রবিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

রূপক রায়ের কলাম ( দুই )


রূপক রায়ের কলাম ( দুই )





Pranab Kumar Kundu     ফেসবুক থেকে       পোস্টটি     শেয়ার করেছেন৷





প্রণব কুমার কুণ্ডু







Rupok Roy এতে 💥ALL BENGAL RSS💥রাস্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ💥

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য- কৃষ্ণচরিত্রকে ধ্বংস করার একটি সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র:
হিন্দুদেরকে হেয় করতে মুসলমানদের একটি বড় চুলকানির বিষয় হলো কৃষ্ণ। তারা কৃষ্ণের চরিত্রকে বোঝাতে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের থেকে বেশ কিছু শ্লোক উল্লেখ করে এবং সেটাকেই সত্য বলে ধরে নিয়ে আবোল তাবোল বলে, এই প্রসঙ্গে বলছি, এখন বা একশ বছর আগে মুহম্মদের নামকে অবলম্বন করে কিছু লিখলেই সেটা যেমন ইসলামের প্রবর্তক মুহম্মদের জীবনী হয়ে যাবে না, তেমনি খ্রিষ্টীয় ত্রয়োদশ শতকে লিখা শ্রীকৃ্ষ্ণকীর্তন কাব্যও হিন্দুদের আরাধ্য দেবতা শ্রীকৃষ্ণের জীবনী নয়। শ্রীকৃষ্ণের সম্পূ্র্ণ জীবনী আছে সংস্কৃতে লিখা শ্রীমদ্ভাগবত, হরিবংশ এবং আংশিক মহাভারতে। মুসলমানদেরকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, যদি ক্ষমতা থাকে সেগুলো থেকে কোনো রেফারেন্স দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের চরিত্রকে কলুষিত করে দেখা।
এই প্রসঙ্গে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে রাখা ভালো, তাহলে আত্মবিশ্বাস আরো দৃঢ় হবে। শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য লিখেছে বড়ু চণ্ডীদাস নামে এক কবি, ১৩৫০ থেকে ১৪০০ সালের মধ্যে; এই বড়ু চণ্ডীদাস হিন্দুদের কোনো প্রসিদ্ধ বা স্বীকৃত ধর্মগুরু ছিলো না, ছিলো এজন সস্তা কবি, যার উদ্দেশ্য ছিলো কৃষ্ণকে নিয়ে একটি মনগড়া সস্তা যাত্রাপালা লিখা এবং যার এই হীন কাজের পৃষ্ঠোপোষক ছিলো তৎকালীন মুসলিম শাসক। সুতরাং সেই সস্তা যাত্রাপালায় কৃষ্ণের নামকে অবলম্বন করে যা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের কাহিনী যে সম্পূর্ণ কাল্পনিক, এবার তার কিছু প্রমান দিই- শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের নায়িকা রাধা, কিন্তু এই রাধার কোনো অস্তিত্ব নাই মহাভারত এবং শ্রীকৃষ্ণের প্রামান্য জীবনী ভাগবতে; শুধু তাই নয়, হিন্দু ধর্মের প্রাচীন কোনো গ্রন্থে রাধার কোনো উল্লেখ নেই। হিন্দুসমাজে রাধার আবিষ্কার ভারতে মুসলিম শাসন শুরু হওয়ার পরে লিখা ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে, যার কাহিনীকে বেজ করে লিখা হয়েছে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য, যে কথা একটু আগেই বলেছি।
ভাগবত অনুসারে, শ্রীকৃষ্ণ ১০ বছর ২ মাস বয়সে বৃন্দাবন ছেড়ে মথুরায় চলে যায় এবং তারপর সে কোনোদিন আর বৃন্দাবনে ফিরে যায় নি। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যে- কৃষ্ণ, যুবক বয়সেও বৃন্দাবনে থেকে যায় এবং রাধার সাথে প্রেম চালিয়ে যায়, তাহলে এই কাহিনী মনগড়া নয় তো কী ?
রাধা-কৃষ্ণের প্রেম কাহিনীর মাধ্যমে হিন্দুদেরকে ধোকা দেওয়ার জন্য, যে পুরাণ থেকে এই রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলার উৎপত্তি, সেই ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের পৃষ্ঠপোষকদের সবচেয়ে সূক্ষ্ম ও মারাত্মক ষড়যন্ত্র হলো, এটার রচয়িতা হিসেবে মহর্ষি বেদব্যাসের নামের ব্যবহার। অথচ একটু ভাবলেই এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে- যে বেদব্যাস, ভাগবত ও মহাভারতে শ্রীকৃষ্ণকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হিসেবে তুলে ধরেছে, যার চরিত্রে কোথাও এতটুকু কালি লাগতে দেয় নি, সেই বেদব্যাস কিছুতেই ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের মতো একটি সস্তা যৌনকাব্য লিখতে পারে না।
সবচেয়ে বড় কথা, কৃষ্ণের যৌবনকালে কৃষ্ণ ছিলো দ্বারকার প্রধান ব্যক্তি, এককথায় রাজার মতো এবং তখন সে রীতিমতো রুক্মিনীর সাথে প্রেম করছিলো এবং যাকে সে বিবাহ করে, তাহলে সেই কৃষ্ণ কখন রাধার সাথে প্রেম করলো বা প্রেম করার জন্য বৃন্দাবন গেলো ? আর রাধার সাথে কৃষ্ণের যদি এতই প্রেম থাকে তাহলে কৃষ্ণ, রাধাকে বিয়ে করলো না কেনো ?
হিন্দু ধর্মের প্রাচীন কোনো গ্রন্থে রাধার কোনো উল্লেখ নেই, এই কথা সর্বপ্রথম বলেন বঙ্কিমচন্দ্র, তার ‘কৃষ্ণ চরিত্র’ গ্রন্থে ১৮৬০/৭০ সালের দিকে। একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন, আমি আপনি হয়তো ভালো করে সংস্কৃত পড়তে জানি না বা পারি না, বঙ্কিমচন্দ্র কিন্তু সংস্কৃত পড়তে ঠিকই জানতেন।
চৈতন্যদেবের সময় থেকে শুরু হয় রাধার ঝড়, সেই ঝড়ের মুখে দাঁড়িয়ে বঙ্কিমচন্দ্র যখন এই মত ব্যক্ত ক'রে এই ভাবে রাধাকে অস্বীকার করেছেন, তখন তিনি যে আন্দাজে কোনো কথা বলেন নি, এটা কিন্তু খুব সহজেই ধরে নেওয়া যায়। শুধু তাই নয়, বঙ্কিমের আগে "উইলসন" নামের ইংরেজ ভদ্রলোক রাধার উপর গবেষণা করেছিলেন, বঙ্কিম তারও রেফারেন্স দিয়ে বলেছেন যে,
“রাধাকে প্রথমে ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে দেখিতে পাই। উইলসন সাহেব বলেন যে, ইহা পুরাণগণের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ বলিয়াই বোধ হয়। ইহার রচনাপ্রণালী আজিকালিকার ভট্টাচার্যদিগের রচনার মত। ”
অবস্থাটা বোঝেন আজিকালিকার ভট্টাচার্যদিগের মতো। এই ভট্টাচার্যরা যে জন্মসূত্রে হিন্দু ছিলো তাতে কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু এরা কর্মসূত্রে ছিলো মুসলমান; তাই মুসলমানদের ফরমায়েশ খেটে হিন্দু ধর্মের প্রধান পুরুষ শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে এরকম একটি কুরুচিকর যৌনকাব্য লিখতে তাদের বিবেকে বাধে নি। আর সেই মিথ্যাগুলো এখন প্রচার করতেও মুসলমানদের বিবেকে বাধছে না; আর বাধবে কিভাবে, বিবেক থাকে তো মানুষের, মুসলমানরা- কোথায়, কবে, কখন মানুষ ?
জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।
💜 জয় হোক সনাতনের 💜

Pranab Kumar Kundu      ফেসবুক থেকে       পোস্টটি শেয়ার করেছেন৷

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন