বারাণসী ( দুই )
Abhik Dey এতেইতিহাসের বিভিন্ন তথ্য
#বারাণসী - প্রাচীন ভারতের এক অন্যতম নিদর্শন। গঙ্গার পশ্চিম তীরে বরুণা ও অসি নদীর মিলনস্থলে বিশ্বের 'প্রাচীনতম জীবন্ত শহর'। অতীতের কাশী আজকের বারাণসী, হিন্দুধর্মের পবিত্রতার প্রতীক। পুরাণে আছে, খ্রিস্টের জন্মের ১২০০ বছর আগে সুহোত্র-পুত্র কাশ্য পত্তন করেন এ নগরী। কাশ্য থেকে নাম হয় কাশী। The City of Light। গঙ্গা, গঙ্গার ঘাট, মন্দির, ভারতীয় সঙ্গীত, রাবড়ি-লস্যি-মালাই, অলিগলি-তস্য গলি, দোকানপাট, যানজট, ষাঁড়, বেনারসি শাড়ির দোকান, কাচের চুড়ি - এ সব নিয়েই এক প্রাণবন্ত শহর বারাণসী। হানাদারদের হানায় বার বার এর অতীত ধ্বংস হলেও পুণের পেশোয়া, ইন্দোরের হোলকার, গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া এবং বারাণসীর রাজাদের হাতে মন্দির, ঘাট এবং শহর গড়ে উঠেছে নতুন করে।
বারাণসীর প্রধান দর্শনীয় স্থান হলো বিশ্বনাথ মন্দির আর গঙ্গাতীরের প্রাচীন ঘাট। এখানকার প্রধান ঘাটগুলো হলো - দশাশ্বমেধ, মণিকর্ণিকা, হরিশ্চন্দ্র, মানমন্দির, রাজেন্দ্রপ্রসাদ, পঞ্চগঙ্গা, রানিমহল, অহল্যাবাই ঘাট প্রভৃতি। ইন্দোরের মহারানি অহল্যাবাই হোলকার ১৭৭৭ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান কাশী-বিশ্বনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। আর পাঞ্জাব কেশরী রণজিত্ সিংহ মন্দিরের শিখরগুলো সোনা দিয়ে মুড়ে দেন ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে। মন্দিরের দেবতা কালো পাথরের বিশ্বেশ্বর। এটি দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম। বিশ্বনাথ মন্দিরের বিপরীতে অন্নপূর্ণা মন্দির। কার্তিক মাসের শুক্লা প্রতিপদে এখানে অন্নকূট উত্সব হয়।
মূল শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে রয়েছে রানি ভবানী প্রতিষ্ঠিত দুর্গামন্দির। গোধুলিয়া থেকে ৩ কিলোমিটার দূর রয়েছে শ্বেতপাথরের তুলসী মানস মন্দির। বিদ্যাপীঠ রোডে আছে ভারতমাতা মন্দির। ১৯৩৬ সালে মহাত্মা গান্ধী উদ্বোধন করেন এই মন্দির। এই মন্দিরে মূর্তির বদলে রয়েছে পাথরের তৈরি ভারতের মানচিত্র। এখানেই গড়ে উঠেছে এশিয়ার বৃহত্তম আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্থে পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (BHU) প্রতিষ্ঠা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়াম 'ভারত কলাভবন'-এ রয়েছে চিত্র ও ভাস্কর্যের অপূর্ব সংগ্রহ।
মূল শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে রয়েছে রানি ভবানী প্রতিষ্ঠিত দুর্গামন্দির। গোধুলিয়া থেকে ৩ কিলোমিটার দূর রয়েছে শ্বেতপাথরের তুলসী মানস মন্দির। বিদ্যাপীঠ রোডে আছে ভারতমাতা মন্দির। ১৯৩৬ সালে মহাত্মা গান্ধী উদ্বোধন করেন এই মন্দির। এই মন্দিরে মূর্তির বদলে রয়েছে পাথরের তৈরি ভারতের মানচিত্র। এখানেই গড়ে উঠেছে এশিয়ার বৃহত্তম আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্থে পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (BHU) প্রতিষ্ঠা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়াম 'ভারত কলাভবন'-এ রয়েছে চিত্র ও ভাস্কর্যের অপূর্ব সংগ্রহ।
গঙ্গার পূর্ব পাড়ে রয়েছে সতেরো শতকে নির্মিত রামনগর দুর্গপ্রাসাদ। রাজবাড়িতে আছে দুর্গা ও ছিন্নমস্তার মন্দির। প্রতি বছর আশ্বিন মাসে রামনগরে এক মাসব্যাপী সাড়ম্বরে পালিত হয় রামলীলা উত্সব। হিন্দু পুরাণে বর্ণিত সতীর কাহিনীর একান্নটি সতী পীঠের একটি হলো বারাণসী। সতী দেবীর কুণ্ডল পড়েছিল মণিকর্ণিকা ঘাটে। তাই এটি একটি অন্যতম পীঠস্থান।
যুগযুগ ধরে গঙ্গার পাড়ে গড়ে উঠেছে বহু জনপদ। তারই একটি নিদর্শন বেনারস বা বারাণসী। প্রায় ১০০টি ঘাট রয়েছে মা গঙ্গার পাড় ঘেঁষে। তারমধ্যে মূল ঘাট ২৫টি। অস্যি ঘাট থেকে শুরু করে রাজ ঘাট পর্যন্ত বিস্তারিত এলাকায় ভক্ত ও পর্যটক সমাগম সারা বছরই লক্ষ্য করা যায়। বেড়াতে যেতে চাইলে দশাশ্বমেধ ঘাট থেকে নৌকা বিহার শুরু করতে পারেন। যাত্রা শেষ হরিশচন্দ্র ঘাটে পৌঁছে। আর যদি নৌকায় উঠতে না চান, পায়ে হেঁটেও পরিদর্শন করতে পারেন বারাণসীর শোভা। ঘাটে পেয়ে যাবেন টুরিস্ট গাইডদেরও। তাঁদের মুখেও শুনতে পারেন বারাণসীর রোমাঞ্চকর গল্প।
বারাণসীর দক্ষিণপ্রান্তে অস্যি ঘাট। সেখানেই মা গঙ্গার সঙ্গে মিশেছে অস্যি নদী। একেবারে দক্ষিণে অবস্থানের কারণে লোকজন খুব একটা যায় না সেখানে। ফলত তেমন ভিড় নেই। শান্ত, নিরিবিলি ঘাট একান্তে সময় কাটানোর আদর্শ লোকেশন। যদিও হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে এই ঘাটের বিশেষ প্রাধান্য আছে। বারাণসীতে এসে শিবের পুজো করার আগে ভক্তরা এই ঘাটে স্নান করেন।
যুগযুগ ধরে গঙ্গার পাড়ে গড়ে উঠেছে বহু জনপদ। তারই একটি নিদর্শন বেনারস বা বারাণসী। প্রায় ১০০টি ঘাট রয়েছে মা গঙ্গার পাড় ঘেঁষে। তারমধ্যে মূল ঘাট ২৫টি। অস্যি ঘাট থেকে শুরু করে রাজ ঘাট পর্যন্ত বিস্তারিত এলাকায় ভক্ত ও পর্যটক সমাগম সারা বছরই লক্ষ্য করা যায়। বেড়াতে যেতে চাইলে দশাশ্বমেধ ঘাট থেকে নৌকা বিহার শুরু করতে পারেন। যাত্রা শেষ হরিশচন্দ্র ঘাটে পৌঁছে। আর যদি নৌকায় উঠতে না চান, পায়ে হেঁটেও পরিদর্শন করতে পারেন বারাণসীর শোভা। ঘাটে পেয়ে যাবেন টুরিস্ট গাইডদেরও। তাঁদের মুখেও শুনতে পারেন বারাণসীর রোমাঞ্চকর গল্প।
বারাণসীর দক্ষিণপ্রান্তে অস্যি ঘাট। সেখানেই মা গঙ্গার সঙ্গে মিশেছে অস্যি নদী। একেবারে দক্ষিণে অবস্থানের কারণে লোকজন খুব একটা যায় না সেখানে। ফলত তেমন ভিড় নেই। শান্ত, নিরিবিলি ঘাট একান্তে সময় কাটানোর আদর্শ লোকেশন। যদিও হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে এই ঘাটের বিশেষ প্রাধান্য আছে। বারাণসীতে এসে শিবের পুজো করার আগে ভক্তরা এই ঘাটে স্নান করেন।
ঘাটের কাছে একটি পিপুল গাছের নিচে রয়েছে শিবের লিঙ্গ। স্নান সেরে ভক্তরা সেই লিঙ্গের উপাসনা করেন। এছাড়া, ঘাটে রয়েছে কিছু জিনিসপত্রের দোকান ও খাবারদাবারের স্টল। যদি বারাণসীতে বেশিদিন থাকার পরিকল্পনা থাকে, এই ঘাটের আশপাশের হোটেল কিংবা গেস্ট হাউজ়ে বুকিং করে নিতে পারেন। এই ঘাট থেকে দশাশ্বমেদ ঘাটের দূরত্ব পায়ে হাঁটলে মাত্র ৩০ মিনিট।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে এই ঘাটের। ১৮ শতাব্দীতে এই ঘাটেই ব্রিটিশদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন বারাণসীর তৎকালীন মহারাজা চেত সিং। যুদ্ধের আগে ঘাটে একটি ছোট্ট দুর্গ বানিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, শেষরক্ষা করতে পারেননি। যুদ্ধে পরাজিত হয়ে বন্দী হন। যদিও কিছুদিনের মাথায় ছদ্মবেশ ধারণ করে মাথায় পাগড়ি পরে জেল থেকে পালিয়ে যান।
বারাণসীর ঘাটের ফোটো তুলতে চাইলে বেছে নিন এই ঘাটকে। ফোটোগ্রাফারদের মতে, বারাণসীর সবচেয়ে ফোটোজেনিক ঘাট দ্বারভাঙ্গা। খুব সুন্দর এর শোভা। বহু সিনেমার শুটিং হয়েছে। দ্বারভাঙ্গা ঘাটের নির্মাণশৈলি মনমুদ্ধকর। ১৯০০ সালে বিহারের রাজপরিবার এখানে একটি মহল তৈরি করে, যার পর থেকে ঘাটের সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পায়।
দ্বারভাঙ্গা ঘাটের পাশেই রয়েছে মুন্সি ঘাট। ১৯১২ সালে দ্বারভাঙ্গা রাজ্যের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী শ্রীধর নারায়ণ মুন্সি নির্মাণ করেন ঘাটটি। তাঁর নামেই নামকরণ হয় ঘাটের।
বারাণসী ঘাটের হৃদপিণ্ড দশাশ্বমেধ ঘাট। সবচেয়ে পুরোনো ও সবচেয়ে আর্কষণীয় স্থান। হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে এই ঘাট পবিত্র। এখানকার মূল আকর্ষণ গঙ্গা আরতি। শুধু আরতি দেখবে বলে দেশ-বিদেশের বহু মানুষ ভিড় করে দশাশ্বমেধ ঘাটে। প্রতিদিন সন্ধে হওয়ার পর গঙ্গা আরতি শুরু হয় ভারতের মূলত তিনটি জায়গায় - হরিদ্বার, ঋষিকেশ ও বারাণসীতে।
নদীর দিকে মুখ করে সংগীত সহযোগে আরতি হয়। বড় বড় প্রদীপ জ্বালিয়ে ৮-১০জন পণ্ডিত আরতি করেন সেখানে। সে দৃশ্য চাক্ষুস না করলে মুখে বলে প্রকাশ করা কঠিন। আরতি শেষে সকল ভক্ত করজোড়ে প্রণাম করে। সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার, ঝড়-জল বা প্রচণ্ড ঠান্ডাতেও সন্ধ্যারতি স্থগিত হয় না কোনও সময়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাটে বসে কাটিয়ে দিলেও কখনও ক্লান্তি আসে না। এমনই তার স্থানমাহাত্ম্য।
বারাণসীর আরও একটি প্রাচীন ঘাট মানমন্দির। রাজপুত স্থাপত্যের জন্য ঘাটটি বিখ্যাত। জয়পুরের রাজপুত রাজা মানসিং ১৬০০ শতকে নির্মাণ করেন সেই ঘাট। তারপর ১৭৩০ সালে সাওয়াই জয় সিং (দ্বিতীয়) সেখানে একটি অবজ়ার্ভেটরি তৈরি করেন। আজও গ্রহ-নক্ষত্রের গতিবিধি জানার টেলিস্কোপটি সঠিকভাবে কাজ করে চলেছে।
বারাণসী ঘাটগুলির আরও একটি সুন্দর ঘাট স্কিনদিয়া। নিরিবিলি ও শান্ত পরিবেশ। স্কিনদিয়ায় রয়েছে অর্ধ নিমজ্জিত শিবের মূর্তি। ১৮৩০ সালে ঘাট নির্মাণের সময় মূর্তিটি জলে অর্ধেক ডুবে যায়। সেই থেকে মূর্তিটি অর্ধেক ডুবেই রয়েছে। এছাড়াও এই ঘাটে রয়েছে বেশ কয়েকটি ছোটো ছোটো মন্দির। জায়গাটিকে বলা হয় “সিদ্ধক্ষেত্র”।
১৭৮০ সালে নাগপুরের মারাঠি রাজা ভোঁসলে বারাণসীতে একটি ঘাট তৈরি করেন। সেই থেকে ঘাটের নাম হয় ভোঁসলে ঘাট। ঘাটে রয়েছে পাথরের বহুতল, যার উপরে তাকালে লক্ষ্য করা যায় ছোটো ছোটো জানালা। রয়েছে তিনটি ঐতিহ্যবাহী মন্দির - লক্ষ্মীনারায়ণ, ইয়ামেশ্বর ও ইয়ামাদীতা মন্দির।
দশাশ্বমেধ ঘাটের মতো আরও একটি ঘাটের নাম জনপ্রিয় - মণিকর্ণিকা ঘাট। এটি আসলে শ্মশান। বারাণসীর অধিকাংশ সৎকার এই ঘাটেই হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের বিশ্বাস, এই ঘাটে সৎকার হলে জন্মান্তরের চক্র থেকে আত্মা মুক্তি লাভ করে। সব দোষ মুছে যায়। 🙏🙏🙏
#COLLECTED*
#COLLECTED*
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন