরম রড দিয়ে চোখ অন্ধ করে দিয়ে হাত পা কেটে ফেলে তিলে তিলে মারা নবীর সুন্নত। কিন্তু বর্তমানের মুসলমানদের এই সুন্নত পালনের সুযোগ নেই বললেই চলে। কিন্তু অতীতের মুসলমান শাসকরা এরকম সুন্নত পালন করে হাত পা কেটে হিন্দুদেরকে যে হত্যা করেছে তার বহু উদাহরণ ইতিহাসে আছে।

ইতিহাস ছেড়ে এবার নজর দিই কোরানে। কোরানের ৩৪/৩৩ আয়াতে বলা হয়েছে,

"আমি এই অবিশ্বাসীদের গলায় ফাঁস ঝুলিয়ে দেবো, .... এছাড়া তাদেরকে অপর কোনোরূপ বদলা দেওয়া যায় কি ? "

এখানে মুহম্মদের আল্লা বলছে, যারা তার কথা মেনে নেয় নি এবং তাকে বিশ্বাস করে নি, তাদেরকে সে গলায় ফাঁস দিয়ে মারবে। এখানে তো এই প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, এ কেমন ক্ষমতাশালী আল্লা, যে আল্লা মানুষ সৃষ্টি করতে পারে, অথচ তার মধ্যে তাকেই বিশ্বাস করার সফটওয়্যার ভরে দিতে পারে না ? শেষে আল্লা আবার প্রশ্ন করেছে, এছাড়া তাদেরকে অপর কোনোরূপ বদলা দেওয়া যায় কি ? এই প্রশ্ন আল্লা কাকে করছে ? কোনো সর্বশক্তিমানকে কেনো অপরকে কোনো প্রশ্ন করতে হবে ? কাউকে প্রশ্ন করার মানেই হলো তার সমর্থন চাওয়া, আল্লা এখানে কার কাছ থেকে সমর্থন চাচ্ছে ? কোনো সর্বশক্তিমানের কি কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কারো সমর্থনের প্রয়োজন আছে ? যা হোক, প্রশ্ন করে আল্লা এটা বুঝিয়ে দিয়েছে যে, অবিশ্বাসীদেরকে গলায় ফাঁসি দেওয়া ছাড়া অন্য কোনো শাস্তি সে দেবে না। কিন্তু সত্যই কি তাই ? দেখুন কোরানের ৪/৫৬ নং আয়াত কী বলছে,

“যে সব লোক আমার কথা মেনে নিতে অস্বীকার করেছে, তাদেরকে নিঃসন্দেহে আমি আগুনে নিক্ষেপ করবো।‍"

এটা কোনো সর্বশক্তিমান সর্বজ্ঞানীর কথা, না পাগলের প্রলাপ ? কখন কী বলছে তার ঠিক নেই ! এবার নিচের আয়াতটি ভালো করে খেয়াল করুন, এটা না বলেছে আল্লা্, না বলেছে নবী, বাক্যের গঠনই বলছে, এটা তৃতীয় কোনো ব্যক্তি বলেছে,

“আল্লাহ ও রসূলের প্রতি যে সব লোক ঈমানদার নয়, এমন কাফেরদের জন্য আমি দাউ দাউ করে জ্বলা অগ্নিকুণ্ডলী প্রস্তুত করে রেখেছি।”- ( কোরান, ৪৮/১৩)

বাক্যটি যদি আল্লা বলতো শুরু হতো এভাবে, “আমার ও রসূলের প্রতি যে সব লোক ঈমানদার নয়”

আবার মুহম্মদ বললে বাক্যটি হতো, “আল্লাহ ও আমার প্রতি যে সব লোক ঈমানদার নয়”

তাহলে কোরানের এই বাক্যটি কে বললো ?

মুসলমানরা দাবী করে কোরানের সমস্ত কথা ই আল্লার। কাফেররা বলে, কোরানের কথা মুহম্মদের, মুহম্মদ তা তার কল্পিত আল্লার নামে চালিয়েছে। কিন্তু এই আয়াতটি তো এই দুই দাবীর কোনোটাকেই স্বীকার করছে না। এই একই ব্যাকরণগত ঝামেলায় পড়বেন, নিচের এই আয়াতটি পড়লে,

“যারা আল্লা সম্বন্ধে মন্দ বলে এবং রসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লা তাদের ইহলোক পরলোক অভিশপ্ত করেন এবং তিনি তাদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন”। ( কোরান- ৩৩/৫৭)

উপরে যেসব শাস্তির কথা বললাম, সেগুলো আল্লা, কাফেরদেরকে পরকালে দেবে। কিন্তু নিচের এই আয়াতে দেখুন, পৃথিবীতে ইসলা্ম বিরোধীদের জন্য কী শাস্তির ব্যবস্থা;

"যারা আল্লাহ এবং তার রসূলের সাথে লড়াই করে এবং যমীনে ফ্যাসাদ ও বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়ায় তাদের জন্য নির্দিষ্ট শাস্তি, হত্যা কিংবা শূলে চড়ানো। অথবা তাদের হাত পা উল্টা দিক থেকে কেটে ফেলা, কিংবা দেশ হতে নির্বাসিত করা। এ লাঞ্ছনা ও অপমান হবে এই দুনিয়ায়, কিন্তু পরকালে তাদের জন্য এ অপেক্ষাও কঠিন শাস্তি নির্দিষ্ট আছে।”- (কোরান- ৫/৩৩)

এই বাক্যটিও যে, কোনো থার্ড পার্সন বলেছে, সেই আলোচনায় আর যাচ্ছি না, আপনারা একটু বুঝে নেন। এখানে বলা হচ্ছে, যারা আল্লা ও মুহম্মদের সাথে লড়াই করবে, তাদেরকে শুলে চড়িয়ে হত্যা করা হবে বা উল্টো দিক থেকে হাত পা কেটে ফেলা হবে বা দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে।

শুলে চড়ানো প্রাচীন এক হত্যা পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে মানুষকে বেশ কিছু সময় ধরে তিলে তিলে যন্ত্রণা দিয়ে মারা হয়। পদ্ধতিটি সম্পর্কে যারা জানেন না, তাদের জন্য বলছি, এ পদ্ধতিতে একটি সুচালো লোহার রড, যা গোড়ার দিকে ক্রমশ মোটা, তা মাটির উপর শক্ত করে পোঁতা থাকে। যাকে হত্যা করা হবে, তাকে সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে তার হাত পা বেঁধে ঐ সুচালো রডের উপর এমনভাবে বসানো হয়, যাতে রডটি তার পায়ুপথে ঢুকে যায়, একসময় ঐ রডটি তার মুখ, মাথা বা ঘাড়-পিঠ ফুড়েঁ বেরিয়ে যায় এবং ভিকটিমের মৃত্যু ঘটে।

এই পদ্ধতিটি প্রাচীন রোমে আবিষ্কৃত হয়েছিলো এবং মোটামুটি রাজা বাদশাহদের সময় পর্যন্ত চালু ছিলো, কিন্তু বর্তমানে এই পদ্ধতিতে মৃত্যুদন্ড কোথাও আর কার্যকর হয় না। একসময় পৃথিবী থেকে এই পদ্ধতি যে উঠে যাবে, সেই জ্ঞান সর্বজ্ঞানী আল্লা এবং মুহম্মদের জানা ছিলো না, জানা থাকলে কেয়ামত পর্যন্ত অপরিবর্তনীয় বিধান কোরানে তারা এই পদ্ধতিটি যুক্ত করতো না।

ঐ আয়াতে শুরুতেই বলা হয়েছে, যারা আল্লা ও মুহম্মদের সাথে লড়াই করবে, তাদেরকে ঐ শুলে চড়ানোর শাস্তি দেওয়া হবে। কিন্তু ইসলামের ইতিহাসে এটা স্পষ্ট যে, যে দিন থেকে মুহম্মদের মাথায় ইসলামের ভূত চেপেছে, সেদিন থেকে সে পায়ে পা দিয়ে অমুসলিমদের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়েছে, তা না হলে, যে কাবা একটি মন্দির ছিলো, যাতে ৩৬০ টি দেব-দেবী ছিলো, কেনো তাকে সেই কাবায় গিয়ে নামাজ পড়তে হবে ? কেনো তাকে কাবা দখল করতে হবে ? মুহম্মদ যদি শান্তিবাদী হতো, তাহলে সে কি কাবার পাশে তার একটি মসজিদ বানিয়ে নিতে পারতো না ? আসলে মুহম্মদের উদ্দেশ্যই ছিলো দখল করা আর লুঠপাট করে খাওয়া, তাই সে গনিমতের মালের থিয়োরির আমদানী করে। আর এই দখল ও লুঠপাট করে খেতে গিয়েই মুসলিমরা সেই শুরু থেকে আজ পর্যন্ত অমুসিলমদের সাথে লড়াই এ লিপ্ত আছে। সুতরাং, আয়াতে যে বলা আছে, যারা আল্লা ও রসূলের সাথে লড়াই করে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বরং মুসলমানরাই আগ বাড়িয়ে সবার সাথে ঝাগড়া বাধিয়ে লড়াইএ লিপ্ত।

ঐ আয়াতে আরও বলা আছে,

“যমীনে ফ্যাসাদ ও বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়ায়”,

সারা পৃথিবীতে ইসলাম কায়েমের নেশায় মুসলমানরাই যে ইসলামের আবির্ভাবের পর থেকে আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে ফ্যাসাদ ও বিপর্যয় সৃষ্টি করে চলেছে, ইসলামের ইতিহাস জানা না থাকলেও, তালেবান-বোকোহারা-আইএস এর কর্মকাণ্ডে এখন তো সেটা সবার কাছে দিবালোকের মতো স্পষ্ট।
আয়াতে মধ্যে আরও বলা আছে, “তাদের হাত পা উল্টা দিক থেকে কেটে ফেলা, কিংবা দেশ হতে নির্বাসিত করা।” হাত পা উল্টা দিক থেকে কেটে ফেলার মানে ডান হাত কাটলে, কাটতে হবে বাম পা। এতে কোনো লোক বেঁচে থাকলে সম্পূর্ণ পঙ্গু হতে বাধ্য। আর দেশ থেকে বিতাড়ন করার জন্য তো আল্লা ও মুহম্মদের সাথে লড়াই করার প্রয়োজন হয় না, ইসলামে অবিশ্বাস করলেই হয়। কারণ, মানবতার চরম শত্রু মুহম্মদ, মরতে মরতে বলে গেছে, সমগ্র আরবে ইসলাম ছাড়া যেন কোনো ধর্ম না থাকে (মুসলিম শরীফ, ৮০১৮)। তাই সৌদি আরবে কোনো অমুসলিম নাগরিক নেই। হয় তারা চাপে পড়ে ইসলাম গ্রহণ করেছে, না হয় মরেছে। মুহম্মদের এই নীতি অনুসরণ করেই পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মুসলমানরা হিন্দুদেরকে দেশ থেকে বিতাড়িত করে চলেছে।

ইতিহাসের আলোকে এটা স্পষ্ট যে, অমুসলিমরা কখনো আগ বাড়িয়ে মুসলমানদের সাথে লড়াই করতে যায় নি, অমুসলিমরা যা করেছে, তা মুসলমানদের ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া মাত্র। তাহলে এই আয়াতে যমীনে ফ্যাসাদ ও বিপর্যয় সৃষ্টির কথা বলা হলো কেনো ? মুসলমানদের কাছে ফ্যাসাদ ও বিপর্যয় সৃষ্টির অর্থ আলাদা। এটা বুঝতে হলে আবার আপনাকে ঢুকতে হবে ইসলামের ইতিহাসের ভেতরে।

মুহম্মদ মদীনায় ক্ষমতাশালী হওয়ার পর পরই, আশে পাশের বিভিন্ন গোত্রপতিদের কাছে লিখিত বা্ মৌখিকভাবে এই আদেশ দিতো যে, হয় ইসলাম গ্রহণ করো বা আমার বাহিনীর মোকাবেলা করো। মুহম্মদের এই যে আদেশ, এটা অমান্য করাই ছিলো যমীনে ফ্যাসাদ বা বিপর্যয় সৃষ্টি। এর সরল মানে হলো, কোনো মুসলমান এসে আপনাকে বললো, ইসলাম গ্রহণ করো, আপনি যদি তার কথাকে অমান্য করেন, তাহলেই সেটা হবে ফেতনা বা ফ্যাসাদ, আর এই ফেতনা বা ফ্যাসাদ সৃষ্টির জন্য ঐ মুসলমান আপনাকে হত্যা করতে পারবে, এতে ধর্মীয়ভাবে তার তো কোনো পাপ হবেই না, বরং কাফের হত্যার জন্য তার বেহেশত প্রাপ্তির পথ সুগম হবে। এজন্যই কোরানের ২/১৯৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে,

“তোমরা তাদের সাথে লড়াই করতে থাকো, যতক্ষণ না ফেতনা চুড়ান্তভাবে শেষ হয়ে যায় এবং দ্বীন কেবলমাত্র আল্লার জন্য নির্দিষ্টি না হয়।”

অর্থাৎ পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকে মুসলমান না বানানো পর্যন্ত মুসলমানারা জিহাদের নামে অমুসলিমদের বিরুদ্ধে খুন ধর্ষণ হত্যা চালিয়ে যাবে।

এখন বুঝতে পারছেন, আপনার প্রতিবেশি বা আশে পাশে ঘুরে বেড়ানো মুসলমানদের মাথায় কী ভয়ঙ্কর চিন্তা কাজ করছে ?

এছাড়াও কোরানের ৩৩/৬০-৬১ আয়াতে বলা আছে,

"...ওদের যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই ধরা এবং নির্দয়ভাবে হত্যা করা হবে।“

এখানে, ‘ওদের’ শব্দ দ্বারা বোঝানো হয়েছে আমি আপনি অর্থাৎ সকল অমুসলিমকে। আর তাদেরকে নির্দয়ভাবে হত্যা করার পদ্ধতিটা কী ? দেখে নিন নিচের আয়াতে-

"তাদের গর্দানে আঘাত করে মস্তক ছিন্ন করো এবং তাতের অঙ্গুলিসমূহ ছিন্ন করো। ইহা এজন্য যে তারা আল্লার রাসূলের বিরোধিতা করেছিলো।”- ৮/১২-১৩

গর্দান মানে ঘাড়ে আঘাত করে মস্তক ছিন্ন করলেই তো যে কারো মৃত্যু নিশ্চিত, তাহলে তার অঙ্গুলি ছিন্ন করার দরকার কী ? এটাই হলো নির্দয়ভাবে হত্যা করা। যাতে অন্যরা তার মৃতদেহ দেখে তা ভয় পায় এবং তাড়াতাড়ি মুসলমানদের কাছে আত্মসমর্পণ ক’রে ইসলাম গ্রহণ করে।

ঘাড়ের উপর আঘাত করেই যে কাফেরদেরকে মারতে হবে, সে কথা আবারও বলা আছে ৮/১২ আয়াতে, দেখে নিন সেটা-

“ তোমরা তাদের ঘাড়ের উপর আঘাত হানো এবং জোড়ায় জোড়ায় আঘাত লাগাও।”

এই আয়াতটিই বাংলাদেশে কুপিয়ে হত্যার মূল অনুপ্রেরণা। আয়াতটি খুব ভালো করে লক্ষ্য করুন। দেখুন, বলা আছে, ঘাড়ের উপর এবং জোড়ায় জোড়ায় আঘাত করতে। এক জোড়ায় হয় দুইটা, দুই জোড়ায় হয় চারটা। তো কমপক্ষে চারটা আঘাত করতে হলে তো কোপাতেই হবে। এজন্যই এক জঙ্গী ধরা পড়ার পর বলেছিলো, কুপিয়ে মারলে ছোয়াব বেশি।

যা হোক, ইসলামে কাফেরদেরকে হত্যা করার নানা পদ্ধতি, যেমন- গলায় ফাঁস দিয়ে মারা, আগুনে পুড়িয়ে মারা, হাত পা কেটে টুকরো টুকরো করে মারার নির্দেশ থাকলেও, ইসলাম অপরির্তনীয় হলেও পৃথিবী যেহেতু পরিবর্তনশীল, সেহেতু বর্তমানে গুলি বোমা মেরে কাফের হত্যা বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। কারণ এতে এক সাথে মূহুর্তের মধ্যে অনেক কাফের মারা যায়। কিন্তু বাংলাদেশে, গুলি বোমা সহজলভ্য নয় বা সহজে বহন যোগ্য না হওয়ায় এবং বেশ খরচ সাপেক্ষ হওয়ায়, খুন করতে চাপাতির ব্যবহার বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। কারণ, এতে কোনো খরচ নেই, বারবার একই চাপাতি ব্যবহারযোগ্য এবং বহন করাও সহজ। চাপাতি দিয়ে কাউকে খুন করার পূর্বে ধরা পড়লেও গরুর মাংস কাটার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলাম বলেও পুলিশের কাছে পার পাওয়া যায়।

এজন্যই ইসলামের সকল প্রকার খুনের পদ্ধতির মধ্যে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে খুন বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। কারণ এতে খরচ বাঁচার পাশাপাশি কুপিয়ে কুপিয়ে খুন করার ইসলামী নির্দেশ পালন করা যাচ্ছে; আর এই খুনিরা, এই আশা ও বিশ্বাস করছে যে, তাতে নিশ্চয় মুহম্মদ খুশি হয়ে তাদেরকে বেহেশতে নসিব করে অগনিত হুর-গেলমানের সাথে শোয়ার পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করে দেবে। শালা, লম্পট, শুয়োর, মুসলমানের বাচ্চা কোথাকার!

ইসলামের এই খুনি ও ঘাতক চেহারাকে আড়াল করতেই বিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকে, সারা বিশ্বের ইসলামী নেতৃবৃন্দ

লন্ডনে এক সভায় মিলিত হয়, সেখানে পজিটিভ আকারে ইসলামকে প্রচারের জন্য তারা বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহন করে, তারই একটা হলো- কথায় কথায় সকল মুসলমানকে বলতে হবে ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম শান্তির ধর্ম, কারণ ইসলাম মানে শান্তি। যদিও ইসলাম নয়, সালাম শব্দের অর্থ শান্তি। এই ধোকাবাজি চলছিলো লাদেনের টুইন টাওয়ারে হামলার আগ পর্যন্ত। কিন্তু লাদেন টুইন টাওয়ারে হামলা করে ইসলামের মুখোশ একেবারে খুলে দিয়েছে। এখন মুসলমানদের চেয়ে অমুসলিমরা কোরান হাদিস পড়ছে বেশি, আর তারা নেট- ফেসবুকে তুলে ধরছে, ১৪০০ বছর ধরে মুসলমানদের দ্বারা আড়াল করে রাখা, ইসলামের নৃশংস ও ঘাতক চেহারা; যা দেখে শিহরিত হচ্ছে মানুষ এবং ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে ইসলামের থেকে। এখন দেখার বিষয়, এই নেট-ফেসবুকের দুনিয়ায় ইসলাম আর কতদিন টিকে থাকতে পারে ?

জয় হিন্দ।

From: Krishna kumar das
💜





Rupok Roy


হিন্দুদের এত দেবতা, আসলে কোনটা বড় ? এবং ইসলাম নাকি সবচেয়ে প্রাচীন ধর্ম !

উপরের এই দুটো প্রসঙ্গসহ মুসলমানদের করা আরো কিছু প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে জানতে চেয়েছিলো Pritam Das নামের আমার এক ফেসবুক বন্ধু। শুরুতেই দেখে নিন সেই প্রসঙ্গগুলো-

মুসলমানরা বলে যে, একটা হাতির মুখ মানুষের শরীরে কি করে বসানো যায় ? কী যুক্তি আছে এটার পেছনে ? আর সেইটাকে তোমরা হিন্দুরা আবার পূজাও করো! আবার সেই গনেশের একটা কলা গাছ বউও আছে। তারপর হুনুমান কী করে উড়তে পারে ? কী করে একাই একটা লংকা জ্বালিয়ে দিতে পারে ? এছাড়াও বলে যে ইসলাম নাকি পৃথিবীর প্রাচীন ধর্ম, হিন্দু ধর্ম অনেক পরে এসেছে। পৃথিবী কবে শেষ হবে তা নাকি ওদের কোরানে লেখা আছে। আর মাঝে মধ্যে প্রায় জিজ্ঞেস করে হিন্দুদের এত দেবতা, আসলে কোনটা বড় ? কোনো না কোনো তো একটা বড় দেবতা হয়েই যায়। সবাই তো এক দেবতা পূজা করে না। কেউ কেউ তো আলাদা পূজা করে, তাহলে হিন্দুদের মধ্যে দেবতা নিয়ে একতার অভাব। ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি...

এবার দেখুন আমার জবাব:

মুসলমানরা হিন্দুদেরকে ধর্ম বিষয়ে নানা প্রশ্ন করে বিব্রত করে, ঠিকঠাক সেই প্রশ্নগুলোর জবাব দিতে না পারলে হিন্দুরা হেয় হয়, এরপর ধর্ম নিয়ে সে হীনম্মন্যতায় ভুগে, যথা সময়ে এর ট্রিটমেন্ট করা না হলে, দিনের পর দিন এভাবে হেয় হতে হতে এক সময় সে হিন্দুধর্ম ত্যাগও করতে পারে। মুসলমানদের করা ঠিক এই ধরণের কিছু প্রশ্নের জবাব দিচ্ছি আজকে।

প্রথম প্রসঙ্গ হলো, একটা হাতির মুখ মানুষের শরীরে কি বসানো যায় ? কী যুক্তি আছে এটার পেছনে ?

পৌরাণিক কাহিনী মতে, শিব যখন দুর্গার মানসপুত্রের মাথা কেটে ফেলে দেয়, এটা জানার পর দুর্গা ভয়াবহ অন্দোলন শুরু করে এবং বলে তার ছেলেকে জীবিত করে না দিলে সে বিশ্বকে লণ্ডভণ্ড করে দেবে।
এর ফলে শিব তাকে জীবিত করার উদ্যোগ নেয়, কিন্তু কাটা মাথা আর কোথাও খুঁজে পায় না, অন্যদিকে দুর্গারও আর তর সইছিলো না, শেষ পর্যন্ত শিব তার অনুচরদেরক বলে, যাও, কোনো প্রাণীর অনুসন্ধান কর এবং সে যদি স্বেচ্ছায় তার শির দিতে রাজী হয়, তাহলে তার শির কেটে এনো, সাথে সাথে দেবরাজ ইন্দ্রসহ অন্যান্য দেবগন কোনো প্রাণীর সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে এবং তারা গিয়ে একটি হাতির দেখা পায়. সেই হাতিকে দেবতারা হাতিকে গনেশের জীবিত হয়ে উঠার কারণ ব্যাখ্যা করতেই সাথে সাথে হাতি তার শির, গনেশকে দিতে রাজী হয়, কারণ, সেই হাতি ছিলো মহাদেব শিবের একজন ভক্ত, সে একবার শিবের কাছে প্রার্থনা করেছিলো যে, সে শিবের কাছাকাছি থাকতে চায়, সেই সময় শিব, সেই হাতিকে এই বর দিয়েছিলো যে, কোনো এক সময় তার এই প্রার্থনা পূরণ হবে, গনেশের দেহের সাথে তার মাথা জুড়ে শিবের কাছাকাছি থাকার, হাতির সেই প্রার্থনা পূরণ হবে ভেবে, হাতি তার শির দিতে রাজী হয় এবং বিষ্ণুর সুদর্শন দ্বারা হাতির মাথাকে বিচ্ছিন্ন করা হলে, সেই মাথা গনেশের দেহের সাথে লাগিয়ে জোড়া লাগিয়েই শিব, দুর্গার পুত্রকে বাঁচায়; এরপর দুর্গা, তার নাম দেয় গণেশ এবং তাকে এই বর দেয় যে, তোমার পূজা করলেই লোকে সিদ্ধি লাভ করবে। এই ঘটনা পুরানের মাধ্যমে প্রচারের ফলেই পৃথিবিীতে গনেশ এর পূজা প্রচলিত হয়।

যা হোক, গনেশের মাথা জোড়া লাগানোর ঘটনাকে মুসলমানরা বলে বা বলবে অজগুবি গল্প, কিন্তু তাহলে ইসলামের ইতিহাসের চাঁদকে দ্বিখণ্ডিত করে জোড়া লাগানোর ঘটনাটা কী ? কোরানের সূরা কমর এর ১ নং আয়াতে স্পষ্ট করে লিখা আছে, "চাঁদ দ্বি-খণ্ডিত হয়েছে", এর মানে হচ্ছে মুহম্মদের আঙ্গুলের ইশারায় চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়েছে এবং তার আঙ্গুলের ইশারাতেই চাঁদ আবার জোড়া লেগেছে। এতবড় একটা ঘটনার প্রমান শুধু কোরান ! যে কোরানের পাতায় পাতায় ভুল আর মিথ্যা। ইসলামের বর্ণনা মতে, এটা মাত্র ১৪০০ বছর আগের ঘটনা, অথচ পৃথিবীর আর কেউ সেই ঘটনা দেখলো না ! কোনো দেশ থেকে সেই ঘটনা আর দেখাই গেলো না! এ্রই রকম অলৌকিক ঘটনা যদি মুহম্মদের থাকতো তাহলে তাকে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য আর তরবারি নিয়ে ঘুরতে হতো না, এই ক্ষমতা দেখেই মুহম্মদের জীবদ্দশাতেই শুধু আরব নয়, সারা পৃথিবীর লোক ইসলাম গ্রহন করে ফেলতো।

এরপর মানুষের দেহ আর হাতির মাথাওয়ালা গনেশকে নিয়ে যদি মুসলমানদের এলার্জি থাকে, তাহলে বোরাক এর ঘটনাটা কী ? যে বোরাকে চড়ে মুহম্মদ সাত আসমান ডিঙ্গিয়ে আল্লার সাথে দেখা করে এসেছিলো ? এই বোরাকের দেহ ছিলো ঘোড়ার মতো আর মাথা ছিলো নারীর। যেই ঘটনাকে স্মরণ করে মুসলমানরা অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে শব-ই-মেরাজ নামে পালন করে থাকে।

মানুষের দেহে হাতির মাথা জোড়া লাগানোর ঘটনাটা সার্জারির একটা প্রতীকী ঘটনা। এখন এক মানুষের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অন্য মানুষের দেহে লাগিয়ে তাকে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে, এমন কি কোনো কোনো প্রানীর অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মাধ্যমেও মানুষকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে, এই বৈজ্ঞানিক সাফল্য হয়তো একদিন এমন স্তরে পৌঁছবে যখন মানুষের কাটা মাথাও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জোড়া লাগিয়ে তাকে বাঁচানো সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে মানুষের কাটা মাথা জোড়া লাগানোর পরিবর্তে উদাহরণ হিসেবে হাতির মাথা কেনো ? হাতির মাথা বলেই গল্পটা এখনো বেঁচে আছে এবং মানুষ তার চর্চা করে যাচ্ছে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, না হলে গল্পটা এতদিনে হারিয়ে যেতো এবং ভবিষ্যতের সার্জারি বিদ্যা যে কোথায় পৌঁছতে পারে, এ ব্যাপারে মানুষ ধারণা হারিয়ে ফেলতো। মানবদেহে যে প্রাণীর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ লাগানোর চেষ্টা চলছে, সেটা জানার জন্য ক্লিক করতে পারেন নিচের এই লিঙ্কে-

http://www.ntvbd.com/tech/17692/

এই ঘটনার অন্য দিকটা হলো, হিন্দুধর্ম প্রকৃতির ধর্ম, তাই প্রকৃতির সকল কিছুকে শ্রদ্ধা করা হিন্দুধর্মের অংশ। গনেশের মাধ্যমে আমরা হাতিকে সেই ধরণের শ্রদ্ধাই করি। এই শ্রদ্ধা থেকেই গনেশের পূজার উৎপত্তি এবং এই পূজার স্বীকৃতি আছে গীতায়। কেননা, পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ, অর্জুনকে যে বিশ্বরূপ দেখিয়েছিলেন তার মধ্যে গনেশ ছিলো।

গনেশ প্রসঙ্গে অন্য কটূক্তি হলো, সেইটাকে তোমরা হিন্দুরা আবার পূজা করো। আবার সেই গনেশের একটা কলা গাছ বউও আছে।

মেরাজের ঘটনাকে কোনো মুসলমান কি অস্বীকার করার ক্ষমতা রাখে ? রাখে না। কারণ, তাহলে তারা আর মুসলমান থাকবে না। মেরাজের ঘটনাকে স্বীকার করা মানেই হলো নারীর মস্তকযুক্ত ঘোড়ার দেহ- বোরাককে স্বীকার করা আর তাকে শ্রদ্ধা বা পূজা করা। মুসলমানরা যখন এই রকম একটা অদ্ভূত জন্তুকে রেসপেক্ট করছে, যা পৃথিবীতে কখনো ছিলো না; তখন হিন্দুদের গনেশ পূজাকে নিয়ে তাদের এত চুলকানি কেনো ?

আবার গনেশের কলা বৌ এর ব্যাপারটা হলো, দুর্গা পূজায় প্রকৃতির সমস্ত গাছের প্রতিনিধি হিসেবে থাকে নবপত্রিকা। এই নব পত্রিকা হলো নয়টি গাছ, এগুলোর মধ্যে কলা গাছ সবচেয়ে বড় হওয়ায়, অন্য গাছ গুলো কলাগাছের সাথে বেঁধে হলুদ শাড়ি পরিয়ে গনেশের পাশে রাখা হয়, যাকে সাধারণ মানুষ কলাগাছের বউ বলে ভুল করে। অনেক হিন্দুই এই সঠিক তথ্য জানে না, সেক্ষেত্রে কোনো মুসলমানের যদি এটা নিয়ে এরকম ভুল ধারণা থাকে এবং তা নিয়ে কটূক্তি করে, তাকে আর দোষ দিয়ে লাভ কী ?

এরপরের প্রসঙ্গ হলো, হুনুমান কী করে উড়তে পারে, কী করে সে একাই লংকা জ্বালিয়ে দিতে পারে ?

নারীর মাথাওয়ালা ঘোড়ার দেহ যুক্ত বোরাক যদি আকাশে উড়তে পারে, তাহলে হুনুমানের আর দোষ কী ? তারপরও হুনুমান তো উড়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্যে, যেখানে বাতাস আছে। কিন্তু বোরাক পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উর্ধ্বে উঠে কিভাবে উড়তে পারলো, যেখানে বোরাকের উড়ার ক্ষমতাকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য তার সাথে পাখা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে ? আসলে হুনুমান উড়তে পারে বলে যে কথা বলা হয়েছে তা সঠিক নয়; কারণ, উড়ার জন্য পাখা দরকার, হুনুমানের সেই পাখা নেই। হুনুমান নিজেই একজন দেবতা, আর সব দেবতার- যেখানে সেখানে যাওয়ার জন্য- সুপার ন্যাচারাল ক্ষমতা আছে । হুনুমান সেই ক্ষমতা বলেই মূহুর্তের মধ্যে এখানে সেখানে গমন করে, যে বিষয়টিকে বুঝতে না পেরে, মুসলমানরা বলে হুনুমানের উড়া!

হুনুমানের ক্ষমতাকে কটাক্ষ করে আবার প্রশ্ন তোলা হয়েছে, হুনুমান কী করে একাই একটা লংকা জ্বালিয়ে দিতে পারে ?

যে হুনুমান একটা পর্বতকে তার হাতের তালুর উপর করে তুলে আনতে পারে, সে যদি গোটা লংকাকে জ্বালিয়ে দেয়, তাহলে প্রব্লেম কী ? নবম ও দশম শ্রেণির পরীক্ষার মধ্যে কি খুব পার্থক্য ? বরং এখানে প্রশ্ন আসতে পারে যে, হুনুমান কিভাবে পর্বতকে তুলে আনতে পারে ? ৬০/৭০ কেজি ওজনের একটা মানুষের পক্ষে ১০ কেজি ওজন তোলা এবং তাকে বহন করা কি খুব কঠিন ? দেবতা হিসেবে হুনুমানের এই ক্ষমতা ছিলো যে যে, ইচ্ছামতো সে তার দেহকে ছোট ও বড় করতে পারতো, আর বড় দেহে বেশি শক্তি অবশ্যই থাকে। যখন সে পর্বতকে তুলতে গিয়েছিলো, তখন সে নিজের দেহকে পর্বতের চেয়ে অনেক বেশি গুন বড় করেছিলো, তাই সে অনায়াসে পর্বতকে নিজের হাতের তালুর উপরে তুলে নিয়ে যেতে পেরেছিলো।

এরপর মুসলমানদের নাকি দাবী, ইসলাম পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্ম, হিন্দু ধর্ম নাকি অনেক পরে এসেছে !

মুসলমানরা বেশ অনেক আগে থেকেই বলে আসছে যে, ইসলাম শান্তির ধর্ম। এই কথা পৃথিবীর ক’জন অমুসলিম বিশ্বাস করে ? গাঁজাখোরেরা তো গাঁজার প্রশংসা করবেই, এতে কী গাঁজা উপকারী হয়ে যাবে? আমি ভালো, একথা বললে, কেউ সে কথা বিশ্বাস তো করেই না, বরং উপহাস করে। আর যে ভালো, তাকে তো সে কথা বলারই দরকার নেই, ভালো হলে তার আচার আচরণে লোকে এমনি বুঝে যে সে ভালো। অর্থাৎ তার ভালোত্বকে, তার কথা ও কাজে প্রমান করতে হয়, তাহলেই অন্যেরা তাকে ভালো বলে মনে করে এবং লোকের কাছে তার সম্পর্কে ভালো বলে। সেই রকম ইসলাম শান্তির ধর্ম হলে, মুসলমানদেরকেই তা আচার আচরণে প্রমান করতে হবে, গাল ফাটিয়ে চিৎকার করে বলার প্রয়োজন নেই। অনেক দশক ধরে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে চিৎকার করেও যেমন মুসলমানরা প্রমান করতে পারে নি যে ইসলাম শান্তির ধর্ম; তেমনি, বেশ কয়েক বছর হলো তারা নতুন করে প্রচার শুরু করেছে যে ইসলাম হলো পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্ম; কিন্তু ১৪ বছর বয়সী বালক যদি হঠাৎ দাবী করে যে, তার বয়স ১০০ বছর, তাহলেই তো সে আর ১০০ বছর বয়সী হয়ে যাবে না, তা্কে প্রমান করতে হবে যে তার ১০০ বছর বয়স, কিন্তু ১৪ বছর বয়সী একটা বালকের কি সেই ক্ষমতা আছে নিজেকে ১০০ বছর বয়সের প্রমাণ করার ?

এই প্রসঙ্গে মুসলমানদেরকে যদি প্রশ্ন করা হয় যে, ইসলামের প্রবর্তক কে ? বলবে, হযরত মুহম্মদ। উনার জন্ম কত সালে ? ৫৭০ সালে। তাহলে ইসলামের বয়স কত ? ১৪০০ বছর। খ্রিষ্ট ধর্মের বয়স কত ? জানা থাকা সাপেক্ষে সে বলবে, ২ হাজার বছর। বৌদ্ধধর্মের বয়স ? প্রায় আড়াই হাজার বছর। ইহুদি ধর্মের ? প্রায় ৩ হাজার। হিন্দুধর্মের বয়স ? এ কথার জবাব কোনো মুসলমান জানলেও দেবে না, তাই আপনিই বলবেন, গীতারই বয়স প্রায় ৫ হাজার ২ শ বছর; বেদ আরো পুরোনো, এর বয়স প্রায় ৮/১০ হাজার বছর। তাহলে ইসলাম পৃথিবীর প্রাচীন ধর্ম হলো কিভাবে ?

মুসলমানরা যখন এই ফাঁদে পড়বে, তখন তারা বলতে পারে যে- কোরান হলো আসমানী কিতাবের সর্বশেষ ভার্সন এবং হযরত মুহম্মদ হলো শেষ নবী ? মুহম্মদ শেষ নবী এবং কোরান আসমানী কিতাবের সর্বশেষ ভার্সন হতে পারে, কিন্তু এতে তো এটা প্রমান হয় না যে, ইসলাম পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্ম ? কারণ, মুহম্মদই এনেছে ইসলাম এবং তার আগে ইসলাম বলে পৃথিবীতে কোনো শব্দই ছিলো না। তাহলে ইসলাম পৃথিবীর প্রাচীন ধর্ম হয় কিভাবে ?

এরপর তারা উল্লেখ করতে পারে আদম হাওয়ার কাহিনী এবং বলতে পারে যে, এই
আদম হাওয়ার সন্তানের মাধ্যমেই পৃথিবীতে মানুষের সৃষ্টি এবং এই কাহিনীর উল্লেখ আছে কোরানে, সেই সূত্রেই ইসলাম পৃথিবীর প্রাচীন ধর্ম।

আদম হাওয়ার কাহিনীর উৎপত্তি- প্রথমে ইহুদি ধর্মে এবং ইহুদি ধর্মের কিছুটা পরিবর্তিত রূপ যেহেতু খ্রিষ্টান ধর্ম, সেহেতু খ্রিষ্টিান ধর্মেও আদম হাওয়ার কাহিনী আছে, যেখানে আদম এর নাম এ্যাডাম এবং হাওয়ার নাম ইভ, সেই কাহিনী দখল করে মুহম্মদ তার কোরানে ঢুকিয়েছে। শেখ মুজিব বা গান্ধীর নামের সুনাম ও প্রভাব দেখে কেউ যদি এখন হঠাৎ করেই নিজেকে তাদের উত্তরসূরী বা বংশধর বলে দাবী করে, সেটাকে অন্যদের মেনে নিতে হবে ? বরং এধরণের দাবী যে করবে তাকে লোকজন পাগল বলেই মনে করবে এবং মুহম্মদকে এখনও পৃথিবীর ৮০% লোক মনে করেও তাই।

এরপর মুসলমানদের নাকি দাবী, পৃথিবী কবে শেষ হবে তা নাকি কোরানে লেখা আছে! কেয়ামত সম্পর্কে কোরানে কী লেখা আছে, তা দেখা যাক-

“লোকেরা তোমার নিকট জিজ্ঞেস করে যে, কেয়ামতের নির্দিষ্ট সময় কখন আসবে ?বল, তার জ্ঞান তো আল্লাহর নিকটই আছে, তুমি কি করে জানবে ? সম্ভবত তা খুব নিকটেই উপস্থিত হয়ে গেছে ?- (কোরান, ৩৩/৬৩)। কেয়ামত যে নিকটবর্তী সে কথা আবার বলা আছে কোরানের সূরা কমরের ১ নং আয়াতে। অর্থাৎ কেয়ামত যে নিকটবর্তী সে কথা মুহম্মদ বিশ্বাস করতো, কিন্তু কখন কেয়ামত হবে, সেই নির্দিষ্ট সময় মুহম্মদের জানা ছিলো না ব'লে তা চালাকি করে ছেড়ে দিয়ে রেখেছে আল্লার উপর, কিন্তু আল্লাও যে তা জানে না, তার প্রমান আছে ইসলামের ইতিহাসে।

ইসলামের গল্প অনুসারে আপনারা অনেকেই জানেন যে, আল্লার নির্দেশে ইসরাফিল ফেরেশতা একটি শিঙ্গা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কেয়ামতের সিগন্যাল হিসেবে শিঙ্গা বাজানোর জন্য। অলরেডি ইসরাফিল ফেরেশতা ১৪০০ বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে, আরো কতকাল দাঁড়িয়ে থাকতে হবে তা কেউ জানে না এবং এটা আল্লাও জানে না বলেই তাকে এত বছর ধরে দাঁড় করিয়ে রেখেছে, যদি জানতো তাহলে তাকে অযথা এত সময় ধরে দাঁড় করিয়ে রাখার প্রয়োজন ছিলো না, যখন কেয়ামত হবে তার পূর্বে তাকে বললেই তো ইসরাফিল ফেরেশতা শিঙ্গা বাজিয়ে দিতো। আল্লার এই অজ্ঞানতার ফলেই বেচারাকে সব কাজ ফেলে শিঙ্গা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
ইসরাফিলের শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়া এবং তার পরবর্তী কিছু ঘটনার বর্ণনা আছে কোরানের ৬৯/১৩-১৮ আয়াতে, এখানে বলা হচ্ছে,

“পরে যখন শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়া হবে। তখন ভূতল ও পর্বতরাশিকে উপরে তুলে একই আঘাতে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দেওয়া হবে।...সেই দিন আকাশ দীর্ণ বিদীর্ণ হবে এবং তার বাঁধন শিথিল হয়ে পড়বে। ফেরেশতাগণ তার আশ পাশে উপস্থিত থাকবে। আর আটজন ফেরেশতা সেই দিন তোমার রবের আরশ নিজেদের উপর বহন করতে থাকবে।”

এখানে দেখুন মজা, বলা হচ্ছে- “তখন ভূতল ও পর্বতরাশিকে উপরে তুলে একই আঘাতে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দেওয়া হবে।”

ভূতল ও পর্বত রাশি কি আলাদা আলাদা কোনো জিনিস যে, এদের মধ্যে ‘ও’ বর্ণটি ব্যবহার করা হয়েছে ? পর্বত, ভূতলেরই একটা অংশ, যা সমভূমি থেকে কিছুটা উঁচু। পর্বতকে পৃথিবী থেকে হুনুমানের মতো তুলে যদি ভূতলে আছাড় মারা হয়, তাহলে পর্বত চূর্ণ বিচূর্ণ হতে পারে; কিন্তু পৃথিবী কিভাবে চূর্ণ বিচূর্ণ হতে পারে ? পৃথিবীকে তুলে আল্লা কার উপর আছাড় মারবে ?

এরপর এই আয়াতে বলা হচ্ছে, “সেই দিন আকাশ দীর্ণ বিদীর্ণ হবে এবং তার বাঁধন শিথিল হয়ে পড়বে।”

আকাশ নাকি দীর্ণ বিদীর্ণ হবে! আকাশ কি কোনো কঠিন পদার্থ যে দীর্ণ-বিদীর্ণ হবে ? অবশ্য মহাজ্ঞানের সাগর ইসলাম এই বিশ্বাস করে যে, আকাশ শক্ত পদার্থ দিয়ে তৈরি এবং তা বহুতল বিশিষ্ট বিল্ডিং এর মতো একটার উপর একটা অবস্থিত; সেক্ষেত্রে ইসলামের শক্ত আকাশ দীর্ণ-বিদীর্ণ হতেই পারে, কিন্তু বাস্তবে আকাশ মানে মহাশূন্য, তার মধ্যে কোটি কোটি মাইল দূরত্বে ভেসে বেড়াচ্ছে গ্রহ-উপগ্রহ-নক্ষত্র-ধূমকেতু-উল্কা ইত্যাদি।

আরও বলা হচ্ছে, আকাশের বাঁধন নাকি শিথিল হয়ে পড়বে !
এর মানে ইসলামের আকাশ বহুতল বিশিষ্ট ইট সিমেন্টের বিল্ডিং নয়, এটা বাঁশ ও দড়ি দিয়ে নির্মিত বহুতল বিল্ডিং, তাই ঝাঁকা নাকা খেয়ে এটার বাঁধন শিথিল হয়ে পড়বে।

নিশ্চয় "ইসলামের মহাকাশ বিজ্ঞান" এর মধ্যে রয়েছে, পরম আশ্চর্য মহা বিজ্ঞান ! সত্যিই নাসার অনেক কিছু শেখার আছে কোরান থেকে।

এই আয়াতের আরো বক্তব্য হলো শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়ার পর, আকাশ যখন দীর্ণ বিদীর্ণ হবে তখন আটজন ফেরেশতা আরশসহ আল্লাকে বহন করতে থাকবে। এর মানে হলো, ইসলামের আল্লা যেহেতু সপ্তম আসমানে থাকে, সেহেতু আকাশ দীর্ণ বিদীর্ন হওয়ার পর আল্লারও থাকার জায়গা আর থাকবে না। তখন সর্বশক্তিমান আল্লা ফেরেশতাদের কাঁধে ভর করে ভেসে বেড়াতে থাকবে, কিন্তু কোথায় ভেসে বেড়াবে ? আকাশ মানে যে মহাশূন্য সেটা কি ইসলাম স্বীকার করে ? এখানে আরও যে প্রশ্ন আসছে, তা হলো, কেয়ামতের পর আল্লার যদি বসারই জায়গা না থাকে তাহলে আখেরাতের নামে শেষ বিচারটা বসবে কোথায় ?

সুতরাং কেয়ামত সম্পর্কে ইসলামের যে গালগল্প, আশা করি তা সবাই বুঝতে পেরেছেন।

এরপর মুসলমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, হিন্দুদের এত দেবতা, আসলে কোনটা বড় এবং সবাই এক দেবতার পূজা কেনো করে না ?

হিন্দু শাস্ত্র মতে, পরমব্রহ্ম বা পরমেশ্বর হলো এই বিশ্বজগতের সৃষ্টিকর্তা ও নিয়ন্ত্রক এবং তিনি এক। এই কথাই বলা আছে ঋগ্বেদে এভাবে-

“একমেবাদ্বিতীয়ম”

অর্থাৎ, ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয়।

এবং তাঁর কোনো রূপ বা আকার নেই,

এ কথা বলা আছে যজুর্বেদের ৩২ নম্বর অধ্যায়ের ৩ নম্বর অনুচ্ছেদে-

“ন তস্য প্রতিমা আস্তি”

অর্থাৎ- “সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কোন মূর্তি নেই”

এই শ্লোকের উপর ভিত্তি করেই মুসলমানরা বলে থাকে হিন্দু ধর্মে মূর্তি পূজা নিষেধ বা মূর্তি পূজার কোনো স্বীকৃতি নেই।

সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কোনো মূর্তি নেই, এটা তো ঠিকই আছে; আমরা হিন্দুরা, বহু দেব-দেবীর মূর্তি বানালেও কখনো ঈশ্বর বা ব্রহ্মের মূর্তি বানাই না। কারণ বেদেই বলা আছে যে, ব্রহ্মের কোনো মূর্তি নেই। তাহলে আমরা যাদের মূর্তি আমরা বানাই, তারা কে ?

আমরা যাদের মূর্তি বানাই, তারা হলো ঈশ্বরের বিভিন্ন রূপ। এ কথাই বলা আছে
ঋগ্বেদে (১/১৬৪/৪৬), এভাবে-

"একং সদ্বিপ্র বহুদাবদন্তি।"

এর অর্থ হলো, পরমেশ্বর এক ও একের মধ্যে বহুশক্তি।এই বহুশক্তিই যে দেব দেবী, সেটা বলা আছে ঋগ্বেদের নিচের এই শ্লোকে,

"একং সত্যং বহুদা কল্পয়ন্তি।" ঋগ্বেদ - ১/১১৪/৫

এর অর্থ- দেব-দেবী, পরমেশ্বরের বিভূতি ও অনন্ত শক্তির প্রকাশ।

আমরা হিন্দুরা পরমেশ্বরের এই বিভূতি ও অনন্ত শক্তির প্রকাশেরই মূর্তি তৈরি করি যাদেরকে বলা হয় দেব-দেবী।

দেব-দেবী প্রসঙ্গে মুমিনের প্রশ্ন হচ্ছে- হিন্দুদের এত দেবতা, আসলে কোনটা বড় ?
আমরা দেবাদিদেব মহাদেব বলে আদি দেব হিসেবে শুধু মাত্র শিবকে বুঝলেও, আসলে আদি দেব তিন জন, তারা হলেন- ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বর বা শিব। সাধারণভাবে এই তিন দেবতাকে বড় বলে মনে করা হলেও আসলে দেবতাদের মধ্যে কোনো ছোট বড় নেই, সকল দেবতাই গুরুত্বের দিক থেকে সমান। যেমন- যেকোনো অফিসের একজন বড়কর্তা থাকে, যাকে আমরা পরিচালক বা নির্বাহী পরিচালক বলি, কিন্তু অফিসের একজন পিয়নও তার মতোই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, অফিসার ছাড়া যেমন অফিস চলবে না, তেমনি পিয়ন ছাড়াও অফিস চলে না।
ভূমিকার দিক থেকে কাউকে কাউকে আমরা ছোট বড় বলে ভাবতে পারি, কিন্তু কোনো দেবতাই যে ছোট বা বড় নয়, এটা আমরা বুঝতে পারবো যদি গীতার বাণীর অর্থ সঠিকভাবে বুঝতে পারি।

যেমন- দেবতা হিসেবে কার্তিকের খুব বেশি ভূমিকা নেই, সে বিখ্যাত দেবতাও নয়, সমগ্র বাংলায় আলাদা হিসেবে কার্তিক পূজা হয় শুধু পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জেলায়; দুর্গা পূজার বিশালত্বে কার্তিক খুবই ছোট একটি দেবতা, কিন্তু এই কার্তিক সম্পর্কে গীতার ১০ম অধ্যায়ের ২৪ নং শ্লোকে বলা আছে,

"সেনানীনামহং স্কন্দঃ"

আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন যে, কার্তিকের অন্য নাম স্কন্দঃ এবং স্কন্দপুরাণেই কার্তিকের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। "সেনানীনামহং স্কন্দঃ" এই কথার মাধ্যমে শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন, আমিই কার্তিক। তার মানে কার্তিক মানেই শ্রীকৃষ্ণ, শ্রীকৃষ্ণ মানেই শ্রীবিষ্ণু, শ্রীবিষ্ণু মানেই পরম ব্রহ্ম, অর্থাৎ কার্তিকই হলেন পরমব্রহ্মবা সৃষ্টিকর্তা। এখন চিন্তা করুন, আপাতদৃষ্টিতে কার্তিককে আমরা ছোট দেবতা বলে বিবেচনা করলেও, আসলে তিনি কে ?

আবার শ্রীকৃষ্ণ, বিষ্ণুর অবতার হলেও তাকে আমরা অবতার বলে গণ্য করি না; যেহেতু শ্রীকৃষ্ণ বিষ্ণুর পূর্ণ অবতার, তাই কৃষ্ণকে আমরা ভগবান এবং পরমেশ্বর মনে করি। এখানে একটা বিষয় বলা প্রয়োজন যে, ভগবান এবং ঈশ্বর কিন্তু একই অর্থ বহন করে না। ঐশ্বর্য, বীর্য, যশ, শ্রী, জ্ঞান ও বৈরাগ্য-এই ছয়টি গুণ যার মধ্যে থাকে তাকে বলে ভগবান এবং সকল গুন যার মধ্যে থাকে তাকে বলে ঈশ্বর। এই ঈশ্বরের কোনো ধ্বংস নাই, ধ্বংস নাই বলেই তার নাম ঈশ্বর, আর যার ধ্বংস আছে তাকে বলে নশ্বর।

যা হোক, যার মধ্যে উপরের ছয়টি গুন আছে, তাকে বলা হয় ভগবান। কিন্তু এই ছয়টি গুন অর্জন করা মানব রূপে জন্ম নেওয়া কোনো সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়, এই ছয়টি গুন শুধু মাত্র অবতার রূপে জন্ম নেওয়া মানুষ এবং দেবতাদের মধ্যেই থাকা সম্ভব। একারণেই বিষ্ণুর আংশিক অবতার হিসেবে মানবরূপে জন্ম নেওয়া- রাম, বলরাম ও পরশুরামকে বলা হয়- ভগবান রাম, ভগবান বলরাম এবং ভগবান পরশুরাম; আবার শ্রীকৃ্ষ্ণকেও ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলা হয়; কারণ পূর্ণ অবতার বা ঈশ্বর হিসেবে শ্রীকৃষ্ণের মধ্যে শুধু ৬টি নয়, সকল গুণই আছে; একারণেই শ্রীকৃষ্ণ একই সাথে ভগবান এবং ঈশ্বর। ব্যাপারটা এমন- কিছু সরকারি ক্ষমতা থাকলে কেউ কেউ মন্ত্রী, কিন্তু যার সকল ক্ষমতা আছে সে প্রধানমন্ত্রী, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীও একজন মন্ত্রী। অর্থাৎ সকল মন্ত্রীই প্রধানমন্ত্রী নয়, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মানেই যেকোনো মন্ত্রী। সেইরকম ঈশ্বর মানেই ভগবান, কিন্তু সকল ভগবান ঈশ্বর নয়।

উপরের এই আলোচনায় আপাত দৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছে, শ্রীকৃষ্ণ বড় এবং রাম ছোট; যেহেতু শ্রীকৃষ্ণ, বিষ্ণুর পূর্ণ অবতার এবং রাম আংশিক অবতার। কিন্তু গীতার ১০/৪১ শ্লোকে বলা আছে,

"রামঃ শস্ত্রভৃতামহম্"

অর্থাৎ, শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, শস্ত্রধারীদের মধ্যে আমিই রাম। তার মানে হলো- রাম ও যা, শ্রীকৃষ্ণও তাই। অর্থাৎ দুজনেই সমান।

আবার আপাত দৃষ্টিতে একজন ছোট দেবী হলো লক্ষ্মী; কারণ লক্ষ্মী পূজার আয়োজন ও ফোকাস সরস্বতী পূজার চেয়েও কম। কিন্তু একটু পরেই বুঝতে পারবেন লক্ষ্মী আসলে কে এবং আগে জানা না থাকলে এটা জানার পর একটু অবাকই হতে পারেন।

পরমব্রহ্ম বা পরমেশ্বর বা ব্রহ্ম বা ঈশ্বরের তিনটি রূপ হলো- ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর। খুব ভালো করে খেয়াল করার ব্যাপার হলো- এই ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর কিন্তু আলাদা আলাদা কোনো সত্ত্বা হয়, তারা একই ঈশ্বরের তিনটি আলাদা আলাদা রূপ। ঈশ্বর যখন কিছু সৃষ্টি করেন, তখন তাঁর নাম ব্রহ্মা; যখন পালন করেন, তখন তাঁর নাম বিষ্ণু এবং যখন ধ্বংস করেন, তখন তার নাম শিব বা মহেশ্বর। ব্যাপারটি এমন, প্রধানমন্ত্রীর হাতে যদি তিনটি মন্ত্রণালয় থাকে, প্রধান মন্ত্রী যখন যে মন্ত্রণালয়ের ফাইলে সই করেন, তখন তিনি সেই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, কিন্তু বাস্তবে তিনি প্রধানমন্ত্রী। ব্রহ্ম বা ঈশ্বর এবং ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের ব্যাপারটা ঠিক সেরকম।

তাহলে আমরা বুঝলাম যে, ব্রহ্ম বা ঈশ্বরের পালনকারী রূপের নাম বিষ্ণু এবং যেহেতু প্রকৃতির নিয়ম হলো নারী ও পুরুষের গুণাবলীর সমষ্টিতেই পায় কোনো কিছুর পূর্ণতা, তাই বিষ্ণুর নারী রূপ বা নারী শক্তির নাম হলো লক্ষ্মী, যাকে আমরা স্থূল বিবেচনায় বিষ্ণুর স্ত্রী বলে থাকি। কিন্তু শুধু বিষ্ণুরই নয়, কোনো দেবতারই প্রকৃত অর্থে স্ত্রী বলে কিছু নাই, সবাই তাদের নারী রূপ বা নারী শক্তি। তাহলে এখানে স্পষ্ট যে, যেহেতু বিষ্ণুর নারী রূপ বা নারী শক্তির নাম লক্ষ্মী, সেহেতু লক্ষ্মী মানেই বিষ্ণু, আর বিষ্ণু মানেই ব্রহ্ম বা ঈশ্বর, তার মানে লক্ষ্মী ই ঈশ্বর। এখন বলেন, লক্ষ্মী কি ছোট দেবী ? একই ভাবে সরস্বতী, ব্রহ্মার নারী শক্তি এবং দুর্গা বা কালী, শিবের নারী শক্তি। তার মানে লক্ষ্মী, সরস্বতী, দুর্গা, কালী, কার্তিক গনেশসহ যে দেব-দেবীরই পূজা করেন না কেনো, তা আল্টিমেটলি পরম ব্রহ্ম বা ঈশ্বরেরই পূজা, তাই কোনো দেব-দেবী ই ছোট নয় বা কেউই বড় নয়, সবাই সমান এবং চুড়ান্ত বিচারে সবাই এক, সবাই পরমেশ্বর ব্রহ্ম।

এরপর মুমিনের প্রশ্ন হচ্ছে, সবাই কেনো এক দেবতার পূজা করে না ?

গীতার ১০/২৪ শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ আরো বলেছেন,

"সরসামস্মি সাগরঃ"

এর অর্থ হলো জলাশয়ের মধ্যে আমি সাগর।

তো হিন্দু শা্স্ত্রমতে, শ্রীকৃষ্ণ যদি সাগর হয়, উদাহরণ হিসেবে বলা যায় দেব-দেবীগুলো হলো নদী। প্রকৃতির নিয়মে যেকোনো নদী যেমন গিয়ে সাগরে পড়ে, তেমনি যে কোনো দেব-দেবীর পূজাও শ্রীকৃষ্ণই পায়। তাই বহু দেবতার পূজা করলেও কোনো সমস্যা নেই, বহু দেবতার পূজার মাধ্যমেও মূলত আমরা এক ঈশ্বরের পূজাই করি।
এখানে প্রশ্ন আসতে পারে যে, বহু দেবতার পূজা করার কি খুব প্রয়োজন ?

জলজ প্রাণীর যেমন আলাদা করে জল পান করার প্রয়োজন পড়ে না, তেমনি ব্রহ্মজ্ঞানীদের ক্ষেত্রেও বহুদেবতার পূজা করার কোনো প্রয়োজন নেই, কিন্তু সমাজের সাধারণ লোকেদের ক্ষেত্রে বহু দেবতার পূজা করার প্রয়োজন আছে; কারণ এটা সামাজিক বাস্তবতা যে, কোনো এক লোককে তুষ্ট করে কেউ সমাজে চলতে পারে না; পারিবারিক এবং সামাজিক জীবনে একজন মানুষকে বহুলোককে তুষ্ট করে চলতে হয়, বহুদেবতার পূজা আসলে মানুষকে সেই শিক্ষাটাই দেয়।

আজকের চলমান প্রসঙ্গের শেষ কটূক্তি হলো- হিন্দুদের মধ্যে দেবতা নিয়ে একতার অভাব কেনো ?

এই একতার অভাব হলো, হিন্দুধর্মের দেব তত্ত্বকে ঠিকমতো উপলব্ধি না করার ফল। এর জন্য দায়ী মূলত পুরানের গল্পগুলো; কারণ, যে পুরানে যে দেবতার কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে, সেই পুরানে সেই দেবতাকেই সর্বশ্রেষ্ঠ করে তোলা হয়েছে এবং অন্য দেবতাগুলোকে ছোট করা হয়েছে। কিন্তু কোনো পুরান রচয়িতারই মনে হয় খেয়াল ছিলো না যে, দেবতা রূপী সকল পুতুলই আসলে পুতুল নাচ দেখাচ্ছে একজনেরই সুতোর টানে, তিনি পরমব্রহ্ম বা পরমেশ্বর।

দেবতা নিয়ে হিন্দুদের মধ্যে একতা নেই, এই কথা বলে আসলে মুসলমানরা বোঝাতে চায় যে হিন্দুদের মধ্যে বিভেদ আছে। সঠিকভাবে দেবতত্ত্বকে বুঝতে না পারার কারণে হিন্দুদের মধ্যে বিভেদ আছে সত্য, কিন্তু সেই বিভেদ মুসলমানদের- শিয়া, সুন্নী, আহমেদিয়া, কাদিয়ানীদের মতো এতটা মারাত্মক নয় যে, যার কারণে হিন্দুরা একে অপরকে খুন করে ! জাতিভেদ বা বিভেদের কারণে হিন্দুরা হয়তো খুব বেশি হলে একে অপরের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক করে না, বর্তমানে এটাও এখন অনেক শিথিল হয়ে এসেছে, কিন্তু এক জাতি হওয়ার পরেও শুধু মাত্র ভিন্ন মতের কারণে মুসলমানরা একে অপরকে মসজিদের ভেতর ঢুকে খুন করে ফেলে। কোনটা বেশি ডেনজারাস বা ঘৃণার; হিন্দুদের জাতিভেদ, না মুসলমানদের ভিন্নমত ?

জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ

From: Krishna kumar das
💜 জয় হোক সনাতনের 💜



Pranab Kumar Kundu

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন