কলকাতায় জৈন মন্দির
ফেসবুক থেকে শেয়ার করেছেন প্রণব কুমার কুণ্ডু
প্রণব কুমার কুণ্ডু
পরেশনাথ জৈন মন্দির (বদ্রিদাস টেম্পল স্ট্রিট, কলকাতা)।
১৯৫৯ সালে তোলা একটি দুর্লভ রঙ্গীন ছবি (vintage fuji colour print)।
১৯৫৯ সালে তোলা একটি দুর্লভ রঙ্গীন ছবি (vintage fuji colour print)।
রানা চক্রবর্তী
পুরানো সেই দিনের কথা: পরেশনাথ জৈন মন্দির (বদ্রিদাস টেম্পল স্ট্রিট, কলকাতা)।
১৯৫৯ সালে তোলা একটি দুর্লভ রঙ্গীন ছবি (vintage fuji colour print)।
১৯৫৯ সালে তোলা একটি দুর্লভ রঙ্গীন ছবি (vintage fuji colour print)।
বদ্রিদাস টেম্পল স্ট্রিটে অবস্থিত এই মন্দিরটি শহরের অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
১৮৬৭ সালে শেঠ বদ্রিদাস নামে জনৈক মারোয়াড়ি শ্রীমল জৈন এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন।
মন্দিরের প্রতিষ্ঠাকার্য সম্পন্ন করেছিলেন শ্রী কল্যাণসুরীশ্বরজি মহারাজ।
১৮৬৭ সালে শেঠ বদ্রিদাস নামে জনৈক মারোয়াড়ি শ্রীমল জৈন এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন।
মন্দিরের প্রতিষ্ঠাকার্য সম্পন্ন করেছিলেন শ্রী কল্যাণসুরীশ্বরজি মহারাজ।
পরেশনাথ মন্দির চত্বরে মোট চারটি মন্দির রয়েছে:
১) শীতলনাথজি মন্দির (মূলনায়ক: শীতলনাথ ভগবান)
২) চন্দ্রপ্রভুজি মন্দির (মূলনায়ক: চন্দ্রপ্রভুস্বামী ভগবান)
৩) মহাবীর স্বামী মন্দির (মূলনায়ক: মহাবীর স্বামী)
৪) দাদাওয়াড়ি (জৈন আচার্য জিন দত্ত কুশল সুরির পদচিহ্ন)
জৈনধর্ম প্রাচীন ভারতে প্রবর্তিত একটি ধর্মমত।
বর্তমানে বিশ্বের নানা দেশে এই ধর্মমতাবলম্বীদের দেখা যায়।
জৈনধর্মের মূল বক্তব্য হল সকল জীবের প্রতি শান্তি ও অহিংসার পথ গ্রহণ।
জৈন দর্শন ও ধর্মানুশীলনের মূল কথা হল দৈব চৈতন্যের আধ্যাত্মিক সোপানে স্বচেষ্টায় আত্মার উন্নতি।
যে ব্যক্তি বা আত্মা অন্তরের শত্রুকে জয় করে সর্বোচ্চ অবস্থা প্রাপ্ত হন তাঁকে জিন (জিতেন্দ্রিয়) আখ্যা দেওয়া হয়।
প্রাচীন ধর্মগ্রন্থগুলিতে জৈনধর্মকে শ্রমণ ধর্ম বা নির্গ্রন্থদের ধর্মও বলা হয়েছে।
কথিত আছে, তীর্থঙ্কর নামে চব্বিশ জন মহাজ্ঞানী কৃচ্ছ্বসাধকের একটি ধারা পর্যায়ক্রমে জৈনধর্মকে পুনরুদ্ধার করেছিলেন।
এঁদের মধ্যে ত্রয়োবিংশতি তীর্থঙ্কর ছিলেন পার্শ্বনাথ (খ্রিষ্টপূর্ব নবম শতাব্দতে) ও সর্বশেষ তীর্থঙ্কর ( ২৪তম ) ছিলেন মহাবীর (খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দতে)।
আধুনিক বিশ্বে জৈনধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম হলেও এই ধর্ম বেশ প্রভাবশালী।
ভারতে জৈন ধর্মবলম্বীদের সংখ্যা প্রায় ১০,২০০,০০০।
এছাড়া উত্তর আমেরিকা, পশ্চিম ইউরোপ, দূরপ্রাচ্য, অস্ট্রেলিয়া ও বিশ্বের অন্যত্রও অভিবাসী জৈনদের দেখা মেলে।
বর্তমানে বিশ্বের নানা দেশে এই ধর্মমতাবলম্বীদের দেখা যায়।
জৈনধর্মের মূল বক্তব্য হল সকল জীবের প্রতি শান্তি ও অহিংসার পথ গ্রহণ।
জৈন দর্শন ও ধর্মানুশীলনের মূল কথা হল দৈব চৈতন্যের আধ্যাত্মিক সোপানে স্বচেষ্টায় আত্মার উন্নতি।
যে ব্যক্তি বা আত্মা অন্তরের শত্রুকে জয় করে সর্বোচ্চ অবস্থা প্রাপ্ত হন তাঁকে জিন (জিতেন্দ্রিয়) আখ্যা দেওয়া হয়।
প্রাচীন ধর্মগ্রন্থগুলিতে জৈনধর্মকে শ্রমণ ধর্ম বা নির্গ্রন্থদের ধর্মও বলা হয়েছে।
কথিত আছে, তীর্থঙ্কর নামে চব্বিশ জন মহাজ্ঞানী কৃচ্ছ্বসাধকের একটি ধারা পর্যায়ক্রমে জৈনধর্মকে পুনরুদ্ধার করেছিলেন।
এঁদের মধ্যে ত্রয়োবিংশতি তীর্থঙ্কর ছিলেন পার্শ্বনাথ (খ্রিষ্টপূর্ব নবম শতাব্দতে) ও সর্বশেষ তীর্থঙ্কর ( ২৪তম ) ছিলেন মহাবীর (খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দতে)।
আধুনিক বিশ্বে জৈনধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম হলেও এই ধর্ম বেশ প্রভাবশালী।
ভারতে জৈন ধর্মবলম্বীদের সংখ্যা প্রায় ১০,২০০,০০০।
এছাড়া উত্তর আমেরিকা, পশ্চিম ইউরোপ, দূরপ্রাচ্য, অস্ট্রেলিয়া ও বিশ্বের অন্যত্রও অভিবাসী জৈনদের দেখা মেলে।
জৈনরা প্রাচীন শ্রমণ অর্থাৎ, কৃচ্ছ্বসাধনার ধর্মকে আজও বহন করে নিয়ে চলেছেন।
ভারতের অপরাপর ধর্মমত, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তাঁর প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষিত হয়।
শিক্ষাক্ষেত্রে বৃত্তিদানের একটি প্রাচীন প্রথা জৈনদের মধ্যে আজও বিদ্যমান; এবং ভারতে এই সম্প্রদায়ের সাক্ষরতার হার অত্যন্ত উচ্চ।
শুধু তাই নয়, জৈন গ্রন্থাগারগুলি দেশের প্রাচীনতম গ্রন্থাগারও বটে।
ভারতের অপরাপর ধর্মমত, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তাঁর প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষিত হয়।
শিক্ষাক্ষেত্রে বৃত্তিদানের একটি প্রাচীন প্রথা জৈনদের মধ্যে আজও বিদ্যমান; এবং ভারতে এই সম্প্রদায়ের সাক্ষরতার হার অত্যন্ত উচ্চ।
শুধু তাই নয়, জৈন গ্রন্থাগারগুলি দেশের প্রাচীনতম গ্রন্থাগারও বটে।
মন্দিরটি আয়না, রঙ্গিন পাথর এবং কাঁচের মোজাইক শিল্প দিয়ে সুসজ্জিত। এর চারপাশে একটি সুন্দর বাগান রয়েছে। এটিতে কাঁচের মোজাইক শিল্প এবং ইউরোপীয় মূর্তির ব্লক রয়েছে। এখানকার শিল্পরুচিসম্মত সৌন্দর্যতা ও নির্মলতা সারা বিশ্বের পর্যটকদের আকর্ষিত করে। কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের হাজার হাজার পর্যটক শান্তির খোঁজে এই পবিত্র স্থানে ঘুরতে আসে।
কলকাতার পরেশনাথ জৈন মন্দিরটি প্রকৃতপক্ষে ৪-টি মন্দির প্রাঙ্গন নিয়ে গঠিত। প্রধান মঠটি দশম জৈন অবতার (ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি) শ্রী শীতলা নাথজী-কে উৎসর্গীকৃত। মন্দিরের প্রবেশ-পথটি সত্যিই দেখার মতো।
এখানে চারপাশে বিভিন্ন রকম ফুলসহ একটি ছোট জলপ্রবাহ রয়েছে, যা স্বর্গোদ্যানের অনুভূতি প্রদান করে। কলকাতার পরেশনাথ জৈন মন্দিরের উত্তর দিকে অভ্যর্থনা গৃহ ও একটি যাদুঘর রয়েছে। যদি আপনি এই মন্দিরের বারান্দায় পৌঁছতে চান তাহলে আপনাকে ১৩-টি মার্বেলের সিঁড়ি অতিক্রম করতে হবে।
কলকাতার এই পরেশনাথ জৈন মন্দিরের আরেকটি উল্লেখনীয় বৈশিষ্ট্য হল- ঘৃত- প্রজ্জ্বলিত একটি প্রদীপ যা কখনও নির্বাপিত হয় না। শ্রী শীতলা নাথজীর মন্দিরের দক্ষিণদিকে শ্রীচন্ড প্রভূজীদেবের মন্দির রয়েছে। এটি ১৮৯৫ সালে গণেশলাল কাপূরচাঁদ জহর নির্মাণ করেছিলেন। আপনি আপনার ডান দিকে অন্য আরও একটি মন্দির দেখতে পাবেন যেখানে দাদাজি গারু এবং কুশলজি মহারাজ পূজিত হন। উত্তর দিকের চতুর্থ মন্দিরটি মহাবীরকে উৎসর্গীকৃত।
মন্দিরে রয়েছে আরও অনেক কিছু। শ্বেতমর্মরের বিগ্রহ, ক্রিস্টাল, ডায়মন্ড, রুবি, মুক্তা, কোরাল ছাড়াও মূল্যবান সব রত্ন, রঙিন কাচ আর মন্দির স্থাপত্যের সূক্ষ্ম কারুকার্য দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। শিল্পী গণেশ মুসকরের আঁকা ছবিগুলিও সুন্দর। সারা মন্দির জুড়ে রয়েছে বাগিচা। বিমোহিত করে ভক্তদের। ফোয়ারা, জলাশয়, রঙিন মাছ, মর্মর মূর্তি --- সব কিছু মিলিয়ে যেন মর্ত্যের নন্দনকানন। সরোবরের পাড়ে রয়েছে শান্তি ও অহিংসার প্রতীকী মূর্তি -– বাঘে-গরুতে জল খাচ্ছে। বাঁ দিকে পবিত্র প্রান্তিক শিলা। মন্দিরের মূল মূর্তি শীতলানাথজির কপালের ডায়মন্ডটি দর্শকদের দৃষ্টি বিভ্রম ঘটায়। রাসপূর্ণিমায় জাঁকালো উৎসব হয়। ঝলমলে মিছিল বেরোয়।
মন্দিরে রয়েছে আরও অনেক কিছু। শ্বেতমর্মরের বিগ্রহ, ক্রিস্টাল, ডায়মন্ড, রুবি, মুক্তা, কোরাল ছাড়াও মূল্যবান সব রত্ন, রঙিন কাচ আর মন্দির স্থাপত্যের সূক্ষ্ম কারুকার্য দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। শিল্পী গণেশ মুসকরের আঁকা ছবিগুলিও সুন্দর। সারা মন্দির জুড়ে রয়েছে বাগিচা। বিমোহিত করে ভক্তদের। ফোয়ারা, জলাশয়, রঙিন মাছ, মর্মর মূর্তি --- সব কিছু মিলিয়ে যেন মর্ত্যের নন্দনকানন। সরোবরের পাড়ে রয়েছে শান্তি ও অহিংসার প্রতীকী মূর্তি -– বাঘে-গরুতে জল খাচ্ছে। বাঁ দিকে পবিত্র প্রান্তিক শিলা। মন্দিরের মূল মূর্তি শীতলানাথজির কপালের ডায়মন্ডটি দর্শকদের দৃষ্টি বিভ্রম ঘটায়। রাসপূর্ণিমায় জাঁকালো উৎসব হয়। ঝলমলে মিছিল বেরোয়।
১৬-ই আগস্ট থেকে ১৫-ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভাদ্র মাসে এই মন্দিরে পর্যুসান উৎসব পালিত হয়। শান্তি ও অহিংসায় বিশ্বাসী জৈনরা দাতব্য কাজের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
কলকাতার পরেশনাথ জৈন মন্দির আপনি প্রতিদিন সকাল ৬:০০-টা থেকে ১১:০০-টা এবং বিকেল ৩:০০-টে থেকে সন্ধ্যা ৭:০০-টা পর্যন্ত দর্শন করতে পারেন।
(তথ্যসূত্র: দ্যা টেলিগ্রাফ, ৬ই অক্টোবর ২০০৬ সাল)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন