শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

Sri Aurobindo's Uttarpara Speech

 

No one must die of cancer except out of carelessness; ��

 No one must die of cancer except out of carelessness; ��

এই দিনে
5 বছর আগে
30 সেপ্টেম্বর, 2018 
সবাই-এর সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে
সবাই
Sonali Pal একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন
Kishan Reddy
27 আগস্ট 2018
No one must die of cancer except out of carelessness; ��
(1). First step is to stop all sugar intake, without sugar in your body, cancer cell would die a natural death. ��
(2). Second step is to blend a whole lemon fruit with a cup of hot water and drink it for about 1-3 months first thing before food and cancer would disappear, research by Maryland College of Medicine says, it's 1000 times better than chemotherapy. ��
(3). Third step is to drink 3 spoonfuls of organic coconut oil, morning and night and cancer would disappear.��
You can choose any of the two therapies after avoiding sugar. Ignorance is no excuse; I have been sharing this information for over 5 years. Let everyone around you know.God bless.��♦
Please forward to your near and dear ones.��
Dr. Gupta
#Copied.
Kishan Reddy BANGALORE YOUTH ICON 🙏🏻
Pranab Kumar Kundu
শেয়ার করুন

বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

বিশ্বকর্মা

 বিশ্বকর্মা

এই দিনে
6 বছর আগে
28 সেপ্টেম্বর, 2017 
সবাই-এর সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে
সবাই
বিশ্বকর্মা
বিশ্বকর্মা সন্দীপন বিশ্বাস বর্তমান ১৭/০৯/২০১৭
শ্রীসন্দীপন বিশ্বাস, একটি অসম্ভব ভালো প্রবন্ধ লিখেছেন ! তাঁকে, অভিনন্দন !
শেয়ার করেছেন, শ্রীপ্রণবকুমারকুণ্ডু মহাশয় !
একবার ইন্দ্রের ইচ্ছা হল, তিনি এমন এক সুরম্য প্রাসাদ নির্মাণ করবেন, যা সর্বশ্রেষ্ঠ। যা আগেও কখনও হয়নি, পরেও কখনও হবে না। তাই তিনি দেবশিল্পী বিশ্বকর্মাকে ডেকে সেরকম এক অনিন্দ্য প্রাসাদ রচনার অনুরোধ করেন। সে কথা শুনে বিশ্বকর্মা একটি প্রাসাদ নির্মাণ করেন। কিন্তু তা ইন্দ্রের মনোরঞ্জনে ব্যর্থ হয়। এভাবে তিনি বারবার প্রাসাদ নির্মাণ করেন, আবার ভেঙে ফেলেন। বিপাকে পড়ে যান বিশ্বকর্মা। তিনি বুঝতে পারেন ইন্দ্রকে সন্তুষ্ট করা সম্ভব নয়। তাই তিনি গেলেন ব্রহ্মার কাছে। ব্রহ্মা সব কথা শুনে তাঁকে বিষ্ণুর কাছে যেতে বললেন। বিষ্ণুকে সব কথা বললেন বিশ্বকর্মা। বিষ্ণু তখন এক বালকের রূপ ধরে ইন্দ্রের কাছে গেলেন। বিষ্ণুকে ইন্দ্র চিনতে পারলেন না। তিনি বালককে বললেন, ‘এখানে কেন এসেছ?’
বালকরূপী বিষ্ণু বললেন, ‘আপনাকে দেখতে এসেছি এবং আপনার প্রাসাদ কত সুন্দর, তা দর্শন করতে এসেছি।’
ইন্দ্র বললেন, ‘আমি ইন্দ্র। তুমি চেনো আমাকে?’
বিষ্ণু বললেন, ‘হ্যাঁ। আপনি ইন্দ্র, সেটা আমি জানি। আমি অনেক ইন্দ্রকে জানি। আপনার আগে অনেক ইন্দ্র ছিলেন, তাঁদের অনেক সুন্দর প্রাসাদ ছিল। আপনার পরেও অনেক ইন্দ্র আসবেন, তাঁদেরও অনেক সুন্দর প্রাসাদ হবে। সুতরাং এ জগতে অগণ্য ইন্দ্রের সমাহার। তাঁদের অসংখ্য প্রাসাদ। কোন প্রাসাদটা বেশি সুন্দর তার তুলনা কী করে সম্ভব!’
চিন্তায় পড়ে গেলেন ইন্দ্র। সত্যিই তো। তখন বিষ্ণু ইন্দ্রকে তাঁর রূপ দর্শন করালেন। ইন্দ্র বুঝলেন তিনি এক আত্মমোহে ডুবে আছেন। বিষ্ণু তাঁকে বোঝালেন, ‘বিশ্বকর্মা যে প্রাসাদ তৈরি করেন, তার আর দ্বিতীয়টি হয় না। তার তুলনা সে নিজেই। আর আপনি জেনে রাখুন, এ ব্রহ্মাণ্ডে সবই অনিত্য। আজ যা আছে, কাল তা নেই। শত শত ইন্দ্রের মধ্যে আপনি একটি কণামাত্র।’
ইন্দ্র হাত জোড় করে বললেন, ‘আমি সব বুঝেছি ভগবন‌্‌। আমি আর অহংকার করব না।’
এরপর বিশ্বকর্মা তাঁর জন্য তুলনারহিত এক প্রাসাদ নির্মাণ করে দেন।
দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা হলেন, ‘দেবানাং কার্য্যসাধক’, অর্থাৎ দেবতাদের সকল কর্মের সাধক। এখানে কর্ম মানে শিল্প বা সৃষ্টিকে বোঝানো হয়েছে। একই সঙ্গে বোঝানো হয়েছে, তাঁকে ব্যতীত দেবতাদের কোনও কর্ম সম্পন্ন হওয়া সম্ভব নয়। তিনি শিল্পের দেবতা। তিনি কর্মের দেবতা। দেবলোকে বা মর্ত্যলোকে তিনি বহু কিছু নির্মাণ করেছেন। মূলত বিশ্বকর্মা ছাড়া দেবতাদের কোনও শক্তির কথা ভাবাই যায় না। কিংবা তাঁদের বিলাসের কথাও ভাবা যায় না। তাঁদের জন্য প্রাসাদ নির্মাণ থেকে শুরু করে অস্ত্র নির্মাণ, সবই তিনি করে দিয়েছিলেন। তাঁদের ব্যবহার্য জিনিস থেকে পানপাত্র, সবই তাঁর সৃষ্টি। তাঁর অমর কীর্তির মধ্যে যেগুলো উল্লেখ করা হয় সেগুলো হল, সত্যযুগে স্বর্গলোক, ত্রেতাযুগে রাবণের স্বর্ণলঙ্কা, দ্বাপর যুগে শ্রীকৃষ্ণের দ্বারকাপুরী এবং কলিযুগে হস্তিনাপুর ও ইন্দ্রপ্রস্থ।
মাঠেঘাটে ঘুরে বেড়ান ভোলা মহেশ্বর। তাঁর সঙ্গে বিয়ে হল পার্বতীর। বিয়ের পর তো পার্বতীকে রাখতে হবে কোথাও! তখন শিবের আদেশে বিশ্বকর্মা এক স্বর্ণপ্রাসাদ নির্মাণ করেন। সেই প্রাসাদের গৃহপ্রবেশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিবভক্ত লঙ্কেশ্বর রাবণ। রাবণ সেই প্রাসাদ দেখে বিমুগ্ধ। তিনি শিবকে বললেন, ‘আমিও একটি এমন প্রাসাদ ধরাধামে রচনা করতে চাই।’
শিব তাঁকে বললেন, ‘তুমি গিয়ে বিশ্বকর্মাকে অনুরোধ কর।’ তখন রাবণের অনুরোধে এবং শিবের সুপারিশে বিশ্বকর্মা লঙ্কায় রাবণের জন্য স্বর্ণপুরী নির্মাণ করেন।
পরাক্রমশালী কৃষ্ণ যখন জরাসন্ধের থেকে দূরে থাকার বাসনা নিয়ে মথুরা ছেড়ে দ্বারকা চলে আসবেন বলে মনস্থ করলেন, তখন তাঁর জন্য বিশ্বকর্মা সেখানে এক স্বর্গীয় প্রাসাদ রচনা করে দিলেন। এমনকী সেখানে একটি জনপদও গড়ে দিলেন। কৃষ্ণের জন্য তিনি বিপুল ঐশ্বর্যের ভাণ্ডার তৈরি করে দিলেন। দ্বারকাপুরী হল এক ঈর্ষণীয় প্রাসাদ। দ্বারাবতী বা দ্বারকা হয়ে উঠল স্বর্গতুল্য।
এ প্রসঙ্গে ইন্দ্রপ্রস্থের কথা বলতেই হয়। খাণ্ডবপ্রস্থে ধৃতরাষ্ট্র পাণ্ডবদের যে এক টুকরো জমি দিয়েছিলেন, সেখানে কৃষ্ণের অনুরোধে বিশ্বকর্মা ইন্দ্রপ্রস্থ নির্মাণ করেন। ইন্দ্রপ্রস্থ ছিল এক মায়ানগরী। দেখে মনে হত সর্বত্রই টলটলে জল। ভূমি এবং জলাশয়ের পার্থক্য বোঝাই যেত না। পাণ্ডবদের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে সেই মায়ানগরীতে এসে অভিভূত কৌরবরা। ভূমি আর জলের মায়া বুঝতে না পেরে সেখানে জলাশয়ে পড়ে যান দুর্যোধন। তাই দেখে হেসে উঠেছিলেন দ্রৌপদী। এতে রুষ্ট হয়ে দুর্যোধন প্রতিজ্ঞা করেন, এই অপমানের প্রতিশোধ তিনি নেবেনই। সেই প্রতিজ্ঞাই দুর্যোধনকে রাজসভায় দ্রৌপদীকে অপমান করতে উৎসাহ দিয়েছিল। আর সেটাই কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের কারণ হয়ে উঠেছিল।
আধুনিক অস্ত্রভাবনার প্রকাশও আমরা পাই বিশ্বকর্মার মধ্যে। একবার দুই অসুর ভাই সুন্দ এবং উপসুন্দের অত্যাচারে দেবতারা কাতর হয়ে উঠলেন। তাঁরা তখন দিশাহারা, তখন তাঁরা ব্রহ্মার শরণাপন্ন হলেন। ব্রহ্মা অনেক ভেবে দেখলেন, বিশ্বকর্মা ছাড়া এই সংকট থেকে দেবতাদের কেউই উদ্ধার করতে পারবেন না। তাই তিনি বিশ্বকর্মার কাছে গিয়ে বললেন, ‘আপনি এমন এক শক্তির প্রকাশ ঘটান, যে শক্তি সুন্দ-উপসুন্দকে বধ করে দেবলোককে রক্ষা করতে পারবে।’ বিশ্বকর্মা অনেক চিন্তা করে দেখলেন একক শক্তি ওই অসুর ভ্রাতৃদ্বয়কে হত্যা করতে অপারগ। তখন তিনি ব্রহ্মাণ্ডের সর্ববস্তুর অন্তঃস্থ কণার শক্তি ও সৌন্দর্য্য সংগ্রহ করে তা দিয়ে তিলে তিলে গড়ে তুললেন এক নারী শক্তি। তিনিই তিলোত্তমা। তাঁর এই সৃষ্টি যেন আজকের পরমাণু শক্তির নির্মাণকেই মনে করিয়ে দেয়।
বিশ্বকর্মার কন্যা সংজ্ঞা বিয়ে করেন সূর্যদেবকে। কিন্তু সূর্যের তাপ তিনি কিছুতেই সহ্য করতে পারছিলেন না। একথা জানতে পেরে বিশ্বকর্মা সূর্যের মোট তাপকে সমান আটটি ভাগে ভাগ করেন। তার মধ্য থেকে একটি দান করেন সূর্যকে। বাকিগুলির তেজ থেকে তিনি বিভিন্ন অস্ত্র নির্মাণ করে। সেগুলি হল বিষ্ণুর চক্র, মহাদেবের ত্রিশূল এবং কার্তিকের তীর ধনুক এবং অন্যান্য দেবতাদের নানা অস্ত্র। এছাড়া তিনি দুটি মহাধনুও নির্মাণ করেন। তার একটি তিনি দেন শিবকে এবং অন্যটি দেন বিষ্ণুকে। শিবকে তিনি যে ধনুটি দিয়েছিলেন, সেটিই হরধনু নামে খ্যাত। সেই হরধনু ভেঙে রামচন্দ্র সীতাকে বিয়ে করেছিলেন। আর বিষ্ণু তাঁর ধনুটি দিয়েছিলেন পরশুরামকে। সেটি এবং তাঁর কুঠার দিয়ে পরশুরাম এ বিশ্বকে একুশবার নিঃক্ষত্রিয় করেন। পরে সেই ধনু দিয়েই বিষ্ণু পরশুরামের গর্বকে সংহার করেন। দেবী দুর্গা যখন অসুর বধের জন্য যাত্রা করেছিলেন, তখন সব দেবতা তাঁদের আয়ুধ দিয়ে দেবীকে সজ্জিত করেছিলেন। বিশ্বকর্মা দেবী দুর্গাকে দিয়েছিলেন তাঁর কুঠার এবং মহাশক্তিশালী কবচ।
আবার তিনি এক বিমানও নির্মাণ করেছিলেন। কুবেরকে ব্রহ্মা যে পুষ্পক রথ প্রদান করেছিলেন, সেটি নির্মাণ করেন বিশ্বকর্মাই। এই রথ নির্মাণের মধ্যেই আছে আজকের বিমান ভাবনার প্রকাশ। কুবেরকে পরাস্ত করে রাবণ সেই রথ হস্তগত করেছিলেন।
বিশ্বকর্মার জন্ম নিয়ে বেদে এবং পুরাণে অনেক কাহিনি রয়েছে। সুতরাং সেসব দেখে অনেক সময় সংশয় জাগে, বিশ্বকর্মা তাহলে একজন, দু’জন না অনেক?
ক্ষীরসমুদ্রে একবার নারায়ণ বিশ্রাম করছিলেন। তখন লক্ষ্মী তাঁর সেবা করতে করতে বলেন, ‘এই বিশ্বসৃষ্টির অনন্ত রহস্য সম্পর্কে আমি জানতে চাই। হে ভগবন্‌, আমাকে সে সম্পর্কে জ্ঞাত করুন।’ একথা শুনে বিষ্ণু বলেন, ‘এ সবই আমার অনন্ত রূপের কণা কণা অংশ মাত্র। বিশ্বে আমি চেয়েছিলাম প্রাণীকুল রচনা করতে। যাঁরা আমাদের সেবা করবে, পুজো করবে। সেজন্য আমি ব্রহ্মাকে সৃষ্টি করি। ব্রহ্মার নাভিদেশ থেকে জন্ম হয় বিশ্বকর্মার। বিশ্বকর্মা আমারই এক রূপমাত্র।’
মৎস্যপুরাণ অনুসারে বিশ্বকর্মা অষ্টবসুর অন্যতম ঋষি প্রভাসের ঔরসে বৃহস্পতির কন্যা বরস্রীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন। বরস্রীর আর এক নাম যোগসিদ্ধা।
আবার অন্য সূত্র থেকে জানা যায়, বিশ্বকর্মার মা হলেন দেবগুরু বৃহস্পতির ভগিনী বরবর্ণিনী।
বেদ ও পুরাণ অনুযায়ী বিশ্বকর্মার ভিন্ন রূপ।
বিশ্বকর্মা ব্রহ্মাস্বরূপ। তাঁর পাঁচটি মুখ। এই পাঁচটি মুখের চারটি চারদিকে এবং একটি উপরদিকে। প্রতিটি মুখের নাম ভিন্ন ভিন্ন। যেমন সদ্যোজাত, বামদেব, অঘোর, তৎপুরুষ এবং ঈশান। তাঁর দশটি হাত। তাঁর বাহন হংস। সুতরাং একদিকে তিনি ‘বিশ্বতোমুখ’ এবং জ্ঞানস্বরূপ। হংস সেই জ্ঞানকেই প্রকাশ করছে। এখানেই ব্রহ্মা আর বিশ্বকর্মা একাত্ম হয়ে যান। তিনি আবার সৃষ্টির দেবতা হিসাবে নানা নামে পরিচিত। যেমন কখনও প্রজাপতি, কখনও কারু, কখনও তক্ষক, আবার কখনও বা দেব-বর্ধকি নামেও পরিচিত। বেদে আবার বিশ্বকর্মাকে ত্বষ্টা হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
দেবতারা একবার অসুরদের অত্যাচারে কাতর। তাদের নেতা বৃত্রাসুর। তাদের আক্রমণে পরাজিত দেবরাজ ইন্দ্র স্বর্গচ্যুত হলেন। অসুররা দেবলোক অধিকার করে সেখানে অনাচার সৃষ্টি করল। এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কী? বিষ্ণুর কাছ থেকে জানা গেল নৈমিষারণ্যে ধ্যানরত মহামুনি দধীচি যদি তাঁর অস্থি দান করেন, তবে সেই অস্থি দিয়ে নির্মিত অস্ত্রেই অসুরদের বিনাশ হবে। ইন্দ্র গিয়ে দধীচিকে সে কথা বলতেই তিনি যোগবলে দেহত্যাগ করলেন। সেই দেহ থেকে অস্থি এনে ইন্দ্র বিশ্বকর্মাকে দিলেন। বিশ্বকর্মা সেই অস্থি দিয়ে দুটি বজ্র বানালেন। একটির নাম শোভনকর্মা এবং অপরটির নাম সুপ্রেরণীয়। সেই দুটি বজ্র দিয়ে ইন্দ্র বৃত্রাসুর এবং অন্যান্য অসুরদের বধ করলেন।
আমরা কিন্তু যে বিশ্বকর্মার পুজো করি, তাঁর অন্যরূপ। তাঁর একটি মুখ, চারটি হাত, হাতি তাঁর বাহন। তাঁর রূপ অনেকটা কার্তিকের মতো। স্বামী নির্মলানন্দের বই থেকে জানা যায়, বিশ্বকর্মার এই রূপ প্রবর্তন করেছিলেন কর্মকার সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট নেতা স্বর্গত হরষিত কেশরী রায়। আমাদের দেশের হস্তশিল্পীরা মূলত এই রূপের পুজো করেন। তাঁর হাতে হাতুড়ি, ছেনি, আবার কখনও মানদণ্ড। এগুলি একদিকে যেমন নির্মাণের প্রতীক, তেমনই আবার শিল্পসৃষ্টির ক্ষেত্রে পরিমাপের হিসাবটিকেও মুখ্য হিসাবে প্রকাশ করা হয়েছে।
বিশ্বকর্মা শুধু নিজে নির্মাণই করেননি। তিনি মর্ত্যলোকের মানুষের জন্য ‘বাস্তুশাস্ত্রম’ রচনা করে গিয়েছেন। বেদ যেমন চারটি। উপবেদও সেরকম চারটি। এগুলি হল আয়ুর্বেদ, ধনুর্বেদ, গান্ধর্ববেদ এবং স্থাপত্যবেদ। এই স্থাপত্যবেদ বা বাস্তুশাস্ত্রের স্রষ্টা বিশ্বকর্মাই। তিনি চেয়েছিলেন মর্ত্যলোকের মানুষও যেন এই বিদ্যা আয়ত্ত করতে পারে। তাই তিনি পাশাপাশি দানবলোক এবং মানবলোকেও শিল্পী ও স্রষ্টা তৈরি করেছিলেন। যেমন বায়ু এবং পদ্মপুরাণ থেকে জানা যায়, দানবশিল্পী ময় বিশ্বকর্মার পুত্র। দৈত্যরাজ প্রহ্লাদের কন্যা বিরোচনা ছিলেন ময়ের মা। আবার ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ থেকে জানা যায়, দেবনর্তকী ঘৃতাচীর অভিশাপে বিশ্বকর্মা মর্ত্যে এক ব্রাহ্মণ ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। আবার বিশ্বকর্মার অভিশাপে ঘৃতাচী এক গোপকন্যা হিসাবে প্রয়াগে জন্মগ্রহণ করেন। উভয়ের বিবাহ হয় এবং তাঁদের নয়টি সন্তানের জন্ম হয়। সেই সন্তানদের বিশ্বকর্মা নানা শিল্পবিদ্যায় পারদর্শী করে তোলেন। যাতে মর্তের মানুষ শিল্পসৃষ্টির ক্ষেত্রে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে। পুষ্পশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, অলংকারশিল্প, শঙ্খশিল্প, বয়নশিল্প, অঙ্কনশিল্প, কাংসশিল্প এবং দারুশিল্প। এই নয়টি শিল্প তিনি নয়জন পুত্রকে শিক্ষা দেন।
শতপথ ব্রাহ্মণ থেকে জানা যায়, বিশ্বকর্মা মাঝেমাঝেই সর্বমেধ যজ্ঞ করেন। সেই যজ্ঞে তিনি বিশ্বের সবকিছুকে আহুতি দেন। সমস্ত জীবকূলকেও তিনি আহুতি দেন। সবশেষে সেই যজ্ঞে তিনি নিজেকেও আহুতি দেন। এভাবেই বিশ্ব একসময় লয়প্রাপ্ত হয়। আর সেই যজ্ঞের আগুন থেকেই জেগে ওঠেন স্বয়ং বিশ্বকর্মা। আবার তিনি নতুন সৃষ্টির উন্মাদনায় মেতে ওঠেন। জেগে ওঠে নতুন প্রাণ, নতুন জগৎ। এভাবেই ধ্বংসের পরে সৃষ্টি আর সৃষ্টির পরে ধ্বংস আসে। আর বিশ্বকর্মা মগ্ন থাকেন সৃষ্টির বিরচনে। কাল, যুগ, সব এভাবেই তাঁর হাত ধরেই এগিয়ে চলে। মহাকালের এ এক অনিবার্য খেলা।
ফটোর কোনো বিবরণ নেই।
শেয়ার করুন