সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

করম পরব


করম পরব
মৃনাল কান্তি ঘোষ-এর লিংক শেয়ার করেছেন                 প্রণব কুমার কুণ্ডু।

""করম পরব""-প্রকৃতি পূজনের এক অনন্য নিদর্শন।

মহাসাড়ম্বরে পালিত হল মহান উৎসব ""করম পরব""। আগেই বলেছি এটি মূলত বৃক্ষউতসব। প্রকৃতি পূজনের এক অনন্য নিদর্শন এই করম পরব। মূলত কোল ,কুড়মি, কোড়া,ভূমিজ, মুন্ডা ইত্যাদি আদিবাসী সম্প্রদায় এই উৎসবে মেতে ওঠেন......

  পরিবারের মেয়েরা একটা বাঁশের তৈরী ডালিতে বালি ভর্তি করে নানা রকমের শস্য দানা রোপণ করেন। সেই শস্যদানাগুলি অঙ্কুরিত হলে দশদিন ধরে তার পরিচর্যা করা হয়। নিয়মিত হলুদ জল সিঞ্চন করা হয় যা কীটনাশক হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন সেই অঙ্কুরিত ডালিকে মাঝখানে রেখে গীত পরিবেশন হয়। নিজের সমাজ,সংষ্কৃতি,ভাষা,জীবনযাপন,সুখ,দুঃখ, দৈনন্দিন জীবনের ব্যাথা বেদনা ফুটে ওঠে সেই গীতের মাধ্যমে। সমস্ত জনসাধারণ সেই কথা ও কাহিনী গীতের মাধ্যেমে শোনার জন্য তন্ময় হয়ে শুনতে থাকে। কুড়মালীতে একটা কথা খুব প্রচলিত আছে - " বহিনেক করম,ভাইএক ধরম " ।বোনের কর্ম যা ভাই এর ধর্ম তা ; ভাই সারা বছর ধরে কৃষিকার্যে মগ্ন থাকেন,বোনও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সেই কর্ম করে থাকেন। অদ্ভুত এক সাম্যবাদী চিন্তাধারা যা আধুনিক সমাজেও এখনও দূর অস্ত। প্রকৃতিই সকল শক্তির আধার। সৃজনশীল প্রকৃতিকে রক্ষা করার এক অতুলনীয় উদাহরন এই করম পরব।.... দশদিন পালন করার পর একাদশীতে করম বৃক্ষের কাছে সেই "জাওয়া" (ডালিতে সাজানো শস্যচারা) গুলিকে নিয়ে গিয়ে নৃত্যানুষ্ঠান হয়। করমবৃক্ষকে দেবতাস্বরূপ পূজা করা হয়। প্রকৃতি প্রেম এর সুন্দর একটা ভাব সবার মনেই সঞ্চারিত হয়।যদি কোথাও পর্যাপ্ত করমবৃক্ষ না পাওয়া যায় তো একটা করম ডালকে মাটিতে পুঁতেই তার আরাধনা চলতে থাকে।সামাজিক মেলবন্ধন এর এক সুন্দর উপকরণ এই করম পড়ব। সকল বন্ধু বান্ধব সবাই মিলিত হয় এই উতসবে।......
একটা কথা আছে , " কাকর লাগি মন কাঁদে করম পরবে রে? সঙ্গী জুড়িক লাগি মন কাঁদে করম পরবে রে॥"
এই সুন্দর সৃজনশীল করম পরব উপলক্ষে আপনাদের সকলকে প্রীতি,শুভেচ্ছা,ভালবাসা ও জোহার।





একটি গাছ, কতই না প্রাণ


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন