পুলস্ত্য ঋষি
প্রণব কুমার কুণ্ডু
পুলস্ত্য ঋষি, সপ্তর্ষি মণ্ডলের অন্তর্গত একজন স্বনাম বিখ্যাত ঋষি।
পুলস্ত্য ঋষি, ব্রহ্মার দশ মানসপুত্র তথা দশ প্রজাপতির অন্যতম।
পুলস্ত্য ঋষি, সুমেরু পর্বতের শিখরের পাশে, তৃণবিন্দু নামের জনৈক মুনির অশ্রমের কাছে, একমনে তপস্যা অভ্যাস করতেন।
সেখানে স্বর্গের অপ্সরাগণ আর মর্ত্যের ঋষিকন্যারা একসাথে মিলেমিশে, সময়ে সময়ে, এবং সময়ে-অসময়ে, নাচা-গানা-বাজনা ইত্যাদি করে, নানান ধরণের হৈচৈ হুল্লোড় করত।
তাতে পুলস্ত্য ঋষির তপস্যায় বিঘ্ন ঘটত। ঋষি বিরক্ত হতেন।
ঋষি তখন ঐসব অপ্সরাদের এবং ঋষিকন্যাদের এই বলে সতর্ক করে সাবধান করে দেন, যে, এরপরে যাকে বা যাদের ঋষিজির সামনে দেখা যাবে, নাচ গান বাজনা ইত্যাদি করবে, হট্টগোল করবে, ঋষিজির মনঃসংযোগে বাধার সৃষ্টি করবে, তারা এমনি এমনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়বে !
ফলে ঐসব অপ্সরারা এবং ঋষিকন্যারা ওখান থেকে পালিয়ে গেল। ভয়ে ওরা আর আসত না। ওরা আসা বন্ধ করে দিল।
ঘটনাক্রমে আনাবধানবশত, বেড়াতে বেড়াতে, মনের অজান্তে, তৃণবিন্দু মুনির এককন্যা, হবির্ভু যার নাম, একদিন ওখানে এসে হাজির হল, এবং পুলস্ত্য মুনির দৃষ্টিগোচরে পড়ে গেল।
ফলে হবির্ভূ গর্ভবতী হয়ে পড়ল !
সেটা কি এমনি এমনি হয়ে গেল, না পুলস্ত্য মুনি কামার্ত হয়ে হবির্ভূর সাথে সঙ্গম ক্রিয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন ! তা কিন্তু ঠিক বোঝা গেল না !
এরপরে তৃণবিন্দু মুনির বিশেয অনুরোধ ক্রমে, পুলস্ত্য মুনি ঐ কন্যাটিকে সাগ্রহে বিবাহ করেন।
ঐ গর্ভ থেকে, পুলস্ত্য মুনির বিশ্রবা নামক পুত্রের জন্ম হয়।
এই বিশ্রবা মুনি রাবণদের ( রাবণ, কুম্ভকর্ণ, বিভীষণ, শূর্পণখা, এবং কুবেরের ) পিতা।
দেখুন তৃণবিন্দু মুনির কন্যাকে, পুলস্ত্য মুনি, প্রেম ছাড়া কিভাবে বিবাহ করেছিলেন !
[ প্রাচীন সিংঘল দ্বীপের ( বর্তমানে শ্রীলংকার ) পেলোনারুয়াতে পুলস্ত্য মুনির একটি গ্রানাইট পাথর নির্মিত মূর্তি পাওয়া গেছে। ]
পুলস্ত্য মুনির মূর্তি { উইকিপিডিয়া }
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন