সোমবার, ৬ জুলাই, ২০২০
Fish of sundarban West Bengal সুন্দরবনের মাছ।
ভারতীয় সুন্দরবনে দুটি বাণিজ্যিক প্রজাতি সহ প্রায় ১৭২ প্রজাতির
মাছ, ২০ প্রজাতির চিংড়ি এবং ৪৪ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে। মাছ সম্পর্কে
বলতে গেলে সব থেকে বেশি ধোঁয়াশা তৈরি হয়।
কারণ একিই মাছের বিভিন্ন স্থানীয় নাম রয়েছে।
যেমন:-
চিত্রা-কইক্কা-রামশোষ, এরাই আবার পর্যায়ক্রমে পায়রাতেলি-কাইকশেল-তপসে
ইত্যাদি নাম নিয়ে বসে আছে অন্য কোথাও। এছাড়াও একটি মাছের আকার অনুসারেও
নামের বদল হয়। যেমন:- ছোট ভেটকি পাতারি, মাঝারি ভেটকি ভেটকি আর বড় ভেটকি কে
কোরাল বলা হয়।
সুন্দরবনে পাওয়া যেতো দুই প্রকারের ইলিশ। যার মধ্যে চন্দনা ইলিশ বিরল হয়ে উঠেছে।
ইলিশ:-
মোট
পাঁচটি প্রজাতি আছে ইলিশের। Ttenualosa ilisha (Indian River shad),
চন্দনা ইলিশ-Tenualosa toli (Toli shad), Tenualosa reevesii (Reevesii
shad),Tenualosa macrura (Shad) Tenualosa thibaudeaui (Laosian shad)।
ভারত-বাংলাদেশ সহ মোট ১১টি দেশে ইলিশ মাছ পাওয়া যায়।
ফেসা:-
চার
প্রকার ফেসার মধ্যে রামফেসা বিরল হচ্ছে।ফেঁসা মাছ বৈজ্ঞানিক নাম-
Setipinna phasa শ্রেণি -Actinopterygii, বর্গ - Clupeiformes, পরিবার -
Engraulidae, গণ - Setipinna
বাংলার
তথা সুন্দরবনের নদীখালে, এই মাছ দেখা যায়। প্রায় ৬-৭ ইঞ্চি লম্বা হয় এবং
সারা দেহ ছোটো'ছোটো আঁশে ঢাকা থাকে। দেহ অসংখ্য সরু-সরু কাঁটায় ভরা একটি
সুস্বাদু মাছ।
বৈরাগী মাছ:-
স্থানীয়
নাম লাক্ষা, লাক্কা, লাখ্খা, লাখুয়া। ইংরেজি নাম:- Indian threadfin,
Indian salmon, King threadfin, বৈজ্ঞানিক নাম:-Leptomelanosoma indicum,
বিবরণ Polynemidae গোত্রের প্রজাতিটি বঙ্গোপসাগরের উপকূলসহ মোহনা ও উপকূলীয়
নদীসমূহে পাওয়া যায়। এটি দামী ও বড় মাছ কিন্তু বর্তমানে ক্রমাগত আহরণের
ফলে প্রাচুর্যতা হ্রাস পাচ্ছে।
তপসে বা রামশোষ:-
ডাকুর মাছ-মেনো- Mud skipper:-
এদের পাঁচটি প্রজাতি। প্রজাতি ভেদে ৯ থেকে ২২ সেন্টিমিটার লম্বা হয়।
মিলনের সময় পুরুষ মাছের গায়ের রঙ উজ্জ্বল হয়ে যায়।
ট্যাংরা জাতের গুলশা ট্যাংরা, নোনা ট্যাংরা কিছু পাওয়া গেলেও শিলং মাছ চোখে পড়ে না। কাজলী মাছ ও প্রায় বিলুপ্ত।
শিলং মাছ:-
নোনা ট্যাংরা:-
গেঙো ট্যাংরা বা কালো ট্যাংরা,
ইংরেজি নাম- Long Whiskers Catfish, বৈজ্ঞানিক নাম - Mystus gulio , বর্গ --Siluriformes, পরিবার - Bagridae, গণ -Mystus.
অনন্য সুন্দর মাছ ভোলমাছ, কইভোল মাছ এখন বিলুপ্তপ্রায়। গনগইন্যা মাছ, রেখা মাছ, গুটি দাতিনা পাওয়া গেলেও লাল দাতিনা বিলুপ্ত।
কইভোল মাছ:-
সাদা ও লাল দাতিনা:-
কাইক্ক
বা কাইকশেল মাছ মিষ্টি জলের মাছের থেকেও অনেক বড়। মেন মাছারের দুটো
প্রজাতিও বিলুপ্তপ্রায়। এছাড়া কান মাগুরের মধ্যে দাগি কান মাগুর
বিলুপ্তপ্রায়।
মেন মাছ:-
কাইক্কা
আর্চার
ফিস বা তিরন্দাজ মাছ, জাভা মাছ, পায়রাতেলি বা চিত্রা মাছ, খরশুলা। এছাড়া
পারশের জাত ভাই, বাটা ভাঙন, ভাঙন, গুলবাটা, খরুল ভাঙন এখন পাওয়া যায় না
বললেই চলে।
Archer fish বা তীরন্দাজ মাছ বা লুচো মাছ:-
তীরন্দাজ
মাছের প্রায় ১০ প্রজাতির দেখা মেলে এর মধ্যে বেশিরভাগ প্রজাতি মিষ্টি জলে
বাস করে। এই মাছের তিন প্রজাতি মিষ্টি ও লবনাক্ত উভয় জলে বাস করে।
ম্যানগ্রোভ ও নদী মোহনা অঞ্চলে এদের দেখতে পাওয়া যায়। এই মাছ দৈর্ঘ্যে ১২
থেকে ১৮ সেমি হয়ে থাকে। আর্চার ফিশ জলজ উদ্ভিদে ঝিম্ মেরে বসে থাকা
পোকামাকড় শিকার করে খায়। এর খাদ্য সংগ্রহের কৌশলটা বেশ চমকপ্রদ।
ক্রিম-গোল্ড কালারের শরীর নিয়ে এরা চুপিসারে বসে থাকে শিকারকে ঘায়েল করার
লক্ষ্যে। কিভাবে ঘায়েল করে শিকারকে? হ্যাঁ, জলের ওপর ঝুলে থাকা গাছ-গাছড়া
কিংবা লতা-পাতায় বসে থাকা কীট-পতঙ্গকে ছুড়ে মারে তীর, জলের তীর! এদের
লক্ষ্য প্রায় অভ্রষ্ট। প্রায় চার ফুট দূর থেকেও এরা জল ছুড়ে শিকারকে নিচে
জলে ফেলে দেয়। হতভম্ব শিকার জলে নড়াচড়ার আগে তার লীলা সাঙ্গ হয় 'তীরন্দাজের
পেটে'। ১২০ সে. মি. দূর থেকেও জলের তীর ছুড়তে পারে তীরন্দাজ মাছ। তীরন্দাজ
মাছের মুখের উপরিভাগ লম্বা খাঁজ কাটা। মাছটি যখন শ্বাস-প্রশ্বাস থামিয়ে
দেয় তখন জল শ্বাস-প্রশ্বাসের ঘর থেকে মুখের মধ্যে চলে আসে। সঙ্গে সঙ্গে সে
জিভটি তুলে দেয়। ফলে মুখের খাঁজকাটা অংশটি টিউবের কাজ করে এবং ফোঁটা ফোঁটা
করে একই সারিতে জল বেরিয়ে ছুটে যায় শিকারের লক্ষ্যে।
জাভা মাছ বা কুইজ্জা পোয়া:-
ইংরেজি নাম- Cuja bola, Cuja croaker, বৈজ্ঞানিক নাম- Macrospinosa cuja বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় পাওয়া যায়।
খরশুলা বা ডোমরা মাছ বা তারাই মাছ বা কাঁউয়া মাছ ( রাইনোমিউজিল করসুলা ):-
সুন্দরবনের
নদী নালাতে, এই মাছের দেখা মেলে। নদীতে এরা ঝাঁকে ঝাঁকে ঘুরে বেড়ায়, তবে
কোনভাবে মানুষের উপস্থিতি টের পেলে সঙ্গে সঙ্গে জলে ডুব দেয়।
নয় প্রজাতির শাঁকজ
বা শাপলা পাতা
বা চাকুল
বা শঙ্কর
মাছের অধিকাংশই সুন্দরবন উপকূল থেকে অমিল হয়ে যাচ্ছে।
পরবর্তী.......
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
1 টি মন্তব্য: