রবিবার, ৮ জানুয়ারী, ২০১৭

সাধনা ( গদ্যরচনা )



লিমেরিক-ছড়াকার   প্রণব কুমার কুণ্ডু




সাধনা  ( গদ্যরচনা )
সাধনা ( গদ্যরচনা)
সাধনা।

এখানে সাধনা, সাধন পদ্ধতি।
ঈপ্সিত বস্তু লাভের জন্য প্রযত্ন।
উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য, প্রযত্ন।

প্রযত্ন। বারবার চেষ্টা। সম্যক চেষ্টা।
প্রযত্ন। অধ্যাবসায়।

সাধনার বহিরঙ্গ আছে।
বহিরঙ্গ হচ্ছে, বাহ্য অঙ্গ।

সাধনার অন্তরঙ্গতা আছে।
'অন্তরঙ্গতা', 'অন্তরঙ্গ', এই বিশেষণ পদটির, বিশেষ্য পদ হিসাবে এখানে ব্যবহার করেছি।
'অন্তরঙ্গ' পদটির অর্থ এখানে, 'ভিতরের বা আভ্যন্তরের অঙ্গ।

যম নিয়ম আসন প্রাণায়াম প্রত্যাহার এগুলো বহিরঙ্গ সাধনা।
এই বহিরঙ্গ সাধনায় সিদ্ধ না হলে, সিদ্ধি না এলে, অন্তরঙ্গ সাধনার সান্নিধ্যে আসা দুষ্কর।

ধারণা ধ্যান ও সমাধি হচ্ছে অন্তরঙ্গ সাধনা।
সমাধির পরিপূর্ণতা আসে অধ্যাত্মপ্রসাদে।

'অধ্যাত্ম', হচ্ছে, 'ক্ষেত্রজ্ঞবিষয়ক', পরমাত্মসম্পর্কীয়। ব্রহ্মবিষয়ক। spiritual.। হতে পারে, আত্মবিষয়ক, চিত্তবিষয়কও।

প্রসাদ। প্রসন্নতা। অনুগ্রহ। অনুগ্রহের ফল।প্রসন্নভাব।সদয়ভাব।

আর সমাধির পরিপক্কতা আসে ঋতম্ভরা প্রজ্ঞায়।
ঋত। সত্য। পরম সত্য। পরব্রহ্ম।
ঋতম্ভর। সত্যপালক। সত্যনিষ্ঠ।
ঋতম্ভরা। সত্যনিষ্ঠা। সত্যজ্ঞানরূপ চিত্তবৃত্তি।

প্রজ্ঞা। উৎকৃষ্ট বোধশক্তি। সাত্ত্বিক বুদ্ধি। তত্ত্বজ্ঞান। যেগুলো অর্জন করলে, প্রজ্ঞাবান হওয়া যায়।
প্রজ্ঞাপারমিতা। জ্ঞানের পরাকাষ্ঠা।জ্ঞানের চরম উৎকর্ষতা।এখানে ঈশ্বরজ্ঞানের চরমসীমায় পৌঁছে যাওয়া। ঈশ্বরবিদ্যার চূড়ান্ত স্থানে পৌঁছে যাওয়া। পুরোপুরিভাবে ঈশ্বরকে জানা। ঈশ্বরকে পাওয়া। ঈশ্বরকে জানলে আর কিছু জানার বাকি থাকে না। ঈশ্বরকে পেলে আর কিছু পাওয়ার বাকি থাকে না। তখন সব জানা, সব পাওয়া হয়ে যায়। মন নিত্য আনন্দে থাকে। তখন সাধক কেবল, তাঁর দেহ আর আত্মার, আবরণের পঞ্চকোষের আনন্দময়কোষে নিত্য বিরাজমান।

সাধনা সফল। সফল সাধনা।




*  সূত্র  'পাতঞ্জল যোগদর্শন', পৃষ্ঠা ৬৯, ২৯ প্রভৃতি। গীতা প্রেস।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন