ঈদ, চাঁদ ও মুসলমান
ঈদ, চাঁদ ও মুসলমান
মুহম্মদ বলে গেছে, তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখো, আর চাঁদ দেখে ঈদ উদযাপন করো; মুহম্মদ এও বলে গেছে, সূর্যের ছায়া দেখে কখন দিনের বেলা নামাজ পড়তে হবে, সন্ধ্যায় গোধূলির কোন সাইন দেখে ইফতার করতে হবে, আর রাতে কখন পিশাচের মতো সেহরির খাবার খেতে হবে; তাই নামাজ এবং রোযার সেহরি ও ইফতারের সময়ের ক্ষেত্রে বর্তমানের মুসলমানরা এতটাই টাইট যে, এক সেকেন্ডও এদিক ওদিক হলে তারা মনে করে এই বুঝি বেহেশতের ৭২ হুর ফসকে গেলো।
মুসলমানদেরকে জিজ্ঞেস করছি, এই যে ঘড়ি দেখে এত নামাজ রোযা পালন করিস, এই ঘড়ি কি তোদের মুহম্মদের বাপ বানিয়ে দিয়ে গেছে ? আর যে মাইকে আযান দিয়ে দিনে রাতে ৫ বার শব্দ দূষণ করিস, সেই মাইক কোরানের থেকে সূরা আবিষ্কার ? তোরা তো বলিস, বিজ্ঞানীরা সব আবিষ্কারই নাকি করে কোরান রিসার্চ করে! তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, বিজ্ঞানীরা যখন কোরান রিসার্চ করেই সব কিছু আবিষ্কার করে বা করেছে, তখন ১৪০০ বছর ধরে কোরান পড়ে তোরা কি শুধু যৌনাঙ্গের লোম পরিষ্কার করেছিস ? পৃথিবীতে কোরান কারা বেশি পড়েছে ? এটাই সত্য যে কোরান রিসার্চ করলে সবাই জঙ্গী-সন্ত্রাসী ই হয়, সেটা মুসলমান হোক আর অমুসলিমই হোক। মুসলমানরা জঙ্গী-সন্ত্রাসী হয় বেহেশতের ৭২ হুরের জন্য, আর অমুসলিমরা এখনও হয় নি, তবে হবে মুসলমানদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য।
যা হোক, ছোটো বেলায় আমি নিজের কানে শুনেছি, হাটের মধ্যে এক মুসলমান বলছে, আমরা পঞ্জিকা মানি না, যেদিন চাঁদ দেখা যাবে তার পর দিন ঈদ; এই না মানার কারণ আর কিছুই নয়, পঞ্জিকা হিন্দুদের লেখা। তো হিন্দুদের সাহায্য নিয়ে মুসলমানরা ঈদ পালন করবে কেনো, প্রেস্টিজে বাঁধে না ? মূর্খদের আবার আত্মসম্মান ! এত আত্মসম্মান বোধ থাকলে একটা পঞ্জিকা লিখে দেখা না, তখন বুঝবি এই পঞ্জিকা লিখতে কী পরিমান জ্ঞানের প্রয়োজন হয় ?
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেব নিকেশ তথা অঙ্কের জ্ঞান হলো পঞ্জিকা। কোরান হাদিসের জ্ঞান নিয়ে কোনো মুসলমানের ক্ষমতা নেই এইরকম একটি পঞ্জিকা লিখার ! কারণ, মুসলমানদের কাছে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞান কোরান তো মুসলমানদের পারিবারিক সম্পত্তি বন্টনের হিসেবই ঠিক মতো করতে পারে নি! সেই জ্ঞান নিয়ে তারা আবার লিখবে পঞ্জিকা ! শুনে রাখ, পঞ্জিকার জ্ঞান দিয়ে শুধু এক বছরের কেনো আগামি ১০০ বছরেরও ঈদের দিন তারিখ নির্ভুলভাবে বলে দেওয়া সম্ভব।
যা হোক, ধর্ম পালনের সকল ক্ষেত্রে মুসলমানরা কাফের বিজ্ঞানীদের তৈরি করা জিনিস পত্র ব্যবহার করলেও চাদেঁর গতি বিধি জানার জন্য তারা পঞ্জিকা বা জ্যোতির্বিজ্ঞানের উপর নির্ভরকরবে না; কারণ, বিজ্ঞানও হিন্দু দ্বারা প্রভাবিত।
হিন্দু জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সাধারণত এক বছরের হিসেব পঞ্জিকায় দিয়ে দেয়- কবে, কখন সূর্য গ্রহণ হবে, কবে চন্দ্রগ্রহণ হবে, এর সাথে অমাবস্যা, পূর্নিমার হিসেব তো আছেই, শুধু তাই নয় বাকি গ্রহগুলোর আবর্তনও তারা নিখুঁতভাবে পঞ্জিকায় বর্ণনা করে। এই এক বছরের হিসাব গণকেরা লিখে আবার প্রায় পঞ্জিকা প্রকাশের ৬ মাস আগে। এই হিসেবের গরমিল এ পর্যন্ত কেউ দেখাতে পারে নি।
কিন্তু তারপরও মুসলমানরা পঞ্জিকার উপর বিশ্বাস রাখতে পারে না; কারণ, তাদের বিশ্বাস তো মুহম্মদের উপর, যে মুহম্মদ বলে গেছে সূর্য অস্ত যায় এক পঙ্কিল জলাশয়ে (কোরান, ১৮/৮৬), পৃথিবী গোলাকার নয় সমতল কোরান- ৫১/৪৮,৭১/১৯) সেই মুহম্মদে বিশ্বাসী মুসলমানরা কাফেরদের জ্ঞানের উপর বিশ্বাস রাখবে কিভাবে ? কাফেরদের জ্ঞান আগে না বেহেশত আগে ? কাফেরদের সাথে তো মুসলমানদের বন্ধুত্ব করাই নিষেধ (কোরান- ৫/৫১, ৪/১৪৪)। যদিও জীবন যাপনের সকল ক্ষেত্রে তারা কাফেরদের জ্ঞানকেই ব্যবহার করে। কেননা, সভ্যতার আলোয়, মুসলমানরা তো একটা মোমবাতিও জ্বালাতে পারে নি।
যা হোক, গত বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে রোযার ঈদের আগ বাংলাদেশের এ্যাস্ট্রোনোমি সোসাইটির এক মুসলমান তামাম বাঙ্গালি মুসলমানের গালে কষে এক থাপ্পড় মেরে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছিলোযে, তারা জ্যোতির্বিজ্ঞানের জ্ঞান দিয়ে অংক কষে আগামী ২৫ বছরের সকল ঈদের দিন তারিখ বের করেছে, এর আগেও কয়েক বছর তারা এই হিসেব করে দেখেছে, কোনো ভুল হয় নি, সুতরাং আগামীতেও কোনো ভুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই, সুতরাং ঈদের দিন নির্ধারনে চাঁদ দেখার উপর নির্ভর না করে বিজ্ঞানের উপর নির্ভর করা যেতে পারে। এ নিয়ে বিবিসি একটি রিপোর্ট করেছিলো।
এই মুসলমান, যে জ্ঞান দিয়ে এই হিসেব নিকেশ করে আগামি ২৫ বছরের ঈদের দিন তারিখ প্রকাশ করেছে, তাকে সে জ্যোতির্বজ্ঞানের জ্ঞান বললেও, সেটা আর কিছুই নয়, সেটা বেদ এর জ্যোতিষ পদ্ধতির জ্ঞান; কারণ, এই জ্ঞান যখন বেদ এ লেখা হয়, সেই ৮/১০ হাজার বছর আগে, তখন কোনো কোনো বিজ্ঞানীর জন্মই হয় নি। তাই জ্যোতির্বিজ্ঞান বলতে যা কিছু বোঝায়, তা হিন্দু জ্যোতিষ পদ্ধতির জ্ঞান এবং তার সম্প্রসারিত রূপ।
জয় হিন্দ।
উপরে যে রেফারেন্সগুলো দিলাম সেগুলো দেখে নিন নিচে-
সমতল পৃথিবী :
কোরান, ৫১/৪৮ = ভূপৃষ্ঠকে আমিই বিস্তিীর্ণ করে বিছিয়েছি। আর আমি উত্তম সমতল রচনাকারী।
কোরান, ৭১/১৯ = বস্তুত আল্লা ভূতলকে তোমাদের জন্য শয্যার ন্যায় সমতল করে বিছিয়ে দিয়েছেন।-
বন্ধুত্ব :
কোরান, ৫/৫১ = হে ঈমানদার লোকেরা, ইহুদি ও ঈসায়ীদের নিজেদের বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না। তারা নিজেরা পরস্পরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ যদি তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহন করে, তাহলে সে তাদের মধ্যেই গন্য হবে।
কোরান, = ৪/১৪৪হে ঈমানদারগণ, ঈমানদার লোকদের ত্যাগ করে কাফেরদেরকে নিজেদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা কি আল্লাহর হাতে নিজেদের বিরুদ্ধে দলিল তুলে দিতে চাও।
উপরে সম্পত্তি বন্টনের একটা হিসাবের কথা বলেছি, সেটা আগে পড়া না থাকলে দেখে নিন নিচে-
আল্লার অংকের জ্ঞান :
প্রসঙ্গ - মুসলমানদের মীরাস বন্টন বা সম্পত্তি ভাগ; আয়াত-৪/১১,১২
কোরানে, অন্তত কয়েক শত বার বলা আছে- আল্লা মহাজ্ঞানী, সর্বজ্ঞানী, মহাবিশ্বের কোনো কিছুই তার অজানা নয়- ইত্যাদি, ইত্যাদি। আল্লা যে মহজ্ঞানী বা সর্বজ্ঞানী, এ ব্যাপারে মনে হয়, কোনো মুসলমানের কোনো দ্বিমত নেই। তাই এ সম্পর্কিত কোনো রেফারেন্স উল্লেখ করলাম না। কিন্তু যে আয়াত নিয়ে আজকের আলোচনা, সেটার রেফারেন্স তো দিতেই হবে। দেখে নিন কোরানের ৪ নং সূরা নিসার ১১ ও ১২ নং আয়াত দুটো :
"তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন, পুরুষের অংশ দুজন মেয়ের সমান। যদি মৃতের ওয়ারিস দুয়ের বেশি হয়, তাহলে পরিত্যক্ত সম্পত্তির তিন ভাগের দু'ভাগ তাদের দাও। আর যদি একটি ওয়ারিস হয়, তাহলে পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধেক তার। যদি মৃত ব্যক্তির সন্তান থাকে, তাহলেতার পিতা মাতা প্রত্যেকে সম্পত্তির ছয়ভাগের এক ভাগ পাবে। আর যদি সন্তান না থাকে এবং পিতা-মাতা তার উত্তরাধিকার হয়, তাহলে মাকে তিন ভাগের এক ভাগ দিতে হবে। যদি মৃতের ভাই-বোনও থাকে, তাহলে মা ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে; মৃত ব্যক্তি যে অসিয়ত করে গেছে তা পূর্ণ করার এবং সে যে ঋণ রেখে গেছে তা আদায় করার পর। তোমরা জানো না, তোমাদের পিতা মাতা ও তোমাদের সন্তানদের মধ্যেউপকারের দিক দিয়ে কে তোমাদের বেশি নিকটবর্তী। এসব অংশ আল্লাহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আর আল্লাহ অবশ্যই সকল সত্য জানেন এবং সকল কল্যানময় ব্যবস্থা সম্পর্কে অবগত আছেন।" - ৪/১১
"তোমাদের স্ত্রীরা যদি নিঃসন্তান হয়, তাহলে (মরার পর) তারা যা কিছু ছেড়ে যায়, তার অর্ধেক তোমরা পাবে। অন্যথায় তাদের কোনো সন্তান থাকলে যে অসিয়ত তারা করে গেছেতা পূর্ণ করার এবং যে ঋণ রেখে গেছে তা আদায় করার পর পরিত্যক্ত সম্পত্তির চারভাগের এক ভাগ তোমাদের। আর তোমাদের সন্তান না থাকলে তারা তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির চার ভাগের একভাগ পাবে। অন্যথায় তোমাদের সন্তান থাকলে তোমাদের অসিয়ত পূর্ণ করারও তোমাদের রেখে যাওয়া ঋণ আদায় করার পর তারা সম্পত্তির আটভাগের একভাগ পাবে।
আর যদি পুরুষ বা স্ত্রীলোকের সন্তান না থাকে এবং বাপ-মাও জীবিত না থাকে কিন্তু একভাই বা এক বোন থাকে তাহলে প্রত্যেকেই ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে।তবে ভাই বোন একজনের বেশি হলে সমগ্র পরিত্যক্তসম্পত্তির তিন ভাগের একভাগে তারা সবাই শরীক হবে, যে অসিয়ত করা হয়েছে তা পূর্ণ করার এবং যে ঋণ মৃত ব্যক্তি রেখে গেছে তা আদায় করারপর যদি তা ক্ষতিকর না হয়। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ, আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্বদর্শী ও সহিষ্ণু। - ৪/১২
এবার ঢোকা যাক আয়াতেরপোস্টমর্টেমে। খেয়াল করুন ৪/১২ আয়াতের শেষ বাক্যটি, "এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ, আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্বদর্শী ও সহিষ্ণু।" কোরান যদি আল্লারই বাণীই হতো, তাহলে এই বাক্যটি হতো এরকম : "এটি আমার পক্ষ থেকে নির্দেশ, আর আমি আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্বদর্শী ও সহিষ্ণু।"
আবার ৪/১১ আয়াতের প্রথম বাক্যটি , "তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন" - এই বাক্যটি খেয়াল করুন। কোরান আল্লার বাণী হলে এই বাক্যটিও হতো, "তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে আমি তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছি।"
কোরানে এরকম ব্যাকরণগত ভুল আছে শত শত। এই ভুলগুলোইপ্রমাণ করে কোরান কোনো ভাবেই আল্লার নয়, মুহম্মদের বাণী।
আবার ৪/১১ আয়াতের শেষের দিকের একটি বাক্য হলো, "তোমরা জানো না, তোমাদের পিতা মাতা ও তোমাদের সন্তানদের মধ্যেউপকারের দিক দিয়ে কে তোমাদের বেশি নিকটবর্তী।"আপনারাই বিচার করুন, এই কথাটা কতটুকু সত্য ? একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ যৌবন বয়সে পৌঁছার সাথে সাথেই বুঝে যায়, পরিবারে কে তাকে পছন্দ করে, আর কে তাকে পছন্দ করে না, অর্থাৎ তার শত্রু-মিত্রের ব্যাপারটি। অথচ আল্লা বলছে, তুমি জানো না, পরিবারে কে তোমার নিকটবর্তী। আল্লা যেমন নির্বোধ, সেরকম সব মানুষকেও সে মনে হয় নির্বোধ মনে করে ।
যাক গে, "মৃত ব্যক্তি যে অসিয়ত করে গেছে তা পূর্ণ করার এবং সে যে ঋণ রেখে গেছে তা আদায় করার পর।" এই একই কথা বলা আছে, এই দুটি আয়াতের চার জায়গায়। এর কি কোনো প্রয়োজন আছে ? একই বইয়ে বা একই লেখায়, একই কথা একাধিকবার থাকাকে ভুল হিসেবে গন্য করা হয়। তাহলে মুসলমানরা কোন আক্কেলে বলে যে কোরান নির্ভুল গ্রন্থ ? অবশ্য ভুল ধরার জন্য তো সেরকম জ্ঞান-বুদ্ধিও থাকা দরকার। কোরান-হাদিস, এই দুই বইয়ের পাঠক, মুসলমানরা সেটা পাবে কোথায় ?
আর আরবিতে কোরান পড়লে কোথায়, কী আর কিভাবে লেখা আছে, সেটাই বা তারা বুঝবে কীভাবে ? এরপরও আছে, বেহেশতে গিয়ে হুর পাবার লোভ, কোরান বুঝলেও আল্লার ভুল ধরে বেহেশতের অপটিক ফাইবারের ৭২ হুর, কোন মুসলমান হারাতে চায় ?
৪/১২ এর নিচের দিক থেকে দ্বিতীয় বাক্যটির অংশ বিশেষ এই রকম, "যে ঋণ মৃত ব্যক্তি রেখে গেছে তা আদায় করার পর যদি তা ক্ষতিকর না হয়।" খেয়াল করুন, "যদি তা ক্ষতিকর না হয়" - এই অংশটি। এর মানে হলো, মৃত ব্যক্তির জীবিত ওয়ারিশ যদি মনে করে ঋণ পরিশোধ করলে তারা ক্ষতির মুখে পড়বে, তাহলে সেই ঋণ পরিশোধ না করলেও হবে। কিন্তু নৈতিক ব্যাপার হচ্ছে, যারা ঋণ রেখে আকস্মিকভাবে মারা গেছে, যেভাবেই হোক, ছেলে মেয়েদের উচিত, তাদের সেই ঋণ শোধ করে দেওয়া। কিন্তু আল্লা শেখাচ্ছে, ক্ষতিকর মনে হলে সেই ঋণ শোধ না করতে হবে না। পরিবার থেকে টাকা চলে যাওয়া ক্ষতি ই; নৈতিকতার খাতিরে অনেক সময় এই ক্ষতিকে স্বীকার করতেও হয়। অথচ আল্লা শেখাচ্ছে অনৈতিকতা; যাদের আল্লা এরকম অনৈতিক কথা শেখায়, তারা সৎ হবে কিভাবে?
এবার মূল প্রসঙ্গে আসি, যেটা নিয়ে লিখবো বলে এই লেখাটা শুরু করেছিলাম। উপরের দুটি আয়াতে সম্পত্তি বন্টনের যে নিয়ম বলা হয়েছে, তা এতই জটিল যে, তার মর্ম উদ্ধার করা এবং সেটা একবারে বুঝতে পারা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নাও হতে পারে, তাই তার একটা সহজ রূপ তুলে ধরছি:কোরানে হিসেব অনুযায়ী কোনো পুরুষ যদি এক স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং বাবা ও মা রেখে মারা যায় তাহলে, তার সম্পত্তির ৮ ভাগের ১ ভাগ পাবে স্ত্রী; মেয়েরা পাবে ৩ ভাগের ২ ভাগ এবং পিতা মাতা প্রত্যেকে পাবে ৬ ভাগের ১ ভাগ করে। এখন যারা ল.সা.গু ভালো পারেন, তারা একটু হিসেব করে দেখুন তো এই অংকটা কোনো দিন মিলবে কি না ? যে ভগ্নাংশগুলো উল্লেখ করলাম, সেগুলোর যোগফল হবে ২৭/২৪। অর্থাৎ সম্পত্তি দিতে হবে ২৭ অংশ, কিন্তু মোট সম্পত্তিই আছে ২৪ অংশ।
অংকের এই অমিল, কি এটা প্রমান করে যে, আল্লা সর্বজ্ঞানী বা মহাজ্ঞানী ? আর মুসলমানরা কিভাবে এত জোর গলায় বলে যে, কোরানে কোনো ভুল নেই ? অবশ্য ভুল ধরার তো যোগ্যতাও থাকা দরকার। কোন মুসলমানের সেটা আছে ?
এর বিপরীতে হিন্দুধর্মের প্রধান প্রচলিত গ্রন্থ গীতার কোনো একটি ভুল বের করার জন্য মুসলমানদেরকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, কোরান যদি আল্লার বাণী হয় এবং সেই আল্লা যদি সৃষ্টিকর্তা হয়, তাহলে পৃথিবীর কোনো নিয়ম কানুন, কোনো কিছুই তার অজানা থাকার কথা নয়। তাই তার কোনো কথাতেই একটিও ভুল থাকা সম্ভব নয়। এই সূত্রে কোরানের একটি ভুল মানেই, কোরান কোনো সৃষ্টিকর্তার লেখা নয়। তারপরও যদি বলা হয়, কোরান আল্লারই বাণী, তাহলে সেই আল্লাও অবশ্যই সর্বজ্ঞানী সৃষ্টিকর্তা নয়।
সম্পত্তি বণ্টনের এই আয়াত নিয়ে মুসলমানদের ঝামেলায় পড়তে হয় না এই কারণে যে, আলী যখন খলিফা, তখন কোরান অনুযায়ী সম্পত্তি বন্টন করতে গিয়ে, প্রথম, কোরানের এই ভুলটি ধরা পড়ে এবং আলী এই মৃতের সম্পত্তির বন্টন কিছু কম বেশি করে মোট সম্পত্তির যোগফল ২৪/২৪ অর্থাৎ ১ এ আনে। তারপর থেকেই সম্পত্তি বন্টন আলীর দেখানো পথেই চলছে এবং শরিয়তি আইনে কোরানের বিধান বাদ দিয়েআলীর এই বিধানই চালু রয়েছে ।
জয় হিন্দ।
From: Krishna kumar das
💜 জয় হোক সনাতনের 💜
মুহম্মদ বলে গেছে, তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখো, আর চাঁদ দেখে ঈদ উদযাপন করো; মুহম্মদ এও বলে গেছে, সূর্যের ছায়া দেখে কখন দিনের বেলা নামাজ পড়তে হবে, সন্ধ্যায় গোধূলির কোন সাইন দেখে ইফতার করতে হবে, আর রাতে কখন পিশাচের মতো সেহরির খাবার খেতে হবে; তাই নামাজ এবং রোযার সেহরি ও ইফতারের সময়ের ক্ষেত্রে বর্তমানের মুসলমানরা এতটাই টাইট যে, এক সেকেন্ডও এদিক ওদিক হলে তারা মনে করে এই বুঝি বেহেশতের ৭২ হুর ফসকে গেলো।
মুসলমানদেরকে জিজ্ঞেস করছি, এই যে ঘড়ি দেখে এত নামাজ রোযা পালন করিস, এই ঘড়ি কি তোদের মুহম্মদের বাপ বানিয়ে দিয়ে গেছে ? আর যে মাইকে আযান দিয়ে দিনে রাতে ৫ বার শব্দ দূষণ করিস, সেই মাইক কোরানের থেকে সূরা আবিষ্কার ? তোরা তো বলিস, বিজ্ঞানীরা সব আবিষ্কারই নাকি করে কোরান রিসার্চ করে! তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, বিজ্ঞানীরা যখন কোরান রিসার্চ করেই সব কিছু আবিষ্কার করে বা করেছে, তখন ১৪০০ বছর ধরে কোরান পড়ে তোরা কি শুধু যৌনাঙ্গের লোম পরিষ্কার করেছিস ? পৃথিবীতে কোরান কারা বেশি পড়েছে ? এটাই সত্য যে কোরান রিসার্চ করলে সবাই জঙ্গী-সন্ত্রাসী ই হয়, সেটা মুসলমান হোক আর অমুসলিমই হোক। মুসলমানরা জঙ্গী-সন্ত্রাসী হয় বেহেশতের ৭২ হুরের জন্য, আর অমুসলিমরা এখনও হয় নি, তবে হবে মুসলমানদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য।
যা হোক, ছোটো বেলায় আমি নিজের কানে শুনেছি, হাটের মধ্যে এক মুসলমান বলছে, আমরা পঞ্জিকা মানি না, যেদিন চাঁদ দেখা যাবে তার পর দিন ঈদ; এই না মানার কারণ আর কিছুই নয়, পঞ্জিকা হিন্দুদের লেখা। তো হিন্দুদের সাহায্য নিয়ে মুসলমানরা ঈদ পালন করবে কেনো, প্রেস্টিজে বাঁধে না ? মূর্খদের আবার আত্মসম্মান ! এত আত্মসম্মান বোধ থাকলে একটা পঞ্জিকা লিখে দেখা না, তখন বুঝবি এই পঞ্জিকা লিখতে কী পরিমান জ্ঞানের প্রয়োজন হয় ?
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেব নিকেশ তথা অঙ্কের জ্ঞান হলো পঞ্জিকা। কোরান হাদিসের জ্ঞান নিয়ে কোনো মুসলমানের ক্ষমতা নেই এইরকম একটি পঞ্জিকা লিখার ! কারণ, মুসলমানদের কাছে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞান কোরান তো মুসলমানদের পারিবারিক সম্পত্তি বন্টনের হিসেবই ঠিক মতো করতে পারে নি! সেই জ্ঞান নিয়ে তারা আবার লিখবে পঞ্জিকা ! শুনে রাখ, পঞ্জিকার জ্ঞান দিয়ে শুধু এক বছরের কেনো আগামি ১০০ বছরেরও ঈদের দিন তারিখ নির্ভুলভাবে বলে দেওয়া সম্ভব।
যা হোক, ধর্ম পালনের সকল ক্ষেত্রে মুসলমানরা কাফের বিজ্ঞানীদের তৈরি করা জিনিস পত্র ব্যবহার করলেও চাদেঁর গতি বিধি জানার জন্য তারা পঞ্জিকা বা জ্যোতির্বিজ্ঞানের উপর নির্ভরকরবে না; কারণ, বিজ্ঞানও হিন্দু দ্বারা প্রভাবিত।
হিন্দু জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সাধারণত এক বছরের হিসেব পঞ্জিকায় দিয়ে দেয়- কবে, কখন সূর্য গ্রহণ হবে, কবে চন্দ্রগ্রহণ হবে, এর সাথে অমাবস্যা, পূর্নিমার হিসেব তো আছেই, শুধু তাই নয় বাকি গ্রহগুলোর আবর্তনও তারা নিখুঁতভাবে পঞ্জিকায় বর্ণনা করে। এই এক বছরের হিসাব গণকেরা লিখে আবার প্রায় পঞ্জিকা প্রকাশের ৬ মাস আগে। এই হিসেবের গরমিল এ পর্যন্ত কেউ দেখাতে পারে নি।
কিন্তু তারপরও মুসলমানরা পঞ্জিকার উপর বিশ্বাস রাখতে পারে না; কারণ, তাদের বিশ্বাস তো মুহম্মদের উপর, যে মুহম্মদ বলে গেছে সূর্য অস্ত যায় এক পঙ্কিল জলাশয়ে (কোরান, ১৮/৮৬), পৃথিবী গোলাকার নয় সমতল কোরান- ৫১/৪৮,৭১/১৯) সেই মুহম্মদে বিশ্বাসী মুসলমানরা কাফেরদের জ্ঞানের উপর বিশ্বাস রাখবে কিভাবে ? কাফেরদের জ্ঞান আগে না বেহেশত আগে ? কাফেরদের সাথে তো মুসলমানদের বন্ধুত্ব করাই নিষেধ (কোরান- ৫/৫১, ৪/১৪৪)। যদিও জীবন যাপনের সকল ক্ষেত্রে তারা কাফেরদের জ্ঞানকেই ব্যবহার করে। কেননা, সভ্যতার আলোয়, মুসলমানরা তো একটা মোমবাতিও জ্বালাতে পারে নি।
যা হোক, গত বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে রোযার ঈদের আগ বাংলাদেশের এ্যাস্ট্রোনোমি সোসাইটির এক মুসলমান তামাম বাঙ্গালি মুসলমানের গালে কষে এক থাপ্পড় মেরে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছিলোযে, তারা জ্যোতির্বিজ্ঞানের জ্ঞান দিয়ে অংক কষে আগামী ২৫ বছরের সকল ঈদের দিন তারিখ বের করেছে, এর আগেও কয়েক বছর তারা এই হিসেব করে দেখেছে, কোনো ভুল হয় নি, সুতরাং আগামীতেও কোনো ভুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই, সুতরাং ঈদের দিন নির্ধারনে চাঁদ দেখার উপর নির্ভর না করে বিজ্ঞানের উপর নির্ভর করা যেতে পারে। এ নিয়ে বিবিসি একটি রিপোর্ট করেছিলো।
এই মুসলমান, যে জ্ঞান দিয়ে এই হিসেব নিকেশ করে আগামি ২৫ বছরের ঈদের দিন তারিখ প্রকাশ করেছে, তাকে সে জ্যোতির্বজ্ঞানের জ্ঞান বললেও, সেটা আর কিছুই নয়, সেটা বেদ এর জ্যোতিষ পদ্ধতির জ্ঞান; কারণ, এই জ্ঞান যখন বেদ এ লেখা হয়, সেই ৮/১০ হাজার বছর আগে, তখন কোনো কোনো বিজ্ঞানীর জন্মই হয় নি। তাই জ্যোতির্বিজ্ঞান বলতে যা কিছু বোঝায়, তা হিন্দু জ্যোতিষ পদ্ধতির জ্ঞান এবং তার সম্প্রসারিত রূপ।
জয় হিন্দ।
উপরে যে রেফারেন্সগুলো দিলাম সেগুলো দেখে নিন নিচে-
সমতল পৃথিবী :
কোরান, ৫১/৪৮ = ভূপৃষ্ঠকে আমিই বিস্তিীর্ণ করে বিছিয়েছি। আর আমি উত্তম সমতল রচনাকারী।
কোরান, ৭১/১৯ = বস্তুত আল্লা ভূতলকে তোমাদের জন্য শয্যার ন্যায় সমতল করে বিছিয়ে দিয়েছেন।-
বন্ধুত্ব :
কোরান, ৫/৫১ = হে ঈমানদার লোকেরা, ইহুদি ও ঈসায়ীদের নিজেদের বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না। তারা নিজেরা পরস্পরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ যদি তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহন করে, তাহলে সে তাদের মধ্যেই গন্য হবে।
কোরান, = ৪/১৪৪হে ঈমানদারগণ, ঈমানদার লোকদের ত্যাগ করে কাফেরদেরকে নিজেদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা কি আল্লাহর হাতে নিজেদের বিরুদ্ধে দলিল তুলে দিতে চাও।
উপরে সম্পত্তি বন্টনের একটা হিসাবের কথা বলেছি, সেটা আগে পড়া না থাকলে দেখে নিন নিচে-
আল্লার অংকের জ্ঞান :
প্রসঙ্গ - মুসলমানদের মীরাস বন্টন বা সম্পত্তি ভাগ; আয়াত-৪/১১,১২
কোরানে, অন্তত কয়েক শত বার বলা আছে- আল্লা মহাজ্ঞানী, সর্বজ্ঞানী, মহাবিশ্বের কোনো কিছুই তার অজানা নয়- ইত্যাদি, ইত্যাদি। আল্লা যে মহজ্ঞানী বা সর্বজ্ঞানী, এ ব্যাপারে মনে হয়, কোনো মুসলমানের কোনো দ্বিমত নেই। তাই এ সম্পর্কিত কোনো রেফারেন্স উল্লেখ করলাম না। কিন্তু যে আয়াত নিয়ে আজকের আলোচনা, সেটার রেফারেন্স তো দিতেই হবে। দেখে নিন কোরানের ৪ নং সূরা নিসার ১১ ও ১২ নং আয়াত দুটো :
"তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন, পুরুষের অংশ দুজন মেয়ের সমান। যদি মৃতের ওয়ারিস দুয়ের বেশি হয়, তাহলে পরিত্যক্ত সম্পত্তির তিন ভাগের দু'ভাগ তাদের দাও। আর যদি একটি ওয়ারিস হয়, তাহলে পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধেক তার। যদি মৃত ব্যক্তির সন্তান থাকে, তাহলেতার পিতা মাতা প্রত্যেকে সম্পত্তির ছয়ভাগের এক ভাগ পাবে। আর যদি সন্তান না থাকে এবং পিতা-মাতা তার উত্তরাধিকার হয়, তাহলে মাকে তিন ভাগের এক ভাগ দিতে হবে। যদি মৃতের ভাই-বোনও থাকে, তাহলে মা ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে; মৃত ব্যক্তি যে অসিয়ত করে গেছে তা পূর্ণ করার এবং সে যে ঋণ রেখে গেছে তা আদায় করার পর। তোমরা জানো না, তোমাদের পিতা মাতা ও তোমাদের সন্তানদের মধ্যেউপকারের দিক দিয়ে কে তোমাদের বেশি নিকটবর্তী। এসব অংশ আল্লাহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আর আল্লাহ অবশ্যই সকল সত্য জানেন এবং সকল কল্যানময় ব্যবস্থা সম্পর্কে অবগত আছেন।" - ৪/১১
"তোমাদের স্ত্রীরা যদি নিঃসন্তান হয়, তাহলে (মরার পর) তারা যা কিছু ছেড়ে যায়, তার অর্ধেক তোমরা পাবে। অন্যথায় তাদের কোনো সন্তান থাকলে যে অসিয়ত তারা করে গেছেতা পূর্ণ করার এবং যে ঋণ রেখে গেছে তা আদায় করার পর পরিত্যক্ত সম্পত্তির চারভাগের এক ভাগ তোমাদের। আর তোমাদের সন্তান না থাকলে তারা তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির চার ভাগের একভাগ পাবে। অন্যথায় তোমাদের সন্তান থাকলে তোমাদের অসিয়ত পূর্ণ করারও তোমাদের রেখে যাওয়া ঋণ আদায় করার পর তারা সম্পত্তির আটভাগের একভাগ পাবে।
আর যদি পুরুষ বা স্ত্রীলোকের সন্তান না থাকে এবং বাপ-মাও জীবিত না থাকে কিন্তু একভাই বা এক বোন থাকে তাহলে প্রত্যেকেই ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে।তবে ভাই বোন একজনের বেশি হলে সমগ্র পরিত্যক্তসম্পত্তির তিন ভাগের একভাগে তারা সবাই শরীক হবে, যে অসিয়ত করা হয়েছে তা পূর্ণ করার এবং যে ঋণ মৃত ব্যক্তি রেখে গেছে তা আদায় করারপর যদি তা ক্ষতিকর না হয়। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ, আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্বদর্শী ও সহিষ্ণু। - ৪/১২
এবার ঢোকা যাক আয়াতেরপোস্টমর্টেমে। খেয়াল করুন ৪/১২ আয়াতের শেষ বাক্যটি, "এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ, আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্বদর্শী ও সহিষ্ণু।" কোরান যদি আল্লারই বাণীই হতো, তাহলে এই বাক্যটি হতো এরকম : "এটি আমার পক্ষ থেকে নির্দেশ, আর আমি আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্বদর্শী ও সহিষ্ণু।"
আবার ৪/১১ আয়াতের প্রথম বাক্যটি , "তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন" - এই বাক্যটি খেয়াল করুন। কোরান আল্লার বাণী হলে এই বাক্যটিও হতো, "তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে আমি তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছি।"
কোরানে এরকম ব্যাকরণগত ভুল আছে শত শত। এই ভুলগুলোইপ্রমাণ করে কোরান কোনো ভাবেই আল্লার নয়, মুহম্মদের বাণী।
আবার ৪/১১ আয়াতের শেষের দিকের একটি বাক্য হলো, "তোমরা জানো না, তোমাদের পিতা মাতা ও তোমাদের সন্তানদের মধ্যেউপকারের দিক দিয়ে কে তোমাদের বেশি নিকটবর্তী।"আপনারাই বিচার করুন, এই কথাটা কতটুকু সত্য ? একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ যৌবন বয়সে পৌঁছার সাথে সাথেই বুঝে যায়, পরিবারে কে তাকে পছন্দ করে, আর কে তাকে পছন্দ করে না, অর্থাৎ তার শত্রু-মিত্রের ব্যাপারটি। অথচ আল্লা বলছে, তুমি জানো না, পরিবারে কে তোমার নিকটবর্তী। আল্লা যেমন নির্বোধ, সেরকম সব মানুষকেও সে মনে হয় নির্বোধ মনে করে ।
যাক গে, "মৃত ব্যক্তি যে অসিয়ত করে গেছে তা পূর্ণ করার এবং সে যে ঋণ রেখে গেছে তা আদায় করার পর।" এই একই কথা বলা আছে, এই দুটি আয়াতের চার জায়গায়। এর কি কোনো প্রয়োজন আছে ? একই বইয়ে বা একই লেখায়, একই কথা একাধিকবার থাকাকে ভুল হিসেবে গন্য করা হয়। তাহলে মুসলমানরা কোন আক্কেলে বলে যে কোরান নির্ভুল গ্রন্থ ? অবশ্য ভুল ধরার জন্য তো সেরকম জ্ঞান-বুদ্ধিও থাকা দরকার। কোরান-হাদিস, এই দুই বইয়ের পাঠক, মুসলমানরা সেটা পাবে কোথায় ?
আর আরবিতে কোরান পড়লে কোথায়, কী আর কিভাবে লেখা আছে, সেটাই বা তারা বুঝবে কীভাবে ? এরপরও আছে, বেহেশতে গিয়ে হুর পাবার লোভ, কোরান বুঝলেও আল্লার ভুল ধরে বেহেশতের অপটিক ফাইবারের ৭২ হুর, কোন মুসলমান হারাতে চায় ?
৪/১২ এর নিচের দিক থেকে দ্বিতীয় বাক্যটির অংশ বিশেষ এই রকম, "যে ঋণ মৃত ব্যক্তি রেখে গেছে তা আদায় করার পর যদি তা ক্ষতিকর না হয়।" খেয়াল করুন, "যদি তা ক্ষতিকর না হয়" - এই অংশটি। এর মানে হলো, মৃত ব্যক্তির জীবিত ওয়ারিশ যদি মনে করে ঋণ পরিশোধ করলে তারা ক্ষতির মুখে পড়বে, তাহলে সেই ঋণ পরিশোধ না করলেও হবে। কিন্তু নৈতিক ব্যাপার হচ্ছে, যারা ঋণ রেখে আকস্মিকভাবে মারা গেছে, যেভাবেই হোক, ছেলে মেয়েদের উচিত, তাদের সেই ঋণ শোধ করে দেওয়া। কিন্তু আল্লা শেখাচ্ছে, ক্ষতিকর মনে হলে সেই ঋণ শোধ না করতে হবে না। পরিবার থেকে টাকা চলে যাওয়া ক্ষতি ই; নৈতিকতার খাতিরে অনেক সময় এই ক্ষতিকে স্বীকার করতেও হয়। অথচ আল্লা শেখাচ্ছে অনৈতিকতা; যাদের আল্লা এরকম অনৈতিক কথা শেখায়, তারা সৎ হবে কিভাবে?
এবার মূল প্রসঙ্গে আসি, যেটা নিয়ে লিখবো বলে এই লেখাটা শুরু করেছিলাম। উপরের দুটি আয়াতে সম্পত্তি বন্টনের যে নিয়ম বলা হয়েছে, তা এতই জটিল যে, তার মর্ম উদ্ধার করা এবং সেটা একবারে বুঝতে পারা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নাও হতে পারে, তাই তার একটা সহজ রূপ তুলে ধরছি:কোরানে হিসেব অনুযায়ী কোনো পুরুষ যদি এক স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং বাবা ও মা রেখে মারা যায় তাহলে, তার সম্পত্তির ৮ ভাগের ১ ভাগ পাবে স্ত্রী; মেয়েরা পাবে ৩ ভাগের ২ ভাগ এবং পিতা মাতা প্রত্যেকে পাবে ৬ ভাগের ১ ভাগ করে। এখন যারা ল.সা.গু ভালো পারেন, তারা একটু হিসেব করে দেখুন তো এই অংকটা কোনো দিন মিলবে কি না ? যে ভগ্নাংশগুলো উল্লেখ করলাম, সেগুলোর যোগফল হবে ২৭/২৪। অর্থাৎ সম্পত্তি দিতে হবে ২৭ অংশ, কিন্তু মোট সম্পত্তিই আছে ২৪ অংশ।
অংকের এই অমিল, কি এটা প্রমান করে যে, আল্লা সর্বজ্ঞানী বা মহাজ্ঞানী ? আর মুসলমানরা কিভাবে এত জোর গলায় বলে যে, কোরানে কোনো ভুল নেই ? অবশ্য ভুল ধরার তো যোগ্যতাও থাকা দরকার। কোন মুসলমানের সেটা আছে ?
এর বিপরীতে হিন্দুধর্মের প্রধান প্রচলিত গ্রন্থ গীতার কোনো একটি ভুল বের করার জন্য মুসলমানদেরকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, কোরান যদি আল্লার বাণী হয় এবং সেই আল্লা যদি সৃষ্টিকর্তা হয়, তাহলে পৃথিবীর কোনো নিয়ম কানুন, কোনো কিছুই তার অজানা থাকার কথা নয়। তাই তার কোনো কথাতেই একটিও ভুল থাকা সম্ভব নয়। এই সূত্রে কোরানের একটি ভুল মানেই, কোরান কোনো সৃষ্টিকর্তার লেখা নয়। তারপরও যদি বলা হয়, কোরান আল্লারই বাণী, তাহলে সেই আল্লাও অবশ্যই সর্বজ্ঞানী সৃষ্টিকর্তা নয়।
সম্পত্তি বণ্টনের এই আয়াত নিয়ে মুসলমানদের ঝামেলায় পড়তে হয় না এই কারণে যে, আলী যখন খলিফা, তখন কোরান অনুযায়ী সম্পত্তি বন্টন করতে গিয়ে, প্রথম, কোরানের এই ভুলটি ধরা পড়ে এবং আলী এই মৃতের সম্পত্তির বন্টন কিছু কম বেশি করে মোট সম্পত্তির যোগফল ২৪/২৪ অর্থাৎ ১ এ আনে। তারপর থেকেই সম্পত্তি বন্টন আলীর দেখানো পথেই চলছে এবং শরিয়তি আইনে কোরানের বিধান বাদ দিয়েআলীর এই বিধানই চালু রয়েছে ।
জয় হিন্দ।
From: Krishna kumar das
💜 জয় হোক সনাতনের 💜
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন