সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

সাকার নিরাকার ব্রহ্ম




সাকার নিরাকার ব্রহ্ম


ব্রাহ্মধর্ম। ব্রাহ্মদের কাছে, 'নিরাকার পরমেশ্বর'-এর উপাসনা !

হিন্দুদের মধ্যেও, অনেকে, 'নিরাকার পরমেশ্বর'-এর উপাসনা করে থাকেন !

তবে তাঁরা হিন্দুই ছিলেন, হিন্দুই আছেন, আর হিন্দুই থেকে যাবেন !

তবে, 'ব্রাহ্ম,' কারা ?

যারা রাজা রামমোহন রায়, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেশবচন্দ্র সেন, শিবনাথ শাস্ত্রী,  প্রমুখদের গোষ্ঠীভূক্ত হয়ে, 'পরমেশ্বর' সম্বন্ধে এক বিশেষ ধাবণার বশবর্তী হয়েছেন, এবং সেই 'পরমেশ্বর'কে, 'ব্রহ্ম' নাম দিয়ে, বিশেষ 'উপাসনা' পদ্ধতির মাধ্যমে, তাঁরা, তাঁদের ধর্মকর্ম এবং তাঁদের 'সমাজ' চালিয়েছেন, 'তাঁরা' !


ওঁনারা তো ! 'পরমেশ্বর'-এর 'নিরাকার' ভাগটা ( যদি কিছু থাকে ), 'ব্রহ্ম' নাম দিয়ে, নিলেন ! কিন্তু যদি পরমেশ্বর'-এর 'সাকার' রূপও থাকে, তবে সেই 'সাকার রূপটি', হয় ফেলে দিলেন, নয়তো তাঁরা নিলেনই না !

নিরাকার 'ব্রহ্ম' হচ্ছেন, 'ফক্কা', কিছুই না !  ওটা শূন্য । সংস্কৃতে শব্দটা হচ্ছে, 'ফক্কিকা' !

সাকার পরমেশ্বর হচ্ছেন' পরমেশ্বরের 'সাকার' form ! ফর্ম হচ্ছে, গঠন, আকার,  আকৃতি,  মূর্তি,  রূপ, এমন কি 'অনুভব'ও ! অনুভবটাই আসলে আসল !

সাকার পরমেশ্বর হচ্ছেন, পরমেশ্বরের সাকার form !

পরমাশ্বরকে যদি  'ব্রহ্ম' বলি, তবে 'নিরাকার ব্রহ্ম' বলে, আরেকটা কথা চালু আছে !

'নিরাকার ব্রহ্ম', কিছুই না ! ওটাও শূন্য !

ওটা, 'সাকারের মতন', অন্য  আরেকটা  'আকার' বিশিষ্ট নয় !

ব্রহ্মের স্থূল  form  থাকে কিনা, আমার জানা নেই !
ব্রহ্মের সূক্ষ্ম  form  থাকে কিনা, তা, আমার জানা নেই !
ব্রহ্মের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম  form  থাকে কিনা,  তাও আমার জানা নেই !
ব্রহ্মের 'করণ' form  আছে কিনা আমি জানি না !
ব্রহ্মের কারণ  form সম্বন্ধে আমি নিজে অজ্ঞ !
ব্রহ্মের কারণাতীত  form  সম্বন্ধেও কিছু বলতে পারব না !

এগুলো সব 'ধারণাগত' ভাবে ধারণা !

প্রেরণা, যার যার মানসিক প্রবৃত্তি ! কোন গুরুদেব বা কোন শাস্ত্র, কাকে কি ভাবে, কতটা  brainwashing ( মগজধোলাই ) করতে পারল, সেটা আমার দেখবার নয় !

মগজধোলাই হচ্ছে, অবাস্তব বিষয়গুলিতে বাস্তবতা আনা ! যথার্থ আধ্যাত্মিকতার শিক্ষা না দিয়ে, ঠাকুর-দেবতা, পুরোহিত তন্ত্র, দান, দক্ষিণা,  ইত্যাদি মেনে  নেওয়ানো !

তবে একটা ব্যাপার বুঝি, 'সাকার ব্রহ্ম' আর 'ব্রহ্মাণ্ড' কথাদুটি, সাযুজ্যপূর্ণ ! দুটির মধ্যে যোগসূত্র আছে ! দেখুন :
ব্রহ্ম + অণ্ড = ব্রহ্মাণ্ড !

অণ্ড তো ডিম !

সাবেকি ইন্দুধর্মমতে, সূচনায়, ডিম ভেঙ্গে, ওপরের আকাশ আর নিচের মাটি, অর্থাৎ, পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিল !

আর ডিমের ভেতরে, যে গ্যাস তৈরি হয়েছিল, যদি বলি, সেই গ্যাস থেকেই, বাতাস তৈরি হয়েছিল, তবে তো সেটা, আরেকটা 'তত্ত্ব' তৈরি হবে !

আর ডিমের খোলাগুলি কোথায় গেল ?

সেগুলো হয়তো, নীহারিকা  ( nebula )  হয়ে, দূরে, বহুদূরে,  মহাশূন্যে,  জটলা করতে লাগল !

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন