'বর্তমান'-এর খবর
মোদির বারাণসীতে দূষণের ছোবল,
মাস্কে মুখ ঢাকলেন স্বয়ং ভগবান
সিগরা (বারাণসী), ৬ নভেম্বর: দূষণের হাত থেকে বাঁচতে মাস্কে মুখ ঢাকলেন স্বয়ং ভগবানও! এই নিয়ে দেবভূমি বারাণসীতে এখন হইচই কাণ্ড। তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া। ভাইরাল হল মাস্ক পরিহিত দেবদেবীর ছবিও। দেবদর্শনে গিয়ে খানিক হোঁচটও খেতে হচ্ছে পুণ্যার্থীদের। শুধু কালীকে নিয়ে খানিক বিপাকে পড়েছেন বারাণসীর পুরোহিতরা। দূষণরোধী মাস্কে মুখ ঢাকতে পারছেন না কালী। জিভ বাদ রেখে তো আর মুখ ঢাকা যায় না! তাই অনেক চেষ্টার পর পিছু হটতে বাধ্য হয়েছেন পুরোহিতরা। আপাতত মাস্ক ছাড়াই শিব-দুর্গার সঙ্গে মন্দিরে বিরাজ করছেন কালী। তার চেয়েও বড় কথা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লোকসভা কেন্দ্র বারাণসী। সেখানেই কিনা দূষণ-বিষে আক্রান্ত শিব-দুর্গা থেকে লক্ষ্মী-গণেশ! মায় সাঁইবাবাও! যা নিয়ে নেটিজেনদের তীর্যক সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে মোদিকে।
দীপাবলির রাতে দেদার বাজি পুড়েছে দেবভূমে। তার রেশ চলছেই। তার উপর গত এক সপ্তাহে বাতাসে বেড়েছে ধূলিকণা ও নাড়া পোড়ানোর ধোঁয়া। ফলে গোটা উত্তর ভারতের সঙ্গে বারাণসীর আকাশও ভারী হয়েছে দূষণে। দিল্লিবাসীর মতোই মাস্ক পরে ঘুরতে হচ্ছে কাশীর বাসিন্দাদের। সেক্ষেত্রে দেবতারাই বা কেন বাদ থাকবেন? সেই কারণেই বারাণসীর সিগরাতে অবস্থিত শিব-পার্বতীর মন্দিরে অধিষ্ঠাত্রী সব বিগ্রহের মুখেই দুষণরোধী মাস্ক পরিয়ে দিয়েছেন পুরোহিত ও ভক্তরা। মন্দিরের পুরোহিত হরিশ মিশ্র বুধবার বলেছেন, ‘মানুষের মতোই আমাদের দেবদেবীও অনুভূতি প্রবণ। মরশুম অনুযায়ী তাঁদের অনুভূতির তারতম্য ঘটে। আনন্দ, দুঃখ-বেদনা, স্বাচ্ছন্দ্যবোধও দেবতারা বুঝতে পারেন। তাই শীতকালে উলের পোশাক দিয়ে দেবতাকে ঢেকে দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। গ্রীষ্মেও তাঁদের স্বাচ্ছন্দ্য দিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এবার দূষণের হাত থেকে রেহাই দিতে দেবদেবীর মুখে মাস্ক পরনোর সিদ্ধান্ত। দেবতাদের ভালোমন্দের উপর নজর রাখাও সেবার মধ্যেই পড়ে।’
শিব-পার্বতীর মন্দিরে একাধিক দেবদেবীর বিগ্রহ রয়েছে। লক্ষ্মী, গণেশ, সরস্বতী থেকে কালী। আবার রয়েছে সাঁইবাবার মূর্তিও। এদিন প্রায় প্রতিটি বিগ্রহের মুখ ঢাকা ছিল মাস্কে। তবে কালীর মাস্ক পরাতে গিয়ে ব্যর্থ হন পুরোহিতরা। মিশ্র জানিয়েছেন, ভক্তদের অনুরোধ মেনে কালীর মুখেও মাস্ক পরানোর চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু কালীর জিভ বেরিয়ে থাকায় তা আর সম্ভব হয়নি। পরে ঠিক করা হয় মাস্ক ছাড়াই কালী বিরাজ করবেন মন্দিরে। এরই পাশাপাশি, বারাণসীর দূষণ বৃদ্ধি নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মিশ্র। তিনি বলেছেন, ‘আমরা প্রত্যেকেই আজকের এই দূষণের জন্য কমবেশি দায়ী। এই তো দীপাবলির রাতে কী হারে যে বাজি পুড়েছে, তার কোনও ইয়ত্তা নেই! নিজেরা সচেতন না হলে দূষণ কিন্তু ছেড়ে কথা বলবে না।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন