“নারায়ণ” শব্দের আর কোন অর্থ আছে?
“নারায়ণ” শব্দের আর কোন অর্থ আছে? আছে বৈকি।
সারূপ্যমুক্তিবচনো নারেতি চ বিদর্বুধাঃ।
যো দেবোহপ্যয়নং তস্য স চ নারায়ণঃ স্মৃতঃ।।
“নারা” শব্দের অর্থ সারূপ্য মুক্তি। যিনি তার আশ্রয় তিনিই নারায়ণ।
সারূপ্যমুক্তিবচনো নারেতি চ বিদর্বুধাঃ।
যো দেবোহপ্যয়নং তস্য স চ নারায়ণঃ স্মৃতঃ।।
“নারা” শব্দের অর্থ সারূপ্য মুক্তি। যিনি তার আশ্রয় তিনিই নারায়ণ।
নারাশ্চ কৃতপাপাশ্চাপ্যয়নং গমনং স্মৃতম্।
যতো হি গমনং তেষাং সোহয়ং নারায়ণঃ স্মৃতঃ।।
“নারা” অর্থে পাপকারী, ও “অয়ন” অর্থে গমন। নারায়ণের আশ্রয় গ্রহণে পাপ হ’তে মুক্ত হয় ব’লে ইনি “নারায়ণ” নামে কথিত হন।
নারঞ্চ মোক্ষণং পুণ্যময়নং জ্ঞানমীপ্সিতম্।
তয়োর্জ্ঞানং ভবেদ্যস্মাৎ সোহয়ং নারায়ণঃ স্মৃতঃ।।
“নার” শব্দের অর্থ মোক্ষ, “পুণ্য, অয়নের” অর্থ ইপ্সিত জ্ঞান, নারায়ণের আশ্রয় গ্রহণে মোক্ষ ও বাঞ্ছিত জ্ঞান লাভ হয় ব’লে “নারায়ণ” নামে স্মৃত হন।
সকৃন্নারায়ণেত্যুক্ত্ব্যা পুমান্ কল্পশতত্রয়ম্।
গঙ্গাদি সর্ব্বতীর্থেষু স্নাতো ভবতি নিশ্চিতম্।।
মানব একবার নারায়ণ উচ্চারণ ক’রে ত্রিশত কল্প গঙ্গাদি নিখিল তীর্থে স্নাত হয়।
তুমি প্রথমে বলেছো, “নারায়ণ” নাম শ্রবণমাত্রেই অনেক জন্মের অর্জ্জিত পাপরাশি হরণ করেন। এখন বল্লে ত্রিশত কল্প গঙ্গাদি তীর্থ স্নানের ফল একবার নারায়ণ উচ্চারণ করলে হয়। “নারায়ণ” নাম একবার উচ্চারণ ক’রে কারুর পাপ নাশ হয়েছে?
হয়েছে বৈকি!
আচ্ছা শোনো—
কোন দেশে শাস্ত্রজ্ঞানসম্পন্ন, মৃদুপ্রকৃতি, সৎস্বাভাবান্বিত, সদাচারী, ক্ষমা গুণের আধার, জিতেন্দ্রিয়, ব্রতপরায়ণ, সত্যবাদী, মন্ত্রতত্ত্ব-বেত্তা, পিতৃমাতৃভক্ত, শৌচাচার-বিশিষ্ট, একজন ব্রাহ্মণ বাস কর্তেন।
তিনি অহঙ্কারবিহীন হ’য়ে গুরু অগ্নি অতিথি ও বৃদ্ধ প্রভৃতির সেবানিরত ও প্রাণীমাত্রেরই সুহৃদ, সাধু ও মিতবাক্ ছিলেন। একদিন পিতার আজ্ঞায় বনে গিয়ে ফল পুষ্প সমিধ্ কুশ নিয়ে ফির্ছেন এমন সময় পথে মদ্যপানে মত্ত এক শুদ্র ও শূদ্রাণী ক্রীড়াসক্ত দেখ্লেন। তাদের বস্ত্রাদি যথাস্থানে ছিল না। সেই মাতাল শূদ্র ব্রাহ্মাণের সুমুখেই শূদ্রাণীকে আলিঙ্গন ক’রে হাস্য পরিহাস ক্রীড়া কৌতুক কর্তে লাগলো। তাদের এ অবস্থা দেখে ব্রাহ্মণ যুবকের মন চঞ্চল হ’য়ে উঠ্লো। তিনি জ্ঞান ও ধৈর্য্যের দ্বারা চঞ্চল চিত্তকে শান্ত কর্বার যথেষ্ট চেষ্টা কর্লেন, কিন্তু কিছুতেই মনকে সেই শূদ্রাণীর চিন্তা হ’তে প্রতিনিবৃত্ত করতে পার্লেন না। তখন সৎকুলসম্পন্না যুবতী ভার্য্যা, পিতা মাতা, আপনার তপস্যা, সংযম, জ্ঞান সব বিসর্জ্জন করত সেই শূদ্রাণীর পাদমূলে আশ্রয় নিলেন। তার সন্তোষের জন্য পৈতৃক অর্থাদির দ্বারা যত্ন কর্তে লাগলেন।
এমনও হয়?
হয় বৈকি। মানুষের কখন কি অবস্থা এসে উপস্থিত হবে কে তা বল্তে পারে। তারপর সেই দুশ্চরিত্রা শূদ্রাণীর সংসর্গে তাঁর সমস্ত সদ্গুণ নষ্ট হ’য়ে গেল। তিনি যে ব্রাহ্মণ এ স্মৃতি পর্য্যন্ত থাক্লো না। একে একে শূদ্রাণীর গর্ভে তাঁর দশটি পুত্র জন্মগ্রহণ কর্লো। সংসার প্রতিপালনের জন্য জুয়াখেলা, চুরি, লোককে বঞ্চনা ইত্যাদি অসদ্ উপায় অবলম্বন কর্লেন।
কোন দেশে শাস্ত্রজ্ঞানসম্পন্ন, মৃদুপ্রকৃতি, সৎস্বাভাবান্বিত, সদাচারী, ক্ষমা গুণের আধার, জিতেন্দ্রিয়, ব্রতপরায়ণ, সত্যবাদী, মন্ত্রতত্ত্ব-বেত্তা, পিতৃমাতৃভক্ত, শৌচাচার-বিশিষ্ট, একজন ব্রাহ্মণ বাস কর্তেন।
তিনি অহঙ্কারবিহীন হ’য়ে গুরু অগ্নি অতিথি ও বৃদ্ধ প্রভৃতির সেবানিরত ও প্রাণীমাত্রেরই সুহৃদ, সাধু ও মিতবাক্ ছিলেন। একদিন পিতার আজ্ঞায় বনে গিয়ে ফল পুষ্প সমিধ্ কুশ নিয়ে ফির্ছেন এমন সময় পথে মদ্যপানে মত্ত এক শুদ্র ও শূদ্রাণী ক্রীড়াসক্ত দেখ্লেন। তাদের বস্ত্রাদি যথাস্থানে ছিল না। সেই মাতাল শূদ্র ব্রাহ্মাণের সুমুখেই শূদ্রাণীকে আলিঙ্গন ক’রে হাস্য পরিহাস ক্রীড়া কৌতুক কর্তে লাগলো। তাদের এ অবস্থা দেখে ব্রাহ্মণ যুবকের মন চঞ্চল হ’য়ে উঠ্লো। তিনি জ্ঞান ও ধৈর্য্যের দ্বারা চঞ্চল চিত্তকে শান্ত কর্বার যথেষ্ট চেষ্টা কর্লেন, কিন্তু কিছুতেই মনকে সেই শূদ্রাণীর চিন্তা হ’তে প্রতিনিবৃত্ত করতে পার্লেন না। তখন সৎকুলসম্পন্না যুবতী ভার্য্যা, পিতা মাতা, আপনার তপস্যা, সংযম, জ্ঞান সব বিসর্জ্জন করত সেই শূদ্রাণীর পাদমূলে আশ্রয় নিলেন। তার সন্তোষের জন্য পৈতৃক অর্থাদির দ্বারা যত্ন কর্তে লাগলেন।
এমনও হয়?
হয় বৈকি। মানুষের কখন কি অবস্থা এসে উপস্থিত হবে কে তা বল্তে পারে। তারপর সেই দুশ্চরিত্রা শূদ্রাণীর সংসর্গে তাঁর সমস্ত সদ্গুণ নষ্ট হ’য়ে গেল। তিনি যে ব্রাহ্মণ এ স্মৃতি পর্য্যন্ত থাক্লো না। একে একে শূদ্রাণীর গর্ভে তাঁর দশটি পুত্র জন্মগ্রহণ কর্লো। সংসার প্রতিপালনের জন্য জুয়াখেলা, চুরি, লোককে বঞ্চনা ইত্যাদি অসদ্ উপায় অবলম্বন কর্লেন।
‘শ্রী ওঙ্কারনাথ-রচনাবলী’ (৩য় খণ্ড) থেকে
( বর্তমান )
04th September, 2020
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন