রবিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৮

রূপক রায়-এর কলাম ( দশ )


রূপক রায়-এর কলাম ( দশ )


ফেসবুক থেকে     শেয়ার করেছেন       প্রণব কুমার কুণ্ডু


Rupok Roy


একটা হাতির মুখ মানুষের শরীরে কি বসানো যায় ? কী যুক্তি আছে এটার পেছনে ?
(Necessary Post for - Niloy Dev)

মুসলমানরা হিন্দুদেরকে ধর্ম বিষয়ে নানা প্রশ্ন করে বিব্রত করে, ঠিকঠাক সেই প্রশ্নগুলোর জবাব দিতে না পারলে হিন্দুরা হেয় হয়, এরপর ধর্ম নিয়ে সে হীনম্মন্যতায় ভুগে, যথা সময়ে এর ট্রিটমেন্ট করা না হলে, দিনের পর দিন এভাবে হেয় হতে হতে এক সময় সে হিন্দুধর্ম ত্যাগও করতে পারে। মুসলমানদের করা ঠিক এই ধরণের একটি প্রশ্নের জবাব দিচ্ছি আজকে।

পৌরাণিক কাহিনী মতে, শিব একবার বাধ্য হয়ে সূর্যকে হত্যা করে, তখন সূর্যের পিতা কশ্যপ, শিবকে অভিশাপ দেয়, সে নিজেও একদিন তার নিজ পুত্রকে হত্যা করতে বাধ্য হবে। এরপর, পার্বতী, তার প্রথম পুত্র কার্তিককে, জন্মের পরপরই, ঘটনাচক্রে ছয় কৃতিকার কাছে রেখে আসতে বাধ্য হলে তার মাতৃত্বের শুন্যতা সৃষ্টি হয় এবং সেই শুন্যতা পূরণে, মনের মাধুরী মিশিয়ে কাদামাটি দিয়ে পার্বতী একটি মূর্তি গড়ে এবং সেই মূর্তিতে প্রাণ সঞ্চার ক’রে একটি পুত্রের জন্ম দেয়। পার্বতী এই পুত্রের নাম দেয় বিনায়ক এবং তাকে নির্দেশ দেয় বাড়ির দরজায় পাহারা দিতে, যাতে পার্বতীর সাধনার সময় কেউ বাড়িতে ঢুকে তাকে বিরক্ত না করে; বিনায়ক সেই দায়িত্ব পালন করার সময় শিব সেখানে আসে এবং বাড়িতে ঢুকতে চায়, তখন বিনায়ক, শিবকে বাধা দেয় এবং তার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করে, বিনায়কের এই রূঢ় আচরণ এবং মাতৃ আদেশ পালনের অহংকারের কারণে, শিব, বিনায়কের মুণ্ডুচ্ছেদ করে তাকে হত্যা করে। এরপরই পার্বতী সেখানে আসে, এবং তার পুত্রকে জীবিত করে না দিলে সংসারকে লণ্ডভণ্ড করে দেবার হুমকি দেয়। শেষ পর্যন্ত ত্রিদেব মিলে বিনায়ককে জীবিত করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং শিব বলে, উত্তর দিকে গমন করে প্রথম যে প্রাণীকে দেখতে পাবে, সব শুনে সে যদি স্বেচ্ছায় তার মাথা দিতে রাজী হয়, সেই মাথা লাগালে বিনায়ক জীবিত হবে। এই প্রাণীর সন্ধানে দেবরাজ ইন্দ্রসহ অন্যান্যরা উত্তরদিকে গমন করে এবং প্রথমেই এক হাতিকে দেখতে পায়, সেই হাতিকে ঘটনা খুলে বলতেই সে রাজী হয়ে যায় এই কারণে যে, সে মহাদেবের একজন ভক্ত এবং পূর্বে কোনো এক সময় মহাদেবের কাছাকাছি থাকার একটা প্রার্থনা সে জানিয়েছিলো, সেই সময় মহাদেব তাকে, ভবিষ্যতে, কোনো এক সময় তার এই প্রার্থনা পূরণ হবে বলে বর দিয়েছিলো, তার কাটা মস্তকের মাধ্যমে তার সেই ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে ব’লে, হাতি তার মাথা দিতে রাজী হয়ে যায়, এরপর বিষ্ণু তার সুদর্শন চক্র দ্বারা হাতির মাথা কেটে দেয়, সেই মাথা দেবরাজ ইন্দ্র নিয়ে এসে দিলে শিব তা বিনায়কের দেহের সাথে জুড়ে দেয়; এভাবে বিনায়ক জীবিত হয়ে ওঠে এবং তার নতুন নাম দেওয়া হয় গণেশ।

যা হোক, গনেশের মাথা জোড়া লাগানোর ঘটনাকে মুসলমানরা বলে বা বলবে অজগুবি গল্প, কিন্তু তাহলে ইসলামের ইতিহাসের চাঁদকে দ্বিখণ্ডিত করে জোড়া লাগানোর ঘটনাটা কী ? কোরানের সূরা কমর এর ১ নং আয়াতে স্পষ্ট করে লিখা আছে, "চাঁদ দ্বি-খণ্ডিত হয়েছে", এর মানে হচ্ছে মুহম্মদের আঙ্গুলের ইশারায় চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়েছে এবং তার আঙ্গুলের ইশারাতেই চাঁদ আবার জোড়া লেগেছে। এতবড় একটা ঘটনার প্রমান শুধু কোরান ! যে কোরানের পাতায় পাতায় ভুল আর মিথ্যা। ইসলামের বর্ণনা মতে, এটা মাত্র ১৪০০ বছর আগের ঘটনা, অথচ পৃথিবীর আর কেউ সেই ঘটনা দেখলো না ! কোনো দেশ থেকে সেই ঘটনা আর দেখাই গেলো না! এ্রই রকম অলৌকিক ঘটনা যদি মুহম্মদের থাকতো তাহলে তাকে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য আর তরবারি নিয়ে ঘুরতে হতো না, এই ক্ষমতা দেখেই মুহম্মদের জীবদ্দশাতেই শুধু আরব নয়, সারা পৃথিবীর লোক ইসলাম গ্রহন করে ফেলতো।

এরপর মানুষের দেহ আর হাতির মাথাওয়ালা গনেশকে নিয়ে যদি মুসলমানদের এলার্জি থাকে, তাহলে বোরাক এর ঘটনাটা কী ? যে বোরাকে চড়ে মুহম্মদ সাত আসমান ডিঙ্গিয়ে আল্লার সাথে দেখা করে এসেছিলো ? এই বোরাকের দেহ ছিলো ঘোড়ার মতো আর মাথা ছিলো নারীর। যেই ঘটনাকে স্মরণ করে মুসলমানরা অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে শব-ই-মেরাজ নামে পালন করে থাকে।

মানুষের দেহে হাতির মাথা জোড়া লাগানোর ঘটনাটা চিকিৎসা বিজ্ঞানের সার্জারির একটা প্রতীকী ঘটনা মাত্র। এখন এক মানুষের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অন্য মানুষের দেহে লাগিয়ে তাকে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে, এমন কি কোনো কোনো প্রানীর অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মাধ্যমেও মানুষকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে, এই বৈজ্ঞানিক সাফল্য হয়তো একদিন এমন স্তরে পৌঁছবে যখন মানুষের কাটা মাথাও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জোড়া লাগিয়ে তাকে বাঁচানো সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে মানুষের কাটা মাথা জোড়া লাগানোর পরিবর্তে উদাহরণ হিসেবে হাতির মাথা কেনো ? হাতির মাথা বলেই গল্পটা এখনো বেঁচে আছে এবং মানুষ তার চর্চা করে যাচ্ছে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, না হলে গল্পটা এতদিনে হারিয়ে যেতো এবং ভবিষ্যতের সার্জারি বিদ্যা যে কোথায় পৌঁছতে পারে, এ ব্যাপারে মানুষ ধারণা হারিয়ে ফেলতো। মানবদেহে যে প্রাণীর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ লাগানোর চেষ্টা চলছে, সেটা জানার জন্য ক্লিক করতে পারেন নিচের এই লিঙ্কে-

http://www.ntvbd.com/tech/17692/

এই ঘটনার অন্য দিকটা হলো, হিন্দুধর্ম প্রকৃতির ধর্ম, তাই প্রকৃতির সকল কিছুকে শ্রদ্ধা করা হিন্দুধর্মের অংশ। গনেশের মাধ্যমে আমরা হাতিকে সেই ধরণের শ্রদ্ধাই করি। এই শ্রদ্ধা থেকেই গনেশের পূজার উৎপত্তি এবং এই পূজার স্বীকৃতি আছে গীতায়। কেননা, পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ, অর্জুনকে যে বিশ্বরূপ দেখিয়েছিলেন তার মধ্যে গনেশ ছিলো।

গনেশ প্রসঙ্গে অন্য কটূক্তি হলো, সেইটাকে তোমরা হিন্দুরা আবার পূজা করো। আবার সেই গনেশের একটা কলা গাছ বউও আছে।

মেরাজের ঘটনাকে কোনো মুসলমান কি অস্বীকার করার ক্ষমতা রাখে ? রাখে না। কারণ, তাহলে তারা আর মুসলমান থাকবে না। মেরাজের ঘটনাকে স্বীকার করা মানেই হলো নারীর মস্তকযুক্ত ঘোড়ার দেহ- বোরাককে স্বীকার করা আর তাকে শ্রদ্ধা বা পূজা করা। মুসলমানরা যখন এই রকম একটা অদ্ভূত জন্তুকে রেসপেক্ট করছে, যা পৃথিবীতে কখনো ছিলো না; তখন হিন্দুদের গনেশ পূজাকে নিয়ে তাদের এত চুলকানি কেনো ?

আবার গনেশের কলা বৌ এর ব্যাপারটা হলো, দুর্গা পূজায় প্রকৃতির সমস্ত গাছের প্রতিনিধি হিসেবে থাকে নবপত্রিকা। এই নব পত্রিকা হলো নয়টি গাছ, এগুলোর মধ্যে কলা গাছ সবচেয়ে বড় হওয়ায়, অন্য গাছ গুলো কলাগাছের সাথে বেঁধে হলুদ শাড়ি পরিয়ে গনেশের পাশে রাখা হয়, যাকে সাধারণ মানুষ কলাগাছের বউ বলে ভুল করে। অনেক হিন্দুই এই সঠিক তথ্য জানে না, সেক্ষেত্রে কোনো মুসলমানের যদি এটা নিয়ে এরকম ভুল ধারণা থাকে এবং তা নিয়ে কটূক্তি করে, তাকে আর দোষ দিয়ে লাভ কী ?

উপরেই বলেছি, গনেশের দেহের সাথে হাতির মাথা লাগানোর ঘটনাটা একটা সার্জারির ঘটনা এবং এই ঘটনা ভবিষ্যতের জন্য নিদর্শন যে চিকিৎসা বিজ্ঞান কোথায় পৌঁছাবে, চিকিৎসা বিজ্ঞান যে, সেখান থেকে খুব বেশি দূরে নেই, সেটা বুঝতে পারবেন নিচের এই লিঙ্কে ক্লিক করলে; কারণ, মানুষের মাথা প্রতিস্থাপনের লক্ষ্য বিজ্ঞানীরা অলরেডি ইঁদুরের মাথা প্রতিস্থাপন করে ফেলেছে। নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে দেখতে পারেন নিউজটি-
http://www.dailymail.co.uk/…/Scientists-complete-head-trans…

এই লিঙ্কের আর্টিকেলটি দেখুন নিচে-
Ahead of a controversial plan to carry out the first human head transplant later this year, scientists have attached the head of a rat onto the body of another.
In the disturbing experiment, researchers in China affixed the heads of smaller, ‘donor’ rats onto the backs of larger recipients, creating two-headed animals that lived an average of just 36 hours.
The team, which involved the Italian neurosurgeon who is set to perform the hotly-debated procedure on a human, managed to complete the transplant without causing blood loss-related brain damage to the donor.
In the disturbing experiment, researchers in China affixed the heads of smaller, ‘donor’ rats onto the backs of larger rats, creating two-headed animals that lived an average of just 36 hours
HOW THEY DID IT
The researchers used three rats for each operation: a smaller rat, to be the donor, and two larger rats, acting as the recipient and the blood supply.
To maintain blood flow to the donor brain, the connected the blood vessels from that rat to veins of the third rat using a silicon tube, which was then passed through a peristaltic pump.
Then, once the head had been transplanted onto the second rat’s body, the researchers used vascular grafts to connect the donor’s thoracic aorta and superior vena cava to the carotid artery and extracorporeal veins of the recipient.
In the study, researchers from Harbin Medical University in China and controversial neurosurgeon Sergio Canavero built upon earlier head-grafting experiments to figure out how to avoid damage to the brain tissue during the operation, as well as long-term immune rejection.
Previously, scientists have attempted the procedure on dogs and monkeys, which helped to test neural preservation when blood flood to the brain had been cut off, they explain in the paper published to CNS Neuroscience & Therapeutics.
But, long-term survival of the specimens was not a priority.
The researchers used three rats for each operation: a smaller rat, to be the donor, and two larger rats, acting as the recipient and the blood supply.
To maintain blood flow to the donor brain, they connected the blood vessels from that rat to veins of the third rat using a silicon tube, which was then passed through a peristaltic pump.

আশা করছি, গনেশ সম্পর্কিত মুসলমানদের সকল কটূক্তির জবাব, আমার বন্ধুদের মুখে তুলে দিতে পেরেছি, তারপরও এ বিষয়ে কারো যদি কোনো প্রশ্ন থাকে, নির্দ্বিধায় কমেন্টে বা ইনবক্সে বলবেন, ঈশ্বর আমাকে তার সমাধান দেবার সময় ও জ্ঞান প্রদান করবেন বলে আশা রাখি।

জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।

From: Krishna kumar das
💜 জয় হোক সনাতন ধর্মের

Pranab Kumar Kundu



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন