বুধবার, ২২ জুলাই, ২০২০

কি সব কি লেখেন, বুঝতেও পারি না !

প্রণব কুমার কুণ্ডু



















কি সব কি লেখেন, বুঝতেও পারি না !


মেহেরৌলি
দিল্লি
কাঠফাটা দুপুরের রোদে চলেছি কুতুব মিনার দেখতে। যখন পৌঁছলাম তখন দুপুর প্রায়। রোদের তেজ বেড়েছে আরো।
একটু দূরে থেকেই কুতুব মিনারের কৌণিক নকশার চুড়োটা দেখা যাচ্ছে। বাস নামিয়ে দিল আমরা চুড়ো নজরে রেখে হাঁটা শুরু করলাম।
একটি বড় গেটের মত পেরোতেই মূল কমপ্লেক্সে ঢুকে পড়লাম। এই খিলান ধরনের গেট বানিয়েছিল #শেরশাহ সামনে সোজা পেলাম দিল্লির বিখ্যাত লোহার স্তম্ভ। যা আজ অব্দি মরচের মুখ দেখেনি। কি সুন্দর আর একদম মসৃন পুরোটা। উপরে চৌকো কিছু বক্সের মত নকশা সাথে রয়েছে ফুলের মত নকশা।
এখন দেখছি পিলারটি ঘিরে রেলিং বাঁধিয়ে দেওয়া হয়েছে।
যখন ছোট ছিলাম তখন আরেকবার এসেছিলাম মা বাবার সাথে তখন দেখেছি অনেক যাত্রী পেছন ফিরে দুহাত পেছনে দিয়ে পিলারটি ঘিরে ধরার চেষ্টা করছে। দেখাদেখি আমরাও চেষ্টা করলাম। হাতে হাত মিলে গেলে নাকি সৌভাগ্য দেবে এই পিলার। একটা মজার ব্যাপার এই গরমেও পিলারটি কিন্তু গরম নয় মোটেই, কেন কে জানে।
এবারে চললাম কুতুব মিনারের দিকে। মিনারের নীচে পৌঁছলাম। লাল পাথরের তৈরি বিশাল মিনার। মিনারের গায়ে অদ্ভুত রকমের ডিজাইনে কুরানিক সব শ্লোক লেখা। নিচটা যতটা চওড়া উপরে ক্রমশ একটু সরু হয়ে গেছে। ভেতরে ঢুকে দেখলাম বেশ চওড়া আর সিঁড়ি চলে গেছে উপরে।
কিন্তু এখন কাজ চলছে তাই মিনারে উঠা বারণ।
নিচ থেকে উপরে তাকিয়ে দেখলাম, যদ্দুর দৃষ্টি যায় মিনার উঠে গেছে উপরে। প্রতিটি তলার উপরে কৌণিক ফুলের মত নকশা আসছে নজরে।
চললাম পাশের মসজিদ দেখতে। #কুবত_উল_ইসলাম নাম মসজিদের। বর্তমানে শুধু কাঠামোটুকু রয়েছে।
আশেপাশে দেখলাম বেশ কিছু কবর রয়েছে। ছোট বড় মাঝারি সবরকম 5 খানি কবর রয়েছে, তার মধ্যে একটি #ইলতুতমিসের আরেকটি #আলাউদ্দিন_খিলজির
কবর আর মসজিদ সবই ভেঙে ভেঙে পড়ছে। তবে যা রোদ্দুর বেশিক্ষণ ঘুরাঘুরি করা গেল না। তাই একটা ছায়া মত জায়গা খুঁজে নিয়ে ছবি তুলে নিলাম বেশ কিছু।
নজর দিলাম এবারে মসজিদের পিলারগুলোয়। সবেতেই দেখি নানান কারুকাজ। ঘন্টা ওম মূর্তি সবই রয়েছে। পিলারের উপরে দেখি অপ্সরা নাগ হাতি ইত্যাদি পরিস্কার দৃশ্যমান। রয়েছে গণেশ দেবতার মূর্তিও।
বুঝলাম এটিও আরেকটি ইসলামিক স্থাপত্য যা কোন হিন্দু মন্দির নষ্ট করে একটু এদিক ওদিক করে মসজিদ বানানো হয়েছে।
ছবি তুলতে যাচ্ছিলাম একজন টুপি দাড়িওয়ালা লোক নিষেধ করল, বলল ছবি তোলা নিষেধ। বুঝলাম এই লোকটি এখানে রয়েছে যাতে কেউ ছবি না তোলে।
ঘুরতে ঘুরতে চলে এলাম ASI board এর কাছে। অদ্ভুত ব্যাপার এ কি লেখা রয়েছে। পরিষ্কার লেখা রয়েছে 27 টি মন্দির ভেঙে তৈরি এই কুতুব মিনার কমপ্লেক্সের মসজিদ।
"World Heritage Series: Qutub Minar and adjoining monuments",--- Quwwat-ul-Islam Mosque in "Qutub Complex" was raised over remains of temple & constructed from materials taken from 27 demolished temples.
অর্থাৎ
কুতুব কমপ্লেক্স এর সৌধ সহ কুয়াত উল ইসলাম প্রার্থনাগৃহ আসলে গড়ে উঠেছে মন্দিরের ধ্বংসাবশেষে! এবং তৈরিও হয়েছে নাকি ২৭ টি ধ্বংস করা মন্দিরের মালমশলা দিয়ে...
আমাদের ধর্ম নিরপেক্ষ শান্তির দেশে এসব কি অশান্তির কথাবার্তা। এরম ভাবে কেউ বলে নাকি সত্যি কথা।
.
লুকোন ইতিহাস:
মনে রাখতে হবে ঘরির আক্রমণের সময় ছিল 1192 সাল অর্থাৎ ইসলামের আগমনের হয়েছে মাত্র 400 বছর। এই 400 বছরে কোন শিল্পশৈলী গড়ে উঠে না।
আজও আমরা যা দেখি ইসলামিক স্থাপত্য শিল্পের নামে তা আসলে প্রাচীন পার্সি আর গান্ধার শিল্পকলার সংমিশ্রণ।
ঘটনার শুরু কিংবদন্তি রাজা 32 সিংহাসন খ্যাত বিক্রমাদিত্যর সময়ে।
ওনার সভায় #মহাকবি_কালিদাস, #বররুচি, #বরাহ_মিহির ইত্যাদি গুণী ব্যাক্তিত্বদের নিয়ে গঠিত হয়েছিল নবরত্ন সভা।
নবরত্ন সভার অন্যতম সেরা জ্যোতিষী ছিলেন বরাহ মিহির।
এই বরাহ মহিরের মূল গবেষণাগার ছিল এইখানে।
বর্তমান দিল্লির #মেহেরৌলি নামক অঞ্চলে অবস্থান এই মিনারের। বরাহ মিহির যিনি ছিলেন রাজা বিক্রমাদিত্যর নবরত্ন সভার অন্যতম বিখ্যাত জ্যোতিষী, তার নামানুসারে এই জায়গার নামকরণ।
মেহেরৌলি অর্থাৎ মিহিরের অনুগামীগন।
মিহিরের জ্যোতিষ কাজের সুবিধার্থে #রাজা_বিক্রমাদিত্য তৈরি করে দেন এই স্তম্ভ ও মন্দিরগুলি।
এখানে #মিহির তার শিষ্যদের নিয়ে করতেন জ্যোতিষ চর্চা।
আসলে
কুতুব মিনার নামে কুতুব মিনার হলেও এটি একটি #ধ্রুব_স্তম্ভ। ধ্রুব স্তম্ভ তখন বানানো হত জ্যোতিষ গণনার জন্য। মিনারের ছাদের উপর রয়েছে 27 টি পদ্ম পাপড়ি গঠন। 27 টি পাপড়ি নির্দেশ করছে 27টি নক্ষত্র কে।
এই 27 টি নক্ষত্রের অবস্থানের জন্য স্তম্ভ ঘিরে বানানো হয়েছিল 27 টি মন্দির।
যারা জ্যোতিষ শাস্ত্র চর্চা করেন তারা জানেন 27 টি নক্ষত্রে চন্দ্রের অবস্থানের উপর বিচার করা হয় জন্ম নকশা বা ঠিকুজি।
পরেরদিকে #জৈনধর্ম প্রচার পেলে কিছু কিছু মন্দিরে জৈনরা তাদের মত করে পুজো পাঠ শুরু করে।
এরপরে
দিল্লির তোমর বংশের রাজা জয়সিং এর সময়ে এই জায়গাটা যায় ওনার দখলে। ওনার কন্যা #সংযুক্তার খেলার প্রার্থনার পুজোর জায়গা ছিল এটি। এই খানে পূর্ণিমা অমাবস্যা ইত্যাদি দেখে দিনক্ষণ অনুযায়ী পুজো দিতেন সংযুক্তা।
পরে স্বয়ম্বর সভাও আয়োজন হয় এখানেই, যেখান থেকে রাজা #পৃথ্বীরাজ_চৌহান ওনাকে হরণ করে নিয়ে যান।
জেনে রাখা ভালো:
#তোমর_রাজা_অনঙ্গপাল 11 শত শতাব্দীর দিকে লালকোট নামক স্থানে নতুন শহর প্রতিষ্ঠা করেন নতুন নাম দেন #ধিল্লিকাপুর। এই ধিল্লিকাপুর থেকে পরে দিল্লি নামকরণ হয়েছে। তখন তিনি বিখ্যাত এই লৌহস্তম্ভ টি নিয়ে আসেন মধ্যপ্রদেশ থেকে।
লৌহ স্তম্ভের উপরে লিখিত একটি শ্লোক থেকে একথা জানা যায় যে মধ্যপ্রদেশের কোন এক বিষ্ণু মন্দিরে ছিল এই গড়ুর স্তম্ভটি, বানানো হয়েছিল #দ্বিতীয়_চন্দ্রগুপ্ত রাজার আমলে।
1600 বছরের পুরোন এই স্তম্ভ প্রায় 23 ফুট উঁচু। নিচের দিকে 17 ইঞ্চি আর উপরে সরু হয়ে 12 ইঞ্চি চওড়া।
মধ্যপ্রদেশ থেকে আনা এই স্তম্ভ তিনি স্থাপন করেন বিষ্ণু মন্দিরের সামনে।
বর্তমান মসজিদ সেই বিষ্ণু মন্দিরের জায়গায় তৈরি হয়েছিল বলে মনে করা হয়।
এখনো তোমর_বংশের কিছু কিছু কাজ দেখা যায় কুতুব মিনার সংলগ্ন অঞ্চলে।
.
মহম্মদ_ঘুরিকে 17 বার হারানোর পরেও যখন #পৃথ্বীরাজ_চৌহান পরাস্ত হন একবার ঘুরির কাছে।
সম্মুখ যুদ্ধে বারবার হেরে গিয়ে গভীর রাতে আক্রমন করে ঘুরি। নিদ্রিত সৈন্যদের বিনা বাধায় হত্যা করে জীবন্ত বন্দি করতে পারে পৃথ্বীরাজকে।
ঘুরি তাকে ইসলাম গ্রহণের কথা বলে। রাজি না হলে রাজত্ব লুঠ করে জোরপূর্বক বহু প্রজাকে খুন ধর্ষণ করে ইসলামে পরিবর্তন করা হলেও পৃথ্বীরাজকে ইসলাম গ্রহণ করাতে পারে না।
পৃথ্বীরাজকে জয় না করতে পেরে সংযুক্তার সম্মান হানি করে ধর্ষণ করে #মহম্মদ_ঘরি এরপর গণধর্ষণের জন্য ছেড়ে দেয় সৈন্যদের মাঝে।
আবার অন্য একটি মতে সংযুক্তা আগেই জহর ব্রত পালন করে নিজের দেহ পুড়িয়ে ফেলেন যাতে কেউ তাকে স্পর্শ না করতে পারে।
তবে সেই রাতের পর থেকে সংযুক্তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায় নি।
এতসবের পরেও ধর্ম পরিবর্তনে রাজি না হলে পৃথ্বীরাজের দুচোখে গরম রড ঢুকিয়ে উপড়ে ফেলা হয়।
“we have conquered India with great difficulty, after the killing of Prithviraj Chauhan. We have backstabbed Prithviraj Chauhan and killed him, and Prithviraj Chauhan’s lovely wedded wife will now share bed with Mohammed Gori”
হম্ম উপরের কথাগুলো লেখা রয়েছে মঈনুদ্দিন চিস্তির জীবনীতে।
তারপর বর্তমান ধ্রুব স্তম্ভ যেখানে সেখানে মঈনুদ্দিন চিস্তির নির্দেশে সেটিকে শুরু হয় মিনারে পরিবর্তন। কারন এই জায়গাটি প্রিয় জায়গা ছিল সংযুক্তা আর পৃথ্বীরাজ দুজনেরই।
সাথে চলে মন্দিরগুলি ভেঙে মসজিদ তৈরির তোড়জোড়।
কারন পৃথ্বীরাজের সাথে জড়িয়ে থাকা সমস্ত স্মৃতি মন্দিরগুলোকে নষ্ট করে, অবদমিত করে, নর রুপি পিশাচ ভুলতে চাইছিল তার হারের জ্বালা, সাথে পৃথ্বীরাজকে জোরপূর্বক ইসলাম গ্রহণ করানোর পৈশাচিক কাজেও সে ছিল অসমর্থ।
এক আধ বার নয় হেরেছিল পরপর পুরো 17 বার।
'ভুল হয়ে গেছে ক্ষমা করে দিন'- বলে ছাড় ও পেয়েছিল মহম্মদ ঘরি প্রতিবার।
এমনকি এও শোনা যায়- শেষবারের যুদ্ধে হেরে সে আল্লার নামে কোরানের নামে শপথ করেছিল আর কখনো ফিরবে না ভারতে...
ভুলেছিল পৃথ্বীরাজ চৌহানের সেইসব দয়ার কথা।
তবে
মহম্মদ ঘুরির এই হারের জ্বালায় নিয়মিত ভাবে প্রতিশোধের আগুন লাগিয়ে গেছে #মঈনুদ্দিন_চিস্তি, যাতে তার ভারতে ইসলাম প্রচারের পথ সুগম হয়।
'The conqueror entered the city and its vicinity was freed from idols and idol-worship; and in the sanctuaries of the images of the gods, mosques were razed by the worshippers of the one God.'
— Quṭb al-Dīn Aibak's chronicler,
Hasan Nizami,
Taj-ul-Maasir
সমগ্র জীবনীতে প্রায় 7 লক্ষ হিন্দুকে জোর করে ধর্মান্তরিত করে মঈনুদ্দিন চিস্তি।
মঈনুদ্দিন চিস্তির প্ল্যান অনুযায়ী মন্দিরগুলি ভেঙে বানানো হয় মসজিদ আর পাশাপাশি বানানো চলতে থাকে ধ্রুব স্তম্ভকে কুতুব মিনারে পরিবর্তনের কাজ। উপরে চাপানো হয় ইসলামিক শ্লোক খোদিত পাথর। কিন্তু এত সুক্ষ কাজ চাপতে তো সময় লাগবেই।
তাই শেষ অব্দি আর ধৈর্য্য না ধরতে পেরে লুটপাট আর ধর্ষণ করে মন শান্তি হলে মহম্মদ ঘুরি নিজে ফিরে যায় আফগানিস্তান, সাথে নিয়ে যায় যুদ্ধ জয়ের জীবন্ত স্মারক হিসেবে অন্ধ রাজা পৃথ্বীরাজকে।
দ্বায়িত্ব দিয়ে যায় এক সেনাপতি #কুতুবউদ্দিন_আইবক এর উপরে। কুতুবউদ্দিন আইবক প্রথম জীবনে ক্রীতদাস ছিল পরে সে হয় সেনাপতি।
সাথে দেখভালের জন্য আর ইসলাম প্রচারের জন্য রয়ে যায় মঈনুদ্দিন চিস্তি।
এরপরে কুতুব মিনারে পরিবর্তনের বাকি কাজ সমাপ্ত করতে লেগে পড়ে কুতুবউদ্দিন আইবক, যে নিজেও ছিল মঈনুদ্দিন চিস্তির আরেক শিষ্য।
সম্পন্ন করে মন্দিরগুলি ভেঙে মসজিদ বানানোর কাজ, নাম দেয় কুৱত উল ইসলাম মস্ক।
এরপর শুরু হয় ধ্রুব স্তম্ভ কে পরিবর্তনের কাজ। বিভিন্ন মন্দির সৌধ ভেঙে মাল মশলা জোগাড় করে শুরু হয় প্রতিলেপনের কাজ। যা পুরোপুরি সম্পন্ন করতে লেগেছিল প্রায় তিন পুরুষ।
হম্ম তিন পুরুষ লেগেছিল ধ্রুব স্তম্ভের উপরের কাজ সব ঢেকে দিয়ে এটিকে মিনারে পরিবর্তন করতে।
এদিকে গজনীতে মহম্মদ ঘরির কাছে দীর্ঘদিন বন্দি থাকেন পৃথ্বীরাজ। তারপর একদিন পৃথ্বীরাজের অনুগামী #চাঁদ_বিলাবল একদিন ঘরির সাথে দেখা করে বলেন যে রাজা পৃথ্বীরাজ #শব্দভেদী_বিদ্যা জানেন, অর্থাৎ শব্দ অনুসারে তির মারতে পারেন।
সেই অনুযায়ী একদিন রাজসভায় তির খেলার আয়োজন করা হয়। মহম্মদ ঘরি নির্দেশ দেয় কোথায় মারতে হবে তির আর চাঁদ বিলাবল পাশে দাঁড়িয়ে রাজা কে বলে সাংকেতিক ভাষায় ঘরির অবস্থান।
"চার বাঁশ, চবিশ গজ, আঙ্গুল অষ্ট প্রমান,
তা উপর সুলতান হেয়, চুকে মত চৌহান"...
এই ছিল সেই অবস্থানের পরিভাষা।
ঘরির গলার আওয়াজ আগেই শুনেছেন পৃথ্বীরাজ। সেই অনুযায়ী ছোড়েন তির, মহম্মদ ঘরির মুখের মধ্যে ঢুকে মাথা ভেদ করে বেরিয়ে যায় সেই তির।
চাঁদ বিলাবল আর পৃথ্বীরাজ একে অন্যকে ছুরি মেরে খুন হন।
পৃথ্বীরাজের বয়েস ছিল তখন মাত্র 26 বছর।
এরপরে
ঘুরির প্রিয় মসজিদের ভেতর কবর দেওয়া হয় মহম্মদ ঘুরিকে। ঘুরির অনুগামীরা পৃথ্বীরাজ আর চাঁদ বিলাবলের শবদেহ কবর দেয় ঘুরির প্রিয় মসজিদের দরজায়। কোন অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া পর্য্যন্ত করা হয়না। শুধুমাত্র শরীর ফেলে মাটি চাপা দেওয়া হয়।
কবরের উপরে লেখা রয়েছে-
"এখানে শুয়ে রয়েছে দিল্লির কাফির রাজা"
এমনভাবে তাদের কবর দেওয়া হয় যাতে মসজিদে নামাজ পড়ার সময় নামাজির দল পায়ে মাড়িয়ে ঢুকতে পারে মসজিদে।
নামাজ শেষে বেরোবার সময় থুতু ফেলে কবরের শত্রুর লাশের উপর।
সেই আক্রোশ শোনা যায় আজও চলছে। আজও চলছে লাথি মেরে ঢোকা থুতু দিয়ে বেরিয়ে আসা।
এরপরে শুরু হয় পৃথ্বীরাজ চৌহানের কুলদেবী মন্দির যা ছিল #আজমিরে সেটিকে দরগায় পরিবর্তনের কাজ। পরবর্তীতে মঈনুদ্দিন চিস্তি মারা গেলে সেই দরগায় কবর দেওয়া হয়।
এইভাবে তিন জায়গায় (আজমের গজনী আর কুতুব মিনার) এক সাহসী আর স্বাভিমানি রাজা আর একজন সুন্দরী পতিনিষ্ঠ প্রেমিকার মত প্রেমিক যুগলের উপরে আক্রোশ দেখিয়ে ইসলামের স্থাপনা চলেছে ভারতের বুকে। আর তাদের প্রেমের নিদর্শনের সাক্ষী নষ্ট করে ইসলামিক আগ্রাসনের ইতিহাস বলছে কুতুবমিনার তৈরি করেছিল কুতুবউদ্দিন আইবক।
.
🖋️ Prithwis Sen✍️
Note:
শের সিং রানা যিনি ফুলনদেবী খুনের অন্যতম অভিযুক্ত, তিনি তিহার জেলে থাকাকালীন সুভাষ ঠাকুরের কাছে শোনেন যে পৃথ্বীরাজ চৌহানের কবর রয়েছে গজনীতে। মনস্থির করেন যে সেই কবরের মাটি নিয়ে এসে ভারতে ওনার অন্ত্যেষ্টি করবেন।
তিনি তিহার জেল থেকে পালিয়ে যান। নকল পাসপোর্ট তৈরি করে দশমাস পরে যান আফগানিস্তান। সেখানে থাকেন তিনমাস।
অনেক খোঁজ করে শেষে সন্ধান পান কবরের। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে তিনি একদিন পৃথ্বীরাজের কবর খুঁড়ে মাটি সংগ্ৰহ করে ফিরে আসেন 2005 সালে।
সেই মাটি নিয়ে বর্তমান #এটা শহরে অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া সম্পন্ন করেন রাজা পৃথ্বীরাজ চৌহানের।
অবশেষে 800 বছর পরে পৃথ্বীরাজ চৌহান তার অন্ত্যেষ্টির অধিকারটুকু প্রাপ্ত হন।
_____
#কলমে P Sen



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন