তারকব্রহ্ম নাম
গীতার বাণী,
গীতাই শান্তির একমাত্র পথ।.
যুগধর্ম হরিনাম
গীতাই শান্তির একমাত্র পথ।.
যুগধর্ম হরিনাম
" এই কলিযুগে ভগবানের দিব্য নাম কীর্তন করা ছাড়া আর কোন ধর্ম নেই । এই দিব্য নাম হচ্ছে বৈদিক মন্ত্রের সার। এটিই সমস্ত শাস্রের মর্ম। "
এই হরিনামই হচ্ছে এই কলিযুগের যুগধর্ম। শ্রীমদ্ভাগবতে বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন যুগধর্মের
কথা বর্ণনা করা হয়েছে –
১. সত্যযুগ: বিষ্ণুর ধ্যান
২. ত্রেতাযুগ: যজ্ঞ
৩. দ্বাপরযুগ: শ্রীবিষ্ণুর অর্চন
৪. কলিযুগ: হরিনাম সংকীর্তন
এই হরিনামই হচ্ছে এই কলিযুগের যুগধর্ম। শ্রীমদ্ভাগবতে বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন যুগধর্মের
কথা বর্ণনা করা হয়েছে –
১. সত্যযুগ: বিষ্ণুর ধ্যান
২. ত্রেতাযুগ: যজ্ঞ
৩. দ্বাপরযুগ: শ্রীবিষ্ণুর অর্চন
৪. কলিযুগ: হরিনাম সংকীর্তন
এজন্য অন্যান্য যুগে যা তাদের নিজ নিজ যুগধর্ম দ্বারা অর্জন করা যেত, কলিযুগে কেবল হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করার মাধ্যমে এই ফল অর্জন করা যায় । এর একটি বিশেষ কারণ মহাপ্রভু বর্ণনা করেছেন –
‘‘এই কলিযুগে, ভগবানের দিব্য নাম হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের অবতার। কেবলমাত্র এই দিব্যনাম কীর্তন করার মাধ্যমে যেকোনো জীব সাক্ষাৎ ভগবানের সঙ্গ লাভ করার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারে। যিনি শ্রবণ কীর্তন করেন তিনি অবশ্যই উদ্ধার লাভ করেন। এই নামের প্রভাবেই কেবল সমস্ত জগৎ নিস্তার পেতে পারে। "
ভক্তিবিনোদ ঠাকুরের ‘শ্রীকৃষ্ণ সংহিতায়’- এ প্রসঙ্গে একটি সুন্দর বিবৃতি পাওয়া যায়। তিনি বর্ণনা করেছেন মানুষের উন্নতির স্তর বিবেচনা করে পূর্ববর্তী গ্রন্থ সংকলকগণ বিভিন্ন যুগে জীবদেরকে উদ্ধার করার নিমিত্ত ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্র নির্ধারণ করেন। এগুলুকে বলা হয় তারকব্রহ্ম নাম। যুগে যুগে জীবের অধঃপতন হয় তথাপি বিভিন্ন রসভেদে এই মন্ত্রগুলো ক্রমাগত উন্নত হয়।
সত্যযুগের মন্ত্র ছিল –
নারায়ণ পরা বেদা নারায়ণ পরাক্ষরা।
নারায়ণ পরা মুক্তি নারায়ণ পরাগতা।।
নারায়ণ পরা বেদা নারায়ণ পরাক্ষরা।
নারায়ণ পরা মুক্তি নারায়ণ পরাগতা।।
এই প্রার্থনাটির মধ্য দিয়ে নারায়ণরূপে পরম সত্যের প্রতি শ্রদ্ধা, শান্তরস এবং ঈষৎ দাস্যরসের ভক্তি বর্তমান ছিল।
পরবর্তী যুগ ত্রেতা যুগের তারকব্রহ্ম নাম ছিল
রাম নারায়ণ কান্ত অনন্ত মুকুন্দ মধুসূদন।
কৃষ্ণ কেশব কংসারে হরে বৈকুণ্ঠ বামন।।
কৃষ্ণ কেশব কংসারে হরে বৈকুণ্ঠ বামন।।
এগুলর সবই ভগবানের বীরত্ব সূচক নাম।
মধুসূদন ( মধু নামক আসুরের দলনকারী) এবং কংসারী (কংসের শত্রু) যা দাস্যরসের নির্দেশক। এভাবে ত্রেতা যুগে পূর্ণ দাস্যরস এবং সখ্যরসের আভাস বর্তমান ছিল। কিন্তু শ্রদ্ধার ভাবটি তখনও বর্তমান ।
দ্বাপর যুগের মন্ত্র ছিল নিম্নরূপ :
হরে মুরারে মধুকৈটভারে গোপাল গোবিন্দ মুকুন্দ শৌরে।
যজ্ঞসে নারায়ণ কৃষ্ণ বিষ্ণো নিরাশ্রয়ং মাং জগদীশ রক্ষ।।
যজ্ঞসে নারায়ণ কৃষ্ণ বিষ্ণো নিরাশ্রয়ং মাং জগদীশ রক্ষ।।
এখানে উল্লেখিত নামগুলো কৃষ্ণকে নির্দেশ করে যিনি অনাথের নাথ। এবং এ স্তরে শান্ত, দাস্য সখ্য এবং বাৎসল্য রস বিদ্যমান।
কলিযুগের তারকব্রহ্ম নাম হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র –
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।
শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর এক্ষেত্রে হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্রের একটি বিশেষ দিক বর্ণনা করেছেন –
"এই হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র ভগবানের সবচেয়ে মধুর নাম। এই মন্ত্রে মুক্তির জন্য কোনো প্রার্থনা নেই। কিন্তু এখানে প্রগাঢ় আসক্তি সমন্বিত সর্বরসের উদ্দীপন বিদ্যমান। এখানে ভগবানের কোনো বীরত্ব বা মুক্তি প্রদানের কথা উল্লেখ নেই। এই মন্ত্র কেবল তখনই প্রকাশিত হয় যখন পরমাত্মার সাথে আত্মার বন্ধন ভক্তির দ্বারা রচিত হয়। এই নাম শুধুমাত্র মাধুর্য রসের ভক্তদের জন্য। নিরন্তর এই নাম স্মরণই ভগবানের সর্বশ্রেষ্ঠ আরাধনা।
"জয় গুরুদেব"।।
উত্তরমুছুন🙏