, মহর্ষি চার্বাক
শেয়ার করেছেন :- প্রণব কুমার কুণ্ডূ
আমি বিশ্বাস করি, মহর্ষি চার্বাকের চেয়ে জ্ঞানী কোন ব্যক্তি ভারতবর্ষে জন্মগ্রহণ করেন নি। ভারতবাসী কেন মহর্ষি চার্বাক-কে গ্রহণ করতে পারে নি, সেটা ভারতবাসীর ব্যর্থতা। মহর্ষি চার্বাকের মতাদর্শ হয় মুছে ফেলা হয়েছে, নতুবা বিকৃতভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। অজস্র নিন্দা-কুৎসার মধ্য দিয়ে মহর্ষি চার্বাকের যুগান্তকারী বস্তুবাদী- দর্শনের যে ক্ষুদ্রাংশ উপস্থাপিত হয়েছে, তার অমৃত-রস আস্বাদন করে আমি বিস্ময়াভূত হয়েছি এই কারণে যে, আড়াই কি তিন হাজার বছর আগেকার এই মহান ভারতীয় চিন্তাবিদের মানবিক দর্শন ― জগৎ বদলে দেওয়া আধুনিক ইউরোপীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমপর্যায়ের ছিল।
মহর্ষি চার্বাকের বাণী নামে প্রচলিত –
যাবজ্জীবেৎ সুখং জীবেদ্ ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেৎ।
ভস্মীভূতস্য দেহস্য পুনরাগমনং কুতঃ।।
অর্থাৎ, যতদিন বাঁচবে, ততদিন সুখে বাঁচবে। ঋণ করে হলেও ঘৃত পান করবে। ভস্মীভূত দেহের পুনরাগমন কোনভাবেই সম্ভব নয়।
ত্যাজ্যং সুখং বিষয়জন্ম পুংসাং
দুঃখোপসৃষ্টমিতি মুর্খবিচারণৈষা।
ব্রীহীন্ জিহাসতি সিতোত্তমতণ্ডুলাঢ্যান্
কো নাম ভোস্তুষকণোপহিতান্ হিতার্থী।।
অর্থাৎ, পুরুষের বিষয়ভোগজন্য সুখ যেহেতু দুঃখ মিশ্রিত, সেহেতু তাকে পরিত্যাগ করতে হবে- এটা নেহাৎই মূর্খের বিচার। এমন হিতার্থী কে আছেন- যিনি তুষকণা-যুক্ত বলে পরিষ্কার উত্তম তণ্ডুলপূর্ণ ধান্য পরিত্যাগ করেন?
কৃত্তিবাস ওঝা
১৩/০১/২০২১খ্রিঃ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন