রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

ডঃ আম্বেদকর ব্রিটিশ সরকারের ভাইসরয়ের (Viceroy) অধীন মন্ত্রীসভায় শ্রমমন্ত্রী (Labour Member) নিযুক্ত হয়েছিলেন .....


 ডঃ আম্বেদকর ব্রিটিশ সরকারের ভাইসরয়ের (Viceroy) অধীন মন্ত্রীসভায় শ্রমমন্ত্রী (Labour Member) নিযুক্ত হয়েছিলেন .....

ফেসবুক থেকে শেয়ার করেছেন : প্রণব কুমার কুণ্ডু


প্রণব কুমার কুণ্ডু





















Binod Saradar একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন৷ 


বৌদ্ধ মহামিলন সংঘ
🔵 ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুলাই ডঃ আম্বেদকর ব্রিটিশ সরকারের ভাইসরয়ের (Viceroy) অধীন মন্ত্রীসভায় শ্রমমন্ত্রী (Labour Member) নিযুক্ত হন। ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত তিনি ওই পদে বহাল ছিলেন। ব্রিটিশ সরকারের অধীন মন্ত্রীসভার শ্রমমন্ত্রী হিসাবে তিনি যেসব কাজ করেছিলেন তার কিন্তু কোনোটাই শুধু মাত্র তপশিলি জাতি/উপজাতির মানুষের জন্য করেননি। সমস্ত জাতিবর্ণের সাধারণ খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের সামাজিক সুরক্ষার জন্য তিনি লড়াই করেছেন।
তার মধ্যে কয়েকটি নিচে উল্লেখ করা হলোঃ-
🔹(1) Joint Labour Management Committee :- সরকার, মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ আলোচনার জন্য আগেই আম্বেদকরের পূর্বসূরি স্যার ফিরোজ খাঁ নুনের সময়ে Tripartite Labour Conference-এ একটি Standing Labour Committee গঠন করা হয়েছিল। বম্বে সেক্রেটারিয়েটে ১৯৪৩ সালের ৭ মে আম্বেদকরের সভাপতিত্বে ওই কমিটির তৃতীয় সভায় এই কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়। এই কমিটিতে কারখানা পরিচালনায় শ্রমিকদের প্রতিনিধি রাখার সংস্থান রাখা হয়।
🔹(2) Employment Exchange :- ওই একই সভায় ভারতে প্রথম শ্রমিক-কর্মচারী নিয়োগ করার জন্য Emploment Exchange গঠন করার প্রস্তাব গৃহীত হয়। এর ফলে ইচ্ছামতো মামা-কাকার জোরে শ্রমিক-কর্মচারী নিয়োগ প্রথা বন্ধ হয়; প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ এবং আধা-দক্ষ শ্রমিক-কর্মচারী যারা Employment Exchange-এ নাম লিখিয়েছেন তাঁদের ভেতর থেকেই নিয়োগ করা বাধ্যতামূলক করা হয়।
🔹(3) Trade Union- ভারতের সর্বত্র বিভিন্ন অফিস, কলকারখানা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানে শ্রমিক ইউনিয়ন থাকলেও আইনগতভাবে সেগুলির কোনো সরকারি স্বীকৃতি ছিল না। ডঃ আম্বেদকরের প্রচেষ্টায়ই সর্বপ্রথম সেগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ‘ভারতীয় শ্রমিক সমিতি (সংশোধনী) বিল’ পাশ হয়। এর ফলে শ্রমিক-কর্মচারীদের Trade Union করার অধিকার আইনসঙ্গত হয়।
🔹(4) কাজের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া- আগে শ্রমিক-কর্মচারীদের কাজের সময়ের কোনো সময়সীমা ছিল না। ১০ থেকে ১৪/১৬ ঘন্টা পর্যন্ত কাজ করতে হত। এজন্য তাঁদের কোনো বাড়তি মজুরি দেওয়া হত না। ডঃ আম্বেদকরই এই সময়সীমা ৮ ঘন্টায় বেঁধে দেন। এর অতিরিক্ত কাজ করালে তার জন্য Over-time Salary দেবার আইন পাশ করেন।
🔹(5) Labour Investigation Committee :- শ্রমিক শ্রেণির বেতন, খাদ্য, পোশাক, বাসস্থান, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, চিকিৎসা ইত্যাদি বিষয় পর্যালোচনা করা এবং তার সুষ্ঠু ব্যবস্থা করার জন্য এই কমিটি গঠন করেন এবং এ বিষয়ে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করেন। সেগুলির মধ্যে শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সরকারি খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য E.S.I Hospital সৃষ্টি করা। এ ছাড়া শ্রমিকদের সরকারি খরচে প্রশিক্ষণ দেওয়ার আইনও তিনি করে যান।
🔹(6) Coal Mine Labour Welfare Fund Ordinance :- শ্রমমন্ত্রী ডঃ আম্বেদকর কয়লাখনির শ্রমিকদের আর্থিক উন্নয়ন করার উদ্দেশ্যে এই আইন পাশ করেন।
🔹(7) The Factories Amendment Bill :- আগে শিল্প-কলকারখানায় কর্মচারীদের সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া আর কোনো সবেতন ছুটির ব্যবস্থা ছিল না। কেউ অনুপস্থিত থাকলে তার বেতন কাটা যেত। শ্রমমন্ত্রী ডঃ আম্বেদকর এই আইন পাশ করে কলকারখানার প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক কর্মচারীদের বছরে ১০ দিন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক-কর্মচারীদের ১৪ দিন সবেতন ছুটির ব্যবস্থা করেন।
🔹(8) নারী-পুরুষের সমহারে বেতন :- আগে পুরুষ শ্রমিকদের তুলনায় মহিলা শ্রমিকদের বেতন কম ছিল। ডঃ আম্বেদকর আইন করে এই বৈষম্য দূর করেন। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে একই কাজের জন্য একই বেতনের আইন তিনি পাশ করেন।
🔹(9) মাতৃত্বকালীন ছুটি :- আগে সন্তান জন্ম দেওয়া ও তার প্রতিপালনের জন্য নারী শ্রমিকদের বেতন ছাড়া ছুটি নিতে হত। ডঃ আম্বেদকর সন্তান প্রসবের আগে ১০ সপ্তাহ এবং প্রসবের পরে ৬ সপ্তাহের সবেতন ছুটির আইন পাশ করেন।
🔹(10) Protection of Minimum Wage Bill :- ডঃ আম্বেদকরের মন্ত্রীত্বের শেষের দিকে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল এনেছিলেন। কিন্তু সেই বিলটি তিনি পাশ করিয়ে যেতে পারেননি। বিলটি ছিল ‘সর্বনিম্ন বেতনের নিরাপত্তা বিল’। এতে বলা হয়েছিল শ্রমিকদের বেতন নির্ধারণের ক্ষেত্রে একটি অ্যাডভাইসরি বোর্ড ও একটি অ্যাডভাইসরি কমিটি থাকবে। এতে থাকবে মালিক ও শ্রমিকপক্ষের সমসংখ্যক সদস্য। তাদের সুপারিশে শ্রমিকদের সর্বনিম্ন বেতন ধার্য হবে। এই বিলটি দু’বছর পরে স্বাধীনোত্তরকালে জগজীবন রাম শ্রমমন্ত্রী থাকার সময় পাশ হয়।
এখানে উল্লেখিত যে আইনগুলি শ্রমমন্ত্রী থাকাকালে ডঃ আম্বেদকর বিধিবদ্ধ করে গেছেন, তার কোন আইনটি শুধুমাত্র তপশিলি জাতি/উপজাতির জন্য করেছেন? সবগুলিই জাতিধর্মবর্ণনির্বিশেষে সমস্ত দেশবাসীর কল্যাণের জন্য করেননি কি?
(Collected )

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন