মহাকর্ষ ( মাধ্যাকর্ষণ ), অভিকর্ষ ও মহাবিজ্ঞানী ভাস্করাচার্য
শেয়ার করেছেন প্রণব কুমার কুণ্ডু।
প্রশ্নঃ মহাকর্ষ।জড় বস্তুর পরস্পর আকর্ষণ, মাধ্যাকর্ষণ, gravitation. ও অভিকর্ষ, ভূকেন্দ্রাভিমুখে জড় পদার্থের আকর্ষণ, gravitational attraction, শক্তি সম্পর্কে হিন্দুশাস্ত্র কী বলে ??❔❔
এ বিষয়ে হিন্দু বিজ্ঞানীদের কোন অবদান আছে কি???
উত্তর:
আধুনিক বিশ্বে অনেকের ধারণা, মহাকর্ষ ও অভিকর্ষ শক্তি, নিউটন প্রথম আবিষ্কার করেছেন।
তবে অনেকেই জানেন না, যে, এ বিষয়ে হিন্দুদের মূল ধর্মগ্রন্থে, বেদে, স্পষ্টভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
সবিতা যন্ত্রৈঃ পৃথিবী মরভণাদস্কম্ভনে সবিতা দ্যামদৃংহৎ।
অশ্বমিবাধুক্ষদ্ধু নিমন্তরিক্ষমতূর্তে বদ্ধং সবিতা সমুদ্রম ॥
ঋগ্বেদ, ১০/১৪৯/১
অনুবাদ: সূর্য রজ্জুবৎ আকর্ষণ দ্বারা পৃথিবীকে বাঁধিয়া রাখিয়াছে।
নিরাধার আকাশে দ্যুলোকের অন্যান্য গ্রহকেও, ইহা সুদৃঢ় রাখিয়াছে।
অচ্ছেদ্য আকর্ষণ রর্জ্জুতে আবদ্ধ, গর্জনশীল গ্রহসমূহ নিরাধার আকাশে অশ্বের ন্যায় পরিভ্রমণ করিতেছে।
দেখুন, আকাশ যে ‘নিরাধার’, এবং ‘রজ্জুবৎ আকর্ষণ’, অর্থাৎ মহাকর্ষ ( বা মাধ্যাকর্ষণ ) শক্তির দ্বারাই যে সেই নিরাধার আকাশে, সূর্য ও গ্রহসমূহ নিজ অক্ষরেখায় সুদৃঢ় রয়েছে --
এখানে সেকথা বলা হয়েছে।
বিশ্বের প্রভাবশালী অনেক ধর্মগ্রন্থে, আকাশকে স্পষ্টভাবে ‘পৃথিবীর ছাদ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। অথচ এই সব ধর্মমতের জন্মেরও হাজার বছর পূর্বে, বেদে আর্য ঋষিগণ আকাশকে ‘নিরাধার’, অর্থাৎ পৃথিবীকে ও গ্রহসমূহকে শূন্যে ভাসমান বলে, ঘোষণা করেছিলেন।
আরও লক্ষণীয়, মহাকর্ষ শক্তিতে আবদ্ধ গ্রহসমূহ, যে নিরাধারে অর্থাৎ, মহাশূন্যে স্থির নয়, বরং পরিভ্রমণ করছে, নিজ কক্ষপথে --এই তত্ত্বও আবিষ্কার করেছিলেন বৈদিক ঋষিগণ। এমনকি সূর্য নিজেও, যে তার নিজস্ব কক্ষপথে চলছে সেই অত্যাশ্চর্য গূঢ় বিজ্ঞানও আলোচিত হয়েছে নিম্নের মন্ত্রে :
আকৃষ্ণেন রজসা বর্তমানো নিবেশয়ন্নমৃতং মর্তঞ্চ।
হিরণ্ময়েন সবিতা রথেনা দেবো যাতি ভুবনানি পশ্যন্ ॥
ঋগ্বেদ, ১/৩৫/২
অনুবাদ: সূর্য আকর্ষণযুক্ত পৃথিব্যাদি লোক-লোকান্তরকে সঙ্গে রাখিয়া, নশ্বর-অবিনশ্বর উভয় পদার্থকে নিজ নিজ কার্যে নিযুক্ত রাখিয়া এবং মাধ্যাকর্ষণ অর্থাৎ, মহাকর্ষ রূপে, রথে চড়িয়া যেন সারা লোকান্তর দেখিতে দেখিতে গমন করিতেছে।
খুব অবাক হতে হয়, পৃথিবী যেমন চাঁদকে সঙ্গে নিয়ে সূর্যের চারপাশে প্রদক্ষিণ করছে, সেইরকম, সূর্যও যে তার গ্রহ-উপগ্রহসমূহকে সঙ্গে নিয়ে, নিজের কক্ষপথে গমন করছে -- এই গভীর জ্ঞানও, পবিত্র বেদে আলোচিত হয়েছে।
মহাবিজ্ঞানী ভাস্করাচার্য
(১১৫০ খ্রি:) তাঁর ‘সিদ্ধান্ত শিরোমণি’ নামক জ্যোতিঃশাস্ত্রের, গোলাধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন--
“আকৃষ্টি শক্তিশ্চ মহীতয়া যৎ স্বস্থং স্বাভিমুখী করোতি।
আকৃষ্যতে তৎ পততীব ভাতি সমে সমন্তাৎ কুবিয়ং প্রতীতিঃ॥”
অর্থাৎ “সর্ব পদার্থের মধ্যে এক আকর্ষণ শক্তি বিদ্যমান রহিয়াছে, যে শক্তি দ্বারা পৃথিবী, আকাশস্থ পদার্থকে নিজের দিকে লইয়া আসে।
যাহাকে ইহা আকর্ষণ করে তাহা পতিত হইল বলিয়া মনে হয়।”
অর্থাৎ প্রাচীন ঋগ্বেদ শাস্ত্রের পাশাপাশি, ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করলেও হিন্দু বিজ্ঞানী ভাস্করাচার্য (১১১৪-১১৮৫), বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনের (১৬৪২-১৭২৭) জন্মেরও কমপক্ষে পাঁচশত বছর পূর্বে, মহাকর্ষ শক্তি আবিষ্কার করে তাঁর গ্রন্থ, ‘সিদ্ধান্ত শিরোমণি’তে আলোচনা করে গিয়েছেন!!!
উত্তর:
আধুনিক বিশ্বে অনেকের ধারণা, মহাকর্ষ ও অভিকর্ষ শক্তি, নিউটন প্রথম আবিষ্কার করেছেন।
তবে অনেকেই জানেন না, যে, এ বিষয়ে হিন্দুদের মূল ধর্মগ্রন্থে, বেদে, স্পষ্টভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
সবিতা যন্ত্রৈঃ পৃথিবী মরভণাদস্কম্ভনে সবিতা দ্যামদৃংহৎ।
অশ্বমিবাধুক্ষদ্ধু নিমন্তরিক্ষমতূর্তে বদ্ধং সবিতা সমুদ্রম ॥
ঋগ্বেদ, ১০/১৪৯/১
অনুবাদ: সূর্য রজ্জুবৎ আকর্ষণ দ্বারা পৃথিবীকে বাঁধিয়া রাখিয়াছে।
নিরাধার আকাশে দ্যুলোকের অন্যান্য গ্রহকেও, ইহা সুদৃঢ় রাখিয়াছে।
অচ্ছেদ্য আকর্ষণ রর্জ্জুতে আবদ্ধ, গর্জনশীল গ্রহসমূহ নিরাধার আকাশে অশ্বের ন্যায় পরিভ্রমণ করিতেছে।
দেখুন, আকাশ যে ‘নিরাধার’, এবং ‘রজ্জুবৎ আকর্ষণ’, অর্থাৎ মহাকর্ষ ( বা মাধ্যাকর্ষণ ) শক্তির দ্বারাই যে সেই নিরাধার আকাশে, সূর্য ও গ্রহসমূহ নিজ অক্ষরেখায় সুদৃঢ় রয়েছে --
এখানে সেকথা বলা হয়েছে।
বিশ্বের প্রভাবশালী অনেক ধর্মগ্রন্থে, আকাশকে স্পষ্টভাবে ‘পৃথিবীর ছাদ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। অথচ এই সব ধর্মমতের জন্মেরও হাজার বছর পূর্বে, বেদে আর্য ঋষিগণ আকাশকে ‘নিরাধার’, অর্থাৎ পৃথিবীকে ও গ্রহসমূহকে শূন্যে ভাসমান বলে, ঘোষণা করেছিলেন।
আরও লক্ষণীয়, মহাকর্ষ শক্তিতে আবদ্ধ গ্রহসমূহ, যে নিরাধারে অর্থাৎ, মহাশূন্যে স্থির নয়, বরং পরিভ্রমণ করছে, নিজ কক্ষপথে --এই তত্ত্বও আবিষ্কার করেছিলেন বৈদিক ঋষিগণ। এমনকি সূর্য নিজেও, যে তার নিজস্ব কক্ষপথে চলছে সেই অত্যাশ্চর্য গূঢ় বিজ্ঞানও আলোচিত হয়েছে নিম্নের মন্ত্রে :
আকৃষ্ণেন রজসা বর্তমানো নিবেশয়ন্নমৃতং মর্তঞ্চ।
হিরণ্ময়েন সবিতা রথেনা দেবো যাতি ভুবনানি পশ্যন্ ॥
ঋগ্বেদ, ১/৩৫/২
অনুবাদ: সূর্য আকর্ষণযুক্ত পৃথিব্যাদি লোক-লোকান্তরকে সঙ্গে রাখিয়া, নশ্বর-অবিনশ্বর উভয় পদার্থকে নিজ নিজ কার্যে নিযুক্ত রাখিয়া এবং মাধ্যাকর্ষণ অর্থাৎ, মহাকর্ষ রূপে, রথে চড়িয়া যেন সারা লোকান্তর দেখিতে দেখিতে গমন করিতেছে।
খুব অবাক হতে হয়, পৃথিবী যেমন চাঁদকে সঙ্গে নিয়ে সূর্যের চারপাশে প্রদক্ষিণ করছে, সেইরকম, সূর্যও যে তার গ্রহ-উপগ্রহসমূহকে সঙ্গে নিয়ে, নিজের কক্ষপথে গমন করছে -- এই গভীর জ্ঞানও, পবিত্র বেদে আলোচিত হয়েছে।
মহাবিজ্ঞানী ভাস্করাচার্য
(১১৫০ খ্রি:) তাঁর ‘সিদ্ধান্ত শিরোমণি’ নামক জ্যোতিঃশাস্ত্রের, গোলাধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন--
“আকৃষ্টি শক্তিশ্চ মহীতয়া যৎ স্বস্থং স্বাভিমুখী করোতি।
আকৃষ্যতে তৎ পততীব ভাতি সমে সমন্তাৎ কুবিয়ং প্রতীতিঃ॥”
অর্থাৎ “সর্ব পদার্থের মধ্যে এক আকর্ষণ শক্তি বিদ্যমান রহিয়াছে, যে শক্তি দ্বারা পৃথিবী, আকাশস্থ পদার্থকে নিজের দিকে লইয়া আসে।
যাহাকে ইহা আকর্ষণ করে তাহা পতিত হইল বলিয়া মনে হয়।”
অর্থাৎ প্রাচীন ঋগ্বেদ শাস্ত্রের পাশাপাশি, ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করলেও হিন্দু বিজ্ঞানী ভাস্করাচার্য (১১১৪-১১৮৫), বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনের (১৬৪২-১৭২৭) জন্মেরও কমপক্ষে পাঁচশত বছর পূর্বে, মহাকর্ষ শক্তি আবিষ্কার করে তাঁর গ্রন্থ, ‘সিদ্ধান্ত শিরোমণি’তে আলোচনা করে গিয়েছেন!!!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন