সোমবার, ৫ অক্টোবর, ২০২০

কালোজিরা

 কালোজিরা



কালোজিরা হচ্ছে নবী মোহাম্মদ কিংবা আবু হুরায়রা প্রবর্তিত সর্বরোগের ইসলামিক চিকিৎসা যার কোনো সুসংহত বা সুপ্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক ভিত্তি তথা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নেই বরং অসুখবিসুখে অনুমোদিত ঔষধ বাদ দিয়ে কালোজিরা সেবন রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
আসুন কালোজিরা নিয়ে বুখারী শরীফের নিম্নোক্ত হাদীসটি দেখি -
১) আবু হুরাইরা বর্ণিত, আমি আল্লাহর নবীকে বলতে শুনেছি - মৃত্যু ব্যতীত সকল অসুখের আরোগ্য/ঔষধ/চিকিৎসা হচ্ছে কালোজিরা।
২) খালিদ বিন সাদ বর্ণিত, আমরা বাইরে গেলাম এবং গালিব বিন আবজার আমাদের সাথে ছিলেন। তিনি পথিমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়লেন এবং মদীনায় আসার পরেও তিনি অসুস্থ ছিলেন। ইবনে আবু আতিক তাকে দেখতে আসলেন এবং বললেন – কালোজিরা দিয়ে তার চিকিৎসা কর। ৫-৭টি কালোজিরা বীজ নাও এবং তা চূর্ণ করে তেলের সঙ্গে মিশিয়ে উভয় নাক দিয়ে তা প্রবেশ করাও কেননা হজরত আয়েশা আমাকে জানান যে তিনি নবী মোহাম্মদকে বলতে শুনেছেন - কালোজিরায় ‘আস-সাম’ বাদে সকল অসুখের আরোগ্য আছে। আয়েশা যখন নবীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে ‘আস-সাম’ কী, তখন নবী জানিয়েছিলেন – ‘মৃত্যু’। (বুখারী ৫৬৮৭)
সচেতন মানসে প্রশ্নের উদ্রেক ঘটে, হাদীস গ্রন্থে যা লেখা আছে, আসলেই কী তাই সত্য?
#প্রশ্নঃ পৃথিবীর কালোজিরা কিংবা অন্য কোনো খাদ্য বা ঔষধ সকল রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হতে পারে কী?
#উত্তরঃ কালোজিরা হোক কিংবা অন্য কোনো খাদ্য বা ঔষধ হোক, কোনোকিছুই সকল রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হতে পারে না।
২০১৩ সালে মালয়েশিয়ার একটি গবেষণায় দাবী করা হয় –
কালোজিরা (Nigella sativa) এর জারণরোধী, উচ্চরক্তচাপরোধী, প্রস্রাব বৃদ্ধিকারক, ক্যালসিয়াম চ্যানেল বিরোধী গুণাগুণ আছে।
এই বক্তব্যকে যদি সত্যি ধরে নেই তবে দাঁড়ায় –
১) কালোজিরা উচ্চরক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এখন একজন নিম্নরক্তচাপের রোগীকে যদি কালোজিরা খাওয়ানো হয় তবে তার নিম্নরক্তচাপ আরো নিম্নতর হবে তথা তার আরো ক্ষতি হবে। ফলে, একসাথে উচ্চরক্তচাপ ও নিম্নরক্তচাপের চিকিৎসা কালোজিরা দিয়ে করা যাবে না। শুধু কালোজিরা কেন, পৃথিবীতে বিদ্যমান কোনো ঔষধ দিয়েই করা যাবে না – এটি সম্পূর্ণই অসম্ভব একটি ব্যাপার।
২) কালো জিরার যদি প্রস্রাব বৃদ্ধিকারক গুণ থাকে তবে কালোজিরায় ডায়াবেটিস, ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা ও ক্রনিক কিডনী ডিজিজের সমস্যা আরো বেড়ে যাবে কেননা
ক) ডায়াবেটিসের বাংলা শব্দ বহুমূত্র থেকেই আমরা জানতে পারি যে ডায়াবেটিসে অতিরিক্ত প্রস্রাব হয়।
খ) কালোজিরার প্রস্রাব বৃদ্ধিকারক গুণের কারণে প্রস্রাব আরো বেড়ে যাবে যার মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে ইলেকট্রোলাইট বের হয়ে যাবে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে ইলেক্ট্রোলাইটের সমস্যা দেখা দেবে।
গ) একইভাবে বারবার প্রস্রাব হওয়ার কারণে কিডনীকেও বারবার ছাঁকতে হবে এবং কিডনীর যত বেশি ব্যবহার হবে, কিডনী তত তার কার্যকারিতা হারাতে থাকবে। অন্য কথায় ক্রনিক কিডনী ডিজিজ দেখা দেবে।
ঘ) প্রস্রাব কম হয় - এমন রোগীদের যদি কালোজিরা খাওয়ানো হয় সেক্ষেত্রে প্রস্রাব বেশি হয় - এমন রোগীদের ক্ষেত্রে কালোজিরা ব্যবহার করা যাবে না।
৩) এরকম পরস্পর বিপরীতধর্মী বহু অসুখ আছে যাতে আলাদা আলাদা খাদ্য/ঔষধ ব্যবহার করতে হয় যেমন ডায়রিয়া হলে কাঁচা কলা খাওয়ানো যায় কিন্তু পেপে খাওয়ালে ডায়রিয়া আরো বাড়বে। আবার কোষ্ঠকাঠিন্যে পেপে খাওয়ালে কোষ্ঠকাঠিন্য কমবে কিন্তু কাঁচা কলা খাওয়ালে আরো বাড়বে। পেপে কিংবা কাঁচাকলা উভয় সমস্যাতেই ব্যবহার করা যাবে না যা কালোজিরাসহ সব খাবার কিংবা ঔষধের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য।
সিদ্ধান্তঃ সুতরাং, একই খাদ্য কিংবা ঔষধ কখনো পরস্পর বিপরীতধর্মী উভয় অসুখে ব্যবহার করা যাবে না বরং উভয়ের মধ্যে যে কোনো ১টি অসুখে ব্যবহার করা যাবে। সেক্ষেত্রে, যৌক্তিকভাবেই কালোজিরা কখনই মৃত্যু ব্যতীত সকল অসুখের আরোগ্য/ঔষধ/চিকিৎসা হতে পারে না। অতএব, ‘মৃত্যু ব্যতীত সর্বরোগের ঔষধ কালোজিরা - নবী মোহাম্মদের এমন দাবি সম্পূর্ণই মিথ্যে বা ভুয়া।
#প্রশ্নঃ কালোজিরার কী খাদ্য, ঔষধ বা চিকিৎসা হিসাবে কোনো তাৎপর্যপূর্ণ উপযোগিতা রয়েছে?
#উত্তরঃ খাদ্য কিংবা চিকিৎসা হিসাবে নয় বরং শুধুমাত্র একটি স্বাদবর্ধক মশলা হিশেবে কালোজিরা প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর কারণঃ
১) কালোজিরা সুস্বাদু নয় বরং তীব্র স্বাদযুক্ত। ফলে খাদ্য হিসাবে ব্যাপক পরিমাণে কালোজিরা খাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
২) ৫.৮ গ্রাম বা ১ টেবিল চামচ কালোজিরার মধ্যে সামান্য পরিমাণ শক্তি ও পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আসুন দেখে নেই -
ক) ক্যালোরিঃ ২০ কিলোক্যালোরি
খ) কার্বোহাইড্রেট ৩.০৩ গ্রাম বা ১%,
গ) প্রোটিন ০.৯১৬ গ্রাম
ঘ) ফ্যাট ০.৮৬২ গ্রাম
ঘ) পটাশিয়াম ৯৮.৩ মিগ্রা
ঙ) সোডিয়াম ৫.১ মিগ্রা
চ) ম্যাগনেসিয়াম ২২.৩ মিগ্রা
ছ) ফসফরাস ২৮.২ মিগ্রা
জ) ক্যালসিয়াম ৬৯.৪ মিগ্রা
ঝ) জিংক ০.২১৫ মিগ্রা
ঞ) কপার ০.০৬২ মিগ্রা
ট) ম্যাঙ্গানিজ ০.৩৭৯ মিগ্রা
ঠ) ভিটামিন এ ৭.৮৩ আইইউ
ড) ভিটামিন সি ১.২২ মিগ্রা
ঢ) ফাইবার ২.৩১ গ্রাম
খাদ্য উপাদানের পারসেন্টেজ % যখন হিসেব করা হয় তখন সেটি ২০০০ ক্যালোরির ভিত্তিতে হিসেব করা হয়, সেই % কে লেখা হয় %DV হিসেবে। তথ্যসূত্রে দেওয়া পুষ্টি উপাদানগুলোর পরিমাণ থেকে বোঝা যায়, কালোজিরার পুষ্টিমান খুব বেশি নয়।
তীব্র স্বাদ ও পুষ্টিমানের স্বল্পতার কারণে বাস্তবে এটিকে খাদ্য হিসেবে নয় বরং মশলা হিসেবে খুব সামান্য পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। সেক্ষেত্রে কমন সেন্স থেকেই বোঝা যায়, এতো স্বল্প পুষ্টিমানের একটি মশলা কোনভাবেই বড় কিংবা জটিল রোগসমূহের নিরাময় হতে পারে না।
৩) কালোজিরা নিয়ে ইরানের একটি গবেষণা থেকে আমরা দেখি কালোজিরায় কতিপয় অসম্পৃক্ত ও সামান্য পরিমাণ সম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে -
The fixed oil (32-40 %) contains: unsaturated fatty acids which includes: arachidonic, eicosadienoic, linoleic, linolenic, oleic, almitoleic, palmitic, stearic and myristic acid as well as beta-sitosterol, cycloeucalenol, cycloartenol, sterol esters and sterol glucosides
The volatile oil (0.4-0.45 %) contains saturated fatty acids which includes: nigellone that is the only component of the carbonyl fraction of the oil, Thymoquinone (TQ), thymohydroquinone (THQ), dithymoquinone, thymol, carvacrol, α and β-pinene, d-limonene, d-citronellol, p-cymene volatile oil of the seed also contains: p-cymene, carvacrol, t-anethole, 4-terpineol and longifolene
Most of the pharmacological effects are due to quinine constituent, of which TQ is the mainly abundant. TQ possess anticonvulsant activity, antioxidant, anti-inflammatory, anti-cancer, antibacterial and antifungal activity
প্রথমে আলোচনা হয়ে যাক উদ্বায়ী তেল সম্পর্কে। ইরানী গবেষকদের মতে, কালোজিরার ঔষধগত গুণাগুণের অধিকাংশই আসে Thymoquinone (TQ) থেকে যাতে কুইনাইনের অংশবিশেষ রয়েছে।
১) Thymoquinone, Dithyrmoquinone, Thymohydroquinone: থাইমোকুইনোন হচ্ছে কালোজিরায় থাকা উদ্বায়ী তেলের (Volatile Oil) ১টি উপাদান যেখানে উদ্বায়ী তেলের পরিমাণ মাত্র 0.4-0.45 %। এই নগণ্য পরিমাণ উদ্বায়ী তেলে ‘থাইমোকুইনোন’ যে আরো অতি নগণ্য পরিমাণে আছে এটি বলাই বাহুল্য। এই অতি নগণ্য পরিমাণ থাইমোকুইনোন দিয়ে কার্যকরীভাবে কাঁপুনিরোধী, জারণরোধী, প্রদাহরোধী, ক্যান্সাররোধী, ব্যাকটেরিয়ারোধী ও ফাঙ্গাসরোধী ভূমিকা তথা চিকিৎসাগত প্রভাব (Therapeutic Effect) তো দূরের কথা, একদম সাধারণ পুষ্টিগত প্রভাব (Nutritional Effect) ও লাভ করা সম্ভব নয়। উল্লেখ্য, এই গবেষণায় থাইমোকুইনোনেন ভাইরাস প্রতিরোধী (Antiviral) কোনো গুণাগুণের কথা উল্লেখিত হয়নি যা থেকে আলামত পাওয়া যায়, করোনা ভাইরাস ডিজিজ নিরাময় ও প্রতিরোধে থাইমোকুইনোনের কোনো ভূমিকা নেই। এদিকে U.S. National Institutes of Health এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে আজ পর্যন্ত মিশর ও সৌদি আরবের মাত্র ৩টি স্টাডি পেশ করা হয়েছে এবং এতে এখনো পর্যন্ত কোন তাৎপর্যপূর্ণ ফলাফল আসেনি।
থাইমো-হাইড্রোকুইনোনের ক্যান্সাররোধী (Anti-cancer) গুণ আছে বলে ২০০৬ সালের একটি গবেষণায় উল্লেখিত হয়েছে।
তবে বাস্তবতা হচ্ছে, ইরান, সৌদি আরব, মিশর তথা ইসলামিক দেশগুলোতে তেল বিক্রি করে লব্ধ অর্থ-বিত্ত-বৈভব থাকলেও শিক্ষাদীক্ষার মান কিংবা অবস্থা খুবই খারাপ। উচ্চশিক্ষার জন্য ধর্মান্ধতা বিরোধী যেই অনুকূল পরিবেশ দরকার, তা এসব দেশগুলোতে নেই। এসব দেশগুলোতে গবেষণার ফলাফল ধর্মের বিরুদ্ধে গেলে শিরশ্ছেদ কিংবা গ্রেফতার হয়ে হাজতবাস করতে হয়। সরকার থেকে অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে ইংরেজিতে অত্যন্ত দুর্বল সাধারণ শিক্ষিত লোকজন দিয়ে এসব ছাইপাশ লেখানো হয় এবং পরবর্তীতে এদের বড় অংকের অর্থ দিয়ে পুরস্কৃত করা হয় কেননা জ্ঞানের বিকাশ ও প্রসার নয় বরং ধর্ম প্রচারই এসব তথাকথিত গবেষণা নামক নাটকের মূল উদ্দেশ্য। এজন্যই গত ১০০-২০০ বছরে মুসলিমদের দ্বারা বড় ধরনের কোনো কিছু আবিষ্কৃত হয়নি তথা ১৯০১ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ফিজিওলজি কিংবা মেডিসিনে ১ জন মুসলিমও নোবেল পুরষ্কার পাননি।
ইরানী গবেষণা অনুসারে ঔষধগত গুণাবলীর দিক থেকে থাইমোকুইনোন ব্যতীত বাকি পদার্থগুলো তাৎপর্যহীন হলেও মুসলিমদের ভুল ভাঙানোর জন্য এই পদার্থগুলো সম্পর্কেও বিস্তারিত জানানো হলঃ
২) Thymol & Carvacrol: এই ২টি পদার্থের হালকা ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসরোধী ভূমিকা রয়েছে বলে জানা যায়। ১মটি মাউথওয়াশ ও টুথপেস্টে ব্যবহৃত হয়, ২য়টি কোনো প্রোডাক্টে ব্যবহৃত হয় না।
৩) α and β-pinene, D-citronellol: পোকামাকড় তাড়ানোর ঔষধ ও পারফিউম শিল্পে ব্যবহৃত হয়।
৪) D-limonene: এটি স্বাদবর্ধক হিশেবে খাবারে ও সুগন্ধকারী হিশেবে কসমেটিকসে ব্যবহৃত হয়।
৫) P-cymene: ত্বকের সমস্যা, ক্ষত নিরাময় ও যোনীর প্রদাহে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে বলে বিভিন্ন ফার্মাকোপিয়াতে উল্লেখ আছে তবে কোনো ঔষধে এটি এখনো ব্যবহার করা হয়নি।
৬) T-anethole: কিছু গবেষণায় এটিকে ব্যাকটেরিয়া, ঈস্ট ও ফাঙ্গাসরোধী হিশেবে উল্লেখ করা হয়েছে তবে শুধুমাত্র স্বাদবর্ধক হিশেবেই এখনো পর্যন্ত এটি ব্যবহার করা হচ্ছে।
৭) 4-terpineol: এখনো পর্যন্ত এই উপাদানের কোনো স্বীকৃত ব্যবহার নেই।
৮) Longifolene: এটি রসায়নশিল্পে ব্যবহৃত হয়। এর খাদ্য বা ঔষধগত গুণাবলী নেই।
এবার আসা যাক অনুদ্বায়ী তেল সম্পর্কে।
১) Arachidonic Acid: কিডনী ও লিভার ফাংশন, চর্বি ও রক্ততঞ্চন সংশ্লিষ্ট রোগ, রোগ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং প্রস্টেট ও কলোরেকটাল ক্যান্সারে অ্যারাকিডনিক অ্যাসিডের কোনো উপকারী ভূমিকা নেই বলে বিভিন্ন গবেষণায় উল্লেখিত হয়েছে।
সূত্রঃ
২) Eicosadienoic Acid: আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড, লিনোলেইক এসিড ও অলিক অ্যাসিড থেকে এই অ্যাসিড তৈরি হয় যার প্রদাহ উৎপাদক পদার্থের সংশ্লেষণ কমানোর তাত্ত্বিক সম্ভাবনা ছাড়া শরীরে কোনো উপকারী ভূমিকা আছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
৩) Linoleic Acid: এটি বিভিন্ন খাদ্যতেলে ব্যাপক পরিমাণে পাওয়া যায় বলে কালোজিরা থেকে গ্রহণ করার কোনো মানে হয় না এবং এটির অতিগ্রহণে Ulcerative colitis নামক আন্ত্রিক অসুখের তীব্রতা আরো বেড়ে যেতে পারে।
সূত্রঃ
৪) Linolenic Acid: ২০০৬ সালের পুরনো একটি গবেষণা ব্যতীত অধুনা গবেষণাগুলোতে আলফা লিনোলেইক অ্যাসিডে প্রস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায় বলে উল্লেখিত হয়েছে।
৫) Oleic Acid: বিভিন্ন খাদ্য তেলে লভ্য অলিক অ্যাসিড গ্রহণে দেহের জন্য ক্ষতিকর চর্বি কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড ও লো-ডেনসিটি লাইপো-প্রোটিন কমলেও উপকারী চর্বি হাই-ডেনসিটি লাইপো-প্রোটিন বাড়ে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এটি ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় ও কমায় (oleate in olive oil হিশেবে) বলে পরস্পরবিরোধী গবেষণা রয়েছে।
সূত্রঃ
৬) Almitoleic Acid: মায়ের বুকের দুধ ও খাদ্যতেলগুলোতে এটি লভ্য হলেও এর উপকারী দিক সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
৭) Palmitic Acid: মাংস, পনির ও মাখনে লভ্য পামিটিক অ্যাসিড লো-ডেনসিটি লাইপো-প্রোটিন বাড়ানোর মাধ্যমে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।
৮) Stearic Acid: সাবান, ডিটারজেন্ট, কসমেটিক, লুব্রিক্যান্ট ও কোমলকারক পদার্থে লভ্য স্টিয়ারিক অ্যাসিড লো-ডেনসিটি লাইপো-প্রোটিন কমাতে উপকারী হতে পারে এমন সম্ভাব্যতা একটি গবেষণায় উল্লেখিত হয়েছে।
৯) Myristic Acid: এটি কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়ানোর মাধ্যমে হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে বলে গবেষণায় উল্লেখিত হয়েছে
#প্রশ্নঃ ইবনে সিনা বনাম নবী মোহাম্মদ – কে বড় চিকিৎসক এবং কালোজিরার ব্যাপারে উভয়ের বক্তব্য কী ছিল?
ইবনে সিনা ছিলেন জন্মসূত্রে মুসলিম কিন্তু বাস্তবে গবেষণায় আগ্রহী ধর্মদ্রোহী এক মহান চিকিৎসক ও গবেষক যার বর্ণিত নানাবিধ চিকিৎসাপদ্ধতি সর্বশেষ ১৬৫০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বহুল প্রচলিত ছিল।
পক্ষান্তরে, নবী মোহাম্মদ ছিলেন চিকিৎসাবিজ্ঞানে অজ্ঞ একজন ব্যক্তি যিনি কোরানে মধু, উটমূত্র, খেজুর, মধু, ধূপের ধোঁয়া, হিজামা, সুরমা, থুতু, কুলির পানি, ঘামযুক্ত পানি, পোড়া দেওয়া ইত্যাদি ক্ষতিকর ও অকার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতির উল্লেখ করেছিলেন।
ফলে ইবনে সিনার মতো চিকিৎসা মহীরুহের সাথে কবিরাজ নবী মোহাম্মদের তুলনা করাটাই অনুচিত। এরপরও মুসলিমদের অজ্ঞতা দূর করতে এই তুলনাটি করা হচ্ছে।
১) ইবনে সিনা তাঁর নামকরা ক্যানন অফ মেডিসিনে এটিকে সর্বরোগের ঔষধ নয় বরং শুধুমাত্র শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যার একটি ঔষধ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। আসুন দেখি –
The Persian physician, Avicenna, in his Canon of Medicine, described N. sativa as a treatment for shortness of breath (or dyspnea).
২) পক্ষান্তরে নবী মোহাম্মদ একে মৃত্যু ব্যতীত সর্বরোগের ঔষধ/চিকিৎসা বলে দাবী করেন এবং এটি যে ভুল তার প্রমাণ উপরিউক্ত গবেষণাগুলোর মাধ্যমেই প্রমাণিত হয়।
এবার আসুন, কালোজিরা প্রসঙ্গে নবী মোহাম্মদের সীমাবদ্ধতা এবং থাইমোকুইনোন সম্পর্কে নবী মোহাম্মদের অজ্ঞতার ব্যাপারটা জেনে নেই
১) কোরান হাদীসে থাইমোকুইনোনের কোনো উল্লেখ নেই থেকে এটি প্রমাণিত যে থাইমোকুইনোন সম্পর্কে নবী মোহাম্মদ কিছুই জানতেন না।
২) নবী মোহাম্মদের যুগে ঔষধ কোম্পানি, ঔষধ উপাদানের পরিশোধিত কাঁচামাল কিংবা ঔষধ তৈরি করার যন্ত্রাংশ কিছুই ছিল না। ফলে, নবী আমলে তীব্র স্বাদের কালোজিরা থেকে শুধুমাত্র থাইমোকুইনোন নিষ্কাশন করা কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না।
৩) যদি আসলেই কালোজিরা মৃত্যু ব্যতীৎ সর্বরোগের ঔষধ হয় তবে সর্বরোগের ক্ষেত্রে কিভাবে এটিকে ব্যবহার করতে হবে সে সম্পর্কে নবী মোহাম্মদ কেন কোরান হাদীসে কিছুই উল্লেখ করলেন না? আসলে সর্বরোগ তো দূরের কথা, নবী মোহাম্মদ পৃথিবীর অধিকাংশ রোগের কথাই জানতেন না। কোরান হাদীসে দেখা যায়, কুষ্ঠ, শ্বেতী, পাগলামি, মাথা ব্যথা, বিষক্রিয়া সহ হাতে গোনা কিছু অসুখের নাম রয়েছে এবং সেগুলোর অকার্যকর ও ক্ষতিকর চিকিৎসাপদ্ধতির কথা কোরানে ১ লাইনে বর্ণিত হয়েছে।
৪) নবী মোহাম্মদের মৃত্যুর পর ১৪০০ বছর অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে কোন বিজ্ঞানী বা ঔষধ কোম্পানী Thymoquinone (TQ) এমন পন্থায় সংশ্লেষিত করতে পারেননি যা দ্বারা কোন ঔষধগত প্রভাব অর্জিত হয়। ফলে সুস্পষ্টভাবেই বলা যায়, কালোজিরার কোনো ঔষধগত গুণ নেই।
ইবনে সিনাকে ভুলভাবে মুসলিম বলে মনে করা সাধারণ মুসলিমেরা এখন কাকে সেরা চিকিৎসক হিশেবে অভিহিত করবেন? ইবনে সিনা কে - যিনি শুধুমাত্র কালোজিরাকে শুধুমাত্র শ্বাসকষ্টে কিছুটা উপকারী বলে উল্লেখ করেছিলেন নাকি নবী মোহাম্মদকে - যিনি কালোজিরাকে মৃত্যু ব্যতীত সর্বরোগের চিকিৎসা বলে উল্লেখ করেছিলেন? বাড়তি মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।
#প্রশ্নঃ পৃথিবীতে এত খাদ্য উপাদান কিংবা রাসায়নিক পদার্থ থাকতে নবী মোহাম্মদ কালোজিরাকে কেন সর্বরোগের ঔষধ হিসেবে প্রচার করলেন?
১) যেহেতু সৌদি আরব, ইয়েমেন, সংযুক্ত আরব আমীরাত, ওমান, কাতার, কুয়েত, বাহরাইন, ইরাক ও ইরানে কালোজিরার ফলন অনেক বেশি, সেহেতু কালোজিরার বাণিজ্যকে জনপ্রিয় করার উদ্দেশ্যে নবী মোহাম্মদ কালোজিরাকে মৃত্যু ব্যতীত সর্বরোগের ঔষধ বলে দাবী করেন বলে অনুমান করা যায়।
লক্ষ্য করুন, কালোজিরা দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়া, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ও আফ্রিকায় সবচেয়ে বেশি পরিমাণে হয়।
The black cumin plant is found in southwestern Asia and parts of the Mediterranean and Africa
এবার আসুন জেনে নেই - কোন কোন রাষ্ট্র দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার অন্তর্ভুক্ত -
What countries make up SW Asia?
From our standpoint, the countries that make up areas of the Gulf and Southwest Asia include Bahrain, Iran, Iraq, Kuwait, Oman, Qatar, Saudi Arabia, UAE, Yemen, and those are the countries.
২) গবেষণা করার মতো সরঞ্জাম, পরিবেশ ও জ্ঞান নবী মোহাম্মদের আমলে ছিল না। অ্যালার্জি, সর্দিকাশি ও শ্বাসকষ্ট/অ্যাজমায় নবী মোহাম্মদ কালোজিরা খেয়ে সামান্য উপকার হয়ত পেয়েছিলেন যার কারণে তিনি এই উপকারকে অতিরঞ্জিত করে একে সর্বরোগের চিকিৎসা বলে দাবী করেছেন।
৩) কালোজিরার মতো তুচ্ছ একটি উপাদানে তাৎপর্যপূর্ণ উপকার পেয়ে থাকলে এটাও প্রমাণিত হয় যে নবী মোহাম্মদের অ্যালার্জি, সর্দিকাশি ও শ্বাসকষ্টের ভালই সমস্যা ছিল।
৪) নিশ্চিতভাবেই অন্যান্য খাদ্যের মতো কালোজিরাতেও তুচ্ছ বা সামান্য কিছু উপকারী গুণ রয়েছে কিন্তু তার মানে এই নয় যে কালোজিরা সেবনে অ্যালার্জি, সর্দিকাশি ও অ্যাজমা, ডায়াবেটিসসহ সকল অসুখের একদম সম্পূর্ণ নিরাময় ঘটবে। যদি তাই হত, তাহলে অ্যালার্জির সমস্যায় Fexofenadine, Rupatadine, Loratadine, Desloratadine, Cetirizine, Levocetirizine, Chlorpheniramine Maleate, Hydroxyzine, Ebastine, Mizolastine, Azelastine, সর্দিকাশির সমস্যায় Dextromethorphan HBr, Ambroxol, Guaiphenesin, Butamirate Citrate অ্যাজমার সমস্যায় Salbutamol, Levosalbutamol, Aminophylline, Salmeterol, Formoterol, Budesonide, Mometasone, Triamcinolone Acetonide, Ipratropium, Tiotropium, Montelukast, Doxofylline ইত্যাদি ঔষধ ব্যবহৃত না হয়ে কালোজিরা কিংবা থাইমোকুইনোন নির্যাস ব্যবহৃত হত।
বিশ্বে করোনা ভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করার পর জ্ঞানবিজ্ঞানে চরম অজ্ঞ মুসলিম তথা ধর্মান্ধ মুসলিমগণ ৩টি ভুল তথ্য অন্তর্জালে ভাইরাল করছেন যেগুলো মিথ্যাচার এবং/অথবা অপব্যাখ্যামূলক। আসুন বিস্তারিত জেনে নেই।
#প্রশ্নঃ ক্লোরোকুইন কিংবা হাইড্রক্সি-ক্লোরোকুইন এবং থাইমোকুইনোন কী অভিন্ন পদার্থ?
#উত্তরঃ ক্লোরোকুইন কিংবা হাইড্রক্সি-ক্লোরোকুইন এবং থাইমোকুইনোন ভিন্ন ভিন্ন পদার্থ কেননা প্রত্যেকের রাসায়নিক নাম, ফর্মুলা এবং গাঠনিক সংকেত ভিন্ন ভিন্ন।
International Union of Pure and Applied Chemistry (IUPAC) রাসায়নিক পদার্থের নামকরণ করার স্বীকৃত সংস্থা। IUPAC এর chemical nomenclature অনুযায়ী
১) ক্লোরোকুইনের নামঃ (RS)-N'-(7-chloroquinolin-4-yl)-N, N-diethyl-pentane-1,4-diamine
২) ক্লোরোকুইনের ফর্মুলাঃ C18H26ClN3
১) হাইড্রক্সি-ক্লোরোকুইনের নামঃ (RS)-2-[{4-[(7-chloroquinolin-4-yl) amino] pentyl} (ethyl)amino] ethanol
২) হাইড্রক্সি-ক্লোরোকুইনের ফর্মুলাঃ C18H26ClN3O
১) থাইমোকুইনোনের নামঃ 2-Isopropyl-5-methylbenzo-1,4-quinone
২) থাইমোকুইনোনের ফর্মুলাঃ C10H12O2
১) কুইনাইনের নামঃ (R)-(6-Methoxyquinolin-4-yl) [(1S,2S,4S,5R)-5-vinylquinuclidin-2-yl] methanol
২) কুইনাইনের ফর্মুলাঃ C20H24N2O2
#প্রশ্নঃ ক্লোরোকুইন/হাইড্রক্সি-ক্লোরোকুইন এবং থাইমোকুইনোনে ‘কুইনাইন’ এর অংশবিশেষ আছে বলে কী উভয়ে একই রোগে ব্যবহারযোগ্য?
#উত্তরঃ প্রথমেই জেনে রাখুন, ক্লোরোকুইন/হাইড্রক্সি-ক্লোরোকুইন কালোজিরা থেকে প্রস্তুত করা হয় না বরং এটি কৃত্রিম উপায়ে সংশ্লেষণ করা হয়। এবার আসা যাক প্রশ্নের উত্তরে -
১) দুটি আলাদা আলাদা পদার্থে একই বা কমন উপাদান থাকা বা সেই উপাদানের আংশিক থাকা মানে উভয়ের ফাংশন অভিন্ন নয়। থাইমোকুইনোন সম্পর্কে ইরানী গবেষণায় বলা হয়েছে Quinine constituent এর কথা। Constituent শব্দটির অর্থ a component part of something অর্থাৎ কোন পদার্থ কিংবা বস্তুর অংশবিশেষ। অর্থাৎ কুইনাইনের পুরোটা নয় বরং কিছুটা অংশ কালোজিরার থাইমোকুইনোন নামক পদার্থের মধ্যে রয়েছে। এই অংশবিশেষ দিয়ে কুইনাইনের পূর্ণ ঔষধগত প্রভাব পাওয়া সম্ভব নয়।
২) কুইনাইন মৃত্যু ব্যতীত সকল অসুখের নিরাময় নয় বরং Uncomplicated Malaria by Plasmodium Falciparum নামক শুধুমাত্র ১টি রোগে নির্দেশিত যা থেকে বলা যায় কালোজিরা নিশ্চিতভাবেই মৃত্যু ব্যতীত সকল অসুখের নিরাময় নয় কেননা কুইনাইনের অংশবিশেষ কালোজিরার সবচেয়ে আলোচিত উপাদান থাইমোকুইনোনে রয়েছে।
৩) হেমাটোলজি ও কার্ডিওভাস্কুলার তন্ত্রে কুইনাইনের মারাত্মক তথা প্রাণসংহারী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যেমন Low platelet count, Hemolytic-uremic syndrome, Thrombotic thrombocytopenic purpura (HUS/TTP), Kidney failure, Long QT syndrome, Cardiac arrhythmias including Torsades de pointes, Blackwater fever, Disseminated intravascular coagulation, Leukopenia, Neutropenia, Hypersensitivity reactions include Anaphylactic shock, Urticaria, Serious skin rashes, Stevens-Johnson syndrome and Toxic epidermal necrolysis, Angioedema, Facial edema, Bronchospasm, Granulomatous hepatitis, and Itchiness, Cinchonism (Headache, Vasodilation, Sweating, Nausea & Vomiting, Tinnitus, Hearing Impairment or Loss, Vertigo or Dizziness, Blurred vision, Blindness Disturbance in color perception, Diarrhea, Abdominal pain, Cardiac Arrhythmia etc.
অন্যান্য ঔষধের চেয়ে কুইনাইনে তুলনামূলকভাবে এতো বেশি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকার কারণে কী এখন মুসলিমেরা বলবেন যে কালোজিরায় কুইনাইনের অংশ আছে বলে কালোজিরা খারাপ? না, তারা এই ক্ষেত্রে চুপ থাকবেন নতুবা প্রসঙ্গচ্যুত হয়ে কথা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নেবেন যেন ইসলাম ও কালোজিরাকে রক্ষা করা যায়।
৪) ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার গ্রুপের Dihydropyridine শ্রেণীর সকল ঔষধের গাঠনিক সংকেতে Dihydropyridine অংশটি বিদ্যমান কিন্তু Nimodipine নামে ১টি ব্যতিক্রমী ঔষধ রয়েছে যা Amlodipine, Nifedipine তথা বাকি ঔষধগুলোর মতো উচ্চরক্তচাপরোধী (Antihypertensive) হিশেবে ব্যবহৃত হয় না বরং মস্তিষ্কের রক্তপাতে (Subarachnoid Hemorrhage) ব্যবহৃত হয়।
সূত্রঃ
৫) ত্বকের রঙবৈষম্যজনিত অসুখ (Exogenous ochronosis) ও ক্যান্সার উৎপাদক (Carcinogenic) বলে এফডিএ ২০০৬ সালে ত্বক ফর্সাকারক হাইড্রোকুইনোন নিষিদ্ধ করেছে।
এখন কালোজিরায় থাকা থাইমো-হাইড্রোকুইনোনে ‘হাইড্রোকুইনোন’ অংশটি আছে বলে কী এখন বিজ্ঞানীরা মুসলিমদের মতো দাবী করবেন যে – থাইমো-হাইড্রোকুইনোন ত্বকের রঙবৈষম্যজনিত অসুখ (Exogenous ochronosis) ও ক্যান্সার উৎপাদক (Carcinogenic)?
এখান থেকে সুস্পষ্ট হয়, ক্লোরোকুইন/হাইড্রক্সি-ক্লোরোকুইন এবং থাইমোকুইনোন - উভয়েই কুইনাইনের উপাদান আংশিক থাকলেই বিভিন্ন রোগে তাদের উভয়ের ব্যবহার একদম নিশ্চিতভাবেই অভিন্ন হওয়ার কোনো যুক্তি নেই কেননা অংশবিশেষের অভিন্নতা থাকলেও বাকি অংশের ভিন্নতা রয়েছে।
#প্রশ্নঃ ক্লোরোকুইন ও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন কি করোনা ভাইরাস ডিজিজের ঔষধ হিশেবে FDA, CDC, NHS, WHO এর মতো আন্তর্জাতিকভাবে প্রভাবশালী কোনো স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে অনুমোদন বা স্বীকৃতি পেয়েছে?
#উত্তরঃ পায়নি।
১) WHO: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনা ভাইরাস ডিজিজের জন্য ক্লোরোকুইনের কার্যকরিতার কোনো প্রমাণ এখনো পর্যন্ত পায়নি বলে জানিয়েছে।
At this moment in time there is no proven effective treatment for COVID-19 so that is clear at this moment in time…For chloroquine there is no proof that that is an effective treatment at this time.
২) FDA: ক্লোরোকুইন ও হাইড্রক্সি-ক্লোরোকুইনের উপকারী ভূমিকা থাকলেও এটি এখনো মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FDA) এর অনুমোদন বা স্বীকৃতি পায়নি বরং তারা তাদের সাইটে সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে এখনো পর্যন্ত করোনা ভাইরাস ডিজিজে এফডিএ স্বীকৃত কোনো প্রোডাক্ট নেই। ক্লোরোকুইন ফসফেট বর্তমানে অ্যাকুরিয়ামের মাছের পরজীবী সংক্রমণে ব্যবহৃত হয় এবং ভেটেরিনারি প্রোডাক্ট ও গবেষণামূলক প্রোডাক্টে চরম অসুস্থতা ও মৃত্যু সহ নানাবিধ বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে বলে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তি কিংবা সংস্থার লিখিত বা আইনসিদ্ধ পরামর্শ ছাড়া ক্লোরোকুইন ফসফেট গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার সতর্কতামূলক নির্দেশনা জারি করা হচ্ছে।
There Are No Vaccines or Medicines for COVID-19, Yet
There are no FDA-approved products to prevent COVID-19. For example, the FDA is aware of people trying to prevent COVID-19 by taking a product called chloroquine phosphate, which is sold to treat parasites in aquarium fish. Products for veterinary use or for “research use only” may have adverse effects, including serious illness and death, when taken by people. The agency warns not to take any form of chloroquine unless it has been prescribed by a health care provider and obtained from legitimate sources.
সূত্রঃ
৩) CDC: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (CDC) জানিয়েছে যে করোনা ভাইরাস ডিজিজের জন্য এফডিএ স্বীকৃত কোনো ঔষধ বর্তমানে নেই তবে আমেরিকায় করোনা ভাইরাস ডিজিজে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে বলে রোগীর প্রাণ বাঁচানোর পদক্ষেপ হিশেবে এফডিএর স্বীকৃতি না থাকার পরেও বিভিন্ন হাসপাতালে ডাক্তারগণ ক্লোরোকুইন ও হাইড্রক্সি-ক্লোরোকুইন ব্যবহার করছেন এবং এতে কিছুটা আশানুরূপ ফল পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য, ঔষধগুলো হাসপাতালে ডাক্তারের পরামর্শ সাপেক্ষে ব্যবহারযোগ্য কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত ব্যবহারযোগ্য নয় কেননা এতে বিভিন্ন পার্শ্ব তথা বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
There are no US Food and Drug Administration (FDA)-approved drugs specifically for the treatment of patients with COVID-19.
Due to higher in-vitro activity against SARS-CoV-2 and its wider availability in the United States compared with chloroquine, hydroxychloroquine has been administered to hospitalized COVID-19 patients on an uncontrolled basis in multiple countries, including in the United States. One small study reported that hydroxychloroquine alone or in combination with azithromycin reduced detection of SARS-CoV-2 RNA in upper respiratory tract specimens compared with a non-randomized control group but did not assess clinical benefit.
Hydroxychloroquine is currently under investigation in clinical trials for pre-exposure or post-exposure prophylaxis of SARS-CoV-2 infection, and treatment of patients with mild, moderate, and severe COVID-19. In the United States, several clinical trials of hydroxychloroquine for prophylaxis or treatment of SARS-CoV-2 infection are planned or will be enrolling soon.
ফলে যেসব মুসলিম ধর্মান্ধতার প্রভাবে কালোজিরা তথা ধর্মের মাহাত্ম্য প্রচার করছেন, তারা সবদিক থেকেই মিথ্যাচার ও অপব্যাখ্যা করছেন।
উপসংহারঃ উপরিউক্ত আলোচনা থেকে এটাই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হল যে –
১) কালোজিরাকে সর্বরোগের ঔষধ হিশেবে দাবী করা নবী মোহাম্মদ কিংবা আবু হুরায়রা কথিত একটি ডাহা মিথ্যাচার।
২) করোনা ভাইরাস ডিজিজ সংক্রমণে ক্লোরোকুইন/হাইড্রক্সি-ক্লোরোকুইনের বদলে কালোজিরা খাওয়ার প্রণোদনা দেওয়া ধর্মান্ধ মুসলিমদের প্রচারিত একটি চরম মিথ্যাচার ও অপব্যাখ্যা।


শেয়ার করেছেন : - প্রণব কুমার কুণ্ডূ



































প্রণব কুমার কুণ্ডূ
1
লাইক করুন
কমেন্ট করুন
শেয়ার করুন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন