শনিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১৭

অসিধারা ব্রত ( গদ্যরচনা )


অসিধারা ব্রত  ( গদ্যরচনা )



অসিধারা ব্রত। সুকঠিন ব্রত।

একই শয্যায় শায়িতা রমণীকে, উপভোগ করা নিষেধ।

ঐ একই উপলব্ধ, রমণীর পক্ষেও প্রযোজ্য।

ব্রত।
এখানে ব্রত বলতে, পুণ্যলাভ, ইষ্টলাভ, পাপক্ষয় ইত্যাদি বোঝাচ্ছে না।
তবে এই ব্রত, অনুষ্ঠেয় ধর্মকার্য তো বটেই।
কারণ, সনাতন হিন্দুধর্মে, জীবনধারণের প্রণালীই তো ধর্ম।
Hinduism is a way of life.

এটা একটা তপস্যা হতে পারে !

তবে আমাদের ধারণায়, তপস্যা বলতে যা বোঝায়, এটা সে ধরণের তপস্যা নয়।

তবে এই ব্রতপালন, এক সৃজনশীল মানসিক তপস্যা।

এই ব্রত সংযম পালনের ব্রত। ব্র্‌হ্মচর্য পালনের ব্রত।

এই ব্রতপালনের ব্রত প্রযোজ্য,নারী-পুরুয, উভয়েরই।

এই ব্রতধারীকে  ব্রতধারিনীকে, মানসিক এবং সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক সংযমের পরীক্ষা, নিজের কাছেই, নিজেকে দিতে হয়।

অসি।
খড়্গ বা তরোয়াল।

অসিধারা।
খড়্গ বা তরোয়ালের তীক্ষ্ণ অগ্রভাগ।
তরোয়ালের ধার।

অসিধারা ব্রতে, ব্রতপালনের দিনক্ষণ নেই।
রাতদিন নেই।
দিনরাত নেই।
ব্রতপালনের নির্দিষ্ট সময় নেই।
ঘড়ি দেখতে হবে না।
পাঁজি দেখতে লাগবে না।
ঘন্টা-মিনিটের ব্যাপার নেই।
অমাবস্যার-পূর্ণিমার বাঁধ-বাঁধন নেই।
তিথির কোন ব্যাপার নেই।
তবু  সে এক কঠিন ব্রত।

এই ব্রতে,  একই শয্যায় শায়িত স্বামী-স্ত্রীর,  প্রেমিক-প্রেমিকার,  নর-নারীর,  যুবক-যুবতির,  রমণ-রমণীর,  বৃদ্ধ-বৃদ্ধার,  ভোগ-উপভোগ,  পুরোপুরি নিষেধ।
দেহপুলক-যৌনপুলক পরিহারে, সংযমে, সঙ্গম নিষেধে, অনন্ত কালাতিপাত।

অসি এখানে রূপক।কেউ চাইলে, বিছানার তলায় রাখতে পারেন,  কেউ রাখতে পারেন,  দুজনার মাঝখানে, পাশবালিশের জায়গায়।

এই ব্রতে, স্ত্রী-পুরুযের ব্রহ্মচর্যপালনপূর্বক অবস্থান।

এই ব্রত, যুবক-যুবতির অবিকৃতচিত্তে, একত্রে অবস্থান রূপ ব্রত।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন