শৈত্যপ্রবাহ ( গদ্যরচনা )
কুজ্ঝটিকা দেখলাম।
ভোরের পাহাড়ে। গঙ্গোত্রীতে।
সমুদ্রের পাড় থেকে, আড়াই হাজার মিটারের বেশি উচ্চতায়।
সকাল সকাল বেরিয়েছি। গোমুখে যাব বলে। পায়ে ্হেঁটে।গঙ্গোত্রী থেকে পায়ে হেঁটে গোমুখ।
গঙ্গোত্রীর গঙ্গা-মন্দিরের ওপর দিক দিয়ে যাওয়া রাস্তা দিয়ে চলেছি।
আমরা চারজন। আমি, আমার স্ত্রী, আর আমাদের মেয়ে ও ছেলে।
গোমুখে এমনি লোকজন কমই যায়। সপরিবারে আরো কম।
তবে গঙ্গোত্রী পর্যন্ত যে হেতু বাস চলে, গঙ্গোত্রী পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে, লোকজন যাতায়াত করে।
গঙ্গোত্রীতে গঙ্গামন্দির আছে।মন্দিরের বেশকিছু নীচ দিয়ে গঙ্গা বহে চলেছে।
পাহাড়ি পথে কি নিদারুণ শীত। সঙ্গে বাতাস। শৈত্যপ্রবহ !
তার মধ্যে, দমবন্ধ হ্ওয়া ঝটিকাসম কুঝ্ঝটিকা।
হঠাৎ চারজনই, একটা ঝোপের কাছেই, কুজ্ঝটিকার বীভৎস আস্তরণে, হারিয়ে গেলাম।
রাস্তা, ছোটখাট খাদ, কেও কাওকে, কিচ্ছু দেখছিলাম না।
আমাদের চোখের তলা, নাক, গাল আর মধ্যবর্তী অংশে, ফ্রস্টবাইটের কামড়ে, অসহনীয় অবস্থা হল।
আমার ছেলে তো কঁদেই ফেললো।
পরে, জায়গাগুলো কালো হয়ে এলো। চামড়ার ওপরের এপিডারমিস স্তরে, একটু গভীর ভাবেই ক্ষত সৃষ্টি হল।
কয়েকদিন পরে, ধীরে ধীরে একটু একটু করে, কালো চামড়ার ছাল উঠে গেল।
শ্বিত্রের মতো, ছোপ ছোপ, সাদা সাদা দাগ ধরল।
সে দাগগুলো ছিল অনেকদিন।
একটু একটু একটু করে মিলিয়ে গেল, অনেক দিন পরে।
সত্যপ্রবহ কি, তা তখন খানিকটা বুঝেছিলাম !
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন